অবকাশ যাপন, আনন্দ ভ্রমণ ও অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়দের জন্য আদর্শ স্থান পর্যটন শহর পাহাড়ি জেলা বান্দরবান। যান্ত্রিক জীবনের নানা কর্মব্যস্ততার ফাঁকে সুযোগ পেলেই ঘুরে আসুন পাহাড়ি এ জেলায়। যেখানে রয়েছে ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বসবাস। প্রকৃতি যেন সাজিয়েছে আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে। তাই সবুজে মোড়ানো প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয, অবারিত সবুজের সমারোহ এবং মেঘ ছোঁয়ার ইচ্ছে হলেই ঘুরে আসুন পাহাড়ি কন্যা বান্দরবানে।
#স্বর্ণমন্দির:
বান্দরবানের উপশহর বালাঘাটাস্থ পুল পাড়া নামক স্থানে স্বর্ণমন্দির এর অবস্থান যা মহাসুখ মন্দির বা বৌদ্ধ ধাতু জাদী নামে পরিচিত। নাম স্বর্ণমন্দির হলেও এখানে স্বর্ণ দিয়ে তৈরি কোন দেব-দেবীও নেই। এটি তার সোনালি রঙের জন্য বর্তমানে স্বর্ণমন্দির নামে খ্যাত। বান্দরবান জেলা সদর থেকে এর দূরত্ব ৪ কিলোমিটার। সুউচ্চ পাহাড়ের চুড়ার তৈরী সুদৃশ্য এ প্যাগোডা। এটি বুদ্ধ ধর্মালম্বীদের একটি পবিত্র তীর্থস্থান।
এখানে দেশ বিদেশ থেকে অনেক বুদ্ধ ধর্মালম্বী দেখতে এবং প্রার্থনা করতে আসেন। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম এই বৌদ্ধ ধাতু জাদী (Buddha Dhatu Jadi) কে স্বর্ণমন্দির (Golden Temple) নামকরন করা হয়। গৌতমবুদ্ধের সমসাময়িক কালে নির্মিত বিশ্বের সেরা কয়েকটি বুদ্ধ মুর্তির মধ্যে একটি এখানে রয়েছে। এই প্যাগোডাটি দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার সেরা গুলোর মধ্যে অন্যতম। এই সুউচ্চপাহাড়ের উপর দেবতা পুকুর নামে একটি পানি সম্বলিত ছোট পুকুর আছে।
বর্তমানে স্বর্ণমন্দির উপাশনালয়টি বান্দরবান জেলার একটি অন্যতম পর্যটন স্পট হিসাবে পরিগনিত হচ্ছে। এটি বৌদ্ধ ধর্মাম্বলীদের একটি উল্লেখযোগ্য উপাশনালয়। এটির নির্মাণশৈলী মায়ানমার, চীন ও থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ টেম্পল গুলোর আদলে তৈরী করা হয়। বান্দরবান ভ্রমণে আপনিও এই জাদী বা স্বর্ণমন্দিরটি একবার স্বচক্ষে দেখে আসতে পারেন। এই প্যাগোডা থেকে বান্দরবানের বালাঘাটা উপশহর ও এর আশপাশের সুন্দর নৈস্বর্গিকদৃশ্য দেখা যায়। এই প্যাগোডা একটি আধুনিক ধর্মীয় স্থাপত্যের নিদর্শন। প্রতিবছর নিদ্দিষ্ট সময়ে এখানে মেলা বসে। এ প্যাগোডাটি পুজারীদের জন্য সারাদিন খোলা থাকে। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। সড়কের টোল বাবদ ২০-৪০ টাকা দিতে হবে।
#প্রান্তিক_লেক:
প্রায় ২৫ একর জায়গা জুড়ে সৃষ্ট কৃত্রিম জলাশয় প্রান্তিক লেক। প্রান্তিক লেক এর আয়তন ২৫ একর হলেও পুরো কমপ্লেক্সটি আরো অনেক বড়। ৬৮ একর এলাকা জুড়ে পাহাড় বেষ্টিত ২৫ একরের বিশাল লেক যা বগা লেক এর থেকেও বড়। জেলার এক প্রান্তে অবস্থিত বলে এই লেকের নামকরণ হয় প্রান্তিক লেক। অপূর্ব সুন্দর এ লেকের চারিপাশ নানা প্রজাতির গাছগাছালিতে ভরপুর। পিকনিকের জন্য এটি অন্যতম লোভনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে সর্বত্র। এটি বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের পাশে হলুদিয়া নামক স্থানে অবস্থিত। মূল সড়ক থেকে এর দুরত্ব ৫ কিলোমিটার।
বান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রান্তিক লেক এর দুরত্ব ১৪ কিলোমিটার। লেকটিতে উম্মুক্ত মাটির মঞ্চ, পিকনিক স্পট, বিশ্রামাগার এবং একটি উঁচু গোল ঘর ইত্যাদি স্থাপনা রয়েছে। গোল ঘরে বসে লেকের সৌন্দর্য সহজেই উপভোগ করা যায়। লেকের নীল জল আর পাড়ের সবুজ বনানী এখানে তেরি করেছে একটি ভিন্ন মাত্রা। গাছের শীতল ছায়া আর নির্মল বাতাস আপনার সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দেবে। চাইলে লেকের জলে মাছ শিকার করতে পারবেন তবে অবশ্যই কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে। সেটা হবে আপনার জন্য একটি বাড়তি পাওনা। এছাড়া পরিবার পরিজন নিয়ে আয়েশ করে ঘুরে বেড়াতে পারেন প্যাডেল বোট নিয়ে। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা।
#মেঘলা_পর্যটন_কেন্দ্র:
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রটি বান্দরবন শহরের প্রবেশদ্বার বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের পাশে অবস্থিত। বান্দরবান জেলা শহরে প্রবেশের ৫ কি:মি: আগে মেঘলা পর্যটন এলাকাটি অবস্থিত। মেঘলায় চিত্তবিনোদনের বিভিন্ন উপকরণের মধ্যে রয়েছে- চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, সাফারি পার্ক, প্যাডেল বোট, ক্যাবল কার, উন্মুক্ত মঞ্চ ও চা বাগান। এখানে সবুজ প্রকৃতি, লেকের স্বচ্ছ পানি আর পাহাড়ের চূঁড়ায় চড়ে দেখতে পাবেন ঢেউ খেলানো বান্দরবানের নয়নাভিরাম দৃশ্য। বেশ কিছু উঁচু নিচু পাহাড় দ্বারা ঘেরা একটি লেককে ঘিরে গড়ে উঠেছে মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র। ঘন সবুজ গাছ আর লেকের স্বচ্ছ পানি পর্যটকদের প্রকৃতির কাছাকাছি টেনে নিচ্ছে প্রতিনিয়ত। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ৫০টাকা। আর যদি ক্যাবল কারে উঠতে চান জনপ্রতি ৪০টাকা করে লাগবে।
#নীলাচল:
বান্দরবান শহরের কাছে প্রায় দুই হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের উপর অবস্থিত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্র। শহর থেকে মাত্র ৫ কিমি দূরে অপরূপ সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি এই নীলাচল যা টাইগার পাড়া এলাকায় অবস্থিত। চারদিকে দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড়ের ঢালে কোথাও আঁকা-বাঁকা রাস্তা, পাহাড়ী পাড়া আর রূপালী নদী গুলো যেন শিল্পীর আঁকা ছবি। এই পাহাড় থেকে এক নজরে দেখা যাবে পুরো বান্দরবান শহর। সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখা যেতে পারে এখান থেকেও।
নীলাচল পাহাড়ি এলাকাটি অনেকেই স্বর্গভূমি বলে থাকেন। বিশেষ করে নীলাচলে সূর্যাস্তের দৃশ্য আমাদের মনে স্বর্গীয় অনুভূতি আনে। এই জায়গায় বর্ষা, শরৎ কি হেমন্ত— তিন ঋতুতে ছোঁয়া যায় মেঘ। শহর ছেড়ে চট্টগ্রামের পথে প্রায় তিন কিলোমিটার চলার পরেই হাতের বাঁ দিকে ছোট একটি সড়ক এঁকেবেঁকে চলে গেছে নীলাচলে। এ পথে প্রায় দুই কিলোমিটার পাহাড় বেয়ে তাই পৌঁছুতে হয়। মাঝে পথের দুই পাশে ছোট একটি পাড়ায় দেখা যাবে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর মানুষের বসবাস।
নীলাচলে (Nilachal) সম্প্রতি নতুন কয়েকটি জায়গা তৈরি করা হয়েছে পর্যটকদের জন্য। এখানকার টিকেট ঘরের পাশে ‘ঝুলন্ত নীলা’ থেকে শুরু করে ক্রমশ নীচের দিকে আরও কয়েকটি বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘নীহারিকা’ এবং ‘ভ্যালেন্টাইন’ পয়েন্ট। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সাজানো হয়েছে এ জায়গাগুলো। একটি থেকে আরেকটি একেবারেই আলাদা। একেক জায়গা থেকে সামনের পাহাড়ের দৃশ্যও একেক রকম। তবে মূল নীলাচলের সৌন্দর্য অনেক বেশি। এখান থেকে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় আরও ভালোভাবে।
নীলাচলের বাড়তি আকর্ষণ হল এখানকার রিসোর্ট। নাম নীলাচল স্কেপ রিসোর্ট। সাধারণ পর্যটকদের জন্য এ জায়গায় সূর্যাস্ত পর্যন্ত অনুমতি আছে। তবে রিসোর্টের অতিথিদের জন্য সর্বক্ষণই খোলা এ জায়গা। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ৫০টাকা। সড়কের টোল বাবদ ৩০-৬০ টাকা দিতে হবে।
#মিলনছড়ি:
মিলনছড়ি বান্দরবান শহর থেকে ৩ কিঃমিঃ দক্ষিণ পূর্বে শৈলপ্রপাত বা চিম্বুক যাওয়ার পথে পড়ে। এখানে একটি পুলিশ ফাঁড়ি আছে। পাহাড়ের বেশ উপরে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পূর্ব প্রান্তে অবারিত সবুজের খেলা এবং সবুজ প্রকৃতির বুক ছিঁড়ে সর্পিল গতিতে বয়ে যাওয়া সাঙ্গু নামের মোহনীয় নদীটি দেখা যাবে।
#চিম্বুক:
বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক পাহাড়ের অবস্থান। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ২৫ শত ফুট। চিম্বুক যাওয়ার রাস্তার দুই পাশের পাহাড়ী দৃশ্য খুবই মনোরম। যাওয়ার পথে সাঙ্গু নদী চোখে পড়ে। পাহাড়ের মাঝে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সড়ক দিয়ে এঁকেবেঁকে যাওয়ার সময় মনে হবে গাড়িতে করে বুঝি চাঁদের বুকে পাড়ি জমাচ্ছেন। ২৫০০ ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে এ অপরূপ বিচিত্র প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পাবেন চিম্বুকে।
পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে দেখতে পাবেন নিচে ভেসে যাচ্ছে মেঘের ভেলা। বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের পাশ দিয়ে ভেসে যাওয়া মেঘ দেখে মনে হয় মেঘের স্বর্গরাজ্য চিম্বুক। থানছি সড়কের দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় চিম্বুক (Chimbuk) অবস্থিত হওয়ায় এখানে হোটেল বা রেস্তোরাঁ গড়ে ওঠেনি। জেলা প্রশাসকের তত্ত্ববধানে একটি রেস্টহাউস আছে। জেলা প্রশাসকের অনুমোতিক্রমে রাত্রি যাপনের সুযোগ রয়েছে। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ২০টাকা।
#শৈল প্রপাত:
বান্দরবান রুমা রাস্তার ৮ কিলোমিটার দূরে শৈল প্রপাত অবস্থিত। এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সৃষ্টি। সারাক্ষণ ঝর্ণার হিমশীতল পানি এখানে বয়ে যাচ্ছে। এই ঝর্ণার পানিগুলো খুবই স্বচ্ছ। বর্ষাকালে এ ঝর্ণার দৃশ্য দেখা গেলেও ঝর্ণাতে নামা বেশ কঠিন। বছরের বেশিরভাগ সময় দেশী বিদেশী পর্যটকে ভরপুর থাকে। রাস্তার পাশেই শৈল প্রপাত এর অবস্থান হওয়ায় এখানে পর্যটকদের ভিড় বেশি দেখা যায়। এখানে দুর্গম পাহাড়ের কোল ঘেঁষা আদিবাসী বম সমপ্রদায়ের বম তরুণীরা আপনাকে স্বাগত জানাবে। এখান থেকে কিনে নিতে পারেন আদিবাসীদের হাতের তৈরি নানা পণ্য।
#নীলগিরি:
আকাশ ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছা পূরণ করতে চাইলে যেতে হবে বান্দরবনের নীলগিরি। নীলগিরি গেলে আকাশ নিজে এসে ধরা দেবে আপনার হাতে। মাথার উপর নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা খেলা করে নীলগিরির পাহাড়ে। অপরূপ সৌন্দর্য্যের এক নীলাভূমি এই নীলগিরি। নীলগিরির কারণে বান্দরবানকে বাংলাদেশের দার্জিলিং বলা হয়। শীতকাল এবং বর্ষাকাল দুই ঋতুতেই এইখানে ভ্রমণে অনেক বেশি আনন্দ। তবে বর্ষাকালে ভ্রমণে গেলে বেশী মজা পাওয়া যায়। কারণ এই সময়ে মেঘের অপরূপ নৃত্য দেখতে দেখতেই দিন বয়ে যায়।
যারা এডভেঞ্চার পছন্দ করেন তাদের জন্য রাতের নীলগিরি হতে পারে উৎকৃষ্ট স্থান। নীলগিরি যাওয়ার পথে আপনি দেখে যেতে পারেন বান্দরবানের অপার সৌন্দর্যময় শৈলপ্রপাত। জেলা সদর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের চূড়ায় নীলগিরির অবস্থান। নীলগিরি (Nilgiri) যেন প্রকৃতির এক অনন্য দান।
নীলগিরির কাছাকাছি রয়েছে বেশ কয়েকটি ম্রো উপজাতীয় গ্রাম। নীলগিরির একদম কাছে কাপ্রু পাড়া, আপনি সহজেই পরিদর্শন করে ম্রো আদিবাসী সম্পর্কে জানতে পারবেন। নীলগিরিতে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প। ফলে এখানে নিরাপত্তার কোন ঘাটতি নেই। আপনার যে কোন প্রয়োজনে সেনা সদস্যরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। দুর্গম পাহাড়ে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রে গড়ে তোলা হয়েছে আকাশ নীলা, মেঘদূত, নীলাতানা নামে পর্যটকদের জন্য সকল সুবিধা সম্বলিত তিনটি কটেজ। কটেজগুলো রাত্রি যাপনের জন্য ভাড়া পাওয়া যায়। এখানে রয়েছে দুইটি রেস্টুরেন্টও। পাহাড়ি পথ পেরিয়ে নীলগিরিতে পৌঁছেই রেস্টুরেন্টে পেট পুরে খাওয়া যায়। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ৫০টাকা। আর পার্কিং এর জন্য ১০০-৪০০টাকা গুনতে হবে।
#কীভাবে_যাবেনঃ
ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির গাড়ি ছেড়ে যায়। যেমন শ্যামলি, হানিফ, ইউনিক, এস আলম, সেন্টমা্টিনস পরিবহন- এর যেকোনো একটি বাসে চড়ে আপনি বান্দরবানের যেতে পারেন। রাত ১০ টা-সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কলাবাগান, সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে এসব বাস বান্দরবানের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। নন এসি বাসে জন প্রতি ভাড়া ৬২০-৬৫০ টাকা। এসি ৯৫০-১৫০০ টাকা।
#চাঁদের_গাড়িঃ
স্বর্ণমন্দির, নীলাচল, প্রান্তিক লেক আর মেঘলা ঘুরে আসতে খরচ পড়বে ২৫০০-৩০০০ টাকা (দামাদামি করে নিবেন)।
নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, মিলনছড়ি আর চিম্বুক ঘুরতে লাগবে ৫৫০০টাকার মত (প্যাকেজ অনুযায়ী)।
#খাবারঃ
তাজিংডং রেস্তোঁরা, ফিস্ট রেস্টুরেন্ট, কলাপাতা রেস্টুরেন্ট খাবারের জন্য বেশ ভালো। সকাল, দুপুর, রাত তিন-বেলার খাবার-ই খেতে পাবেন।
#কোথায়_থাকবেনঃ
বান্দরবানে অসংখ্য রিসোর্ট, হোটেল, মোটেল এবং রেস্টহাউজ রয়েছে। যেখানে ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় রাত্রিযাপন করতে পারবেন।
হলিডে ইন রিসোর্ট: মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের বিপরীতে ছোট্ট পাহাড়ের চূড়ায় হলিডে ইন রিসোর্ট। এখানে ছোটছোট অনেকগুলো কটেজ রয়েছে। ফোন-০৩৬১-৬২৮৯৬।
হিলসাইড রিসোর্ট: বান্দরবান-চিম্বুক সড়কের ৫ কিলোমিটার নামকস্থানে অবস্থিত মিলনছড়ি। এখানে রয়েছে উন্নত পরিবেশে রাত্রি যাপনের সু-ব্যাবস্থা। মোবাইল-০১৫৫৬৫৩৯০২২।
হোটেল ফোর স্টার: বান্দরবান শহরে অবস্থিত হোটেল ফোরস্টার। এখানে এসি এবং নন এসি দু রকমের রুম রয়েছে। হোটেলের প্রতিটি কক্ষে রয়েছে টেলিভিশন। ফোন-০৩৬১-৬২৪৬৬।
হোটেল থ্রী স্টার: এটি বান্দরবান বাস স্টপের পাশে অবস্থিত। নীলগিরির গাড়ী এই হোটেলের সামনে থেকে ছাড়া হয়। এটি ৮/১০ জন থাকতে পারে ৪ বেডের এমন একটি ফ্ল্যাট। প্রতি নন এসি ফ্ল্যাট-২৫০০ টাকা, এসি-৩০০০ টাকা। ফোন: ০১৫৫৩৪২১০৮৯ / ০১৮১৩২৭৮৭৩১।
হোটেল রিভার ভিউ : জেলা শহরের মধ্যে সাঙ্গু নদীর পাশ্ববর্তী প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে উঠেছে হোটেল রিভার ভিউ। এখানে নিজস্ব রেস্টুরেন্টও রয়েছে। ফোন-০৩৬১-৬২৭০৭।
আপনি চাইলে নীলাচল স্কেপ রিসোর্টে থাকতে পারেন। নীলাচল স্কেপ রিসোর্টে তিনটি কটেজে ছয়টি কক্ষ আছে। প্রতিটি কক্ষের ভাড়া ৩ হাজার টাকা। এছাড়া রিসোর্টের অতিথিদের জন্য ভালো মানের খাবারের ব্যবস্থা করে থাকেন কর্তৃপক্ষ। যোগাযোগঃ ০১৭৭৭৭৬৫৭৮৯।
এছাড়া হোটেল হিল ভিউ (ফোন: ০১৮২৮৮৬৬০০০), হোটেল হিলটন (ফোন: ০১৭৪৭৬২৬১১১) এ থাকতে পারেন যা কিনা একদম বাস স্ট্যান্ডের পাশেই।
#প্ল্যানঃ
-প্রথম দিন ভোরে বান্দরবন নেমে হোটেলে চেকইন। সকালের নাস্তা পেট ভরে করবেন। এরপর সোজা চলে যাবেন স্বর্ণমন্দির। এর পর প্রান্তিক লেক। সবুজে ঘেরা আর মাঝখানে স্বচ্ছ পানির এক সুন্দর পরিবেশে কিছু সময় কাটিয়ে এরপর যাবেন মেঘলাতে। সেখানে ঝুলন্ত ব্রীজে বসে আড্ডা মেরে নিবেন ছোটখাট। এরপর চলে যাবেন নীলাচল। চলবে পাহাড় উপভোগ সুর্যাস্ত পর্যন্ত ।
-দ্বিতীয়দিন ভোর বেলা (এই ৭-৮টা আর কী) নাস্তা করেই রওনা দেবেন নীলগিরীর উদ্দেশ্যে। যেতে পথেই পেয়ে যাবেন মিলনছড়ি । সেখানে সাংগু নদীর কলকল বয়ে যাওয়া দেখতে দেখতেপাহাড়ি উঁচু নিচু রাস্তা ধরে চলে যাবেন মেঘের রাজ্য নীলগিরিতে। মেঘবালিকাদের সাথে মিতালী আর মেঘবালকের সাথে জলকেলি করে ফিরে আসবেন চিম্বুক পাহাড়ে। এবার পাহাড়ের সাথে পাহড়ের মিলন দেখে সোজা চলে যাবেন উপজাতীয় গ্রাম । সম্ভব হলে সেখানে দু-একটি পাহাড়ি গান শুনে, চলে যাবেন শৈল প্রপাতের জলধারায় কলকল বয়ে যাওয়া জলের ধারে সেলফি আর ছবি তুলতে।
শরীর সুস্থ রাখুন, দেশকে ঘুরে ফিরে দেখুন! মনও সুস্থ থাকবে 🙂
Never lose hope, never stop travelling. 🙂
Post Copied From:Ariful Huda Ashik>Travelers of Bangladesh (ToB)