খাগড়াছড়ি_কথন

খাগড়াছড়িতে আমার দীর্ঘ সময় থাকার অভিজ্ঞতায় কিছু কথা বলতে চাই। আশাকরি সবার কাজে লাগবে।

#সাজেকঃ

সাজেকে আসলে ১ দিন ১ রাত এর বেশি থাকার কিছু নাই। ১ম দিন সকালের এস্কর্টে গিয়ে বড়জোর পরের দিন বিকেলের এস্কর্টে ব্যাক করতে পারেন। আর্মি রিসোর্টগুলোতে যেমন: সাজেক রিসোর্ট, রুন্ময়, জারবুজ ইত্যাদিতে বুকিং চাইলে এটলিস্ট ১ মাস আগে থেকে নক করবেন। খাবারের জন্যে আর্মির রক ক্যান্টিন ভাল। আগে থেকে অর্ডার করতে হয়। ভোরে অবশ্যই উঠবেন। ভোরের মেঘ মিস করলেন তো, পুরো ট্যুর মিস করলেন। নতুন হেলিপ্যাডের চেয়ে আমার কাছে পুরাতনটাই বেশি ভাল লাগে। ভীড়ভাট্টা অনেক কম। দেখার জায়গাঃ সাজেক আর কংলাক পাড়া। যারা খাগড়াছড়ি থেকে বাংলা কলা বা পেঁপে নিয়ে আসতে চান, কংলাক পাড়া টার্গেট করতে পারেন। অনেক সস্তায় পাবেন। কমলা না কেনাই ভাল, বিদঘুটে স্বাদ। আর সাজেক থেকে যত খাগড়াছড়ির দিকে আসতে থাকবেন, তত দাম বাড়তে থাকবে। চান্দের গাড়ি দামাদামি করে নিবেন। আমি সব মিলিয়ে ৬০০০ এ গিয়েছি যদিও কিন্তু, ৭০০০ এর ভেতর পেলে ভাল ডীল বলতে পারেন। হয়, ড্রাইভার হেল্পারকে আপনার সাথে খাওয়াবেন বা ঝামেলা না চাইলে এ বাবদ ৫০০ টাকা দিয়ে দিলেই হবে। পুরোটা কাভার করা জীপ নিবেন না। মনে রাখবেন, সাজেকের আসল মজা যাওয়া আসাতেই। সাজেক যাবার পথে হাজাছড়া ঝর্ণা পড়বে। কিন্তু,এখন যারা যাবেন, ওখানে না যাওয়াই ভাল। একটুও পানি নেই।

#খাগড়াছড়িঃ

১ দিনেই কাভার হয়ে যাবে। আলুটিলা গুহা, পাশেই একটা বৌদ্ধ বিহার, আলুটিলা আর্মি ক্যাম্পের পাশের হেলিপ্যাড যা তারেং নামে পরিচিত। আর রিসাং ঝর্ণা। যদি বয়স্ক কেউ থাকে বা খুব একটা কষ্ট করতে না চান তো এই সিজনে রিসাং বাদ দিতেও পারেন। খুব মজা পাবেন না দেখে। কেষ্টর চেয়ে কষ্ট বেশি। বিকেলে চলে যেতে পারেন খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের পাশেই চেঙ্গি নদীর উপর ব্রীজে। ভাল লাগবে।

#মায়ুং_কপাল/#হাতিমূড়া/#স্বর্গের_সিড়ি

খাগড়াছড়ি থেকে পানছড়ির রাস্তায় গেলে জামতলীর আশেপাশে একটা জায়গায় নদী পার হতে হয় দড়িটানা নৌকায়। এরপর গ্রাম্য রাস্তা, ধানক্ষেতের আইল, কাঁদাজলের পাহাড়ী ছড়া আর চড়াই উতরাই এর পাহাড় বেয়ে অবশেষে অনেকধাপ সিঁড়ি। নৌকা থেকে নেমেই সবচেয়ে দূরের যে পাহাড় দেখবেন সেটাই মায়ুং কপাল। সবমিলিয়ে যেতে আসতে মাঝারি গতিতে বিরতিহীনভাবে ৩ঃ৩০-৪ঃ৩০ ঘন্টা ট্রেকিং। আমার কাছে কেষ্টর তুলনায় কষ্ট অনেক অনেক বেশি মনে হয়েছে। আপনি আলুটিলা তারেং এ দাঁড়ালেও মায়ুং কপালের মতই একই ভিউ পাবেন তার ১/১০০ ভাগ কষ্ট করে। সুতরাং, সিদ্ধান্ত বুঝে শুনে নিন। জামতলীর ঐ খেয়া পারাপার খুঁজে পেতেই আমার ১ ঘন্টা সময় আর ৩০ কিমি রাস্তা অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে। কোন চিহ্ন নেই, একদন স্থানীয় ছাড়া কেউ চিনে না। ওপারে নামার কিছুদূর পর সভ্যতার শেষ নিদর্শন হিসেবে আছে দু একটি দোকান। এরপর ৩-৩ঃ৩০ ঘন্টা আর কিছুই পাবেন না। একদম শেষের দিকে পাহাড়ী ঝর্ণার পানি গাজী ট্যাংকে সংরক্ষিত থাকে। ঐটাই প্রাণ বাঁচাবে।

ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়া আসা করতে এসির জন্যে মোস্ট প্রেফারেবল হল সেন্টমারটিন বা হানিফ। নন এসিতে এস আলম, ইকোনো। এছাড়াও ময়মনসিংহ/গাজীপুর (শান্তি), রংপুর(শ্যামলী) আর দক্ষিণবঙ্গের(ঈগল) সরাসরি বাস সার্ভিস আছে।

থাকার বেশ কয়েকটা ভাল হোটেল আছে। অরণ্য বিলাস, ইকোছড়ি ইন, পর্যটন মোটেল, মামনি ইত্যাদি।

খাবার হোটেল সিস্টেমের কথা তো সবাই জানেন। বাম্বু চিকেনটা খেতে পারেন।

সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদ ভ্রমণে সবাইকে শুভ কামনা।

Post Copied From:

মাহরুফ নজরুল>Travelers of Bangladesh (ToB)

(যারা বাজেট এর ভিতরে টুর কমপ্লিট করতে চান তারা দেখতে পারেন)

আমাদের সাজেক টুরের সূচনা হয়েছিল প্রায় ৬-৭ জন ডিপার্টমেন্টের ফ্রেন্ডদের সম্মতিতেই।ঠিক করলাম ১৩ তারিখ রাত্রে রওনা দিব।টিকেট কাটার আগ মূহূর্তে পোলাপান আরো বাড়তে থাকে।সবাই টেনশনে ছিলাম অই টাইমে রাশ থাকবে তাই আগে ভাগেই আমরা টিকেট কেনার সিদ্ধান্ত নেই।টিকেট কিনার আগে আমরা কনফার্ম হই ১২ জন যাব।কাউন্টারে যেয়ে ১৩ তারিখ রাতের কোন টিকিট ই ছিল না,বহু কষ্টে খোজার পরে আমরা ঈগল থেকে ১২ টা টিকেট কিনি।টিকেট এর দাম ছিল ৫২০ টাকা(নন এসি)

১৩ তারিখ রাত আসে.১০.৩০ এর বাস ছাড়তে ছাড়তে প্রায় ১১.৩০ বেজে যায়।রাস্তায় প্রচুর জ্যাম ছিল।সবাই চিন্তায় ছিল কখন পৌছাব খাগড়াছড়ি।আমরা ঢাকা থেকেই চান্দের গাড়ি ঠিক করে যাই।আমাদের চান্দের গাড়িতে নিয়েছিল ৮৫০০ টাকা।খাওয়ার খরচ আর থাকার খরচ ড্রাইভারের নিজেদের ছিল।কিন্তু প্রবলেম দেখা দেয় উনি আমাদের দিঘিনালা থেকে রিসিভ করবেন যেটা আগে ছিল টাউন থেকে।কিন্তু বলেছেন যে আমরা যে দিঘিনালা আসব অই টাকাটা যাতে আমরা ৮৫০০ থেকে রেখে দেই।আর সিজন বিধায় আমাদের ২০০০ টাকা এডভান্স করতে হয়েছিল।আর আমরা কটেজ ভাড়া করেছিলাম ২ রুম ৩৫০০ টাকা দিয়ে।

প্রথম দিনঃআমরা খাগড়াছড়ি পৌছাই ৭.২০-৩০ এর ভিতরে।এর পরে আমরা প্রথমেই ঢাকার রিটার্ন টিকেট কাটি শ্যামলীতে।এর পরে আমরা লোকাল গাড়িতে চলে যাই দিঘিনালায় শাপলা চত্তর থেকে।কাউন্টার থেকে ২ মিনিট হাটলেই শাপলা চত্তর।আমরা কেউ ছাদে চড়ে,আবার কেউ ভেতরে বসি।দিঘিনালার বনমালির গেট থেকে ড্রাইভার আমাদের রিসিভ করে।আমাদের দিঘিনালা ভাড়া নিয়েছিল প্রতি জন ৫০ টাকা করে.১২ জনের ৬০০ হয়েছিল।আর শাপলা চত্তর থেকে দিঘিনালা আসতে সময় লাগে ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মিনিট

এর পর আমরা দিঘিনালা বাজার চলে যাই।অইখানে আমরা সকালের নাস্তা করি রিজনেবল প্রাইজ এই.১২ জনের বিল হয়েছিল ৫০০ টাকা।এর পরে আমরা প্লান মত ঠিক করি হাজাছড়া ঝর্না দেখব।ততক্ষণে ৯.৩০ এর মত বেজে গেসে।আর্মির এস্কর্ট ছাড়বে ১০.৩০ এ।সো আমরা হাজাছড়া বাদ দেই অইদিন।ঠিক করি পরের দিন হাজাছড়া দেখব

তারপর আর কি।আমাদের চান্দের গাড়িটা একটু পুরানো হলেও ইঞ্জিনের জোর ছিল সেই আর ড্রিভার মামা ত ছিল পাংখা।বহুত গাড়ি ওভারটেক করসে।প্রায় দুইটার দিকে আমরা সাজেক পৌছাই।ঢুকার সময় প্রতিজন ২০ টাকা করে টিকেট করি

আমরা কটেজে ঢুকি।পরে আমাদের পছন্দ হয় নাই বিধায় আর অইখানে থাকি নাই।পরে ড্রাইভার মামা আমাদের আরেকখানে এক হুজুরের কটেজে নিয়ে যায়।হুজুর লোক অনেক ভাল মানুষ।আমরা বহু কষ্টে রাজি করাই ২ রুম ৩২০০ তে।কটেজ থেকে সাজেকের ভিউ অস্থির লেভেলের ছিল।কটেজটা একেবারেই নতুন করেছে বিধায় নামটা মনে নাই।আর কটেজটা ছিল মেঘ মাচাং এর একেবারে পাশেই।

আমরা দুপুরে খেয়েছিলাম মনটানা হোটেলে।ভাত ডাল আনলিমিটেড,আর ডিম আর সবজি ছিল মাত্র ১০০ টাকায়।ডালের স্বাদ ভোলার মত না

আর রাত্রে খেয়েছি বারবিকিউ.৪ টা পরোটা,সস,সালাদ আর মুরগি প্রতিজন ২০০ টাকা করে

এর আগে বিকালে আমরা কংলাক এ যাই,রাতে গেসিলাম হেলিপেড এ

দ্বিতীয় দিনঃপরের দিন আমাদের প্লান ছিল সূর্যোদয় দেখবই.৫ টার দিকে উঠেই আমরা ৪-৫ জন চলে যাই মেঘ মাচাং এ।এর পাশ থেকেই আমরা সূর্যোদয় দেখি।এর সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করার মত না।তবে আমি মনে করি যেই কটেজে উঠেছিলাম অইখানে ভিউ আরো সুন্দর ছিল।অইটাও এসে দেখছিলাম আমরা।

সকালে আমরা খিচুরি খাই।খিচুরি ভেবেছিলাম ৮০ টাকা,কিন্তু হয়ত সিজন বিধায় প্রতিজন ১০০ টাকার কমে রাজি হচ্ছিলই না।ডিম খিচুরি।গরম গরম খাইতে পাইলে সেই একটা খিচুরি।এর পর আমরা রুমে এসে রেডি হয়ে হুজুর সাহেবকে বিদায় জানিয়ে এস্কর্ট ছাড়ার ওয়েট করি।সকালে বেক করি কারণ আমাদের হাজাছড়া ,ঝুলন্ত ব্রিজ,রিসাং আর আলুটিলা দেখতে হবে

প্রথমে আমরা হাজাছড়া দেখি।পানি পেয়েছিলাম অল্পই।তাই ভিজি কয়েকজন।পানি ছিল সেই লেভেলের ঠান্ডা।তাড়াতাড়ি শেষ করে দিঘিনালায় দুপুরের খাবার খাই ১৫০ টাকার প্যাকেজ এ।

এর পর আমরা যাই ঝুলন্ত ব্রিজ এ।ঢুকতে খরচ হবে প্রতিজন ২০ টাকা করে

এর পর আমরা যাই রিসাং এ।সিড়ি পার হয়ে অইখানে যেতে হয়।অইখানে মোটামুটি পানি পাইসিলাম।স্লাইড আমরা কমবেশি সবাই করসি।এটা নিজের সেফটি বুঝে করবেন আপনারা

এর পর একেবারেই সময় ছিল না।প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যাইতেসিল।তারপরও আলুটিলায় যাই।কিন্তু কপাল ভাল আমাদের ঢুকতে দিছিল।মশাল কিনি প্রতিজন ২০ টাকা করে।আলুটিলা আমার কাছে অস্থির লাগসিল,হয়ত সন্ধায় গেসিলাম এ কারণেই

এর মাধ্যমে আমাদের ঘুড়াফিরা শেষ হয়

রাতে খেয়েছিলাম আমরা Bamboo Shot এ।অইখানের ট্রেডীশনাল খাবার খাই।বাশের ভিতরে গোশত।খাবার টা ভাল ছিল এবং যথেষ্ট ঝাল ছিল।প্রতিজন খচর পরেছিল ১২৮ টাকা করে।

এর পর আমরা ৯ টার বাসে ঢাকা ব্যাক করি

আর একটা কথা সাজকের রাস্তা হইল আমার দেখা অন্যতম সুন্দর রাস্তা।সো আপনি যদি কিছুটাও পারদর্শি হন তাহলে তাহলে চান্দের গাড়ির ছাদে উঠতে ভুলবেন না।এর আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মত না।আর্মি ক্যাম্পের আগে আপনাকে যদি নামায় দিবে।পার হইলে আবার ও উঠবেন।মিস করবেন না।

আশা করি আপনার ভ্রমণ সফল এবং আনন্দদায়ক হবেই

ছবিটা আমাদের কটেজে থেকে তোলা(এডিট ছাড়া)

আর হিসাব টা হইতেসে(১২ জনের জন্য)

বাস ভাড়া(যাওয়ার)-১২*৫২০=৬২৪০
রিটার্ন টিকেট-১২*৫২০=৬২৪০
চান্দের গাড়ি-৮৫০০
কটেজ(২ রুম)-৩২০০
সকালের নাস্তা(প্রথম দিন)-৫০০
সাজেক ঢুকা-২৪০+১০০=৩৪০
দুপুরের খাবার(১ম দিন)-১২০০
রাতের খাবার(বারবিকিউ ১ম দিন)-২৪০০
সকালের নাস্তা(খিচুরি)-১০০০
দুপুরের খাবার(২য় দিন)-১৮০০
ঝুলন্ত ব্রিজ ঢুকা-২৪০
আলুটিলা গুহা ঢুকা-২৪০
রাতের খাবার(২য় দিন)-১৫৪৫

কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে বলবেন

আর আমাদের পার পার্সন খরচ পরসিল ২৮৫০ টাকা

Post Copied From:Saif Ferdous Irfan>Travelers of Bangladesh (ToB)

সময়টা যখন বর্ষা(সাজেক)

সময়টা যখন বর্ষা,নিজের মধ্যে থাকা দ্বিধা-দ্বন্দ গুলোকে ইকটু মন থেকে দূরে সরিয়ে ঘুরে আসতে পারেন সাজেক ভ্যালি থেকে।।
সাজেকের ভোরটা মেঘের রাজ্যে বাসবাসের মতই মনে হবে।মেঘ যেন পুরো সাজেক ভ্যালিটাকে মেঘের উপর ভাসিয়ে রেখেছে।ম্যাচাং গুলোর জানালা দিয়ে হাল্কা শীতল বাতাস শরীরকে স্পর্শ করে যাওয়া এ এক অসম্ভব ভালো লাগার অনুভূতি।। কখনো মেঘ আবার হঠাৎ ঝিরঝির বৃষ্টি।সব মিলিয়ে খুব খারাপ সময় কাটবে না,এতটুকু আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি✌
খাওয়া & থাকার ব্যবস্হা ও খারাপ না।
যেভাবে যাবেনঃ
# ঢাকা (সায়দাবাদ/গাবতলি/ফকিরাপুল)- খাগড়াছড়ি রাতের বাসে উঠে পড়ুন (ভাড়া-৫২০টাকা)
# খাগড়াছড়ি থেকে আপনি তিন মাধ্যমে সাজেক পৌছাতে পারবেন । চান্দের গাড়ী,সিএনজি এবং মটরসাইকেলে ।
# খাগড়াছড়ি শহর বা দীঘিনালা উপজেলা শহর থেকে জীপগাড়ি (লোকাল নাম চাঁন্দের গাড়ি) রিজার্ভ নিলে ভাড়া নিবে পুরাতন চান্দের গাড়ী ৫০০০-৬০০০ টাকা আর নতুন মাহিন্দ্রাগুলো ৭০০০-৮০০০ টাকা।
# এই টাকার মধ্যে আপনি যাবেন তারপর রাত কাটাবেন গাড়ী আবার আপনাকে নিয়ে আসবে।এক গাড়িতে গাড়ীর সাইজ অনুযায়ী দশ থেকে ১৫ জন বসতে পারবেন ।
খাবার & থাকার ব্যবস্হাঃ
# ক্যাটেজ পাবেন ২০০০-২৫০০ টাকার মধ্যে; (৪/৫ জন থাকতে পারবেন),অতঃপর ক্যাটেজে রাত কাটানোর অনুভূতিটা ব্যাপক।
# খাবার প্রতি বেলা জনপ্রতি ১০০-১৫০ টাকার মধ্যে হয়ে যাবে।
সতর্কতাঃ
# বৃষ্টির দিন বলে কথা,ইক্টু সতর্ক থাকবেন,বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ছাতা ও যাবতীয় সরঞ্জাম সাথে নিয়ে নেয়া ভালো।
# যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না।
# আর্মিদের ইন্সটাকশন মেনে চলুন
💜ধন্যবাদ💜

Post Copied From:Rifat Faruqe Ove>Travelers of Bangladesh (ToB)

মেঘের দেশ সাজেক

অনেকবার ডেইট চেঞ্জ করতে করতে কিভাবে যেন হুট করেই রওনা দেওয়া। ঢাকা থেকে আমি যাচ্ছি, বাকিরা সিলেট থেকে। চট্টগ্রামে গিয়ে একসাথে রওনা দিব মেঘের দেশে। কপালের লিখা কে খন্ডাবে!! ৩ ঘন্টা দেরী করে যখন চট্টগ্রামে পৌছালাম ততক্ষ্ণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। বহুকষ্টে খাগড়াছড়ির বাসের ইঞ্জিনের উপর ঠাই হল আমাদের। সকালের এস্কোর্ট তো মিস হলই বিকালেরটাও ধরতে পারব কিনা তার নিশ্চয়তা কে দেবে তারওপর যদি বাস আবার নস্ট হয়!! কপালে যেদিন দুঃখ আসে, সেদিন সব দিক দিয়েই আসে।
আমরা যখন দিঘীনালায় পৌছালাম ততক্ষ্ণে সূর্যমামার ঘুমাবার সময় হয়ে এসেছে। এস্কোর্ট তো মিস হলই, তাইলে এখন উপায়!! এক সিএনজি ড্রাইভার বলল সে নাকি নিয়ে যেতে পারবে। তো উঠে পড়লাম আমরা। যা আছে কপালে। শেষবিকালে আমরা পাহাড়ি ওই স্বর্গের রাস্তাটা ধরে যেন স্বর্গেই যাচ্ছি। চলে আসলাম বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্পে। দুর্ভাগ্যের ষোলকলা পূর্ণ হল। আমাদের এই রাতের বেলা কোনভাবেই যেতে দিবে না। আর মাত্র ৩৭ কিমি পর আমাদের গন্তব্য। ২৪ ঘণ্টার কষ্ট বৃথা!! তো কি আর করা । দিঘীনালায় ফিরে আসা। আর পরদিন সকালের জন্য অপেক্ষা।
সকাল হল। আমাদের যাত্রা আবার শুরু হল। রাতের ঘুমে শরীর এখন চাঙা। গতকালের লাস্টের আমরা আজ সবার আগে বাঘাইহাট। পথে হাজাছড়া দেখে এসেছি। বলা যায় পানিশূন্য হাজাছড়া। সাড়ে দশটায় এস্কোর্ট ছাড়ার কথা এগারোটা বেজে গেল তাও ছাড়ছে না! আমাদের যেন চিন্তা নাই, হাতে চায়ের কাপ নিয়ে জমিয়ে ক্যারাম খেলছি বাঘাইহাট বাজারে। 
এবার আর কোন বাধা নাই বলা যায়। স্বর্গের দ্বার আজ আমাদের জন্য উন্মুক্ত। আদিবাসী বাচ্চারা হাত নেড়ে স্বাগতম জানাচ্ছে আমাদের। এবার বুঝি দেখা মিলবে সাজেকের। কিন্তু……
সাজেকে যাওয়ার সর্বশেষ পাহাড়টার খাড়া অংশটুকু পার করতে আমাদের সি এন জি এর প্রাণ যায় যায় অবস্থা। নেমে কিছুটা পথ তাই হাটতে হল অভিকর্ষের বিপক্ষে।
অবশেষে পৌছালাম। ঠিক করেছিলাম কোন কটেজে উঠব না। একেবারে আদিবাসীদের সাথে উনাদের বাড়িতেই থাকব, উনাদের খাবার খাব। খুব কাছ থেকে দেখব তাদের জীবনযুদ্ধ। দিদিকে কল দিলাম। উনি এসে স্বাগত জানিয়ে নিয়ে গেল ,যেন বাড়িতে মেহমান এসেছে। তারপর নিয়ে গেল মাচাং এ যেখানে আমাদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মাচাং এর বারান্দায় গিয়ে সামনে যা দেখলাম তার কাছে আমাদের দুদিনের সব পরিশ্রম একেবারে নাই হয়ে গেল। এ আমার বাংলাদেশ। <3
রেস্ট নিয়ে বিকালে বের হলাম। হ্যালিপ্যাডে সূর্যাস্ত দেখলাম। আর একটু পর আকাশ জুড়ে কোটি তারার মেলা। পুরোটা আকাশ গঙ্গা। কতক্ষ্ণ আকাশভরা তারার নিচে শুয়ে ছিলাম জানি না। পেটের রাক্ষসটা জানান দিল তার অস্তিত্ব। ফিরে আসলাম মাচাং এ। আজ রাতের মেনু ব্যম্বু চিকেন, বাঁশের মধ্যে রান্না করা পাহাড়ী চালের ভাত, আলুভর্তা,ডাল। যেন অমৃত। খেয়েদেয়ে বারান্দায় বসে মেঘের সমুদ্র দেখা। যেন স্বপ্নের মধ্যেই বেঁচে থাকা।
রাত পোহালো। ভোর হলো। আমাদের সামনেই মেঘের সমুদ্র থেকে যেন সূর্যটা উকি দিল। খেয়েদেয়ে যাত্রা করলাম কংলাক এর দিকে। সূর্যের তেজ তখন পুরোপুরি। একঘন্টা পর পৌছালাম কংলাকে। আমরা তখন সবার চেয়ে উপরে। আদিবাসী মেয়েরা বসে কাপড় বুনছে। আর পিচ্চিগুলা বেশি জোস। আমাদেরকে ওদের ভাষা শিখাচ্ছে। শুনলাম এক ঝর্ণার কথা। দেড় দুঘন্টার পথ ওখান থেকে। কয়েকজন মানা করল যেতে। কিন্তু যেতে তো হবেই। এক পিচ্চিকে (ওর নাম মওনা) গাইড বানিয়ে রওনা দিলাম। মওনার সাথে ওর দু একজন বন্ধুও গেল আমাদের সাথে। জঙ্গলের মধ্যে পথ বানিয়ে আমরা যাচ্ছি তো যাচ্ছি। পথের শেষ বলে যেন কিছুই নেই। একটুপর ঝর্ণার শব্দ শুনতে পেলাম। নভেম্বরেই এত পানি!! বর্ষায় না যেন কেমন হয়! আমরা ছাড়া আর কেউ নাই এখানে। সূর্যের আলো বহুকষ্টে আসে যেন। শুরু হল আমাদের ঝাপাঝাপি। ফিরে এলাম কংলাকে। এখান থেকে সাজেকে যাওয়ার এনার্জি নাই কারো। একটা গ্রুপ তাদের গাড়ি নিয়ে ফিরে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গেই তাদের গাড়িতে করে সাজেকে চলে আসলাম। ধন্যবাদ তাদের।
মাচাং এ আসলাম শেষ বিকালে। গোসল সেরে খেয়েদেয়ে এক ঘুম। যা পরিশ্রম গেল ! রাতে বের হয়ে হাটাহাটি করে আসলাম। এবার ফেরার পালা। এই স্বর্গ ছেড়ে চলে যেতে হবে! রাতের খাবার খেয়ে দিদির সাথে গল্প করতে বসে গেলাম। দিদি আরেকটা দিন থাকতে বলল। দুইদিনে আমাদের যেন আপন করে নিয়েছে। সম্পর্ক্টা আপনি থেকে তুই,তুমিতে চলে এসেছে। বায়না করলাম আমাদের জুম চাষের জমিতে নিয়ে যেতে হবে, সাথে আরেকটা ঝর্ণায় যেখানে মাছ ধরা যাবে। দিদি রাজি হল আর আমরা আমাদের ড্রাইভারকে কল দিয়ে আরেকটা দিন পরে আসতে বলি। শুয়ে শুয়ে আবারো ভোরের অপেক্ষা করতে থাকি।
পরদিন দিদি সময় দিল ৯ টায়। তার আগে বের হলাম আমরা। নাস্তা করে হাঁটাহাঁটি। বিচ্ছুরানী ও তার দলবলের সাথে দেখা। খেলছে তারা বালু, পাতা, ইট দিয়ে রান্না রান্না। একটা পাতায় আমাকে খেতে দিল। কিচ্ছুক্ষ্ণ পর দেখি হাতে বইখাতা নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে সবাই। স্কুল শুরু হয়নি এখনো। এত সুন্দর একটা পরিবেশে স্কুল! খেলার ছলে ওদেরকে দিয়েই ওদের স্কুল মাঠে পড়ে থাকা কাগজ, প্লাস্টিক পরিষ্কার করালাম। যে বেশি কাগজ পরিষ্কার করতে পারবে সে তত বেশি চকলেট পাবে। খুব আগ্রহ নিয়ে সবাই নেমে গেল মাঠ পরিষ্কার করতে। (যদিও ময়লাগুলার বেশিরভাগই আমার আপনার ফেলা )
নয়টা বাজল। দিদির সাথে আমাদের যাত্রা শুরু হলো। পৌছে গেলাম জুম চাষের জায়গায়। পাহাড়ী সবজি ,শাক তোলা হল ঝুড়ি ভরে। ঝিরিপথে হাটতে হাটতে , পিছলে পড়তে পড়তে এক ঝর্ণার কাছে পৌছালাম। সামনে যাওয়ার আর রাস্তা নাই। এখানেই শুরু হলো আমাদের চিংড়ী শিকার। একবোতল চিংড়ি আর চার পাঁচটা কাকড়া ধরে ফেরার পথ ধরলাম। কিন্তু বিধিবাম।
এবার দিদিও রাস্তা ভুলে গেলেন! এপথ ওপথ করতে করতে নতুন রাস্তাও বানিয়ে ফেলল। সামনে একটা জুমঘর। ওখানে বসে চিংড়িগুলো ভাজা হল। সে কি স্বাদ!! চারপাশে পাহাড়, সবুজ আর নিরবতা!! বারবিকিউ শেষ হল। আমাদের রেস্টও হল। মাচাং এর দিকে রওনা দিলাম। পথে একটা কূপ। এখান থেকে খাবার পানি নিয়ে যান দিদিরা। এখানেই গোসল করে নিলাম। মাচাং এ এসেই সব চিৎপটাং । আর দিদি আর মাসীমা রান্না শুরু করল। একটু পর সামনে হাজির হল নিজেদের তুলে আনা শাক সবজি। তেল ছাড়া রান্না। পাতিলের বদলে বাশে রান্না হয়। তার কি স্বাদ। খেতে খেতে প্যান্টের বেল্ট ঢিলা করা লাগে, তারপর হেলান দেওয়া লাগে, তাও খাওয়া শেষ হয় না।
সকালে গাড়ী আসবে। চলে যেতে হবে। দিদি মাসী আবার অগ্রীম নেমন্ত্রণ দিয়ে রাখলেন। পরেরবার আসলে নাকি সাজেক নদী দেখাতে নিয়ে যাবেন !!!!
সহজ সরল প্যাচহীন মানুষগুলো ৩ দিনেই একটা বন্ধনে আটকে দিয়েছেন যেন।
আমাদের সাজেক পর্ব শেষ হল। কিন্তু ট্যুরের এখনো বাকি আছে। এবার যাত্রা খাগড়াছড়ি। রাতের বাসের টিকিট করে সিস্টেম রেস্টুরেন্টে খেয়ে রওনা দিলাম রিছাং ঝর্ণার উদ্দেশ্যে। স্লাইড দিতে গিয়ে একবার পিছলিয়ে পড়েও গেলাম। বড় দুর্ঘটনা না ঘটলেও কনুই হাটুতে ব্যথা পেলাম। আর প্যান্ট এর ১২টা বাজায় দিলাম!!! (ভাগ্যিস এক্সট্রা ছিল 😛 )
রিছাং এর পর আলুটিলা। সন্ধ্যা হয়ে এল। আমরা মশাল হাতে গুহায় প্রবেশ করলাম। যেন অন্য কোন জগতে চলে এসেছি। ২০ মিনিট পর ফিরে এলাম চেনা জগতে।
রাতে খাগড়াছড়ি শহরে ঘুরাঘুরি করে ৯ টায় বাসে উঠলাম। বাস ছাড়ল। পেছনে রেখে এলাম জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ৪টা দিন। আর সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি সারাজীবন মনে রাখার মত হাজারো স্মৃতি।

খরচঃ তিনরাত সাজেকে ছিলাম। কটেজে না থাকা আর বাইরে হোটেলে না খাওয়ার জন্য খুবই অল্পতে ট্যুর শেষ করা সম্ভব হয়েছে।
তিন দিনের জন্য মাচাং এ ৩৫০০ লাগছে। ( যদিও দিদি ৩০০০ চেয়েছিল)
খাওয়া দাওয়া + যাতায়াত+ অন্যান্য সব মিলিয়ে পার পারসন ৫৩০০+ খরচ ।

**ছবির এই ঝর্ণাটারই দেখা পেয়েছিলাম কংলাক থেকে যাত্রা করে।
হ্যাপি ট্রাভেলিং 🙂

Post Copied From:Hasib Mehedi Porosh‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

অনিন্দ সৌন্দর্যের অধিকারীনী সাজেক

গত ২ টা দিন সাজেক তার সৌন্দর্যের কি দেখায়নি আমাদের?
সাজেকের নয়ানাভিরাম রাস্তা,কংলাক পাহাড় থেকে সন্ধ্যার সূর্যাস্ত,নিচের বিশাল পাহাড়,রাতের আকাশে লক্ষ লক্ষ তারা,মাঝরাতে আলোকোজ্জ্বল জোসনা,নিস্তব্ধ পাহাড়ের আড়াল থেকে হাজারো পোকামাকড়ের অজানা সব শব্দ,
সকালের সূর্যোদয় আর ভোর থেকে নিচের পাহাড়ে মেঘের সমুদ্র,
ভুল নয়,
আসলেই মেঘের সমুদ্র,
এ এক অসাধারন দৃশ্য।
ওই সব সৌন্দর্য আর মেঘের সমুদ্রের দিকে সারাজীবন তাকিয়ে থাকা যাবে।
সেটা তো আর সম্ভব না,
তাই ফিরে এসেছি নিজের ডেরায়,
ফিরে এসেই লিখতে বসেছি সাজেক এবং সাজেক ভ্রমন নিয়ে।
আমরা গত ৭ তারিখ দুপুরে সিলেট থেকে বাসে করে রওনা হই ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে,কারন সিলেট থেকে খাগাড়াছড়ি যাওয়ার সরাসরি কোনো বাস পাইনি।
ঢাকা রাতে পৌছে আবার রাত ১১ টার শান্তি পরিবহনের বাসে করে রওনা হই খাগাড়াছড়ির দিঘীনালার পথে।
ভাড়া নেয় ঢাকা টু দিঘীনালা ৫৮০ টাকা।
শান্তি পরিবহন এই পথের একক রাজা তবে চেষ্টা করবেন শান্তি পরিবহনের এসি বাস টা তে করে যাওয়ার জন্য।
নন-এসি গুলো এত হাইক্লাস না।
তবে এত দুরুত্ব যাওয়ার জন্য মোটামোটি বলা যায়।
ভোর ৭ টায় আমরা পৌছে যাই দিঘীনালায়,
সেখান থেকে ১ রাত ২ দিনের জন্য চান্দের গাড়ী ভাড়া করে রওনা হই হাজাছড়া ঝর্না দেখার উদ্দ্যেশ্যে,
১৫ মিনিট গাড়ী করে যেয়ে নেমে যাই,শুরু হয় হাজাছড়া যাওয়ার জন্য হাটা,
১৫ মিনিট উঁচুনিচু পাহাড় আর পাহাড়ী ছড়া পাড় হয়ে হঠাৎ শোনি সেই হাজাছড়ার ঝিরিঝিরি শব্দ,
কিছুক্ষন পরে সামনে এসে হাজির হয় প্রানবন্ত হাজাছড়া ঝর্ণা।
এককথায় অসাধারন।
কিছুক্ষন হাজাছড়ার সৌন্দর্য দেখে আমাদের তাড়াতাড়ি আবার রওনা হতে হয় কারন ১০:৩০ বেজে যাচ্ছিলো,
এই স্কট টা মিস হয়ে গেলে আবার ৩ টার টা ধরতে হতো।
চান্দের গাড়ী তে করে চলে আসি বাঘাইহাট,
ওখানে সকালের নাস্তা সেরে নেই এবং এইখান থেকেই দুপুরের খাবার ও কিনে নেই,যদিও খাবার এতটা ভালো লাগেনাই।
তাই হোটেলের নাম বললাম না।
সাথে করে নিয়ে নেই শোকনা খাবার এবং পর্যাপ্ত পরিমান পানি কারন সাজেকে পানির মূল্য চড়া খুব।
সবকিছু নিয়ে রওনা হই সেই সাজেকের উদ্দ্যেশ্যে।
কিছু জায়গা যাওয়ার পর এন্ট্রি করে নেই সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে,
তারপরেই শুরু হয় মূলত আমাদের সাজেকের যাওয়ার পথ।
সাজেকে যাবেন আর চান্দের গাড়ীর বাইরে অথবা ছাদে বসে যাবোনা,সেটা কি হয়?
হয়না,তাই ভিতর থেকে চলে আসলাম চান্দের গাড়ীর বাইরে,
২ ঘন্টার পথ পুরোটাই দেখলাম বাইরে থেকে,
যারা ভিতরে বসেছিলেন তাদের ভ্রমনটাই মাটি।
সাজেক যাওয়ার রাস্তা টা এতটাই সুন্দর যে আমাদের সব কষ্ট ওই রাস্তাটাই পুষিয়ে দিয়েছিলো,বাকি যা পেতাম সবই হতো আমাদের জন্য বোনাস কিন্তু চিন্তা ও করিনি সাজেক তার আমাদের এত সুন্দর রুপ দেখাবে আর এত এত বোনাস দিবে।
প্রতিটা মুহূর্তে সাজেক আমাদের তার সৌন্দর্য এর বোনাস দিয়েছে।
আকাবাকা,উঁচুনিচু রাস্তা আর পাহাড় দেখতে দেখতে পৌছে যাই সাজেক,
অসম্ভব সুন্দর রুইলুই পাড়া।
২০ টাকা করে এন্ট্রি ফি এবং চান্দের গাড়ীর ১০০ টাকা পার্কিং খরচ দিয়ে ঢুকে পড়ি রুইলুই পাড়াই,
গিয়ে উঠি আগে থেকে বুক করে রাখা সাজেকের অন্যতম বেস্ট রিসোর্ট এবং কটেজ জুমঘরে।
দিপু শিকদার ভাই,যিনি জুমঘর কটেজের মালিক,ভাইয়ের জন্যই মূলত আমাদের জুমঘর কটেজ টা পাওয়া,ভাই নিজে আমাদের জন্য রুম ম্যানেজ করেছেন,
ভাই,আমরা কৃতজ্ঞ আপনার কাছে।
যারা যাবেন তারা পারলে ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করে যাবেন।
জুমঘরের ম্যানেজার অসম্ভব অতিথিপরায়ন।
জুমঘরের বারান্দাটা হচ্ছে তার সবচেয়ে বেস্ট পার্ট।
যেখান থেকে দাড়িয়ে শুধু সাজেক না,ভারতের মিজুরামের বিশাল পাহাড় পর্যন্ত অবলোকন করা যায়,
এ এক হৃদয়ছোয়া দৃশ্য।
ফ্রেশ হয়ে খাওয়াদাওয়া সেরে নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি সূর্যাস্ত দেখার উদ্দ্যেশ্যে,গন্তব্য সাজেকের সবচেয়ে উচু পাহাড় কংলাক পাড়া।
প্রায় ৩০-৪০ মিনিট সাজেকের অনিন্দ সুন্দর চারপাশ দেখতে দেখতে পাহাড় বেয়ে বেয়ে উঠে যাই কংলাক পাড়ার চুড়ায়।
সেখান থেকে সূর্যাস্ত টা যে দেখতে কেমন লাগে সেটা বলে বুঝানো সম্ভব না।
সূর্যি মাম পুরোপুরি ডুবার আগেই রওনা হয়ে যাই আবার রুইলুই পাড়ার উদ্দ্যেশ্যে,
সন্ধ্যা হয়ে গেলে আসাটা কষ্টদায়ক হয়ে যেত।
রুইলুই পাড়ায় পৌছেই চলে যাই রাতের খাবারের অর্ডার করার জন্য।
সাজেকে খাবার দাবারের অর্ডার আগে করতে হয়,নয়তো পরে পাওয়া যায়না।
রাতের খাবারর অর্ডার করি অমেগা রেস্টুরেন্টে,
সেটা রুইলুই পাড়ায় ঢোকার শুরুতেই সাজেক রিসোর্ট এর কাছেই।
রেস্টুরেন্টের মালিক দিদির ব্যবহার যেমন অতিথিপরায়ন ঠিক তেমনি উনার রুচিবোধ ও চমৎকার।
সেটা উনার রেস্টুরেন্টে ঢুকলেই বুঝবেন।
আমার কাছে মনে হয়েছে সাজেকে সুন্দর করে সাজানো,রুচিশীল মাএ ২-৩ টা রেস্টুরেন্ট রয়েছে,
দিদির অমেগা তার মধ্যে একটি।
আর দিদির হাতের রান্না করা জুমভাত,ডিমবাজি,মিষ্টি কুমড়ার একটা অন্যরকম সবজি আর ডাল,
আহ,সেতো অমৃত সমতুল্য।
আসলেই অমৃততুল্য,
মিথ্যে বলছিনা।
রাতের খাবার পর্ব সেরে চলে যাই প্রায় হেলীপ্যাড এর কাছাকাছি,
ওইখানের রাস্তায় ই শোয়ে পড়ে দেখতে থাকি রাতের আকাশের লক্ষ লক্ষ তারা,
মনে শুধু আফসোস ছিলো,জোসনা দেখা হলোনা,
আল্লাহ হয়তো আমাদের সাজেকের জোসনা না দেখিয়ে ফিরতে দিবেন না বলেই হঠাৎ রাত ১০ তার দিকে পূর্ব দিক থেকে আকাশে ভেসে উঠে সেই জোসনা,
আর দেরী নয়,জোসনা উপভোগ করবো জুমঘরের বারান্দা থেকে,তাই সবার ভো দৌড় কটেজে।
গিয়ে সবাই বসে পড়ি কটেজের বারান্দায়,
সামনে বিশাল পাহাড়,খোলা আকাশর সমুদ্র,তার সাথে আকাশের লক্ষ লক্ষ তারার সাথে একটা ইয়া বড় চাদ,
আপনারাই বলেন জীবনটা কে উপভোগ করতে আর কি বেশী কিছু লাগে?
না লাগেনা,
তারপরো মনে হয় সাজেক পণ করেছিলো আমাদের তার সৌন্দর্যের আরও রুপ দেখাবে।
তাই চাদ দেখতে দেখতে ঘুমোতে গেলাম।
খুব টেনশনে ছিলাম ঘুমোনোর সময় কারন একটাই সকালে উঠে নিচের ভেসে থাকা মেঘের সমুদ্রের দেখা পাবো কিনা।
ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম,
ঘুম ভাংলো সকাল ৫:১৫ মিনিটে মোবাইলের এলার্মে,
কাছের দরজা দিয়ে দেখলাম আলো ফুটছে আকাশে।
সবাইকে ঘুমে রেখেই চলে গেলাম একা একা কটেজের বারন্দায়,
বারান্দায় এসে যা দেখেছি তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম আমি।
আমি একা বারান্দায় দাড়িয়ে,
আর আমার সামনে ভাসমান সাদা মেঘের সমুদ্র।
মেঘের কারনে নিচের পাহাড়ের কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না।
এত মেঘ।
স্তব্ধ হয়ে শুধু দাড়িয়ে ছিলাম কিছু সময়,নিজের চোখকেই নিজের বিশ্বাস হচ্ছিলো না।
তাড়াতাড়ি করে সবাইকে ডেকে তুলে,ফ্রেশ হয়ে গেলাম হেলীপ্যাডে,
ভোর আর সূর্যোদয় টা কে আরও ভালোভাবে দেখতে,
হেলীপ্যাডে গিয়ে ও নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না,কারন চারিদিকে সাদা মেঘের ভেলা আর তার মাঝখানে আমরা গুটিকয়েক নগন্য মানুষ পাহাড়ের উপর দাড়িয়ে।
অনেকটা সময় সেখানে কাটিয়ে সূর্যোদয় দেখে আবার চলে আসি আমাদের কটেজের বারান্দায়।
সেখানে এসে মনে হচ্ছিলো মেঘ আমাদের হাতের মুঠোয় ই চলে আসছে।
এতটা কাছে ছিলো নিচের মেঘমালা,
সাদা মেঘের সমুদ্র আর রৌদ্র,
দুইয়ে মিলে আমাদের চোখ ঝলসিয়ে দিচ্ছিলো।
এমন স্বর্গীয় দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে ফিরে আসার সময় হয়ে গিয়েছলো সেটা বুঝতেও পারিনি।
ফিরতে ইচ্ছে করছিলোনা এমন সৌন্দর্য কে ছেড়ে আসতে।
তারপরো তো আসতে হবে তাই ইচ্ছের বিরুদ্ধে ব্যগ গুছিয়ে সেরে নিলাম সকালের নাস্তা।
তারপর আবার উঠে পড়লাম চান্দের গাড়ীতে।
আবারো সাজেকের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে ফিরে এলাম খাগাড়াছড়ি,
খাগাড়াছড়ি থেকে চট্রগ্রাম আর চট্রগ্রাম থেকে সিলেটে নিজের বাসায়।
এ এক মনভোলানো ভ্রমন ছিলো,
পথের ক্লান্তি একটু ও ক্লান্ত করেনি।।
সাজেক তার সৌন্দর্য দিয়ে সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দিয়েছে।
আল্লাহ কত মহান,আমাদের এমন সৌন্দর্য অবলোকন করাচ্ছেন।
আরও দেখতে চাই,আরও ঘুরতে চাই।

#Sajek_Valley ♥
#Happy_Traveling

মেঘের দেশ নাকি মেঘের সমুদ্র!

মেঘের দেশ,মেঘের সমুদ্র কিংবা স্বর্গ যে কোন নামে “সাজেক”কে সম্বোধন করতে পারবেন।সাজেকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে আপনাকে ১ রাত সাজেকে থাকতে হবে।
.
চট্টগ্রাম থেকে সাজেকে কম খরচে কিভাবে যাবেন,কোথায় খাবেন,কোথায় থাকবেন,কোন সময়ে কোন ভিউটা ভালো দেখতে পাবেন সে সব নিয়ে সাজেক ভ্রমনের অভিজ্ঞতা থেকে সবকিছু শেয়ার করছি।আশা করি কাজে দিবে।
.
প্রথম ধাপঃ
চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়া।
চট্টগ্রামের অক্সজিন থেকে “শান্তি পরিবহণ” বাসের টিকেট কাটবেন।যাত্রাপথ অক্সিজেন-খাগড়াছড়ি।টিকেট মূল্য ১৯০ টাকা।অক্সিজেন থেকে বাস ছাড়ে সকাল সাড়ে সাত টা,সাড়ে আট টা,আটটা পন্ঞ্চাশে।
.
অক্সিজেন থেকে খাগড়াছড়ি পৌছতে সময় লাগবে সাড়ে ৩ ঘন্টা।
.
খাগড়াছড়ি বাজারে নেমে সাজেকে যাওয়ার জন্য জীপ ভাড়া করতে হবে।অনেকে খাগড়াছড়ি বাজার থেকে সাজেকের জন্য জীপ ভাড়া না করে দীঘিনালা বাজার থেকে ভাড়া করে।এই ক্ষেত্রে আপনিও করতে পারেন।

খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা যেতে সময় লাগে ১ ঘন্টার মত।চট্টগ্রামের অক্সিজেন-খাগড়াছড়ি সাড়ে ৩ ঘন্টার বাস জার্নিটা তাহলে আরো এক ঘন্টা বেড়ে যাবে।টিকেট মূল্য ১৯০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা হবে।
.
আমি অনুরোধ করবো আপনারা দীঘিনালা না যেয়ে খাগড়াছড়ি বাজার থেকে সাজেকের জীপে চড়েন।
.
চট্টগ্রাম থেকে সকালের বাসে ওঠে সাড়ে সাড়ে ৩ ঘন্টার জার্নি শেষ করে দুপুর ১ টার মধ্যে খাগড়াছড়ি নেমে প্রথম কাজ হবে।সাজেকে যাওয়ার জন্য জীপ ঠিক না করলে জীপ ঠিক করা।মোবাইলের মাধ্যমে আগে ভাগে জীপ ঠিক করলে ড্রাইবারকে খুঁজে নেওয়া।তারপর ড্রাইবার আপনাদের ট্যুর গাইড হিসেবে পরবর্তী সব কাজে সাহায্য করবে।
.
একটা হোটেলে গিয়ে সবাই পেট ভরে দুপুরের খাবার খেয়ে নিবেন।প্রয়োজনে ড্রাইবারকে বলবেন মোটামুটি মানের একটা রেস্টুরেন্ট সাজেস্ট করার জন্য।
.
তারপর একটা বড় কুলিং কর্ণার টাইপের দোকানে গিয়ে প্রয়োজনী জিনিসপত্র কিনে নিবেন।প্রথমে যা কিনবেনঃ
১/খাবার পানি।
কারন সাজেকে পানির দাম অনেক বেশি।
সন্ধ্যায় নাস্তা করবেন,রাতে ভাত খাবেন,সকালে নাস্তা করবেন,দুপুরে আবার ভাত খাবেন।সো হিসেব করে পানি কিনে নিবেন।আমরা ৭ জনের জন্য টোটাল পানি লেগেছিলো প্রায় ১৪ লিটার।

২/সন্ধ্যায় নাস্তা,রাতে ঝালমুড়ি,সকালের ব্রেকফাস্টের জন্য কলা-পাউরুটি,বিস্কুটসহ প্রয়োজনমত নাস্তা কিনে নেন। কারন,সাজেকে সবকিছুর দাম বেশি।

৩/রাতে বারবিকিউ করতে চাইলে মুরগী-অন্যান্য মসল্লাও কিনে নেন।

৪/পেইন কিলার মেডিসিন,ব্যান্ডেজসহ কমন ঔষধ ফার্মেসি থেকে কিনে নেন।তারপর সব জিনিস পত্র জিপে তুলে আপনারা দুইটার মধ্যে যাত্রা শুরু করুন।

জিপ ভাড়াঃ ৭০০০ টাকা।এক জিপে ১২/১৪ জন বসতে পারবেন।আপনারা ৫ জন গেলেও ঐ ৭০০০ হাজার টাকা দিয়ে জীপ ভাড়া করতে হবে।এটা কমন ভাড়া।পরেরদিন আপনাদের সাজেক থেকে আবার খাগড়াছড়ি ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত এই জীপ আপনাদের সাথে থাকবে।জীপওয়ালাকে আপনাদের সাথে খাবার আর নাস্তা করাতে হবে।রাতে শোবার ব্যবস্হা জীপওয়ালা নিজে করে নিবে।আপনারা শুধু দুই টাইম খাবারটা খাওয়াবেন।তারপরও এই ব্যাপারে জীপওয়ালার সাথে কথা বলে নিবেন।

২য় ধাপঃ
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক…!!

খাগড়াছড়ি থেকে দেড় ঘন্টার জার্নির পর একটা আর্মি ক্যাম্প আছে।ওখানে গিয়ে সাজেকগামী সকল গাড়ি বিকাল সাড়ে ৩ টার মধ্যে পৌঁছাতো হবে।সব গাড়ি এক সাথে করে আর্মির গাড়ি সামনে থেকে সাজেকের উদ্দ্যেশ্যে চলতে থাকবে।

আর্মি ক্যাম্পের ওখান থেকে দুই শিফটে গাড়ি ছাড়ে।সকাল সাড়ে দশটা এবং বিকেল সাড়ে ৩ টা।
চট্টগ্রাম শহর থেকে যেহেতু সকাল সাড়ে ১০ টার শিফটে যাওয়া পসিবল না সেহেতু সাড়ে ৩ টার মধ্যে আর্মি ক্যাম্পে পৌঁছাতে হবে।

পৌঁছানোর সকল চিন্তা ড্রাইবার করবে।জাস্ট ধারনা দেওয়ার জন্য বললাম।আপনারা শুধু দুপুর ১ টায় গাড়ি ঠিক করে ড্রাইবারকে বলেন,
-মামা,সাজেক যামু।
-আপনি যা করার করেন 🙂
.
সাজেকে যাওয়ার রাস্তা অনেক রিস্কি।কিছু কিছু জায়গায় মনে হবে রাস্তাটা নিচ থেকে উপরে উঠতে উঠতে আকাশের সাথে মিলে যাবে।৭০/৮০ ডিগ্রি এঙেলে বাঁকানো।মনে হবে জিপের ছাদে বসে দৃশ্যটা উপভোগ করি কিন্তু রিস্ক অনেক।তবে রাস্তার দু’পাশে পাহাড়,মেঘ,বাঁকানো রাস্তা দেখে অবাক হবে আর ভাববেন,
-একটা রাস্তা এত সুন্দর ক্যামনে হতে পারে।
.
সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে সাজেক পৌঁছাবেন।সাজেক প্রবেশের মূল গেইটে প্রতি সাতজনের জন্য ২৪০ টাকা দিয়ে একটা টোকেন কাটতে হবে।পরের দিন সাজেক থেকে বের হওয়ার সময় এই টোকেন দেখাতে হবে।তাই টোকেনটা যত্ন করে রাখবেন।এই দায়িত্বটা ড্রাইবারকে দেন।

৩য় ধাপঃ
কর্টেজ ভাড়া…!!

সাজেকে অনেক কর্টেজ রয়েছে।দেখেশুনে ভাড়া করতে পারবেন।এই বিষয়ে ড্রাইবার আপনাদের সাহায্যে করবেন।আপনারা কত বাজেটে কেমন কর্টেজ ভাড়া করতে চান তা ড্রাইবারকে বলুন।সবাই গাড়িতে থেকে ড্রাইবারের সাথে ২/৩ জন গিয়ে কর্টেজ ভাড়া করে আসুন।

আমরা যে কর্টেজে ছিলাম সেটা সম্পর্কে ধারনা দিচ্ছি।
রুম ভাড়া ২৫০০ টাকা।একটা ডাবল বেডে ৩ জন এবং সিংগেল বেডে ২ জন ইজিলি থাকতে পারবেন।নিচে ফ্লোরিং করে আরো ২ জন কিংবা ডাবল বেডে ৩ জনের জায়গায় আরেকজনকে নিতে পারেন।টোটাল ৮ জন থাকতে পারবেন।একটামাত্র রাত।পাঁচ জনের জায়গায় ৮ জন থাকলে রুমের খরচটা একটু আপনাদের জন্য কমবে।এটাচ বাথরুম থাকবে।
.
কিছু কর্টেজের মোবাইল নম্বর দিয়ে দিবো।আপনারা চাইলে যাওয়ার আগেরর দিন একই খরচে কর্টেজ ভাড়া করে নিতে পারেন।
.
ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সবাই নাস্তা করে নিবেন।তারপর দু’জন গিয়ে রাতের খাবার অর্ডার করে আসতে হবে।আর না হলে রাতে খেতে পারবেন না।আপনি অর্ডার করলে রেস্টুরেন্টে আপনার জন্য খাবার তৈরি করা হবে।

সাজেকে খাবারের দাম অনেক বেশি।
আমরা ১০০ টাকা দিয়ে খেয়েছিলাম।আইটেম ছিলো-ভাত,ডাল(আনলিমিটেড) অল্প করে আলুভর্তা এবং একটা ডিম।

ডিমের বদলে মুরগীর মাংস খেতে চাইলে ১৫০/১৭৫ টাকা খরচ আসবে।
.
কর্টেজে ফ্রেশ হয়ে কলা-পাউরুটি দিয়ে নাস্তা করে দল বেঁধে হ্যালিপ্যাডের দিকে রওনা হোন।হ্যারিপ্যাডের উপরে বসে আড্ডা দিয়ে।চিল করে রাত সাড়ে নয়টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিবেন।বারবিকিউ করতে চাইলে যে কর্টেজে উঠেছেন সেই কর্টেজের ম্যানেজারের সাথে কথা বলেন।উনি সব ঠিক করে দিবেন।

রাত ১২ টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েন।ভোর সাড়ে চারটায় উঠতে হবে।মনে রাখবেন সাজেকের আসল সৌন্দর্য হচ্ছে ভোরের মেঘ দেখা,মেঘ ছুঁয়া,মেঘ মেখে গোসল করা,হ্যালিপ্যাড থেকে সূর্যদয় দেখা।

ভোর পাঁচটার মধ্যে সাজেকের সব মানুষ হ্যালিপ্যাডের উপরে চলে যায় মেঘের সমুদ্র আর সূর্যদয় দেখার জন্য।

কিছুক্ষণ হ্যালিপ্যাডে থেকে কংলাক পাহাড়ের দিকে হাটা শুরু করেন।প্রায় ঘন্টাখানেক উপরের দিকে ওঠার পর আপনি কংলাক পাহাড় পৌছাবেন।পাহাড়ে ওঠার সময় কি দেখবেন কিংবা কংলাকের চূড়ায় গিয়ে কি দৃশ্য দেখবেন তা আপনাদের জন্য সারপ্রাইজ হিসেবে থাকুক।

তারপর দশটার রুমে মধ্যে ফিরে এসে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নিন।দুপুরের খাবারের অর্ডার করে আসুন।তারপর সাজেকের আনাচে কানাচে গিয়ে ছবি তোলা শুরু করুন।

দুপুর ২ টার মধ্যে দুপুরের খাবার খেয়ে নিয়ে রুমে গিয়ে ব্যাগ গোছান।৩ টার মধ্যে জীপে উঠে সাড়ে ৩ টার মধ্যে সাজেক মেইন গেইটে পৌঁছাতে হবে।সেখান থেকে সাড়ে ৩ টায় আর্মির গাড়ি সামনে থেকে নিরাপত্তা দিয়ে সকল গাড়ি সাজেক থেকে বের হবে।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার মধ্যে খাগড়াছড়ি শহরে জীপ পৌঁছাবে।কাউন্টারে গিয়ে গিয়ে ১৯০ টাকা দিয়ে চট্টগ্রামে টিকেট(অক্সজেন পর্যন্ত) কাটেন।সাড়ে সাতটা,সাড়ে আটটা এই দুই টাইমে শান্তি পরিবহনেরর বাস ছাড়ে।সবাই মিলে একটা রেস্টুরেন্ট গিয়ে নাস্তা করে রিলেক্স হয়ে বাসে ওঠে পড়েন।
.
জীপ ড্রাইবারের মোবাইল নম্বরঃJoynal Driver-01865432800
.
গ্র্যান্ড সাজেক কর্টেজ মোবাইল নম্বরঃGrand Sajek-01626414582

Post copied From:শাহরিয়ার হেলাল‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

পাহাড় আর মেঘের মিতালী( সাজেক)

ভ্রমন পিপাসুদের নতুন স্বপ্নের ভুবন হলো সাজেক। এখানে একবার আসলে মানুষের মন একবারে সন্তুষ্ট হয়েছে খুব কম ই দেখেছি।আমি নিজেও গিয়েছি কয়েকবার।সাজেকের প্রতিটি পূর্ণিমাই ছিল উপভোগ্য।আসলে, জায়গা টাই এমন। পাগল মন তাই বারেবার যেতে চায় সজেকে।
সারা বছরই যাওয়া যায় সাজেকে।তবে বর্ষায় সাজেকের রূপ যেন বেড়ে যায় কয়েকগুন। বৃষ্টিতে কটেজ থেকে বের হওয়া না গেলেও বারান্দা থেকেই উপভোগ করা যায় মেঘ আর পাহাড়ের মেলবন্ধন। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে টিনের চালের নূপুরের শব্দ আর পাহাড়ে মেঘের বর্ষণ আপনাকে নিয়ে যাবে স্বপ্নের নতুন দিগন্তে।
সাজেকের উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা , দক্ষিনে রাঙামাটির লংগদু , পূর্বে ভারতের মিজোরাম , পশ্চিমে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা। সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও এর যাতায়াত সুবিধা খাগড়াছড়ি থেকে। রাংগামাটি থেকেও যাওয়া যায়।
কি কি দেখার আছে সাজেক এবং এর যাওয়ার পথেঃ
১: আলুটিলা
২: রিসাং ঝর্না
৩: খাগড়াছড়ি শহর এবং ঝুলন্ত ব্রীজ
৪: হাজাঝড়া ঝর্না
৫: অজস্র পাহাড়
৬: রুইলুই পাড়া
৭: কংলাক পাড়া(সাজেকের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ)
৮: হেলিপ্যাড
৯: গীর্জা
ঢাকা থেকে রাতের ১০ টার খাগড়াছড়ির বাসে উঠে যাবেন। নামবেন খাগড়াছড়ির ইজোর রেস্টুরেন্টের সামনে।এখানে ফ্রেশ হয়ে ৬০ টাকার মধ্যে পরোটা,ডিম ভাজি,সবজি দিয়ে নাস্তা সেরে চলে যাবেন শাপলা চত্বরে। গত ৫ নভেম্বর থেকে সবাইকে এখান থেকেই পিকাপ নিতে হচ্ছে। ভাড়াও বেড়েছে আগের চেয়ে।এক রাতের জন্যে খাগড়াছড়ি থেকে খাগড়াছড়ি সাথে আলুটিলা গুহা ও রিসাং ঝর্না সব মিলিয়ে দশ হাজার টাকা নিবে( আগে আট হাজারে পাওয়া যেত)। ঠিক করা চান্দের গাড়ি নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব চলে যান রিসাং ঝর্ননায়।গাড়ি আপনাকে যেখানে নিমিয়ে দেবে সেখান থেকে ঝর্নায় নেমে যাবেন আপনশক্তিতে। নেমে ভালো সময় কাটিয়ে চলে আসবেন ৯ টার মধ্যে এবং চলে যাবেন বাঘাইহাটের দিকে। আর যদি সময় বেশি খেয়ে ফেলেন তবে টান দিয়ে চলে যাবেন স্কর্ট এর দিকে।ওখানে, নাম লিখাবেন, তথ্য দিবেন, এবং অবশ্যই একটা রবি নাম্বার দিবেন।মাঝে মাঝে চেক করে।এরপর থেকেই সাজেকের পথে যেতে যেতে উপভোগ করবেন দুই পাশের পাহাড়ের সৌন্দর্য। সাজেক পৌছাবেন ঠিক ১২.৩০-১ টায়।ছাদে বসবেন সমস্যা নাই, কিন্তু অবশ্যই শক্ত করে ধরে বসবেন এবং বাচ্চা মানুষ উঠাবেন না।সাজেকে পৌছেই বুকিং করা হোটেলে উঠে যাবেন। ফ্রেস হয়ে খাবারের জন্যে চলে যাবেন চিমবাল্ রেস্টুরেন্টে। ১৫০-১৮০ টাকার মধ্যে খুব ভালো খাবার পাবেন এবং খাবারের স্বাদও অন্যান্য জায়গা থেকে ভালো।দুপুরের খাওয়া খেয়ে হালকা রেস্ট নিয়ে। বিকালে হেলিপ্যাড, রুন্ময়, গীর্জা, সেনাবাহিনীর বানানো বিভিন্ন দোলনা, ব্রীজ নিজের মতো করেই ঘুরবেন।বিকালের শেষ দিকে হেলিপ্যাডে যাবেন অবশ্যই। সূর্যাস্তও দেখতে পারেন হেলিপ্যাড থেকেই।সন্ধ্যার পর ও সাজেকে দিব্বি হাটা চলা করা যায়। রাত ১২ টার আগ পর্যন্ত হেলিপ্যাডে যাওয়া যায়। মাঝে মাঝে সেনাবাহিনীর টহলরত জোয়ান মানা করতে পারে।যাই হোক, প্রথমদিন রুইলুই পাড়া ঘুরবেন। এবং যথারীতি রাতে খাওয়ার ওর্ডার দিয়ে দিবেন। চাইলে রাতে বার-বি-কিউ খেতে পারেন এবং বেম্বো চিকেন ও।এইভাবে প্রথম রাত কাটিয়ে দিবেন কটেজ চাইলে রাতেও বের হতে পারেন প্রিয় মানুষকে নিয়ে যদি মন চায়।
সকালে ভোরে উঠে চলে যেতে পারেন সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়া কংলাক পাড়ায়। ওখানে উঠতে একটু ১০-১৫ মিনিট ট্র‍্যাকিং করতে পারেন। ওখান থেকে সাজেক দেখা সকাল চমৎকার সুন্দর। বিশেষ করে যে কারনে সাজেক যাওয়া সেই মেঘ ই দেখা যায় এখান থেকে সবচেয়ে বেশি এরিয়া জুড়ে।ওখানে চা খাইতে পারেন, পেয়ারা পাবেন, কলা পাবেন।ও হ্যা, চান্দের গাড়িতে আসার সময় বাঘাইছড়ি থেকে এক দুই কাদি কলা কিনে নিবেন। এত্ত মজার কলা কোথাও পাইবেন না গ্যারান্টি।সকাল টা ওখানে কাটিয়ে নেমে আসবেন রুইলুই। যাওয়ার আগে অথবা আগের রাতে ওর্ডার করে যাইবেন নাস্তা। এসেই খেয়ে নিবেন নাস্তা।নাস্তা খেয়ে আবার রুইলুই দেখবেন। যদি ঝুলন্ত ব্রীজ,আলুটিলা গুহা দেখতে চান তবে সকালের স্কর্ট এ চলে আসবেন।
আর যদি হাজাঝড়া দেখতে চান শুধু তাহলে বিকালের স্কর্টে রওনা দিয়ে দিবেন।বাঘাইছড়ি বা স্কর্ট যেখানে আছে তার থেকে সামান্য একটু হাটলেই পেয়ে যাবেন হাজাঝড়া ঝর্না।ঝর্না দেখে চলে আসবেন শহরে।
এসে চাইলে ঝুলন্ত ব্রীজ দেখবেন যদি আগে চলে আসেন আর না হয় এসে বাসের টিকেট করে বাসে উঠার আগে ভাত খেয়ে রওনা দিয়ে দিবেন।ঢাকায় এসে পৌছাবেন সকাল ৫-৬ টায়।বন্ধের দিন, উৎসবের দিন সকল টিকেট বুকিং আগে ভাগে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। নাও পেতে পারেন।
খরচের হিসাবঃ
১২ জন এর গ্রুপ করে যাওয়ার হিসাব মাথায় রেখে প্রতিজনের হিসাবঃ
ঢাকা-খাগড়াছড়ি-ঢাকা: ১০৪০ টাকা
চান্দের গাড়ি: ৮৫০ টাকা
খাওয়া : ২ দিনের ৬ বেলায় ৭০০-৮০০ টাকা

কটেজ ভাড়া: ৪০০ -৫০০ টাকা (ডিসেম্বর মাসে কটেজ ভাড়া বেশি পরবে। তাই আগে থেকেই রুম বুকিং দিয়ে যাবেন। রুম বুকিং এর জন্যে যোগাযোগ করতে পারেন hotelswave.com এর সাথে,০১৮৪০৪৭৭৭০৭)

সকল এন্ট্রি ফি: ১০০ টাকা
অন্যান্য খরচ: ৩০০ টাকা
টোটাল: ৩৩৯০-৩৫৯০ টাকা
খরচ টা আপেক্ষিক বাড়তেও পারে, কমতেও পারে।

Post Copied From:Akil Ahmed‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

গন্তব্য-সাজেক ভ্যালি

27 November 2017
#Day_1
গন্তব্য-সাজেক ভ্যালি✌✌✌
বাসে করে রাজশাহী-ঢাকা-খাগড়াছড়ি
#Day_2
খাগড়াছড়ি থেকে সিএনজি করে দীঘিনালা,সেখান থেকে আগেই ঠিক করা চাঁদের গাড়ি করে সরাসরি সাজেক ভ্যালি।।।
সাজেক এর যাওয়ার পথে অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করে আদিবাসী শিশুগুলো ছিলো অনেক সৌহার্দপূর্ণ, সকলেই হাত নেড়ে স্বাগতম জানায়।।।সাজেকের পথ ছিলো অনেক আঁকাবাঁকা এবং উঁচুনিচু কিন্তু অভিজ্ঞতা ছিলো অসাধারণ।।।শেষমেশ সাজেক এর মনোরম পরিবেশ এবং পাহাড় দেখে মন জুড়িয়ে যায়।।।কটেজ গুলো সুন্দর ভাবে দারিয়ে রয়েছে দুপাশে।।।তারপর সারাদিন সাজেক এর পাহাড় দেখে সন্ধার কিছু আগে গেলাম সাজেক এর চূড়ায়, ওখানে সূর্য মামাকে বিদায় দিয়ে রাতের সাজেকে ঘুরাঘুরি।।।
#Day_3
সূর্য উঠার আগেই চলে গেলাম হ্যালিপ্যাড এ সেখান থেকেই বুঝলাম সাজেককে কেন মেঘে সর্গ বলা হয়।।।প্রকৃতি যেন তার সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে এখানে।।।সাজেক এর দুই পাশে দুই রকম সৌর্দয্য যা আর বেশি আকর্ষণীয়।।।তারপর দুপুর পযন্ত সাজেক এর অপরূপ সাজ দেখে পরবর্তী গন্তব্যের দিকে রওনা দিয়।।।
এক কথায় সাজেক এ কাটানো সময় গুলো ছিলো স্বপ্নের মত😊
আমার দেখা সাজেকের একাংশ👇

Post Copied From:Ali Akbor Sumon‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

শীতে সাজেক ট্যুর এ করনীয়

সাজেক টু্র প্লান সুনতে সুনতে আপনাদের কান ঝালাপালা হয়ে গেছে তাই টুর প্লান নিয়ে কিছু লিখলাম না।
কি কি করবেন তাই লিখলাম,,,,,
১.সাজেক শীত অনেক বেশি না অাবার কমও না। তাই অতিরিক্ত শীতের কাপড় নিবার দরকার নাই।কান টুপি নিবেন।
২.সৌদিয়া,শ্যামলী সাজেকের ভাল বাস।
৩.কটেজ বুকিং দিলে ভাল হয় কিন্তু না দিয়ে গেলেও থাকার যায়গার সমস্যা হবে না।কটেজ দামাদামি করে নিবেন যেমন:2 হাজার বললে ১২/১৪ শ।
৪. খাগড়াছড়ি নেমে বাসের ফিরতি টিকিট কেটে নিবেন, বিশেষ করে ছুটির দিন গেলে।
৫.অার্মি ক্যান্টিন অাছে, খাবারের মান ভালো। বিশেষ করে যারা অমুসলিমদের রান্না খেতে চান না।তবে পাহাড়িদের হাতের রান্না অসাধারন।
৬.ব্যম্বো চিকেন,স্যসমামুং পিঠা(জেলা পরিষদ পার্ক),সিসটেম হোটেল(খাগড়াছড়ি শহর),তেতুল চা এগুলো যেন মিস না হয়।
৭.সাহস করে গাড়ির ছাদে না উটলে মজা কম পাবেন তবে অনেক সাবধান,,,বিশেষ করে গাছের ডাল থেকে।
৮.সব মিস হলেও অালুটিলা গুহা যেন মিস না হয়,গুহায় খালি পায়ে যাবেন অার হাতের মশালের অাগুন যখন নিভে যেতে লাগবে তখন মশালটা সামনের দিকে নিবেন,,,,
৯.চাদের গাড়ি অবশ্যই সাদা গুলো(পিকাপ) নিবেন,সবুজ গুলো নিলে ঝামেলায় পড়তে পারেন।
১০.চাদের গাড়ি ফিক্স হলেও কিছুটা কমানো যায়।
সবার যাত্রা শুভ হোক

Post Copied From:Shovon Hossain‎>Travelers of Bangladesh (ToB)