স্বল্প খরচে ঘুরে আসুন বাংলাদেশের একমাত্র ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ছোট্ট সাজানো-গোছানো ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে।
খুলনা মহানগরী থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক সংলগ্ন ময়ূর নদীর পাশে গল্লামারীতে প্রায় ১০৫.৭৫ একর জায়গা জুড়ে বিরাজ করছে অভাবনীয় সৌন্দর্যের আধার এই বিশ্ববিদ্যালয়! সবুজ ঘাসের চাদরে ঘেরা এই বিশ্ববিদ্যালয় এর ভেতরের বিভিন্ন স্থানের নয়নাভিরাম দৃশ্য আপনাকে অবশ্যই মুগ্ধ করবে।
এখানকার পরিবেশ এতটাই নৈসর্গিক যে সৌন্দর্য পিপাসুদের দৃষ্টি তা অবশ্যই কেড়ে নেবে। এখানে পাবেন প্রাকৃতিক লেক যেটা সুন্দরবনের মতই আবহ পরিবেশ তৈরি করেছে, দেখতে পাবেন ‘অদম্য বাংলা’ ভাষ্কর্য!
এছাড়াও এ বিশ্ববিদ্যালয় এর সুবিশাল ‘অনিকেত প্রান্তর’ এ আপনি খুঁজে পাবেন সম্পূর্ণ গ্রামের আবহাওয়া। এই বিশ্ববিদ্যালয় এর বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত রয়েছে ৪ টি সুসজ্জিত একাডেমীক ভবন, ৫ টি হল সহ প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য কয়েকটি বহুতল ভবন, ডরমেটরী সহ বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়াও রয়েছে শহীদ মিনার, হাদী চত্বর, কটকা মন্যুমেন্ট যা বিভিন্ন স্মৃতিস্মারক হিসেবে এখনো বিদ্যমান ! এ বিশ্ববিদ্যালয় এ রয়েছে একটি সুবিশাল মাঠ সহ মনোমুগ্ধকর পুকুর পাড়, যেখানে বসে আপনি প্রকৃতির রূপ-সুধা প্রাণ ভরে গ্রহণ করতে পারবেন। এ ক্যাম্পাসের ভেতরেই অবস্থিত ক্যাফেটেরিয়া, তপন দার দোকান প্রতিনিয়ত বহন করছে শিক্ষার্থী দের উচ্ছ্বাসোক্তির পদচিহ্ন!
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এর ভেতরের সুবিশাল বৃক্ষরাজির ছায়ায় ঢাকা আর গুল্ম জাতীয় গাছ পালা পরিবেষ্টিত রাস্তাগুলোতেও আপনি খুঁজে পাবেন অন্য রকমের এক ভালোলাগা!
কীভাবে যাবেনঃ রাজধানী ঢাকা থেকে রেলপথ বা সড়কপথ দুইটি উপায়েই যাওয়া যায়!
সড়ক পথের ক্ষেত্রে, সোহাগ/হানিফ/ ঈগল পরিবহন এর মাধ্যমে ফরিদপুর, যশোহর রুট এর মাধ্যমে, ভাড়া পরবে ৫৩০ থেকে ৫৭৫ এর মধ্যে! সময় লাগবে ৭-৮ ঘন্টার মত! বাস থামবে সোনাডাঙ্গা বা রয়েল এরর মোড় এ যেখান থেকে খুব সহজেই যেকোন অটো রিক্সাতে করে পৌঁছে যাবেন খুবির ক্যাম্পাসে! এক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে ১০ টাকা (সোনাডাংগা থেকে) বা ১৫ টাকা ( রয়েল এর মোড় থেকে)
সড়ক পথে আরেকটা রুট রয়েছে যা মাওয়া ( ফেরী/লঞ্চ পারাপার) হয়ে আসতে হয়! সময় ও লাগে খুব কম, মাত্র ৫ থেকে ৬ ঘন্টা! সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস, ফাল্গুনী পরিবহন, সোহাগ প্রভৃতি বাস আসা যাওয়া করে যার যাত্রীসেবা মূল্য ৪০০-৪৫০ এর ভিতর! এ বাস গুলো আপনাকে সোনাডাঙ্গা টার্মিনাল এ নামিয়ে দিবে। এছাড়াও কন্টাক্টার মামা কে বলে রাখলে তিনি জিরো পয়েন্ট এ নামিয়ে দিবেন যেখান থেকে ক্যাম্পাসের অটো ভাড়া মাত্র ৫ টাকা!
রেল পথের ক্ষেত্রে, দুইটি ট্রেন রয়েছে খুলনাগামী, সুন্দরবন এবং চিত্রা নামে! ট্রেন দুইটি ছাড়ে কমলাপুর জংশন থেকে যথাক্রমে সকাল ৭-৭.৩০ এর মধ্যে এবং রাত ৭-৭.৩০ এর মধ্যে! ট্রেন দুটির শোভন চেয়ার ভাড়া পরবে ৫০৫ টাকা! ট্রেন থামবে পাওয়ার হাউজ যেখান থেকে অটোতে করে খুব সহজেই ক্যাম্পাসে আসা সম্ভব, ভাড়া পরবে জনপ্রতি ২০ টাকার মতো।
খাওয়া ও থাকাঃ ক্যাম্পাসের পাশেই রয়েছে অনেক গুলো ছোট/মাঝারী টাইপের হোটেল যেখানে খুব সাশ্রয়ী মূল্যে সকাল দুপুর ও রাতের খাবার পাওয়া যাবে, এছাড়াও জিরো পয়েন্ট এ গেলেই পাওয়া যাবে খুলনার বিখ্যাত চুইঝাল মাংস! এর দামও বেশ সাশ্রয়ী।
থাকার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে রয়েল এর মোড়/সোনাডাঙ্গা টার্মিনাল এ বাস থেকে নেমেই পাওয়া যাবে ছোট /মাঝারী বিভিন্ন রকমের হোটেল ও রেষ্টুরেন্ট যেখানে থাকার ব্যবস্থা করে আপনি স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াতে পারবেন এই নয়নাভিরাম, শিল্পীর আকা ছবির মতো চিরসুন্দর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাথে সাথে খুলনার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান।
Post Copied From:Himel Ahmed>Travelers of Bangladesh (ToB)