অদেখা পৃথিবী দার্জিলিং ভারত

কি বলব আর দার্জিলিং সম্পর্কে!!!!!বলার ও লেখার যোগ্যতা নেই দেখা ছাড়া।।।।। 

#যাওয়া_আসা:
ঢাকা(৮ঘন্টা ৫০০ কি.মি ৫০০ টাকা ) – বেনাপোল ইমিগ্রেশন- বনগা রেলস্টেশন(২৫ মিনিট ৫ কি.মি ২০ রুপি) – শিয়ালদাহ স্টেশন (২ ঘন্টা ১০০ কি,মি ৫০ রুপি) -হাওরা বাস/ট্যাক্সি ২০ রুপি – শিলিগুড়ি (১২ ঘ ন্টা ৫০০ কি,মি,১৭০ রুপি) – দার্জিলিং (চাঁদের গাড়ি ৭০ কি মি পাহাড়ি রাস্তা ১৫০ রুপি -আসা-শিলিগুড়ি-বুড়িমারি১০০ কি.মি ২ ঘন্টা-চ্যাংরাবান্দা বর্ডার ক্রস – ৫৫০ কি.মি ১২ ঘণ্টা ৬০০ টাকা ঢাকা…..
#খাওয়া_দাওয়া:
ইসলামিয়া হোটেল মুসলিম হোটেল।খাবার মান অত্যন্ত ভাল।দামও কম।ভাত, কাবাব সব পাওয়া যায়।
আর মম তো খেতেই হবে।।।
#ঘুরাঘুরি:
ট্রেন আছে এটা সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে উচু জায়গায় অবস্থিত।।।গাড়ি রিজার্ভ করে যেতে হয়।।।অথবা দলের সাথে যাওয়া যায়।।।সাইদ ভাই নামে ১ জন আছে খুব ভাল নিজের গাড়ি আছে।১০/১২ টা স্থান আছে দেখার।
#নামাজ :
মুসলিম এলাকা আছে।। সুন্দর ৩টি মসজিদ আছে পাহাড়ের কোল ঘেষে।নাম বড় ও ছোট মসজিদ।আযান শোনা ও নামায আদায় করা যায়।।।
#হোটেল:
Hill charm Hotel..মসজিদের পাশেই
মালিক থেকে শুরু করে কর্মচারী সব মুসলিম ব্যবহার ও পরিবেশ অত্যন্ত ভাল…..

আর,
অসংখ্য ধন্যবাদ বিন্দাসের Redwan Khan ভাই কে যিনি হোটেল থেকে শুরু করে,জীপ গাড়ি, চ্যাংরাবান্দা বর্ডার ক্রস করার ক্ষেত্রে তথ্য দিয়ে আপন ভাই এর মত সাহায্য করে গেছেন।

Post Copied From:Shariful Islam Robin‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

চাঁদের পাহাড়- পাইন বন- পাহাড়ি শহর আর এক কাপ দার্জিলিং চা

ঈদ এর ছুটিতে শ্যামলী’র টিকেট(১৫০০ টাকা শিলিগুড়ি পর্যন্ত) না পেয়ে ৫ জন মিলে মানিক পরিবহন এ রওনা দিলাম (এসি ৯০০ টাকা বুড়িমারী পর্যন্ত)| গন্তব্য লাভা, রিশপ, কালিম্পঙ| রাত ৯টায় গাড়ি ছেড়ে ভোর ৬টায় বুড়িমারী পৌঁছে বাস কাউন্টার এর লোকদের হাত এ পাসপোর্ট আর ১০০ টাকা ( ট্রাভেল ট্যাক্স ৫০০ টাকা ঢাকা থেকে দিয়ে এসেছিলাম) দিলাম বর্ডার প্রসেস এবং সিরিয়াল দেওয়ার জন্য|
সকাল ৯টায় বর্ডার ওপেন হলে শুরু হলো লাইন এ দাঁড়ানো| ঈদ এর ছুটিতে প্রচন্ড ভিড় থাকায় ২ বর্ডার এর কাজ(২00 টাকা ঘুষ সহ) শেষ করতে দুপুর ১টা(এমনিতে ১০:৩০-১১:০০ বাজে| চেঙড়াবান্দাতে ডলার ভাঙিয়ে লাঞ্চ করলাম (ভাত, ডাল, রুই মাছ, সবজি, পাঁপড় ১০০ রুপি)| প্ল্যান ছিল ঐদিনই শিলিগুড়ি হয়ে লাভা যাবো কিন্তু অনেক দেরি হয়ে যাওয়ায় সে আশায় গুড়ে বালি কিন্তু আমাদের অবাক করে দিয়ে চেঙড়াবান্দা থেকে ময়নাগুড়ি হয়ে সেদিনই আমাদের লাভা পৌঁছে দিতে রাজি হলো একজন টাটা সুমো ড্রাইভার (৩৫০০ রুপি ভাড়া)| ছু মন্তর ছু রওনা দিয়ে দিলাম…..ময়নাগুড়ি ফরেস্ট রেঞ্জ , টি এস্টেট এর ভেতর দিয়ে জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি কে পাশ কাটিয়ে ৮০ কিমি যাওয়ার পর শুরু হলো পাহাড়ে চড়া| অকল্পনীয় সুন্দর পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে জান হাতে আর বৃষ্টি, মেঘ, কুয়াশা মাথায় নিয়ে ৩৫ কিমি উপরে উঠলাম মাঝে বিরতিতে চা আর লেস চিপস খেলাম (৩৫ রুপি)| প্রায় ৮০০০ ফিট উচ্চতায় লাভা পৌছালাম রাত ৮টায়| ছোট্ট পাহাড়ি শহর হওয়ায় পুরা শহর তখন ঘুম| পাইন বন এ ঘেরা ছোট্ট শহর, পাশে পাহাড় চূড়ায় বিশাল বৌদ্ধ মন্দির, মেঘ এর চাদর এ ঢেকে আছে পুরো শহর| এত নীরব..!! এত শান্তি..!! হোটেল হিমালয় এ উঠলাম ৫ জন একটা রুম নিয়ে (১০০০ রুপি রুম ভাড়া)| বাঙালি হোটেলওয়ালা আমাদের রাত এ খাওয়ার অফার করলো (মুরগি, ডাল, ভাত, সবজি, আচার ১২০ রুপি)| আমরা উনাকে রান্না করতে বলে ঘুমন্ত শহর এ হাটতে বেরোলাম| নেপালি একটা দোকান খোলা পেয়ে ভেজ মোমো (৩০ রুপি), ভেজ সূপ(ফ্রি), চা (১০ রুপি) খেয়ে যখন একটা উঁচু পাহাড় এর মাথায় উঠে বসলাম তখন প্রচন্ড অবাক হলাম এ কোথায় এলাম..!! নিচে পাইন বন পূর্ণিমা চাঁদ এর আলোয় ভেসে যাচ্ছে| সব মেঘেরা আমার পায়ের নিচে ঢেউ খেলছে| পাশে বিশাল উঁচু একটা পাহাড় পুরাটা মেঘ এ জড়ানো, তার গায়ে পূর্ণিমার আলো প্রতিফলন হচ্ছে, পাহাড়টা যেন জ্বলছে …এটাই তাহলে চাঁদের পাহাড়..!! সারা জীবন গল্প উপন্যাসে পরে যা কল্পনা করেছি এ তো তার চেয়েও সুন্দর| কি সুন্দর..!! কি সুন্দর সে চাঁদের পাহাড়..!!
পর দিন ভোর এ উঠে লাভা টাউন, বৌদ্ধ মন্দির, সুইসাইড পয়েন্ট, রাচেলা পয়েন্ট (ফ্রি লিফ্ট পেয়েছিলাম একজন এর স্ক্যুটি তে)ঘুরে ব্রেকফাস্ট করলাম ( সমুচা আর চা ২০ রুপি, মোমো ৪০ রুপি)| শহরের প্রতিটি মানুষ অনেক শান্তি প্রিয়, হেল্পফুল আর হাসি খুশি| তারপর হোটেল ছেড়ে সুমো স্ট্যান্ড এ এসে সুমো ভাড়া করলাম রিশপ, নেওরা ভ্যালি পাইন ফরেস্ট হয়ে ডেল রিসোর্ট ঘুরে কালিম্পঙ টাউন এ রেখে আসবে আমাদের (২৪০০ রুপি)| শুরু হলো আরো উপরে ওঠা এবড়ো থেবড়ো পাথুরে রাস্তা দিয়ে| কখনো পাহাড়ি ভেজা রাস্তা কখনো ঘন অন্ধকার পাইন ফরেস্ট এর ভেতর দিয়ে ১ ঘন্টা যাওয়ার পর পৌছালাম ৮৫০০ ফিট উচ্চতায় রিশপ নেওরা ভ্যালিতে| অসাধারণ সুন্দর লেপ্চা কটেজ, স্কটিশ কটেজ এ ভরা নেওরা ভ্যালি রিসোর্ট থেকে হেটে নেওরা ভ্যালি পাইন ফরেস্ট এ ঢুকলাম. বৃষ্টি ভেজা, মেঘ এ ঢাকা, অন্ধকার রহস্যময় বন. বিশাল বিশাল পাইন গাছের সারি, পাখির ডাক. অদ্ভুত এক ঠান্ডা গা ছমছম পরিবেশ| বন এর ভেতর দিয়ে মেঘ এর নদী বয়ে চলেছে| পুরা পরাবাস্তব পরিবেশ| সে পরিবেশ থেকে বের হয়ে আবার গাড়িতে উঠলাম, গন্তব্য ডেল রিসোর্ট| পথে ২বার চা খেলাম আর পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করলাম|
ডেল রিসোর্ট হলো পাহাড়ের চূড়ায় মেঘ এ ঢাকা বিশাল অভিজাত রিসোর্ট (এন্ট্রি ফী ২০ রুপি, পার্কিং ফী ২০ রুপি) রিসোর্ট এর ভিউ পয়েন্ট থেকে পাহাড়, তিস্তা নদী আর বন এর ভিউ চমৎকার, প্যারাগ্লাইডিং করা যায় এখানে (৩০০০ আর ৭০০০ রুপি প্যাকেজ) সেখান থেকে পাহাড়ি তিস্তা নদী ধরে আমরা কালিম্পঙ এলাম বিকেলে| পুরোনো বনেদি একটা সুন্দর শহর| ব্রিটিশদের ছাপ এখনো স্পষ্ট| বাংগালী মাসিমার হোটেল এ খেয়ে নিলাম (ভাত, ডাল, কাতল মাছ, ভর্তা, সবজি, আচার, আলু ভাজি ১৫০ রুপি)| শহরটা একটু ঘুরে দেখে সন্ধ্যায় রওনা দিলাম দার্জিলিং এর উদ্দেশে (শেয়ার্ড সুমো, পার পারসন ১৫০ রুপি) রাত ৮টা নাগাদ এলাম বিখ্যাত দার্জিলিং এ| উঠলাম হোটেল সাগরিকাতে (৫ জন একরুম ২০০০ রুপি) এর আগের দার্জিলিং ভ্রমণ এর অভিজ্ঞতা (অন্য গল্পে বিস্তারিত) থেকে গেলাম হোটেল ইসলামিয়াতে রাত এর খাবার খেতে (গরু’র গোস্ত ভুনা দিয়ে পরোটা আর কাচ্চি বিরিয়ানি, ১৫০-২০০ রুপি) তারপর মল চত্বর এ কিছুক্ষন থেকে এক কাপ স্পেশাল দার্জিলিং চা খেয়ে ঘুম|
যেহেতু এর আগেও দার্জিলিং ঘুরেছি (অন্য গল্পে বিস্তারিত) তাই ইচ্ছে ছিল বাহিরে কোথাও না যেয়ে সারাদিন দার্জিলিং শহরের অলিগলি তে হাটবো, বিখ্যাত ইন্ডিয়ান, তিব্বতি, নেপালি, ব্রিটিশ রেস্টুরেন্ট গুলোতে খাবো আর আরাম করে পাহাড়ের চূড়ায় কোথাও বসে পাহাড় আর মেঘ দেখবো| তাই করলাম, নিচের ছবিটি এমন এ একটা জায়গায় বসে উঠানো (মল চত্বর)|
বিকেলে দার্জিলিং থেকে শেয়ার্ড সুমোতে করে শিলিগুড়ি চলে এলাম(১৫০ রুপি)| সন্ধ্যায় উঠলাম হোটেল মাউন্ট ভিউ এ (পার রুম ৮০০ রুপি, ৩ জন)| রাত এ বিধান মার্কেট, সেভক রোড আর হিল কার্ট রোড এ ঘুরে ফিরে রাত এ খেলাম বিখ্যাত খানা খাজনা তে (হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি ১৩০ রুপি, কুলফি আইস ক্রিম ৮০ রুপি)|
পরদিন সকালে নাস্তা করে (পরোটা ডিম্ ভাজি, চা ৫০ রুপি) বাস এ করে শহর এ একটু ঘুরলাম তারপর চেংড়াবান্দা আসার জন্য টাটা ইন্ডিগো গাড়ি ভাড়া করলাম (১১০০ রুপি, ৪ জন বসতে পারবে)| বাস ও আসে (৫০ রুপি) কিন্তু আমরা একটু আরাম এ আসতে চেয়েছিলাম| প্রায় ৮০ কিমি পথ পেরিয়ে বর্ডার এ এলাম দুপুর ১টায়, বর্ডার এর ঝামেলা শেষ করে প্রাণ এর দেশে ফিরলাম বিকেল ৩টায়| এরপর বিশাল এক এডভেঞ্চার করে বুড়িমারী- পাটগ্রাম- লালমনিরহাট- রংপুর হয়ে ঢাকা এলাম পরদিন সকাল ১০টায়|

সর্বমোট খরচ প্রতিজন ৮০০০ টাকা ( ভিসা খরচ এবং ডলার এন্ডোর্স খরচ বাদে)

Post Copied From:Shadman Mahbub‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

ফালুটের সকাল

সকালে ফালুটের চারদিকে সাদা হয়ে থাকে হাল্কা বরফের প্রলেপ। দেখলে মনে হয় চাদের দেশ থেকে নেয়া নিলআর্মস্ট্রং এর ছবির সাথে এখানকার যথেষ্ট মিল। অথবা ঐরকম ছবি এখান থেকে উঠানো সম্ভব :p ।
ফালুট ভারত নেপাল সীমান্তে অবস্থিত । সান্দাকফু থেকে এর দূরত্ব প্রায় ২১ কি,মি। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখানে তাপমাত্রা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি থাকে । কখনো কম কখনো বেশি । এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা একদম পরিষ্কার দেখা যায় । আশে পাশে ৪/৫ কিলো মিটারের মধ্যে একটা চেকপোস্ট ছাড়া কোন গ্রাম নেই । একদমই নিরিবিলি আর সুনসান এলাকা । থাকবার জন্য একটা সরকারী বাংলো আর একটা ফরেস্টের বাংলো রয়েছে । সব মিলিয়ে ২০/২২ জন টুরিস্টের একোমডেশন রয়েছে এখানে ।
যাবার বেষ্ট সময়: নভেম্বর এবং এপ্রিল ।

রুট:
ঢাকা- শিলিগুড়ি- মানেভাঞ্জান-চিত্রে-লামেধুরা-মেঘমা – তুমলিং – গাইরিবাস-কায়াকাট্টা-কালাপোখারি-সান্দাকফু-ফালুট ।
যাবার উপায়: ট্রেকিং অথবা মানেভাঞ্জান থেকে জিপ রিজার্ভ করে ফালুট ঘুরে আসা যায় ।।
-জিপ সাফারি করলে ৬ জনের টিমের ঢাকা থেকে খরচ পরবে ১০/১১ হাজার টাকা বা এর কম।
-৬ দিনের ট্রেকিং করলে খরচ আসবে ১৪০০০+

Post Copied From:Rahi‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

চোখ মেলেই কাঞ্চনজঙ্ঘা.

শেষ বিকেলের খাবার টাই যে রাতের আহার হবে সেটা কেউই ভাবিনি! কারণ শেষ বিকেলে খেয়ে দেয়ে দেশীয় স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী বেড়াতে বের হলাম যে যার মত। সবাই ফিরবে যার-যার মত রাতের খাবার খেয়ে, নির্ধারিত সাময়িক আবাসে। কিন্তু আগের পুরো রাত আর সারাদিনের জার্নির ক্লান্তি একাকার হয়ে আমরা আত্ন-সমর্পণ করলাম বিশ্রাম আর বিছানার কাছে।

কারণ, ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে সবাই ফিরে এসেছিলাম নিজেদের আবাসে! এতো বেশী উঁচু-নিচু পথে এতটা আয়েশ করে আর উপভোগ করা যাচ্ছেনা বলে। তার চেয়েও বড় কথা হল, সকল দোকান-পাট-বাজার-রেস্তোরাঁ-মল সব একে-একে তাদের ঝাঁপ ফেলে আর শেকল টেনে তালা লাগিয়ে দিচ্ছিল! কিছু বুঝে ওঠার আগেই!

তাই নিজেদের নিয়মিত ক্ষুধার কথা ভেবেই আগাম কিনে নিয়েছিলাম পাওরুটি আর জিলাপি! কারণ এ ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যাচ্ছিলোনা! তাই সেই ঢের আর সেই সাথে একটি শীত তাড়ানোর ভিন্ন স্বাদের কিছু পানীয়! সে বললেও আর না বললেও!

রুমে ফিরে খাবার গুলো আবার চালান করে দেয়া হল বাংলাদেশী গাড়লদের পেটে! কোন অপেক্ষা ছাড়াই ডাবল কম্বলের নিচে সুড়সুড় করে ঢুকে পড়লাম যে যার মত সুবিধা করে নিয়ে এবং অচিরেই ঘুম! প্রস্তুতি ছাড়াই, কে-কখন ঘুমোলো কেউ জানিনা।

অনেক ভারী পর্দার সামান্য ফাঁক গলে আলোহীন প্রত্যূষে ঘুম ভেঙে গেল। ওহ এতো ভোঁরে ঘুম ভাঙার কি দরকার ছিল? কোথাও বেরোনোর এতো বেশী তারা নেই। ধীরে-সুস্থে উঠে হেলে-দুলে বের হব, তারপর আজকের প্ল্যান কোথায় ও কিভাবে যাব। কিন্তু এতো সকালে কি করি? আবার ডুব দিলাম কম্বলের নিচে। কিন্তু আগের রাতে যেহেতু সাভাবিকের চেয়ে অনেক তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছি তাই ঘুম আর কিছুতেই আসছিলনা।

এপাশ-ওপাশ আর উসখুস করে অন্যের ঘুম না ভাঙিয়ে বরং উঠে একটু মেঘ আর কুয়াশার লুকোচুরি দেখি! আর যদি সেই সাথে দেখা মেলে এক টুকরো পাহাড়ের তো কথাই নেই আর! পাহাড় সেতো আমার প্রেম! তাকে যখন-যেখানে-যেভাবেই পাইনা কেন, আমি আপ্লুত-বিমুগ্ধ-বিলুপ্ত ওর মাঝে!

সেই ভেবে খুব সন্তর্পণে অনেক ভারী পর্দা সরিয়ে রুমের সাথে লাগোয়া করিডোরের ছিটকানি খুললাম, ওহ যেন ছিটকে ফেলে দিতে চাইলো কনকনে ঠাণ্ডা এক দমকা হাওয়া! সেই সাথে মুখ ভিজিয়ে দিল না চাইতেই, বেহায়া কুয়াশা! তবুও শীতের চাঁদর গায়ে জড়িয়ে বের হলাম… আমার বাম পাশে ঘন সবুজ অরণ্যে বেষ্টিত থরে-থরে সিঁড়ির মত সাজানো পাহাড়, আমি ও দিকেই তাকিয়ে ছিলাম মুগ্ধ হয়ে, অন্য দিলে তাকাবার ইচ্ছেই যে হয়নি আর!

আবারো বাতাস, আবারো ধেয়ে আসা কুয়াশা, ভিজে যাওয়া মুখ! কুয়াশার ঢেউয়ে একটু মুখ ঘোরাতেই আমার আরও ডানে কাছের জানালায় চোখ পড়তেই যেন ঝলসে গেলাম! সোনালি আভায় আর হঠাৎ চোখে পড়া অর্কর ছটায়! এবার বাধ্য হয়ে পাহাড়কে উপেক্ষা করে ডানে তাকালাম… বেশ-বেশ দূরে অর্কর আভায় কমলা-সোনালি-রুপালি-গোলাপি-ক্ষীণ লাল-আর কিছুটা হলুদের ছটা দেখতে পেলাম!

এই সময়টার সঠিক অনুভূতিটা কি ছিল বা হয়ে থাকে সেটা আসলে বোঝানোর নয়, ঠিক বোঝারও নয়! এই রকম মনোমুগ্ধকর সম্মোহনে মানুষ আসলে বোবা হয়ে যায় বোধয়! অথবা হয়ে যায় অনুভূতিহীন-বাকরুদ্ধ-অসাড়! কারণ তখন তাকিয়ে-তাকিয়ে দেখা ছাড়া পৃথিবীর আর সব কিছুই তুচ্ছ আর অমুলক অথবা ভিত্তিহীন বাস্তবতা! তখন ওই সম্মোহনই একমাত্র প্রার্থনা-প্রাপ্তি বা প্রবঞ্চনা!

এভাবে কয়েক মিনিট নির্বাক হয়ে সেই সম্মোহন উপভোগ করার পর, সূর্য আর একটু আলো ছড়ালে দূরের সেই নানান রঙের মেলা, শেতশুভ্র বরফে আচ্ছাদিত কাঞ্চনজঙ্ঘার লাজুক ঘোমটা সরাতে লাগলো, একটু-একটু করে, ভেঙে লজ্জা-শরম ও গাল ভরা অভিমান!

কারণ? ওটা যে কাঞ্চনজঙ্ঘা সেটা যে বুঝতেই পারিনি তখন!

এরপর আর নয়, সেটা বিশ্বাসঘাতকতা হয়ে যাবে সেই ভঁয়ে অন্যদেরও ডেকে তুললাম, ততক্ষণে শুরু হয়ে গেছে আমার অবিরাম ক্যামেরার ক্লিক-ক্লিক-ক্লিক! যেখানে-যেমন ওঠে উঠুক, পরে দেখেশুনে বাছাই করবো! আগে তো তুলে নেই জতখুশি তত!

এবার অন্যরাও সরব হল, সব ভুলে, কেউ-কেউ হাড় কাঁপানো শীতেও উপেক্ষা করে, তবে বঞ্চিত হয়েছিল সেদিনকার মত, সেই প্রথম দেখা রঙ-বেরঙ এর বরফ-আলোর সম্মিলিত সম্মোহন থেকে! তবে এর পরের দিন থেকে একটি দিনের জন্যও নয়, কেউ-ই।

কারণ আমাদের সামনেই…… সব সময়, সারাক্ষণ দেখতে পাই, রুমের পর্দা সরালেই বা করিডোরে দাঁড়ালেই, হেটে-বসে বা শুয়ে, যখন-যেভাবে-যেমন আর যত খুশি………

সে এক অপার্থিবতা, চোখ মেললেই কাঞ্চনজঙ্ঘা……!

ঢাকা-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং

Post Copied From:Sajol Zahid‎>Travelers of Bangladesh (ToB

মাত্র ৮৫০০ রুপিতে ঘুরে আসুন সিলেট-শিলং(মেঘালয়)-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং

মাত্র ৮৫০০ রুপিতে ঘুরে আসুন সিলেট-শিলং(মেঘালয়)-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং ৫ রাত ৬ দিন…অনেক কম খরচে ঘুরে আসা যায়,কলকাতার দিকে না গিয়ে তামাবিল বর্ডার দিয়ে কম খরচে আর কম সময়ে যাওয়া যায়,তামাবিল বর্ডারে ঝামেলাও করে কম (দার্জিলং এ ট্রাভেলস এজেন্সি এর মাধ্যমে ঘুরার কারণে বেশী গেছে নাইলে আরও কম যাইত)…
শিলং-ডাউকি ১০ রুপি,ডাউকি-শিলং ১২০,শিলং-গুহাট্টি ১৭০ সবই লোকাল সমুতে করে,গুহাট্টি থেকে ট্রেন ১৫০ করে বাংলাদেশ এর শোভন সিট করে নিউ জলপাইগুড়ি,নিউ জলপাইগুড়ি-দার্জিলিং ১২০

Post Copied From:Mohin Hasnat Hassan‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

দার্জিলিং 

ইন্ডিয়াতে বাংলাদেশের যত মানুষ ঘুরতে যায় তার মধ্য কয়েকটি জায়গা ফিক্সড, তারমধ্য #দার্জিলিং অন্যতম। অথচ এই দার্জিলিং যাবার পথেই একটু ডানে সরে গেলেই বিখ্যাত #ডুয়ার্স। যেখানে পাহাড় নদী অরণ্য সব মিলেমিশে একাকার। পশ্চিম বঙ্গের জাতীয় উদ্যান ও এখানে।
এবারও অন্য সবার মত প্ল্যান করেছিলাম দার্জিলিং যবার, কিন্তু শেষ মুহুর্তে প্ল্যান করে ডুয়ার্স যাওয়াই ফিক্সড করলাম। বৃহস্পতিবার রাতে শ্যামলী গাড়িতে #বুড়িমারি বর্ডার, যদিও টিকিট ছিল #শিলিগুড়ি পর্যন্ত, বর্ডার পার হয়ে সকাল ১০ টার মধ্যেই সেখান থেকে ১০০০ (চার জন) রুপিতে সোজা জাতীয় উদ্যান #গরুমারা_ন্যাশনাল এর মেইন গেটের ঠিক অপজিটে #টাস্কার্স_ডেনে গিয়ে উঠলাম। আগেই ফোনে বুকিং দেয়া ছিল, ৪ জনের রুম ১৬০০ রুপি, এসি, আশপাশটা দেখে, দুপুরে খেয়ে হোটেলের ঝকঝকে মারুতি তে ১৫০০ রুপিতে চললাম প্রথমে #স্যামসিং চা বাগানের উদ্দেশ্যে, যদিও ডুয়ার্স এর পুরোটাই সেই ভুটান পর্যন্ত চা বাগান। এটি ২৫০০ ফিট উপরে অবস্থিত দুই পাহাড়ের মাঝে উপত্যকায়, এখান থেকে আরো প্রায় ৫০০ ফিট উপরে ৫ কিঃমিঃ দূরে #সান্তালেখোলা, সমগ্র পাহাড় জুড়ে শুধু কমলা লেবুর বাগান। এর পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে পাহাড়ি ঝিরি নদী #মৌচুকি। এর ওপারেই গহীন জংগলের ভেতরর একটি রিসোর্ট, যা অনেক আগে থেকে বুকিং দিতে হয়। এরপর একটু নীচের দিকে নেমে এলে উপজাতি দের গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রায় ২ কিঃমিঃ এগুলে সেই #রকি_আইল্যান্ড, যা অনেকটা আমাদের দেশের #বিছানাকান্দির মত। এর রুপের ছটা এখনো চোখে লেগে আছে। এখান থেকে নেমে কিছুদুর এগুলেই #মূর্তি নদী। আহ, এর দুপাশ জুড়ে শুধু বন্য সৌন্দর্য। পরদিন এখান থেকেই খুব ভোরে গাড়ি নিয়ে রওয়ানা দিয়ে #কালিম্পং, ফিরতে সেই সন্ধ্যা। পরদিন খুব ভোরে আগে থেকে বুকিং দেয়া হাতির পিঠে চড়ে জঙ্গল সাফারি। সাফারি করার সময় মনে হবে হাত বাড়ালেই বুঝি ছোয়া যাবে #কাঞ্চনজঙ্ঘা। দেখা মিলবে উপমহাদেশের বিখ্যাত এক শিঙা গন্ডার, আছে হরিন, বাইসন। কথা দিচ্ছি এই সাফারি আপনার সারা জীবন মনে থাকবে। সাফারি শেষ হয় ৮.৩০ থেকে ৯.০০ টার মধ্যেই। এরপর ব্যাগ গুছিয়ে দুপুরেই লাটাগুরি থেকে ময়নাগুড়ি হয়ে চ্যাংড়াবান্ধা। মাত্র আড়াই দিনেই এই আসাধারণ একটি ভ্রমণ সম্ভব। আপনি চাইলে খরচ কমাতে পারেন বাসে লাটাগুড়ি গেলে, আবার নন এসি রুমে প্রায় অর্ধেক ভাড়া, হাতির পিঠে জঙ্গল সাফারি না করে জীপ সাফারি করতে পারেন জনপ্রতি ১২০ রুপি।

Post Copied From:Abu Ahmed Shorif Manik>Travelers of Bangladesh (ToB)

তিস্তা রিভার রাফটিং

বাংলাদেশে যে তিস্তা পানিশূন্যতায় ভুগছে ওপারে সেই তিস্তাই বরফগলা নীল পানির স্রোতে মাতিয়ে রাখছে একদল এডভেঞ্চার প্রেমী মানুষদের। তিস্তার নীল পানির স্রোতে রাফটিং এর প্রতিমূহূর্তেই আপনার জন্য অপেক্ষা করবে থ্রীল আর ভয়। অবশেষে পুরষ্কার হিসেবে পাবেন ভয়কে জয় করার অকৃত্রিম আনন্দ।

রাফটিং করতে চাইলে আপনাকে বাংলাদেশে থেকে যেকোন (বাস/প্লেন/ট্রেন) উপায়ে শিলিগুড়ি পৌছে সেখান থেকে ডিরেক্ট জ্বীপ রিজার্ভ বা শেয়ার জ্বীপে করে চলে যেতে কালিম্পং অথবা দার্জিলিং ঘুরেও চলে যেতে পারেন কালিম্পং। কালিম্পং এর রিভার রাফটিং এর কথা বললেই ড্রাইভার নিয়ে যাবে রাফটিং পয়েন্টে। রাস্তার পাশেই বুকিং কাউন্টার পেয়ে যাবেন। পছন্দ মতো প্যাকেজ নিয়ে নিলে ওদের ড্রাইভার আপনাদের জ্বীপে করে ছেড়ে আসবে রাফটিং এর স্টার্ট পয়েন্টে সেখান থেকে শুরু হবে রাফটিং।

রাফটিং এর দুই ধরনের প্যাকেজ রয়েছে। একটা শর্ট অন্যটা লং। শর্ট রাফটিং 15-20 মিনিট এবং লং রাফটিং 40-50 মিনিট। শর্ট রাফটিং এর জন্য গুনতে হবে 3500 রুপি পার বোট এবং লং রাফটিং এর জন্য 4500 রুপি পার বোট। লং এবং শর্ট দুইধরনের রাফটিংয়েই একেক বোটে 5 জন করে বসা যায় আর সাথে ওদের 2 জন থাকে।

রাফটিং ভিডিও এবং ছবি তোলার জন্য 800-1000 রুপি আলাদা লোক ঠিক করতে হবে। আমাদের 3 বোটের ছবি তোলার জন্য 2000 রুপিতে 3 জন ক্যামেরাম্যান নিয়েছিলাম

Post Copied From:Nahidul Alam Neel>Travelers of Bangladesh (ToB)