সেন্টমার্টিন ট্যুর প্ল্যান

কিছুদিন পূর্বে আমরা ১০ জনের গ্রুপ সেন্টমার্টিন আর কক্সবাজার ঘুরে এলাম। ২ রাত, ৩ দিনের এই ট্যুরে আমাদের জনপ্রতি খরচ হয়েছে ৩৮৫০ টাকা। আপনারা যারা আমাদের মত বাজেট ট্রাবেলার তাদের জন্য আমি পুরো খরচ এর বিস্তারিত তুলে ধরছি।

আমাদের যাত্রা শুরু সায়েদাবাদ থেকে হানিফ নন এসি বাস, রাত ৭:৩০ এ। ভাড়া ৯০০ টাকা, টেকনাফ পর্যন্ত।
এখানে আমি পার পারসন হিসেব তুলে ধরছি।
টেকনাফ পৌঁছে নাস্তা সেরে নিন, ৫০ টাকায়। জাহাজের আপ ডাউন টিকেট ৫৫০ টাকা। এটা স্ট্যান্ডিং টিকেট। নাফ নদী আর সাগর দেখতে দেখতে সেণ্টমার্টিন পৌঁছাবেন বেলা একটায়। এখান থেকে আমরা রিয়াদ গেস্ট হাউজে ১০ জনের বড় এক রুম নিলাম ৮০০ টাকায়। জন প্রতি ৮০ টাকা করে। এরপর দুপুরের খাবারের জন্য ১৫০ টাকার প্যাকেজ নিলাম। ভাত, ডাল, সবজি ইচ্ছেমত। সাথে ১ টা ২০০ গ্রাম ওজনের টুনা মাছ,পার পারসন। এরপর একটু রেস্ট নিয়ে বীচে চলে যান,গোসল করে রুমে ফেরত আসুন। এরপর সাইকেল ভাড়া নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন পুরো দ্বীপ ঘুরতে। ২ ঘন্টার সাইকেল ভাড়া ৬০ টাকা। দ্বীপের শেষ প্রান্তে গিয়ে সূর্যাস্ত দেখে ফিরে আসুন। এর পর রাতের জন্য বারবিকিউ অর্ডার করে বীচে চলে যান সাগরের ঢেউ উপভোগের জন্য। মুরগীর বারবিকিউ এর জন্য আমাদের পার পারসন ২০০ টাকা করে লাগছে। এক্সট্রা ২০০ টাকায় একটা হাফ কেজি ওজনের কোরাল ফ্রাই ও দিছে। বারবিকিউ হলে, ওরাই আপনাকে ফোন দিয়ে জানাবে। খাবার খেয়ে ইচ্ছে হলে বীচে যেতে পারেন। আর না হয় রুমে চলে যান।
সকালে ভোরে উঠে পড়ুন, আর সূর্যোদয় দেখতে বেরিয়ে পড়ুন। এরপর ৫০ টাকায় নাস্তা সেরে ছেঁড়া দ্বীপের ট্রলারে চেপে বসুন। ১৫০ টাকা আপ ডাউন। ১:৩০ ঘন্টা ওখানে কাটিয়ে আবার সেন্টমার্টিন ফিরে আসুন ১২ টার মধ্যে। এবার এসেই বীচে গোসল করতে চলে যান।সাবধান লাল কাপড় টানানো এরিয়া এড়িয়ে চলুন। বীচ থেকে ১:৩০ এর মধ্যে ফিরে এসে আবার দুপুরের খাবার খেয়ে নিন ১৫০ টাকার প্যাকেজ এ। এরপর ৩ টার আগেই টেকনাফগামী জাহাজে চড়ে বসুন। ৬ টার মধ্যে টেকনাফ পৌঁছাবেন। জনপ্রতি ১৫০ টাকায় কক্সবাজার গামী গাড়ীতে চেপে বসুন। আর একটা কথা সবাই ন্যাশনাল আইডি কার্ড অথবা ভার্সিটির আইডি কার্ড সাথে রাখবেন। এই পথে পুলিশ চেকিং হয়।

রাত ৮:৩০ এর মধ্যে কক্সবাজার পৌঁছাবেন। আমরা সী হিল হোটেল এ ডাবল দুই রুম ভাড়া নিছি ২০০০ টাকায়। পার পারসন ২০০ টাকা। রাতের খাবার কম্বাইন্ড করে জনপ্রতি ১৫০ টাকা। এরপর অনেক রাত পর্যন্ত বীচে আড্ডা দিয়ে ৩ টার দিকে হোটেল ফিরে এলাম। সকাল বেলা জনপ্রতি ৫০ টাকায় নাস্তা সেরে হিমছড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম,অটোতে। আপ ডাউন পার পারসন ৫০ টাকা করে। ১২:০০ টার মধ্যে হোটেল ফিরে আসলাম। আগের রাতে ঢাকার ফিরতি টিকেট কেটে রাখলাম,৮০০ টাকা করে। হিমছড়ি থেকে ফিরে বীচে গোসল করলাম। দুপুরের খাবারের জন্য জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে খরচ হল। বলে রাখা ভালো আমদের হোটেল চেক আউট ১২:০০ টায় শেষ হয়ে যাওয়ায় আমরা একটা রুম ৮০০ টাকায় নিয়ে রাখি। যেহেতু, আমাদের বাস ছিল রাত ৯:৩০ এ। দুপুরের খাবারের পর একটু রেস্ট নিয়ে সূর্যাস্ত দেখতে বীচে চলে গেলাম। সন্ধ্যার পর বার্মিজ মার্কেট এ সময় কাটিয়ে, বীচে ঘোরাঘুরি করে ৯ টায় হোটেল এ ফিরে এলাম। এরপর হোটেল চেক আউট করে রাতের বাসে ঢাকার উদ্দ্যেশে উঠে পড়লাম।

নিচের ভিডিওটি সেন্টমার্টিন থেকে ছেঁড়াদ্বীপ যাওয়ার সময় করা।

জাহাজের টিকেট বুকিং এর নাম্বার – 01823438150
(জালাল ভাই)

রিয়াদ গেস্ট হাউজ – 01860617152( নাজির ভাই

Post Copied From:

Saif Mahmud‎ > Travelers of Bangladesh (ToB)

সেন্টমার্টিন ভ্রমন কাহিনী

অনেক দিনের ইচ্ছা সেন্টমার্টিন যাবো, কাউকে পাচ্ছিলাম না সফর সঙ্গী হিসেবে । তারপর Sohan ভাইয়ের উদ্যোগে সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে । আজ বলবো St. Martin সফরের কাহিনী ।
সেন্টমার্টিন সফর তার উপর তাবুতে রাত্রি যাপন এ যেন স্বপ্নের মাঝে বিভিন্ন রং এর রং তুলির আঁচর ।।
যাবো ০৯•১১•১৭ তারিখ, সময় যেন আসতে চায় না। ও বলে নেই মোটামুটি শিওর যাচ্ছি ট্রলারে, তাই YouTube এ সেন্টমার্টিনে ট্রলার যাত্রার কিছু ভিডিও দেখে নিলাম। ভিডিও দেখে মোটামুটি ভয়ই পেয়েছিলাম । তারপর ও ভয়ের পরে জয় এ কথা ভেবেই রওনা দিলাম শ্যামলী আরামবাগ কাউন্টারের উদ্দেশ্যে । মাঝে বলে নেই আমার বন্ধুরা কেউই চাচ্ছিলো না আমি এতো রিস্ক নিয়ে যাই, আমি যাবোই বলাতে তার ফলশ্রুতিতে আমার বাসায় কল দিয়েছিল সালারা। তারপর আম্মুর জিজ্ঞাসা কই যাচ্ছিস? ? আমি বলে দিলাম যেখানে শুনেছ ঐ খানেই যাচ্ছি । এই বলে বেরিয়ে পড়লাম । ৭টার বাস একটু আগেই চলে এসেছি, ভাইদের সাথে ও পরিচয় হলাম । আমার বন্ধু সুদূর বসুন্ধরা আবাসিক থেকে ক্লাস শেষ করে মাএ ৪০ মিনিটে চলে আসে আমাকে সিঅফ করতে(একেই বলে ভালোবাসা )। সারা রাস্তা পাশের সিটের ভাইয়ের সাথে কথা বলতে বলতে পৌঁছে গেলাম টেকনাফ । আমরা ঢাকা থেকে গিয়েছিলাম ২০ জন । আমাদের টিম লিডার সোহান ভাই টেকনাফেই ছিলেন ।
৬:৪০ বাজে,তখন ও অনেক সময় হাতে । ভাটা চলছে ,ট্রলার ছাড়বে ১ টায় । নাস্তা সেরে আমরা নিজেদের মতো করে ২ টা টিম এ বিভক্ত হয়ে আসে পাশে ঘুরতে বের হলাম । একদল গেল মেরিন ড্রাইভ এর দিকে আর আমরা গেলাম শাহ পরীর দ্বীপ এর দিকে। পথিমধ্যে রোহিঙ্গা শিবিরের পাশের বিজিবি চেক পোস্ট আমাদের থামিয়ে দিল , আর নাকি যাওয়া যাবে না । তার পর আর কি করার কিছু ভাই রোহিঙ্গা শিবিরে ঘুরে আসলো। তারপর সবাই ব্যাক করলাম টেকনাফ বাস স্ট্যান্ডে । আরো ৭ জন এর মতো আমাদের সাথে জয়েন দিলো। আমাদের এখন মেম্বার ৩০ জন এর মতো । আমরা সবাই দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম টেকনাফেই। শুক্রবার নামাজের পর ট্রলারে আমাদের যাত্রা শুরু । সমুদ্র পথে দেখলাম কিছু রোহিঙ্গাদের ট্রলার ডুকছে বাংলাদেশে। সেন্টমার্টিন পৌঁছালাম সূর্যাস্তের সময় । তাবু সেট করলাম । রান্না বান্নার জন্য আমরা বাজার নিয়ে গিয়েছিলাম টেকনাফ থেকেই । রাতে মুনতাসিম ভাইয়ের হাতের হাঁস খিচুড়ি আহহহহ ।।।।
একটা খারাপ লাগা ছিল যে পূণিমার চাঁদটা নেই বলে। কিন্তু কিছু পরই আকাশ ভরা তারার মেলা বসেছিল । যা নিমিষেই চাঁদের অভাব টা পুরণ করে দিয়েছে ।
তারপর আমরা কয়েকজন নামলাম সাগরে। কিছুক্ষণ লাফালাফি যাপাযাপি করলাম। সকল ভ্রমন ক্লান্তি যেন নিমিশেই চলে গেল।
তাবুতে ফিরলাম অনেক relax লাগছে, সমুদ্রের গর্জন বাতাস আর আকাশের সঙ্গী তারা দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ও উঠেছি সমুদ্রের গর্জনে, এ এক দারুণ অনুভূতি।
নাস্তা করে লাইফ বোডে করে ছেঁড়া দ্বীপ গেলাম ,ঘুরলাম ফিরলাম । ব্যাক করার সময়ে কিছু ভাই হেঁটেই সেন্টমার্টিন ব্যাক করেছিল । ডাব খেলাম অনেক ,আসলেই ডাবের পানিটা বড় স্বাদের পানি খেয়ে শেষ করা যায় না। ঐদিন খাবার প্রস্তুতের দায়িত্ব resort এর লোকদেরই দেয়া হয়েছিল। কিছু সময় সাগরে হ্যান্ড ফুটবল খেলে দুপুরের খাবার সেরে যে যার যার মতো করো ঘুরে নিলাম । খাওয়া দাওয়া শেষে রাতে বসলো গানের আসোর, আমরা কখনো বা এক সাথে কখনো বা একাই যে যার মতো গলা ছেড়ে গাইলাম। ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড হিসেবে ছিল সমুদ্রের গর্জন, সমুদ্রের পাড় ছিল আমাদের গানের মন্চ আর আমাদের দর্শক ছিল আকাশের লক্ষ-কোটি তারা, তারা জ্বল জ্বল করে জানান দিচ্ছিল যে তারা শুনছে। গান-আড্ডা শেষ হতে হতে প্রায় ১:৩০ এর মতো বেজে গেল। তখন ও আমি সহ আমার দুই বন্ধুর ঘুম আসছে না। আমরা জেটির দিকে হাঁটা ধরলাম। জেটিতে গিয়ে আমরা আরো এক নতুন সৌন্দর্যের আবিষ্কার করলাম, আকাশে অর্ধেক চাঁদ আর তাকে পাহারা দিচ্ছে লক্ষ-সহশ্যাধিক তারা। সব মিলিয়ে কেমন জানি এক মায়া-জাল তৈরি করেছিল ওরা। ওখানে লোকাল কিছু মানুষ ছিপ দিয়ে মাছ ধরছিল, ওদের এক জনের থেকে ছিপটা নিয়ে আমরা ও কিছু সময় বসে ছিলাম যদিও মাছ পাইনি,মাছ ধরা ধর্য্যের বেপার তা আমি জানি কিন্তু ঘুমের কাছে ধর্য্যের হার হলে যা হয় আর কি। ফিরে গেলাম আমাদের ক্যাম্পে এ পাশ থেকে ও পাশ হতেই ঘুম আর নিস্তব্ধতা ঘিরে ধরলো আমার ছোট তাবুতে।
পরদিন কোরাল ফ্রাই আর ইচ্ছে মতো ডাব খেয়ে ১১ টায় ট্রলারে করে রওয়ানা দিলাম টেকনাফের উদ্দেশ্যে । দুপুরের খাবার খেয়ে লেগুনায় করে রওনা দিলাম মেরিন ড্রাইভ হয়ে কক্সবাজার । পৌঁছালাম বিকেলে । কলাতলী বীচে আসার পর মনে হচ্ছিল স্বর্গ রাজ্য ঘুরে এখন এলাম নরকে। এতো মানুষের ভীড়ে সমুদ্র খানাই যেন দেখা ভার।
যেখানে সেন্টমার্টিন পুরো বীচ ছিল শুধু আমাদের ।।
৯:৩০ টায় ঢাকার বাস এ উঠে পড়লাম তারপর সকালে ঢাকায় ।
ঢাকা-টেকনাফ-সেন্টমার্টিন-টেকনাফ-মেরিন ড্রাইভ- কক্সবাজার -ঢাকা
সব খরচ গুলি সংক্ষেপে :
ঢাকা টু টেকনাফ বাস- ৯০০টাকা
টেকনাফ টু সেন্টমার্টিন ট্রলারে যাওয়া আসা – ৫০০টাকা (আমাদের থেকে বেশি নিছে যাওয়া আসার ট্রলারে জেনুইন ভাড়া নাকি ১৫০ করে ৩০০ টাকা)
শিপ করে যেতে পারেন ৫৫০ থেকে শুরু করে ১০০০/১৫০০ টাকার মধ্যে(যাওয়া-আসা)
ছেঁড়া দ্বীপে রিজার্ভ বোটে যাওয়াআসা – ১৫০ টাকা

টেকনাফে ৩ বেলা, সেন্টমার্টিনে ৫ বেলা, বাসে যাওয়া আসার মাঝে ২ বেলা খাবারের খরচ – ১১৫০ টাকা( একটি কমন রুম ও বাবুর্চির বিল সহ)
টেকনাফ টু কক্সবাজার – ২০০ টাকা
কক্সবাজার টু ঢাকা – ৮০০ টাকা
আরো কিছু খুচরা খরচ – ২০০ টাকা

Post Copied From:Golpo Raj Mehu>Travelers of Bangladesh (ToB)

সেন্টমার্টিন দ্বীপে ক্যাম্পিং!

গত সপ্তাহে ২৭ জনের গ্রুপ ক্যাম্পিং করে এলাম, সেই অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা :

যাদের এই দ্বীপে ক্যাম্পিং করার ইচ্ছা আছে তারা পড়ে নিতে পারেন, ট্যুর প্ল্যান করতে এই লেখাটা আপনার কাজে দিবে বলে আশা রাখি!

১/ কোন অনুমতি লাগে কিনা?
– নাহ, এমন জায়গায় তাবু সেট করুন যার বিপরীতে কোন রিসোর্ট নেই, তাহলে কারো অনুমতি বা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চিন্তা করা লাগবেনা, কেউ কিছু বলতেও পারবেনা! নৌবাহিনী বা নিরাপত্তাবাহিনীর অনুমতিও লাগেনা! তবে বড় গ্রুপ হলে ট্যুরিস্ট পুলিশকে একটু জানিয়ে রাখতে পারেন!

২/ নিরাপত্তা কেমন?
– এক ট্রাভেলার যখন আমাকে এই প্রশ্নটা করলো তখন আমি উত্তর দিয়েছিলাম, “চুরির ভয় থাকলেও ডাকাতির ভয় নেই!” ব্যাগপত্র একটু ভালমত দেখেশুনে রাখবেন, তাবুর আশেপাশে সবসময় অন্তত একজন হলেও থাকবেন! আমরা ২৭ জন ছিলাম, শুধুমাত্র একজনের ব্যাগ থেকে কিছু মূল্যবান জিনিস হারিয়েছে!

৩/ বাথরুম ও গোসল কোথায় করব?
– ক্যাম্প সাইটের আশেপাশের কোন রিসোর্টের একটা রুম ভাড়া নিয়ে নিন! জরুরি কর্ম সম্পাদনের পাশাপাশি সবাই মিলে যখন ছেঁড়া দ্বীপ বা অন্য কোথাও ঘুরতে বের হবেন তখন রুমে তাবু ও ব্যাগ রেখে যেতে পারবেন! মোবাইল ফোনও চার্জ দেওয়া যাবে! আর হ্যা, এমন রিসোর্ট বেছে নিবেন যেখানে বাইরে এক্সট্রা বাথরুম আছে, এমনটা করলে ১ রুম ভাড়া নিয়ে ২ টা বাথরুম ইউজ করা যাবে, আমরাও এটা করেছিলাম!

৪/ খাবারের দাম কেমন?
– বিভিন্ন রেস্তোরাঁয়য় সকালের নাস্তা সাধারণত ৫০-৬০ টাকায় এবং দুপুর আর রাতের খাবার ১২০-১৫০ টাকায় খেতে পারবেন! রুপচান্দা খেতে চাইলে দাম বেশি নিবে, পোয়া মাছ খেলে কম নিবে- হিসেবটা এরকম আর কি! নিজের পছন্দানুযায়ী!

৫/ নিজেরা রান্না করে খাওয়া যাবেনা?
– এটা একটা প্যারাদায়ক জিনিস, ১০-১২ জন যাবেন, ১/২ জনের উপর সব বোঝা চাপিয়ে দিয়ে বাকিরা গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াবে, এমনটা হলে মিজেরা রান্না না করে বাইরে খাওয়া বেটার! তবে কেউ যদি ১০-১২ জন ট্যুরমেটের জন্য সেক্রিফাইস করতে চায় তাহলে ভিন্ন জিনিস!

তাছাড়া রান্নার সরঞ্জামাদি নিয়ে যাওয়া, হেনতেন অনেক প্যারা আছে, সবাই মিলে যদি এই প্যারা ভাগাভাগি করে নেওয়া যায় তাহলে নিজেরা রান্না করে খেলে খরচ অনেক কমে যাবে, এক্ষেত্রে স্থানীয় কাউকে সার্বক্ষণিক রান্নার কাজে সহযোগিতার জন্য নিতে পারেন!

আমরা মানুষ বেশি ছিলাম, টেকনাফ থেকে মাছ ছাড়া বাকি ২ দিনের বাজার কিনে নিয়ে গেছি, পরিচিত এক রিসোর্ট থেকে রান্নার সরঞ্জাম বিনা ভাড়ায় পেয়েছিলাম, অই রিসোর্টের ২ জন ছেলে আমাদের রান্না-বান্নায় হেল্প করেছে! আমরা যখন গেলাম তখন শীপ বন্ধ ছিল, তাই এটা সম্ভব হয়েছে! এখন এই সুবিধা নাও পেতে পারেন!

৬/ ট্রলারে যাব না শীপে যাব?
– শীপ যদি চলাচল করে তবে শীপে চড়ে যাওয়াকেই আমি বেটার বলব! ট্রলারের কোন ফিক্সড শিডিউল নাই, জোয়ার ভাটার উপর ডিপেন্ড করে,

৭/ খরচ কেমন হবে?
– ঢাকা টু টেকনাফ নন এসি ৯০০ টাকা!
এসি ১৬০০/- টাকা,
টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়া আসা শীপ ভাড়া ৫৫০/- থেকে শুরু, শীপ অনুযায়ী তা ১০০০/১৫০০ ও আছে!

বাকি খরচ আপনি সেন্টমার্টিন কয়দিন থাকবেন এবং কি খাবেন তার উপর নির্ভর করবে!

৮/ শীপ কখন ছাড়ে?
– টেকনাফের দমদমিয়া ঘাট থেকে সকাল ৯:৩০ এর দিকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়! বিকেল ৩ টায় সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেয়!

৯/ ক্যাম্প সাইট হিসেবে কোন জায়গা নির্বাচন করলে বেটার?
– আমরা উত্তর বীচে একটা রিসোর্টের পাশে করেছিলাম, রিসোর্টটা আমার পূর্ব পরিচিত ছিল! কিন্তু পশ্চিম বীচে করতে পারলে ভাল হত, তাবুতে বসে সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়! ডিসেম্বর জানুয়ারির ছুটির দিনগুলোতে গেলে পশ্চিম দক্ষিণ কোনায় চলে যেতে পারেন, স্থানীয় কোন বাড়ি দেখে কোন নির্জন জায়গায় তাবু সেট করতে পারেন! কারণ এই সময়ে ট্যুরিস্টের চাপ বেশি থাকে, উত্তএ ও পশ্চিম বীচ লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়বে!

১০/ ছেঁড়াদ্বীপে ক্যাম্পিং করা যাবে কিনা?
– ক্যাম্পিং করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ আছে কিনা জানা নেই, কিছুটা নির্জন বলে নিরাপদ কিনা বলা যাচ্ছেনা, ওখানে বাথরুম-গোসলের ব্যবস্থাও অত সুবিধাজনক হবে না!

তবে যাই হোক, সেন্টমার্টিনে আমরা নেক্সট ক্যাম্পিং ট্যুর দিলে ছেঁড়াদ্বীপেই দিতে পারি, খুব ইচ্ছা বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের ভূমিতে অন্তত একরাত ক্যাম্পিং করার!

এসবের বাইরে কিছু জানার থাকলে নক করবেন, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যতটুকু পারি তথ্য দিয়ে হেল্প করার চেষ্টা করব!

ট্যুরে গিয়ে কোন ধরণের হয়রানির শিকার হলে স্থানীয় ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তা নিন, উনারা খুব হেল্পফুল!

Post Copied From:Sujauddin F. Sohan‎<Travelers of Bangladesh (ToB)

সেন্টমার্টিন দ্বীপের জনপ্রিয় দশটি রিসোর্ট/হোটেল

ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর স্থান সেন্টমার্টিন। পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে সবসময়ই থাকে ‘বঙ্গোপসাগরের টিপ’ বলে খ্যাত এই দ্বীপটি। অন্যান্যবারের মতো এবছরও অসংখ্য পর্যটক পাড়ি জমাবেন সেন্টমার্টিনে।
কিন্তু রাত্রিযাপনের জন্য এই দ্বীপে হোটেল বা রিসোর্ট ঠিক করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে যান অনেকেই। তাদের কথা বিবেচনা করে সেন্টমার্টিনের কয়েকটি হোটেল ও রিসোর্টের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হলো।

০১) হোটেল ব্লু মেরিন
নিঃসন্দেহে সেন্টমার্টিনের সেরা হোটেল। জেটি থেকে সামান্য দূরত্বে অবস্থিত হোটেলটির অবকাঠামো খুবই চমৎকার। তিনতলা বিশিষ্ট এই হোটেলে ৩৪টি বিলাসবহুল রুম সহকারে নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্ট রয়েছে।
তবে বাজারের কাছে বলে এর আশেপাশে মানুষজনের সমাগম খুব বেশী। এছাড়া এই রুমগুলো থেকে সরাসরি বীচ দেখা যায় না। ফেইসবুকে ব্লু মেরিন হোটেলের রেটিং খুব ভালো ৪.২০/৫.০০ (১০০টি রিভিউ)। এর রুমভাড়া ২,৫০০-৩,৫০০ টাকা।
যোগাযোগঃ ০১৭১৩-৩৯৯০০০ (ঢাকা), ০১৭১৩-৩৯৯২৫০ (সেন্টমার্টিন)

০২) নীল দিগন্তে রিসোর্ট
সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত সুন্দর একটি রিসোর্ট। এর আয়তনও বেশ বড়ো। অস্তাচল, ছায়াবিথি, তরুছায়া ও নীপবন ক্যাটাগরিতে বিভক্ত এর মোট রুমের সংখ্যা ৩৮টি। রেস্ট্যুরেন্টও রয়েছে এখানে। অবশ্য এই রিসোর্টের সমস্ত রুমই টিনশেড। রুমভাড়া ২,০০০-৪,৫০০ টাকা।
এর সমস্যা হলো, জেটি থেকে বেশ খানিকটা দূরে হওয়ায় ভ্যানভাড়া গুনতে হবে অন্তত দু’শ টাকা। এছাড়া রুম থেকে বীচ দেখারও কোন সুযোগ নেই। অন্যান্য সবকিছু ঠিকঠাক আছে। তবু ফেইসবুকে এর রিভিউ ভালো নয় কেন, বুঝলাম না। রেটিং হলো ৩.১০/৫.০০ (১৮টি রিভিউ)।
যোগাযোগঃ ০১৭৩০-০৫১০০৫, ০১৭৩০-০৫১০০৬, ০১৭৩০-০৫১০০৭

০৩) সী ভিউ রিসোর্ট এন্ড স্পোর্টস
এর অবস্থান নর্থ বীচের একেবারে লাগোয়া, জেটি থেকে সাত মিনিট হাটার দূরত্বে। নতুন ম্যানেজমেন্টের অধীনে এসে রিসোর্টের খোলনলচে পুরোপুরি বদলে গেছে। সম্প্রতি যারা এখানে থেকেছেন, সবাই এই দ্বিতল রিসোর্টটির প্রশংসা করেছেন। নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্টসহ এখানে ১৬টি রুম ও ০৪টি তাবু রয়েছে। সবচেয়ে বড়ো সুবিধা হলো, এর অধিকাংশ রুম থেকে সমুদ্র দেখা যায়। এছাড়া এখানে ফ্রি ওয়াইফাই (শিগগীর নাকি আসছে) ও ছোটখাট স্পোর্টসের সুবিধা রয়েছে।
সী ভিউ রিসোর্টের নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্টটির খাবারের মান ভালো হলেও এটি রিসোর্ট থেকে প্রায় ত্রিশ মিটার দূরে অবস্থিত। এর প্রতি রুমের ভাড়া ১,২০০-৩,০০০ টাকা। ফেইসবুকে এই রিসোর্টের রেটিং দেখলাম অসাধারন ৪.৯০/৫.০০ (৯৯০টি রিভিউ)। সেন্টমার্টিনের আর কোন রিসোর্টের এতো ভালো রেটিং এবং এতো বেশী সংখ্যক রিভিউ নেই।
যোগাযোগঃ ০১৮৪০-৪৭৭৭০৭ (ঢাকা), ০১৮৪০-৪৭৭৯৫৬ (সেন্টমার্টিন)

০৪) লাবিবা বিলাস রিসোর্ট
সুপ্রশস্ত এই দ্বিতল রিসোর্টে মোট ৪৩টি রুম, একটি রেস্ট্যুরেন্ট ও একটি ছোট্ট সেমিনার রুম রয়েছে। এর অবস্থান নর্থ বীচে। শিপঘাট থেকে যেতে একটু বেশী সময় লাগে, হাঁটাপথে ১৫-২০ মিনিট। এর রুমভাড়া ১,৬০০-৪,০০০ টাকা।
রিসোর্টের রুমগুলোর অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তবে এই রিসোর্টে সবরকম আধুনিক সুযোগসুবিধার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খেলাধূলার ব্যবস্থা রয়েছে। ফেইসবুকে এর রেটিং ৩.৮০/৫.০০ (৩৬টি রিভিউ)।
যোগাযোগঃ ০১৭৪৪-১৩৬১৪৫ (ঢাকা), ০১৮৩৪-২৬৭৯২২ (সেন্টমার্টিন)

০৫) হোটেল প্রাসাদ প্যারাডাইজ
এই দ্বিতল হোটেলটির অবস্থান ব্লু মেরিনের কিছুটা উত্তরে। এখানে মোট ১৬টি কক্ষ রয়েছে। হোটেলের সাথে রেস্ট্যুরেন্টও আছে। বীচ থেকে একটু দূরে বলে অল্প কয়েকটি রুম থেকে সমুদ্রের খানিকটা দেখা যায়। প্রাসাদ প্যারাডাইজের প্রতিটি রুমের ভাড়া ২,০০০-৪,০০০ টাকা।
ফেইসবুকে এর রেটিং বেশ ভালো ৪.২০/৫.০০ (৬০টি রিভিউ)।
যোগাযোগঃ ০১৫৫৬-৩৪৭৭১১

০৬) হোটেল সী ইন
সেন্টমার্টিন বাজারের মূল রাস্তা ধরে পাঁচ মিনিট হাটলেই এই হোটেলটির অবস্থান। এখানে মোট ২৬টি কক্ষ রয়েছে। অবকাঠামোর দিক থেকে এটি দূর্দান্ত সুন্দর। এর নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্ট নেই, তবে আশেপাশে বেশকিছু রেস্ট্যুরেন্ট রয়েছে। এর প্রতিটি রুমের ভাড়া ২,০০০-৩,৫০০ টাকা।
এই হোটেলের সমস্যা হলো, এটি বাজারের পাশে অবস্থিত। এখান থেকে সমুদ্র দেখার কোন উপায় নেই। এবং নির্জনতা উপভোগের সুযোগও সীমিত।
যোগাযোগঃ ০১৭২২-১০৯৬৭০, ০১৭৩৫-৫৮১২৫১, ০১৭৭৫-০১১২০৮

০৭) সীমানা পেরিয়ে রিসোর্ট
এই রিসোর্টের অবস্থান ওয়েস্ট বীচে, ভ্যানে করে যেতে হবে। এতে ১৪টি রুম ও একটি নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্ট আছে। বীচের পাশাপাশি বলে কয়েকটি রুম থেকে সমুদ্র দেখা যায়। এর ভাড়া ১,৫০০-২,৫০০ টাকা।
ফেইসবুকে এর রেটিং ৪.২০/৫.০০ (২০ টি রেটিং)।
যোগাযোগঃ ০১৯১১-১২১২৯২, ০১৮১৯-০১৮০২৭

০৮) কোরাল ভিউ রিসোর্ট
এই রিসোর্টটি নৌবাহিনী পরিচালনা করে। সেন্টমার্টিনের ইস্ট বীচে এর অবস্থান। জেটি থেকে বেশ খানিকটা দূরে বলে ভ্যান/বোট নিয়ে যেতে হবে। এর আয়তন অনেক বড়ো এবং রুমগুলো থেকে মোটামুটি সমুদ্র দেখা যায়। দ্বিতল এই রিসোর্টটির সামনে একটি সবুজ মাঠ রয়েছে। একে হেলিপ্যাড হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে শুনেছি। রিসোর্টের নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্টও রয়েছে। এর রুমপ্রতি ভাড়া ২,৫০০ টাকা থেকে শুরু। ৬,০০০ টাকার রুমও আছে।
এর রেটিং খুব ভালো ৪.২০/৫.০০ (২২৬টি রিভিউ)
যোগাযোগঃ ০১৯৮০-০০৪৭৭৭, ০১৯৮০-০০৪৭৭৮

০৯) প্রিন্স হ্যাভেন রিসোর্ট
প্রাসাদ প্যারাডাইজের আরো কিছুটা উত্তরে নর্থ বীচের পাশে এই রিসোর্টটির অবস্থান। এখান থেকে সমুদ্রের বেশ ভালো ভিউ পাওয়া যায়। রিসোর্টে ২৪টি কক্ষ আছে, নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্টও আছে। কক্ষগুলোর ভাড়া ২,০০০-৪,০০০ টাকা।
যোগাযোগঃ ০১৮৩৩-৩৬০৩৩৩

১০) সী প্রবাল রিসোর্ট
নর্থ বীচের এই রিসোর্টটি সী ভিউ রিসোর্ট এন্ড স্পোর্টস থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত। এখানে মোট ১৬টি রুম আছে। একটি রেস্ট্যুরেন্টও রয়েছে। এটি বীচের পাশে, তবে চারটি রুম ছাড়া অন্য রুমগুলো থেকে সমুদ্র দেখার উপায় নেই। এর প্রতিটি রুমের ভাড়া ১,৫০০-২,৫০০ টাকা।
যোগাযোগঃ ০১৮১৬-৪৬৭৪০৬, ০১৭৬১-২০০৬৮৯
এগুলো ছাড়াও সেন্টমার্টিন দ্বীপে রাত্রিযাপনের জন্য কোরাল ব্লু, ড্রিম নাইট, সায়রি, অবকাশ, স্যান্ড শোর, ব্লু লেগুন, সিটিবি ইত্যাদি রিসোর্ট পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

বিঃদ্রঃ সেন্টমার্টিনে হোটেল/রিসোর্ট বুকিং দেয়ার সময় বীচের কাছ থেকে অবস্থান, জেটি থেকে দূরত্ব, রেস্ট্যুরেন্ট, সিকিউরিটি ব্যবস্থা ইত্যাদি দেখে নেয়া দরকার। আর রুমভাড়াও ভালোভাবে দরদাম করা প্রয়োজন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত রুমভাড়া হবে খুবই বেশী, অন্যান্য সময় বেশ কম।

স্বচ্ছ পানির প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন

আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল সেখানে মিলেমিশে একাকার, তীরে বাঁধা নৌকা, নান্দনিক নারিকেল বৃক্ষের সারি আর ঢেউয়ের ছন্দে মৃদু পবনের কোমল স্পর্শ এটি বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য বর্ণনার ক্ষুদ্র প্রয়াস। বালি, পাথর, প্রবাল কিংবা জীব বৈচিত্র্যের সমন্বয়ে জ্ঞান আর ভ্রমণ পিপাসু মানুষের জন্য অনুপম অবকাশ কেন্দ্র সেন্টমার্টিন।

স্বচ্ছ পানিতে জেলি ফিশ, হরেক রকমের সামুদ্রিক মাছ, কচ্ছপ, প্রবাল বিশ্ব রহস্যের জীবন্ত পাঠশালায় পরিণত করেছে সেন্টমার্টিন ও তৎসংলগ্ন এলাকাকে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে সাগর বক্ষের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ সেন্টমার্টিন।

চারদিকে শুধু পানি আর পানি। আয়তন ১৭ বর্গ কিলোমিটার। টেকনাফ থেকে ট্রলারে লঞ্চে কিংবা জাহাজে যেতে লাগে দুই থেকে সোয়া দুই ঘণ্টা। এর জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। নারিকেল, পেঁয়াজ, মরিচ, টমেটো ধান এই দ্বীপের প্রধান কৃষিজাত পণ্য। আর অধিবাসীদের প্রায় সবারই পেশা মৎস্য শিকার। তবে ইদানীং পর্যটন শিল্পের বিকাশের কারণে অনেকেই রেস্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল কিংবা গ্রোসারি শপের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ নিতান্ত সহজ-সরল, তাদের উষ্ণ আতিথেয়তা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। স্বল্প খরচে পর্যটকদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।

যেভাবে যাবেন: বাংলাদেশের যে কোনও স্থান থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে যেতে হবে কক্সবাজার। কক্সবাজার থেকে প্রথমে জিপে চড়ে টেকনাফ, টেকনাফ থেকে সি-ট্রাক, জাহাজ কিংবা ট্রলারে চড়ে পৌঁছাবেন সেন্টমার্টিনে।

Post Copied From:Asad Islam‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

হোটেলের ভাড়া ও ফোন নম্বর

একসাথে কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, বান্দরবান এবং সিলেটের হোটেলের ভাড়া ও ফোন নম্বরের তালিকাঃ

ছুটি পেলে আমাদের দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি যে তিনটি জেলায় ঘুরতে যায় তার প্রত্যেক জায়গার বেশ কিছু হোটেলের ভাড়া এবং ফোন নম্বর দেয়া হল, যারা ঘুরতে পছন্দ করেন তারা নিজের সংগ্রহে রাখতে পারেন, পরে কাজে দিবে ।

বান্দরবানঃ

    • ১.হোটেল হিল ভিউ: শহরের কাছেই এ হোটেলের ভাড়া রুমপ্রতি ১০০০-৪০০০ টাকা। ফোন: ০৩৬১-৬৩০৪৫।
    • ২.পর্যটন মোটেল: ভাড়া রুম প্রতি ৮৫০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে। ফোন: ০৩৬১-৬২৭৪১ এবং ০৩৬১-৬২৭৪২।
    • ৩.হলি ডে ইন: ভাড়া রুম প্রতি ১৫০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত। ফোন: ০৩৬১-৬২৮৯৬
    • ৪.ভেনাস রিসোর্ট: ফোন- ০৩৬১-৬৩৪০০, ০১৫৫২৮০৮০৬০।
    • ৫.হোটেল প্লাজা: ফোন: ০৩৬১-৬৩২৫২।
    • ৬.হিলসাইড রিসোর্ট: ভাড়া রুম প্রতি ১৫০০-৪০০০ টাকার মধ্যেই। ফোন: ০১৫৫৬৫৩৯০২২, ০১৭৩০০৪৫০৮৩।
    • ৭.সাকুরা হিল রিসোর্ট: ভাড়া রুম প্রতি ১৫০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত।
    • ৮.হোটেল ফোর স্টার: এটি বান্দরবান বাজারে অবস্থিত। রুম প্রতি ভাড়া ৩০০-১২০০ টাকা। ফোন:-০৩৬১-৬৩৫৬৬, ০১৮১৩২৭৮৭৩১,০১৫৫৩৪২১০৮৯।
    • ৯.হোটেল থ্রী স্টার : এটি বান্দরবান বাসস্ট্যান্ডের পাশে অবস্থিত। এটি ৮/১০ জন থাকার মতো ৪ বেডের এমন একটি ফ্ল্যাট। প্রতি নন এসি ফ্ল্যাট-২৫০০ টাকা, এসি-৩০০০ টাকা। ফোন:- ০১৫৫৩৪২১০৮৯।

সিলেট শহরে থাকার আবাসিক হোটেল:

        • ১. হোটেল মেট্রো ইন্টারন্যাশনাল (বন্দর, শিশুপার্কের কাছে): ০১৭৩১৫৩৩৭৩৩, +৮৮০৮২১২৮৩৩৪০৪
        • ২. হোটেল নির্ভানা ইন (রামের দিঘির পাড়, মির্জা জাঙ্গাল, সিলেট): +৮৮০৮২১২৮৩০৫৭৬, ০১৭৩০০৮৩৭৯০, ০১৯১১৭২০২১৩, ০১৭১১৩৩৬৭৬১
        • ৩. হোটেল স্টার প্যাসিফিক (ইস্ট দরগাহ গেইট): ০১৭১৩৬৭৪০০৯, ০১৯৩৭৭৭৬৬৩৩, ০৮২১-২৮৩৩০৯১
        • ৪. হোটেল অনুরাগ (ধোপা দীঘি নর্থ): ৭১৫৭১৭, ৭১৪৪৮৯, ০১৭১২০৯৩০৩৯
        • ৫. হোটেল সুপ্রীম, জাফলং রোড, মিরাবাজার, সিলেট-৩১০০, মোবাইল: ০১৭১১১৯৭০১২, ফোন: ৮৮-০৮২১-৭২০৭৫১, ৮১৩১৬৯, ৮১৩১৭২, ৮১৩১৭৩, ৮১৩১৬৮
        • ৬. হোটেল সানফ্লাওয়ার (বন্দর, শিশুপার্কের কাছে): ফোন:৮৮-০৮২১-৭১৩৯১৪
        • ৭. হোটেল এশিয়া (বন্দরবাজার): ০১৯২২৫৯৫৮৪১, ০১৯২২৫৯৫৮৪০
        • ৮. সুরমা ভ্যালি গেস্ট হাউস (জেলা প্রশাসক/পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের পাশে): ০১৭১৬০৯৫৮৩৬
        • ৯. হোটেল সিলেট ইন (মিরবক্সটুলা): ফোন: ৮৮-০৮২১-৮১১৯৪৫
        • ১০. হোটেল আল-আরব: হযরত শাহজালাল (র: ) মাজার শরীফ পূর্ব দরগাহ্ হেইট, সিলেট, ফোন: ০৮২১-৭২৪০৫৯, ০১৭২১৮১২৬৬২
        • ১১. হোটেল উর্মি: হযরত শাহজালাল (র: ) মাজার শরীফ পূর্ব দরগাহ্ হেইট, সিলেট, ফোন: ০৮২১-৭১৪৫৬৩, ০১৭৩৩১৫৩৮০৫

কক্সবাজারঃ

        • ১.পাঁচ তারকা বলে দাবিদার হোটেল সি-গালে সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৭৫৭ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৮৭০ টাকা প্রতিরাতের জন্য কক্ষপ্রতি ভাড়া নেয়া হয়। এরা রেগুলার হিল সাইড ৩ হাজার ৭৫৭ টাকা, রেগুলার সি-সাইড ৪ হাজার ০৩৫ টাকা, ডিলাক্স হিল সাইড ৯ হাজার ৫৯২ টাকা, ডিলাক্স ৯ হাজার ৮৭০ টাকা এবং স্যুইট রুম ৯ হাজার ৭৪১ টাকা ভাড়া নেয়। এদের অফ সিজনে ডিসকাউন্ট থাকে। হোটেল সি-গালের টেলিফোন নাম্বার হলো ০৩৪১-৬২৪৮০ থেকে ৬২৪৯১ পর্যন্ত।
        • ২.তিন তারকা মানের হোটেল সি-প্যালেসে দু’টি ভিন্ন ক্যাটাগরির আবাসন ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা আভিজাত্য বজায় রাখতে চান তাদের জন্য ক্রাউন প্লাজায় ৩ হাজার টাকায় রিগুলার রুম, ৪ হাজার টাকায় ডিলাক্স রুম, ৪ হাজার ৫০০ টাকায় সুপার ডিলাক্স ও ৫ হাজার টাকায় স্যুইটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাছাড়াও ইকোনমি রুম হিসেবে ওয়েস্টার্ন প্লাজায় নন-এসি ১ হাজার ৬০০ টাকা ও এসি রুম ২ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। এদেরও অফ সিজনে ডিসকাউন্টের ব্যবস্থা রয়েছে। টেলিফোন কিংবা সরাসরি এদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রুম বুকিং দেয়া যায়। হোটেল সি-প্যালেসের টেলিফোন নাম্বার হলো : ০৩৪১-৬৩৬৯২, ০৩৪১-৬৩৭৯২, ০৩৪১-৬৩৭৯৪।
        • ৩.হোটেল মিডিয়া ইন্টারন্যাশনালে সর্বনিম্ন ৯৬০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭০০ টাকা রুম ভাড়া রয়েছে। এগুলোর মধ্যে নন-এসি ডিলাক্স ৯৬০ টাকা, নন-এসি ডিলাক্স ১ হাজার ২০০ টাকা, নন-এসি ডিলাক্স ১ হাজার ০২০ টাকা, নন-এসি ডিলাক্স ১ হাজার ৩৮০ টাকা, এসি ডিলাক্স ১ হাজার ৩৮০ টাকা ও ১ হাজার ৭৪০ টাকা এবং স্যুইট ৩ হাজার ৭০০ টাকা। হোটেল মিডিয়ার টেলিফোন নাম্বার হলো ০৩৪১-৬২৮৮১ থেকে ৬২৮৮৫ পর্যন্ত। মোবাইল ০১৮১৯৫১৯৭১৯ ও ০১৭১১৩৪১১৬৪।
        • ৪.কক্সবাজার শহরে মাঝারি মানের যে হোটেল ও গেস্ট হাউসগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো ঐতিহ্যবাহী
          • হোটেল সায়মান (০৩৪১-৬৩৯০০),
          • হোটেল প্যানোয়া (০৩৪১-৬৩২৮২),
          • হোটেল সি-ক্রাউন (০৩৪১-৬৪৪৭৪, ০৩৪১-৬৪৭৯৫),
          • হোটেল কল্লোল (০৩৪১-৬৪৭৪৮),
          • হোটেল মিশুক (টেলিফোন ০৩৪১-৬৪৩২০, ০৩৪১-৬২৮০৮),
          • হোটেল অভিসার (০৩৪১-৬৩০৬১),
          • হোটেল প্রাসাদ প্যারাডাইজ (০১৭ ১১ ১৯৩১৯৬),
          • সুগন্ধা গেস্ট হাউস, ডায়মন্ড গেস্ট হাউস (০৩৪১-৬৩৬৪২),
          • সি-পার্ক গেস্ট হাউস (০৩৪১-৫১০৭৮), ০৩৪১-৫১০৪৫),
          • ইউনি রিসোর্ট (০৩৪১-৬৩১৮১, ০৩৪১-৬৩১৯১),
          • উর্মি গেস্ট হাউস, নিলয় বে রিসোর্ট (০৩৪১-৬৩৬৭৭, ০৩৪১-৬৪২৭৮),
          • সি-হ্যাভেন গেস্ট হাউস (০৩৪১-৬৩৭৮৭),
          • জিয়া গেস্ট ইন, সাইমম গেস্ট হাউস, হানিমুন গেস্ট হাউস, সি-আলিফ গেস্ট হাউস, হোটেল সি-হিল, তাহের ভবন অন্যতম।

এই হোটেল গেস্ট হাউসগুলোয় নির্ধারিত একটি ভাড়ার তালিকা থাকলেও পিক-সিজনে ওই তালিকার সঙ্গে ভাড়ার কোনো মিল থাকে না। যারা নির্ধারিত ভাড়ার কথা চিন্তা করে কক্সবাজারে আসবেন তারা যদি পিক-সিজনে আসেন তাহলে ‘বাজেট ফেল’ করা আশঙ্কা থেকে যাবে।
মাঝারি মানের এ হোটেলগুলোতে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকাও ভাড়া আদায় করা হয়। তাই আসার আগেই রুম ভাড়া জেনে ও অগ্রিম বুকিং দিয়ে এলে সবার জন্যই ভালো হয়।

সেন্টমার্টিনঃ

        • ১.ব্লু মেরিন রিসোর্ট (ঢাকা অফিস-৯৫৫৬২৫১, ০১৭১৩৩৯৯০০০, সেন্টমার্টন-০১৭১৩৩৯৯২৫০),
        • ২.প্রিন্স হেভেন (০১৮৩৩৩৬০৩৩৩),
        • ৩.সীমানা পেরিয়ে (০১৯১১১২১২৯২, ০১৮১৯০১৮০২৭),
        • ৪.প্রাসাদ প্যারাডাইস (৮৮১৭৪০০, ৯৮৯১৯২২, ০১৫৫৬৩৪৭৭১১),
        • ৫.কোরাল ব্লু রিসোর্ট (০১৭১৩১৯০০১৩, ০১৭১৩১৯০০০৭),
        • ৬.লাবিবা বিলাস (০১৭৪৪১৩৬১৪৫, ০১৭১৪৬৩৪৭৬২),
        • ৭.পর্যটন হোটেল অবকাশ (০১৮৬৬৯৮৯৮৫৫,০১৮৬৬৯৮৯৮৫৬,০১৮৬৬৯৮৯৮৬০) ইত্যাদি। ভাড়া পড়বে রুম ভেদে ১৫০০-৫০০০ টাকা।

এছাড়াও সেখানে বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে যার ভাড়া পড়বে ৮০০-১০০০ টাকা।

টিপসঃঈদের ছুটিতে বাঁ অন্য কোন সরকারী বন্ধের দিন এই তিন জেলায় ঘুরতে গেলে আগে থেকে হোটেল বুকিং দিয়ে গেলে ভাল, তাইলে পরে আর ঝামেলায় পড়তে হয়না । আর হ্যাঁ, অফ সিজনে বা বন্ধের দিন বাদে অন্যদিন গেলে হোটেল আগে থেকে বুকিং না দিলেই আপনি লাভবান হবেন ।

ভ্রমণে গিয়ে যে কোন ধরণের বিপদে পড়লে ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তা নিন, এদের ২৪ ঘন্টা হটলাইন নম্বর- ০১৭৬৯৬৯০৭৪০