নিঝুম দ্বীপ

নিঝুম দ্বীপ সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে অনেকেই জেনেছেন কারো কারো হয়তো যাবার সৌভাগ্যও হয়েছে। সৌভাগ্য কেন বললাম তা সেখানে না গেলে আমি ওষুধ দেই কাজে আসবেনা যতক্ষন না নিঝুম হাসপাতালে গিয়ে মনের চিকিৎসা না করাবেন।
নিঝুম দ্বীপকে অনেকেই অনলাইনের তথ্য আর রিভিও দেখে ছোট্ট একটা দ্বীপ মনে করেন কিন্তু মনে রাখবেন অনলাইন আর বাসের লাইন দুটোই ভিন্ন একটি কল্পনা আর অন্যটি বাস্তবতা।
যারা সুন্দরবনকে একটি ব্যয়বহুল জায়গা মনে করেন তাদের জন্য নিঝুম দ্বীপ উত্তম জায়গা। এখানে আপনি সুন্দরবনের ফ্লেভার পাবেন। প্রচুর হরিনের দেখা পাবেন(কপাল ভালো হলে) তবে যতই কাইন্দা বুক ভাসান না কেন এখানে বাঘের দেখা পাইবেন না(কপাল ভালো হইলেও না)।
এখানে বীচ পাবেন, বন পাবেন, ওয়াচটাওয়ার, নদী খাল সাগর সব পাইবেন। প্রচুর তাজা মাছ পাইবেন। খেজুরের রস পাইবেন।
খাবার দাবার:- এখানে খাবার তুলনামূলক সস্তা। টেংরা, ইলিশ, রুই, কোরালসহ বিভিন্ন তাজা মাছ(অবশ্যই রান্না করা) খেতে পারবেন। যারা মাছ খান না তারা দেশি মুরগী আর হাসের মাংস খেতে পারেন। ভাত এখানেই চাষ করা চালের (মোটা ভাত)। কেউ যদি বাসমতি খেতে চান তবে পকেটে করে নিয়ে আসবেন। ভুলেও হরিনের মাংস খেতে চাইবেন না তাইলে আপনাকেই স্থানীয়রা হরিন বলে চালিয়ে দিতে পারে। সন্ধ্যায় বাজারে জিলেপী ভাজা হয় গরম গরম খেতে পারেন তবে হিসেব রাইখেন কয়টা খাচ্ছেন মজায় অনেকে কাউন্ট করতেই ভুলে যায়। খেজুরের রস খেতে পারেন তবে আমি রাতে নিজে গিয়ে চেক করে দেখছি তারা ঢাকনা ছাড়াই গাছ থেকে রস কালেক্ট করে তাতে বাদুর বা অন্য নিশাচর পাখি ইজিলি মুখ দিতে পারে আর তা থেকে নিপাহ ভাইরাসে আপনি চীতপটাং হতে পারেন। তাই রস খেলে নিজের ঝুঁকিতেই খাবেন আপনার কিছু হলে কর্তৃপক্ষ দায়ী না।
থাকার ব্যবস্থা:- বেশ কিছু রিসোর্ট আছে মোটামুটি মানের। সরকারী বা টানা বন্ধের সময় বুকিং দিয়ে যাওয়াই ভালো তবে স্থানীয় লোকজন বেশ হেল্পফুল আপনার থাকার একটা ব্যবস্থা করবেই তবে খরচ করতে হবে কিছু এই আর কি। এছাড়া তাবু নিয়ে গেলে ক্যাম্পিং করতে পারেন কেউ ডিস্টার্ব করবেনা কুয়াশা ছাড়া।
যাতায়াত:- এই একটা যায়গায় নিঝুম দ্বীপের নামকরনের সার্থকতা খুজে পেলাম না। পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে নোয়াখালির চেয়ারম্যান ঘাট আসুন সেখান থেকে ট্রলার, স্পীডবোট বা সী ট্রাকে করে নলচিরা ঘাট হাতিয়া(জনপ্রতি ট্রলার ১৫০, স্পীডবোট ৪০০, সী ট্রাক ৯৩টাকা)। সেখান থেকে সড়ক পথে বাইক, সিএনজি বা চান্দের গাড়িতে চান্দের পথে মানে মোক্তারিয়া ঘাট(বাইক ৬০০টাকা, সিএনজি ১২০০টাকা, জীপ জনপ্রতি ১২০-১৫০)। আপনি চাইলে নলচিড়া ঘাট বা নোয়াখালি চেয়ারম্যান ঘাট থেকে ট্রলার রিজার্ভ করে ডিরেক্ট নিঝুম দ্বীপ যেতে পারেন তবে সেটি বেশ ব্যায়বহুল বড় টিম না হলে পোষাবেনা। মোক্তারিয়া ঘাট পৌঁছানোর পর বোটে নদী পার হয়ে(জনপ্রতি ৪৫টাকা) নিঝুম দ্বীপ ঘাট তারপর সেখান থেকে বাইকে চড়ে (প্রতি বাইক ১০০টাকা) নামার বাজার। তবে একটি কথা নলচিড়া থেকে মোক্তারিয়া ঘাট পর্যন্ত রাস্তা খুব খারাপ ওই পথে বাইকে গেলে কিছুটা স্বস্তি অন্যথায় শরীরের জয়েন্টে জয়েন্টে স্মৃতি নিয়ে ফিরে আসবেন।
পরামর্শ: হরিন দেখতে চাইলে বোট নিয়ে চৌধুরী খাল চলে যাবেন খুব ভোরে অথবা বাইকে চোয়াখালি। কপাল ভালো হলে দেখতে পারেন। এই সিজনে গেলে অবশ্যই শীতের কাপড় নিবেন ওখানে শীত বেশ ভালোই। আর শেষ অনুরোধ জায়গাটা নোংরা করবেন না। ওখানে হরিনের চিহ্নই থাক আপনার চিহ্ন রেখে আসার দরকার নাই।

Post Copied From:Abu Nasar‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমির আরেক নাম নিঝুম দ্বীপ

নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানায় অবস্থিত এই “নিঝুম দ্বীপ” । উত্তরে হাতিয়া, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর,পশ্চিমে মনপুরা অবস্থিত। “নিঝুম দ্বীপ” কে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রানী বলা হয়। দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের বুকে আঁচড়ে পড়া অগণিত ঢেউ,অবারিত সবুজ গাছ-গাছালি আর সহস্র হরিণ “নিঝুম দ্বীপ” কে সৌন্দর্যের রানী হতে সহযোগিতা করেছে। প্রকৃতি তার অকৃপণ হাতে সকল সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে বঙ্গোপসাগরের বুকে গড়ে সৃষ্ট “নিঝুম দ্বীপ” এলাকায়। “নিঝুম দ্বীপের” সৌন্দর্য দেখে মনে হয় ‘পানি ও কুয়াশার মাঝে শিল্পের নিপুন হাতে তুলির আছড়ে সৃষ্ট ঘুমন্ত এক পোট্রেট’।

দর্শনার্থীদের জন্য অন্যতম প্রধান আকর্ষণ রয়েছে উপকূলীয় বনবিভাগের সাজানো কৃত্রিম সুন্দরবন। এখানে বনের ফাঁকে ফাঁকে আঁকা বাঁকা বয়ে গেছে ছোট ছোট নদী-নালা,বনে রয়েছে অজস্র হরিণ,মহিষ,ভেড়ার পাল, বানরসহ অনেক বন্য পশু-পাখি।অজস্র হরিণ এবং দ্বীপের পারিপার্শ্বিক প্রাকৃতিক-অনাবিল-নৈসর্গিক শোভা যেকোন পর্যটককেই আকর্ষণ করে। প্রাকৃতির নৈসর্গিক শোভামন্ডিত পরিবেশ, ঝাউবন, কাশফুল, সবুজ ঘাসের মিশেলে প্রকৃতির নৈসর্গিক শোভামন্ডিত পরিবেশ যেকোন পর্যটককেই মুগ্ধ করবে।

যোগাযোগ এবং ভ্রমণ-
দেশের যেকোন স্থান থেকে “নিঝুম দ্বীপে” যোগাযোগ তথা যাতায়াত ব্যবস্থা যথেষ্ঠ সুবিধাজনক। ঢাকা থেকে সদরঘাট হয়ে লঞ্চ যোগে আসা যায়,সড়ক পথেও নোয়াখালী হয়ে আসা যায় খুব সহজে। চট্রগ্রাম থেকে আসতে পারেন প্রতিদিন আসা শিপে করে। “নিঝুম দ্বীপে” ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে রিক্সা কিংবা ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল ব্যবস্থা। এখানে পর্যটকদের জন্যে রয়েছে উন্নতমানের আবাসসিক হোটেল ব্যবস্থা,আছে সরকারী ডাক বাংলা যাহা সম্পূর্ণ নিরাপদে ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে গাইড ব্যবস্থা। খাওয়ার জন্য রয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে ভালো মানের রেস্টুরেন্ট। আপনি চাইলে দ্বীপের মানুষের সাহায্যে নিজ দায়িত্বেই বনে রান্নাবান্না ও ভোজের আয়োজন করতে পারেন।
প্রতিদিন শত শত মানুষ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে আসেন এবং আকর্ষণীয় ও মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে রোমাঞ্চিত হন। আপনিও এসে উপভোগ করতে পারেন “নিঝুম দ্বীপের” নৈসর্গিক সৌন্দর্য। সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে ইনশাল্লাহ।

Post Copied From:Mahmudul Hassan‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

নিঝুম দ্বীপ

নিঝুম দ্বীপ আপনি যদি প্রকৃতিপ্রেমী হন, তাহলে তো কথাই নেই। মূল দ্বীপসহ আশপাশের দ্বীপগুলোতে শীতকালে আসে হাজার হাজার অতিথি পাখি। এদের মধ্যে আছে সরালি, লেনজা, জিরিয়া, পিয়ং, রাঙ্গামুড়ি, ভূতিহাঁসসহ নানারকম হাঁস, রাজহাঁস, হরেক রকমের গাংচিল, কাস্তেচরা ইত্যাদি। কদাচিৎ আসে পেলিক্যান। আর বছরজুড়ে সামুদ্রিক ঈগল, শঙ্খচিল, বকসহ নানা স্থানীয় পাখি তো আছেই। দ্বীপের আশপাশের জঙ্গলেই আছে হরিণ, শেয়াল, বন্য শূকর, নানা রকম সাপ ও বানর।

বাংলাদেশের প্রকৃতি মানুষের কলুষতার হাত থেকে সামান্য মুক্ত হলেই যে কি অবিশ্বাস্য প্রাণিসম্পদের সম্ভার ধারণ করতে পারে, তা নিঝুম দ্বীপে না গেলে বোঝা অসম্ভব। তবে দ্বীপে নামলেই যে এসব আরামসে দেখবেন এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।

পাখি বা হরিণ দেখতে হলে খুব ভোরে উঠতে হবে। হরিণ মূল দ্বীপেই স্থানীয় গাইডদের সাথে গিয়ে দেখে আসতে পারবেন। পাখি দেখতে হলে ট্রলারে করে পার্শ্ববর্তী দ্বীপগুলোতে যেতে হবে, পেরোতে হবে অনেকটা কাদা। কবিরাজের চর ও দমার চর পাখি দেখার জন্য বেশ উত্তম জায়গা।

আর অ্যাডভেঞ্চারপিয়াসী হলেও নিঝুম দ্বীপ আপনাকে নিরাশ করবে না।
জঙ্গলে হাঁটাহাঁটি তো আছেই, সাথে ধরুন সমুদ্রের বালুকাবেলায় ক্যাম্পিং করে থাকা অথবা বার-বি-কিউয়ের আয়োজন, ধু ধু চরে হেঁটে বেড়ানো মহিষের বিশাল পাল, কিংবা নৌকায় করে সাগর ভ্রমণ করার মতো এখানে আছে অনেক কিছুই।
কীভাবে যাবেন
ঢাকার সদরঘাট থেকে ‘এমভি ফারহান’ নামে একটাই লঞ্চ যায় হাতিয়া। বিকেল সাড়ে ৫টায় যাত্রা শুরু করে হাতিয়ার তমরুদ্দীন ঘাট পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ১২ ঘণ্টা। ডেকের টিকেট ৩৫০ টাকা, কেবিন সিঙ্গেল ২ হাজার টাকা, ডাবল চার হাজার টাকা।
ফেরার সময়ও একটাই লঞ্চ ছাড়ে, হাতিয়া থেকে ঠিক দুপুর সাড়ে ১২টায়। অথবা আপনি ট্রলারে করে মাইজদী গিয়ে ঢাকার ট্রেন ধরতে পারেন।

Post Copied From:Noman Khan‎>Travelers of Bangladesh (ToB

স্বল্প খরচে ঘুরে আসুন নিঝুম দ্বীপ

সদস্য সংখ্যা : ৬ জন।
যাত্রা শুরু : চট্টগ্রাম
বাঁধন / রেসালাহ পরিবহনের রাতের শেষ বাসে করে চেয়ারম্যান ঘাটা , ২০০/=
ভোরে পৌঁছে যাবেন ,রেসালাহ তুলনামূলক ভাল। ভোর ৫ :৩০ এর দিকে ব্রেকফাস্ট করেই ঘাটে যাবেন। লঞ্চ ছাড়বে ৮ টায়। স্পীডবোট আছে দাম বেশি। আমরা নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে যায় এরকম একটা ট্রলারে দরদাম করে উঠেছি জন প্রতি ৩০০/= ,মোটামুটি ৪ ঘন্টার পথ। তবে অসম্ভব ভাল কাটবে যাত্রাসময়টুকু। শীতকাল হওয়াতে রোদের তেজ কম পাবেন। :-)ট্রলার একেবারে নিঝুম দ্বীপ এর ঘাটেই নামাবে। সুতরাং ট্রলার ই আমার কাছে বেস্ট মনে হয়েছে। লঞ্চে গেলে ভেঙ্গে যেতে হবে।
সবুজ ভাইয়ের সাথে আগেই যোগাযোগ করে রুম বুক করে রাখা হয়েছিল। সমস্য হয় নি। এক রাতের জন্য ১০০০/= . ১ টা ডবল ও ৪ টি সিঙ্গেল বেড। দুইটি বাথরুম , সন্ধ্যা থেকেই জেনারেটর পাবেন। আবার সন্ধ্যায় আপনি চাইলে ২০০/= এক্সট্রা দিলে উনারাই বারবিকিউ করে দিবেন। আমরা মুরগী কিনে দিয়েছিলাম। রুটির অর্ডার ও দিয়েছিলাম। বারবিকিউ ভাল হয়েছিল।
দুপুরের খাবার বাজারের যে কোন হোটেলে খেতে পারেন। বা চাইলে যেখানে থাকবেন ওখানে রান্নার ব্যবস্থা আছে। আপনারা করে নিতে পারেন। হোটেলে খেলে ভাই ভাই হোটেল ই ভাল। 🙂
বিকালে ওদের হোটেলে নিজেদের বানানো রসগোল্লা পাওয়া যায়। মাত্র ১০/=
দুপুরে খেয়ে স্থানীয় বাজারের ডানপাশের পথ দিয়ে একটু গেলেই বীচ চোখে পড়বে। হয়তো কক্সবাজারের ঢেউ পাবেন না। কিন্তু কান পেতে থাকলে শো শো আওয়াজ আপনাকে উত্তাল করে তুলবেই। সাথে নিঝুম দ্বীপের নীরবতা আপনাকে একটু হলেও রোমাঞ্চিত ও শিহরিত করবেই।
আপনি চাইলে রাতে বীচ এই তাবু টেনে ঘুমাতে পারেন। কোন সমস্য হবে ন। সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয় অবশ্যই এই বীচ থেকেই দেখে যাবেন। 🙂
যতক্ষন ইচ্ছা রাতে থেকে আমি ও দলের অন্য দুজন মিলে ট্রলার ঘাটের সোজা হেঁটে একটু দুর গাছের ফাঁকে হাঁটতেই সুন্দর একটা খোলা জায়গায় এসে পৌছলাম। এখানে আপনি পূর্নিমার সময় অসম্ভব ভাল জোছনা দেখতে পাবেন। লাকিলি আমরা পূর্নিমার আগের দিন ই গিয়েছিলাম। সাথে দু পাশের বনের নিস্তব্ধতা চিড়ে ঝি ঝি পোকার আওয়াজ ফ্রী। 🙂
রাতে তেমন একটা ঘুমাইনি বললেই চলে। ভোর ৫ টার দিকে আমি ও দলের একজন স্থানীয় একটা পিচ্চিকে নিয়ে বেরলাম। পিচ্চির কথা মতো একটা ছড়া পেরিয়ে বনে ঢুকলেই হরিন এবং হরিন শাবক দেখতে পাব। যার প্রমান আমি ছবিতেই দিয়েছি। দেখে নিন। বনের মধ্যে এসব প্রানী দেখতে পাওয়ার ন্য রকম প্রশান্তি আছে। যারা এই প্রশান্তি পেতে চান অবশ্যই শীতের জড়তা কাটিয়ে ভোরে গিয়ে হাজির হবেন ম্যানগ্রোভ এ। ঘন্টা দুয়েক কাটিয়ে আবার ফিরে আসি। এরপর এদিক ওদিক ঘুরে দুপুরের দিকে বেরিয়ে পড়ি।
এবার স্থানীয় মোটরসাইকেলে করে জনপ্রতি ৫০/= করে ঘাটে নিয়ে যাবে। এক মোটরসাইকেলে চালক সহ ৩ জন। আপনি চাইলে রাস্তায় দাড়িয়ে কিছুক্ষণ কাটিয়ে নিতে পারেন পুরো নিঝুম দ্ব্বীপের চিত্র দেখার জন্য। ঘাট থেকে ট্রলার আছে। চাইলে স্পীডবোটে অন্য পাড়ে গিয়ে হাতিয়া তে ঘাটে উঠতে পারেন। আমরা স্পীডবটে করে গিয়েছি। ৬০/= জনপ্রতি . ওদিকে আবার মোটরসাইকেল ,জনপ্রতি ২০০/= ঘন্টাদেড়েক লাগে হাতিয়ার অপর ঘাটে যেতে। পথে সাদা শাপলা দেখতে পাবেন প্রচুর্। ওখান থেকে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে ১০০/= করে চেয়ারম্যান ঘাট। চেয়ারম্যান ঘাট থেকে বাঁধনে চট্টগ্রাম 🙂 🙂
জনপ্রতি খরচ: ২০০০/=
আমার ব্যক্তিগতভাবে অনেক ভাল কেটেছে। ঘুরতে গিয়ে কোন ধরনের পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু করবেন না। এটাই অনুরোধ 🙂 🙂 ..

Post Copied From:পরিশ্রমী অলস‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

নিঝুম দ্বীপ

বাংলাদেশের একটি ছোট্ট দ্বীপ। নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অর্ন্তগত নিঝুম দ্বীপ। একে ‘দ্বীপ’ বলা হলেও এটি মূলত একটি ‘চর’। নিঝুম দ্বীপের পূর্ব নাম ছিলো চর-ওসমান। ওসমান নামের একজন বাথানিয়া তার মহিষের বাথান নিয়ে প্রথম নিঝুম দ্বীপে বসত গড়েন। তখন এই নামেই এর নামকরণ হয়েছিলো। পরে হাতিয়ার সাংসদ আমিরুল ইসলাম কালাম এই নাম বদলে নিঝুম দ্বীপ নামকরণ করেন, বল্লারচর, চর ওসমান, কামলার চর এবং চুর মুরি- এই চারটি চর মিলিয়ে নিঝুম দ্বীপ। প্রায় ১৪,০৫০ একরের দ্বীপটি ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে জেগে ওঠে। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের আগ পর্যন্ত কোনো লোকবসতি ছিলো না, তাই দ্বীপটি নিঝুমই ছিলো।বাংলাদেশের বনবিভাগ ৭০-এর দশকে বন বিভাগের কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে চার জোড়া হরিণ ছাড়ে। নিঝুম দ্বীপ এখন হরিণের অভয়ারণ্য। ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের হরিণশুমারি অনুযায়ী হরিণের সংখ্যা ২২,০০০। নোনা পানিতে বেষ্টিত নিঝুম দ্বীপ কেওড়া গাছের অভয়ারণ্য। ম্যানগ্রোভ বনের মধ্যে সুন্দরবনের পরে নিঝুম দ্বীপকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন বলে অনেকে দাবী করেন,

প্রায় ৯১ বর্গ কিমি আয়তনের নিঝুম দ্বীপে ৯টি গুচ্ছ গ্রাম রয়েছে। এই গুচ্ছ গ্রাম ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ছোটখাটো ঝুপড়ি ঘর। ১৯৯৬ সালের হিসাব অনুযায়ী নিঝুম দ্বীপ ৩৬৯৭০.৪৫৪ হেক্টর এলাকা জুড়ে অবস্থিত।

নিঝুম দ্বীপে হরিণ এবং মহিষ ছাড়া অন্য কোনো হিংস্র প্রাণী নেই। হরিণের সংখ্যা প্রায় ২২,০০০। নিঝুম দ্বীপে রয়েছে প্রায় ৩৫ প্রজাতির পাখি। এছাড়াও শীতের মৌসুমে অজস্র প্রজাতির অতিথির পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয় নিঝুম দ্বীপ। নিঝুম দ্বীপে বিশাল এলাকা পলিমাটির চর। জোয়ারের পানিতে ডুবে এবং ভাটা পড়লে শুঁকোয়। এই স্থানগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের বসবাস। জোয়ারের পানিতে বয়ে আসা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এদের একমাত্র খাবার। এখানে রয়েছে মারসৃপারি নামে একধরনের মাছ যাদেরকে উভচর প্রাণী বলা হয়। ৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে এই মারসৃপার, ৬-৯ ইঞ্চি লম্বা হয়। বর্ষা মৌসুমে ইলিশের জন্য নিঝুম দ্বীপ বিখ্যাত। এই সময় ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা নিঝুম দ্বীপে মাছ কিনতে আসে।। এছাড়া শীত কিংবা শীতের পরবর্তী মৌসুমে নিঝুম দ্বীপ চেঁউয়া মাছের জন্য বিখ্যাত। জেলেরা এই মাছ ধরে শুঁটকি তৈরি করেন। এই শুঁটকি মাছ ঢাকা, চট্টগ্রাম, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারদের কাছে বিক্রি হয় ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে। আবার এই শুঁটকি হাঁস-মুরগীর খাবারেও ব্যবহার করা হয়। নিঝুম দ্বীপে রয়েছে কেওড়া গাছ। ইদানিং বনবিভাগ কিছু নোনা ঝাউও রোপণ করছে। এছাড়াও রয়েছে প্রায় ৪৩ প্রজাতির লতাগুল্ম এবং ২১ প্রজাতির অন্যান্য গাছ।

অন্যান্য অঞ্চলের সাথে যোগাযোগ করতে হলে জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করতে হয় নিঝুম দ্বীপের মানুষদের। হাতিয়া, ভোলা কিংবা ঢাকার সাথে যোগাযোগ করতে হলে তাদেরকে পুরোপুরি জোয়ার ভাটা মেনে চলতে হয়। ঢাকায় যেতে হলে তাদেরকে সকাল ৯ টার (জোয়ার আসার)পর হাতিয়ার উদ্দেশ্য যাত্রা করতে হয়। প্রায় ২-৩ ঘণ্টা সময় পর ট্রলার হাতিয়া পৌঁছায়। অতঃপর পাওয়া যায় ঢাকাগামী লঞ্চ, যেটি প্রতিদিন একবেলা ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা করে। এই লঞ্চটি বরিশাল এবং ভোলা হয়ে ঢাকায় পৌঁছায় বিধায় নিঝুম দ্বীপের মানুষজন ভোলা কিংবা বরিশালে যেতে পারেন এই লঞ্চে করেই। এছাড়া হাতিয়া কিংবা ঢাকায় আসার জন্য রয়েছে বিকল্প পথ। বন্দরটিলা থেকে নদী পার হয়ে হাতিয়ায় পৌঁছতে হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন যানবাহন পার করে প্রথমে হাতিয়া শহরে তারপর লঞ্চে পার হয়ে মাইজদি অতঃপর ঢাকায় পৌঁছতে হয়।

নিঝুম দ্বীপে রয়েছে ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি উচ্চ-মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থিত।

বনবিভাগ নিঝুম দ্বীপের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন, বন্যপ্রাণী (হরিণ) নিধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। বনবিভাগের পদক্ষেপে নতুন জেগে উঠা চরে লাগানো হচ্ছে কেওড়া গাছের চারা। বনবিভাগ এটিকে ন্যাশনাল পার্ক করার পরিকল্পনা শুরু করেছে। এছাড়াও বনবিভাগ এই অঞ্চলে আগে লাগানো কেওড়া বন রক্ষায় স্থানীয়দের সাথে মিলেমিশে কাজ করছে।

নিঝুম দ্বীপে পর্যটকদের জন্য রয়েছে অবকাশের নিঝুম রির্সোট। যেখানে রয়েছে সাপ্লাই পানি এবং জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা। খাবারের জন্য রয়েছে স্থানীয় হোটেল। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত চাল, মাছ, মুরগী, ডিম ইত্যাদিই খাবারের একমাত্র ভরসা। তবে বর্ষার মৌসুমে রয়েছে ইলিশের জয়জয়কার।

Post Copied From:ফিরোজ ইমতিয়াজT>ravelers of Bangladesh (ToB)