রক্তি নদী, সুনামগঞ্জ

ভারতীয় বর্ডারের কাছে নদীটার অবস্থান।প্রচুর পাথর তোলা হয় নদী থেকে।রৌদ্রজ্বল দিনে নদীর আসল সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়।নদীটা পার হলেই বারেক টিলা। এই নদির আরেক নাম বাংলাদেশ অংশে যাদুকাটা।সুনামগঞ্জ থেকে ভাড়া মোটর সাইকেলে লাউয়েরগড় বাজার আসবেন, একটু হাটলেই নদী পাবেন। ঢাকা হতে বাসে সরাসরি সুনামগঞ্জ আসা যায় (শ্যামলি সার্ভিস ভাল)। থাকবেন জেলা শহরে রেস্ট হাউস বা হোটেলে আর ঘুরুন বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম ও হাসন রাজার দেশে।সুরমা নদী ও টাংগুয়ার হাওর ত অবশ্যই দেখবেন।

Post Copied Post:A Al Mamun Rony‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

সুনামগঞ্জ

একবার ভাবুন তো, জ্যোৎস্নার আলোয় আপনি আপনার প্রিয় মানুষটিকে সাথে নিয়ে থাকছেন বিশাল হাওড়ের উপর ভাসমান নৌকায়! কিংবা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছেন ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা রাতে সেই দোদুল্যমান নৌকায়! বেশ রোমাঞ্চকর / রোমান্টিক অনুভূতি…
বলছিলাম সুনামগঞ্জ এর বিখ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওড় এর কথা। এই বিষয়ে অনেক পোস্ট থাকলেও আমি জানাবো আমাদের ট্যুরের বিস্তারিত। শুধু টাঙ্গুয়ার হাওড় না, সাথে থাকবে লাকমাছড়া, নীলাদ্রি, বারিকের টিলা, যাদুকাটা নদী, তার সাথে SUST ভ্রমণের বর্ণনা।

এককথায়ঃ
বাজেট – ২৫০০/, ছিলাম ৫ জন, ২ দিন ১ রাত,
২৫/১০/১৭ (রাত) – ২৭/১০/১৭ (রাত)

বর্ণনাঃ
১ম দিনঃ
ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ এর বাসের টিকেট ৫৫০/- করে। আমরা বুধবার রাত ১১ টার বাসে রওনা দেই। সুনামগঞ্জ পৌঁছাই প্রায় ৭ টার দিকে। সেখানে ফ্রেশ হয়ে আমরা CNG নেই তাহিরপুরের উদ্দেশ্যে। বাস থেকে নামলে আশেপাশেই CNG পাওয়া যাবে, লোকাল ভাড়া ১০০/- করে।
CNG করে তাহিরপুর পৌঁছুতে ১ ঘন্টার মত লাগে। সেখানে আমরা নাস্তা করি ও নৌকা বাছাই করি। এখানে কথা আছে, নৌকা ভাড়া ভালোভাবে দামাদামি করে নিতে হবে এবং টাঙ্গুয়ার হাওড়, ওয়াচ টাওয়ার ঘুরে টেকের ঘাট এ রাতে থাকবেন এইটা ভালো ভাবে বলে দিতে হবে। যাই হোক আমরা ২৬০০/- দিয়ে ঠিক করেছিলাম আমাদের নৌকা, নৌকা কেমন ছিলো তা ভিডিও তে দেখতে পাবেন। নৌকায় বাথরুম আছে কিনা দেখে নিবেন নিজ সুবিধার্থে।
নৌকায় রাতে থাকার জন্য নিরাপত্তা হিসেবে ওইখানের থানায় একটি স্বাক্ষর করে আসতে হয়, একজন গেলেই হবে, মাঝি মামারা নিয়ে যাবে।
নৌকায় ওঠার আগে টুকটাক শুকনো খাবার নিয়ে যেতে পারেন। নৌকায় যদি খেতে চান। আর আমরা রান্নার ঝামেলায় যাই নি, টেকের ঘাটেই হোটেল আছে। এর পর আমাদের নৌকা যখন হাওড়ে বের হলো আমরা যেন হাওড়ের বিশালতায় গা ভাসিয়ে দিলাম। ৯:৪৫ এ আমাদের নৌকা ছাড়া হয় এবং তার কিছুক্ষণ পর আমরা হিজল বনের কাছাকাছি চলে যাই আধা ঘন্টার মাঝেই। হিজল বনটা সিলেট এর রাতারগুলের Swamp Forest এর মতই অনেকটা। এখানে বেশ কিছুক্ষণ আপনি হেঁটে বেড়াবেন, এর পর নৌকায় ফিরে আবার যাত্রা। আমরা আধা ঘন্টার মত ছিলাম। নৌকায় ওঠার পর কিছুক্ষণের মাঝেই পৌঁছে গেলাম ওয়াচ টাওয়ার এ। এখানে আপনারা কিছু ছোট ছোট ছেলেমেয়ের দল পাবেন, তারা তাদের ছোট ছোট নৌকায় করে পুরো হিজল করচ বনটি ঘুরিয়ে দেখাবে আপনি যতক্ষণ চাইবেন। বিনিময়ে তাদের চাওয়া ২০/- করে একেকজন মানুষ। আপনারা আমাদের মত একেকজন একেক নৌকা নিতে পারেন অথবা এক নৌকায় ২ জন উঠতে পারেন, খরচ একই পড়বে। ওরা ৫০/- করে চাইবে, আমরা ১০/- তেও রাজী করিয়েছিলাম তবে যে পরিমাণে ঘুরেছি, ১০/- নিছক ই তুচ্ছ মনে হলো তাই ২০/- করেই দিয়েছিলাম। আমরা ওয়াচ টাওয়ার এর আশেপাশে ঘোরাঘুরি করে ১ ঘন্টার মাঝেই আমাদের নৌকার কাছে ফিরে এলাম এবং ছোটদের টাকা বুঝিয়ে দিয়ে গোসল এ নেমে পড়লাম। ও বলতে ভুলে গেছি, পানি যদিও গভীর ছিলো না, তবুও সাবধানতার জন্য তাহিরপুর থেকে লাইফ জ্যাকেট নিয়েছিলাম ২ টা। একেকটা লাইফ জ্যাকেট ১০০/- করে ভাড়া। বেশ কিছুক্ষণ হাওড়ের পানিতে গোসল করে রওনা দিলাম টেকের ঘাটে। টেকের ঘাটে পৌঁছতে পৌঁছতে বিকাল ৩:৩০ বাজে, এর মধ্যে আপনারা একটু রেস্ট নিতে পারেন। আপনাদের হাতে যদি সময় কম থাকে তাহলে আরো আগেই টেকেরঘাট পৌঁছে বিকালে নীলাদ্রি, লাকমাছড়া একসাথে ঘুরতে পারেন, পথ বেশি না, হেঁটে ঘুরতে সর্বোচ্চ ২-৩ ঘন্টাই যথেষ্ট। তবে আমরা টেকের ঘাট গিয়ে নীলাদ্রি দিয়েই ঘুরেছি, লাকমাছড়া রেখেছিলাম পরের দিনের জন্য। আপনারা যদি দুপুরে খেতে চান তাহলে হোটেলে গিয়ে অর্ডার দিয়ে আসতে হবে, মামারা এই ক্ষেত্রে সাহায্য করবে তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি বলবো আশেপাশে আরো হোটেল আছে, সব জায়গায় দামের বেশ কমবেশি আছে, একটু চেক করে নিবেন। আর একটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন যে মামাদের ও আপনাদের ই খাওয়াতে হবে। আমরা দুপুরে ভাত না খেয়ে খরচ বাচাই, শুকনো খাবার তো ছিলোই। অর্ডার দিয়ে আসি রাতের খাবারের জন্য। অর্ডারের পর ঘুরে দেখি অন্য হোটেল এ আরো কম দামে পছন্দের খাবার পাচ্ছি। আমরা রাতের জন্য অর্ডার করেছিলাম ১৫০/- এর প্যাকেজ (ভাত + মুরগি + ডাল), যেখানে ভাত আর ডাল ইচ্ছামত। আর বোনাস হিসেবে আমাদের ভাগ্যে জুটেছিলো লালশাক। যদিও এইটা প্যাকেজের অন্তর্গত না। আর আশেপাশে ১২০/- তেও প্যাকেজ পাওয়া যায়। একটু বাজার ঘুরলেই বুঝবেন।
এরপর বেশ কিছুক্ষণ নীলাদ্রি তে সময় কাটিয়ে আমরা এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে হোটেল এ আড্ডা দিলাম এবং রাতের খাবার শেষ করে নৌকায় ফিরলাম। আর নৌকায় কাটানো রাত ট্যুর টার আনন্দ কয়েকশ গুন বাড়িয়ে দিয়েছিলো। রাতের অন্ধকারে দেখবেন কিছুটা দূরে ভারতের বর্ডারে একটু পর পর হলুদ লাইটের লাইন। দোদুল্যমান মান অবস্থায় নৌকায় রাত্রিযাপন।

২য় দিনঃ
ভোরের আলো টা যখন দেখেছি নৌকা থেকে, সেই দৃশ্য লক্ষ টাকা দিয়েও কেনা যায় না। যাই হোক এই সকাল টাই হলো নৌকা কে বিদায় জানানোর সময়। মামার সাথে সব হিসাব ক্লিয়ার করে আমরা সকালের নাস্তা করে রওনা দেই লাকমাছড়ার উদ্দেশ্যে। এখানে বাইক নিয়ে কিছু সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেট ওভারকাম করতে হলে আপনাকে আপনার দামে অটুট থেকে হাঁটা ধরতে হবে, যদি বাইকাররা না ডাকে তাহলে হেঁটে লাকমাছড়া থেকে ঘুরে এসে পরে বাইক নিতে পারেন। বাইকের কাজ লাকমাছড়া হয়ে নীলাদ্রি দিয়ে বারেক টিলায় নিয়ে যাবে। আমরা ৫ জন ছিলাম, ৩ টা বাইক লাগতো, তারা একেক বাইকে ৩৫০/- করে চাইছে, পরে ২৫০/- তে রাজী হইছে তবে আমরা ১৫০/- এর বেশি দেবো না বলে গোঁ ধরে ছিলাম, পরে হাঁটা দেই। আর পরে কিছুদূর আগানোর পর তারা ৩ বাইক এসে আমাদের নিয়ে নেয়, ১৫০/- করে।
লাকমাছড়া যেতে বেশিক্ষণ লাগে না, ওইখানে আমরা কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে আবার রওনা দেই বারেক টিলার উদ্দেশ্যে। আধা ঘন্টার মত লাগে বাইকে করে লাকমাছড়া থেকে বারেক টিলা। এর পর বারেকটিলায় পোঁছিয়ে বাইক ছেড়ে দিতে হয়। আর বারেক টিলা থেকে নীচের যাদুকাটা নদী আপনাকে যাদুর মত সম্মোহন করবে! পাহাড় থেকে নদীর ভিউ, তার উপর অপরূপ যাদুকাটা নদীর ভিউ, তা আসলে না দেখলে বোঝা যাবে না। বেশ কিছুক্ষণ বারেক টিলায় সময় কাটিয়ে আমরা নেমে আসি যাদুকাটা নদী তীরে। তীরে একটা হোটেল আছে, এখান থেকে আপনি একটু নাস্তা করতে পারেন গরম গরম সিঙ্গারা দিয়ে। খাওয়া টা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো হোটেল টির অবস্থান। এত সুন্দর একটি নদীর পাড়ে একটু উচুতে হোটেল টির অবস্থান। ঢাকায় যেসব “লেকভিউ” নামক রেস্টুরেন্ট থাকে, তাও এর কাছে কিছু না। এটাও ভিডিও তে দেখতে পাবেন। আর নদীর উপর জন্য যে খাবারের দাম বেশি তা কিন্তু না, ৫/- করেই ছিলো সিঙ্গারা। এর পর খেয়াপার হতে হয়, জনপ্রতি ৫/- করে। অপর পাড় এ যাওয়ার পর আপনি দেখবেন বিশাল চড়, এই চড় পেড়িয়ে আশে পাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন, চাইলে এই অপরূপ নদীর ঠাণ্ডা পানিতে গোসল টাও সেরে নিতে পারেন। এরপর পাশেই লাউরের গড় বাজার আছে, খাওয়া দাওয়া করতে পারেন, সেখান থেকেই আমরা সুনামগঞ্জ এর CNG ঠিক করেছি, যার লোকাল ভাড়া ১০০/- করে। আমরা রিজার্ভ করেছিলাম ৪৭০/- টাকায়। সুনামগঞ্জ পৌঁছতে সময় লাগে ১ ঘন্টার মত, আমাদের ঘড়িতে তখন ২:১৫ বাজে। এরপর আপনারা সুনামগঞ্জ শহরে ঘোরাঘুরি করতে পারেন, দেখতে পারেন হাসন রাজার জাদুঘর, তবে আমরা ভুলে গিয়েছিলাম।
আমরা চেয়েছিলাম সিলেট হয়ে ট্রেনে ফিরবো, যদিও পরে ট্রেন পাই নি। যাই হোক সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটের লোকাল বাসে উঠি, ভাড়া ১০০/- করে ৫০০/- হলেও রেখেছিলো ৪৬০/-
সিলেট নেমে আমরা SUST এর ক্যাম্পাস ঘোরার জন্য CNG নেই, ভাড়া হয় ৩০/-। SUST এর বিশাল ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি করে ফিরতি পথে আমরা মেইন গেটে অটোতে করে আসি, জনপ্রতি ৫/- করে ২৫/-।
এরপর SUST থেকে সিলেটের বিখ্যাত আর আমাদের ভালোবাসা “পানসী” তে যাই, SUST থেকে পানসী CNG ভাড়া নিয়েছে ৯০/-। সেখান থেকে এক দল যায় বাসের টিকেট কাটতে (ট্রেনের টিকেট না পেয়ে), রাত ১১ টায় টিকেট কাটার ফলে অনেকটা সময় আমাদের হাতে থাকে, ফলে এর ফাঁকে আমরা সুরমা নদীর পাড় থেকেও ঘুরে আসি।

এখন যাবতীয় হিসাবঃ(৫ জনের)
ঢাকা-সুনামগঞ্জ (বাস) – ৩০০০/-
সুনামগঞ্জ – তাহিরপুর (CNG) – ৫০০/-
লাইফ জ্যাকেট ২ টা – ২০০/-
নৌকা (মামার খাওয়া সহ) – ৩০০০/-
ছোট নৌকা (হিজল-করচ) – ১০০/-
পরদিন=
টেকের ঘাট – বারেকটিলা (বাইক) – ৪৫০/-
যাদুকাটা নদী (খেয়াপার) – ২৫/-
লাউরের গর – সুনামগঞ্জ (CNG) – ৪৭০/-
সুনামগঞ্জ – সিলেট (BUS) – ৪৬০/-
সিলেট – SUST (CNG) -৩০/-
SUST (auto) – ২৫/-
SUST – পানসী (CNG) – ৯০/-
পানসী থেকে বাসকাউন্টার যাওয়া আসা(Rickshaw) – ৩০/-
পানসী থেকে সুরমা নদী (CNG) – ৭০/-
সুরমা থেকে পানসী ফেরত (CNG) – ৮০/-
পানসী থেকে বাসস্ট্যান্ড (CNG) – ১০০/-
সিলেট – ঢাকা (BUS) – ২৩৫০/-
—————————————————————-
মোট – ১০৯৮০/- / ৫ = ২১৯৬/-
বা ২২০০/- জনপ্রতি
খাওয়া দাওয়া ধরি নি, খাওয়া দাওয়া আপনাদের ব্যাপার। কোথায় কত কেমন খাবেন 😃 তবে ৩০০/৪০০ এর মধ্যে খাওয়া হয়ে যাওয়ার কথা।

আমাদের মাঝি মামাঃ
মহিবুর মাঝি – ০১৭৪২৪৯৫৯৮৯

শেষ কথাঃ
১। খাওয়ার ব্যাপার মামা দের সহ হিসাব করবেন।
২। শুক্রবার এ অনেক মানুষ হয় ফলে নৌকার দাম কমানো কঠিন হয়ে যায়। আমরা বৃহঃ রাত ছিলাম তাই কমাতে পেরেছি।
৩। ছোট, বড়, মাঝারি সব ধরনের নৌকা আছে, আপনারা মানুষ বুঝে বাছাই করবেন।
৪। লাইফ জ্যাকেট অবশ্যই নিবেন।

আপনারা চাইলে ধারণা নিতে আমাদের ভিডিও দেখতে পারে

Post Copied From:Zayed Hasan‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর

খুব অল্প খরচে ১ দিন সময় নিয়ে ঘুরে আসুন দেশের অন্যতম বৃহৎ হাওর থেকে। বলছি সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের কথা।
এই নভেম্বরের শুরুতেই আমরা ৮ জন মিলে ঘুরে এলাম টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে। ঢাকা – সুনামগঞ্জ এবং ফিরতি বাসের খরচ বাদ দিলে বাদবাকি মোট খরচ নিতান্তই কম। ঢাকা থেকে এনা’র রাতের বাসে করে গিয়েছিলাম আমরা ৫৫০ টাকা ভাড়ায়। বাসষ্ট্যান্ড থেকে তাহিরপুরের জন্য লেগুনার উঠি প্রতিজন ৬০ টাকা করে। চাইলে লেগুনা/অটো রিক্সা/সি এন জি রিজার্ভ করেও যাওয়া যায়। তাহিরপুর থেকে নাস্তা সেরে নৌকা ভাড়া করলাম ১ দিনের জন্য ১৬০০ টাকা। এখানে বলা প্রয়োজন নৌকা ঘাটে হরেক রকম নৌকা পাওয়া যায়। ছোট বড় মাঝারি যার যেমন প্রয়োজন। তাহিরপুর থেকে বাজার করে নৌকায় উঠে যাই আমরা। তারপর আরকি। সারাদিন নৌকায় ঘুরে হাওরের অপরিসীম সৌন্দর্য দেখতে দেখতে কখন সময় পেরিয়ে যাবে টেরই পাবেন না। দুপুরের খাবার সেরে আমরা ৮ জনে ৪ টি বাইক ভাড়া করি শিমুল বাগান, যাদুকাটা নদী, বারেক্কাটিলা দেখবো বলে। প্রতি বাইকে ২০০ করে খরচ হয়। দিনশেষে রাত। তারা ভরা আকাশ থেকে একটা তারা মিটিমিটি করে খসে পড়ার দৃশ্য কতটা নয়নাভিরাম ভ্রমণপিপাসুদের জন্য, তা নিজ চোখে না দেখলে বর্ণনা করা অসম্ভব। ভরা পূর্ণিমার আলোয়, মাঝির হাতের রান্নার সুবাস, লেকের স্তব্ধতা আর আপন মানুষগুলোর সাথে আড্ডা মারতে মারতে বা গলা ছেড়ে গান গাইতে গাইতে আপনার সময়টা কেমন যাবে ভেবে দেখুন। ভাবতেই শিহরিত হবেন। সূর্যোদয় নাকি সূর্যাস্ত কোনটা বেশি সুন্দর ছিল টা ভাবতে ভাবতেই আমাদের টাঙ্গুয়ার হাওরে কাটানো সময় শেষ হয়ে যায়। কত তাড়াতাড়ি চলে গেছে একটা দিন, তবে তার রেশ যাবেনা কোনোদিন। পরদিন সকালে সুনামগঞ্জে হাসন রাজার মিউজিয়াম দেখা শেষে আমরা আবার এনার বাসে করে ঢাকায় ফেরত চলে আসি।

ঢাকার বাইরে স্বল্প খরচে একদিন ঘুরার মত এর চেয়ে ভালো জায়গা কোনটি আমার জানা নেই। বোনাস হিসেবে শীতকালে তো অতিথি পাখি দেখার সুযোগও রয়েছে।

ভিডিওটার ব্যাপারে বলি, ভিডিওটিতে আমাদের যাত্রার কিছু সুন্দর মুহূর্ত উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি এটা দেখে আপনাদের টাঙ্গুয়ার হাওর যাবার বাসনা আরো তীব্র হবে।

Pst Copied From:

Tanvir Ahmed‎ to Travelers of Bangladesh (ToB)

যাদুকাটার যাদু।

যাদুকাটা নদী, তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ। সুনামগঞ্জ শহর থেকে তাহিরপুর সিএনজি বা হোন্ডা, এরপর হোন্ডাতেই যাদুকাটার তীরে।

Post Copied From:Md Azizur Rahman Ziko‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

টাঙ্গোয়ার হাওর, ‘জলস্বর্গ’

যা যা দেখলামঃ
>কমন স্পট< . – টাঙ্গুয়ার হাওর এবং ওয়াচ টাওয়ার – টেকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রী) রাজাই ঝর্ণা, বারিক্কা টিলা যাদুকাটা নদী শিমুল বাগান লাকমা ছড়া – হাসন রাজার বাড়ি, সুনামগঞ্জ . >আনকমন স্পট< – কলাবন ছড়া – জঙ্গলা ছড়া – বীরেন্দ্রনাথ ছড়া ও বাগান – বাইশা ছড়া . খরচপাতিঃ (৬ জন হিসেবে) >মেস থেকে কুমিল্লা রেল স্টেশনঃ ১৫০
> কুমিল্লা – সিলেটঃ ১২০০ (স্টেন্ডিং)
>সিলেট রেল স্টেশন থেকে কুমারগা বাস স্ট্যান্ডঃ ১২০
> নাস্তাঃ ৩০০ (ভাত, ৩/৪ পদের ভর্তা, ডাল)
> কুমারগাও থেকে সুনামগঞ্জ বাসে> ৫৪০
> সুনামগঞ্জ থেকে তাহিরপুর লেগুনা রিজার্ভ > ৫০০
> তাহিরপুর ‘টাঙ্গোয়ার হোটেলে’ লাঞ্চ> ৯০০
(মুরগীর রোস্ট ১০০, বোয়াল ১৫০, স্বাদঃ ১০/১০)
> পানি ১০ লিটার, কলা, বান, বিস্কুট > ৩০০
> ট্রলার বিকাল থেকে পরদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত, মাঝারী সাইজ > ২৫০০
> টেকেরঘাট রাতের খাবার > ১৪০ (পরটা, ডিম ভাজি, স্বাদঃ ০/১০)
> বাইক ভাড়া, কমন ৫টা স্পট > ৭৫০
> বাইক ভাড়া, আনকমন স্পট > ৮০০
> দুপুরের খাবার > ৮৪০ (বোয়াল মাছ, ভর্তা, স্বাদঃ ৪/১০)
> ওয়াচ টাওয়ারে ছোট নৌকা ভাড়া, ২টা > ২০০ (এগুলো সময় অনুযায়ী প্রতিজন ২০/১০ টাকা করে নেয়)
> তাহিরপুর থেকে সুনামগঞ্জ সাথে হাসন রাজার বাড়ি রিজার্ভ সিএনজি > ৫০০
> সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট পাঁচভাই হোটেল পর্যন্ত মাইক্রো রিজার্ভ > ৯০০
(যদিও এসব সেইফ না, আর রাত ৮টার পর সিলেটের বাস নেই, ঢাকার বাস আছে, দাড়িয়ে যেতে হয়)
> পাঁচভাই ডিনার> ১১৫০ (গরু/কোয়েল + অনেক পদের ভর্তা + লাচ্চি)
> রাত ১২টার পর কুমিল্লার বাস পাইনি, তাই,
সিলেট টু ব্রাক্ষনবাড়িয়া বিশ্বরোড > ৫০০ (৬জনে :p
(সার্ভিস খারাপ না)
> ব্রাক্ষনবাড়িয়া থেকে কুমিল্লা > ৬০০
> সকালে হাল্কা নাস্তা > ১২০
> বাস স্ট্যান্ড থেকে মেসে > ৯০
.
সর্বমোটঃ ১৩১০০/৬
প্রতিজনঃ ২১৮৩ টাকা!!
.
[ঢাকা থেকে যদি আসেন কুমিল্লা-সিলেট,সিলেট কুমিল্লার ভাড়া ২০০*২= ৪০০ বাদ দিয়ে ঢাকা-সিলেট-ঢাকা ভাড়া এড করলে যা আসে তা আসবে]
.
এবার আসি সংক্ষেপে মূল আলোচনায়,
৩/৪ ঘন্টার হঠাৎ প্ল্যান করে ২৬ তারিখ ৬জনে কুমিল্লা থেকে বেড়িয়ে পরি টাঙোয়ার হাওর দেখার উদ্দেশ্যে!
.
রাত ১টার ট্রেন ২ঘন্টা লেটে কুমিল্লায় পৌছায় ৩টারও পর!
স্টেন্ডিং টিকিট কেটে শুরু করি যাত্রা…
৩০ মিনিট পর শশীদল স্টেশনে ক্রসিং এর জন্য আরো দেঢ় ঘন্টা ট্রেন দাড়িয়ে!
ভোর হতে চললো, কুমিল্লায়ই ছাড়তে পারলাম না!
.
যাক, ট্রেন চলতে শুরু করলো, শ্রীমঙ্গল যাওয়ার পর সীট পাই আমরা সবাই।
সিলেট পৌছাই আমরা প্রায় সাড়ে ১০ টায়!
.
সীলেট স্টেশন নেমেই কুমারগা বাস স্টেশনে যাওয়ার জন্য সিএনজি খুজতে থাকি।
স্টেশন থেকে সিএনজি রিজার্ভ চায় একদাম ২৫০
.
২মিনিট হেটে স্টেশন থেকে বের হয়ে রাস্তা থেকে ১২০ টাকায় ঠিক করি কুমারগায়ের উদ্দেশ্যে।
.
মাঝখানে চাকা পামছার হওয়ার :p বিরতি নাস্তা পর্ব সেরে নেই।
কুমারগাও স্টেশন থেকে সুনামগঞ্জের বাসে উঠি। বাসগুলো চরম চিটার।
২জন ইন্জিন কভারে, ২জন মাঝখানে সীটে আর বাকি ২জনকে একদম পিছের মাঝখানে সিট দেয়।
.
আমাদের অনেক পরে আসা যাত্রীদের ভাল ভাল সীট দিচ্ছিলো!
.
যাইহোক, সুনামগঞ্জ পৌছে ৬জনে একটা লেগুনা ঠিক করে আরামচেয়ে পৌছে যাই তাহিরপুর।
তাহিরপুর পৌাছার পরপরই মাঝারি টানাটানি শুয়রের করে দিলো!
.
অনেক নাটকের পর নৌকা ঠিক করে ৫টার নাগাদ হাওর যাত্রা শুরু করি, তার আগে তাহিরপুর বাজারের বিখ্যাত হোটেল ‘টাঙোয়ার হোটেল’ এ লাঞ্চ সেড়ে নেই । টেকেরঘাট পৌছাতে পৌছাতে রাত হয়ে যায়।
রাতে সিরাজ লেক দেখে খাবার খেয়ে ট্রলারে আড্ডা দিয়ে ঘুমিয়ে পরি।
টেকেরঘাটে খাবারের মান খুবই খারাপ।
.
রাতেই বাইক ঠিক করে ফেলি তিনটা ।
ভোড় সাড়ে ৫টায় বাইক হাজির, ব্রাশ করে কলা রুটি খেয়ে বেড়িয়ে পরি….
(রাজাই ঝর্ণা, বারিক্কা টিলা, যাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান, লাকমা ছড়া) দেখতে দেখতে ৩ঘন্টার উপর চলে যায়।
.
তারপর আনকমন স্পটগুলোতে যাওয়া শুরু করি, ওগুলো দেখা শেষ করতে করতে আরো ৩ঘন্টা!
দুপুরের খাবার খেয়ে , সিরাজ লেকে গোসল করে বিকাল ৩টার দিকে ওয়াচ টাওয়ারের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি।
.
ওয়াচ টাওয়ার দেখে তাহিরপুর ফিরতে ফিরতে মাগরিবের পর হয়ে যায়।
সিএনজি রিজার্ভ করি হাসন রাজার বাড়ি দেখিয়ে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত।
.
সুনামগঞ্জ পৌছাই রাত ৯ টায়।
.
সুনামগঞ্জ থেকে প্রাইভেট কার রিজার্ভ করে সিলেটের পাঁচভাই হোটেলে যাই, ডিনার করে বাসে করে কুমিলা সকালে পৌছাই!
.
সকালে কুমিল্লা পৌছে দুপুরে একটা দাওয়াত খেয়ে রাতে চট্রগ্রাম ট্যূরে চলে যাই 😉
পতেঙ্গা, নেভাল, ভাটিয়ারি, বাঁশবাড়িয়া বিচে! :p
.
<<<<<<কিছু কথা>>>>>>>
১. টাঙ্গুয়ার হাওরের পানি খুব পরিস্কার, স্লোরকেলিং সেট মাস্ট কিনে নিবেন। পানির ভিতরে দেখে দেখে সাতার কাটবেন। দাম ৮০০-১০০০
২. একশান ক্যামেরা নিলে ভালো
৩. সরকারি বন্ধ না থাকলে মাঝারি সাইজের ট্রলার ৬-৮ জন ধারনক্ষমতা ভাড়া ২৫০০-৩০০০,
বড় সাইজে ৪০০০ থেকে শুরু…
আর সরকারি বন্ধে মাঝারি সাইজের নৌকা ৭-৯ হাজার টাকা!!!
৪. মাঝিদের থেকে সাবধান থাকবেন, মোবাইল মানিব্যাগ চুরি হয়! এবং রান্নার সরন্জামে গরমিল হয়!
৫. ট্রলারে রান্নার ঝামেলা না নিলেই আমার মনে হয় ভালো হয়
Post Copied From:সাখাওয়াত সবুজ>Travelers of Bangladesh (ToB)

ঘুরে আসুন অপরূপ সৌন্দর্যময় টাংগুয়ার হাওর।

আমাদের ১ দিনের হাওর ভ্রমণের খুঁটিনাটি:-
আমরা ৮ জন ঢাকার ফকিরাপুল থেকে সুনামগঞ্জ এর উদ্যেশ্যে বাসে উঠলাম রাত ১০ টায়। (টিকেট ৫৫০/-)। ভোর ৬ টায় পৌঁছালাম সুনামগঞ্জ পুরাতন বাস স্ট্যান্ড এ। ওখানে নেমে সকালের নাস্তা সেরে উঠলাম তাহিরপুরগামী লেগুনায়। রিজার্ভ করার দরকার নাই, লোকাল হিসেবে ওগুলা যায়, প্রতি জন ৮০ টাকা করে ভাড়া। প্রায় দেড় ঘন্টা পর আমরা তাহিরপুর উপজেলার সামনে নামলাম। কিছুদূর হেঁটে নৌকার ঘাটে পৌঁছালাম। ১ দিনের জন্যে নৌকা দরদাম করা শুরু করলাম। আমরা ৩০০০ দিয়ে ১ দিন ১ রাত এর জন্য নৌকা ঠিক করলাম। নৌকা দরদাম করে ঠিক করতে হবে, প্রথমে অনেক ভাড়া চাইবে। রান্নার বাবুর্চির জন্য এক্সট্রা টাকা চাইতে পারে, আমাদের ২ জন মাঝি রান্না নিজেরা রান্না পারত, তাই আমাদের ঝামেলা হয়নাই।
এরপর ঘাট সংলগ্ন বাজার থেকে আমরা বাজার করে আনলাম প্রায় ১৫০০ টাকার মত। কিছুক্ষণ পর আমরা রওনা দিলাম হাওর এর উদ্যেশ্যে।
হাওরের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে ঘন্টাখানেক পর আমরা এলাম ওয়াচ টাওয়ারে। আমরা পানিতে নেমে গোসল করলাম,খুব ই স্বচ্ছ আর পরিষ্কার পানি, গভীরতা ও কম, ইচ্ছামত পানিতে লাফাতে পারবেন, তবে সাঁতার না জানলে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট নিয়ে যাবেন। মাঝিদের রান্না শেষ হলে আমরা দুপুরের খাবার পর্ব সারলাম। এরপর আমাদের নৌকা আবার চলতে শুরু করল। বিকালের দিকে টেকেরঘাট পৌঁছালাম। ওখানে নেমে প্রথমেই মোটরবাইক এ করে রওনা হলাম বারিক্কাটিলার উদ্যেশ্যে। প্রতি বাইক এ ২ জন করে আসা যাওয়া মোট ২০০ টাকা। আধাঘন্টা পর ওখানে পৌঁছে দেখলাম জাদুকাটা নদী, শাহ আরেফিনের মাজার আর ঝর্ণা। যাই হোক, এরপর টেকেরঘাট ফিরে এসে স্থানীয় বাজারে চা নাস্তা খেলাম। আশেপাশে ঘুরাঘুরি করলাম। কেয়ারী (নিলাদ্রী) লেক দেখলাম। রাতে নৌকায় ফিরে রাতের খাবার সারলাম।
এরপর নৌকার ছাদ এর উপর শুয়ে জ্যোৎস্নায় আলোকিত হাওর দেখতে লাগলাম। জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকবে। রাতে আমাদের নৌকা টেকেরঘাট এই বাঁধা ছিল। ওখানেই রাতে আমরা ছিলাম। নিরাপত্তা নিয়ে কোন ভয় নাই ওখানে। পরদিন খুব ভোরে উঠে পায়ে হেঁটে গেলাম লাকমাছড়া ঝর্ণায়। ওখানে ঘুরে এসে নৌকায় এসে আমরা তাহিরপুর ফিরে যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম। দেড় ঘন্টা পর তাহিরপুর আসলাম। এরপর আগের মত লেগুনা করে সুনামগঞ্জ শহরে ফিরে আসলাম। এখান থেকে বাস এ ফিরে যেতে পারেন ঢাকা। (সকালে বাস ছাড়ে কিনা সিউর না, কারণ আমরা সিলেট গেসিলাম ওখান থেকে, না হলে সিলেট গিয়ে ওখান থেকে ঢাকার বাস এ উঠতে পারবেন)।
* আমাদের মত গ্রুপ হলে যাতায়াত, খাওয়া, ১ দিন ১ রাত নৌকা ভাড়া সব মিলিয়ে পার হেড ১৮০০- ২০০০ এর মধ্যে হয়ে যাবে। আপনারা চাইলে ২ রাতের জন্য নৌকা ভাড়া করতে পারেন, সেক্ষেত্রে নৌকা ভাড়া দ্বিগুণ লাগবে আর কি। টাংগুয়ার হাওর মিস করবেন না, এটা আপনার জীবনের অনেক স্মৃতিময় ভ্রমণ হয়ে থাকবে নিঃসন্দেহে। আর সম্ভব হলে জ্যোৎস্নার সময়ে যাবেন। চাঁদের আলোয় হাওর অপার্থিব সুন্দর।

Post Copied From:Tanjimul Alam‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

টাঙ্গুয়ার হাওড়

:: কি করে যাবেন টাঙ্গুয়ার হাওড় :: টাঙ্গুয়া যেতে হলে সবার আগে যেতে হবে সুনামগঞ্জ। সবচে ভালো হয় শ্যামলী পরিবহেনর বাসে গেলে। এদের নন এসি বাসগুলোর সীট খুব সুন্দর আর আরামদায়ক। অনেকটা ভলবো বাসের সীটের মতো।ফকিরাপুল মোড়ের কাউন্টার থেকে অগ্রীম টিকেট কেটে রাতের বাসে উঠে যান। ভাড়া ৫০০ টাকা।ঢাকা-সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর-টাঙ্গুয়ার হাওড়।

কেন যাবেনঃ শীতকালে টাঙ্গুয়ার হাওড়ে যাওয়ার সিজন হলেও, বর্ষাকালের সৌন্দর্য অন্যরকম। একদিকে পাহাড়ের সারি অন্যদিকে দ্বীপের মত জেগে ওঠা গ্রাম। আদিগন্ত বিস্তৃত পানির মধ্যে আধ-ডোবা গাছগুলোতে রাতারগুলের একটা ফ্লেবার পাবেন। পানি একদম পরিষ্কার। ৫/৬ ফিট পর্যন্ত শ্যালো পানিতে তলদেশ ঝকঝকা দেখা যায়। যেখানে ইচ্ছা হবে ঝাপ দিয়ে নেমে যাবেন গোসল করতে।

হাওড় থেকে সদ্য তোলা ফ্রেশ মাছ নৌকায় রান্না করে, গরম গরম ধোয়া ওঠা ভাতের সাথে খাবেন। বড় বড় রাজহাস পাওয়া যায়। খিচুড়ি দিয়ে ভূনা রাজহাস অসাধারন লাগবে। সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের পর নানা রঙের মেঘের নকশা। আর রাতের বেলায় নৌকার গলুইয়ের উপর চিত হয়ে শুয়ে দেখতে পারবেন, ঝকঝকা তারাভরা আকাশ।

খুব সকালে সুনামগগঞ্জ নেমে বৈঠাখালি ঘাট যেতে হবে।বৈঠাখালি যাবার জন্য টেম্পু বা ব্যটারী চালিত অটো পাবেন। গ্রুপ বড় দেখলে সামান্য ১ মাইল রাস্তা ৩০০ টাকা চাইবে। এর চে অটোতে উঠে যান ৫ জন করে। জনপ্রতি নেবে ১০ টাকা করে। বৈঠাখালি ঘাটে নেমে ৩ টাকা দিয়ে নদীর ওপার যাবেন।ওপার গেলে অনেক মোটরসাইকেল পাবেন।জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে তাহিরপুর চলে যান। একটা কথা গ্রুপ বড় হলে আগে থেকে কাউকে ফোন করে লেগুনা নিয়ে আসতে বলুন। ১২ জন বসতে পারবেন।ভাড়া নেবে ১২০০ টাকা। রাস্তা খুব ভালো।৩৫ কি:মি: দুরের তাহিরপুর যেতে সময় লাগবে প্রায় দেড় ঘন্টা।

তাহিরপুর নেমে নাস্তা করে নিন এবং খাবার মতো শুকনো খাবার ও পানি নিয়ে নিন।এরপর একটা নৌকা ভাড়া নিন সারাদিনের জন্য। ভাড়া পরবে ৩-৬ হাজার টাকা (সাইজ অনুযায়ী); এরপর সারাদিন হাওড়ে ঘুরুন,গোছল করুন, বাগনি বর্ডার এবং বারিক্কা টিলা যান এবং ফিরে আসুন।এছাড়া যেতে পারেন টেকেরঘাট পরিত্যাক্ত চুনাপাথর প্রকল্পে।সবচে ভালো হয় হাওড়ে কোথাও রাত কাটান।

আমি একজনের মোবাইল নম্বর দিলাম।বেলাল নামের ছেলেটি খুব ভালো।ওকে আগে বলে রাখলে ও টাকা পাঠালে ও :

– বৈঠাখালি ঘাটে লেগুনা নিয়ে এসে আপনাদের নিয়ে যাবে।

– একটা নৌকা ঠিক করে রাথবে এবং সারাদিন আপনাদের সাথে থাকবে

– হাওড়ের মাঝে ওর বাড়িতে দুপুর/রাতের রান্নার ব্যবস্থা করবে

– রাতে ওর বাড়ির পাশে হাওড়ে নৌকায় ঘুমাবার ব্যবস্থা করবে।

সব খরচ দেবার পর ওকে কিছু টাকা বকশিশ দিলেই ও খুশী থাকবে। বেলালের ফোন নম্বর হলো: ০১৭২৩০৯১৩৫২।

*** অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে নিবেন, নো কম্প্রমাইচ ফর লাইফ জ্যাকেট। ***