কম খরচে নাফাখুম আমিয়াখুম ঘুরার এর প্লান

আমিয়াখুম , নাফাখুম এর নাম শুনলেই অনেকের রোমান্টিসিজম বেড়ে যায়, রেমাক্রি খালের এই দুই জায়গা যেতে চায়না এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম , আর যেতে আগ্রহী দের মধ্যে ছাত্র ভাই দের সংখ্যাই বেশি, গাইড খরচ, নৌকা, চান্দের গাড়ির মাত্রাতিরিক্ত ভাড়ার কারনে দেখা যায় খরচ বেড়ে ৫০০০-৬০০০ হয়ে যায়, তাই অনেকেই ইচ্ছা থাকা সত্বেও এই জায়গাগুলাই যেতে পারেনা। তাছাড়া সামনে আসছে ঈদ , অনেকেই সেখানে যেতে চাইবে, তাই যারা কম খরচে নাফাখুম , আমিয়াখুম ঘুরে আসতে চান তাদের জন্য আমার এই অল্প খরচে নাফাখুম ,আমিয়াখুম ঘুরে আসার প্লান। এই প্লান কারো কাজে আসলে আমার কষ্ট টা স্বার্থক হবে।

আমাদের প্লান টা ১০ জনের গ্রুপ এর জন্য , লোক কম হলে খরচ বেড়ে যাবে সেই অনুপাতে আবার লোক বেশি হলে খরচ কমে যাবে সেই অনুপাতে।

আমার সম্পুর্ন প্লান টা দেয়া হলঃ

১ম রাতঃ ঢাকা থেকে নন এসি বাসে করে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা, খরচ ৬২০ টাকা।

১ম দিনঃ সকাল বেলায় বান্দরবানে নেমে নাস্তা করা, পরটা, ডিম ভাজি, ডাল, সাথে চা, হাইয়েষ্ট খরচ ৭৫ টাকা।

নাস্তা করেই চলে যাবেন থানচি বাস স্ট্যান্ডে , অটো করে ৫ জন যেতে পারবেন অটো তে , ১০ টাকা করে নিবে। থানচি বাস স্ট্যান্ড থেকে সকাল ৮ টার প্রথম গাড়িতে উঠবেন, ভাড়া নিবে ২০০ টাকা।

আগে থেকেই গাইড ঠিক করে রাখবেন, থানচি যেতে ৪ঃ৩০ ঘণ্টার মত সময় লাগবে, থানচি গিয়েই গাইডের সাথে দেখা করবেন। এর পর দুপুরের খাবার সেখানে খেয়ে, থানা, বিজিবি ক্যাম্পের প্রক্রিয়া সেরে পদ্ম ঝিরি উদ্দেশ্যে নৌকা ভাড়া করবেন। নৌকা ভাড়া নিবে হাইয়েষ্ট ১২০০ টাকা ( ৮০০-১০০০ ও হতে পারে)। এক নৌকায় ৫ জন উঠবেন। পার হেড ২৪০ টাকা হচ্ছে।

পদ্মঝিরি তে নেমে থুইসাপাড়ার উদ্দেশ্যে হাটা শুরু করবেন, ৬-৮ ঘণ্টা লাগবে থুইসাপাড়ায় পৌছাতে, সেখানে পৌছে কোন উপজাতীয় এর ঘরে উঠবেন, গাইড কে বলবেন রান্না করতে, সে রান্না করলে রাতের বেলায় খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বেন।

২য় দিনঃ ভোরবেলায় উঠবেন, উঠে আপনার গাইড থুইসাপাড়া থেকে গাইড ঠিক করে দিবে, তাকে বলে নিবেন সে যেন ভেলা করে সাতভাইখুম, ভেলাখুম ঘুরিয়ে নিয়ে আসে। তারপর আমিয়াখুম চলে যাবেন , আমিয়াহুম, সাতভাইখুম, ভেলাখুম ঘুরে সন্ধ্যার আগেই চলে আসবেন থুইসাপাড়ায়। এ রাতও থুইসাপড়ায় রয়ে গেলেন।

৩য় দিনঃ এ দিন শুরু করবেন বেশ সকাল বেলায়, ৬ টার মধ্যে অবশ্যই রওনা দিবেন, রওনা দিবেন রেমাক্রি উদ্দেশ্যে , সকালে হাল্কা নাস্তা করেই হাটা শুরু করবেন, রাস্তা খুবই সহজ, রেমাক্রি খাল ধরে সমান রাস্তায় ৪ ঘন্টার মত হাটলেই পৌছে যাবেন নাফাখুম, সেখান ১ ঘণ্টা আনন্দ করেন, আবার হাটা শুরু করবেন রেমাক্রি উদ্দেশ্যে, ২ ঘন্তার মত হাটলেই পৌছে যাবেন রেমাক্রি, সেখান থেকে নোকা করে চলে আসবেন থানচি। নৌকা ভাড়া ২৫০০-৩০০০ টাকা, ৫ জন উঠবেন।

থানচি থেকে লাস্ট বাস ২ টায় , তাই বিষয় টা মাথায় রাখবেন, থানচি পৌছে দুপুরের নাস্তা করে বাসে উঠে পড়বেন। ২০০ টাকা ভাড়া নিবে, সেই বাস সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে আশা করি বান্দরবান চলে আসবে, সেখান থেকে রাতের খাবার খেয়ে ঢাকার বাসে উঠবেন, ভাড়া ৬২০ টাকা।

এই হল ঢাকা টু ঢাকা প্লান।

খরচের হিসাবঃ
==========

১। ঢাকা টু বান্দরবান নন এসি বাস– ৬২০ টাকা
২।টোটাল ৯ বেলা খাবার ( গাইড মাস্ট রান্না করবে, পাড়ায় থাকাকালীন সময়ে চাল, সবজি, মুরগি পাড়া থেকে কিনবেন, মশলা নিজেরা আগেই কিনে নিয়ে যাবেন)– ৯*১০০=৯০০ টাকা ম্যাক্সিমাম
৩।বান্দরবান টু থানচি বাস ভাড়া=২০০ টাকা
৪।গাইড=৭০০০ টাকা, ১০ জন হলে প্রত্যেকে ৭০০ টাকা
৫।থানচি টু পদ্মঝিরি নৌকা ভাড়া- ১২০০ টাকা পার নৌকা, ৫ জন করে এক নৌকায় হলে পার হেড ২৪০ টাকা।
৬।থুইসাপাড়ায় দুই রাত থাকা=২*১০০=২০০ টাকা
৭।রেমাক্রি টু থানচি নৌকা ভাড়া=৩০০০/৫=৬০০ টাকা
৮।থানচি টু বান্দরবান বাস ভাড়া=২০০ টাকা।
৯।বান্দরবান টু ঢাকা বাস ভাড়া=৬২০ টাকা

তাহলে টোটাল খরচ হচ্ছে

৬২০+৯০০+১০+২০০+৭০০+২৪০+২০০+৬০০+২০০+৬২০=৪২৯০ টাকা।

( থুইসাপাড়ার গাইড এর খরচ, ভেলা বানানোর খরচ থানচির গাইড দিবে, খাওয়ার খরচ আরো কমানো সম্ভব)

Post Copied From:Abu Bakar Siddique‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

অপার্থিব আমিয়াখুম

১১-১০-২০১৭

বুধবার রাতে ভালো আবহাওয়া নিয়ে 9 জনের টিম হয়ে (আমি, দোলা আপু,মোঃ যায়েদ বিন হাসেম,Sagor Al Mamun,Neamul Haque Naem,Nayeem Hossain, অপু এবং মাহমুদ ভাই) বাসে করে রওনা দেই বান্দরবান। উদ্দেশ্য ” আমিয়াখুম”। প্ল্যানিং ছিল যাবো পদ্মমুখ-পদ্মঝিরি-হরিচন্দ্রপাড়া-থুইসাপাড়া দিয়ে। আর ফিরবো নাফাখুম-রেমাক্রি হয়ে।

১২-১০-২০১৭

প্রথমেই বাঁধ সাধলো জ্যাম। ৪ ঘন্টা দেরি করে বান্দরবান পৌছালাম।সেখান থেকে চাদের গাড়ি নিলাম যাতে দ্রুত থানচি পৌছে পদ্মঝিরি দিয়ে ট্রেকিং শুরু করতে পারি। কিন্তু মাঝে দিয়ে গাড়ির ব্রেক গেলো নষ্ট হয়ে।ওই পাহাড়ি রাস্তায় ব্রেক ছাড়া কিভাবে আগাবো 😥? ভয়ে কলিজা শুকিয়ে গেলো। আমাদের ড্রাইভার শুধু গিয়ারে বাকি পথ চালিয়ে গেলো খুব ধীরে। প্রতি বাঁকে মনে হচ্ছিল এই বুঝি খাদে পড়লাম !! শেষমেষ অক্ষত অবস্থায় যখন থানচি নামলাম তখন বিকাল ৩.৩০। খাওয়া দাওয়া করে আর্মি ক্যাম্প থেকে পারমিশন নিতে ৪.৩০। পদ্মঝিরি দিয়ে থুইসা পাড়া যেতে সময় লাগবে ৬-৭ ঘন্টা।এখন রওনা দিলে রাত ১১টায় ও যেতে পারবো কিনা সন্দেহ। তারউপর ২ জন মেয়ে,রাতে ট্রেক করার প্রিপারেশন ও টিমের ছিল না। এই অবস্থায় একটাই পথ খোলা,রেমাক্রি চলে যাওয়া। মানে যে রুট ধরে ফিরবো ভেবেছি সেই রুট ধরে যেতে হবে। ওই সময় রেমাক্রি যাওয়ার ও বোট পাওয়া যাচ্ছিলো না কারণ বৃষ্টিতে নদীর পানি অনেক বেড়ে গেছে,সন্ধ্যাও নামছে। এই সময় রওনা দেওয়া রিস্ক।অনেক কষ্টে ২টা বোট ম্যানেজ হলো,চলতে লাগলাম রেমাক্রি। কিন্তু সাংগুর সর্বগ্রাসী স্রোত দেখে ভয়ে চুপসে গেলাম। নৌকা রোলার কোস্টার এর মত উপরনিচ করে 😓!! দোয়া দুরুদ পড়তে লাগলাম মনে মনে। মাগরিবের আযান দিয়ে অন্ধকার নেমে আসলো। তার কিছুখন পরেই আমরা রেমাক্রি নামলাম। এই যাত্রায় পার হলাম। রাতে আমাদের গাইড সাগর ভাই বললেন,নদীর পানি না কমলে আমিয়াখুম রওনা হওয়া যাবেনা।শুধু নাফাখুম দেখেই ফিরে যেতে হবে।নাফাখুম সবাই আগে এসেছি।মন খারাপ নিয়ে ঘুমাতে গেলাম।আমিয়াখুম তখন কেবলই আল্লাহর ইচ্ছা। 😞😞

১৩-১০-২০১৭

সকাল ৪.৩০টায় ঘুম থেকে উঠে পড়লাম।৫.৩০টায় খিচুরি,ডিম ভাজি খেয়ে ৬টায় রওনা দিলাম।আল্লাহর রহমতে পানি কমেছে,যাওয়া যাবে।আজকের সম্পূর্ণ পথ ব্যাগ নিয়েই হাটতে হবে।৮ টার মধ্যে আমরা চলে গেলাম নাফাখুম।এখানে বেশিক্ষন সময় না দিয়ে আবার চলতে লাগলাম।গাইড বলল,৪বার নদী পাড় হতে হবে।শুনেই গলা শুকিয়ে গেলো।তবু আমরা পারস্পরিক সহায়তায় সব বাঁধা পার করলাম।কখনো দড়ি দিয়ে,কখনো বা সবাই হাত ধরে পার হলাম। দোলা আপু তো একবার ভেসেই চলে যাচ্ছিলেন,গাইড ভাই সাঁতরে তাকে উদ্ধার করে আনলেন। কোথাও হাটু সমান কাদা,পা আগানো যায়না। আর জোঁকের কথা কি বলবো। কিছুক্ষন পর পর জোঁক চেক করছিলাম,পাচ্ছিলাম,রক্ত পড়ছিল,তাই নিয়ে আগাচ্ছিলাম।পথ আর শেষ হয়না। এর মধ্যে অনেকের ব্যাগ ভিজে ৫ গুন ওজন হয়ে গেলো।তাই নিয়ে অমানষিক হাটা। এর ই মধ্যে দুইজন বেশ দুর্বল হয়ে পড়লেন। তারা ঘোষণা দিলেন তাদের পক্ষে আজ আর আমিয়াখুম যাওয়া সম্ভব না।তারা থুইসাপাড়া থেকে যাবেন। বাকি ৭ জন আমরা যাবো। অনেক কষ্টে দুপুর ২.৩০টার দিকে আমরা থুইসা পাড়া পৌছালাম। কিন্তু আমরাও আর নড়তে পারছিলাম না। সবার মনে শঙ্কা এই অবস্থায় আমিয়াখুমের বড় চ্যালেঞ্জ দেবতা পাহাড় কিভাবে পাড়ি দিব আমরা ?ক্ষুধায় জীবন যাচ্ছিলো এক একজনের। খেতে খেতে ৪টা বেজে গেলো। নিয়ম অনুযায়ী পাড়ার গাইড এর সাথে আমাদের যেতে হবে আমিয়াখুম। কিন্তু ওই সময়ে কেউ যেতে রাজি হলেন না। ফিরতে নাকি রাত ১০টা বাজবে।আর রাতের বেলা সেই ভয়ংকর দেবতাপাহাড় পাড়ি দেওয়া সম্ভব না। সো আমাদের আর কোন অপশন থাকলো না। কাল সকালেই যেতে হবে। রাতে আমরা আবার মিটিং এ বসলাম। কারণ কাল গেলে আমাদের কাল ও থেকে যেতে হবে।সেক্ষেত্রে ট্যুর একদিন বাড়াতে হবে। খরচ বাড়বে,সবাই পারবে কিনা ম্যানেজ করতে।আবার অনেকের অফিস ও আছে। আমরা বললাম এতদুর এসে আমিয়াখুম না দেখে যাবো না। যা হওয়ার হবে। ২জন বললো তাদের অফিস ম্যানেজ হবেনা। কাল তারা চলে যাবে। তাই সই। ৭ জন ই যাবো। রাতের বেলা টের পেলাম পায়ের পাতায় প্রচণ্ড ব্যাথা। অবশেষে আবিস্কার করলাম একটা কাটা ফুটেছে। নাঈম সেইফটি পিন দিয়ে গুতাগুতি করে কাটা বের করে দিলো। নাহলে পরদিন যাওয়া সম্ভব হত না। 😭

১৪-১০-২০১৭

সকাল ৬টায় বের হয়ে পড়লাম।আজ আর ব্যাগ টানতে হবেনা এই ভেবে একটু relax লাগছিল।দেবতা পাহাড় যাবার আগে ছোট দুইটা পাহাড় পার হতে হয়।তাতেই হাঁপায় গেলাম সবাই। দম আসছে আর যাচ্ছে,খেয়ে রওনা হবার জন্য এমন হচ্ছিলো। এক ফ্রেন্ড কিছুদুর গিয়ে বললো আর যেতে পারবেনা। ফিরে গেলো। আগালাম আমরা ৬ জন।অবশেষে উঠলাম দেবতা পাহাড়। এবার শুধু নামা। সবাই বলে নামতেই কষ্ট, ২ ঘন্টা লাগে।প্রথম দর্শনেই হচকে গেলাম নামার পথ দেখে , একেবারে খাড়া ভাবে নেমে গেছে নিচে । একবার পা ফসকে গেলে কই গিয়ে পরব তা ভেবে গা শিরশির করছিল , সাহস নিয়ে পা বাড়ালাম । নামছি তো নামছি খাড়া ঢাল বেয়ে ,আর ভাবছি এইখান থেকে কি আমি ফিরে যেতে পারব সুস্থ ভাবে ।হঠাৎ পানির গর্জন কানে আসাতে বুঝতে পারি কাছেই আছে আমিয়াখুম । আমাদের নামতে অনেক কম সময় লাগলো ৪০-৪৫ মিনিট। তবে নামার সময় শুধু ভাবছিলাম এই পাহাড় আমাকে উঠতে হবে!!!!
দেবতা থেকে নেমেই সামনে উন্মুক্ত কলকল বয়ে যাওয়া পানির স্রোত । তারপর ৫ মিনিট হেঁটেই আরাধ্য আমিয়াখুম 😍😍 , নিমিষেই সব ক্লান্তি উধাও। বৃষ্টির কারণে পূর্ণ যৌবনা আমিয়াখুম , তার গর্জনের ছন্দে দেহ মন অবশ হয়ে আসে । আমিয়াখুম দেখে ভেলায় ভেসে পরলাম ভেলাখুমে। ব্যাপক লাফালাফি ঝাপাঝাপি করে এবার ফেরার পালা।সবার মুখ শুকিয়ে গেলো এই পাহাড়ে উঠতে হবে ভেবে। এমন খাড়া পাহাড়,২ মিনিট উঠেই হাপায় যাই কিন্তু দাঁড়ানো যাবেনা সব জায়গায় জোঁকের আখড়া!! ৩০ মিনিটেই আমরা উঠে গেলাম।
গাইড বলছিল,আমাদের গতি এত ভাল জানলে সে আমাদের গতকাল বিকালেই নিয়ে আসতো। পাড়ায় পৌঁছে খেয়ে গা এলিয়ে শুয়ে পড়লাম সব। কাল ফেরার পালা। ৬-৭ ঘন্টা হাটা এখনো বাকি।

১৫-১০-২০১৭

পরদিন ভোর ৬টায় বিদায় জানালাম থুইসা পাড়া কে। হাটতেই আছি,পথ আর শেষ হয়না। পাহাড়ে চলতে চলতে একসময় পা অটো হয়ে যায়।থামা যায়না। কাঁধে যে একটা ভারি ব্যাগ আছে সেটাও টের পাচ্ছিলাম না। আমাদের গতি বেশ ভালো থাকায় পথে আমরা অনেক সময় নষ্ট করলাম ঝিরিতে লাফালাফি করে। তবুও হরিচন্দ্রপাড়া,পদ্মঝিরি পার হয়ে ১২টার আগেই চলে গেলাম পদ্মমুখ।নৌকায় করে চলে গেলাম থানচি।সেখান থেকে খেয়ে ২.৩০টার বাসে ফিরলাম বান্দরবান।রাত ৯টায় ঢাকা ফেরার বাস ধরলাম।

এক অদ্ভুত তৃপ্তি নিয়ে ফিরছিলাম। এত প্রতিবন্ধকতা পিছনে ফেলে আমিয়াখুমের স্বাদ নিয়ে তবেই আমি বাড়ি ফিরছি ❤😎!! আর একটা কথা ভেবে শান্তি পাচ্ছিলাম যে,আমি বন্ধুদের সাথে সমান তালে এগিয়ে গিয়েছি।মাঝে মাঝে সবাইকে পিছে ফেলে আমিই ছিলাম সবার সামনে। লুতুপুতু মেয়ে হয়ে কাউকে বিরক্ত করিনি, বিপদেও ফেলিনি 😍😍।

ছবি #রিজভী

খরচ সমুহ:
>ঢাকা বান্দরবান ৬২০
>বান্দরবান-থানচি জীপ ৪৫০০
>থানচি-রেমাক্রি বোট ৩২০০
>রেমাক্রি থাকা ১৫০ জন প্রতি, খাওয়া ১৫০-১৮০ (depends)
>থুইসাপাড়া থাকা ১৫০ জন প্রতি, খাওয়া ১০০-১৫০
>পদ্ম ঝিরি-থানচি বোট ১০০০
>থানচি-বান্দরবান বাস ২০০
>গাইড খরচ ৭০০০
*৫ রাত ৪ দিনে আমাদের জনপ্রতি ৬০০০ টাকা খরচ হয়েছে*

Post Copied From:Ohona Ivy‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

আমিয়াখুম ও সাতভাইখুম ( বান্দরবান ) ভ্রমণ পরিকল্পনা ও খরচ

আমীয়াখুম ট্যুর প্লান ।

০। দিন রাতে ঢাকা টু বান্দরবান প্রতি সিট ভাড়া গাড়ির মান অনুযায়ী ৬২০টাকা,থেকে ৯০০টাকা পর্যন্ত ॥

১ম  দিনঃ ভোরে ঢাকার গাড়ি থেকে বান্দরবান শহরে নেমে নাস্তা করে ।থানছির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ।যাওয়ার পথে ,সৌন্দর্য পূর্ণ যেই দৃশ্যে গুলো দেখতে পাবেন ,শৈলপ্রপাত,চিম্বুক ,নীলগিরি ॥

থানছি যাওয়ার মাধ্যম ॥

চাঁদের গাড়ি অথবা লোকাল বাস॥ বান্দরবন টু থানছি লোকাল বাস ভাড়া প্রতি জনের ২০০টাকা,সময় ৪/৫ঘন্টা । অথবা চাঁদের গাড়ি রিজার্ভ করতে পারেন ভাড়া ৫০০০/৬০০০টাকা,যাত্রী সংখ্যা সর্বোচ্চ ১৪ জন । সময় ৩/৩:৩০ঘন্টা ॥ থানছি পৌঁছে গাইড নিতে পারেন ১জন গাইড চার্চ আলোচনা সাপেক্ষ ॥

৩দিনের জন্য শুকানো খাবার ও রান্নার প্রয়োজনিয় খাদ্য দ্রব্য কিনে নিতে পারেন।

বিকাল ৩টার আগেই (থানা+বিজিবির ) অনুমতি নিবেন,অন্যথায় থানছিতে রাত যাপন করতে হবে ।

দুপুরের খাবার খেয়ে প্রথমেই বোট ভাড়া করবেন পদ্ন মূখ যাওয়ার জন্যে । লোকাল বোটে জন প্রতি ৫০টাকা ,অবশ্য লোকাল বোট সবসময় পাওয়া যায় না সেক্ষেত্রে রিজার্ভ ভাড়া করতে হয় ১০০০/১২০০টাকা প্রতি বোট । পদ্ন মুখ থেকে পদ্ন ঝিরি ,রোনাজুন পাড়া,হরিচন্দ্র পাড়া হয়ে ৬/৭ ঘন্টা হেটে থুইষা পাড়ায় পৌছাবেন । থুইষা পাড়ায় রাতের খাবারের জন্য চাউল ,তরকারী কিনবেন আর গাইড রান্না করে খাওয়াবে ।থুইষা পাড়ায় থাকার ঘরভাড়া জন প্রতি ১৫০টাকা ।

২য় দিনঃ ভোরে ঘুম থেকে উঠে মোটামুটি খেয়ে আমিয়া খুমের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন । থুইষা পাড়া থেকে আমিয়া খুম যাওয়া আসা ৬/৭ ঘন্টা সময় লাগবে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই শুকানো খাবার ও পানির বোতল নিতে বুলবেন না ।৩/৩:৩০ ঘন্টা হাটার পর দেখতে পাবেন অবিশ্বাস্য সৌন্দর্য আমীয়া খুম । সাতভাই খুম ওভেলা খুম দুটিই পাশাপাশি দেখার মতো স্পট ,চাইলে ঐ দুটু খুমের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন । সূর্য ডুবার আগেই থুইষা পাড়ায় ফিরে আসবেন।

৩য় দিনঃ ভোরে মোটামুটি খেয়ে হাটা শুরু করবেন নাফাখুম হয়ে রেমাক্রীর উদ্দেশ্যে ।জিন্নাহ পাড়া, উল্হাউ পাড়া উলাচিং পাড়া হয়ে ৩ঘন্টা হাটার পর দেখতে পাবেন প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য নাফাখুম জলপ্রপাত ।নাফাখুমে ১ঘন্টা রেষ্ট নিয়ে হেডম্যান পাড়া ,পিনিডং পাড়া হয়ে ২ঘন্টা হেটে পৌছাবেন রেমাক্রী বাজার ।দুপুরের খাবার খেয়ে বোটে করে তিন্দু হয়ে থানছির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ।রেমাক্রী টু থানছি রিজার্ভ বোট ভাড়া ২০০০/২৫০০টাকা।বোটে করে থানছি আসার পথে দেখতে পাবেন মনোমুগ্ধকর দৃশ্যে তিন্দু বড় পাথর ।

থানছি পৌছা মাত্র সময় ও চাঁদের গাড়ি যদি ঠিকটাক থাকে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ,ভাড়া আসার মতই ।রাতে ঢাকার বাসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ॥

সরকারী ছুটির দিনে বান্দরবান টু থানছির চাঁদের গাড়ি ভাড়া ও থানছি টু রেমাক্রীর ট্রলার ভাড়া কম বেশি হতে পারে ॥

  • মোঃ হারুন রশীদ
  • পর্যটক গাইড
  • থানছি ,বান্দরবান
  • ফোন কল ;-01556705010
  • 01849556340