ঝালকাঠি যাওয়ার প্রথম উদ্দেশ্য ছিল ভিম্রুলি।ভাসমান বাজার।কিন্তু শীতকাল + কয়েকটি কারন এ যেতে পারিনি।আর একটি উদ্দেশ্য ছিল আত্মীয়দের বাসা। সদরঘাট থেকে রওনা দিলাম সুন্দরবন – ১২ তে।রাতে কুয়াশা পরার ফলে লঞ্চ ঘাট দিয়েছে ৮ টার কিচ্ছুক্ষন আগে। সেই দিন টা পুরোটাই রেস্ট এ গেল :3
পরিক্ষার শেষের দিনই উঠি লঞ্চ এ।পরিক্ষার এ কয়েকদিন কোন ঘুম নেই।আবার সাথে ছিল এক বান্দর বন্ধু।মোট কথা সারা রাত যে অনান্য মানুষের ঘুমের ১২ টা বাজিয়েছি তা বলার বাকি রাখেনা :p । যেহেতু ভিম্রুলি ঘুরতে পারবনা।ঘুরলাম গাবখান ব্রিজ এ।যাওয়ার পথে আপনার চোখে পরবে আসংখ্য গাছপালায় ঘেরা সরূ পথ।গাবখান হল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উঁচু সেতূ।আসলেও বটে।গাবখান হেটে হেটে যেতে সময় লাগবে ৩০ মিন এর মত।তাছারা ১০ টাকা দিয়ে কলেজ মোড় দিয়ে যেত্ব পারবেন অটো তে।গাবখান এর উপরে উঠে আসলেই জিনিষটা টের পেলাম ইহা সর্বোচ্চ উঁচু সেতু।নিচ দিয়ে অনবরত বিভিন্ন লঞ্চ,মালবাহী শিপ জাচ্ছিল।তার সাথে আছে ছোট ছোট নৌকা। হাত দিয়ে নিচের সেই ১০০/১৫০ বছর আগের গাছপালার ডাল ধরতে পারবেন। সে এক দারুণ অনুভূতি। দিন শেষে বাসায় চলে আসলাম। বাই দ্যা রাস্তা এখানকার মাংসের চপ অনেক বিখ্যাত।ঝালকাঠি শহরব সাধনার মোড়ে। বাটি ২০ টাকা। চপ+বুটের ডাল।চপের দাম ৫/১০ টাকা।
দিন গেল।সকাল শুরু দেশাত্মবোধক গান দিয়ে। বিজয় দিবস।ইতিহাস তো সবাই জানে শুধু শুধু পোস্ট বড় করলাম না।ঝালকাঠির স্টেডিয়াম এ অনুষ্ঠান হচ্ছে।ছোট – বড় অনেকে নৃত্য পরিবেশন করল।গান গেল।সবার মুখে হাসি দেখলাম।ঢাকার মত এখানে কোথাও “মুন্নি বাদনাম কিংবা শেপ অফ ইউ” গান কানে আসল না।সব দোকানের সামনে পতাকা উড়ছে।বাসার ছাদে ছাদেও। আহ দারুণ লাগল।যাত্রা শুরু করলাম যত্রা,উদ্দেশ্য বরিশাল।বাসে যেতে সময় লেগেছে ৪০ মিন এর মত ভাড়া ৩০ টাকা করে। বরিশাল যেয়ে নামলাম রুপাতলি বাস স্টপেজ এ।অটো নিলাম।যাত্রাপথ বরিশাল-ভোলা রুটের বরিশাল ইউনিভার্সিটি।জন প্রতি ১০ টাকা অটোতে। ৫০ একর জায়গা নিয়ে ক্যাম্পাস টি গঠিত। ২০১১ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় এবং ২০১২ থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।এটা বরিশালের প্রথম এবং দেশের ৩৩ তম পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়। এর বাজেট ছিল 99.997M । অংকটা অনান্যগুলোর তুলনাউ অতটাও বড় না :p । ৫০ একর জমি নিয়ে ক্যাম্পাস+চারপাশে অপরুপ সবুজে ঘেরা।আগে বিশাল নদী।এখানে কেই বা না আসতে চাবে। মনোমুগ্ধকর এক পরিবেশ ♥
সেখান থেকে আটো নিয়ে গেলাম রুপাতলি তারপর নতুল্লাবাদ। রুপাতলি থেকে নতুল্লাবাদ জনপ্রতি ১০ টাকা অটো বা মাহেন্দ্রতে।নতুল্লাবাদ থেকে আবার মাহেন্দ্রতে উঠলাম।উদ্দেশ্য এবার গুঠিয়া মসজিদ। এটা গুঠিয়া তে অবস্থিত। যেতে সময় লাগবে ৪০/৫০ মিন মাহেন্দ্রতে।ভাড়া নিবে ৩০ টাকা। ১৬ ডিসেম্বর গেলাম সেখানে।যেয়ে দেখি এটাও ২০০৩ সালে ১৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।অপরুপ সৌন্দর্য কাকে বলে যদি না জানেন তাহলে এখানে চলে আসুন।বুঝে যাবেন।এটা ১৪ একর জমি নিয়ে গঠিত যেখানে আমাদের জাতীয় মসজিদ ৮.৩০ একর নিয়ে গঠিত।বুঝতেই পারতেসেন কি বিশাল জায়গা।এই ১৪ একর জমিতে আপনি দেখতে পারবেন একটি মসজিদ,বিশাল সাইজেএ ঈদগাহ, ৩ টি লেক,মাদ্রাসা,কবর এবং একটি অনাথ আশ্রম। এটা টুরিস্ট স্পট হিসেবেও বেশ পরিচিত।এটা তৈরিতে খরচ হয়েছিল 200M BDT। সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে গঠিত এই মসজিদ একবার এসে দেখলে যে বারবার ইচ্ছা হবে তা বলার বাকি রাখেনা।
সেখান থেকে আবার আসলাম নতুল্লাবাদ।বোগরা রোডের নাজিমস এর বিরিয়ানি খেলাম।এটা নাকি বরিশালের সবচেয়ে জোস জায়গা বিরিয়ানির জন্য।হতাস করেনি।আশানুরূপ এর চেয়ে একটু বেশিই পেয়েছি। সেখান থেকে গেলাম বিবির পুকুর। শহরের ভিতরেই অবস্থিত। এটা বরিশালের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং প্রাচীন একটু পুকুর।২০০ বছর পুরনো এই পুকুরর অবস্থা তেমন একটা ভালো চোখে পরল না।সেই নোংরা পানি। সেখান থেকে গেলাম মুক্তিযোদ্ধা পার্ক।লঞ্চ ঘাটের পাসেই অবস্থিত এটি।ভালোই জায়গাটি।পার্ক হিসেবে মানসম্মত। আহামরি কিছুনা।
এই ছিল বরিশাল ভ্রমন কাহিনী ২০১৭ এর। কোথাও মিস করেছি কিনা জানিনা।হয়ত আবারো ফিরে আসব এখানকার মানুষের ভাষা শুনতে এবং এদের আপ্যায়ন এর নমুনা আর একবার দেখতে।ভালো মানুষের সংখা যে দেশে এখনো কমেনি তা বুঝতে পারলাম।যেত্ব হবে ভিম্রুলি তেও।তাই উপদেশ দিব পেয়ারার সিজনে যেতে।অপরুপ সৌন্দর্য নিহিত। বাংলাদেশের একমাত্র ভাসমান বাজার।যেহেতু যেতে পারিনি তাই কোন ইনফো দিতে পারলাম না।ক্ষমা করবেন।
post Copied From:Durjoy Liw>Travelers of Bangladesh (ToB)