প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি। প্রকৃতিকে একান্তে অনুভব করার জন্য স্থানটি বেশ উপযোগী। পাহাড়ে ঘন সবুজ বন, নদী, চা-বাগান ও নানা জাতের বৃক্ষের সমাহার লালাখালজুড়ে। যেদিকেই তাকাবেন সেইদিকেই সবুজ আর নীলের সমাহার।
যে ভাবে ঘূড়বেনঃ
লালাখাল ঘুড়ে উপভোগ করতে পারেন নৌকার মাধ্যমে । এখানে ২ ধরনের নৌকা আছে ইঞ্জিন ও ইঞ্জিন ছাড়া। ইঞ্জিন নৌকা ভাড়া নিবে কমপক্ষে ৮০০-১০০০ টাকা আর নরমাল নৌকা ভাড়া নিবে আনুমানি ১০০-২০০ টাকা । এই নৌকার মাধ্যমে আপনাকে তারা জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ঘুড়িয়ে নিয়ে আসবে। ঘুড়তে ঘুড়তে দেখবেন খালের আসল রুপ।
লালাখাল থাকার ব্যাবস্থাঃ
লালাখালের পাশেই রয়েছে একটি নামিদামী রিসোর্ট । ১ রাতের জন্য আপনাকে গুনতে হবে ৫০০০-১০০০০ টাকা ।এখানে পরিবার নিয়ে থাকতে পারবেন কোন সমস্যা নাই।আমরা ৩ বন্ধু ছিলাম দাম শুনে তাই আমরাও সেইখানে থাকি নাই। আরো দামী রুম রয়েছে এখানে। খুব বেশি মনে হচ্ছে তাই না। যদি বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আসেন আর একটু কম খচরে থাকতে চান। তাহলে আপনাকে একটু কষ্ট করতে হবে। আরো কমে থাকতে হলে আপনার জন্য রয়েছে একটি আকর্ষণীয় উপহার সেটা হলো থাকতে হলে আপনাকে খালের ওপার পাহাড়ের চূড়ায় থাকতে হবে। আনুমানি ৫-৬ তালা উঁচু পাহাড়। সেখানে রয়েছে গ্রামীন দারুন ব্যাবস্থা। এখনো ওইরকম ভাবে থাকার ব্যাবস্থার কাজ শুরু হয়নি। তারপরও আমরা সেখানে থাকতে পেরেছি।এইগ্রামে একজন মানুষ আছে সে থাকার ব্যাবস্থা ধীরে ধীরে চালু করছে। যার বাসায় আমরা ছিলাম তার নাম হলোঃ “নিবারন”ভাই। তার ঘর সম্পূর্ণ মাটির ঘর এবং নিবারন ভাইয়ের নিজের হাতে বানানো ঘর। দেখলে আপনার মন ভরে যাবে। তিনি খুব ভাল মানুষ। সে এই এলাকার স্থানীয় মানুষ। সো চিন্তার কোন কারন নাই। রাতে থাকতে হলে খাবারের জন্য বাজার করা অবশ্যই দরকার। নিবারন ভাইয়ের নিজের দোকান আছে সেখানেই বাজার করতে পারেন অথবা তাকে টাকা দিলে সে বাজার থেকে সদাই করে নিয়ে আসবে বা আপনারাও আনতে পারেন ।খাবার খরচ আপনাদের উপর ডিপেন্ড করে। আমরা আলাদাভাবে খাবারের জন্য ৩৫০ টাকা খচর করে ছিলাম। যদি মুরগী-গরুর মাংস বা মাছ কিনতে চান। রাতে চাইলে BBQ ও করতে পারেন তার । তার বাসার সামানে অনেক বড় ভাল মানের উঠানের ব্যাবস্থা রয়েছে। সাবধান বেশি চিৎকার করে আনন্দ করতে যাবেন না কারন- গ্রামের মানুষরা খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরে। এ কারনেই বললাম কারন আমরা ৩ বন্ধু তার বাসায় ১ রাতে থেকেছিলাম। ২-৩ জন হলে সে থাকার ব্যাবস্থা করে দিবে।আমরা তার বাসায় ফ্রী থেকেই ছিলাম। অনেক জোরাজুরির পরেও তাকে টাকা দিতে পারি নাই আমরা । আগামীতে সে আরো রুম বানানোর কাজ শুরু করবেন যা বলেছিল আমাদের। তখন মেবি প্রতিটি বিছানার জন্য ১০০-১৫০ টাকা চার্জ করতে পারে। সকালের লালাখালের রুপ ও চা বাগান উপভোগ করতে চাইলে তাহলে নিবারন ভাইকে গাইড হিসাবে পুরো সকালটা আপনাকে পায়ে হেঁটে পুরো লালাখালের রুপ লালাখালের পাহাড়ি রুপ বেয়ে বর্ডার এলাকা ও চা বাগান ঘুড়িয়ে দেখাবে। তার জন্য আনুমানিক ৫০০ টাকা তার সময়ের খরচ দিলে সে অনেক খুশি হবে। বিষয়টা দারুন না।
এখানে কমে থাকতে হলে আপনাকে খালের ওপার যেতে হবে । খাল পারাপার এর জন্য এক এক জনকে ৫ টাকা করে নিবে । ওপার উঠেই একটি সুন্দর ও ছোট বাজার দেখবেন । বাজারের পাশেই রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নাম তার- “নিশ্চিতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়” । বাজারে কাউকে জিজ্ঞাস করলেই দেখিয়ে দিবে নিবারন ভাইয়ের দোকান কোনটা । তার বাসায় যদি থাকতে চান অবশ্যই তাকে আগে ফোন দিতে হবে। যদি থাকতেই চান তার ওখানে তাহলে ফোন নাম্বারের জন্য আমাকে ইনবক্স করলেই হবে।
লালাখাল যাওয়ার ব্যাবস্থাঃ
সিলেট বাস স্টাড থেকে জাফলং এর লোকাল বাস পাবেন। বাসে উঠে ৩০-৩২ কিঃমি দূরে নেমে যাবেন সারিঘাট। ভাড়া নিবে আনুমানিক ৩০-৩৫ টাকা। সারিঘাট নেমে অটো পাবেন সেখানেই তারা লালাখাল বলেই ডাক দিবে। উঠে পরেন অটোতে ৭ কিঃমি দূরেই নেমে যাবেন লালাখাল। ভাড়া নিবে মাত্র ১৫ টাকা।
সাবাধানঃ এই খালে গোসল করার থেকে না করাই ভাল। গ্রামের লোকরাও এই খালে গোসল করতে নিষেধ করে থাকে। আর যদি আপনি খুব সাঁতারু হয়ে থাকেন তাহলে এটা আপনার উপর ডিপেন্ড করে।
প্রথম লিখলাম তাই ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন 🙂 ।
Post Copied From:SaiMon HosSain>Travelers of Bangladesh (ToB)