৮০০০ টাকায় দার্জিলিং, মিরিক, নেপালের এক অংশ, লামাহাটা ঘুরে আসার ভ্রমন বিলাসের গল্প।

আমি এবং আমার ১ বন্ধুর ৮০০০ টাকায় দার্জিলিং, মিরিক, নেপালের এক অংশ, লামাহাটা ঘুরে আসার ভ্রমন বিলাসের গল্প।
দার্জিলিং ৩ দিন, মিরিক ১ দিন, লামাহাটা ১ দিন, নেপালে ১ দিন এবং যাওয়া-আসা মিলিয়ে ৭ দিনের ট্যুর ছিল আমাদের।
শুরুর দিন:
রাত ১১.৩০ এ মিরপুর থেকে SR পরিবহনে যাত্রা = ৮৫০ টাকা
বর্ডারে SR পরিবহনের লোক ১০০ টাকায় ইমিগ্রেশন পার করে দিবে। ওখানে সিন্ডিকেট আছে ওদের। ওপারে যাবার পর আরো ১০০ দিতে হবে।
বাংলা টাকা রুপি করলে ভালো রেট পাওয়া যায়, তবে সাথে কিছু ডলার রাখলে ভাল। (.৮১ রুপি = ১ টাকা)
বর্ডার থেকে অটোতে করে বাস স্ট্যান্ড = ৩০ রুপি
বাসে করে শিলিগুড়ি = ৬০ রুপি (বাসের কন্ডারটারদের ব্যবহার খুবই ভাল এবং Helpful)
শিলিগুড়িতে বিভিন্ন লোক (দালাল) ধরবে যে, দার্জিলিং গিয়ে হোটেল পাওয়া যাবেনা। কথাটা সিজনে গেলে অনেকটা সত্য, কিন্তু অফ-সিজনে Available হোটেল পাওয়া যায়। Best হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে হোটেল বুক করে গেলে।
রুম ভাড়া = ৪০০ রুপি(প্রতিজন)

ভ্রমণের প্রথম ৩ দিন (১ম+২য় +৩য় দিন)- দার্জিলিং:
পুরো দার্জিলিং এর ১৫ টা পিকনিক স্পট ঘুরতে হলে মোট ৩ দিন সময় লাগবে। ওখানে চার্ট করে দেয়া আছে ঘুরার জায়গা। আমরা প্রথম ৩ দিন শুধু দার্জিলিং ঘুরে কাটাই।দার্জিলিং ঘুরার স্পটসমূহঃ

03 points
— Tiger Hill (SUN RISE)
— Batasia Loop (টয় ট্রেন এই লুপের মধ্য দিয়ে ঘুরে যায়)
— Ghoom Monastry (পৃথিবীর সবচেয়ে উচুতে অবস্থিত Rail Station)
— Rock Garden (পাথরের বড় বড় খন্ড দিয়ে তৈরি পাহাড়, ঝর্না)
05 points
— Japanese Temple
— Lal Kothi
— Ava Art Gallery
— Dhirdham Temple
— Peace Pagoda
07 points
— Zoo
— Himalayan Mountaineering Institute
— Ropeway (Cable Car)
— Tenzing Rock
— Tea Garden
— Lebong Race Course
— Darjeeling Gorkha Stadium
এগুলো ছাড়া দার্জিলিং এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে মল রোড। আমরা যে কয়দিন দার্জিলিং ছিলাম প্রতিদিন কম করে হলেও ৩-৪ বার করে মল রোডে যেতাম। এবং বাংলাদেশে ফেরার সময় সবচেয়ে বেশি মিস করেছি মল রোড।

খাবারঃ
প্রথমেই স্ট্রীট ফুেডর যেসব খাবারের কথা আসবে তার মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত হচ্ছে মম। Vegetable(৩০ ) আর Chicken এই ২ ধরনের মম পাওয়া যায়। এছাড়াও আছে চাওমিন, মাশরুম ইত্যাদি।
আর হোটেলের খাবারের মধ্যে আছে Steamed rice, ছোলা বাটোরা, ডাল মাখানি সহ আরো অনেক রকমের বাহারি খাবার। এবং মজার ব্যাপার হছে ওখানে ৯৯ রুপিতে আপনি যেই KFC পাবেন সেই KFC বাংলাদেশে ৫০০ টাকার নিচে পাবেন না।
আর হোটেলে Meal না নিলেই ভাল হবে, তাতে খুজে খুজে বাহারি রকমের খানা বের করার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবেন।

কেনাকাটাঃ
দার্জিলিং এ বিভিন্ন কাপড়-খাবারের দাম অনেক কম। সাথে কিছু extra টাকা রাখবেন কেনাকাটার জন্য। “Big Bazar” নামে একটি সুপার সপ আছে। ওখানে কম দামে বিভিন্ন চকলেট পাওয়া যায়। ও, দার্জিলিং এর চাপাতা আনতে ভুলবেন না।

লামাহাটাঃ (৪র্থ দিন)
দার্জিলিং থেকে জিপে করে জোড়বাংলায় নামলেই আপনার জন্য অফুরন্ত পাইন বন নিয়ে অপেক্ষায় আছে লামাহাটা। সম্পূর্ন দূষনমুক্ত একটি গ্রাম লামাহাটা। ফটোগ্রাফির জন্য সুন্দর জায়গা। সাথে পাবেন Tree House, এবং পাইন বনের মধ্য দিয়ে পাহাড়ের মাথায় উঠলে পাবেন অসম্ভব সুন্দর সবুজ পানির লেক।
জিপ হোটেলের ম্যানেজারের মাধ্যমে ঠিক করবেন নাহলে টাকা বেশি নিবে। সারাদিনের জন্য রিজার্ভ জিপ ভাড়া ২৫০০ রুপি। শেয়ারে গেলে ৬০০/৭০০ রুপির মধ্যে হয়ে যাবে।

দার্জিলিং থেকে মিরিকঃ (৫ম দিন)
উচ্চতা ৪৯০৫ ফুট। দার্জিলিং থেকে দূরত্ব ৪৯ কি.মি। দার্জিলিং থেকে নেপাল সীমান্তের পাশ দিয়ে মিরিক এর পথ। মিরিকে উল্ল্যেখযোগ্য হছে সুমেন্দু হ্রদ। হ্রদের একদিকে বাগান, অন্য দিকে পাইন গাছের সারি। আর দুই পাড়কে একসঙ্গে যুক্ত করেছে রামধনু সেতু। হ্রদে ঘুরার জন্য বোট আছে, আছে ঘোড়ায় চড়ার ব্যবস্থা (জন প্রতি ১০০ রুপি)। এখান থেকে নেপালের পাহাড়ের অনেকখানি অংশ দেখা যায়।
ilam, Nepal: (শেষ দিন)
নেপালের বেশ কিছু অংশ ভারতের সরকারের অধীনে। তাই 0 পয়েন্ট থেকে জিপে করে অনেকখানি ভিতরে গেলেও ভারতের হাওয়াই গায়ে লাগে। নেপালের বর্ডারের কাছে জিপ থেকে নেমে ট্রানজিট ভিসা show করে বর্ডার পার হওয়ার পর প্রথম জেলা হচ্ছে ilma. এখানকার আর্থিক অবস্থা খারাপ হলেও ২ মিনিট পর পর মদের দোকান চোখে পরে। এখান থেকে কাঠমুন্ডুর বাস পাওয়া যায়। এখানকার মানুষ বাংলা ভালো বোঝেনা। হিন্দিতে কথা বলতে হয়। এবং নেপালি মুদ্রার চেয়ে Indian রুপির মূল্য ও কদর অনেক বেশি।

ভ্রমন শেষে পূর্বের পথ ধরেই আবার আমরা নিজ মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফেরা করি। আশার সময় বুড়িমারি বর্ডারে বুড়ির হোটেল নামে একটা হোটেল আছে। পারলে খেয়ে আসবেন।
আবার হয়তো লিখতে বসব নতুন কোন ভ্রমণকাহিনী নিয়ে।
ভাল থাকবেন এবং সুন্দর হোক আপনার ভ্রমণ।

Post Copied From:Rakib Bin Alamgir‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

র্জিলিং, মিরিক, নেপালের এক অংশ, লামাহাটা ঘুরে আসার ভ্রমন বিলাসের গল্প।

আমি এবং আমার ১ বন্ধুর ৮০০০ টাকায় দার্জিলিং, মিরিক, নেপালের এক অংশ, লামাহাটা ঘুরে আসার ভ্রমন বিলাসের গল্প।
দার্জিলিং ৩ দিন, মিরিক ১ দিন, লামাহাটা ১ দিন, নেপালে ১ দিন এবং যাওয়া-আসা মিলিয়ে ৭ দিনের ট্যুর ছিল আমাদের।
শুরুর দিন:
রাত ১১.৩০ এ মিরপুর থেকে SR পরিবহনে যাত্রা = ৮৫০ টাকা
বর্ডারে SR পরিবহনের লোক ১০০ টাকায় ইমিগ্রেশন পার করে দিবে। ওখানে সিন্ডিকেট আছে ওদের। ওপারে যাবার পর আরো ১০০ দিতে হবে।
বাংলা টাকা রুপি করলে ভালো রেট পাওয়া যায়, তবে সাথে কিছু ডলার রাখলে ভাল। (.৮১ রুপি = ১ টাকা)
বর্ডার থেকে অটোতে করে বাস স্ট্যান্ড = ৩০ রুপি
বাসে করে শিলিগুড়ি = ৬০ রুপি (বাসের কন্ডারটারদের ব্যবহার খুবই ভাল এবং Helpful)
শিলিগুড়িতে বিভিন্ন লোক (দালাল) ধরবে যে, দার্জিলিং গিয়ে হোটেল পাওয়া যাবেনা। কথাটা সিজনে গেলে অনেকটা সত্য, কিন্তু অফ-সিজনে Available হোটেল পাওয়া যায়। Best হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে হোটেল বুক করে গেলে।
রুম ভাড়া = ৪০০ রুপি(প্রতিজন)
ভ্রমণের প্রথম ৩ দিন (১ম+২য় +৩য় দিন)- দার্জিলিং:
পুরো দার্জিলিং এর ১৫ টা পিকনিক স্পট ঘুরতে হলে মোট ৩ দিন সময় লাগবে। ওখানে চার্ট করে দেয়া আছে ঘুরার জায়গা। আমরা প্রথম ৩ দিন শুধু দার্জিলিং ঘুরে কাটাই।দার্জিলিং ঘুরার স্পটসমূহঃ
03 points
— Tiger Hill (SUN RISE)
— Batasia Loop (টয় ট্রেন এই লুপের মধ্য দিয়ে ঘুরে যায়)
— Ghoom Monastry (পৃথিবীর সবচেয়ে উচুতে অবস্থিত Rail Station)
— Rock Garden (পাথরের বড় বড় খন্ড দিয়ে তৈরি পাহাড়, ঝর্না)
05 points
— Japanese Temple
— Lal Kothi
— Ava Art Gallery
— Dhirdham Temple
— Peace Pagoda
07 points
— Zoo
— Himalayan Mountaineering Institute
— Ropeway (Cable Car)
— Tenzing Rock
— Tea Garden
— Lebong Race Course
— Darjeeling Gorkha Stadium
এগুলো ছাড়া দার্জিলিং এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে মল রোড। আমরা যে কয়দিন দার্জিলিং ছিলাম প্রতিদিন কম করে হলেও ৩-৪ বার করে মল রোডে যেতাম। এবং বাংলাদেশে ফেরার সময় সবচেয়ে বেশি মিস করেছি মল রোড।
খাবারঃ
প্রথমেই স্ট্রীট ফুেডর যেসব খাবারের কথা আসবে তার মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত হচ্ছে মম। Vegetable(৩০ ) আর Chicken এই ২ ধরনের মম পাওয়া যায়। এছাড়াও আছে চাওমিন, মাশরুম ইত্যাদি।
আর হোটেলের খাবারের মধ্যে আছে Steamed rice, ছোলা বাটোরা, ডাল মাখানি সহ আরো অনেক রকমের বাহারি খাবার। এবং মজার ব্যাপার হছে ওখানে ৯৯ রুপিতে আপনি যেই KFC পাবেন সেই KFC বাংলাদেশে ৫০০ টাকার নিচে পাবেন না।
আর হোটেলে Meal না নিলেই ভাল হবে, তাতে খুজে খুজে বাহারি রকমের খানা বের করার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবেন।
কেনাকাটাঃ
দার্জিলিং এ বিভিন্ন কাপড়-খাবারের দাম অনেক কম। সাথে কিছু extra টাকা রাখবেন কেনাকাটার জন্য। “Big Bazar” নামে একটি সুপার সপ আছে। ওখানে কম দামে বিভিন্ন চকলেট পাওয়া যায়। ও, দার্জিলিং এর চাপাতা আনতে ভুলবেন না।
লামাহাটাঃ (৪র্থ দিন)
দার্জিলিং থেকে জিপে করে জোড়বাংলায় নামলেই আপনার জন্য অফুরন্ত পাইন বন নিয়ে অপেক্ষায় আছে লামাহাটা। সম্পূর্ন দূষনমুক্ত একটি গ্রাম লামাহাটা। ফটোগ্রাফির জন্য সুন্দর জায়গা। সাথে পাবেন Tree House, এবং পাইন বনের মধ্য দিয়ে পাহাড়ের মাথায় উঠলে পাবেন অসম্ভব সুন্দর সবুজ পানির লেক।
জিপ হোটেলের ম্যানেজারের মাধ্যমে ঠিক করবেন নাহলে টাকা বেশি নিবে। সারাদিনের জন্য রিজার্ভ জিপ ভাড়া ২৫০০ রুপি। শেয়ারে গেলে ৬০০/৭০০ রুপির মধ্যে হয়ে যাবে।
দার্জিলিং থেকে মিরিকঃ (৫ম দিন)
উচ্চতা ৪৯০৫ ফুট। দার্জিলিং থেকে দূরত্ব ৪৯ কি.মি। দার্জিলিং থেকে নেপাল সীমান্তের পাশ দিয়ে মিরিক এর পথ। মিরিকে উল্ল্যেখযোগ্য হছে সুমেন্দু হ্রদ। হ্রদের একদিকে বাগান, অন্য দিকে পাইন গাছের সারি। আর দুই পাড়কে একসঙ্গে যুক্ত করেছে রামধনু সেতু। হ্রদে ঘুরার জন্য বোট আছে, আছে ঘোড়ায় চড়ার ব্যবস্থা (জন প্রতি ১০০ রুপি)। এখান থেকে নেপালের পাহাড়ের অনেকখানি অংশ দেখা যায়।
ilam, Nepal: (শেষ দিন)
নেপালের বেশ কিছু অংশ ভারতের সরকারের অধীনে। তাই 0 পয়েন্ট থেকে জিপে করে অনেকখানি ভিতরে গেলেও ভারতের হাওয়াই গায়ে লাগে। নেপালের বর্ডারের কাছে জিপ থেকে নেমে ট্রানজিট ভিসা show করে বর্ডার পার হওয়ার পর প্রথম জেলা হচ্ছে ilma. এখানকার আর্থিক অবস্থা খারাপ হলেও ২ মিনিট পর পর মদের দোকান চোখে পরে। এখান থেকে কাঠমুন্ডুর বাস পাওয়া যায়। এখানকার মানুষ বাংলা ভালো বোঝেনা। হিন্দিতে কথা বলতে হয়। এবং নেপালি মুদ্রার চেয়ে Indian রুপির মূল্য ও কদর অনেক বেশি।
ভ্রমন শেষে পূর্বের পথ ধরেই আবার আমরা নিজ মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফেরা করি। আশার সময় বুড়িমারি বর্ডারে বুড়ির হোটেল নামে একটা হোটেল আছে। পারলে খেয়ে আসবেন।
আবার হয়তো লিখতে বসব নতুন কোন ভ্রমণকাহিনী নিয়ে।
ভাল থাকবেন এবং সুন্দর হোক আপনার ভ্রমণ।

Post Copied From:Rakib Bin Alamgir‎>Travelers of Bangladesh (ToB)