টাঙ্গাইল জেলা ভ্রমণ সহায়িকা

পরিচিতি: টাঙ্গাইল একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা। যার পূর্বে ময়মনসিংহ ও গাজীপুর, পশ্চিমে সিরাজগঞ্জ, উত্তরে জামালপুর, দক্ষিণে ঢাকা ও মানিকগঞ্জ জেলা অবস্থিত। এ জেলায় মোট ১২ টি উপজেলা আছে।যমুনা, ধলেশ্বরী ও বংশী নদীবিধৌত টাঙ্গাইল জেলা। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নিদর্শনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন বাংলার অনেক কৃতী পুরুষ যারা বিভিন্ন সময় এদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। এ মাটিতে শায়িত আছেন হযরত শাহান শাহ বাবা আহমদ কাশমিরী (রা.)। এই জেলার সন্তান মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী।দেশে-বিদেশে তাঁতের শাড়ির জন্য যে জেলাটি সবার কাছে সুপরিচিত তার নাম টাঙ্গাইল জেলা। দর্শনীয় অনেক জমিদার বাড়ি, মসজিদ,মাজার,বন-বনানী ও নদী আছে। ঢাকার খুব কাছেই এবং সহজ যাতায়াতে ঘুরে দেখার মত দারুন একটি জেলা টাঙ্গাইল।

ভ্রমণ / দর্শনীয় স্থান:
জমিদার বাড়িসমুহ: টাঙ্গাইল জেলায় অনেক জমিদার বাড়ি আছে যা এই জেলার পুরাতন ঐতিহাসিক অনেক নিদর্শন বহন করে আসছে।
মহেড়া জমিদার বাড়ীঃ ঢাকার খুব কাছে সুন্দর একটা স্থাপনা। জায়গাটা বেড়ানোর জন্য বা পিকনিকের জন্য একটা আদর্শ স্থান। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত মহেড়া জমিদার বাড়ি। ঢাকা-টাংগাইল জাতীয় মহা সড়কের জামুর্কী হতে টাংগাইল এর দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার উত্তরে এবং টাংগাইল থেকে ঢাকার দিকে নাটিয়া পাড়া বাসস্ট্যান্ড হতে প্রায় দুই কিলোমিটার দক্ষিণে ডুবাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছ থেকে মহা সড়কএর পূর্ব- দক্ষিণ দিকে একটু আঁকা-বাঁকা রাস্তায় প্রায় ০৪(চার) কিলোমিটার দুরত্বে মহেড়া জমিদার বাড়ী/ মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার অবস্থিত। কাছাকাছি আসলে একটু খেয়াল রাখবেন, ঢাকা-টাংগাইল জাতীয় মহা সড়কে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারএর দিক নির্দেশনা দেখতে পাবেন।
পাকুটিয়া জমিদারবাড়ীঃ পাকুটিয়া জমিদারবাড়ী টাঙ্গাইলে, এটাও প্রায় ১০০ বছর পুরোনো।ইহা নাগপুর উপজেলার পাকুটিয়া ইউনিয়ন এ অবস্থিত।দেলদুয়ার থেকে প্রায় ২০ কিমি দূরে ধলেশ্বরী নদী পার হয়ে যেতে হয়। মানিকগঞ্জের বালিয়াটি জমিদার বাড়ির খুব নিকটে পাকুটিয় জমিদার বাড়ি অবস্থিত। সি এন জি যোগে এই জমিদার বাড়িটি ঘুরে আসতে পারেন।
নাগরপুর চৌধুরী বাড়ী (জমিদার বাড়ি) ঃ টাঙ্গাইল জেলার নাগপুর উপজেলায় এই জমিদার বাড়িটি অবস্থিত। নাগপুর থেকে পায়ে হেটে অথবা অটো/রিক্সা করে ঘুরে আসতে পারেন এই ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি। এ ছাড়াও আছে  মোকনা জমিদার বাড়ী,করটীয়া জমিদার বাড়ি।

বিশেষ মসজিদ/মাজার:
আতিয়া মসজিদঃ ইহা টাঙ্গাইলের অন্যতম একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।দেলদুয়ার উপজেলায় অবস্থিত এই মসজিদটি জেলার অনেক পুরাতন ঐতিহ্য বহন করছে।লাল ইটের তৈরি এই মসজিদটি মুলত বর্গাকার আর এক গম্বুজ বিশিস্ট এবং আকারে বেশ ছোট।এর চারকোণে ৪টি অষ্টকোণাকৃতীর মিনার রয়েছে।সুলতানি ও মুঘল – এই দুই আমলেরই স্থাপত্যরীতির সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে এই মসজিদের নির্মান শৈলীতে।বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক মুদ্রিত১০ (দশ) টাকা মূল্যমানের নোটের একপার্শ্বে আতিয়া মসজিদের ছবি রয়েছে। টাঙ্গাইল শহর থেকে অটো বা সি এন জি করে ঘুরে আসতে পারেন এই মসজিদ টি।
ধনবাড়ি মসজিদঃ এই মসজিদটি অনেক পুরান আর ঐতিহ্যবাহী একটি মসজিদ। ইহা ধনবাড়ি উপজেলার পৌরসভায় অবস্থিত।তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ লাগোয়া সুদৃশ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ একটি মিনার রয়েছে। মসজিদকে কেন্দ্র করে মানত প্রথা প্রচলিত রয়েছে। মসজিদটি প্রায় দশকাঠা জমির উপরে অবস্থিত। আদি মসজিদটি ছিল আয়তাকার। তখন এর দৈর্ঘ্য ছিল ১৩.৭২ মিটার (৪৫ ফুট) এবং প্রস্থ ছিল ৪.৫৭ মিটার (১৫ ফুট) কিন্তু সংস্কারের পর মসজিদটির আকার রীতিমতো পরিবর্তিত হয়ে যায়। বর্তমানে এটি একটি বর্গাকৃতির মসজিদ এবং সাধারণ তিনগম্বুজ বিশিষ্ট আয়তাকৃতির মোগল মসজিদের সাথে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ। সংস্কারের পর বর্তমানে এর অনেক বৈশিষ্ট্যই ভিন্ন আঙ্গিক গ্রহণ করেছে এবং সে-সাথে এর প্রাচীনত্ব লুপ্ত হয়েছে এবং চাকচিক্য অনেক বেড়েছে। সুন্দর কারুকার্যময় এ মসজিদের পূর্বদিকে বহু খাঁজবিশিষ্ট খিলানযুক্ত তিনটি প্রবেশপথ, এছাড়া উত্তর ও দক্ষিণে আরো একটি করে সর্বমোট পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে। মসজিদটি বর্ধিতকরণ ও সংস্কার সাধনের পরেও এর উপরস্থ তিনটি গম্বুজ ও পাঁচটি প্রবেশপথে প্রাচীনত্বের ছাপ লক্ষ করা যায়।মসজিদ সংলগ্ন অর্ধবিঘা আয়তনের অনুচ্চ প্রাচীর বেষ্টিত একটি প্রাচীন কবরস্থান রয়েছে।এ মসজিদে একসঙ্গে ২০০জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে। বর্তমানে মসজিদ অভ্যন্তরে মোগল আমলের তিনটি ঝাড়বাতি শোভা পাচ্ছে।
মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মাজারঃ বিংশশতকী ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম তৃণমূল রাজনীতিবিদ ও গণআন্দোলনের নায়ক, যিনি জীবদ্দশায় ১৯৪৭-এ সৃষ্ট পাকিস্তান ও ১৯৭১-এ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের মানুষের কাছে ‘মজলুম জননেতা’ হিসাবে সমধিক পরিচিত। ১৯৭৬ খৃস্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই দেশ বরেণ্য নেতা মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে টাংগাইল জেলার সদর উপজেলার উত্তর-পশ্চিমে সন্তোষ নামক স্থানে পীর শাহজামান দীঘির পাশে সমাধিস্থ করা হয়। টাঙ্গাইল শহর থেকে রিক্সা যোগে যেতে পারবেন এই মহান ব্যাক্তির মাজারে।
শাহ্ আদম কাশ্মিরীর মাজারঃ বাংলাদেশে আগত একজন সুফি সাধক এবং ইসলাম ধর্মের প্রচারক।তাঁর সম্মানার্থেই করটীয়ার জমিদার সাইদ খান পন্নী আতিয়া মসজিদ নির্মান করেছেন।ধারণা করা হয় তিনি ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতের কাশ্মির হতে এতদ্বঞ্চলে আগম করেন।আতিয়াতে রয়েছে উনার মাজার। উনার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য তার মাজারের সন্নিকটে গড়ে তোলা হয়েছে বিখ্যাত আতিয়া মসজিদ। আতিয়া মসজিদ ঘুরতে গেলে অবশ্যই এই মহান ব্যাক্তির মাজার জিয়ারত করে আসবেন। এছাড়াও টাঙ্গাইল জেলায় আরো কিছু পুরাতন ঐতিহ্য বহনকারী কিছু মসজিদ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম খামারপাড়া মসজিদ ও মাজার,পাকুল্লা মসজিদ,তেবাড়িয়া জামে মসজিদ,কাদিমহামজানি মসজিদ

যমুনা রিসোর্ট ও বঙ্গবন্ধু সেতুঃ
যমুনা রিসোর্ট ব্যক্তি মালিকানায় ২০০২ সাল যাত্রা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু বহুমুখী যমুনা সেতুর নিকটবর্তী যমুনা নদীর কোল ঘেঁষে পূর্ব পাশে এই রিসোর্ট প্রতিষ্ঠিত। ঢাকার কোলাহল ছেড়ে নদীর কোলে অবকাশ কাটিয়ে আসতে পারেন এই রিসোর্ট এ।রুমগুলো এসি, টিভি, ইন্টারকম টেলিকম সুবিধা, ফ্রিজ, লার্জ বাথ এন্ড ট্যব, হট ও কুল পানি, প্রত্যেক বাথরুমে ফুট কটেজ দেওয়া হয়। এছাড়াও বিনোদনের জন্য আছে আউটডোরে ফুটবল, ক্রিকেট এবং ইনডোরে ব্যাডমিন্টন, হকি, দাবা খেলার সুবিধা রয়েছে।রিসোর্টের ভেতরে সুইমিংপুল, জিম, হেলথ ক্লাব, বেকারী, সুভ্যেনির শপ, ফরেন মানি এক্সচেঞ্জ এবং ইনডোর আউটডোর গেমসের ব্যবস্থা রয়েছে।হেলথ ক্লাব ও জিমের ব্যবস্থাও আছে এখানে। এছাড়াও ঘুরে দেখতে পারেন যমুনা বহুমুখী সেতু ও তার আশপাশ। বাংলাদেশের যমুনা নদীর উপরে অবস্থিত একটি সড়ক ও রেল সেতু। এর দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার। এটি বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘতম সেতু। ১৯৯৮ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ইহা যমুনা নাদীর পূর্ব তীরের ভূয়াপুর এবং পশ্চিম তীরের সিরাজগঞ্জকে সংযুক্ত করে।

এলেঙ্গা রিসোর্টঃ টাঙ্গাইল শহর থেকে সাত কি.মি. উত্তরে এলেঙ্গায় গড়ে উঠেছে ১৫৬.৬৫ হেক্টর জুড়ে এই রিসোর্ট। রিসোর্টের চারপাশজুড়ে বিভিন্ন গাছের সারি। একটা ছায়াঢাকা গ্রামীণ পরিবেশ। সঙ্গে আছে রেস্তোরাঁসহ নানা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। পাঁচটি ভিআইপি এসি স্যুট ছাড়াও আছে ১০টি এসি ডিলাক্স স্যুট, ১৬টি নানা-এসি কক্ষ, পাঁচটি পিকনিক স্পট, সভাকক্ষ, ছোট যাদুঘর ও প্রশিক্ষণ কক্ষ ইত্যাদি। খেলাধুলার জন্য রয়েছে টেনিস, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন কোর্ট। বাড়তি সুযোগ হিসেবে আরও রয়েছে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদি। ছোটদের বিনোদনের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে কিড্স রুম। আছে ঘোড়ায় চড়ার ব্যবস্থা ও হেলথ ক্লাব। বিভিন্ন ধরনের দেশী খাবারের পাশাপাশি রয়েছে চীনা, ভারতীয় ও কন্টিনেন্টাল খাবার। নৌ-ভ্রমণের জন্য রয়েছে ট্রলার, দেশীনৌকা ও স্পিডবোড। এসিসহ ৪ বেডের কটেজের ভাড়া ১২,০০০ টাকা। এসিসহ ৩ বেডের কটেজের ভাড়া ১১,০০০ টাকা। এসিসহ ২ বেডের কটেজের ভাড়া ৯,০০০ টাকা। এসিসহ ডিলাক্স রুমের ( দুই জন) ভাড়া ৩,৬০০ টাকা। এসিসহ ডিলাক্স রুমের ( তিন জন) ভাড়া ৪,২০০ টাকা। এসিসহ  ডিলাক্স রুমের (একজন) ভাড়া ৩,০০০ টাকা। তিনশত বিঘা চরঃ টাঙ্গাইল শহর থেকে প্রায় ২১ কিমি দূরে ভুয়াপুরের কুঠিপাড়া গ্রামের পাশে এই চরটি অবস্থিত যমুনা নদীর কোল ঘেঁষে। এই চরের আয়তন ৩০০ বিঘা বিধায় এঁর নামকরন ও করা হয়েছে তিনশত বিঘা চর। কুঠিপাড়া থেকে যমুনা পাড়ি দিয়ে ঘুরে আসতে পারেন সবুজে ভরা এই চরটি। এখানে আসলে ক্যাম্পিং করা ছাড়া থাকার কোন ব্যবস্থা নাই, শহর থেকে দিনে দিনে ঘুরে আসতে পারেন।তবে যমুনা নদীর ভাঙনের গর্জন আর বিশাল মরু বালুকায় ঘুরে বেড়াতে চাইলে দু এক রাত ক্যাম্পিং করাই যেতে পারে এই চরে, সাথে যমুনায় নৌবিহার ও করতে পারেন। তবে খুব সাবধানে কারন যমুনার স্রোত খুবই মারাত্নক। এছাড়াও অনেক চর আছে এই যমুনার বুকে যা বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে দেখা যায়।

মধুপুর জাতীয় উদ্দ্যানঃ জীববৈচিত্র্যে ভরপুর বাংলাদেশের অন্যতম একটি জাতীয় উদ্যান মধুপুর। রাজধানী থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলায় জাতীয় এ উদ্যানটির অবস্থান। জেলা শহর টাঙ্গাইল থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৪৭ কিলোমিটার। এ বনের প্রধান আকর্ষণ শালবন। খুব সহজেই ঢাকা থেকে দিনে দিনে ঘুরে আসতে পারেন এ বন থেকে।এর আয়তন ৮৪৩৬৬ হেক্টর প্রায়। মধুপুর জাতীয় উদ্যানের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বংশী নদী। এ উদ্যানের ভেতরে ও আশপাশের প্রায় ১৮৭টি গ্রামে বসবাস করে গারো, কোচ, বামনসহ নানান আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের।
মধুপুর জাতীয় উদ্যানে আছে ১১ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৪ প্রজাতির উভচর, ৭ প্রজাতির সরীসৃপ, ৩৮ প্রজাতির পাখি ও কয়েক প্রজাতির উভচর প্রাণীর বসবাস। এ বনের বাসিন্দা স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মুখপোড়া হনুমান, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, লাল মুখ বানর, বন্য শুকর ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বনে দেখতে পাওয়া পাখিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্ট্রুর্ক বিলড কিংফিশার বা মেঘ হু মাছরাঙ্গা, খয়রা গেছো পেঁচা, কাঠ ময়ূর, বন মোরগ, মুরগি। এ বনের মধ্যখানে লহরিয়া বন বিট কার্যালয়ের কাছে হরিণ প্রজনন কেন্দ্রে আছে বেশ কিছু হরিণ। পাশেই সুউচ্চ একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার আছে। এর চূড়ায় উঠলে বহুদূর পর্যন্ত বনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এ জায়গাতেই সবচেয়ে বেশি হনুমানের দেখা মেলে। নানা গাছপালায় সমৃদ্ধ জাতীয় এ উদ্যান। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শাল, বহেড়া, আমলকি, হলুদ, আমড়া, জিগা, ভাদি, অশ্বত্থ, বট, সর্পগন্ধা, শতমূলী, জায়না, বিধা, হারগোজা, বেহুলা ইত্যাদি। এ ছাড়া নানান প্রজাতির লতাগুল্ম আছে এ বনে।
মধুপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে রসুলপুর মাজার এলাকায় মহাসড়কের বাঁ পাশে মধুপুর জাতীয় উদ্যানের প্রধান প্রবেশ পথ।বনে প্রবেশ করার অনুমতি নিতে হয় এ জায়গা থেকেই। জলই আর মহুয়া নামে দুটি বন বিশ্রামাগার আছে এখানে। উদ্যানের প্রবেশ পথ থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ভেতরে আছে দোখলা বন বিশ্রামাগার।
দোখলা বন বিশ্রামাগার ছাড়াও এখানে চুনিয়া আর বকুল নামে দুটি কটেজ আছে। এ ছাড়া আছে জুঁই আর চামেলি নামে বনবিভাগের দুটি পিকনিক স্পট। এখান থেকে কাছাকাছি দূরত্বে আছে আদিবাসীদের কয়েকটি গ্রাম।
কিভাবে যাবেনঃঢাকার মহাখালি বাস স্টেশন থেকে বিনিময় ও শুভেচ্ছা পরিবহনের বাস চলে এ পথে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ দুটি পরিবহন সংস্থার বাস চলাচল করে। ভাড়া ২৫০-৩০০ টাকা।
কোথায় থাকবেন :দিনে দিনেই ঘুরে আসতে পারেন মধুপুর জাতীয় উদ্যান থেকে। মধুপুর উপজেলা শহরে কিছু মধ্যম মানের আবাসিক হোটেল থাকলেও পূর্বানুমতি নিয়ে বনবিভাগের কোনো বিশ্রামাগারে থাকতে পারলে আপনার ভ্রমণ পরিপূর্ণ হবে। জাতীয় এ উদ্যানের ভেতরে জলই, মহুয়া, বকুল, চুনিয়া কটেজ ছাড়াও দোখলা বন বিশ্রামাগারে রাত যাপন করতে সহকারী বন সংরক্ষক (উত্তর ০১৯১৪৫১৭২৫৬) অথবা টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কার্যালয় (০৯২১-৬৩৫২৪) থেকে অনুমতি নিয়ে বুকিং নিশ্চিত করতে হবে।

সখীপুরঃ লাল মাটির দেশ ঘুরতে চাইলে কিছু সময় নিয়ে ঘুরা যেতে পারে সখীপুর উপজেলা। এখানে অনেক জায়গায় ই মিলবে আঠালে লালমাটির দেখা,যেতে পথে মিলবে অনেক বন-বাগান।প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ হযরত শাহ্ জালালের (রহ) সফরসঙ্গি শাহ্ কামালের (রহ) মাযার (গড় গোবিন্দপুর গ্রাম)। এখানেই রয়েছে মুক্তুযুদ্ধাদের শপথ নেবার ঐতিহাসিক স্থান বেহেড়াতৈল। এছাড়াও অনেক পুরাত্ন শিল্প খুজে পাবেন এই উপজেলায় কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, সেলাই কাজ।
জাদুঘর:

নদ-নদী: টাঙ্গাইলে অনেক নদী আছে যমুনা এর মধ্যে সবচেয়ে বড় এছাড়াও, ধলেশ্বরী,খিরু, বংশী, লৌহজং, ফটিকজানি, এলংজানি, লাঙ্গুলিয়া,যুগনী, ঝিনাই নদী আছে।

অন্যান্য (উদা. ঐতিহ্যবাহী শিল্প ):
ঐতিহ্যবাহী খাবার: চমচম এর জন্য টাঙ্গাইল অনেক বিখ্যাত। সেরা মিষ্টান্ন পেতে আপানাকে যেতে হবে টাঙ্গাইল সদরের পাঁচআনি বাজার।
থাকার ব্যবস্থা:
টাঙ্গাইল সদরে অনেক আবাসিক হোটেল আছে থাকার মত, এছাড়াও মধুপুর, ধনবাড়ি তেও বেশ কিছু হোটেল আছে রাত্রী যাপনের জন্য। এই সকল হোটেলের ভাড়া ৪০০-১৫০০ টাকার মত। হোটেল আদিত্য(আবাসিক),মধুপুর, টাঙ্গাইল। মোবাইলঃ ০১৭১৬৭৯৬০৬৫ হোটেল ড্রীম টাচ্ (আবাসিক) মধুপুর,টাঙ্গাইল। মোবাইলঃ ০১৭১৭২১৮৭৯৯
যোগাযোগ/কিভাবে যাবেন: ঢাকা হতে টাঙ্গাইলের দূরত ১০০ কি.মি.। সড়ক ও রেলপথে সুইভাবেই টাঙ্গাইল যাওয়া যায়। বাসে ভাড়া ১৬০-২৫০ টাকা। নিরালা, শুভেচ্ছা, বিনিময় সহ বেশ কিছু বাস সার্ভিস রয়েছে।মহাখালী, আব্দুল্লাহপুর থেকে বাস গুলা ছেড়ে যায়। আর রেলপথে ভাড়া ১০০-২৮০ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.