রয়াল ষ্টেট অফ ভূটান

আসলেই তাদের বেপার-সেপার রয়াল সাথে তাদের মন ও। তাদের দালান শিল্প ও কারূকার্য এর কোন তুলনা হয়না। পরিছন্নতার দিক দিয়ে দেশটি অনেক শতর্ক। সপ্তাহে একবার তো তারা ভলান্টিয়ার করে পথে নামবেই। আর্মি, পুলিশ, ড্রাইভার ও সাধারণ মানুষ সকলেই এই কাজটি র্নিদিধায় করে। ইভেন আপনি কোথাও গাইড নিয়ে যাচ্ছেন, সেও দেখবেন রাস্তায় পরে থাকা কোন প্যাকেট/বোতল হাতে তুলে নিচ্ছে।
আমাকে পুরোপুরি ব্ষ্মিয় করার মত একটা দিক হচ্ছে মডার্ণ মেয়দের ড্রেসআপ সেন্স। আপনি যদি ইন্সটাগ্রাম ইউজার হন তবে খেয়াল করবেন অখানে মেয়েরা অনেক ভিন্টেজ, ফ্লোরাল ড্রেস, জ্যাকেট, এডিডাস, নাইকি, ছোট ব্যাকপ্যাক, গুগলস আরও কতো কি পরে ডোপ ডোপ ষ্টাইল করে। ঠীক সেরকম টাই দেখতে পারবেন। ঐ দেশে বিয়ে করে নাগরিক হতে হলে ছেলেদের থাকতে হবে ২৫ বছর এবং মেয়েদের ১৫। ☹️
এতটা কম খরচ এ পুরো ট্যুর টা শেষ করতে পারব ভাবতে পারিনি। না গেলে আপনিও বিশ্বাস করবেন না। যদিও বা কম খরচ শুধু বাজেট ট্রাভেলার দের জন্য প্রযোজ্য। ভিসার সময় সল্পতার করণে পুনাখা টা শুধু যেতে পারিনি। তবে ইচ্ছা আছে আবার যাবো। অন্য মানুষদের হয়ত এই দেশটি ন্যাচারাল বিউটির জন্য বারবার যেতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে তবে এটার সাথে আমার যেই ব্যাপার টা খুব বেশি টানে সেটা হচ্ছে ধূমপান নিষিদ্ধতা। কারণ আমি ধূমপান করিনা এবং এটার ধোয়া তেও আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। জানি অনেকেই আমাকে অলরেডি হেইট করা শুরু করে দিসেন। 😛 বাট ঘুরতে হলে বাঁচতে হবে মশাই। মশাই কথাটা ওখানে ঘুরতে আসা এক কলকাতার দাদার মুখে শুনেছি।
আমার বাসা রংপুর। ঢাকা থেকে এয়ার এ আসছি। ২ দিন রেষ্ট করছি এবং ভরপুর খাইছি। মডার্ণ মোড় পাম্প থেকে রাত ৪ টায় মানিক এক্সপ্রেস এ চড়ে গেছি বুড়িমারি বর্ডার। যদিওবা আগে বাস ধরতে পারতাম বাট মানিক এ আমার বন্ধুরা আসছে তাই। শ্যামলি এর থেকে মানিক এর সিট এবং ব্যাবহার দুটোই ভালো। আমার বন্ধুরা দালাল এর দাড়ায় করাইছে ৭০০ টাকা করে দিছি ট্রাভেল ট্রাক্স (৫০০) সহ। আমি ট্রাভেল ট্রাক্স রংপুর সোনালী ব্যাংক থেকে দিয়ে গেছি। একজন পরিচিত ছিল তাই বাংলাদেশ সাইডে ৫০ টাকা লাগছে এবং আমাকে বাইকে করে একদম শেষ মাথায় নামায় দিয়ে আসছে। আমার বন্ধুদের দালাল ধরেও অনেক দেরি হইছে আসতে।
যাইহোক, ইন্ডিয়ার সাইডে আবারো প্রচুর দালাল ঘিরে ধরবে। আপনার বাস এর নাম এমনভাবে বলবে যেনো সেই বাসের সাথে অফিসিয়ালী রিলেটেড। আমি নিজেই কাজ করছি বাট আমার বন্ধুরা দালাল দিয়ে করাইছে। আমি আগে দিলেও আমার বন্ধুদের পরে আমার নাম ডাকছে সিগ্নেচার এবং ছবির জন্য এবং ৫০ টাকা চেয়ে নিছে। ১০০ এর নোট দিছি, ৪০ রূপি ব্যাক দিসে বাংলা টাকা না থাকায়। পরে আবার বলতেছে, পাইলে ২/১ টাকা বেশি ই পাবেন চিন্তা নাই 😄এখানে নিজে করেও আমার ১০০ টাকা লাগছে। আমার ঢাকা থেকই রূপি করা ছিল। ব্যাগ চেকিং ও হইছিল। বন্ধুদের টাকা চালাকি করে ১০ পয়সা বেশি নিয়ে ভাঙ্গিয়ে দিলাম। ০৮/১২/১৭ তারিখে রেট পাইছি ৭৮.৬০ রূপি করে।
তারপর টমটম নিয়ে বাসষ্টান্ড, বাসষ্টান্ডে একজনের জন্য অপেক্ষা করতে যেয়ে ২টা বাস ও ৪৫ মিনিট লস। পরে সেখানে আর বাস না পেয়ে টমটম করে বাইপাস চলে গেলাম। সেই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই হইছে, তারপর বাইপাস থেকে ময়নাগুরি। ময়নাগুরি তে বাস কন্টাকটর বেটা ছিল বদমাইশ। আমাদের বলছে ফালাকাটা দিয়ে কাছে হবে, পরে দেখি বীরপাড়া দিয়ে কাছে। ফালাকাটা পর্যন্ত রাস্তা টা একদম খারাপ এবং বালু-ধুলা দিয়ে ভরতি।ফালাকাটা নেমে পাশেই জয়গাঁও এর বাস, সেখান থেকে ১.৫/২ ঘন্টা লাগে। টোটাল ৪/৫ ঘন্টা লাগছে। এই পর্যন্ত ১০০ রূপি খরচ হবে। একটা মজার বেপার লক্ষ করছি যে, এই পর্যন্ত বেশির ভাগ মানুষের মুখে রংপুরের ভাষা শুনছি। তারপর মোটড় গাড়িতে (৭ রূপি) চড়ে জয়গাঁও ইমিগ্রেশন অফিস (সুপার মার্কেট/বাডা বাজাড়) থেকে এক্সিট সিল নিয়ে ভূটান গেট হেটে যাওয়া যায়। বাট মেইন গেট দিয়ে ঢুকার ট্রাই করাতে আমাকে জেইলে দিয়ে দিত 😆 পরে একটু ভিতর দিয়ে মানুষের গেট দিয়ে ঢুকতে হইছে। আর মেইন টা হচ্ছে গাড়ী-ঘোড়ার গেট।
অইদিন ছিল শুক্রবার, আর আমরা পৌছাইছি ৪:৩০ এ। শনি-রবি ইমিগ্রেশন অফ। টেনশনে ঘুরাঘুরি করতে বাজাইছি ৫ টা। কারণ অফিস সামনে দিয়ে বন্ধ এবং ইন্ডিয়ান রা অনেক কনফিউজ্ড করছে যে আজ আর পারমিট পাওয়া যাবেনা। কারণ ইন্ডিয়ান দের ৪ টার পরে আর পারমিট দেয়না। ভিতরে যেয়ে বাংলাদেশি বলতেই সাথে সাথেই ফর্ম দিয়ে দিল এবং পুরোন করার পরে পাসপোর্টে অনেক খুজে বলে যে ইন্ডিয়ান এক্সিট সিল তো নাই। ৬ টায় বন্ধ হবে জয়গাঁও ইমিগ্রেশন অফিস তাড়াতাড়ি নিয়ে আসেন আমি আছি। পরে অনেক হ্যাসেল এর পর নিয়ে এসে ভূটান পারমিট নেই এবং ফুন্টসোলিং এ থাকি। সন্ধার পর হোটেল থেকে বের হয়ে মার্কেট ঘুরি এবং রাতে খাবার পরে পার্কে বসে অনেক সময় কাটাই।
পরদিন ভোরে উঠে বাস কাউন্টারে যাই এবং থিম্পু এর টিকি ট কাটি ৮:৩০ এর ২৪৫ রূপি করে। নাস্তা করে ব্যাগ নিয়ে রওনা হই। আরামছে ৬ ঘন্টা কেটে যায়। পুরো রাস্তা টা উপরে উঠতে থাকার কারণে হালকা মাথা ধরছিল তাই একটু ঘুমায় ও নিছলাম। রাস্তা এবং বাস এতটাই ভালো যে আমি চাকার উপরে সিটে বসেও কিছু ফিল করিনি। মাঝে ১ বার পারমিট চেক ও নাস্তা ব্রেক দেয়। কোন জ্যাম দেখতে পারবেন না এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে কোন হর্ণ শুনবেন না। ☺️এপাশে এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে তাও হর্ণ দিবেনা। ভূটান এ থাকার আরেকটা ভালো কারণ। নো ইনভায়র্ণনেন্ট পলিউশন।
পৌছে হোটেল খুঁজে ঘুরতে বের হইছি, সিম কিনছি (২৫০ রূপি+২০০ রূপি ইন্টারনেট), ট্রাক্সি ঠীক করছি, খাওয়া-দাওয়া করছি। পরের দিন ট্রাক্সি করে থিম্পু মোটামুটি সব ঘুরে ঐ ট্রাক্সিতেই পারো চলে গেছি কারণ আগে থেকেই ঠীক করে নিসলাম ৩০০০ রূপি তে।
পারো তে হোটেল খুঁজে উঠে পরলাম এবং রাতে অল্প ঘুরাঘুরি করে হোটেল ব্যাক করতে হয়ছে কারণ তাদের খাবার শেষ সময় রাত ৮:৩০ (পুরো ভূটান এ) এবং অর্ডার আগে থেকেই করে রাখতে হয়। রাতে বের হয়ে হাটাহাটির পর, পরের দিনের ট্রাক্সি ঠি ক করলাম টাইগার নেষ্ট, কিচু ও মিউজিয়াম (১৪০০ রূপি) এবং তার পরের দিন সকাল সকালে চেলেলা পাস এর জন্য (১৭০০ রূপি)। তারপর পারো টু ফুন্টসোলিং এর বাস টিকে ট (২৪৫ রূপি) ও করে নিলাম কারণ ভদ্রমহিলা আগেই বলেছেন ষ্টুডেন্ট দের অনেক চাপ সো পরে টিকি ট নাও পেতে পারো। এই হোটেলে পরের দিনের সব রূম বুকড ছিল তাই আমরা তাদের লবি তে ব্যাগ দিয়ে টাইগার নেষ্ট পাড়ি দিলাম এবং পরের দিন সকালে চেলেলা পাস ঘুরে, এয়ারপোর্ট ভিউপয়েন্টে কিছুক্ষণ থেমে ফুন্টসোলিং চলে আসলাম। ঐ দিন রাতে থেকে পরদিন বর্ডার ক্রস করে সেই প্রথম এর মতো করেই বাড়ি।
হোটেল বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দাম, আমার শেয়ারে ৩০০/৪০০/৫০০ রূপি করে পরছে। হোটেল সব দামাদামি করে নিছি তাই কম। খাবার বেশির ভাগ দিনই খাইছি ফ্রাইড রাইছ এবং রেষ্টুরেন্ট ভেদে আলাদা দাম ১২০/১৩০/১৫০ রূপি। ১০০ রূপি তে ভালো ব্রেকফাষ্ট করতে পারবেন ডেইলি। তারা খাবারে লবণ দেয়না বল্লেই চলে, তাদের ডাক্তার নাকি মানা করছে। পেট ভরে কিন্তু মন ভরেনা। 😣 ৫ হাজার রূপির মতো শপিং করছি, বেশির ভাগ সেরে ফেলছি পারো তে আর বাকি টুকটাক ফুন্টসোলিং এ। অহ, আমরা যেমন ক্রিকেট প্রেমী তেমনি তারা আবার খুব ফুটবল প্রেমী। তাদের ফুটবল গ্রাউন্ড গুলোও দেখার মতো। খেলাও দেখছি একটা। ☺️
অনেক বড় লিখে ফেললাম। আসলে আইফোন (ভাব) এ বাংলা লিখতে খুবই কষ্ট। সো আশা করি হাহা রিএক্ট দিয়ে ভালবাসা জানায় পাশে থাকবেন। তাছাড়াও ঘুরার কয়দিন অনেক কষ্ট গেছে, কিন্তু আমরা রংপুর বাসিরা কিছুটা এরকম “আছে বেলা, হইবে এলা”। সো সব কিছু লেট লেট তাই পোষ্টও কিছুদিন লেট হলো। ফটো আমার নিজের তোলা।
হ্যাসট্যাগ ফর কূইক সার্চ: #bhutan #thimphu #paro #pheuntsholing #tigernest#chelelapass #traveldiary

Post Copied From:MD Shyam Islam‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

Leave a Reply

Your email address will not be published.