৩ জন এর গ্রুপের জন্য প্রযোজ্য

কিভাবে ঘুরে আসবেন ঢাকা-সেন্টমার্টিন-কক্সবাজার-ঢাকা পার পারসন মাত্র ৩৯৮৯ টাকায়?

প্রথমে সায়দাবাদ থেকে হানিফ নন এসি নাইট কোচ এ উঠুন, টেকনাফ পর্যন্ত। ভাড়া ৯০০ টাকা, ছাড়ে সন্ধ্যা ৭:৩০-৮:০০ টার দিকে। একদম টেকনাফ এর কেয়ারী ঘাট এ নামিয়ে দিবে ভোর ৭ টার দিকে, নেমে নাস্তা করে নিন, ঘাটের পাশেই একটা হোটেল আছে। পরোটা, সবজি পাওয়া যায়, পরোটা ১০ টাকা আর সবজি ২০ টাকা। চা ১০ টাকা,,,,,, আমাদের ৩ জন এর ১৭০ টাকা বিল আসছিল। আশেপাশে আর কোন দোকান না থাকায় এই হোটেলে খাবারের দাম ডাবল রাখতেছে, তাই খাওয়ার আগে দাম জিজ্ঞেস করে নিবেন। নাস্তা করার আগে শীপের টিকিটটা করে নিতে পারেন, আমরা মেইন ডেক এর টিকিট করেছিলাম ৫৫০ টাকায় (up down)। শীপ ছাড়ে ৯.১৫-৯.৩০ এর দিকে। হাতে যখন সময় আছে সেহেতু ঘুরে আসতে পারেন জাহাজ ঘাটের আশেপাশে, তবে বেশিদূর না যাওয়াই ভালো। কারন ভোর বেলায় রাস্তাঘাটে তেমন মানুষ থাকে না, পাহাড়ি এলাকা, তাই সাবধান থাকাই ভালো। জাহাজ ছাড়ার আগে কাউন্টার থেকে একটা এন্ট্রি টিকিট সংগ্রহ করবেন ফ্রী তে, তারপর জাহাজের দিকে রওনা দিবেন। এন্ট্রি টিকেট টা জাহাজ ঘাটের মাথায় রেখে দিবে আর একটু সামনে গেলে জাহাজের টিকিটটাও রেখে দিবে। আর আপনাকে ২টা টিকিট দেয়া হবে, একটা যাওয়া আর একটা আসার জন্য। জাহাজে প্রবেশের আগে যাওয়ার টিকিটটা দিবেন। জাহাজ ছাড়ার পর ডেকে বেড়িয়ে আসুন, দেখতে পাবেন অনেক গাংচিল(শিউর নয়) জাহাজের আশেপাশে উড়ে বেড়াচ্ছে। গাংচিল কে দেয়ার জন্য চিপস কিনতে পারেন। নাফ নদীর উপর দিয়ে যাত্রা শুরু করার বেশকিছুক্ষন পর জাহাজ সমুদ্রে পৌছাবে আর পানি আস্তে আস্তে নীল হয়ে যাবে। চারপাশের পাহাড় আপনাকে আকর্ষণ করবে।। এইগুলা দেখতে দেখতে ১২-১ টার দিকে আপনি সেন্টমার্টিন পৌছে যাবেন। নেমেই সবার আগে হোটেল ঠিক করবেন, হোটেল দামাদামি করবেন, এখন যেহেতু সিজন চলে আসছে তাই দাম অনেক বেশি চাইবে। আমরা ১টা সিংগেল আর ২ টা ডাবল বেড এর রুম নিয়েছিলাম ৫০০ টাকায়, দোতলায়। এখন অবশ্য ভাড়া বেড়ে যাওয়ার কথা। সেন্টমার্টিনে কারেন্ট নাই, সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত জেনারেটর চালানো হয়। ভালো হয় পাওয়ার ব্যাংক থাকলে। চেকইন করে চলে যাবেন সৈকতে গোসল করতে। গোসল শেষ করে রুমে ফিরে আসবেন, দুপুরের খাবারের জন্য আশেপাশের হোটেল গুলায় খোজ নেন। আমরা ভাত, ডাল, মাছের ভর্তা, আলু ভর্তা দিয়ে খেয়েছিলাম, ৩ জন এর বিল আসছিলো ২০০ টাকা। খাওয়ার পর হোটেলে ফিরে রেস্ট নিলাম। ৪:৩০ এর দিকে হাটতে হাটতে বের হলাম সুর্যাস্ত দেখার জন্য দ্বীপের পশ্চিম পাশে। যদি চিনতে সমস্যা হয় তাহলে দেখবেন রিকসা করে অনেকেই যাচ্ছে, ওই দিকে হাটা ধরবেন, ২০ মিনিট লাগবে যেতে। চাইলে রিকসায় যেতে পারেন, ভাড়া ৫০-৬০ টাকা নেবে। গিয়ে সুর্যাস্ত দেখবেন, এক ধরনের প্রশান্তির মতো আসবে মনে। যেদিকে মুখ করে সুর্যাস্ত দেখছিলেন তার উলটো দিকে মুখ করে তাকালেই দেখতে পাবেন বিশাল বড় চাঁদ। দেখতে এতোই কাছে মনে হবে যে ভাববেন হয়তো সামনের গাছের উপরে উঠলেই ধরে ফেলতে পারবেন চাঁদ মামা কে। সন্ধার পর রিকসায় করে ফিরে আসুন হোটেলে, এসে ফোন চার্জে দিন। রেস্ট করে ৯ টার দিকে বের হয়ে পড়ুন বারবিকিও করার জন্য।
বীচের পাশেই অনেক দোকান থাকে, দামাদামি করে একটা মাছ কিনে নিন, আমরা কিনেছিলাম ৩০০ টাকা দিয়ে কোরাল মাছ , সাথে পরোটা ৯ টা (৯০ টাকা)। সব হয়ে গেলে ৩ টা বেঞ্চ ভাড়া করে বসে পড়ুন বীচে। আর পান ৫ স্টার হোটেলে বসে খাবার স্বাদ, আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহুর্ত ছিলো এটা। খাওয়া শেষ করে আরো কিছুক্ষন সমুদ্রের বাতাস গায়ে লাগিয়ে ১২ টার দিকে হোটেলে ফিরে আসুন, এসে জম্পেস একটা ঘুম দিন।

Post Copied From:

ফারহান ওয়ালিদ>Travelers of Bangladesh (ToB)

Leave a Reply

Your email address will not be published.