শর্ট ট্যুরের লিস্টে চাঁদপুর শহর

খুব ট্যুর দিতে ইচ্ছে করছে? হাতে টাকা পয়সাও কম? সময়ও কম? তাহলে আপনার শর্ট ট্যুরের লিস্টে চাঁদপুর শহর মোটামুটি একটা যায়গা করে নিতে পারে। এক দিনের ট্যুর হিসেবে যায়গাটা খারাপ না।

কিভাবে যাবেনঃ

সকাল সকাল চলে যান সদরঘাট। গিয়ে সরাসরি চাঁদপুরের একটা লঞ্চে উঠে পড়ুন।প্রথম লঞ্চ ছাড়ে সকাল ৬:০০ এ। এর কিছুক্ষণ পর পরই একটা করে লঞ্চ ছাড়ে। লঞ্চ ভাড়া ১০০-৮০০ টাকার মধ্যে কোয়ালিটির উপর ডিপেন্ড করে। ১০০ টাকা দিয়ে ডেকের টিকিট কেটে নিলে টাকাও বাঁচবে আর রেলিং এর ধারে ভর দিয়ে দুই পাশের অসাধারণ দৃশ্যটাও উপভোগ করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে বসার যায়গার অভাবে চাঁদপুর পৌছাতে পৌছাতে আপনার পা দুখানি সুস্থ নাও থাকতে পারে। তাই ১৫০ টাকা দিয়ে চেয়ার কোচে চলে যাবেন। অন্তত একটা বিশ্রাম নেওয়ার যায়গা পাবেন।

পথে খাবারের জন্য সবচেয়ে ভালো হয় বাসা থেকে খেয়ে বেরোলে। আর যদি পুরোটাই বাইরে খাওয়ার ইচ্ছে থাকে তাহলে হোটেলে খাবার সেরে নিতে পারেন। লঞ্চের ক্যান্টিনের খাবার এড়িয়ে যাওয়া উত্তম কারণ অতিরিক্ত দাম রাখে তারা। চাইল বাহির থেকে খাবার নিয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখতে দেখতেও খেতে পারেন। লঞ্চ জার্নি তো, যা খাবেন তাই ভালো লাগবে।

চাঁদপুর পৌছানোর পরঃ

পৌছাতে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা লাগবে। লঞ্চ থেকে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে পড়ুন। ঘাট থেকে শিডিউলটা জেনে তারপর বের হবেন। বের হয়ে একটা অটো নিয়ে চলে যান বড় স্টেশনে। অটো ভাড়া ১০ টাকা। নামিয়ে দেবে পর্যটন কেন্দ্রের সামনে। যায়গাটা এখনো নির্মানাধীন। তবে শেষ হয়ে গেলে মোটামুটি সুন্দর একটা যায়গা হবে। ওখানে চটপটি, ফুসকা, মুড়ি পাবেন হালকা নাস্তার জন্য। অন্যগুলোর কথা জানি না, মুড়িটা মারাত্মক লেগেছে। হয়তো পেটে ক্ষিদে ছিল তাই। বসে আড্ডা দেওয়ার মত ভালো একটা যায়গা জেলা পর্যটন কেন্দ্র। অনায়াসে এক দেড় ঘন্টা কাটিয়ে উঠা যায়।

এবার আপনার পেট চোঁ চোঁ করবে। ভাববেন অনেক তো হালকা নাস্তা করা হলো, এবার একটু পেটপুজো হোক পুরোদমে। স্বাভাবিকভাবেই ভাতের হোটেলে যাবেন। গিয়ে ভাত আর মাছ পাবেন। ইলিশ মাছ ভাজা আর নদীর ছোট মাছের তরকারি। আলুভর্তা আর ডাল দিয়ে খাবেন। অনেক ভালো লাগবে। এক পিস মাছের দাম পড়বে ৬০-৮০ টাকা। জনপ্রতি ২০০-২৫০ এর মধ্যে বেশ ভালো খেতে পারবেন।

এ কাজটি তখনই করতে পারেন যখন আপনারা সর্বোচ্চ দুইজন থাকবেন। এর বেশি যদি হয় তাহলে আরেক কাজ করতে পারেন। পর্যটন কেন্দ্র থেকে বের হয়ে রেল স্টেশনের দিকে হাঁটা দিন। ৩-৪ মিনিট হাঁটলেই পৌছে যাবেন। রেল ফ্যান হলে কিছুক্ষন ট্রেন দেখতে পারেন। কিন্তু আপনার টার্গেট হলো স্টেশনের উলটো পাশে মাছের আড়ত। যাবেন, আর দেখবেন ইলিশের বাহার। দামও ঢাকার তুলনায় কম। সঙ্গে মানুষের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ইলিশ মাছ কিনে ফেলুন। আমরা ছিলাম চারজন। মাঝারি সাইজের একটা ইলিশ নিয়েছিলাম ৪০০/- দিয়ে। মৌসুমে আরও কমে পাবেন। মাছ নিয়ে বেরিয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক দেখায়। তা না করে চলে যান আরেকটু ভেতরে। দেখবেন কতগুলো ভাতের হোটেল। পছন্দ মত একটায় ঢুকে যান। গিয়ে মাছটা ধরিয়ে দিয়ে বলুন ভেজে দিতে। মাছের সাইজের উপর ডিপেন্ড করে ৮০-১৫০ টাকা পর্যন্ত মাছ প্রতি নিতে পারে। আধা ঘন্টার মধ্যে আপনাকে মাছ রেডি করে সামনে দেবে। ধোয়া ওঠা গরম ভাত, আলুভর্তা আর ডাল দিয়ে যখন কবজি ডুবিয়ে খেতে থাকবেন, মনে হবে সত্যি, বাঙালী হওয়া স্বার্থক। সাথে যদি একটা পাবদা মাছের তরকারী থাকে তাহলে তো কথাই নেই। আমরা গিয়েছিলাম মনু মিয়ার হোটেলে। মাছ ভাজা সহ আমাদের বিল এসেছে মোট ৪০০/-।

মেইন কোর্স তো হলো। এবার ডেজার্ট। আরেকটা অটো নিয়ে চলে যান কালীবাড়ি। ভাড়া ৫/-। খুঁজুন বিখ্যাত “ওয়ান মিনিট” মিষ্টির দোকান। গিয়ে বলুন একটা আইসক্রিম দিতে। ৪০/- রাখবে। এটার এভালুয়েশন আপনাদের উপরই ছেড়ে দিলাম। সব কিছু বলে দিতে নেই।

হাতে সময় থাকলে চাইলে বড় স্টেশনে এসে আড্ডা দিতে পারেন নাহলে লঞ্চ ঘাটে গিয়ে ঢাকায় ব্যাক করার ধান্দা করতে পারেন।

এভাবে মোটামুটি গোছের একটা শর্ট ট্যুর দিয়ে আসতে পারেন। আমাদের এক এক জনের ৭০০/- এর মত খরচ হয়েছে।

যাওয়া আসার জন্য এম ভি সোনার তরী, রফরফ, আল বোরাক, ময়ূর ব্যবহার করতে পারেন। সবগুলোর ভাড়া মোটামুটি একরকমই।

এডিটঃ এক বড় ভাই এই তথ্যগুলো যোগ করলেন।

বর্তমানে সকাল ৬ টা থেকেই লঞ্চ আছে আর পরবর্তী লঞ্চ ৭.২০ এ সোনারতরী ।
এরপর ৮.০০, ৮.৩৫, ৯.১৫, ৯.৫০, ১০.৫০, ১১.৪৫ থেকে রাত ১২.৩০
নির্ধারিত সময়েই ছাড়ে।

যারা সকালে গিয়ে বিকালে ফিরতে চান ববিকালে ৩.৪০, ৫.০০, বা সন্ধ্যা ৬.০০ ও ৭.০০ এর লঞ্চে ফিরতে পারেন।

ডেক ভাড়া -১০০,
চেয়ার নন এসি -১৫০

কেবিন ননএসি সিঙ্গেল ৪০০-৫০০
ডাবল -৮০০

Post Copied From:Nushaer Abrar>Travelers of Bangladesh (ToB)

নদী পথে কক্সবাজার

বিছনাকান্দি, রাতারগুল, নাফাকুম আর ইন্ডিয়ার পোষ্ট দেখতে দেখতে বিরক্ত। চলুন নতুন কিছু করা যাক, নতুন বলতে একদম নতুন বা ভিন্ন কিছু যা এর আগে হয়ত হয়নি। চলুন নদী পথে ঘুরে আসি কক্সবাজার থেকে, সাথে দেখে নেব বেশ কয়েকটা দ্বীপ।

যেভাবে যাবেন- শুরুটা হবে সদরঘাট থেকে৤ প্রতিদিন এখান থেকে হাতিয়ার দিকে লন্চ ছাড়ে বিকেল ৫ টায়, পৈাছে যায় সকাল ৭ টার মধ্যে। ওইদিনই জাহাজ ধরতে পারেন। হাতে সময় নিয়ে গেলে অবশ্যই ওই দিনটা হাতিয়া দেখে নিন। চলে যেতে পারেন পাশের নিঝুমদ্বীপ। হাতিয়া দ্বীপ থেকে জাহাজ ছাড়ে খুব সম্ভবত সকাল ১০ টায়, উঠে পরূন, এটা অাপনাকে সমুদ্রের মাঝখান দিয়ে সোজা চট্রগ্রাম পৈাছে দেবে বিকেলের অাগেই, রাতটা কাটাতে হবে চট্রগ্রাম৤ পরদিন খুব সকালে ৭টায় একটি ট্রলার ছাড়ে কুতুবদিয়ার উদ্দেশ্যে, চট্র্রগ্রাম সদরঘাট থেকে। উঠে পরুন একমাত্র ট্রালারটিতে। ট্রলার চলতে শুরু করার ৩০ মিনিটের মধ্যে অপিনি চলতে শুরু করেবন সমুদ্র দিয়ে, এভাবে যেতে থাকুন দুপুর ২ টা পর্যন্ত। হাতে অনেক সময়, ইচ্ছে করলে কল্পনা করেত পারেন অাপনাকে পাচার করা হচ্ছে মালয়শিয়া বা মায়ানমার কারন এভাবেই কিছুদিন অাগে এই রুট ধরে মানুষ পাচার করা হত। যাই হোক দুপুর ১ টা নাগাদ আস্তে অাস্তে চোখের সমনে ভেষে উঠবে কুতুবদিয়া। নেমে পরুন অসাধারন সুন্দর এই দ্বীপটিতে। মোটামুটি মানের একটি অাবাসিক হোটেল অাছে। দুপুরে খেয়ে রেষ্ট করে চলে যেতে পারেন দেশের একমাত্র বায়ুবিদুৎ কেন্দ্রে (যদিও নষ্ট ) এখন ঠিক হয়েছে কিনা জানিনা। তারপর হাটতে থাকুন বাংলাদেশের দ্বীতিয় বৃহৎ সমুদ্র সৈকত ধরে, মন ভেরে নিশ্বাস নিন উপভোগ করুন অাশে পাশের নিস্তব্ধতা অার সহজ সরল লোকজনের জীবনযাত্রা। রাতটা থাকেতে হবে কুতুবদিয়াতেই, চাইলে দেখে নিতে পারেন এখানকার লাইট হাসউ। সবচেয়ে ভালো হয় কাউকে জিগেস করে নিন এই অসাধারন সুন্দর দ্বীপটিতে অার কি কি অাছে দেখার মত। পরদিন সকাল ৯ টায় অাবারও ট্রলার ধরতে হবে। এবার যাত্রা মহেশখালী, যেতে পথে চখে পরবে মাছধরা, লবন চাষ, লোকাল মানুষ জন, মন ভরে দেখে নিন যা পাবেন তার সবটুকু। দুপুর ২ টার মদ্ধে ট্রলার চলে অাসবে মহেসখালি দ্বীপ্। নেমে গিয়ে চষে বেরান মহেষখালি অার সোনদীয়া দ্বীপ। ভ্রমন ক্লান্তি পেয়ে বসলে ট্রলার থেকে না নেমে সরাসরি চলে যান কক্সবাজার। অার এভাবেই মাত্র ২৫০০-৩০০০ টাকায় অপানি শেষ করে ফেলেত পারেন নদী বা সমুদ্র পথে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের অদ্ভুত সুন্দর একটি যাত্রা।

সতকর্তা- ভ্রমনটি একটু সময় সাপেক্ষ অার যেহেতু পুরোটাই বিশাল বিশাল নদী আর সমুদ্র পথ তাই এতটু রিস্কিও। প্রচন্ড ধৌর্য অার সাহস দরকার। এই দুটো জিনিস সাথে থাকলে বেরিয়ে পরতে পারেন, এটা হতে পারে জীবনের ষ্রেষ্ঠতম একটি অভিজ্ঞতা। অামি সাথে কাউকে পাইনি তাই একাই করেছিলাম ট্রিপটি, জানিনা বাংলাদেশে এটা প্রথম হল কিনা তবে অামার কাছে খুবই সহজ মনে হয়েছে৤:)

post Copied From:Nasir Ahmed Saurav‎>Travelers of Bangladesh (ToB)