ভূ-স্বর্গ কাশ্মীর

মন কেড়ে নেয়া পেহেলগাম।
সবুজের স্বর্গে ঘেরা পেহেলগাম নামক ছোট একটি গ্রাম।
চারদিক কত শান্ত।
যেভাবে যাবেন- চট্টগ্রাম থেকে বাসে কলকাতা-কলকাতা থেকে জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস(ভাড়া ২৬০০ রুপি ততকাল) করে থার্ড এসি ,সময় ৫২ ঘন্টা চিৎপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে।জম্মু থেকে ৪ সিটার ৪০০০ রুপি দিয়ে পেহেলগাম সময় লাগে ১২ ঘন্টা।

Post Copied From:Mohammad Jobaed Khan‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

যারা শুধু শপিং এর উদ্দ্যেশে ভারত যেতে চান

(সবচেয়ে আরামদায়,দ্রুত ও কাস্টমস ঝামেলা বিহীন)

# রুট প্ল্যান= ঢাকা টু কলকাতা (বাই ট্রেন ১০ ঘন্টা)- কলকাতা টু দিল্লী (বাই ট্রেন ১৮ ঘন্টা)- দিল্লী টু ঢাকা (বাই এয়ার ২ ঘন্টা)

# অভ্যন্তরীণ যাতায়াত= ১) মেট্রো ট্রেন (এসি+খরচ কম)
২) উবার, উলা ট্যাক্সি (এসি+নিরাপদ+খরচ সীমিত+ চাহিবা মাত্রই এসে যাবে)

# শপিং= কলকাতায়- বড় বাজার ও নিউ মার্কেট। দিল্লীতে- কেরলবাগ মার্কেট, পালিকা বাজার, সদর বাজার, চাঁদনি চক।

Post Copied From:Salman Bhuiyan‎>Travelers of Bangladesh (ToB

গুলমার্গ

স্থান, তারিখঃ গুলমার্গ, কাশ্মীর, ২০/১১/২০১৭
কিভাবে যাবেনঃ ঢাকা-কলকাতা–দিল্লী-শ্রীনগর (বাই এয়ার), এরপর গাড়ীতে শ্রীনগর-গুলমার্গ। যাওয়ার আরো অনেক পন্থা আছে, তবে আমার সাথে ছোট বাচ্চা থাকায় বেশী সময় নিয়ে ট্রাভেলের রিস্ক নেয়া সম্ভব ছিল না।

Post Copied From:Taufikur Rahman‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

পিংকসিটি জয়পুর

ইন্ডিয়ার রাজস্থান প্রদেশের রাজধানী এবং সুসজ্জিত রঙ্গিন এই শহর স্থাপিত হয় ১৭৭২ সালে মহারাজা জয়সিং-2 এর সময়। ১৮৭৬ সালে Prince of Wales(Edward VII) কে স্বাগত জানানোর জন্য তৎকালিন রাজা Sawai Ram Singh পুরো শহরকে গোলাপি রঙ্গে রাঙ্গিয়ে তোলে। তাই একে পিংকসিটিও বলে।

সুন্দর এই শহর দেখার লোভ সামলাতে না পেরে তাই এই গরমের মধ্যেই বেরিয়ে পরেছিলাম। চার জনের আমাদের এই যাত্রা শুরু করি ঢাকা থেকে। প্রথমে ঢাকা থেকে বাসে কলকাতা, কলকাতা থেকে দূরন্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে নয়াদিল্লী এবং নয়াদিল্লীতে ট্রাভেল এজেন্সী থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা জয়পুর। উত্তপ্ত শুষ্ক গরম হওয়া আর রোদে পুড়ে যাওয়া গাছ আমাদের স্বাগত জানায়।

জয়পুরে দেখার মত অনেক জায়গা আছে যেমন Amer Fort/Amber Fort, Jaigarh Fort, Nahargarh Fort, Jal Mahal, Hawa Mahal, City Palace, Albert Hall Museum, Raj Mandir Cinema Hall, Jantar-mantar ও বেশ কিছু পাথর খোদাই করা মন্দির। এখানকার Fort গুলো এতো সুন্দর যে প্রতিটির উপরই অনেক কিছু বলা যায়। তবে Amer Fort/Amber Fort এর মধ্যে অন্যতম। এখানে এসে রাজাদের মত হাতির পিঠে করে Fortএ ঘুরে বেড়ানো এবং উটের পিঠে চড়ার সাধটাও পুরন হয়ে গেছে।

পরিবহনঃ দর্শনীয় স্থানগুলো একটু দূরে দূরে হওয়ার জন্য গাড়ী রিজার্ভ করে নিয়েছিলাম। এতে সময় এবং খরচ দুটিই বাঁচে এবং নিরাপত্তাও ছিল বিশেষ করে পাহাড়ের উপর Fort এ যাওয়ার সময়। স্থানীয় অটোতে করেও যাওয়া যাবে।

খরচঃ দুই দিনের ট্রিপে রাতে হোটেলে থেকে খাবার সহ আমাদের চার জনের জনপ্রতি খরচ 3200 রুপি (দিল্লী–জয়পুর-দিল্লী)। প্রতিটি স্থানে আলাদা টিকিট কেটে ঢুকতে হয়। ফরেইনার হিসেবে আমাদের টিকিট মুল্য বেশী গুনতে হয়েছে।

পরিশেষে স্থানীয় বাজার থেকে কেনাকাটা সেরে ফেরার পথে LASSIWALA® এর লস্যির স্বাদ এখনো জিভে লেগে আছে।

Post Copied From:Peejush Kar‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

আজমীর শরীফ, রাজস্থান

হযরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতি (র:) এর মাজার যা খাজা বাবার মাজার নামে বেশি পরিচিত। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে প্রতি বছর লক্ষ লোক এখানে আসে। ১১৯৪ সালে হিন্দু রাজা পৃথিরাজ চৌহান কে মুহাম্মদ ঘুরী তরাইনের যুদ্ধে পরাজিত করার পর ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য খাজা মইনুদ্দিন চিশতি (র:) আজমীর গমন করেন। প্রতি বছর ১-৬ রজব তার ওফাত দিবসে এখানে ওরশ অনুষ্ঠিত হয়।
কলকাতা বাস/ট্রেন/এয়ার এ আসবেন; কল্কাতা হতে ট্রেনে আজমীর ৩৪ ঘন্টা লাগবে (অনন্য এক্সপ্রেস) অথবা কলকাতা টু জয়পুর এয়ারে এসে ট্যাক্সিতে আজমির ১২৫ কিমি (জয়পুর হতে আজমির বাস ৪ ঘন্টা লাগে) অথবা দিল্লি এয়ারে/ট্রেনে এসে দিল্লি হতে আজমির ট্রেন যায় ৫ ঘন্টা লাগে। থাকার জন্য আজমিরে অনেক মধ্যম মানের হোটেল আছে। আজমিরে পাহাড়ি লেক আনা সাগর ঘুরতে ভুলবেন না, জয়পুর হতে আজমির রোডে গেলে মরুভূমির মত পরিবেশ দেখবেন।

Post Copied From:A Al Mamun Rony‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

সল্প খরচে লাদাখ কাশ্মীর ভ্রমন

খরচ>> ২৩০০০ রুপি কলকাতা টু কলকাতা
সময়> ১৩ দিন
৭ জনের ২টা গ্রুপ।

আমাদের রুট টা ছিল কলকাতা> দিল্লী> মানালি> লেহ> পাঙ্গন লেক> তুরতুক> নুব্রা ভ্যালি> শ্রীনগর> সোন্মারগ> পেহেল্গাম> গুল্মারগ> দুধপাত্রি।

১ম দিন > বিকেল ৫ টায় শিয়ালদাহ থেকে রাজধানী এক্সপ্রেস ছিল দিল্লী যাওয়ার জন্য এবং ভাড়া ছিল ২২০০ রুপি। এরপর দিন সকাল ১১ টার দিকে দিল্লী পৌছে গিয়েছিলাম।

২য় দিন > দিল্লীর পাহারগঞ্জ এলাকাই হোটেল ছিল সারাদিন রেস্ট নেওয়ার জন্য রেন্ট ৪০০ রুপি নিয়ে ছিল এবং জনপ্রতি পড়েছিল ১০০ রুপি, আর দুপুরে খাওয়া ১৫০ রুপি।
ওইদিন বিকেল ৫টাই বাস ছিল মানালির জন্য এবং ভাড়া ছিল ১৪০০ রুপি। রাতের খাওয়া ১৫০ রুপিতে হয়ে গিয়েছিল ভালমানের একটা হোটেল এ।

৩য় দিন > সকাল ৭টার দিকে মানালি পৌছে গিয়েছিলাম, হোটেল এ পৌছে রেস্ট নিয়ে সকাল ১১ টার দিকে লেহ এর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে ছিলাম। মানালি টু লেহ গাড়ি ভাড়া ছিল ২৫০০০ রুপি ১৪ সিটের গাড়ি, জনপ্রতি ১৮০০ রুপির মত। ওইদিন সন্ধায় জিস্পাতে চলে এলাম, রাতটা ওখানেই কাটিয়েছিলাম তাবুতে। ভাড়া ছিল ১৫০০ রুপি করে রাতের খাবার সহ। এক তাবুতে ৩ জন সহজেই থাকা যাই, জনপ্রতি পরবে ৫০০ রুপি।

৪থ দিন > খুব ভোরে আবার গাড়ি চলা শুরু করল, গন্তব্য লেহ সিটি, অনেক তাড়াতাড়ি বের হতে হয়েছিল কারন ওইদিন অনেকটা পথ যেতে হবে এবং অনেক উচু উচু পাস পার হতে হবে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে লেহ সিটিতে পৌছে গিয়েছিলাম। অনেক ভাল একটা হোম স্টে তে উঠেছিলাম, রুম ভাড়া ছিল ১৭০০ রুপি করে প্রতি রুম, রাতের খাবার এবং সকালের নাস্তা সহ। ৩ জন করে থাকা যাই এক রুম এ, জনপ্রতি ৫৫০+ রুপি।

৫ম দিন > এর আগের দিন টানা জার্নির কারনে কোথাও বের হয় নি, সারাদিন রেস্ট এ ছিলাম বলতে গেলে, দুপুরের আগে লেহ সিটি মার্কেট এরিয়াতে চলে গেলাম পারমিশন এবং গাড়ি ঠিক করতে।পারমিশন জনপ্রতি ৫৫০ রুপি এবং গাড়ি ভাড়া ১৫০০০ রুপি। জনপ্রতি টোটাল লেগেছিল ২৭০০ রুপি।

৬ষ্ট দিন > ২৭০০ রুপিতে পাঙ্গন লেক, তুরতুক, নুব্রা ভ্যালি ঘুরব কখন ভাবি নি, কিন্তু আসলেই ঘুরেছি, লেহ থেকে তুরতুক, নুব্রা, পাঙ্গন লেক যাওয়ার পারমিশন নিয়েছিলাম ৫৫০ রুপি এবং ৩ দিন এর গাড়ি ভাড়া ছিল জনপ্রতি ২১৫০ রুপি। সকাল ৭ টার দিকে রওনা দিয়েছিলাম পাঙ্গন লেক এর উদ্শ্য, সকাল ৮টার দিকে ড্রাইভার আমাদের নিয়ে গেল 3 Idiots স্কুল এ, আধা ঘণ্টার মতো সে স্কুল এ ছিলাম, ঘুরে দেখলাম। আবার রওনা দিলাম লেকের উদ্দেশ্যে, ১২টার দিকে পৌছালাম #চাংলালা_পাস, হালকা চা নাশতা করে আবার গাড়ি চলা শুরু করল। রাস্তা, প্রকৃতি সব কিছু বলতে গেলে এক কথায় অনেক সুন্দর। দুপুর ২টার কিছু আগে পৌছে গেলাম পাঙ্গন লেক। দুপুরের খাওয়া সেরে ছবি তোলা, ঘুরে দেখলাম সব কিছু।

বিকেলের দিকে পাঙ্গন লেক থেকে কিছু ১০ মিনিট দুরুত্তে কটেজ এ ছিলাম রাতটা, ভাড়া নিয়ে ছিল ১৫০০ রুপি করে, রাতের খাওয়া এবং সকালের নাস্তা। কটেজ লেক থেকে খুব কাছেই ১ মিনিট লাগে।

৭ম দিন>খুব ভোরে বের হয়েছিলাম, গন্তব্য পাকিস্তান সীমান্তঘেঁষা গ্রাম তুরতুক দেখতে। আবার সেই সুন্দর পাহাড়ি রাস্তা, তবে এইদিন অনেকটা পথ লেহ শহরের দিকে আসতে হয়, মাঝখানে পরে #সিয়ক বাইপাস। এই #সিয়ক বাইপাস ধরে আমাদের গাড়ি এগিয়ে চলল তুরতুক এর দিকে। পথের মাঝে অনেক পাহাড়ি ঝর্না, নদী, ছবি তোলার অসংখ্য জায়গা আছে। আশা করি ভালোই লাগবে সবার। দুপুরের দিকে পৌছে গেলাম #নুব্রা ভ্যালীর কিছু আগে, দুপুরের খাবারটা #বুফেদিয়ে সেরে নিয়েছিলাম তারপর খানিকটা রেস্ট, আবার গাড়ি চলতে শুরু করল। কখনো পাহাড়ের ধার ঘেঁষে আবার কখনো নদঈর পাশ দিয়ে, কখনো উঁচু পাহাড় বেঁয়ে বিকেলবেলা তুরতুক পৌছে গেলাম। গাড়ি থেকে নেমেই হোমস্টে তে উঠলাম, সাজানো বাড়ি, জনপ্রতি ৩৫০ রুপি রাতের খাবার এবং সকালের নাস্তা।

৮ম দিনঃ খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেই বের হলাম #তুরতুক গ্রাম দেখার জন্য, পাহাড় ঘেঁষা পাথরের বাড়ি, সবজি বাগান, আখরোট এর বাগান,ঝর্না,গ্রাম্য প্রকৃতি সব মিলিয়ে অনেক সুন্দর। ৯ টার দিকে ঘুরে এসেই সকালের খাবার খেয়ে বের হয়ে আসলাম তুরতুক গ্রাম থেকে। এইবার আমাদের গন্তব্য #নুব্রা ভ্যালীর #মরুভুমি এবং #দুই কুজ বিশিষ্ট উঠ। ২০০ রুপি করে জনপ্রতি উঠের পিঠে করে ঘুড়া যাই। নুব্রা ভ্যালী ঘুড়া শেষে অল্প কিছু দুরের #ডিস্কিট ্মনেস্ট্রি। উঁচু পাহাড়ের উপর বিশাল বৌদ্ধ মন্দির ও মূর্তি। ৩০ রুপি দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করে দেখতে পারেন #নুব্রা ভ্যালীর আসল সৌন্দর্য আর বৌদ্ধ মন্দির ও মূর্তি। মন্দির ঘুরা শেষে দুপুরের খাওয়াদাওয়া করলাম। এই দিনের মুল আকর্ষণ ছিল #খারদুংলা_পাস যার উচ্চতা ১৮৩৬০ ফুট। খাওয়া শেষে গাড়ি খারদুংলার উদ্দেশে যাত্রা করল, তখনি কিছুটা অনুভব করছিলাম আমারা উপরের দিকে উঠতেছি, বাতাস কনকনে ঠান্ডা আর আঁকাবাঁকা পাহাড়ি বাঁক বেঁয়ে ২ ঘন্টা পর পৌছে গেলাম খারদুংলা।

ইয়েস পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু রাস্তা, গাড়ি থেকে নামতে টের পেলাম কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস আর ধবধবে সাদা বরফ, ছবি তুললাম, আর্মি ক্যাম্পে চা খেলাম আর কনকনে ঠাণ্ডা অনুভব করলাম মন ভরে। বলা হয়েছিল খারদুংলা থেকে যত তাড়াতাড়ি পারা যাই নিচের দিকে নেমে যেতে, আশলেই ঠাণ্ডা আর অক্সিজেন সল্পতা। আর মাত্র ৩০ কি মিঃ দূরে লেহ সিটি। ১০ মিনিটের মত ছিলাম খারদুংলাতে, তারপর ১ ঘন্টা পর লেহ শহরে চলে আসলাম।

#লাদাখ গুরবেন এইভাবে>>
১ম দিন পাঙ্গন লেক
২য় দিন নুব্রা ভ্যালি ক্যামেল রাইডিং করে তুরতুক
৩য় দিন তুরতুক ঘুরে খারদুংলা ঘুরে লেহ সিটি

৯ম দিনঃ আমাদের আজকের টার্গেট ছিল লেহ থেকে কাশ্মীর চলে যাব।তাই আগের দিন রাতে গাড়ি ঠিক করে রেখেছিলাম, সকাল ৬টাই গাড়ি এসে হাজির। ঝটপট উঠে পরলাম কারন আজকে আমাদের ১২ ঘন্টা জার্নি করতে হবে। সকালের লেহ সিটি ছেড়ে লেহ কাশ্মীর হাইওয়েতে চলে আসলাম। ৯টার দিকে সকালের নাস্তা করলাম হাইওয়ের পাশেই দোকানে, নামটা মনে নেই। দুরন্ত গতিতে গাড়ি ছুটে চলছে কাশ্মীর এর দিকে, ১টার দিকে আমারা কার্গিল পৌছে গেলাম, গাড়ি থেকে কার্গিল শহরটা দেখে নিলাম। তার কিছু পর ড্রাইভার গাড়ি থামাল #কারগিল_ওয়ার_মেমোরিয়াল এর সামনে। পাসপোর্ট দেখিয়ে এন্ট্রি করে ঘুরে দেখলাম পুরোটা, আবার গাড়ি ছুটে চলল কাশ্মীর এর দিকে, ঘন্টাখানেক চলার পর ইন্ডিয়ান আর্মির চেকপোস্ট পড়বে, সেখানে আপনাকে পাসপোর্ট এন্ট্রি করে নিতে হবে, এইটাকে বলা হয় কাশ্মীর ঢুকার মুখ। আশে পাশে দেখবেন ভেড়ার পাল, রাতের বেলা নাকি এইসব জাইগায় অনেক বন্য প্রাণী দেখা যাই।
জোজিলা পাস অল্প কিছু দুরে দেখতে পারবেন এই রাস্তাই, অনেক ভয়াবহ একটা রাস্তা, খুব সাবধানে গাড়ি চালাতে হয়, পাথুরে আঁকাবাঁকা রাস্তা, ধিরে ধিরে আপনি ১০০০০+ ফুট থেকে নিচে নেমে যাবেন। যাওয়ার পথেই বিখ্যাত #সোন্মারগ পড়বে। বরফে ঢাকা পাহাড়, ঘন পাইন বন আশা করি ভালো লাগবে সবার।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে পৌছে গেলাম কাশ্মীর শহরে, ডাল লেক পাশ ধরে এগিয়ে চলল গাড়ি, #খায়াম_চক এরিয়াতে ছিলাম আমরা।

জনপ্রতি ১৯৭০ রুপি তে কাশ্মীর ভ্রমনঃঃ (লেহ টু কাশ্মীর ৮০০০ রুপি, সিটি ট্যুর ১২০০ রুপি, পেহেল্গাও, দুধপাত্রি, গুল্মারগ গাড়ি ভাড়া ৪৬০০ রুপি)।
হোটেল ভারা ছিল ৮০০ রুপি করে #গিজার#wifi সহ।

১০ম দিনঃঃ আজকে আমাদের প্লান কাশ্মীর সিটি ট্যুর, ১১টার দিকে গাড়ি ছাড়ল। প্রথমে গেলাম ডাল লেকের পাশের শিব মন্দিরে, তারপর কাশ্মীর বোটানিক্যাল গার্ডেন, মুঘল গার্ডেন, দরগাহ, কাশ্মীর ইউনিভার্সিটি এই সব দেখে বিকে ৪টার দিকে হোটেল এ ফিরে এসেছিলাম। বিকেল্টা রেস্ত নিয়ে সন্ধ্যার দিকে গিয়েছিলাম #লাল চক এ, যেখানে শাল, ড্রাই ফ্রট সব কিছু পাইকারি দামে মিলবে।

১১তম দিনঃঃ সকাল ৭টার পর বের হয়েছি #পেহেল্গাম যাওয়ার জন্য, প্রায় ১০০ কি মিঃ দুরে শ্রী নগর থেকে। ৯টার দিকে কোন এক আপেল বাগানের পাশের ঢাবায় আমাদের নাস্তার বিরতি ছিল। নাস্তা করে ঘুরে দেখলাম আপেলের বাগান, চাইলে আপনি আপেল কিনতে পারবেন ২০-৩০ রুপি দিয়ে আবার ২০ রুপি করে আপনার সামনে বানানো আপেলের জুস খেতেও পারবেন।
আর যাওয়ার পথে অসংখ্য আপেল বাগান তো আছেই। ১০টার দিকে পৌছে গেল্লাম #পেহেল্গাম। গাড়ি থেকে নেমে হালকা চা খেয়ে ঘোড়া ঠিক করতে গেলাম, ১০০০ রুপি করে চাই জনপ্রতি, অনেক দরদাম করে ৫০০ রুপি দিয়ে ঠিক হল আর জ্যাকেটের জন্যা আলাদা ৫০ রুপি। ঘটাখানেক ঘন পাইন বনের ভিতর দিয়ে ঘোড়া করে চড়ার পর #বাইসারন চলে এলাম জাকে #মিনি_সুইজারল্যান্ড বলে। গভীর পাহাড়ের মধ্যে বিশাল সমতল জাইগা, ভালো লাগবে সবার #ঘোড়ায় চড়া, পাইনের জঙ্গল সবকিছু।
দুপুরের খাবার খেয়েই আবার গাড়ি ঠিক করতে হল #অরু_ভ্যালি এবং #বেতাব_ভ্যালি যাওয়ার জন্য কারন কাশ্মীর এর কোন গাড়ি এইখানে চলতে দেওয়া হয় না, লোকাল গাড়ি নিতে হবে ৮ সিটের। ট্যাক্সি ইউনিয়ন আছে সেখান থেকে ভারা করতে হয়। ভারা নিয়েছিল ১৩০০ রুপি। আরেক সুন্দর রাস্তা হল এই দুই ভ্যালি যেতে। ঘুরে দেখতে পারেন বিভিন্ন হিন্দি ছবির অনেক শুটিং এইসব ভ্যালিতে হয়েছিল। যারা পেহেলগাঁও থাকতে চান তারা #সরগ_প্যালেস এ থাকতে পারেন ভাড়া ১০০০ থেকে ১৫০০ রুপি।
গুল্মারগঃঃ গুল্মারগ এ ডে_ট্রিপ নিতে পারেন, সকালে বের হলে ঘন্টা দুয়েক এর মধ্যে পৌছানো যাই, সেখান থেকে হেঁটে বা ঘোড়াই ছড়ে গন্ডোলা রাইড এ। যেখানে ১ম ফেইজ এ নিবে ৭০০ রুপি যেখানে আপনি গুল্মারগ থেকে কুংডর নামক জাইগায় পৈছাবেন, আবার ২য় ফেইজে নিবে ৯০০ রুপি যেখানে আপনি কুংডর থেকে আওরপথ যাবেন। ২ম ফেইজে গেলেই আপনি ভালোই বরফ পাবেন, আশে পাশে অনেক ঘুরার জাইগা রয়েছে। আর সব টিকেটে আপনি যেতে ও আস্তে পারবেন।
লেহ থেকে আসার পথে সোন্মারগ দেখেছিলাম বলে আমরা আর যাইনি, শিকারা রাইড করেছিলাম ৩০০ রুপি দিয়ে ২ ঘনটার জন্য বিখ্যাত ডাল লেকে।
সবচেয়ে মজার জার্নি হল ১০০ রুপি দিয়ে সিটি ভ্রমন টুরিস্ট বাসে করে।

কাশ্মীর থেকে যদিও আমি এয়ারে চলে এসেছি, এয়ার ছাড়া আসার উপায় হল প্রাইভেট গাড়ি, বাস, শেয়ার জিপ।

শ্রী নগর এর যেকোন যাইগা হতে জেতে হবে TRTC বাস কাউন্টার ভারা ৪০/১০০ রুপি নিবে অটো। TRTC থেকে বাস ছাড়ে সকাল ৭ টার দিকে জম্মুর জন্য ভাড়া ৫৬০ রুপি। আবার শেয়ার জিপ এ করেও আসা যাই ৯০০ থেকে ১২০০ রুপি নিবে। জম্মু থেকে আপনি সোজা হিমগিরি এক্সপ্রেস করে কলকাতা আস্তে পারবেন সময় লাগবে ৩৬+ঘণ্টা। ভাড়া নিবে ১৯৮০ রুপি।
অথবা জম্মু থেকে দিল্লী, দিল্লী থেকে কলকাতা।

#অনেকে লেহ বা কাশ্মীর একা বা দুইজন বা তিন জন মিলে ঘুরতে জেতে চান, তাদের জন্য কিছু তথ্য>

আপনি বা আপ্নারা যদি বাজেট ট্রাভেলার হন কলকাতা থেকে দিল্লী স্লিপার এ করে আসুন ভাড়া ৬০০ থেকে ১২০০ রুপি পরবে, দিল্লী থেকে মানালি অনেক বাস ছেড়ে যাই ভাড়া ৫৭০ রুপি থেকে ১৪০০ রুপি পড়বে, মানালি থেকে লেহ এর জন্য বাস ছাড়ে ভাড়া ৫০০++ মনে নেই আসল টা কত। মাঝে একটা রাত কেলং স্টে করবে সেতার খরচ আপনার। আপনি দ্বিতীয় দিন রাতে লেহ তে পৌছে যাবেন। আপনি বা আপ্নারা যেহেতু দুইজন বা তিন জন তাই আপ্নারা কখনো পুর একটা গাড়ি ভাড়া নিবেন না, সেক্ষেত্রে লেহ মল রোড এ অনেক ট্রাভেল এজেন্সি আছে যারা লোক খুজে অনেকটা এই ভাবে> 2 person looking for pangon lake /tsomoriri /date / time …. আপ্নারা অদের সাথে কথা বলে সিডিউল মিলিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।
আর বাই রোড এ লেহ আসতে না চাইলে এয়ারে আসতে পারেন, ভাড়া ৩০০০++ রুপি যদি মাস খানেক আগে টিকেট কাটেন।

#কাশ্মীর

কাশ্মীর এর শ্রীনগর হল মেইন পয়েন্ট, এই খান থেকে আপনি পেহেলগাও, গুল্মারগ, সোন্মারগ জেতে পারেন, যদি আপনি একা বা দুইজন বা তিন জন হন তাহলে আপনি বা আপনারা #অটো নিয়ে সিটি ট্যুর দিতে পারেন দরদাম করতে পারলে ৪০০ থেকে ৫০০ রুপিতে হয়ে যাবে। আর পেহেল্গাও যেতে হলে আপনার TRTC বাস কাউন্টার এ এসে আপনি শেয়ার ট্যাক্সি পাওয়া যাই, তবে ২ ভাগ করে যেতে হয় ভাড়া ২০০ রুপি পড়বে।

আর সেটা যদি করতে না চান তাহলে আপনি সোন্মারগ , পেহেল্গাও এর জন্য অটো ভাড়া নিতে পারেন, আমাকে #সিটি ট্যুর আর #সোন্মারগ আর পেহেল্গাও এর ৩ দিনের জন্য ৩০০০ রুপি চেয়েছিল, আশা করি দরদাম করলে আর কমানো যাবে। গুল্মারগ কি কারনে যেন যাবে না বলেছিল।

নোটঃঃ

১। গ্রুপে যাবেন সবাই, তাই সবাই নিজেদের এবং সবার দিকে লক্ষ্য রাখবেন, কারন রাস্তা অনেক দুর্গম, আপনি সুস্থ আছেন বলে আরেকজন অসুস্থ হতে পারেনা এমনটা ভাব্বেন না, হয়ত দেখবেন আপনি অসুস্থ হয়ে পরলেন তখন আপনার গ্রুপের লোকেরাই আপনার দেখভাল করবে পরিবারের মত।

২। ঠাণ্ডা অনেক বেশী তাই একটা ভারি শীতের কাপড়, একটা হালকা এবং হাত মোজা, টুপি, পায়ের মোজা নিবেন অবশ্যই একটা মাস্ক।

৩। চেষ্টা করবেন বাইরের পানি না খেতে।

৪। বেশী করে লিপ জেল, ঠাণ্ডার ওষুধ, বমির জন্য #ডায়ামক্স অর #এসিমক্স খাবেন। কর্পূর নিবেন অক্সিজেন সল্পতাই কাজে লাগবে।

৫। লাদাখে পৌছে একটা দিন রেস্ট নিবেন, কারন আগামি তিন দিন আপনার অনেক জার্নি করতে হবে।

৬। লেহ তে পৌছে ডে ট্রিপ না নিয়ে হেঁটে হেঁটে ঘুরে দেখতে পারেন অনেক অনেক বেশী ভালো লাগবে, আবার বাইক ভাড়া নিয়েও ঘুরতে পারেন, হাফ ডের জন্য ৫০০ রুপি নিবে।

৭। পুরো জার্নিতে খাওয়ার খুব কস্ট হবে, চেস্টা করবেন শুখনো খাবার রাখতে।তাতে আপনার টাকা বাচবে এবং শরীর।

৮। গাড়ি ঠিক করতে কখনো হোটেল মালিকের উপর নিরভর করবেন নাহ, কারন সে একটা কমিশন পাবে কি দরকার সেটা দেওয়ার। লেহ মল রোড এ অনেক গাড়ি আছে, দরদাম করে ঠিক করবেন।
আমাদের লেহ টু পাঙ্গন লেক, নুভ্রা ভ্যালি, তুরতুক মানে দুই রাত তিন দিন এর জন্য ১৫০০০ রুপি নিয়েছে, #জাইলো ৭ সীটের। যেখানে হোটেল মালিক ১৬৫০০ চেয়েছে। কিন্তু ইউনিয়ন প্রাইস ছিল ১৯২০০ রুপি কিন্তু তাতে ১৫% ছার দে সবাই।

৯। লেহ থেকে শ্রী নগর আপনি বাস এ করে আস্তে পারবেন আবার শেয়ার ট্যাক্সি করে আবার গাড়ি ভাড়া করে। আমরা এসেছিলাম ৮সিটের গাড়ি ভাড়া করে, আর ভাড়া নিয়েছিল ৮০০০ রুপি, যেখানে হোটেল মালিখ এবং ইউনিয়ন কে ১১০০০ রুপি বলে ফেলেছিলাম।

JK01, JK02, JK07 এই নাম্বার এর গাড়ি গুলোর খোঁজ করবেন, ট্যাক্সি স্ট্যান্ড এ বা পেট্রোল পাম্প এ গেলে পাবেন। এই গুলো শ্রী নগর এর গাড়ি, জারা ৭০০০ রুপি পেলেও আপনাকে নিয়ে যাবে।

১০। আগে থেকে ট্রেন টিকেট বা বিমান টিকেট কেটে ফেলবেন তাতে দাম অনেক কমে পাবেন।

১১। খাবার খরচ জনপ্রতি ৩০০ রুপি করে রাখবেন প্রতিদিনের জন্য।

Post Copied Post:Suvra Dhar>Travelers of Bangladesh (ToB)

কাশ্মীর

ওয়াটার স্কি নিতান্তই একটি বিপদজনক কাজ। আর এই কাজটি বেশ আনন্দের সাথেই সম্পন্ন করেছিলাম কাশ্মীরের ডাল লেকে .অফ সিজন বলে খরচ কম পড়েছিল ,মাত্র ৩০০ রুপি .
ছবির কোনো সফট কপি আপনাকে দেয়া হবে নাহ, তাদের কাছ থেকেই প্রিন্ট করে নিতে হবে . 6R দুটো ছবি প্রিন্ট করতে ৩০০ রুপি লেগেছে .

কাশ্মীরে গেলে অবশ্যই ওয়াটার স্কি করবেন মাস্ট , অসাধারণ এক্সপেরিয়েন্স হবে .

যেভাবে সহজেই যাবেন কাশ্মীর –

ঢাকা টু কলকাতা বই রোড/এয়ার /ট্রেন .
কলকাতা থেকে ট্রেনে জম্মু ,জম্মু থেকে শেয়ার টেক্সী করে শ্রীনগর . অথবা কলকাতা থেকে ফ্লাইটে সরাসরি শ্রীনগর .

Post Copied From:

Rezwan Karim‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

লাদাখের বুকে ১ টুকরো বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা >ট্রেনে জম্মু>জম্মু থেকে পেহেলগাম>পেহেলগাম থেকে শ্রীনগর>শ্রীনগর থেকে গাড়িতে লেহ…..
মোট খরচ ৪০ হাজার(জনপতি) .. ৩ জন ছিলাম গ্রুপ এ..
ছবিটি ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তোলা..

Post Copied From:Mohammad Jobaed Khan‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

ঢাকা-কলকাতা-দিল্লী-মানালী-সিমলা-আগ্রা ট্যুর সমন্ধে আমার অভিজ্ঞতা

আমার মত যারা প্রথম বিদেশ ভ্রমন করার চিন্তা করছেন তারা বিশেষ করে অনেক দুশ্চিন্তায় থাকেন বাজেট কত লাগবে, ট্যুর প্লান কি করব, নিরাপত্তার ইস্যু, কোথায় থেকে কিভাবে কোথায় যাব, সব চিনব তো? আর যদি সাথে ফ্যামিলি নিয়ে যান তাহলে তো কথাই নেই। আমি আমার অয়াইফ নিয়ে উক্ত রুটে ভ্রমন করেছি। এবং আল্লাহর রহমতে বেশ ভালভাবেই সম্পন্ন করে গত ৩১ শে অক্টোবর দেশে ফিরেছি। যাবার আগে কত যে চিন্তা ভাবনা করেছি তার ইয়ত্তা নেই। এজেন্ট এর মাধ্যমে যাব কিনা, একা এত সব কিছু ম্যানেজ করতে পারব কিনা, সাথে মেয়ে মানুষ থাকবে আবার ইন্ডিয়ার এখন যা অবস্থা দিল্লী তো ধর্ষনের মাপকাঠিতে বেশ উপরেই আছে। বলে রাখা ভাল, আমার ফেসবুক একাউন্ট ছিল না, টিওবি সমন্ধে একজনের কাছে শুনার পর একাউন্ট ওপেন করি এবং টিওবিতে যুক্ত হই। তারপর সবই ইতিহাস। এই ছেলে একাই পুরো ট্যুরের প্লান করে বউকে নিয়ে কোনো এজেন্ট ছাড়াই দিব্যি সফল ট্যুরের বাস্তবায়ন করতে পেরেছে।
আমার পোষ্টটি বিশেষ করে তাদের কাজে আসবে যারা খরচের চিন্তা না করে ফ্যামিলি নিয়ে সুন্দর একটা রিলাক্স ট্যুর দিতে চান।
প্রথমেই আসি রুট প্লান সমন্ধে। দেখুন যে রুটের কথা আমি বলছি সেই রুটে অনেক ভাবে ভ্রমন করা যেতে পারে। সম্ভাব্য প্লান গুলো এই রকম হতে পারে;
 ঢাকা থেকে সরাসরি দিল্লী রিটার্ন এয়ার তারপর দিল্লী থেকে সিমলা-মানালী-দিল্লী করতে পারেন আবার দিল্লী-মানালী-সিমলা-দিল্লী করতে পারেন।সেক্ষেত্রে কোলকাতা বাদ পরবে।
 ঢাকা-কোলকাতা বাসে যেয়ে কোলকাতা-দিল্লী রাজধানী ট্রেন তারপর দিল্লী থেকে সিমলা-মানালী-দিল্লী করতে পারেন আবার দিল্লী-মানালী-সিমলা-দিল্লী করতে পারেন।
 ঢাকা-কোলকাতা মৈত্রী ট্রেনে গিয়ে কোলকাতা থেকে দিল্লী রাজধানী ট্রেন তারপর দিল্লী থেকে সিমলা-মানালী-দিল্লী করতে পারেন আবার দিল্লী-মানালী-সিমলা-দিল্লী করতে পারেন।
 ঢাকা-কোলকাতা মৈত্রী ট্রেনে গিয়ে কোলকাতা থেকে কালকা ট্রেনে যেয়ে, কালকা থেকে টয় ট্রেনে সিমলা যাবেন। এখানে উল্লেখ্য টয় ট্রেন কিন্তু ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের একটি। তারপর সিমলা থেকে মানালী বাসেও যাওয়া যায় ভাড়া ৮০০ রুপি আবার ট্যাক্সি রিজার্ভ নিতে পারেন ভাড়া ২৬০০ থেকে ৫৫০০ রুপি পরবে।
আমার রুট প্লান টা বলে নিই।আমার বউ কখনো ট্রেনে উঠে নাই তাই আমি একটা ট্রেন অপ্সন রাখছি। ঢাকা-কোলকাতা মৈত্রী ট্রেন, কোলকাতা-দিল্লী রিটার্ন বাই এয়ার ইন্ডিগো, দিল্লী-মানালী এসি ভলভো বাস HRTC । মানালী-সিমলা ট্যক্সি রিজার্ভ, সিমলা-দিল্লী এসি ভলভো বাস HRTC। দিল্লী লোকাল সাইট ট্যাক্সি এবং ট্যূরিস্ট বাস, আগ্রা ফোর্ট, তাজমহল ট্যূরিস্ট বাস, কোলকাতা-ঢাকা ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স।

টিকেট সংগ্রহঃ পাসপোর্টের অরিজিনাল কপি নিয়ে কমলাপুর স্টেশনে যেতে হবে অন্য কারো কাছে পাঠিয়ে দিলেও হয় সমস্যা নাই কিন্তু টিকেট কাটতে পাসপোর্টের অরিজিনাল কপি দরকার এটাই হল মুলকথা। তো মৈত্রীর টিকেট কাটলাম কমলাপুর থেকে ১৬৩৩ টাকা পার টিকেট, তারপর ইন্ডিগো এয়ারের টিকেট কাটলাম গুলশান নন্দোস এর উপরে ইন্ডিগোর এজেন্ট এর কাছ থেকে রাউন্ড ট্রিপ কোলকাতা-দিল্লী ১১৯০০ টাকা পার পারসন।

প্রথম দিন
অক্টোবরের ২০ তারিখ সকাল সকাল যাত্রা শুরু করলাম। ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছলাম সকাল ৭ টার দিকে। অনেক লোকের ভীড়, লম্বা লাইন ধরে ভীতরে ঢুকলাম। নির্ধারিত আসনে বসে পড়লাম। আমার ওয়াইফ দেখলাম বেশ অন্য রকম অনুভুতিতে আবিষ্ট। প্রথম দেশের বাইরে যাচ্ছে হোক সেটা ভারত। ট্রেন ছাড়ল সকাল ৮:১০ এ। প্রায় আধা ঘন্টা পর নামল ঝুম বৃষ্টি। চারিদিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন আর আমি হেমন্ত দার গান শুনছি;

“এই আছি এই নেই আমি যেন পাখী মেলি পাখনা
সীমানার সীমা ছেড়ে যাই দূর প্রান্তে
নীড় একা পরে থাক থাকনা”

ট্রেনের মাঝে কিছু নাস্তা খেলাম, চিকেনের কোনো আইটেম হবে চিমসায়ে কাঠ হয়ে গেছে। একজন এসে ইমিগ্রেশনের জন্য আরোহন কার্ড দিয়ে গেল, ওটা পুরন করে ফেললাম।ট্রেনের খাবার সরবরাহকারি এসে দুপুরের খাবারে অর্ডার নিয়ে গেল ১৫০ টাকা এক মিল। আমরা দুজনে একটার জন্য বললাম। দুপুর ২:৩০ টায় পৌঁছলাম দর্শনা স্টেশনে, তাড়াহুড়ো করে নেমে পড়লাম। বউকে নিয়ে যেতে যেতে তবুও লাইনের মাঝখানে। একজন মহিলা পুলিশ এসে বললেন আমি একাই দুইজনের টা করতে পারব। ইমিগ্রেশনের ফর্মালিটিজ শেষ করে সিটে ফিরে দেখি দুপুরের খাবার দিয়ে গেছে। খাবারের মান বেশ ভাল। দুজনে খেয়ে নিলাম। সবার ইমিগ্রেশন শেষ করে ট্রেন ছাড়ল বিকাল ৪:০০ টায়। ১০ মিনিট পর গেদে পৌঁছলাম। লাগেজ সব নিয়ে দুজন নেমে পড়লাম। আবার লম্বা লাইন। এখানে একটা ফরম পুরন করতে হয়, ডলার টাকা এবং রুপি কোনটা কি পরিমান আছে তার হিসেব দিয়ে। কাস্টমস অফিসারের সহাস্য প্রশ্ন
– কি করেন?
– আমি, প্রাইভেট জব করি।
– আপনাদের দেশের বেশীর ভাগই কি প্রাইভেট জব করে নাকি? যারা যায় তারাই প্রায় এই কথা বলে। পাসপোর্ট এ সিল মেরে বলছে, আমাদের খুশি করবেন না?
– আমি বললাম কিভাবে খুশি করব?
– কিছু দিয়ে যান।
– আমি বললাম রুপি তো করা হয় নাই আমার।
– তিনি বললেন আমরা সব নেই। দিন ১০০ টাকা দিন।
– ১০০ টাকা দিয়ে বের হয়ে গেলাম। এরা অনেক পাওয়ারফুল কিন্তু ছেছড়া!
ট্রেনে গিয়ে বসে পড়লাম। দেখি তখনো অর্ধেকের বেশী মানুষের ইমিগ্রেশন বাকি। কি আর করা নেমে এসে চা খেলাম ১৫ রুপি কাপ আর কিছু টাকা রুপি করে নিলাম। বর্ডার থেকে না ভাংগানোই ভাল। এখানে রেট কম পাওয়া যায়। সবার ইমিগ্রেশন শেষ করে ট্রেন ছাড়তে প্রায় ৬:৩০ বেজে গেল। অবশেষে চিতপুর স্টেশনে আমরা নামলাম রাত সাড়ে আটটায়। স্টেশন থেকে ট্যাক্সি নিয়ে চলে গেলাম মারকুইস স্ট্রিট। হোটেল আফসায় আগে থেকে ফোন করে রেখেছিলাম বাংলাদেশ থেকে কিন্তু গিয়ে দেখি কোনো রুম খালি নেই। অবশেষে হোটেল ভি আই পি কন্টিনেন্টাল এ উঠে পড়লাম ২৫০০ টাকা এক রাতের জন্য। কোলকাতা হোটেল ভাড়া একটু বেশী আর আমি একটু সুচিবাই টাইপের, অপরিচ্ছন্ন হোটেলে থাকতে পারিনা। ফ্রেশ হয়ে কস্তুরি (মারকুইস স্টিটের নামকরা হোটেল) থেকে খেয়ে নিলাম আর নিউ গংগা থেকে ডলার ভাংগিয়ে রুপি করে নিলাম। হোটেল রুমে গিয়ে ঘুম।

দ্বিতীয় দিন ২১ শে অক্টোবর
সকালে উঠে গোসল দিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। আগের রাতে হোটেল ম্যানেজারকে বলে রেখেছিলাম ট্যাক্সি যোগার করে রাখতে, সেই মোতাবেক ট্যাক্সি হাজির। ৮:৫০ এ আমাদের ফ্লাইট দিল্লীর উদ্দেশ্যে। হোটেল থেকে রওনা হলাম ৬:৩০ এ। আধা ঘন্টার মধ্যে বিমানবন্দরে পৌঁছে গেলাম। কোলকাতার রাস্তায় জ্যাম নেই বললেই চলে। ডিজিটাল সিগনাল সিস্টেম ১০ সেকেন্ড করে সিগনাল। চেক ইন করে বোর্ডিং পাস নিয়ে প্লেনে গিয়ে উঠে বসলাম। যথাসময়ে প্লেন ছাড়ল। সকাল এগারোটায় দিল্লী বিমানবন্দর থেকে বের হলাম। ট্যাক্সি নিলাম আইএসবিটি পর্যন্ত। যেতে যেতে ট্যাক্সিওয়ালার সাথে কথা হচ্ছিল কোথায় যাব কি সমাচার। ফাজিল আমাদের নিয়ে গেল এক এজেন্টের কাছে যারা নাকি ভলভো বাস পরিচালনা করে দিল্লী থেকে মানালী পর্যন্ত। আমি আগে থেকেই খোজ খবর নিয়ে গেছি এইচ আর টি সি ভলভো বাসে যাব। তাই ড্রাইভারকে ঝারি দিলাম হালকা, আমাদের সোজা আই এস বিটি নিয়ে চলেন। বাসস্টপেজ এ নামলাম ১২ টার আগেই। ট্যাক্সি ভাড়া ৪০০। খুজে বের করলাম ২৯ নাম্বার কাউন্টার থেকে মানালির টিকেট পাওয়া যাবে। বিশ্রামাগারে বসে একটু বিশ্রাম নিলাম। টিকেট কাটলাম ২ জন মানালীর জন্য ৩০০০ রুপি। বাস বিকাল ৬:৩০ টায়। হালকা একটু নাস্তা সেরে বেরিয়ে পড়লাম। হাতে কিছুটা সময় আছে ইন্ডিয়া গেট আর রেড ফোর্ট টা দেখব বলে ট্যাক্সি ঠিক করলাম ৩৫০ রুপি দিয়ে। ঘুরে এসে যথাসময়ে বাসে উঠে বসলাম। মজার বিষয় হল বাস ছাড়ল ঠিক সময়ে এক মিনিট আগেও না পরেও না। দিল্লী থেকে যতই উত্তরে যাচ্ছি ঠান্ডার প্রকোপ বাড়ছে। রাতে বাস কোনো এক হরিয়ানার ধাবায় দাড়াল কিছু না বুঝে দাম না শুনে অর্ডার দিয়ে ৪৫০ রুপি গেল জলে খাওয়া কিছুই হল না সব ঝাঝালো আইটেম। বাসে উঠে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে দেখি পাহারের আঁকাবাঁকা পথে বেয়ে বাস ছুটে চলেছে। দুই পাশে আপেলের বাগান দু চারটে আপেল আছে গাছে। আপেলের সিজন শেষের দিকে তাই গাছ অনেকটাই ফাকা।

তৃতীয় দিন ২২ শে অক্টোবর
মানালী মল রোডে পৌঁছলাম সকাল আটটার দিকে। এক নজর চারিদিকে তাকিয়ে দেখে নিলাম প্রকৃতি অপরুপ সৌন্দর্যে সেজেছে এখানে। মলে নেমেই দেখেশুনে হোটেল নিয়ে নিলাম। হোটেল হোয়াইট তারা ভাড়া ১০০০ রুপি প্রতি রাত। এখানে ৪০০ রুপি থেকে হোটেল পাওয়া যায়। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা অর্ডার করলাম হোটেলে, ৫ মিনিটের মধ্যে নাস্তা হাজির। আজ বিকেলে আনুমানিক ১ টার দিকে লোকাল সব সাইট ঘুরে দেখব আর পরদিন রোথাং যাব বলে ট্যাক্সি ঠিক করলাম লোকাল সাইটের জন্য ৮০০ আর রোথাং এর জন্য ২৫০০। খেয়ে দিলাম এক ঘুম। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিচে নামলাম। ট্যাক্সি হোটেলের নিচেই দাঁড়িয়ে ছিল। বেরিয়ে পড়লাম। হাদিম্বা মন্দির,তারপর পাশেই আরও একটা মন্দির, ক্লাব হাউজ, হিম ভ্যালি, বিয়াস নদি দেখে দিন পার করে দিলাম।

চতুর্থ দিন ২৩ শে অক্টোবর
ট্যাক্সি হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নিচে নামলাম। রওনা হলাম রোথাং এর উদ্দেশ্যে। পাশের পাহারের উপড় মেঘ আছড়ে পড়ছে, একটার উপড় আরেকটা লুটোপুটি খাচ্ছে। আর আমাদের ট্যাক্সি পাহারের ঢালু রাস্তা বেয়ে ধীরেধীরে ঊঠছে চুড়ার দিকে। পথ থেকে বরফে যাওয়ার পোশাক ভাড়া নিলাম ৩০০ রুপি, মোটা মোজা ১০০ টাকা ১ জোড়া। প্রকৃতি এত সুন্দর হতে পারে নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। অবশেষে আমরা প্রায় ২ ঘন্টা পর পৌঁছলাম রোথাং এ। বরফ দেখে কি অবস্থা হয়েছিল তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। আমি পিচ্চিদের মত ছুটাছুটি শুরু করে দিলাম। বরফ হাতে নিয়ে টিকতে না পেরে এক জোড়া হ্যান্ড গ্লোভস নিলাম ১০০ রুপিতে। বরফ ছোড়াছুঁড়ি পর্ব শেষ করে হোটেলে ফিরে এলাম। বিকেলটা মলে ঘুরে কেনাকাটা করে কাটিয়ে দিলাম। মানালীর ড্রাইভারের মাধ্যমে সিমলা যাওয়ার একটা ট্যাক্সি ঠিক করলাম ২৭০০ রুপিতে। এখান থেকে এইচ আর টি সি এর ডিলাক্স বাস যায় সিমলা পর্যন্ত ভাড়া ৮০০ রুপি করে। আমি ট্যাক্সি বেছে নিলাম নিজের মত করে যাব বলে।

পঞ্চম দিন ২৪শে অক্টোবর
মানালী থেকে রওনা হলাম সকাল সাড়ে সাতটার দিকে। আধা ঘন্টার মধ্যে কুল্লু পৌঁছলাম। কুল্লু কিন্তু শালের জন্য বিখ্যাত। এখানকার শাল অনেক ভাল। আমার অফিসের বস ইন্ডিয়ান উনার কাছে থেকে শোনা। শাল ফ্যাক্টরি থেকে কয়েকটা শাল কিনলাম বেশ সাশ্রয়ী দামে। একটু যেয়ে পাঞ্জাবী এক ধাবায় নাস্তার জন্য দাড়ালাম। এদের সব খাবারে এক ধরনের মসলা ব্যবহার করে, আমার এত বিশ্রী লাগে! মুখেই তুলতে পারিনা। কোনোমতে দু লোকমা খেয়ে আবার রওনা হলাম। এই মানালী থেকে সিমলা আসার রাস্তাটা অনেক সুন্দর তাই দিনে ভ্রমন করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আসার পথে প্যন্দহ ড্যাম পরবে এক কথায় অসাধারন। সবুজ পাহারে ঘেরা নীল পানির আধার চোখ ধাঁধানো জিনিস। পাহাড়, সবুজ আর পাইন গাছের বন পেরিয়ে ৯ ঘন্টা পর আমরা পৌঁছলাম শিমলাতে। ড্রাইভারের এক পরিচিতের মাধ্যমে হোটেল ঠিক করলাম ১৫০০ প্রতি রাত হিসেবে কিন্তু কথা ছিল হোটেল পছন্দ না হলে নিব না। মল এর পাশেই হোটেলের অবস্থান। পজিশন আর হোটেলের পরিচ্ছন্নতা দেখে পছন্দ হয়ে গেল। উঠে পড়লাম। শিমলা হিমাচলের রাজধানী তাই এখানে খরচ একটু বেশী। ১০০০ থেকে ২০০০ এর মধ্যেই হোটেল নিতে হবে। ফ্রেশ হয়ে মলে বেরিয়ে পরলাম। যেহেতু সারাদিন জার্নি করে ক্লান্ত তাই বেশী সময় ঘোরাঘুরি না করে হোটেলে এসে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। রাতের খাবার ২০০ টাকায় দুইজন।

ষষ্ঠ দিন ২৫ শে অক্টোবর
ট্যাক্সি রিজার্ভ সারাদিন ঘোরাঘুরি ১০০০ রুপি। সকাল ১০ টায় বের হলাম। প্রথমে হিপ হিপ হুররে। এটা পাহাড়ের গা ঘেষে গড়ে তোলা এমিউজমেন্ট পার্ক। এন্ট্রি ফি ২০০ টাকা প্রতিজন। তারপর কুফরি। এখানে ঘোরায় চড়ে পাহাড়ের চুড়ায় উঠতে হয় ২৮০০ মিটার উপড়ে। ঘোড়া উঠা চার্জ ৫২০ জনপ্রতি। বিকেলে শিমলা মলে চলে এলাম। এখানে রিটজ, মল রোড, স্ক্যন্ডাল পয়েন্ট, জাকু টেম্পল দেখলাম। পুরো বিকেলটা কাটিয়ে দিলাম মল রোডে। শিমলা সত্যিই একটা দেখার মত যায়গা। পাহারে গা বেয়ে বেয়ে সুনিপুনভাবে গড়ে তোলা শহর, ছিমছাম রাস্তা দেখলে যে কারো চোখ জুড়িয়ে যাবে। বিকেলে স্ক্যান্ডাল পয়েন্ট থেকে দিল্লীর টিকেট কাটলাম HRTC AC VOLVO BUS এ ৯০২ রুপি জনপ্রতি। রাতে হোটেল যেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। শিমলায় কোনো কেনকাটা নয় কারন এখানে নিজস্ব কোনো ইন্ডাস্ট্রি নেই তাই জিনিসপত্রের দাম বেশি। একটা জিনিস খুব চলে এখানে সেটা হল বিভিন্ন ধরনের মদ।

সপ্তম দিন ২৬ শে অক্টোবর
সকালে উঠে হোটেল চেক আউট করে বেরিয়ে পরলাম ট্যাক্সি নিয়ে ISBT এর উদ্দেশ্যে। এটা মল রোড থেকে ৭ কিলো দূরে। ট্যাক্সি ভাড়া ৩০০ রুপি। বাসে উঠে বাংলাদেশী এক কাপল পেলাম। আলাপ করে খুব ভাল লাগল। এক সাথে দিল্লী আসলাম। পৌঁছলাম বিকেল ৫:০ টায়। ৩৫০ টাকায় ট্যাক্সি নিয়ে পাহারগঞ্জ চলে গেলাম। হোটেল ঠিক করলাম ৭০০ রুপি প্রতি রাত। হিসেব করে চলা শুরু করেছি কারন টাকা ফুরিয়ে আসার পথে। সন্ধায় বের হয়ে ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন বুথ থেকে ডলার ভাংগালাম ৬৪ রুপি করে। পরের দিন শুক্রবার। আমাদের প্লান ছিল আগ্রা যাব পরের দিন কিন্তু সেটা হলনা। প্লান করলাম শুক্রবার দিল্লীর লোকাল সাইট দেখব আর শনিবার আগ্রা। সে অনুযায়ী ট্যুরিস্ট বাসের জন্য বুকিং দিয়ে দিলাম। খুজে কলকাতার মালিকের এক হোটেল খুজে বের করে ১৫০ টাকা থালি হিসেবে খেয়ে হোটেলে এসে ঘুমিয়ে পরলাম। পাহারগঞ্জে নন এসি হোটেল ৬০০-১০০০ টাকায় আর ১০০০-২০০০ টাকায় এসি হোটেল পাওয়া যায়।

অষ্টম দিন ২৭ শে অক্টোবর
ট্যুরিস্ট বাসে করে বিরলা মন্দির, প্রেসিডেন্ট হাউজ, ইন্ডিয়া গেট, কুতুব মিনার, লটাস টেম্পল, রাজঘাট (গান্ধীজীর সমাধী), রেড ফোর্ট দর্শন। রাতে চাদনি চকে কেনাকাটা আর জামা মসজিদের পাশে চিকেন বিরিয়ানি খাওয়া দাওয়া শেষে হোটেলে ফিরে এলাম। ভাল কথা চাদনি চকের হলদিরাম বেকারি থেকে দিল্লীর প্রায় ১০-১২ রকমের লাড্ডু সব গুলা একটা করে খেয়ে এসেছি এক কথায় অসাধারন।

নবম দিন ২৮ শে অক্টোবর
ট্যুরিস্ট বাসে করে আগ্রা যাত্রা। ট্যাক্সি রিজার্ভ ভাড়া ৪০০০ এর কাছাকাছি। আমার টাকা প্রায় শেষ পর্যায়ে তাই ট্যুরিস্ট বাসেই গেলাম। ট্যুরিস্ট বাসের একটা পেইন হলো এরা বেজায়গায় দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করে যেখানে আপনার কোনো প্রয়োজন নেই। প্রথমে আগ্রা ফোর্ট টিকেট ৮০ রুপি করে তারপর লাঞ্চ বিরতি। ২:০ টার দিকে তাজমহল ঢুকলাম টিকেট ৫৩০ রুপি করে। এখানে পাস্পোর্ট এবং ভারতীয়দের আধার কার্ড চেক করে। সো সাবধান। রাতে হোটেলে ফিরলাম ১২ টার দিকে। মথুরা এবং বৃন্দাবন ও দেখাইছে কিন্তু আমরা নামি নাই বাস থেকে।

দশম দিন ২৯ শে অক্টোবর
সকালে হোটেকে চেক আঊট করে অটো নিয়ে বের হয়ে পড়লাম দিল্লী বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে। ৯:৫০ এর ফ্লাইটে ইন্ডিগো এয়ারে কোলকাতা নামলাম ১২ টার দিকে। হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ভিক্টরিয়া মেমোরিয়াল এ চলে গেলাম। এন্ট্রি ফি বাগান+মিউজিয়াম ২০ রুপি। হোটেল নিয়েছিলাম মারকুইস স্ট্রিটে আর এটা ওর কাছাকাছি। ভিক্টোরিয়া ঘুরে রাতে ফিরে মারকুইস স্ট্রিটের খালিক হোটেলে খেয়ে রাতে শুয়ে পরলাম।

একাদশ দিন ৩০ শে অক্টোবর
গরিয়া হাট শাড়ি কিনতে গেলাম আদি ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয় থেকে শাড়ি কিনলাম। এখানে শাড়ির প্রচুর কালেকশন। বিকেলে চলে গেলাম কোলকাতা নিউ মার্কেট। কেনাকাটা শেষে রাতে খাবার খেয়ে হোটেল ঘুম।

দ্বাদশ দিন ৩১ শে অক্টোবর
ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্সে টিকেট কাটা ৩:৪০ এ ফ্লাইট। চকলেট আর সাবান কিনা বাকি ছিল। সকালে নাস্তা করে নিউ মার্কেট গেলাম আবার। শ্রী লেদার থেকে ইচ্ছেমত জুতা স্যান্ডেল কিনে ব্যাগ ভরে ফেললাম, চক্লেট কিনলাম। ব্যাগপত্র গুছিয়ে হোটেল চেক আউট করলাম ১২ টার আগেই। ট্যাক্সি নিয়ে বিমানবন্দর রওনা হলাম। ট্যাক্সি ভাড়া ৩০০ । ইমিগ্রেশন পার হয়ে বোর্ডিং পাস নিয়ে যথাসময়ে বিমানে উঠে বসলাম। ইউএস বাংলার সার্ভিস আমার ধারনাই পালটে দিল। এত সুন্দর পরিসমাপ্তির জন্য ইউএস বাংলাকেও ধন্যবাদ। পরিশেষে শুধু এই টুকুই বলতে চাই টিওবি না হলে আমার পক্ষে একা এই ট্যুর করা সম্ভব হত না। আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা টিওবির প্রতি।

মোট খরচঃ ৮৬০০০ দুইজন (আমি আর আমার ওয়াইফ) ট্রান্সফার+হোটেল+খাওয়া

Post Copied from:Anwar Hossain>Travelers of Bangladesh (ToB)