এক দিনে দুই জমিদারবাড়ি

১. পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি (তিন মহলা)
২. বালিয়াটি জমিদারবাড়ি

(আগের পোস্টে কিছু তথ্য কম ছিল যা অনেকেই ইনবক্স করে জানতে চেয়েছেন। আশা করি এখানে তা পাবেন। আগের পোস্টটি মুছে ফেলার জন্য দু:খিত।)

গাবতলি থেকে ‘এস-বি-লিংক’ এ পাকুটিয়া যেতে পারেন। ভাড়া জনপ্রতি ৯০ টাকা। বাস থেকে নেমেই চোখে পড়বে জমিদার বাড়ি।

এখানে দেখবেন একই নকশার উপর তিনটি প্যালেস। তিনটি স্থাপনাই অপূর্ব সুন্দর। আপনার অপছন্দ হবে না।

প্রতিটি মহলের রয়েছে নিজস্ব সৌন্দর্য। লতাপাতার চমৎকার কারুকাজ আপনাকে মুগ্ধ করবে। প্রতিটি বাড়ীর মাঝ বরাবর মুকুট হিসাবে লতা ও ফুলের অলংকরণে কারুকার্য মন্ডিত পূর্ণাঙ্গ দুই সুন্দরী নারী মুর্তি এবং সাথে এক মূয়ূর সম্ভাষণ জানাচ্ছে অথিতিকে। কার্নিশের উপর রয়েছে বিভিন্ন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা অসংখ্য সুন্দর সুন্দর ছোট আকৃতির নারী মূর্তি। তিনটি স্থাপনাই অপূর্ব শিল্প সুষমামণ্ডিত। এছাড়াও দেখবেন নাট মন্দির, বিশাল মাঠ এবং দ্বিতল নাচঘর।

‘উপেন্দ্র সরোবর’ নামে বিশাল একটি পুকুর এই উপজেলায় আছে যা স্থানীয় ভাবে ‘বারো ঘাটলা পুকুর’ নামে পরিচিত।(এখানে যেতে হলে সময় ও খরচ একটু বেশি লাগবে। আপনাদের হাতে সময় থাকলে যেতে পারেন। )

পাকুটিয়া টাংগাইল এ হলেও কাছাকাছি টাংগাইলের বিখ্যাত চমচম পাইনি। তবে হরেক রকম মিষ্টি পাবেন যা তাজা এবং বানানোর প্রক্রিয়াও কিছুটা দেখতে পাবেন।

পাকুটিয়া দেখে চলে যান বালিয়াটিতে। পাকুটিয়া থেকে বাসে বা সিএনজিতে যেতে পারেন। ভাড়া নিবে ১৫/৩০ টাকা। (ঈদের জন্যা আমাদের থেকে ৪০ টাকা করে নিয়েছে)

বালিয়াটিকে জমিদারবাড়ি না বলে রাজপ্রাসাদই বলা চলে। লিখে এর সৌন্দর্য বর্ণনা করা সম্ভব না। এখানে রয়েছে চারটি প্রাসাদ আর এদের অন্দরমহল। প্রাসাদে প্রবেশের জন্য রয়েছে চারটি সিংহদুয়ার। প্রাসাদের সামনে ও পেছনে বিশাল পুকুর। ‘রং মহল’ নামে একটি প্রাসাদে জাদুঘর করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে জমিদারদের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিশপত্র। জমিদারদের ব্যবহৃত দৃষ্টিনন্দন অনেকগুলো আয়না আছে সেখানে। জমিদারদের আয়নায় দেখতে পারেন নিজেকে।😜😜
প্রাসাদের পেছনে অন্দরমহল একদম পেছনে দৃষ্টিনন্দন পুকুর।

সব দেখে চলে আসুন সাটুরিয়া (ভ্যান/সিএনজি ভাড়া ২০/১৫)। সাটুরিয়া থেকে এস-বি-লিংকে ঢাকা (ভাড়া ৭৫)।

যাতায়াত: মোট খরচ হবে ২০০/২২০ টাকা। (গাবতলি-পাকুটিয়া-সাটুরিয়া-গাবতলি) বাকিটা আপনার পার্সোনাল খরচ।

খাওয়াদাওয়া : পাকুটিয়া ও বালিয়াটিতে ছোটখাটো খাবার হোটেল আছে। সারুটিয়ার ভালো মানের খাবার হোটেল পাবেন।

এটা এক দিনের ট্যুর। সকাল ৭/৮ টায় বাসে উঠলে রাত ৭/৮ টায় ফিরে আসতে পারবেন।(সময় মত রওনা দিলে)

পাকুটিয়ার সবসময় খোলাই থাকে। একটি বাড়ি কলেজ হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে। বাকি দুইটাও ব্যবহার করা হচ্ছে । তাই অফডে তে গেলে ভালো করে ঘুরতে পারবেন।যেকোন দিন গেলেও সমস্যা নাই।

আর বালিয়াটি রবিবার বন্ধ। সোমবার অর্ধ-দিবস খোলা। (সরকারি ছুটির দিন বন্ধ)

বাইক নিয়ে যাওয়া যাবে।(রাস্তা খুব বেশি খারাপ না)😂😂

জমিদারবাড়িতে এখন জমিদার নাই তাই হাতি ঘোড়াও নাই। কেউ হাতি ঘোড়া দেখার আশা করে যাবেন না।😒😒

সব মিলিয়ে ৫০০ টাকায় খুব ভালোভাবে ঘুরে আসতে পারবেন। চাইলে ৩০০/৪০০ টাকা দিয়েও সম্ভব।

ছবি তোলার জন্য জায়গাটা দারুণ

Post Copied From:Shahadat H Apu‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

এক এর ভিতর ছয়

(ধনবাড়ী, করটিয়া,মহেরা,দেলদুয়ার,পাকুটিয়া, বালিয়াটি):
ব্যক্তিগত গাড়ী ছাড়া সবগুলো জমিদার বাড়ী দেখে ফিরা সম্ভব না। আমরা 10 জন একটা হায়েস ভাড়া ( হায়েস ভাড়া 6000 টাকা সবকিছু সহ) নিয়ে শুক্রবার ছুটির দিনে ঢাকার আসাদ গেট হতে ভোর সাড়ে 5 টায় রওনা দেই।

ধনবাড়ী জমিদার বাড়ীঃ
আসাদগেট হতে সাভার – নবীনগর-চন্দ্রা-মির্জাপুর-পাকুল্লা- টাংগাইল বাই পাস- এলেঙ্গা হয়ে জয়দেবপুর টাংগাইল জামালপুর হাইওয়ে ধরে এগোতে থাকি।কালিহাতি-ঘাটাইল-মধুপুর বাস স্ট্যান্ড পার হয়ে টাংগাইল ধনবাড়ীতে পৌছেতে প্রায় সকাল সাড়ে 9 টা। অাসাদগেট হতে প্রায় 150 কিমি রাস্তা।মধুপুর বাস স্ট্যান্ড হতে প্রায় 12 কিমি এগোলে ধনবাড়ী বাস স্ট্যান্ড এর আগেই উপজেলা কমপ্লেক্স এর কাছাকাছি হাতের ডানে তাকালে দেখা মিলবে নওয়াব আলী আহসান আলী রয়েল রির্সোট লিখা তোরন।
এখানে ধনবাড়ী নওয়াব প্যালেস. নওয়াব ইনস্টিটিউশন, জাদুঘর, রয়েল রির্সোট, শাহী জামে মসজিদ,ইদগাহ দেখে ঠিক 10:30 টায় করটিয়া জমিদার বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা করি।

করটিয়া জমিদার বাড়ীঃ
ধনবাড়ী হতে আবার ফিরতি পথে মধুপুর-ঘাটাইল-কালিহাতি-এলেঙ্গা-টাংগাইল বাই পাস পার হয়ে হাতের বামে করটিয়া বাইপাস রোড ধরে কিছুদুর এগোলে করটিয়া জমিদার বাড়ী ।ধনবাড়ী হতে প্রায় 75 কিমি রাস্তা।জ্যাম ছিল না বলে করটিয়া জমিদার বাড়ী পৌছাতে দুপুর 12 টা । দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ লেখা সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অনেক কস্টে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করলাম। কিন্তু ছবি তুলতে নিষেধ করল। এখানে লাল রঙের করটিয়া জমিদার বাড়ীর মূল ভবন টা দেখতে পেলাম।ভিতরে বিশাল পুকুর। পুকুরের পাশে রোকেয়া মহল নামে আরেকটি প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্রাসাদ দেখতে পেলাম। রোকেয়া মহল এখন একটি স্কুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।এখানে বেশি সময় নস্ট করার দরকার নাই। 30 মিনিটই যথেষ্ট।
দুপুর সাড়ে 12 টায় রওনা দিলাম মহেরা জমিদার বাড়ীর উদ্দেশ্যে।

মহেরা জমিদার বাড়ীঃ

করটিয়া হতে করটিয়া ইউনিভাসিটি কলেজ এর সামনে দিয়ে করটিয়া বাইপাস দিয়ে আবার ঢাকা – টাংগাইল মহাসড়কে। নাটিয়াপাড়া বাস স্ট্যান্ড পার হয়ে হাতের বামে চোখে পড়বে মহেরা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার রোড লিখা সাইনবোর্ড।এই রাস্তা ধরে 3/4 কিমি ভিতরে মহেরা জমিদার বাড়ী। যা এখন মহেরা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পুরো জমিদার বাড়ী ঘুরে দেখতে কিছুটা সময় লাগবে। এখানে ঢুকতে 50 টাকা লাগবে। দুপুর 1 টায় মহেরা পৌছে সব দেখে বের হলাম 2:00 টায়। মহরা ক্যান্টিন হতে খাবার কিনে গাড়ীতে উঠলাম। কেননা খাবার খেতে হবে গাড়ীতে চলতে চলতে। সময় নস্ট করা যাবে না।

এবার গন্তব্য দেলদুয়ার জমিদার বাড়ী।

দেলদুয়ার জমিদার বাড়ীঃ

মহেরা জমিদার বাড়ী হতে বের হয়ে পাকুল্লা- দেলদুয়ার রোড দিয়ে দেলদুয়ার বাজারের কাছাকাছি এসে জমিদার বাড়ী পৌছাতে দুপুর 2:45। এখানে খুব দ্রুত জমিদার বাড়ীর মসজিদ, কবরস্থান দেখা যাবে। জমিদার বাড়ীর গেট তালা দেওয়া থাকে। পিছন দিয়ে ঘুরে ভিতরে যাওয়া যায়। জমিদার বাড়ীটা ছোট হলেও পরিবেশটা সুন্দর। সামনে বিশাল পুকুর। 3:10 মিনিটে এখান থেকে রওনা দিলাম পাকুটিয়া জমিদার বাড়ীর উদ্দেশ্যে।

পাকুটিয়া জমিদার বাড়ীঃ
দেলদুয়ার হতে পাকুটিয়া যেতে রাস্তার পাশে দেখা মিলবে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ীর।পাকুটিয়া জমিদার বাড়ীটি একটি কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আরেকটা ভবন প্রায় ধ্বংসের পথে। এখানে 5 মিনিট সময় নিয়ে দেখা শেষ করতে হল। বৃস্টি হচ্ছিল তাই নামতে পারলাম না।এবার গন্তব্য বালিয়াটি জমিদার বাড়ী।

বালিয়াটি জমিদার বাড়ীঃ
পাকুটিয়া হতে সাটুরিয়া রোড ধরে বালিয়াটি জমিদার বাড়ীর দেখা মিলবে সাটুরিয়া বাস স্ট্যান্ড পৌছানোর আগেই।এখানে ঢুকতে 20 টাকা টিকেট।এখানে 4 টা বড় প্রাসাদ সহ ছোট বড় অনেক প্রাসাদ রয়েছে। পিছনে বিশাল পুকুর। সম্ভবত তাতে 6 টা ঘাট। জমিদার বাড়ীর পিছনে একটি মন্দির আছে।সময় থাকলে দেখে নিতে পারেন। 6 টায় বালিয়াটি হতে রওনা দিলাম। সাভার হয়ে আসাদ গেট পৌছাতে রাত 8:30 টা । এটাকে আসলে ট্যুর বললে ভুল হবে, এটা ছিল একটা চ্যালেঞ্জ। একদিনে 6 জমিদার বাড়ী দেখা সম্ভব। কেউই তা বিশ্বাস করতে চায়নি। গুগল অনেক হেল্প করেছে লোকেশন খুজে পেতে। লোকেশন আগে থেকে চিনা ছিল্। তাই খুজতে সময় নস্ট হয়নি।

Post Copied From:Nahida Akter‎>Travelers of Bangladesh (ToB