প্যারস্যুট থেকে দেখা সমুদ্র ও পাহাড়.

আগের রাত ৮ টায় বগুড়া থেকে রওনা দেই, গন্তব্য কক্সবাজার।
সঙ্গত কারনেই সেদিন রাতে ও পরদিন সকালে ভারি কিছুই খাওয়া হয়নি।
প্রায় ১৮ ঘন্টার জার্নি শেষ করে কক্সবাজারের হোটেলে চেক ইন করি দুপুর ২ টায়!
কোনভাবে ফ্রেশ হয়ে, নাখে-মুখে লাঞ্চ সেরে এক ছুটে চলে গেলাম দরিয়ানগর।
উদ্দেশ্য ‘প্যারাসেইলিং’
একজনকে প্যারাস্যুটের সাথে ঝুলিয়ে, সমুদ্রে চলন্ত স্পিড বোটের সাথে দড়ি লাগিয়ে প্রায় মিনিট ৫-৭ পর্যন্ত আকাশে উড়ানোর নামই প্যরাসেইলিং।

বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে কক্সবাজারের কলাতলি-হিমছড়ি সড়কের দরিয়ানগরে তাদের প্যারাসেইলিং এর বন্দোবস্ত আছে, শুনেছি হিমছড়ি বিচেও নাকি এটা করা যায়। এখন পর্যন্ত শতভাগ নিরাপদ।

যাওয়া মাত্রই সিরিয়াল পেয়ে গেলাম।
‘আমার মৃত্যু বা অন্য কোন দূর্ঘটনার জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না’
এই মর্মের প্রত্যয়ন পত্রে নাম-দস্তখত করা মাত্রই,
কয়েকজন কর্মি আমার গায়ে লাইফ জ্যাকেট চাপিয়ে দিলো,
আরো দুইজন মিলে প্যারাস্যুটের ক্যারাবাইনার হুকড করে দিলো।
বুকে তখন শঙ্কা বাজছে, অজানা আতঙ্কের ডঙ্কা বাজছে!
যদিও আমার অ্যাক্রোফোবিয়া (উচ্চতাভীতি) আছে,
তবুও এডভেঞ্চারের আশায় উড়াল দেবার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হচ্ছি।
কর্মিরা সব বুঝিয়ে দিলো, তেমন কিছুই না;
স্টার্টিং এর সময় দ্রুতবেগে হাঁটতে বা দৌড়াতে হবে,
আর ল্যান্ডিং এর সিগন্যাল দিলে লাল ফিতা বাঁধা রশি টেনে ধরতে হবে,
ব্যস! এইটুকুন!

স্পিড বোট চলতে শুরু করলো, রশিতে টান পড়লো,
এক পর্যায়ে আবিষ্কার করলাম স্বয়ং আমি আকাশে উড়ছি, আলহামদুলিল্লাহ!
পানিতে পড়ে গেলেও ভয় পাবার কিছু নেই,
গায়ে লাইফ জ্যাকেট, আর নিচে রেস্কিউ বোট, তাই কোন চিন্তা নেই।
হাতের মোবাইলটা রেখেছি ভিডিও করার জন্য,
বিশেষ ব্যবস্থা ছিলো, পড়ে যাবার এবং পড়ে গেলে ভিজে নষ্ট হবার ভয় ছিলোনা।
প্রচন্ড বাতাসে দম নিতে কষ্ট হচ্ছিলো,
প্রবল কুয়াশায় চারিপাশের দৃশ্য ভালোভাবে উপভোগ করা যাচ্ছিলো না,
শাঁ-শাঁ করে বয়ে চলা বাতাস কান স্তব্ধ করে দিচ্ছিলো,
কথা সত্য, নিচে তাকালেই মাথা ঘুরছিলো, তবুও; এটাই উপভোগ্য!

যাই হোক, প্রায় ১০ মিনিট উড়ু খাওয়ার পরে বাঁশির আওয়াজ পাওয়া মাত্রই নির্দিষ্ট রশি টান দিলাম, মিনিটের মধ্যেই বিচের মধ্যে সফট ল্যান্ডিং…
ইচ্ছে হলো পূরন, জীবন হলো সুন্দর!

প্যারাসেইলিং ফি ১৫০০/- (জাস্ট ফান, শুধু উড়াবে),
২০০০/- (এক্সট্রা ফান, পানিতে পা ছোঁয়াবে, বেশিক্ষন উড়াবে)
কক্সাবাজারের কলাতলি মোড় থেকে লোকাল অটোতে যাওয়া যায়,
জনপ্রতি ভাড়া ১৫/২০ টাকা।
আগে থেকে ফোন করে গেলে ভালো,
এক্টিভিটিজ চালু কি না সেটা জানা যাবে,
সিরিয়ালও রাখা যাবে। যোগাযোগঃ 01783-598892

Post Copied From:

Jubair Abdullah‎> Travelers of Bangladesh (ToB)

নাটোর উওরার গণভবন

নাটোর উওরার গণভবন ঘুরে আসলাম আজকে সব দিকে প্রকৃতির ছোয়া বিশাল বিশাল গাছ পাশে লেক দীর্ঘ সময় কাটিয়ে দেয়া যাবে এই সুবিশাল গাছের নিচে আর সাথে তো আছেই জমিদার বাড়ি। সব মিলিয়ে একদিনে ঘুরে আসার জন্য একটি আর্দশ জায়গা।
আমার ভ্রমণ যাত্রা তুলে ধরছি

সকাল ৮ টার গাড়িতে সাভার থেকে উঠি ন্যাশনাল ট্রাভেলস ভাড়া ৩৭০ টাকা ১১:৪০ মিনিট নাটোর বাইপাস নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে অটো করে সোজা বগুড়া বাস স্টান, ভাড়া ১০ টাকা, আবার অটো নিয়ে চলে যায় উওরার গণভবন এর মূল গেটে। ২০ টাকার টিকেট কেটে ঢুকে পড়ি ভিতরে বেশ কিছু সময় কাটিয়ে চলে আসি, হাতে সময় থাকায় নাটোর রাজ বাড়িও দেখে আসি এবং বিখ্যাত খাবার কাচা গোল্লা চেখে আসি।
সব মিলিয়ে আসা যাওয়া খরচ হয়ছে ১০০০ টাকা।

Post copied From:Rohul Amin‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

ভাসু বিহার

স্থানীয়ভাবে নরপতির ধাপ নামে পরিচিত। মাটি চাপা পড়ে থাকা উঁচু টিলা আকৃতির এই এলাকা এক সময় ছিল বৌদ্ধ বিহার। চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং’য়ের বিবরণে ভাসু বিহারের উল্লেখ আছে। ৬৩৯-৬৪৫ খৃষ্টাব্দে তিনি এ জায়গা পরিদর্শন করেন বলে জানা যায়।
ইতিহাস বলে সে সময়ে তিনি বিহারের সাতশত ভিক্ষুকে পড়ালেখা করতে দেখেছিলেন। তাঁর বিবরণের উপর ভিত্তি করেই স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম ভাসুবিহারকে বৌদ্ধ বিহার হিসেবে সনাক্ত করেন।
ভাসু বিহারের নির্মাণশৈলী অসাধরণ। সর্বপ্রথম এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ শুরু হয় ১৯৭৩-৭৪ সালে। টানা তিন বছরের খননের ফলে জায়গাটিতে দুটি মাঝারি আকৃতির বিহার এবং একটি মন্দিরের স্থাপত্তিক কাঠামো আবিস্কৃত হয়। আরও মেলে প্রচুর পুরানো নিদর্শন।
দুটি বিহারের মধ্যে একটি অপেক্ষাকৃত বড়, অন্যটি ছোট। বড় বিহারের আয়তন পূর্ব-পশ্চিমে ৫৬ মিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে ৪৯ মিটার। এর দক্ষিণ পাশের কেন্দ্রস্থলে প্রবেশ পথ এবং চারপাশে ৩০টি ভিক্ষু কক্ষ আছে।
ভূমি পরিকল্পনা ও স্থাপত্য কৌশলে বড়টির অনুরূপ ছোট বিহার । এর আয়তন পূর্ব-পশ্চিমে ৪৬ মিটার ও উত্তর-দক্ষিণে ৪৯ মিটার। চারপাশে ভিক্ষুদের বসবাসের জন্য ২৬টি কক্ষ এবং কক্ষগুলোর সামনের চারপাশে ঘোরানো বারান্দা আছে। পূর্ব পাশের কেন্দ্রস্থলে এর প্রবেশ পথ।
বিহার দুটির কাছেই উত্তরমূখী প্রত্নস্থল হচ্ছে একটি মন্দির। এর আয়তন পূর্ব-পশ্চিমে ২৭ মিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে ৩৮ মিটার। মন্দিরের কেন্দ্রস্থলে উঁচু বর্গাকার জায়গাটি মণ্ডপ। চারপাশে ধাপে ধাপে উন্নীত প্রদক্ষিণ পথ।
ভাসুবিহারে বিভিন্ন সময়ে খননের ফলে আট শতাধিক প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিসের সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ব্রোঞ্জের ক্ষুদ্রাকৃতির মূর্তি, বিভিন্ন রকম পোড়ামাটির ফলক, পোড়ামাটির সীলমোহর, পাথরের গুটিকা, লোহার রপরেক, মাটির গুটিকা, অলঙ্কৃত ইট, মাটির প্রদীপ ইত্যাদি।
ভাসু বিহারে প্রাচীন মন্দিরের কাঠামো।
ভাসু বিহার খননের ফলে প্রাপ্ত দুটি বিহারের মধ্যে অপেক্ষাকৃত বড় বিহারের উপরিভাগ।
ভাসু বিহার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিহার ইউনিয়নে আরেকটি প্রত্নস্থল আছে। ‘বিহার ধাপ’ নামের এ স্থাপনা স্থানীয়ভাবে তোতারাম পণ্ডিতের ধাপ নামেও পরিচিত।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮৬ সালের বিভিন্ন সময়ে এ জায়গায় খনন কাজ চলে। পরে ২০০৬-২০০৭ সালে খনন করে এখানে একটি বৌদ্ধ বিহার, একটি বৌদ্ধবিহারের অংশবিশেষ, দুটি বৌদ্ধ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষসহ নানান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শণের সন্ধান মেলে। এই বিহারের দৈর্ঘ্যে ৫৭ মিটার এবং প্রস্থে ৬১ মিটার। মাঝখানে একটি খোলা জায়গার চারপাশে ৩৭টি ভিক্ষু কক্ষ আছে। কক্ষগুলোর সামনে চারপাশে টানা বারান্দা। বিহারের পূর্ব দেয়ালের কেন্দ্রস্থলে এর প্রবেশ পথ।
বিহার ধাপে বিভিন্ন সময়ে খননের ফলে এক হাজারেরও বেশি বিভিন্ন ধরণের প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিসের সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ব্রোঞ্জ নির্মিত ধ্যানমগ্ন বুদ্ধমূর্তি, রৌপ্য মুদ্রা, পোড়া মাটির ফলক, পোড়া মাটির সীল মোহর, ধুপদানী, পিরিচ, মাটির পাত্র, অলঙ্কৃত ইট ইত্যাদি। নানান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুযায়ী এই প্রত্নস্থলের সময়কাল খৃস্টীয় ৭ম-৯ম শতক।
কীভাবে যাবেন
ভাসু বিহারের অপেক্ষাকৃত ছোট বিহার।
বগুড়া শহর থেকে অটো রিকশা নিয়ে সহজে যাওয়া যায় ভাসুবিহার। শহরের ঠনঠনিয় বাস স্টেশন কিংবা সাতমাথা থেকে জায়গাটিতে যেতে অটো রিকশা রিজার্ভ করে নিতে হবে। সকালে গিয়ে দুপুরের মধ্যেই জায়গা দুটি দেখে ফেরা সম্ভব। পথে দেখে নিতে পারেন মহাস্থানগড়ও। এক বেলার জন্য একটি অটো রিকশার ভাড়া ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা। নিজস্ব গাড়ি নিয়ে গেলে বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক ছেড়ে মহাস্থানের গড়ের সড়ক ধরে চলতে হবে।
ঢাকার কল্যাণপুর, গাবতলী থেকে বগুড়া যায় এস আর, টি আর ও ডিপজল পরিবহনের এসি বাস। মহাখালী বাস স্টেশন থেকে যায় শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের এসি বাস, ভাড়া ৫শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকা। এছাড়া কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে এস আর, শ্যামলী, হানিফ, কেয়া, ডিপজল ইত্যাদি পরিবহনের নন এসি বাসও যায় বগুড়া। মহাখালী বাস স্টেশন থেকে বগুড়া যায় এস আর, শাহ ফতেহ আলী ও একতা পরিবহনের নন এসি বাস। ভাড়া সাড়ে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা।
কোথায় থাকবেন
বগুড়া শহরে ভালো মানের আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল শহরের ছিলিমপুরে হোটেল নাজ গার্ডেন, ফোন- ০৫১-৬২৪৬৮, ৬৩২৭২। এছাড়া বনানীতে পর্যটন মোটেল, ফোন ০৫১-৬৭০২৪-২৭। চার মাথার মোড়ে হোটেল সেফ ওয়ে, ফোন ০৫১-৬২৬৯০, ৬৬০৮৭। বনানী ফুলদিঘীতে হোটেল সিস্তা, ফোন ০৫১-৬৬৯৬৫, ৬৬৩১০। এসব হোটেলে ৫শ’ থেকে ৯ হাজার টাকায় বিভিন্ন মানের বিভিন্ন রকম কক্ষ রয়েছে।
এখানে যা যা দেখতে পারবেনঃ
১/ প্রায় ৮০০ টির মত শামুখ খোল পাখি (শুধুমাত্র গরমের সময়)
২/ ৩০০ বছরের পুরনো ২ টি মসজিদ , মসজিদ টির ভিতরে অনেক কারুকার্য করা
৩/ বিহারীদের বাড়ি ( বিলাস ভবন স্থাপিতঃ ১৯৪২ )
৪/ বিহার তোতারাম পণ্ডিতের ধাপ যা এক সময় পো শি পো ছিল
৫/ ভাসুবিহার নরপতি রাজার ধাপ
৬/ ইংরেজ সরকার বিরোধী আন্দোলনের প্রধান নেতা প্রফুল্ল চাকী এর বাড়ি ও তার সৃতি সমুহ
৭/ পাকিস্তানের সাবেক প্রধান মন্ত্রী মোহাম্মাদ আলী এর বাড়ি
৮/ ৩০০ বছরের পুরনো ১ টি পাকুড় গাছ
৯/ নয়নাভিরাম নাগর নদী
১০/ এবং অপার সুন্দর গ্রামের দৃশ্য
প্রয়োজনীয় তথ্য
ভাসু বিহার ও বিহার ধাপ প্রত্নস্থল দুটি উম্মুক্ত। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত, যে কোনো সময়ই যাওয়া যায়। সপ্তাহের সব দিনই খোলা থাকে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এখানে সকাল এবং দুপুরের খাবার + ভ্রমন গাইড দেয়া হয়
যদি আপনারা আসেন গ্রুপ ট্যুরে খাওয়া দাওয়া এর জন্য যোগাযোগ করুন
আসার সাত দিন আগে জানাতে হবে
নবাব মোহাম্মাদ আলী খানা বাড়ী

Post Copied From:Khan Md Taufik Hasan‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

সার্কের রাজধানী মহাস্থানগড়

প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে আগ্রহী মানুষের জন্য মহাস্থানগড় এক হিডেন ট্রেজার। ভ্রমণের এই সেক্টরটা কে আমার সব সময় একটু বেশি রিচ মনে হয়। কারন এখানে ভ্রমণের সাথে সাথে করতে হয় প্রচুর পড়াশোনা। প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা দেখতে যাবার আগে তাই এর পিছনের ইতিহাস এর স্ট্রাকচার নিয়ে ভাল মত পড়ে যাওয়া উচিত। না হয় বাড়ীর পাশে ধানক্ষেত প্রত্বতাত্ত্বিক স্থাপনা একই মনে হবে। মহাস্থানগড়ের এই সীমানা প্রাচীর দিয়ে হাটার সময় আমার মনে হয়েছিল এই গুলা যেন আসলেই আমাদের জন্য নয়। আমাদের বিনোদনের অভাব তাই এখানে এসে বিনোদন খুজে বেড়াই। আমরা যে এক প্রাচীন সভ্যতার দাড়ে এসে দাঁড়িয়ে আছি সেইটা ভিতর থেকে কয়জন অনুভব করি। মৌর্য, গুপ্ত , পাল ও সেন রাজাদের রাজধানী মহাস্থানগড় আজও স্বমহিমায় তার অস্তিত্বের জানান দিছে। শুধু পিপাসুদের মনে সে পূর্ণরুপে ধরা দেয় বাকিদের কাছে রয়ে যায় শুধু বিনোদন হিসাবে।

কি ভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে বগুড়া বাসে। এরপর বাস/অটোতে করে মহাস্থানগড়।

POST copied From :Ashik Sarwar>Travelers of Bangladesh (ToB)