খুম খুম নাফাখুম….নাফাখুম…নাফাখুম

ইউটিউব এ একের পর এক ভিডিও দেখার পরই নাফাখুম এর প্রেমে পড়ে যায়।তখন সেমিস্টার ফাইনাল চলছিল।পড়ার ফাকে ফাকে ইউটিউব এ ঢুঁ মারাটা ই যেন নেশা হয়ে যাচ্ছিল।মনে মনে ভাবছিলাম বাংলাদেশের মানচিত্রে এত ভয়ংকর সুন্দর জায়গাও আছে।আর আমি এমনিতেও ভ্রমণ পিপাসু।যাইহোক অনেক দূরের পথ!একা একা তো আর যাওয়া যাই না তাই মনে মনে সঙ্গী খুঁজতে লাগলাম।আর আল্লাহর রহমতে সঙ্গী হিসেবে পেলাম আমার জীবনের সেরা ৭ জনকে।সব পরিকল্পনা শেষ।এখন শুধু পরীক্ষা শেষ আর ফরমালিটি ভাইভা শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা।পরীক্ষা শেষ ১১তারিখ।আর ভাইভার তারিখ জানালো ১৩ই ডিসেম্বর ২০১৭।মনে খুশি আর ধরে না!!ডিসিশন নিয়ে নিলাম ১৩ তারিখ রাতেই রওয়ানা হবো।আমি বেশি excited ছিলাম ত তাই মাঝখানের ২ রাত আর ঘুমই আসে না।আহারে আহারে কবে যাব পাহাড়ে!!!আগের দিন গিয়ে টিকিট কাটি।সিজন হওয়ায় টিকিট পাওয়াটা ঝামেলাই হয়।অনেক কষ্টে হানিফ পরিবহনের ৭ টা টিকিট পাই।ও হ্যা আমাদের মধ্যে ৪জন ছেলে আর ৩ জন মেয়ে ছিল।প্রথমে একটু ভয় কাজ করছিল।কিন্তু কথায় আছে বন্ধুত্ত্বে ভয়কে করো জয়।যাই হোক রাত ১০ টায় আমাদের বাস ছাড়ল সায়েদাবাদ থেকে।সকাল ৬.২০ এ আমরা বান্দরবন পৌছালাম।হোটেল ঠিক করে নাস্তা শেষ করে একটা জিপ রেডি করলাম সারাদিন শহরের আশে পাশে ঘুরার জন্য।১ম দিন:-রামজাদিবৌদ্ধ মন্দির,স্বর্ণমন্দির,মেঘলা,নীলাচল ঘুরা শেষ করে সন্ধ্যায় হোটেলে ফিরে আসলাম।রাতে ডিনার শেষ করে বার্মিজ মার্কেটে একটু ঢুঁ মারলাম।আর সাথে পরদিন নাফাখুম যাওয়ার জন্য থানচির উদ্দেশ্যে চান্দের গাড়ি ঠিক করে নিলাম।কথা হলো আমাদের যাওয়ার পথে শৈলপ্রপাত,চিম্বুকপাহাড়,নীলগিরি দেখিয়ে নিয়ে যাবে।হোটেলে এসে দিলাম ঘুম।
দিন ২:-সকাল ৬ টায় চান্দের গাড়ি আসল আমাদের নিতে।আমরা রওয়ানা হলাম।আমাদের মেইন টার্গেট যেহেতু নাফাখুম তাই মাঝখানের জায়গাগুলোতে বেশি সময় নষ্ট করি নাই।সকাল ১১ টার মধ্যে আমরা থানচি পৌছে যায়।ও হ্যাঁ নীলগিরি পার হবার পর থানচি যাওয়ার রাস্তাটা just ভয়ংকর ভয়ংকর সুন্দর!!আমরা থানচি পৌছে নৌকা রেডি করে ফেলি।যেহেতু আমরা ৭ জন ছিলাম তাই ২ টি নৌকা নেয়া লাগছে কারন এক নৌকায় ৫ জনের বেশি বিজিবি উঠতে দেয় না।শুরু হল আল্লাহর অপরূপ সাজানো বাগান দেখা।নৌকা চলে ২ পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে।কখনোও আবার বড় বড় পাথরের ফাকঁ দিয়ে।নৌকার রাস্তাটুকু এক কথায় অস্থির।২ ঘণ্টার মধ্যেই আমরা রেমাক্রি বাজার পৌছে যায়।আমাদের নৌকার মাঝিই আমাদের গার্ডের দায়িত্ত্বে ছিল।ও আমাদের জন্য রাতে থাকার এবং খাবার জন্য কটেজ(উপজাতিদের তৈরি কাঠের ২ তালা ঘর) রেডি করে। (জনপ্রতি থাকা ১৫০ আর খাবার একবেলা ১২০ফিক্সড)।ঐ রেমাক্রি বাজার থেকে নতুন গাইড ধরে নাফাখুম এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা শুরু ১ টায় সাথের জিনিস পত্র কটেজে রেখে।যেহেতু আমাদের সাথে মেয়ে ছিল তাই হাটার গতি কিছুটা শিথিল ছিল।শুরু হলো আমাদের ট্রেকিং।পাহাড় পেরিয়ে খালের কিনারা ঘেষে আমরা হাটতে থাকলাম।এখন শীতকাল তাই রাস্তা বেশি ভয়ংকর না কিন্তু পরিবেশটা ভয়ংকর সুন্দর!যাওয়ার পথে ২ বার পানি পাড় হতে হয়।খুব সাবধনে কারণ পাথুরে রাস্তা হওয়ায় খুব পিচ্ছিল।যাই হোক আমরা ৩.৩০ মিনিট এর মধ্যেই পৌছে যায় সেই কল্প-বাস্তবতায় যা কিনা কত রাত আমার চোখের ঘুম কেড়ে নিছিল।কত রাত আমি সপ্নের মধ্যেই চলে যেতাম ঐ জায়গায়।সৌন্দর্য কি বলব!! এক কথায় expectation এর চেয়ে ১০০ গুন উপরে।ভাগ্য খারাপ হলে যা হয়!দিনের দৈঘ্য ছোট হওয়ায় আমরা মাত্র ১৫ মিনিট সেখানে ছিলাম।গোসল করার সৌভাগ্য হয়নাই।আমরা রওয়ানা দিলাম।৩.৪৫ এ।৬.৩০ এর মধ্যেই আমরা কটেজে পৌছে গেলাম।রাতের কাহিনী পুরুই আমাদের অবাক করে দিয়েছে।আমার মনে হয় না এত দুর্গম জায়গায় এত ভালো থাকা আর খাওয়ার প্রত্যাশা কেউ করতে পারে।রাত কাটিয়ে সকালে ১৬ই ডিসেম্বর।(কিছু কথা শেষে লিখব বিজয় দিবস নিয়ে ওদের উদযাপন)।আমরা ৯.৩০ এ আমাদের নৌকায় চড়ে রওয়ানা দিলাম থানচির উদ্দেশ্য।যাওয়ার সৌন্দর্য আমাদের বিমোহিত করেছে।যদিও সাংগু নদীর অনূকূলে যাওয়াটা অনেক কষ্টসাধ্য।আমাদের মাঝিগুলা খুব সু্ন্দরভাবে ই নিয়ে গেছেন।হালকা কুয়াশা।পাহাড়ের বুকে মেঘ আটকে থাকা,রাজা পাথর দেখে,বড় পাথর দেখা,পাথরে দাড়িয়ে ছবি তুলা মানে awesome.তবে ভূলেও কেউ রাজাপাথরে উঠে ছবি তুলবেন না।স্থানীয়রা অনেক সমীহ করে চলে। আমরা ১১.৩০ এ থানচি বাজারে পৌছে যাই।সেখান থেকে বান্দরবনের গাড়ি ঠিক করি।চান্দের গাড়ি।মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে পাহাড়ি আনারসের টেষ্ট নেয়া থেকে কেউ বন্ঞ্চিত হবেন না।২.৪৫ এ আমরা বান্দরবন শহরে পৌছে যায়।ঢাকার বাসের জন্য যাই।বাস রাতের ৮ টায়।আমাদের হাতে enough সময় আছে।দুপুরের খাবার খেয়ে ২য় বারের মতো চলে যাই নীলাচলের সূ্র্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করতে।৭ টায় আমরা কাউন্টারে এসে রাতে খাওয়ার জন্য খাবার কিনে বাসে উঠে পড়ি।ভোর ৪ টায় আমরা সায়দাবাদ পৌছে যায়।
.
.
ট্যুর প্লান:
ঢাকা-বান্দরবান(রামজাদি বৌদ্ধমন্দির, স্বর্ণমন্দির,মেঘলা,নীলাচল,মিলনছরি,শৈলপ্রপাত,চিম্বুকপাহাড়,নীলগিরি)-থানচি-রেমাক্রি-নাফাখুম-ঢাকা
.
.
সময় লেগেছে:-
৩দিন ও ২রাত(যাওয়া আসার রাত ছাড়া)
.
.
খরচ পড়েছে:-
মাথাপিছু ৫৫০০
নৌকা+গাইড(তাইজুল:-০১৮২৩৬৭৯২৪০)
.
.
(আমার সম্পূর্ণ নিজের অভিমতে নিচের লেখাটি লিখলাম।দয়া করে কেউ ব্যক্তিস্বার্থে নিবেন না:-
.
.
উপজাতি ও বিজয় দিবস
♠এতো গভীরে মানুষ থাকতে পারে তা যখন চিন্তা করাই কঠিন সেখানে সবাইকে তাক লাগিয়ে ঐ মানুষ গুলোই এতো সুন্দরভাবে বিজয় দিবস উদযাপন করছে।আমি হতবাক।যেখানে তারা বেচেঁ থাকার জন্য রাতদিন সংগ্রাম করে।একটি দেশের নাগরিকের সুবিধা ত দূরে থাক যেখানে কিনা বিদ্যুত,মোবাইল নেটওয়ার্ক ই পৌছায়নি সেই তারাই বাংলাদেশের ৪৬ তম বিজয় দিবসকে চমৎকারভাবে পালন করছে।আর আমাদের মত মানুষ গুলো রাষ্টীয় দিবস গুলো ঘুমিয়ে কাটাচ্ছি।তাদের দেখে মনে হয় সমস্ত স্বাধীনতা আমাদের দেয়া হয়েছে আর আমরা তা মূল্যই দিচ্ছি না।সেলুট তাদের।তাদের ব্যবহার অতুলনীয়।একবার কাছ থেকে ওদের জীবনটা দেখে আসুন আমাদের জীবন সম্পর্কে ধারনা পাল্টে যাবে।আল্লাহর দরবারে লাখো কোটি শোকরিয়া আমাদের নিজেদের অবস্থান থেকে।উপজাতিরাও মানুষ।

Post Copied From:RI Rahad‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

পাহাড়ি জেলা বান্দরবান

অবকাশ যাপন, আনন্দ ভ্রমণ ও অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়দের জন্য আদর্শ স্থান পর্যটন শহর পাহাড়ি জেলা বান্দরবান। যান্ত্রিক জীবনের নানা কর্মব্যস্ততার ফাঁকে সুযোগ পেলেই ঘুরে আসুন পাহাড়ি এ জেলায়। যেখানে রয়েছে ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বসবাস। প্রকৃতি যেন সাজিয়েছে আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে। তাই সবুজে মোড়ানো প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয, অবারিত সবুজের সমারোহ এবং মেঘ ছোঁয়ার ইচ্ছে হলেই ঘুরে আসুন পাহাড়ি কন্যা বান্দরবানে।

#স্বর্ণমন্দির:
বান্দরবানের উপশহর বালাঘাটাস্থ পুল পাড়া নামক স্থানে স্বর্ণমন্দির এর অবস্থান যা মহাসুখ মন্দির বা বৌদ্ধ ধাতু জাদী নামে পরিচিত। নাম স্বর্ণমন্দির হলেও এখানে স্বর্ণ দিয়ে তৈরি কোন দেব-দেবীও নেই। এটি তার সোনালি রঙের জন্য বর্তমানে স্বর্ণমন্দির নামে খ্যাত। বান্দরবান জেলা সদর থেকে এর দূরত্ব ৪ কিলোমিটার। সুউচ্চ পাহাড়ের চুড়ার তৈরী সুদৃশ্য এ প্যাগোডা। এটি বুদ্ধ ধর্মালম্বীদের একটি পবিত্র তীর্থস্থান।
এখানে দেশ বিদেশ থেকে অনেক বুদ্ধ ধর্মালম্বী দেখতে এবং প্রার্থনা করতে আসেন। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম এই বৌদ্ধ ধাতু জাদী (Buddha Dhatu Jadi) কে স্বর্ণমন্দির (Golden Temple) নামকরন করা হয়। গৌতমবুদ্ধের সমসাময়িক কালে নির্মিত বিশ্বের সেরা কয়েকটি বুদ্ধ মুর্তির মধ্যে একটি এখানে রয়েছে। এই প্যাগোডাটি দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার সেরা গুলোর মধ্যে অন্যতম। এই সুউচ্চপাহাড়ের উপর দেবতা পুকুর নামে একটি পানি সম্বলিত ছোট পুকুর আছে।
বর্তমানে স্বর্ণমন্দির উপাশনালয়টি বান্দরবান জেলার একটি অন্যতম পর্যটন স্পট হিসাবে পরিগনিত হচ্ছে। এটি বৌদ্ধ ধর্মাম্বলীদের একটি উল্লেখযোগ্য উপাশনালয়। এটির নির্মাণশৈলী মায়ানমার, চীন ও থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ টেম্পল গুলোর আদলে তৈরী করা হয়। বান্দরবান ভ্রমণে আপনিও এই জাদী বা স্বর্ণমন্দিরটি একবার স্বচক্ষে দেখে আসতে পারেন। এই প্যাগোডা থেকে বান্দরবানের বালাঘাটা উপশহর ও এর আশপাশের সুন্দর নৈস্বর্গিকদৃশ্য দেখা যায়। এই প্যাগোডা একটি আধুনিক ধর্মীয় স্থাপত্যের নিদর্শন। প্রতিবছর নিদ্দিষ্ট সময়ে এখানে মেলা বসে। এ প্যাগোডাটি পুজারীদের জন্য সারাদিন খোলা থাকে। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। সড়কের টোল বাবদ ২০-৪০ টাকা দিতে হবে।

#প্রান্তিক_লেক:
প্রায় ২৫ একর জায়গা জুড়ে সৃষ্ট কৃত্রিম জলাশয় প্রান্তিক লেক। প্রান্তিক লেক এর আয়তন ২৫ একর হলেও পুরো কমপ্লেক্সটি আরো অনেক বড়। ৬৮ একর এলাকা জুড়ে পাহাড় বেষ্টিত ২৫ একরের বিশাল লেক যা বগা লেক এর থেকেও বড়। জেলার এক প্রান্তে অবস্থিত বলে এই লেকের নামকরণ হয় প্রান্তিক লেক। অপূর্ব সুন্দর এ লেকের চারিপাশ নানা প্রজাতির গাছগাছালিতে ভরপুর। পিকনিকের জন্য এটি অন্যতম লোভনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে সর্বত্র। এটি বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের পাশে হলুদিয়া নামক স্থানে অবস্থিত। মূল সড়ক থেকে এর দুরত্ব ৫ কিলোমিটার।
বান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রান্তিক লেক এর দুরত্ব ১৪ কিলোমিটার। লেকটিতে উম্মুক্ত মাটির মঞ্চ, পিকনিক স্পট, বিশ্রামাগার এবং একটি উঁচু গোল ঘর ইত্যাদি স্থাপনা রয়েছে। গোল ঘরে বসে লেকের সৌন্দর্য সহজেই উপভোগ করা যায়। লেকের নীল জল আর পাড়ের সবুজ বনানী এখানে তেরি করেছে একটি ভিন্ন মাত্রা। গাছের শীতল ছায়া আর নির্মল বাতাস আপনার সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দেবে। চাইলে লেকের জলে মাছ শিকার করতে পারবেন তবে অবশ্যই কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে। সেটা হবে আপনার জন্য একটি বাড়তি পাওনা। এছাড়া পরিবার পরিজন নিয়ে আয়েশ করে ঘুরে বেড়াতে পারেন প্যাডেল বোট নিয়ে। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা।

#মেঘলা_পর্যটন_কেন্দ্র:
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রটি বান্দরবন শহরের প্রবেশদ্বার বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের পাশে অবস্থিত। বান্দরবান জেলা শহরে প্রবেশের ৫ কি:মি: আগে মেঘলা পর্যটন এলাকাটি অবস্থিত। মেঘলায় চিত্তবিনোদনের বিভিন্ন উপকরণের মধ্যে রয়েছে- চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, সাফারি পার্ক, প্যাডেল বোট, ক্যাবল কার, উন্মুক্ত মঞ্চ ও চা বাগান। এখানে সবুজ প্রকৃতি, লেকের স্বচ্ছ পানি আর পাহাড়ের চূঁড়ায় চড়ে দেখতে পাবেন ঢেউ খেলানো বান্দরবানের নয়নাভিরাম দৃশ্য। বেশ কিছু উঁচু নিচু পাহাড় দ্বারা ঘেরা একটি লেককে ঘিরে গড়ে উঠেছে মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র। ঘন সবুজ গাছ আর লেকের স্বচ্ছ পানি পর্যটকদের প্রকৃতির কাছাকাছি টেনে নিচ্ছে প্রতিনিয়ত। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ৫০টাকা। আর যদি ক্যাবল কারে উঠতে চান জনপ্রতি ৪০টাকা করে লাগবে।

#নীলাচল:
বান্দরবান শহরের কাছে প্রায় দুই হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের উপর অবস্থিত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্র। শহর থেকে মাত্র ৫ কিমি দূরে অপরূপ সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি এই নীলাচল যা টাইগার পাড়া এলাকায় অবস্থিত। চারদিকে দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড়ের ঢালে কোথাও আঁকা-বাঁকা রাস্তা, পাহাড়ী পাড়া আর রূপালী নদী গুলো যেন শিল্পীর আঁকা ছবি। এই পাহাড় থেকে এক নজরে দেখা যাবে পুরো বান্দরবান শহর। সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখা যেতে পারে এখান থেকেও।
নীলাচল পাহাড়ি এলাকাটি অনেকেই স্বর্গভূমি বলে থাকেন। বিশেষ করে নীলাচলে সূর্যাস্তের দৃশ্য আমাদের মনে স্বর্গীয় অনুভূতি আনে। এই জায়গায় বর্ষা, শরৎ কি হেমন্ত— তিন ঋতুতে ছোঁয়া যায় মেঘ। শহর ছেড়ে চট্টগ্রামের পথে প্রায় তিন কিলোমিটার চলার পরেই হাতের বাঁ দিকে ছোট একটি সড়ক এঁকেবেঁকে চলে গেছে নীলাচলে। এ পথে প্রায় দুই কিলোমিটার পাহাড় বেয়ে তাই পৌঁছুতে হয়। মাঝে পথের দুই পাশে ছোট একটি পাড়ায় দেখা যাবে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর মানুষের বসবাস।
নীলাচলে (Nilachal) সম্প্রতি নতুন কয়েকটি জায়গা তৈরি করা হয়েছে পর্যটকদের জন্য। এখানকার টিকেট ঘরের পাশে ‘ঝুলন্ত নীলা’ থেকে শুরু করে ক্রমশ নীচের দিকে আরও কয়েকটি বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘নীহারিকা’ এবং ‘ভ্যালেন্টাইন’ পয়েন্ট। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সাজানো হয়েছে এ জায়গাগুলো। একটি থেকে আরেকটি একেবারেই আলাদা। একেক জায়গা থেকে সামনের পাহাড়ের দৃশ্যও একেক রকম। তবে মূল নীলাচলের সৌন্দর্য অনেক বেশি। এখান থেকে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় আরও ভালোভাবে।
নীলাচলের বাড়তি আকর্ষণ হল এখানকার রিসোর্ট। নাম নীলাচল স্কেপ রিসোর্ট। সাধারণ পর্যটকদের জন্য এ জায়গায় সূর্যাস্ত পর্যন্ত অনুমতি আছে। তবে রিসোর্টের অতিথিদের জন্য সর্বক্ষণই খোলা এ জায়গা। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ৫০টাকা। সড়কের টোল বাবদ ৩০-৬০ টাকা দিতে হবে।

#মিলনছড়ি:
মিলনছড়ি বান্দরবান শহর থেকে ৩ কিঃমিঃ দক্ষিণ পূর্বে শৈলপ্রপাত বা চিম্বুক যাওয়ার পথে পড়ে। এখানে একটি পুলিশ ফাঁড়ি আছে। পাহাড়ের বেশ উপরে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পূর্ব প্রান্তে অবারিত সবুজের খেলা এবং সবুজ প্রকৃতির বুক ছিঁড়ে সর্পিল গতিতে বয়ে যাওয়া সাঙ্গু নামের মোহনীয় নদীটি দেখা যাবে।

#চিম্বুক:
বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক পাহাড়ের অবস্থান। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ২৫ শত ফুট। চিম্বুক যাওয়ার রাস্তার দুই পাশের পাহাড়ী দৃশ্য খুবই মনোরম। যাওয়ার পথে সাঙ্গু নদী চোখে পড়ে। পাহাড়ের মাঝে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সড়ক দিয়ে এঁকেবেঁকে যাওয়ার সময় মনে হবে গাড়িতে করে বুঝি চাঁদের বুকে পাড়ি জমাচ্ছেন। ২৫০০ ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে এ অপরূপ বিচিত্র প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পাবেন চিম্বুকে।
পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে দেখতে পাবেন নিচে ভেসে যাচ্ছে মেঘের ভেলা। বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের পাশ দিয়ে ভেসে যাওয়া মেঘ দেখে মনে হয় মেঘের স্বর্গরাজ্য চিম্বুক। থানছি সড়কের দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় চিম্বুক (Chimbuk) অবস্থিত হওয়ায় এখানে হোটেল বা রেস্তোরাঁ গড়ে ওঠেনি। জেলা প্রশাসকের তত্ত্ববধানে একটি রেস্টহাউস আছে। জেলা প্রশাসকের অনুমোতিক্রমে রাত্রি যাপনের সুযোগ রয়েছে। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ২০টাকা।

#শৈল প্রপাত:
বান্দরবান রুমা রাস্তার ৮ কিলোমিটার দূরে শৈল প্রপাত অবস্থিত। এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সৃষ্টি। সারাক্ষণ ঝর্ণার হিমশীতল পানি এখানে বয়ে যাচ্ছে। এই ঝর্ণার পানিগুলো খুবই স্বচ্ছ। বর্ষাকালে এ ঝর্ণার দৃশ্য দেখা গেলেও ঝর্ণাতে নামা বেশ কঠিন। বছরের বেশিরভাগ সময় দেশী বিদেশী পর্যটকে ভরপুর থাকে। রাস্তার পাশেই শৈল প্রপাত এর অবস্থান হওয়ায় এখানে পর্যটকদের ভিড় বেশি দেখা যায়। এখানে দুর্গম পাহাড়ের কোল ঘেঁষা আদিবাসী বম সমপ্রদায়ের বম তরুণীরা আপনাকে স্বাগত জানাবে। এখান থেকে কিনে নিতে পারেন আদিবাসীদের হাতের তৈরি নানা পণ্য।

#নীলগিরি:
আকাশ ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছা পূরণ করতে চাইলে যেতে হবে বান্দরবনের নীলগিরি। নীলগিরি গেলে আকাশ নিজে এসে ধরা দেবে আপনার হাতে। মাথার উপর নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা খেলা করে নীলগিরির পাহাড়ে। অপরূপ সৌন্দর্য্যের এক নীলাভূমি এই নীলগিরি। নীলগিরির কারণে বান্দরবানকে বাংলাদেশের দার্জিলিং বলা হয়। শীতকাল এবং বর্ষাকাল দুই ঋতুতেই এইখানে ভ্রমণে অনেক বেশি আনন্দ। তবে বর্ষাকালে ভ্রমণে গেলে বেশী মজা পাওয়া যায়। কারণ এই সময়ে মেঘের অপরূপ নৃত্য দেখতে দেখতেই দিন বয়ে যায়।
যারা এডভেঞ্চার পছন্দ করেন তাদের জন্য রাতের নীলগিরি হতে পারে উৎকৃষ্ট স্থান। নীলগিরি যাওয়ার পথে আপনি দেখে যেতে পারেন বান্দরবানের অপার সৌন্দর্যময় শৈলপ্রপাত। জেলা সদর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের চূড়ায় নীলগিরির অবস্থান। নীলগিরি (Nilgiri) যেন প্রকৃতির এক অনন্য দান।
নীলগিরির কাছাকাছি রয়েছে বেশ কয়েকটি ম্রো উপজাতীয় গ্রাম। নীলগিরির একদম কাছে কাপ্রু পাড়া, আপনি সহজেই পরিদর্শন করে ম্রো আদিবাসী সম্পর্কে জানতে পারবেন। নীলগিরিতে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প। ফলে এখানে নিরাপত্তার কোন ঘাটতি নেই। আপনার যে কোন প্রয়োজনে সেনা সদস্যরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। দুর্গম পাহাড়ে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রে গড়ে তোলা হয়েছে আকাশ নীলা, মেঘদূত, নীলাতানা নামে পর্যটকদের জন্য সকল সুবিধা সম্বলিত তিনটি কটেজ। কটেজগুলো রাত্রি যাপনের জন্য ভাড়া পাওয়া যায়। এখানে রয়েছে দুইটি রেস্টুরেন্টও। পাহাড়ি পথ পেরিয়ে নীলগিরিতে পৌঁছেই রেস্টুরেন্টে পেট পুরে খাওয়া যায়। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ৫০টাকা। আর পার্কিং এর জন্য ১০০-৪০০টাকা গুনতে হবে।

#কীভাবে_যাবেনঃ
ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির গাড়ি ছেড়ে যায়। যেমন শ্যামলি, হানিফ, ইউনিক, এস আলম, সেন্টমা্টিনস পরিবহন- এর যেকোনো একটি বাসে চড়ে আপনি বান্দরবানের যেতে পারেন। রাত ১০ টা-সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কলাবাগান, সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে এসব বাস বান্দরবানের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। নন এসি বাসে জন প্রতি ভাড়া ৬২০-৬৫০ টাকা। এসি ৯৫০-১৫০০ টাকা।

#চাঁদের_গাড়িঃ
স্বর্ণমন্দির, নীলাচল, প্রান্তিক লেক আর মেঘলা ঘুরে আসতে খরচ পড়বে ২৫০০-৩০০০ টাকা (দামাদামি করে নিবেন)।
নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, মিলনছড়ি আর চিম্বুক ঘুরতে লাগবে ৫৫০০টাকার মত (প্যাকেজ অনুযায়ী)।

#খাবারঃ
তাজিংডং রেস্তোঁরা, ফিস্ট রেস্টুরেন্ট, কলাপাতা রেস্টুরেন্ট খাবারের জন্য বেশ ভালো। সকাল, দুপুর, রাত তিন-বেলার খাবার-ই খেতে পাবেন।

#কোথায়_থাকবেনঃ
বান্দরবানে অসংখ্য রিসোর্ট, হোটেল, মোটেল এবং রেস্টহাউজ রয়েছে। যেখানে ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় রাত্রিযাপন করতে পারবেন।

হলিডে ইন রিসোর্ট: মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের বিপরীতে ছোট্ট পাহাড়ের চূড়ায় হলিডে ইন রিসোর্ট। এখানে ছোটছোট অনেকগুলো কটেজ রয়েছে। ফোন-০৩৬১-৬২৮৯৬।

হিলসাইড রিসোর্ট: বান্দরবান-চিম্বুক সড়কের ৫ কিলোমিটার নামকস্থানে অবস্থিত মিলনছড়ি। এখানে রয়েছে উন্নত পরিবেশে রাত্রি যাপনের সু-ব্যাবস্থা। মোবাইল-০১৫৫৬৫৩৯০২২।

হোটেল ফোর স্টার: বান্দরবান শহরে অবস্থিত হোটেল ফোরস্টার। এখানে এসি এবং নন এসি দু রকমের রুম রয়েছে। হোটেলের প্রতিটি কক্ষে রয়েছে টেলিভিশন। ফোন-০৩৬১-৬২৪৬৬।
হোটেল থ্রী স্টার: এটি বান্দরবান বাস স্টপের পাশে অবস্থিত। নীলগিরির গাড়ী এই হোটেলের সামনে থেকে ছাড়া হয়। এটি ৮/১০ জন থাকতে পারে ৪ বেডের এমন একটি ফ্ল্যাট। প্রতি নন এসি ফ্ল্যাট-২৫০০ টাকা, এসি-৩০০০ টাকা। ফোন: ০১৫৫৩৪২১০৮৯ / ০১৮১৩২৭৮৭৩১।

হোটেল রিভার ভিউ : জেলা শহরের মধ্যে সাঙ্গু নদীর পাশ্ববর্তী প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে উঠেছে হোটেল রিভার ভিউ। এখানে নিজস্ব রেস্টুরেন্টও রয়েছে। ফোন-০৩৬১-৬২৭০৭।
আপনি চাইলে নীলাচল স্কেপ রিসোর্টে থাকতে পারেন। নীলাচল স্কেপ রিসোর্টে তিনটি কটেজে ছয়টি কক্ষ আছে। প্রতিটি কক্ষের ভাড়া ৩ হাজার টাকা। এছাড়া রিসোর্টের অতিথিদের জন্য ভালো মানের খাবারের ব্যবস্থা করে থাকেন কর্তৃপক্ষ। যোগাযোগঃ ০১৭৭৭৭৬৫৭৮৯।

এছাড়া হোটেল হিল ভিউ (ফোন: ০১৮২৮৮৬৬০০০), হোটেল হিলটন (ফোন: ০১৭৪৭৬২৬১১১) এ থাকতে পারেন যা কিনা একদম বাস স্ট্যান্ডের পাশেই।

#প্ল্যানঃ
-প্রথম দিন ভোরে বান্দরবন নেমে হোটেলে চেকইন। সকালের নাস্তা পেট ভরে করবেন। এরপর সোজা চলে যাবেন স্বর্ণমন্দির। এর পর প্রান্তিক লেক। সবুজে ঘেরা আর মাঝখানে স্বচ্ছ পানির এক সুন্দর পরিবেশে কিছু সময় কাটিয়ে এরপর যাবেন মেঘলাতে। সেখানে ঝুলন্ত ব্রীজে বসে আড্ডা মেরে নিবেন ছোটখাট। এরপর চলে যাবেন নীলাচল। চলবে পাহাড় উপভোগ সুর্যাস্ত পর্যন্ত ।

-দ্বিতীয়দিন ভোর বেলা (এই ৭-৮টা আর কী) নাস্তা করেই রওনা দেবেন নীলগিরীর উদ্দেশ্যে। যেতে পথেই পেয়ে যাবেন মিলনছড়ি । সেখানে সাংগু নদীর কলকল বয়ে যাওয়া দেখতে দেখতেপাহাড়ি উঁচু নিচু রাস্তা ধরে চলে যাবেন মেঘের রাজ্য নীলগিরিতে। মেঘবালিকাদের সাথে মিতালী আর মেঘবালকের সাথে জলকেলি করে ফিরে আসবেন চিম্বুক পাহাড়ে। এবার পাহাড়ের সাথে পাহড়ের মিলন দেখে সোজা চলে যাবেন উপজাতীয় গ্রাম । সম্ভব হলে সেখানে দু-একটি পাহাড়ি গান শুনে, চলে যাবেন শৈল প্রপাতের জলধারায় কলকল বয়ে যাওয়া জলের ধারে সেলফি আর ছবি তুলতে।

শরীর সুস্থ রাখুন, দেশকে ঘুরে ফিরে দেখুন! মনও সুস্থ থাকবে 🙂

Never lose hope, never stop travelling. 🙂

Post Copied From:Ariful Huda Ashik‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

ঘুরে এলাম বান্দরবন

মেঘলা Gold Tample নীলগিরি
চিম্বুক পাহাড় নীলাচল

দুই বন্ধু হটাত বেরিয়ে পরলাম।
তিন দিন আগে কুমিল্লা শহর থেকে পাদুয়ার বাজার। রাত ২ টার বাসে রওনা করলাম। রাত ৪ টায় চট্রগ্রাম। সেখান থেকে হোটেল মিডওয়ে সকালের নাস্তা করে এফবিতে পরিচয় সাহজাহান ভাই এর এগ্রো প্রজেক্ট দেখতে মটর সাইকেলে করে রওয়ানা হলাম। ভাই এর কলা লেবু আম কাঠাল বাগান গরু ছাগল মাছের প্রজেক্ট দেখলাম। বেশ গুছানো। বাগানের কারবাইড মুক্ত কলা খেলাম।

সেখান থেকে বান্দরবন সদর এর বাসে চেপে বসলাম দুই বন্ধু। মেঘলা তে গেলাম এন্ট্রি ৪০ টাকা + কেবল কার ৫০ টাকা।বেশ কিছু সিড়ি ভেঙে নিচে নামতে হয়।ঝুলন্ত ব্রিজ আছে দেখার মত। কেবল কারে চেপে বস্লাম দুই বন্ধু। তেমন ভাল লাগে নাই।সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে গিয়ে দম ফুরিয়ে আসছিল। আর ঘামে গেঞ্জি চুপচুপে।সেখান থেকে লোকাল বাসে চেপে বান্দরবন সদর আসি।

জুমার নামাজ পড়ে নীলগিরি যাওয়ার বাহন খুজতেসি। সিএঞ্জি ভাড়া চাইলো ৪০০ বাইক ২০০০/ বাসে যাব ঠিক করলাম। কাউন্টারে এসে দেখি টিকেট নেই।ফিরে এসে হোটেল নিলাম। বিকেলে ফ্রেস হয়ে কাছেই gold tample দেখতে গেলাম অটো রিক্সা তে করে। মন্দির অনেক উচুতে প্রায় ৬০-৮০ টা সিড়ি বেয়ে উঠতে হয়।
যাবার পথে চাকমা মারমা সুন্দ্রি ললনা দের দেখছিলাম 🙂

ফিরে এসে রাতের খাবার খেয়ে ঘুম।
সকাল ৪ টায় ঘুম ভেঙে যায়।নামাজ পড়ে রেডি হয়ে পাসের হোটেলে নাস্তা করে সাথে আরো ৮ জনের দল নিয়ে আমরা নীলগিরির পথে রওয়ানা দেই।মাঝে সেনাবাহিনী নাম ঠিকানা ফোন নাম্বার এন্ট্রি করে। খুব ভোরে রওয়ানা হয়ে বাম ডান যেদিকে তাকাই মুঘধতা যেন কমছিল না। মনে হচ্ছিল যেন মেঘের ভেলায় ভেসে বেড়াচ্ছি।
১ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে নীলগিরি পউছে যাই। চা পান করে ৫০ টাকা টিকেট কেটে নীলগিরি তে প্রবেশ করি।
খুব সাজানো গোছানো পরিপাটি।
সেনাবাহিনী এর জন্য স্পেশাল থেনক্স পেতেই পারে। প্রচুর ছবি তুলেছি। মেঘ ছিল আমাদের বেশ নিচে কারন আমরা ছিলাম ৩৫০০ ফুট উচুতে।
১ ঘণ্টা ঘুরাঘুরি করে আমরা রওয়ানা হই চিম্বুক পাহাড় এর উদ্দেশ্যে। চিম্বুক এর টিকেট ২০ টাকা। আমরা ছিলাম ২০ মিনিট।পাসে দোকান থেকে সবাই পাকা পেপে খরিদ করলো প্রতি কেজি ৪০ টাকা।

আমরা ১১ টার কিছু পর পথে একটা ঝরনার দেখা পাই।কেডস গেঞ্জি খুলে নেমে যাই। বেশ পিচ্ছিল পাথর। ৩ চারটা গোল বাথ ট্যাব এর মত। বহু দূর হতে পানি পড়ছে অবিরত। ২৫ মিনিট পর ফ্রেস হয়ে স্থানীয় পাহাড়ি দের হাতে বোনা মাফ্লার কিনলাম আম্মার জন্য।কলা খেলাম ৪ টা ১২ টাকা।
সদরে এসে হোটেল থেকে বেগেজ নিয়ে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাচল দেখার জন্য রওয়ানা করলাম। সিএনজি ভাড়া করে ৩০-৩৫ মিনিটে নিলাচল পউছে গেলাম। ৫০ টাকা এন্ট্রি টিকেট করে ভিতরে প্রবেশ করলাম। আমাদের সাথে কিছু স্কুল এর ছেলে মেয়ে প্রবেশ করে। বেশ সুন্দর ছিমছাম সাজানো। ছবি তুলতে তুলতে আমার মোবাইল এর চারজ শেষ এর দিকে। ৪০ মিনিট পর চট্রগ্রাম এর বাসের টিকেট করে সন্ধ্যা ৭ টায় চট্রগ্রাম পউছি। সেখান থেকে কুমিল্লা রাত ১১:৩০।

নেক্সট কেওকারাডং বগালেক ক্রেমারি নাফাখুম

Post Copied From:Syful Tonmoy Choudhury‎>Travelers of Bangladesh (ToB

আমিয়াখুম ও সাতভাইখুম ( বান্দরবান ) ভ্রমণ পরিকল্পনা ও খরচ

আমীয়াখুম ট্যুর প্লান ।

০। দিন রাতে ঢাকা টু বান্দরবান প্রতি সিট ভাড়া গাড়ির মান অনুযায়ী ৬২০টাকা,থেকে ৯০০টাকা পর্যন্ত ॥

১ম  দিনঃ ভোরে ঢাকার গাড়ি থেকে বান্দরবান শহরে নেমে নাস্তা করে ।থানছির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ।যাওয়ার পথে ,সৌন্দর্য পূর্ণ যেই দৃশ্যে গুলো দেখতে পাবেন ,শৈলপ্রপাত,চিম্বুক ,নীলগিরি ॥

থানছি যাওয়ার মাধ্যম ॥

চাঁদের গাড়ি অথবা লোকাল বাস॥ বান্দরবন টু থানছি লোকাল বাস ভাড়া প্রতি জনের ২০০টাকা,সময় ৪/৫ঘন্টা । অথবা চাঁদের গাড়ি রিজার্ভ করতে পারেন ভাড়া ৫০০০/৬০০০টাকা,যাত্রী সংখ্যা সর্বোচ্চ ১৪ জন । সময় ৩/৩:৩০ঘন্টা ॥ থানছি পৌঁছে গাইড নিতে পারেন ১জন গাইড চার্চ আলোচনা সাপেক্ষ ॥

৩দিনের জন্য শুকানো খাবার ও রান্নার প্রয়োজনিয় খাদ্য দ্রব্য কিনে নিতে পারেন।

বিকাল ৩টার আগেই (থানা+বিজিবির ) অনুমতি নিবেন,অন্যথায় থানছিতে রাত যাপন করতে হবে ।

দুপুরের খাবার খেয়ে প্রথমেই বোট ভাড়া করবেন পদ্ন মূখ যাওয়ার জন্যে । লোকাল বোটে জন প্রতি ৫০টাকা ,অবশ্য লোকাল বোট সবসময় পাওয়া যায় না সেক্ষেত্রে রিজার্ভ ভাড়া করতে হয় ১০০০/১২০০টাকা প্রতি বোট । পদ্ন মুখ থেকে পদ্ন ঝিরি ,রোনাজুন পাড়া,হরিচন্দ্র পাড়া হয়ে ৬/৭ ঘন্টা হেটে থুইষা পাড়ায় পৌছাবেন । থুইষা পাড়ায় রাতের খাবারের জন্য চাউল ,তরকারী কিনবেন আর গাইড রান্না করে খাওয়াবে ।থুইষা পাড়ায় থাকার ঘরভাড়া জন প্রতি ১৫০টাকা ।

২য় দিনঃ ভোরে ঘুম থেকে উঠে মোটামুটি খেয়ে আমিয়া খুমের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন । থুইষা পাড়া থেকে আমিয়া খুম যাওয়া আসা ৬/৭ ঘন্টা সময় লাগবে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই শুকানো খাবার ও পানির বোতল নিতে বুলবেন না ।৩/৩:৩০ ঘন্টা হাটার পর দেখতে পাবেন অবিশ্বাস্য সৌন্দর্য আমীয়া খুম । সাতভাই খুম ওভেলা খুম দুটিই পাশাপাশি দেখার মতো স্পট ,চাইলে ঐ দুটু খুমের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন । সূর্য ডুবার আগেই থুইষা পাড়ায় ফিরে আসবেন।

৩য় দিনঃ ভোরে মোটামুটি খেয়ে হাটা শুরু করবেন নাফাখুম হয়ে রেমাক্রীর উদ্দেশ্যে ।জিন্নাহ পাড়া, উল্হাউ পাড়া উলাচিং পাড়া হয়ে ৩ঘন্টা হাটার পর দেখতে পাবেন প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য নাফাখুম জলপ্রপাত ।নাফাখুমে ১ঘন্টা রেষ্ট নিয়ে হেডম্যান পাড়া ,পিনিডং পাড়া হয়ে ২ঘন্টা হেটে পৌছাবেন রেমাক্রী বাজার ।দুপুরের খাবার খেয়ে বোটে করে তিন্দু হয়ে থানছির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ।রেমাক্রী টু থানছি রিজার্ভ বোট ভাড়া ২০০০/২৫০০টাকা।বোটে করে থানছি আসার পথে দেখতে পাবেন মনোমুগ্ধকর দৃশ্যে তিন্দু বড় পাথর ।

থানছি পৌছা মাত্র সময় ও চাঁদের গাড়ি যদি ঠিকটাক থাকে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ,ভাড়া আসার মতই ।রাতে ঢাকার বাসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ॥

সরকারী ছুটির দিনে বান্দরবান টু থানছির চাঁদের গাড়ি ভাড়া ও থানছি টু রেমাক্রীর ট্রলার ভাড়া কম বেশি হতে পারে ॥

  • মোঃ হারুন রশীদ
  • পর্যটক গাইড
  • থানছি ,বান্দরবান
  • ফোন কল ;-01556705010
  • 01849556340