সেন্টমার্টিন বা কক্সবাজার ভ্রমনের এটিই সব থেকে ভালো সময়

সমুদ্রের প্রতি অন্যরকম একটা টান কেন জানি খুব কাজ করে… আর সেক্ষেত্রে সেন্টমার্টিনের প্রতি টান টা একটু বেশিই…. তাইতো একই বছরে ৩য় বারের মত ছুটে গিয়েছিলাম এই প্রবাল স্বর্গরাজ্যে… হ্যাঁ, উদ্দেশ্য একটাই স্বচ্ছ প্রকৃতি আর নীল দিগন্তের কাছাকাছি আরও একটিবার নিজেকে সমর্পণ করা……
গত ৫.১২.২০১৭ গিয়েছিলাম এই বছরের জন্য সর্বশেষ ট্যুর দিতে…
মজার ব্যাপার ছিল… বছর টা শুরু হয়েছিল এই সেন্টমার্টিন দিয়ে আবার শেষ ও হল এই সেন্টমার্টিনকে দিয়েই……

প্রথমেই বলে রাখি… সেন্টমার্টিন বা কক্সবাজার ভ্রমনের এটিই সব থেকে ভালো সময়… সেন্টমার্টিন যেতে হলে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে টেকনাফ লঞ্চঘাটে… ঢাকার শ্যামলী, কল্যাণপুর, গাবতলী, কলাবাগান, ফকিরাপুল, কমলাপুর, সায়দাবাদ সহ বিভিন্ন যায়গা থেকে প্রতিদিনই বিভিন্ন পরিবহনের এসি/ননএসি বাস টেকনাফের উদ্দেশ্যে সন্ধ্যা ৬ থেকে রাত ৮ টার মধ্যেই ছেড়ে যায়.. ননএসি বাসের ভাড়া সিট প্রতি ৯০০ টাকা…এসি বাসে গেলে আপনাকে গুনতে হবে সিট প্রতি ১৫০০-১৭৫০ টাকা। ঢাকা থেকে টেকনাফের দূরত্ব কম বেশি ৪৭০ কিলোমিটার…. পরদিন সকাল ৮ টা নাগাদ পৌছে যাবেন টেকনাফ লঞ্চ ঘাটে…

বাস থেকে নেমেই জাহাজের টিকিট কেটে নেয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ… টেকনাফ থেকে প্রতিদিনই ৪-৫টি জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়… তবে আবহাওার অবস্থা অনুযায়ী তারতম্য ঘটে… তাই সেন্টমার্টিন ভ্রমণের প্ল্যান করার আগে অবশ্যই আবহাওার পূর্বাভাস দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নিবেন… টেকনাফ থেকে প্রতিদিনই এল.সি.টি. কুতুবদিয়া, কেয়ারি সিন্দবাদ, এম ভি গ্রীনলাইন সহ বেশ কিছু জাহাজ সেন্ট মার্টিন যাওয়া আসা করে… তবে ভুল করেও কেউ টাকা বাঁচানোর জন্য ট্রলারে করে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার কথা ভাববেন না। জাহাজে বেশ কয়েকটি শ্রেণীর টিকিট রয়েছে… শ্রেণী ভেদে টিকিটের দাম ৫৫০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত। তবে ওপেন ডেকে গেলেই আপনি নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন… জাহাজের টিকিট কাটার সময় চেষ্টা করবেন কাউন্টারের লোকদের যত সম্ভব বুঝিয়ে দাম কমানোর… তবে সেটা অবশ্যই জন সম্মুখে নয়… নিজের ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি কাউন্টারের ভেতর দরদাম করে ওপেন ডেকের ৭০০ টাকার টিকিট ৫৫০ পর্যন্ত নামিয়ে আনতে পেরেছিলাম… তবে যারা প্রথমবার সেন্টমার্টিন যাবেন তাদের জন্য বলছি… টিকিট কাটার সময় কেউ যেন বুঝতে না পারে যে এটিই আপনার প্রথম ভ্রমণ… দেখবেন অনেক কিছুই সহজ হয়ে যাচ্ছে…

সবকটি জাহাজ ই সকাল ৯ঃ৩০ এ ঘাট থেকে রওনা হয়ে যাবে… জাহাজ যত সামনে আগাবে নাফ নদী ততই আপনার সামনে তার সৌন্দর্য তুলে ধরবে… আর জাহাজের দুপাশ দিয়ে অজস্র গাংচিল আপনাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে আপনার গন্তব্য পর্যন্ত… জাহাজে অবশ্যই এমন কোন কিছু করা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন যা আপনার জন্য কোন অনাকাঙ্ক্ষিত অভিজ্ঞতার কারন হয়ে দাড়ায়… আপনার জন্য যাবতীয় নির্দেশনা জাহাজেই মাইকিং করে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে… দুপুর ১২ টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন সেন্টমার্টিন জেটিতে… জাহাজ থেকে নামার সময় অবশই সাবধানতা অবলম্বন করবেন… এরপর চলে যাবেন ব্রিজ ধরে সেন্টমার্টিন বাজারে… মান ও সুযোগ সুবিধা ভেদে অনেক রকম রিসোর্ট গড়ে উঠেছে এখানে… নিজের রুচি ও সামর্থ্য যাচাই করেই বেছে নিবেন… ভাড়া রুম প্রতি ১০০০-৩৫০০ পর্যন্ত… তবে অবশ্যই দরদাম করে নিবেন…

ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়ুন দুপুরের খাবারের জন্য… আগেই বলে রাখি… সেন্টমার্টিন এর খাবারের স্বাদের প্রতি আগে থেকেই অনেক বেশি প্রত্যাশা নিয়ে না আসাই ভালো… নিজের পছন্দ মত বুঝে শুনে খাবার নির্বাচন করবেন… তবে এখানে প্রায় সব খাবারের হোটেলে একটা ব্যাপার দেখা যায়… ভাত মাথা পিছু ৪০ টাকা আনলিমিটেড… তবে সামুদ্রিক মাছের স্বাদ না নিয়ে সেন্টমার্টিন থেকে আসবেননা…

সমুদ্রে নামার আগে অবশ্যই জোয়ার ভাটার সময় জেনে নামবেন… আর অবশ্যই লাল পতাকা যুক্ত যায়গা গুলোয় পানিতে নামা থেকে বিরত থাকবেন… সাঁতার জানা না থাকলে খুব বেশি দূর না যাওয়াই ভাল… চাইলে বীচের উপর রাখা চেয়ার ভাড়া নিয়ে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে কিছুক্ষন হারিয়ে যেতে পারেন সুবিশাল সমুদ্রের মাঝে… বিকালে চাইলে সাইকেল ভাড়া করে বেরিয়ে পরতে পারেন পুরো দ্বীপটি ঘুরে দেখতে… কারণ পায়ে হেঁটে পুরোটা ঘুরে দেখা বেশ কষ্টকর… আর অবশ্যই সূর্যাস্ত মিস করবেননা… হয়তো এটি ই হতে পারে আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ সূর্যাস্ত… রাতের আকাশে কোটি কোটি তারার মেলা বসে সেন্টমার্টিনের আকাশে… জীবনে মনে রাখার মত কিছু সময় যদি আলাদা রাখতে চান… তাহলে বেরিয়ে পড়ুন রাতের আকাশ টা একবার দেখে আসার জন্য… চেষ্টা করবেন পরদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতে… সেন্ট মার্টিনের সূর্যোদয় যেন সৃষ্টিকর্তার আরেকটি উপহার… জেটি থেকে খুব সুন্দর দেখা যায় সূর্যোদয়…

সূর্যোদয় দেখে নাস্তা সেরে বেড়িয়ে পড়ুন ছেড়া দ্বীপের উদ্দেশ্যে। সেন্টমার্টিনে এসে ছেড়া দ্বীপ দেখে না গেলে বলবো এই জীবণে অনেক কিছু দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন তাও আবার এত কাছে এসেও….। আর যারা যেদিন আসবেন সেদিনই টেকনাফ ফিরে যাবেন তাদের জন্য ১ মিনিট নিরবতা ছাড়া আর কিছু বলতে পারছিনা….. উপরে যা কিছু বলা হল সব কিছু থেকেই তারা বঞ্চিত হবেন…।

যাই হোক, জেটি থেকে ছেড়া দ্বীপ যাওয়ার ৪টি উপায় আছে…. ট্রলার, গাম বোট, স্পীড বোট এবং পায়ে হেটে…. ট্রলারে যেতে হলে লাগবে কম বেশি ৩০ মিনিট… জন প্রতি লাগবে ১৫০ টাকা…. গাম বোটে যেতে সময় লাগবে ২০ মিনিট আর জন প্রতি লাগবে ২০০ টাকা…..স্পীড বোটে যেতে সময় লাগবে ১০ মিনিট… আর জনপ্রতি ৩০০ টাকা…. যেভাবেই যাননা কেন ছেড়া দ্বীপ ঘুরতে সময় পাবেন ১ ঘণ্টা….আর পায়ে হেঁটে গেলে অবশ্যই ভাটার সময় রওনা হবেন… যদিও সময় বেশি লাগবে…তাও অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা নিতে পারেন… অবশ্যই সেখানকার ডাব খেয়ে আসতে ভুলবেননা… এক কথায় অমৃত….৩০-৪০ টাকার ডাবের পানি খেয়ে লাখ টাকার তৃপ্তি পাবেন এটুকু বলতে পারি।… ছেড়া দ্বীপের কাছাকাছি গেলেই দেখবেন স্বচ্ছ পানির তলদেশে নানা রঙের প্রবাল আর ছোট ছোট মাছ……

দুপুরের খাবার শেষে ২ঃ৩০ এর মধ্যে জেটিতে উপস্থিত থাকবেন…। কারন জাহাজ গুলো ২ঃ৪৫ এ একে একে টেকনাফের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে… যারা শুধুমাত্র সেন্টমার্টিন ভ্রমণের জন্য আসবেন তারা চাইলে সেন্ট মার্টিন থেকেই ঢাকার টিকিট কেটে নিতে পারেন। জাহাজ বিকাল ৫ঃ৩০ এর মধ্যেই টেকনাফ লঞ্চঘাটে পৌঁছে যাবে…। যারা কক্সবাজার যাবেন তারা ঘাট থেকেই রাস্তা পার হয়ে কক্সবাজারের বাসে উঠে যাবেন… টেকনাফ থেকে কক্সবাজারের ভাড়া ১৫০ টাকা…।

একটা কথা সব সময়ই মনে রাখবেন…। প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে যেয়ে প্রকৃতির কোন প্রকার ক্ষতি হয় এমন যে কোন প্রকার কাজ থেকে বিরত থাকবেন…। কারন আপনার বা আমার ছোটখাটো অবহেলাও প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে… আর আমাদের সম্পদের ক্ষতি মানে আমাদের নিজেদের ই ক্ষতি…। আর দেশকে যত কাছ থেকে দেখবেন দেশের প্রতি ভালবাসা ততই বাড়বে…।

Post Copied From:

Tariqul Islam Chowdhury Rafi‎ > Travelers of Bangladesh (ToB)

আকাশ সমুদ্রের মিলনমেলা(কক্সবাজার,সেন্টমার্টিন ভ্রমণ)

যেভাবে গিয়েছি এবং কোথায় কেমন খরচ (জনপ্রতি) হয়েছে সব সিকোয়েন্সিয়ালি দিয়ে দিলাম…

***৯ ডিসেম্বর ২০১৭***
—————————-
#যাত্রাঃ ঢাকা ফকিরাপুল থেকে “হানিফ পরিবহণের” (#Hanifparibahan) বাসে করে সন্ধ্যা ৭টায় টেকনাফের উদ্দেশ্য আমরা ১০জন বন্ধু রওনা দেই। (বাস টিকিট-৯০০টাকা, টি-শার্ট-৩০০ টাকা; মোট-১২০০ টাকা)

***১০ ডিসেম্বর ২০১৭***
***কক্সবাজার***
====================
#টেকনাফঃ সকাল ৮টায় আমরা টেকনাফের “কেয়ারী ঘাটে” (#KeariSindbad) পৌঁছাই। সমুদ্রে ঐদিন ৩ নাম্বার সতর্কতা সঙ্কেত থাকায় শীপ বন্ধ ছিল। আমাদের আগে থেকেই প্লান ছিল আমরা সেন্টমার্টিন থেকে ঘুরে কক্সবাজার যাব। যেহেতু সেন্টমার্টিন যাওয়া হচ্ছে না তাই সবাই মিলে ঠিক করলাম আগে কক্সবাজার ঘুরি তারপর যদি আবহাওয়া ঠিক হয় এবং সতর্কতা সঙ্কেত তুলে নেয়া হয় তাহলে সেন্টমার্টিন যাব। তাই আর দেরি না করে কেয়ারী ঘাটেই সকালের নাস্তা সেরে “সরাসরি স্পেশাল” পরিবহণে করে কক্সবাজার চলে যাই। (খরচঃ নাস্তা-৫০ টাকা, বাস ভাড়া-১৮০টাকা; মোট-২৩০টাকা)

#কক্সবাজারঃ কক্সবাজার পৌঁছাতে পৌঁছাতে বেলা ১২টা বেজে যায়। দু’জনকে হোটেল খুঁজতে পাঠিয়ে দিয়ে আমরা কয়েকজন বিচের আশেপাশে ঘুরতে থাকি। তারা কিছুক্ষণের মধ্যে হোটেল কনফার্ম করে আমাদের ইনফর্ম করলে আমরা হোটেলে চলে যাই।

#হোটেল_কক্সবাজারঃ আমরা কলাতলি বিচের কাছাকাছি বিচ ওয়ে হোটেলের গোলিতে “প্রতীক জিনিয়া” (Protik Jinia) নামের একটি এপার্টমেন্টে ৩,৫০০ টাকায় (২ দিনের জন্য) একটি ফ্লাট ভাড়া নেই। ৩ রুমের ফ্লাট, ২টা বাথরুম, ২টা বেলকনি, একরুম এসি, এক কথায় আমাদের ১০ জনের জন্য অসাধারণ। তবে একটু দামাদামি করলে দিন প্রতি ১৫০০ টাকা মানে দু’দিনের জন্য ৩০০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যেতাম (খরচঃ হোটেল ভাড়া বাবদ ৩৫০ টাকা)

#সমুদ্রে_গোসলঃ সমুদ্রে ২টা থেকে ভাটা শুরু হয়। তখন সমুদ্রে গোসল করা রিস্কি, আর ২ টার পর সমুদ্রে গোসল করতে নামতেও দেয় না। তাই দেরি না করে আমরা ১টার মধ্যেই সুগন্ধা বিচে চলে যাই। দশজন একসাথে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়ি। কিছুক্ষণের মধ্যেই সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে সবাই মিশে যেতে থাকি। একজন ফটোগ্রাফার নিয়েছিলাম। সমুদ্রে গোসল করবার সময় সবাই এক এক করে, গ্রুপে অনেক ছবি তুলেছি। আমরা মোট ৩৬০টি ছবি তুলি। এরজন্য ফটোগ্রাফারকে আমাদের দিতে হয়েছে ৬০০ টাকা। (খরচঃ ছবি বাবদ জনপ্রতি খরচ ৬০ টাকা)

(নোটঃ সমুদ্রে গোসল করতে চাইলে অবশ্যই ২টার আগে যাবেন। ২টার পর দ্রুত ভাটা চলতে থাকে। তখন সমুদ্রের পানি দ্রুত নেমে যেতে থাকে তাই স্রোতে ভেসে যাবার রিস্ক থাকে এবং গোলস করেও মজা থাকে না। সমুদ্রে গোসল করতে যাবার আগে মোবাইল ফোন, জুতা, টাকা-পয়সা অন্যান্য সরঞ্জাম না নিয়ে যাওয়াই ভালো। কেননা বিচে এগুলো রাখার কোন সেফটি প্লেস নেই। বিচ ফটোগ্রাফারদের দিয়ে ছবি তুলে নেবার আগে দামাদামি করে নিন। এরা ৫টাকা করে চাবে। দামাদামি করলে ২.৫-৩ টাকায় রাজি হয়। ছবি তুলে দেবার পর ছবিগুলো নেবার আগে ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায় ছবিগুলো সিলেক্ট করে নিন কোন কোন ছবিগুলো আপনার ভালো লেগেছে এবং বাকিগুলান ডিলিট করে দিন। কেননা তারা এক ছবি ৩/৪বার স্নাপ নেয় যার ফলে বারতি টাকা দাবি করে। মনে রাখবেন ছবি সিলেক্ট করবার সময় একবারই সিলেক্ট এবং ডিলিট করবেন। তারা দ্বিতীয়বার সুযোগ দেয় না।)

#চাদের_গাড়ি_ভাড়াঃ সমুদ্রে গোসল সেরে হোটেলে ফিরে আধা ঘন্টার মধ্যে সবাই রেডি হই। আমরা ঠিক করি দুপুরের খাবার শেষ করে “ইনানী বিচে” (#InaniBeach) যাব। সুগন্ধা বিচের মাথায় মেইন রোডে ইনানী বিচে যাবার জন্য চাদের গাড়ি এবং অটো ভাড়া পাওয়া যায়। আমরা দামাদামি করে ১২০০ টাকায় একটা চাদের গাড়ি রিজার্ভে ভাড়া করি। যেটা আমাদের ইনানী বিচে নিয়ে যাবে এবং নিয়ে আসবে। (জনপ্রতি খরচঃ ১২০ টাকা)

#দুপুরের_খাবারঃ গাড়ি ভাড়ার ঝামেলা শেষ হয়ে গেলে ঐ গাড়িতে করেই আমরা খাবার হোটেলে যাই। কক্সবাজারে দুটি জনপ্রিয় খাবার হোটেল আছে। একটি “শালিক” এবং অন্যটি “পোউশি”। ইনানী বিচে যাবার পথে #শালিক_রেস্তরা পরে। আমরা শালিক রেস্তরায় কম্বাইন্ড করে দুপুরের খাবার খাই। খাবার আইটেমঃ ভাত,
২ প্লেট ভর্তা (৫জের জন্য এক প্লেট এনাফ), ডাল ২ বাটি, বিফ মাংস (২টা)। রেটিং ৮.৫/১০। আমরা মাছের কোন আইটেম নেইনি কারন আমরা ঠিক করেছিলাম সেন্টমার্টিন গিয়ে মাছ খাব। আর কক্সবাজারে মাছের দামও বেশি। আমাদের মোট খরচ হয় ১১০০ টাকা (জনপ্রতি খরচঃ ১১০ টাকা)

#মেরিন_ড্রাইভঃ সমুদ্রের পারে বিচ ঘেসে চলে গেছে দীর্ঘ পিচঢালা পথ। মেরিন ড্রাইভ। এই পথ দিয়ে গাড়িতে চলবার অনুভূতিও অন্যরকম। গাড়ি চলছে, পাশেই সমুদ্রের বেলাভূমি। বেলাভূমি ঘেসে সমুদ্র। সমুদ্রের ঢেউ আছড়ে পড়ছে বেলাভুমির তটে। সূর্যও ডুবি ডুবি করছে। সমুদ্রের গর্জন। কিছুদুর পরপর পথের দুধারে ছোট-বড় রেস্টুরেন্ট, সেনাবাহিনীর ক্যাম্প, সুপারি আর পানের বাগান। সব মিলিয়ে মেরিড ড্রাইভের পিচঢালা পথ সমুদ্রের দীর্ঘ সী-বিচের মতই অপূর্ব।

#ইনানী_বিচঃ মেরিন ড্রাইভ ধরে ইনানী বিচে পৌঁছতে পৌঁছতে আমাদের সাড়ে ৪টা বেজে যায়। কক্সবাজার যাবার পর থেকে যেটাই দেখছি সেটাতেই মুগ্ধ হচ্ছি। ইনানী বিচ দেখেও মুগ্ধ হলাম। পায়ের স্যান্ডেল হাতে নিয়ে সমুদ্রের পানিতে বিচ ধরে হাটা দিলাম। কিছুক্ষণ পরপর সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ এসে শীতল জলে বারবার পা ভিজিয়ে দিচ্ছে আর আমি ফিরে যাচ্ছি ফ্যান্টাসিতে। এখানেও ফটোগ্রাফারে গিজগিজ করছে। একজন ফটোগ্রাফার ঠিক করে নিয়েছিলাম। তাকে দিয়ে কিছু ছবি তুলে নিলাম। নিজের ফোনের ক্যামেরা দিয়েও প্রকৃতির কিছু ছবি তুললাম। কিছুক্ষণ পর সূর্যাস্ত শুরু হলো। ওয়েদার ভালো ছিলনা, তাই সূর্যাস্ত মন মত দেখা গেল না। একটু সূর্য থাকে আবার মেঘ ঢেকে দেয়। হাটু পানিতে নেমে সূর্যের লুকোচুরি দেখে উঠে এলাম। বিচের একপাশে ডাব বিক্রি হয়। ৪৫ টাকা করে ১০টা ডাব নিয়ে সবাই খেলাম। (খরচঃ ছবি-৭০টাকা, ডাব-৪৫টাকা; মোট-১১৫টাকা)

#কেনাকাটাঃ ইনানী বিচ থেকে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা ৭টা বেজে যায়। কিছু কেনাকাটার জন্য সবাই মিলে বিচের পাশেই লাবনি পয়েন্টের মার্কেটে চলে যাই। অনেকে অনেক কিছু কেনে। আমি শুধু কয়েক আইটেমের আচার কিনেছিলাম। (খরচঃ ৫০টাকা)

#রাতের_খাবারঃ রাতের খাবার খেতে আমরা সবাই “পোউশি” রেস্তরায় যাই। লাবনি পয়েন্ট থেকে ১০-১৫ টাকা ভাড়ায় অটো (অটো রিক্সা) পাওয়া যায়। আমরা রিজার্ভে ৪০ টাকা করে দুটি অটোতে করে “পোউশি” রেস্তরায় যাই। আমরা যেতে যেতে লেট হওয়ায় রাতের খাবার শেষই হয়ে গিয়েছিলো। পোউশিতেও আমরা ভর্তার ২টা আইটেম নেই এবং ডাল নিয়েছিলাম। তবে শালিকের মত ভালো লাগেনি। লেট হবার কারনেও হতে পারে। রেটিং ৬/১০। (খরচঃ ৯৫ টাকা)

***১১ ডিসেম্বর ২০১৭***
——————————
আবহাওয়া খারাপ থাকায় সূর্যোদয় দেখতে পারিনি। তাছাড়া কক্সবাজার ঘোরাঘুরি আমাদের গত কালই শেষ হয়ে গিয়েছিলো। ভেবেছিলাম আজই সেন্টমার্টিন রওনা দেব এবং ২দিন সেখানে থাকব। আবহাওয়া ঠিক না হওয়ায় আরও একদিন আমাদের কক্সবাজার কাটাতে হল। ঠিক করেছিলাম মহেশখালী গিয়ে আদিনাথের মন্দির আর পাহাড় ঘুরে আসব। টিমের অনেকে যেতে রাজি না হওয়ায় কক্সবাজারেই অলস দিনের ঘাটি গাড়লাম। সকালের নাস্তা শেষ করে কয়েকজন সুইমিং পুলে গেল সাঁতার কাটতে। আমরা কয়েকজন কলাতলি বিচ, সুগন্ধা বিচ, লাবনি পয়েন্ট ঝাউবন দিয়ে ঘুরাঘুরি করলাম। লাবনি বিচে ঘন্টায় ২০ টাকা করে ৩টা বিচ চেয়ার ভাড়া করে গা এলিয়ে দিলাম। সমুদ্র দেখছি এমন সময় অনুভব করলাম কেউ একজন মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তাকিয়ে দেখি একটা পিচ্চি মাথায় মাসাজ করে দিচ্ছে। অনেক বলবার পরেও চলে না যাওয়ায় শেষমেশ রাজি হয়ে বললাম ঠিক আছে ২০ টাকা দেব। পিচ্চির মাথা মাসাজে মোহিত হয়ে গেলাম। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ, শরীর শিরশির করা শীতল বাতাস, পিচ্চির মাজাস সব মিলিয়ে ঘন্টা খানেক ভালোই সময়য় কাটল। এরপর সুইমিং পুলের ওরাও চলে এল।

সবার পেট ভরাই ছিল। বিকেলের দিকে হালকা খাবার খেয়ে নেবার পর অনেকে বলল বার্মিজ মার্কেটে যাবে কেনাকাটা করবার জন্য। মার্কেটে ঘুরতে আমার ভালো লাগে না। তাই আমি এবং আর দু’জন মিলে আমরা তিনজন হোটেলে ফিরে এলাম। অন্যরা মার্কেটে গেল। বিপিএলের খেলা চলছিলো। খেলা দেখলাম। কেনাকাটা শেষ করে সবাই রাতে এল। আমরা আবার শালিকে গেলাম রাতের খাবার খেতে। সেম আইটেম নিলাম। তবে আজকে ভর্তার বদলে নিলাম ২ প্লেট সবজি (রাতের আইটেম সবজি)। রেটিং ৭/১০। (খরচঃ সকালের নাস্তা- ৫০টাকা; চেয়ার ভাড়া, মাসাজ, চিপস-৭০ টাকা; বিকেলে পারাটা চা-২০ টাকা; রাতের খাবার-১১০ টাকা; মোট- ২৫০ টাকা)

***১২ ডিসেম্বর ২০১৭***
***সেন্টমার্টিন***
=====================
#কক্সবাজার_থেকে_টেকনাফঃ কক্সবাজারে বেশকিছু ট্যুর এজেন্ট আছে যারা সেন্টমার্টিন যাবার যাত্রীদের কক্সবাজার থেকে টেকনাফ জাহাজ ঘাটে পৌঁছে দেয়। আগেরদিন রাতেই আমরা ১০ জনের জন্য ১৫০ টাকা করে ১৫০০ টাকা দিয়ে টিকিট করে রেখেছিলাম। সকাল ৬ টা ৩০ মিনিটে সেই ট্যুরিস্ট বাসে করে আমরা টেকনাফ কেয়ারী ঘাটের উদ্দেশ্য রওনা দেই। (খরচঃ ১৫০ টাকা)

#কেয়ারী_ঘাটঃ সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে আমরা কেয়ারী ঘাটে পৌঁছাই। কেয়ারী সিন্দবাদ শীপের টিকিট তাদের ঢাকা অফিস থেকেই নিয়ে রেখেছিলাম। তাই টিকিট নিয়ে কোন ঝামেলা পোহাতে হয়নি। বাস থেকে নেমেই কাউন্টারে রিপোর্টিং করি। সময় না থাকায় কেয়ারী ঘাট থেকে সকালের নাস্তা পার্সেল নিয়ে সরাসরি শীপে উঠে পড়ি। সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ঘাট থেকে শীপ ছেড়ে যায়। (শীপের টিকিট-৫৫০টাকা, সকালের নাস্তা_১টা পারাটা, হাফ ডিম-২৫টাকা; মোট-৫৭৫ টাকা)

#শীপ_ভ্রমণঃ আমরা শীপের মেইন ডেক নিয়েছিলাম। মেইন ডেকের ভাড়া সব চেয়ে কম। মাত্র ৫৫০ টাকা। এছাড়াও শীপে ওপেন ডেক, এসি ডেক আছে। ওগুলোর ভাড়া একটু বেশি। তবে মেইন ডেক নিলেও মজা কিন্তু ওপেন ডেকের মতই। শীপ ঘাট থেকে ছেড়ে যাবার কিছুক্ষণ পড়েই সবাই ডেক থেকে বেড়িয়ে করিডোর এবং রেলিঙয়ের কাছে চলে আসে। নাফ নদী হয়ে শীপ সমুদ্রে ঢুকবার আগে থেকেই শতশত গাঙচিল (Sea Gull) শীপ ধরে উড়ে উড়ে আসে। যাত্রীরা চিপস, বিস্কিট ছুঁড়ে দেবার সাথে সাথে ছোঁ মেরে ধরে ফেলে। গাঙচিলের খাবার ছোঁ মেরে ঠোটে নেবার এই দৃশ্যও চমৎকার। নদী এবং সমুদ্রের মোহনায় আসববার সাথে সাথে শীপে মাইকে এনাউন্স করে দেয়া হয়। দেখার মত কোন দৃশ্য এলেও শীপ থেকে মাইকে বলে দেয়া হয় কোনটা কী? সমুদ্রের এক পাশে মায়ানমার, অন্যপাশে বাংলাদেশ। সমুদ্রের কোলঘেঁষে পাহাড় আর অরণ্যের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য শীপ থেকে দেখলে যে কারও মন পুলকিত হবে।

#সেন্টমার্টিনঃ দুপুর ১২টায় আমরা সেন্টমার্টিন পৌঁছাই। আমাদের মধ্য থেকে তিনজন যায় হোটেল কনফার্ম করতে। আমরা বাকিরা সবাই বাজারে অপেক্ষা করি। এসময় অনেকে তাদের হোটেল নেবার জন্য আমাদের রিকোয়েস্ট করতে থাকে। আধাঘন্টার মধ্য ঐ তিনজন হোটেল কনফার্ম করে আসে।

#সেন্টমার্টিন_হোটেলঃ সেন্টমার্টিনে আমরা বাজারের পাশে “স্বপ্ন বিলাস” রিসোর্টের দুটা রুম নিয়েছিলাম। ভাড়া পরেছিলো ১৩০০ টাকা। বাজারের পাশে বিধায় একটু বেশীই ছিল। আরও ভেতরে হোটেল নিলে আরও কমে পাওয়া যেত। একদম ভেতরে বাগান বাড়ির দিকে “নীল সীমান্ত” নামে একটা একটা রিসোর্ট আছে। বাজার থেকে ভ্যান ভাড়া ১৫-২০ টাকা। হাফ বিল্ডিং রিসোর্ট, তবে সুন্দর। যেটা ২রুম এটাস্ট বাথ, তিন বেড মাত্র ৭০০ টাকায় দিতে রাজি হয়েছিলো। ঘরোয়া পরিবেশ, বাড়ি ভর্তি নাড়িকেল গাছ, সারাক্ষণ সমুদ্রের গর্জন শোনা যায়, বার্বিকিউ এবং খাবারের সুব্যবস্থা ছিল। তবে আমাদের টিমের কয়েকজনের পছন্দ না হওয়ায় আমরা রিসোর্টটা নিতে পারিনি। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার পছন্দ হয়েছিলো। অল্প খরচে থাকার জন্য বেস্ট রিসোর্ট। (খরচঃ ১৩০ টাকা)
নোটঃ কক্সবাজারের মত সেন্টমার্টিনেও হোটেল ভাড়া নিতে হলে দামাদামি করতে হবে। প্রয়োজনে ছ্যাঁচড়ামি করতে হবে। মনে রাখবেন ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত হোটেল এবং রিসোর্টের ভাড়া অনেক কম। ৪ জন থাকার এক রুম ৬০০-১০০০ টাকায় পাবেন।

#দুপুরের_খাবারঃ হোটেলে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খাই “নোয়াখালী রেস্তরায়”। আইটেম ভর্তা, ডাল, মাছ। হোটেলের রুমের মত খাবারও অনেক দামাদামি করতে হবে। (খরচঃ ভাত-৩০টাকা, ডাল-১০টাকা, ভর্তা-১০টাকা, টুনা ফিশ ভাজি-৪০টাকা; মোট- ৯০ টাকা)

#সেন্টমার্টিন_ঘোরাঘুরিঃ খাবার পর সাবাই সাইকেল নিয়েই বিচ ঘুরতে বের হয়েছিলো। তবে আমি হেটেই বিচ ঘুরেছি। একবার সাইকেল নিয়েছিলাম ঘন্টায় ৪০ টাকা করে। কিছুক্ষণ চালাবার পর বিরক্ত হয়ে ২০ টাকা জরিমানা দিয়ে ফেরত দিয়েছি। সমুদ্রের কূল ঘেঁষে হেটে হেটে বিচ দেখার মজাই আলাদা। হেটে হেটে বিচ দেখতে দেখতে সূর্যাস্ত দেখলাম। এক সময় হুমায়ূন স্যারের “সমুদ্র বিলাস” এর সামনে পৌঁছে গেলাম। গেটে বলে ভেতরে ঢুকলাম। ভেতরে রিসোর্টের সংস্কার কাজ চলছে। অন্ধকারে ঘুরে ঘুরে দেখ বেড়িয়ে পড়লাম। আর কিছুদুর সামনে গিয়ে বিচের পাশে এক দোকানে চা খেলাম। অদুরেই বিচে ছোট ছোট দোকান বসেছে গরম গরম মাছ, কাঁকড়া ভাজির। অনেকে মাছ বেছে দিচ্ছে, দোকানি সেগুলো ভেজে দিচ্ছেন। চা খেতে খেতে যতদূর চোখ যায় দেখে নিলাম।

#রাতের_খাবারঃ রাতে তেমন ক্ষুধা না লাগায় সবাই পারাটা, ডিমভাজি, কাঁকড়া ভুনা খেলাম। তবে আমি ডিমভাজি আর পারাটা খেয়েছি। কাঁকড়া ভাজি কিংবা ভুনা ১২০ টাকা করে ছিল। (খরচঃ ২টা পারাটা-২০টাকা, ডিমভাজি-৩০ টাকা; মোট-৫০টাকা)

#কেনাকাটাঃ রাতের খাবার শেষ করে অনেকে বাড়ির জন্য শুঁটকি কিনেছিলো। শুঁটকি কেনার জন্য সেন্টমার্টিন বেস্ট। আমি কিছুই কিনিনি…

***১৩ ডিসেম্বর ২০১৭****
——————————-
#সূর্যোদয়ঃ সূর্যোদয় দেখার জন্য সকাল ৬টার মধ্যেই ঘাটের (শীপ থেকে যেখানে নেমেছেন) বিচে চলে যেতে হবে। সূর্যোদয় দেখতে গিয়ে অপূর্ব কিছু দৃশ্যের দেখা মেলে। রাতভর সমুদ্রে বয়ে চলা ট্রলারগুলো সে সময় পারে ভিড়ে। জেলেরা ট্রলার থেকে মাছ নামায়। ছোট থেকে শুরু করে বিশাল বিশাল সে সব মাছ। জীবনের প্রথম চাক্ষুস এমন সাইজের মাছ দেখলে কার না বিস্ময় জাগবে! বিচে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে সকালের নাস্তা সেরে ফেলি। (খরচঃ পারাটা-২০টাকা, ডিম ভাজি-৩০টাকা; মোট-৫০ টাকা)

#ছেঁড়াদ্বীপঃ হোটেল থেকে চেকআউট করে ব্যাগগুলো হোটেলের কাউন্টারে রেখে আমরা ছেঁড়াদ্বীপের উদ্দেশ্য রওনা দেই। সেন্টমার্টিন ঘাট থেকেই ছেঁড়াদ্বীপের স্পীডবোট, লাইফবোট যায়। অনেকে সাইকেল নিয়েও বিচ ধরে ছেঁড়াদ্বীপ যান। আমরা ঐদিনই ফিরতি শীপে করে টেকনাফ ফিরব তাই সাইকেল নিয়ে রিস্ক নিইনি। ঘাট থেকে ২০০ টাকা ভাড়ায় একটা লাইফবোট নিয়ে ছেঁড়াদ্বীপ যাই। স্পীডবোট ৩০০ টাকা ভাড়া। লাইফবোটে ছেঁড়াদ্বীপে যেতে আমাদের সময় লেগেছিল ২৫ মিনিটের মত। স্পীডবোটে ১০-১৫ মিনিট লাগে।
ছেঁড়াদ্বীপে পৌঁছেই ডাবের দোকান পেয়ে সবাই ডাব খেয়ে নিলাম। প্রতিটা ডাব ৫০টাকা করে। সেন্টমার্টিন গেলে ছেঁড়াদ্বীপ না গেলে সেন্টমার্টিন যাওয়া বৃথা। কেননা সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্যের পূর্ণতা দেয় ছেঁড়াদ্বীপ ভ্রমণ। ছেঁড়াদ্বীপ পুরোটা ঘুরে আমি এতটাই বিস্মিত হয়েছিলাম যে ঠিক করেছি আবার যদি কখনো যাই তাহলে ছেঁড়াদ্বীপে তাবু গেড়ে ক্যাম্প করব। সাইকেল নিয়ে গেলে পুরো দ্বীপটা ঘুরে দেখতে সমস্যায় পরবেন। তাই আমার মনে হয় ছেঁড়াদ্বীপ পুরোটা দেখতে হলে হেটেহেটে দেখাই উত্তম। ছেঁড়াদ্বীপে মৌসুমি পাথর নামে একটা পাথর আছে। যেখানে নায়িকা মৌসুমি ছবির শুটিং করতে এসে পাথরে নিজের নাম লিখে গিয়েছিলেন। (খরচঃ ২৫০ টাক)

#টেকনাফ_এবং_ঢাকা_ফেরতঃ ছেঁড়াদ্বীপ থেকে ফিরেই দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম। হোটেলের কাউন্টার থেকে ব্যাগ নিয়ে ঘাটে থেমে থাকা শীপে উঠে গেলাম। ঠিক ৩টায় শীপ টেকনাফের উদ্দেশ্য ছেঁড়ে গেল। ডেকের জানালা দিয়ে কিছুক্ষণ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে সেন্টমার্টিনকে বিদায় জানালাম। টেকনাফ পৌঁছতে পৌঁছতে বিকেল ৫টা পার হয়ে গেল। আগে থেকেই বাসের টিকিট বুকিং দেয়া ছিল। কিছুক্ষণ পড়েই বাস চলে এল। চারদিনের বিস্ময়কর ট্যুর শেষ করে সবাই আবার ফিরে চললাম ব্যস্ত নগরীতে। (খরচঃ বাস ভাড়া-৯০০টাকা)


****আমার মোট খরচ****
———————————-
৯ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত
ট্যুর বাবদ মোট খরচঃ ৪৮২৫ টাকা (যারা ধুমপান করেন তাদের খরচ কিছুটা বাড়তে পারে)
এবং কিছু হাবিজাবি হাত খরচ গেছে।

****গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য এবং টিপস****
————————————————
>>স্টুডেন্ট আইডি কার্ড, NID কার্ড সাথে নিবেন।
>>অল্প খরচে কক্সবাজার কিংবা সেন্টমার্টিন থাকতে হলে ডিসেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যে ট্যুর প্লান করুন। এসময় ৪-৫জন থাকার মত হোটেল ভাড়া ৭০০-১০০০ এর মধ্যেই পাওয়া যায়। ১৫ ডিসেম্বরের পর থেকে পুরোপুরি ট্যুরিস্ট সিজন শুরু হয় তখন হোটেলগুলোর ভাড়া বেড়ে যায়।
>>হোটেল ভাড়া করবার সময় দামাদামি করুন এবং প্রয়োজনে চূড়ান্ত লেভেলের ছ্যাঁচড়ামি করুন।
>>কক্সবাজারের বিচ ফটোগ্রাফারদের দ্বারা ছবি তুলে নেবার আগে দামাদামি করুন। শুধু বিচ ফটোগ্রাফার না লোকাল যানবাহনে যাত্রার পূর্বেও দামাদামি করে নিন।
>>৭-১০ জনের টিমের মধ্যে গেলে খরচ কম হবে। তবে টিমের মধ্য গেলে কম্বাইন্ড করে থাকা, খাওয়ার মনমানসিকতা থাকতে হবে। এতে খরচ অনেক কমে যায়। যেমন আমরা একটা ডিমভাজি ২জন করে খেয়েছি। এক প্লেট ভর্তা ৫জন মিলেমিশে খেয়েছি।
>>শুধু কক্সবাজার না, সেন্টমার্টিনের সব কিছুর ক্ষেত্রে দামাদামি করে নিবেন।
>>টিমের সাথে গেলে অবস্যই সেক্রিফাইসড করবার মত মেন্টালিটি ধারণ করবেন। মনে রাখবেন ট্যুরে টিম মেম্বারের সাথে সামান্য মন কষাকষি ট্যুরের খরচ বাড়ানো থেকে ট্যুরের আনন্দ নষ্ট করে দিতে পারে।
>>ঘুরতে গিয়ে কেউ ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশ দূষণ করবেন না। এতে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন দূষিত হয় তেমনি আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও নষ্ট হয়।

*****হোটেল/বাস/শীপের তথ্য*****
——————————————–
#হানিফ_পরিবহণঃ
ঢাকা কাউন্টার (ফকিরাপুল)- 01713201729
কক্সবাজার কাউন্টারঃ 01713402635
টেকনাফ কাউন্টারঃ 017303776365

#কেয়ারী_সিন্দবাদ_শীপঃ
ঢাকা অফিসঃ 01817148735
কক্সবাজার অফিসঃ 018172104215
টেকনাফ অফিসঃ 01819379083

#কক্সবাজার_হোটেলঃ
প্রতীক জিনিয়া
Rifat Bhai- 01836046043

#সেন্টমার্টিন_হোটেলঃ
স্বপ্ন বিলাস
Alamgir Vhai- 01905062237; 01905062237

নীল সীমান্ত (অল্প খরচে থাকতে চাইলে)
ফোন নাম্বারঃ 01859397005

Post Copied From:Humayun Hanif‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

বান্দরবান জেলার লামা উপজেলা

অনায়াসেই ঘুরে আসতে পারেন ছোটখাটো রকমের এই ভূস্বর্গে।
চকরিয়া – লামা আলীকদম রোডের মিরিঞ্জা নামের এই স্থানে সকাল সাড়ে আটটার দিকে যখন গিয়ে পৌঁছাই,তখন কড়া রোদ আমাদের গায়ে এসে লাগে কিন্তু তখনো কুয়াশার চাদরে মুড়ে থাকা লামায় রোদের বিন্দুমাত্র আঁচ ও এসে লাগে নি।
শীতের সকালের প্রত্যেকটা দিন ই এখানে এভাবে শুরু হতে দেখে এ অঞ্চলের প্রত্যেকটা মানুষ।
কুয়াশার এই অসীম সৌন্দর্য ছাড়াও আছে আরো বেশ কিছু জায়গা যেগুলো ঘুরে আসা যায় সাবলীল ভাবেই।

রোড – ঢাকা – কক্সবাজার রোডের চকরিয়া টার্মিনাল নেমে বাস বা জীপে করে আসা যায় লামা।
সব মিলিয়ে হাজার তিনেকের মধ্যেই ঘুরে আসতে পারেন সবটুকু।
আসার পথের সৌন্দর্যরূপ দেখেই মুগ্ধতায় ডুবে থাকা টা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
থাকা ও খাওয়ার জন্য লামা বাজারেই আছে বেশ ভালো মানের কিছু হোটেল।
আমরা স্বভাবতভাবেই নতুন কোন স্থানে গেলে সেটাকে খুব সুন্দর ভাবে নষ্ট করে আসার অসীম ক্ষমতা নিয়ে আসি।
আশা রাখি আমরা আর এখন সেই ক্ষমতা প্রদর্শন না করানোর চেষ্টা করবো।
হ্যাপি ট্রাভেলিং।

Post Copied From:Avishek Sharma Pranto>Travelers of Bangladesh (ToB)

প্যারস্যুট থেকে দেখা সমুদ্র ও পাহাড়.

আগের রাত ৮ টায় বগুড়া থেকে রওনা দেই, গন্তব্য কক্সবাজার।
সঙ্গত কারনেই সেদিন রাতে ও পরদিন সকালে ভারি কিছুই খাওয়া হয়নি।
প্রায় ১৮ ঘন্টার জার্নি শেষ করে কক্সবাজারের হোটেলে চেক ইন করি দুপুর ২ টায়!
কোনভাবে ফ্রেশ হয়ে, নাখে-মুখে লাঞ্চ সেরে এক ছুটে চলে গেলাম দরিয়ানগর।
উদ্দেশ্য ‘প্যারাসেইলিং’
একজনকে প্যারাস্যুটের সাথে ঝুলিয়ে, সমুদ্রে চলন্ত স্পিড বোটের সাথে দড়ি লাগিয়ে প্রায় মিনিট ৫-৭ পর্যন্ত আকাশে উড়ানোর নামই প্যরাসেইলিং।

বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে কক্সবাজারের কলাতলি-হিমছড়ি সড়কের দরিয়ানগরে তাদের প্যারাসেইলিং এর বন্দোবস্ত আছে, শুনেছি হিমছড়ি বিচেও নাকি এটা করা যায়। এখন পর্যন্ত শতভাগ নিরাপদ।

যাওয়া মাত্রই সিরিয়াল পেয়ে গেলাম।
‘আমার মৃত্যু বা অন্য কোন দূর্ঘটনার জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না’
এই মর্মের প্রত্যয়ন পত্রে নাম-দস্তখত করা মাত্রই,
কয়েকজন কর্মি আমার গায়ে লাইফ জ্যাকেট চাপিয়ে দিলো,
আরো দুইজন মিলে প্যারাস্যুটের ক্যারাবাইনার হুকড করে দিলো।
বুকে তখন শঙ্কা বাজছে, অজানা আতঙ্কের ডঙ্কা বাজছে!
যদিও আমার অ্যাক্রোফোবিয়া (উচ্চতাভীতি) আছে,
তবুও এডভেঞ্চারের আশায় উড়াল দেবার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হচ্ছি।
কর্মিরা সব বুঝিয়ে দিলো, তেমন কিছুই না;
স্টার্টিং এর সময় দ্রুতবেগে হাঁটতে বা দৌড়াতে হবে,
আর ল্যান্ডিং এর সিগন্যাল দিলে লাল ফিতা বাঁধা রশি টেনে ধরতে হবে,
ব্যস! এইটুকুন!

স্পিড বোট চলতে শুরু করলো, রশিতে টান পড়লো,
এক পর্যায়ে আবিষ্কার করলাম স্বয়ং আমি আকাশে উড়ছি, আলহামদুলিল্লাহ!
পানিতে পড়ে গেলেও ভয় পাবার কিছু নেই,
গায়ে লাইফ জ্যাকেট, আর নিচে রেস্কিউ বোট, তাই কোন চিন্তা নেই।
হাতের মোবাইলটা রেখেছি ভিডিও করার জন্য,
বিশেষ ব্যবস্থা ছিলো, পড়ে যাবার এবং পড়ে গেলে ভিজে নষ্ট হবার ভয় ছিলোনা।
প্রচন্ড বাতাসে দম নিতে কষ্ট হচ্ছিলো,
প্রবল কুয়াশায় চারিপাশের দৃশ্য ভালোভাবে উপভোগ করা যাচ্ছিলো না,
শাঁ-শাঁ করে বয়ে চলা বাতাস কান স্তব্ধ করে দিচ্ছিলো,
কথা সত্য, নিচে তাকালেই মাথা ঘুরছিলো, তবুও; এটাই উপভোগ্য!

যাই হোক, প্রায় ১০ মিনিট উড়ু খাওয়ার পরে বাঁশির আওয়াজ পাওয়া মাত্রই নির্দিষ্ট রশি টান দিলাম, মিনিটের মধ্যেই বিচের মধ্যে সফট ল্যান্ডিং…
ইচ্ছে হলো পূরন, জীবন হলো সুন্দর!

প্যারাসেইলিং ফি ১৫০০/- (জাস্ট ফান, শুধু উড়াবে),
২০০০/- (এক্সট্রা ফান, পানিতে পা ছোঁয়াবে, বেশিক্ষন উড়াবে)
কক্সাবাজারের কলাতলি মোড় থেকে লোকাল অটোতে যাওয়া যায়,
জনপ্রতি ভাড়া ১৫/২০ টাকা।
আগে থেকে ফোন করে গেলে ভালো,
এক্টিভিটিজ চালু কি না সেটা জানা যাবে,
সিরিয়ালও রাখা যাবে। যোগাযোগঃ 01783-598892

Post Copied From:

Jubair Abdullah‎> Travelers of Bangladesh (ToB)

বাংলাদেশেই করতে পারবেন Parasailing

অনেকে হতো করেছেন জানেন,যারা জানেন না তাদের জন্য। খরচও পড়বে ১৫০০-২০০০ টাকা। প্যাকেজ সিস্টেম অনেকটা। এর জন্য আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হলো কক্সবাজার থেকে একটু দক্ষিণে ইনানির দিকে যেতে হবে। অটোতে গেলে ১৫-২০ মিনিট লাগবে। যাওয়া-আসা ভাড়া পরবে ৩০০ টাকা অটো প্রতি। আকাশে অাপনি কতসময় থাকবেন সেটা অাপনি 1500 টাকার প্যাকেজ নিবেন নাকি ২০০০ টাকার প্যাকেজ নিবেন সেটার উপর ডিপেন্ড করে। ১৫০০ টাকার প্যাকাজে আপনাকে শুধু আকাশে উড়াবে আর ২০০০ টাকার প্যাকেজে উড়ানোর মাঝে একবার সাগরের পানিতে ছোট্ট একটা চুবানি দিবে। অামরা যেদিন করসিলাম সেদিন ৩ নাম্বার বিপদ সংকেত ছিলো। সো বাতাস এতো বেশি ছিলো স্বাভাবিক ভাবে ওরা যতো টা উপরে তোলে সেদিন তার থেকে বেশি উপরে উঠে গেছি মনে হচ্ছিলো 😂 যেখানে Parasailing করেছি আমার কাছে ওদের ব্যাবহার বেশি ভালো লাগছে ভিডিও করার জন্য আপানার নিজের ক্যামেরা নিয়ে যেতে হবে, তবে সেল্ফি স্টিক বা মোবাইল ফোন নিয়ে উঠতে দিবে না। রিকোয়েস্ট করলে উঠতে দিবে তবে রিস্ক অাপনার ইভেন কি এটাও বলে দিবে যে ৯০% মোবাইল পড়ার চান্স বেশি। সেক্ষেত্রে অাপনি অ্যাকশেন ক্যামেরা নিয়ে যেতে পারেন তাতে কোনো অাটকাবে নাহ। Parasailing করার অাগে অাপনাকে ওরা সমস্ত সিস্টেম দেখিয়ে দিবে। মাঝ সমুদ্রে যেটা করবেন সেটা হলো উপর থেকে নিচে থাকিয়ে থাকবেন 😂 বেশি ফিল 👏

ভালো লাগবে টাকা মাইর যাবে না সিউর 

Post Copied From:

Fazle Elahi Shahriar‎ > Travelers of Bangladesh (ToB)

সৈকতে ক্যাম্পিং

গত ১৬ই নভেম্বর তুমুল ঝড়ো বাতাস আর গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মাঝেই নিলাচলের ক্যাম্পিং সারলাম। বৃষ্টি ভেজা সলিং রাস্তা ধরে নিলাচলের একদম উপরে মোটরবাইকগুলো উঠাতে বেশ বেগই পেতে হয়েছিল আমাদের। তারপরেও ক্যাম্পিং এর আমেজ যেন বৃষ্টির মধ্যে ঢাকা থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো কিমি চালিয়ে যাবার ধকল নিমিষেই ভুলিয়ে দিলো।

পরেরদিনের(১৭.১১.২০১৭) ক্যাম্পসাইট ছিলো আরো আকর্ষণীয়… আরো আরাধ্য। কক্সবাজারের বীচ বরাবরই আমার কাছে খুবই আবেদনময়ী। যেন সারাক্ষণই হাতছানি দিয়ে ডাকে… তাই বহুদিনের জমানো ইচ্ছেটাকে বাস্তবে রূপ দিতে আমরা ১৬জন মোটরসাইক্লিস্ট নিলাচল থেকে খুব ভোরে তাবুটাবু গুছিয়ে রউনা দিলাম শামলাপুর বীচের উদ্দেশ্যে। আসলে ক্যাম্পিং করার উদ্দেশ্যই থাকে নিবিড়ভাবে প্রকৃতিকে উপভোগ করা। তাই নির্জনতা হচ্ছে এর ১ম শর্ত। শামলাপুরের এই বীচটি সেদিক থেকে অনেকটাই নির্জন। আবার অপরদিকে নির্জন হলেও সৈকতটিকে আমার পুরোপুরিই নিরাপদ মনে হয়েছে। সাথেই মেরীনড্রাইভ সংলগ্ন বাজার। বাজারের সাথেই পুলিশের চেকপোস্ট। একটু আগালেই বিজিবির আরেকটি চেকপোস্ট। ফলে অনেকটাই নিরাপদ। রোহিংগা ক্যাম্পও অনেক দূরে। খাবারদাবারের ঝামেলা নেই। সারাদিনের জার্নির পরে নিজেরা কিছু করতে না চাইলে সৈকতেই ছোট্ট একটি হোটেল আছে। সন্ধ্যার আগে পৌঁছাতে পারলে ওদের বললে ওরাই ব্যবস্থা করে দিবে। ফলে পেয়ে যাবেন সৈকতে বসেই ডিনারের সুযোগ। সাথেই আছে ওয়াশরুম। ওদের বললেই চাবি দিয়ে দিবে। পাশাপাশি আছে দুটি নলকূপ, চাইলে গোসল করে নিতে পারবেন। নামায পড়তে চাইলে কাছাকাছিই আছে একটি মসজিদ।

কক্সবাজার থেকে মেরীনড্রাইভ ধরে প্রায় ৫০কিমি আগালে বাহারছড়া ইউনিয়নে পড়েছে এই শামলাপুর সমুদ্র সৈকত। কিছু মাছধরার নৌকা আর জেলেরা ছাড়া কোন মানুষজনও আপনার চোখে পড়বে না… ঝাউবনে পাবেন সবুজের ছোঁয়া। সমুদ্রের আছড়ে পড়া ঢেউয়ের সামনে ঝাউবনে ঘেরা নির্জন প্রকৃতিকে পেয়ে আপনি ১৬ আনাই উপভোগ করবেন নিশ্চিত। কক্সবাজার, হিমছড়ি বা ইনানিতে কত মানুষের ভীড়… হৈহল্লোর। এখানে তাঁর কিছুই নেই… শুধু আপনি আর সমুদ্র। বিশ্বাস করুন… আপনাদের মাঝে আর কেউ নেই… কোন হকার বেরসিকের মতো আসবেনা আপনার ধ্যান ভাংগাতে … পড়ন্ত বেলায় মাছ ধরার নৌকাগুলো টেনে তোলার দৃশ্য… জেলেদের জাল দিয়ে মাছ ধরা… স্থানীয় শিশুদের দৌড়ঝাঁপের মধ্যে চোখে পড়বে শুধুই সমুদ্র আর তাঁর নীল জলরাশির শোঁ শোঁ গর্জন…. ব্যস, এবার হারিয়ে যান 🙂

**কলাতলি থেকে চান্দের গাড়ি বা থ্রী হুইলার ভাড়া করে শামলাপুর বললেই নিয়ে যাবে। ৫০ কিমি যেতে হয়তো ঘন্টাখানেক লাগবে।

Post Copied From:Abdul Momen Rohit‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

Radiant Fish World

ছবি দেখে নিশ্চয় ভাবছেন এটা দেশের বাইরের কোন জায়গা, ঠিক যেন ডিসকভারি আর ন্যাশনাল জিওগ্রাফি কিংবা এনিমেল প্ল্যানেটে দেখানো বিরল ও কিম্ভুতকিমাকার সব সামুদ্রিক প্রাণীর সমাবেশ । এ কি করে বাংলাদেশে সম্ভব!!

জ্বি না। ভুল ভাবছেন। এই প্রথম আমাদের দেশে ( আমার জানা মতে) আন্তর্জাতিক মানের একুরিয়াম স্থাপনের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে আর তার ফলাফল চোখের সামনেই।

কক্সবাজার, ঝাউতলা এলাকাতেই গত ৩০ নভেম্বর, ২০১৭ তে উদ্বোধন হয় Radiant Fish World এর।

জনপ্রতি টিকেট মূল্য ৩০০ টাকা। এছাড়া ভিতরে একজন ভদ্রলোক আছেন যিনি ডি এস এল আর ক্যামেরাতে ছবি তুলে দেন ( প্রতি ছবি — ৫০ টাকা) । নিজেরা ক্যামেরা নিলে তো কথাই আলাদা। আর উপরে একটি রেস্টুরেন্ট ও আছে যার পরিবেশও অনেক সুন্দর।
ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য আছে খেলাধুলার সুব্যবস্থা।

কক্সবাজার ভ্রমণে এখন সবাই হিমছড়ি, ইনানী, টেকনাফ এর পাশাপাশি এখানেও বেড়াতে আসবে, আসতে বাধ্য।
কারণ নিজের দেশে এত সুন্দর ও প্রশংসাকারী একটি উদ্যোগ ঠিক কতটুকু সফল হয়েছে তা একবার হলেও পরখ করা উচিত।

বিচিত্র ও নতুন সব সামুদ্রিক প্রাণীর এমন সমাবেশে যে কেউ মুগ্ধ হতে বাধ্য।
যাঁরা এখনো এই ব্যাপারে শুনেন নি আর তাই যাওয়া হয়নি, তাঁরা ঘুরে আসতে পারেন Radiant Fish World.

৪ রাত ৩ দিনের ভ্রমন

#(কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন,হিমছড়ি,,মেরিন ড্রাইভ,ইনানী সি বিচ,রামু বৌদ্ধ বিহার,রাবার বাগান)।

গত ১ তারিখ টাংগাইল থেকে রউনা হই স্বপ্নের কক্সবাজার এর উদ্দেশ্য , তার আগে রোহিঙ্গা নিয়ে অনেক কথা শুনেছি,এত গুলো জায়গা ঘুরে এসে একটা কথাই বলব,, কোন গুজবে কান না দিয়ে& নির্দ্বিধায় চলে যান কক্সবাজার,কোন রুপ অসুবিধা হয় নি ঘুরে বেড়াতে।
আমরা ছিলাম হোটেল সি কক্স এ, হোটেল র এর বারান্দা থেকে সি ভিউ পাওয়া যায়,কক্সবাজার এমন জায়গা বার বার গেলেও সাগরের মুগ্ধতা শেষ হবে না,সন্ধ্যায় চলে যাই বার্মিজ মার্কেটে,ভারা মাএ ১০ টাকা,দামাদামি করে নিবেন, যার কাছ থেকে যেমন রাখতে পারে,ওনেক কিছু শপিং করে হোটেল এ ফিরে আসি,পরের দিন ৬ টার সময় সেন্ট মার্টিন এর জন্য হোটেল।এর সামনে থেকে বাস ছেরে যায়,জাহাজ চলছে সাথে পাখি গুলা উড়ছে আর সবাই চিপ্স বা রুটি ছুরে দিচ্ছে, এক পলকেই লুফে নিচ্ছে পাখি গুলো,,সেন্ট মার্টিন না গেলে কক্সবাজার ভ্রমন বৃথা, এ যেন নীলে নীলে মিশে একাকার,আকাশ নীল সাগরের পানী নিল,যে ভিউ টা আপনি কক্সবাজার পাবেন না,সেন্ট মার্টিন গেলে ডাব খেতে ভুলবেন না,,,পরের দিন সকালে চলে গেলাম রামু বুদ্দিডস বিহার আর রাবার বাগান,রাবার প্রসেসিং দেখলাম,,তার দুপুরের পর চলে গেলাম মেরিন ড্রাইভ এ, মনে হচ্ছিল বাহিরের কোন দেশে চলে এসেছি,এক পাশে সাগর এক পাশে পাহাড়,দেখেই চোখ জুরিয়ে যায়,,হিমছরি দেখে সন্ধ্যা টা পার করলাম ইনানি সি বিচ এ,,সূর্য অস্ত যাওয়ার এরকম সুন্দর দৃশ্য আর কোথাও পাওয়া যাবে কিনা জানা নেই,মনে হল কে টেনে সূর্য টা কে পানির নিচে নিয়ে যাচ্ছে,,
অত:পর সুন্দর কিছু স্মৃতি নিয়ে বাড়ি ফেরা,,,,,,<br>
ছবি:সেন্ট মার্টিন,নো এডিট

Post Copied From:Mahady Rakib>Travelers of Bangladesh (ToB)

বাংলার পর্যটন রাজধানী

পৃথিবীর মানচিত্রে খুব ছোট্ট একটি দেশ আমাদের বাংলাদেশ। তথাপি রূপ-লাবণ্য আর বৈচিত্র্যময়তায় মুগ্ধ হয়ে হিউয়েন সাং বলেছিলেন,”ঘুমন্ত সৌন্দর্যের আঁধার।” কখনো পাহাড়ি খরস্রোতা নদীর বুকে ভেসে চলা আর দু’পাশের পাহাড়গুলোর মেঘমালার মাঝে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা মনকে শিহরিত করে। আবার কখনো বা আঁধারে ঢাকা নি:স্তব্ধ সৈকতে দূর থেকে ভেসে আসা সমুদ্রের গর্জনে মনে হয় আরো এক জীবন যদি এভাবেই কেটে যেতো। জন্ম সার্থক একজন বাঙালি হয়ে।
পৃথিবীর দীর্ঘতম নিরবচ্ছিন্ন বালুকাবেলার সৈকত কক্সবাজার। ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে বাংলার পর্যটন রাজধানী হিসাবে পরিচিত। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স এর নামানুসারে কক্সবাজার নামকরণ করা হয়। কক্সবাজারের পূর্বনাম ছিল পালংকি। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধ্যাদেশ,1773 জারি হওয়ার পর ওয়ারেন্ট হোস্টিং আসেন বাংলার গভর্নর হয়ে এবং হিরাম কক্স আসেন মহাপরিচালক হয়ে। আরাকান শরণার্থী এবং স্থানীয় রাখাইন সম্প্রদায়ের মধ্যে হাজার বছরেরও পুরানো সংঘাত নিরসনের চেষ্টা করেন। কিন্তু কাজ শেষ করার আগেই তিনি মারা যান। কিন্তু তার এই অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে পরবর্তীতে একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করা হয় যা “কক্স সাহেবের বাজার” নামেই পরিচিতি পায়। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও সেই নামটি ধারণ করাটাই প্রমাণ করে বাঙালি বিশাল হৃদয়ের অধিকারি এক জাতি।
নি:সন্দেহে সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের মূল আকর্ষণ। পাশাপাশি হিমছড়ি পাহাড় থেকে শেষ বিকেলের আলোয় অস্তমিত সূর্য কে দেখা, ইনানি সৈকত, রামুর রাবার বাগান এবং একশো ফিট সিংহ শয্যা বৌদ্ধ মূর্তি, মহেশখালি দ্বীপ নি:সন্দেহে আপনার ভ্রমণ পিপাসু মনের যাবতীয় ক্লান্তিকে দূরীভূত করবে। ছবিটি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে তোলা (ঢাকা- কক্সবাজার- সমুদ্র সৈকত)

Post copied From:Saikat Hussain‎>Travelers of Bangladesh (ToB)