চাঁদের পাহাড়- পাইন বন- পাহাড়ি শহর আর এক কাপ দার্জিলিং চা

ঈদ এর ছুটিতে শ্যামলী’র টিকেট(১৫০০ টাকা শিলিগুড়ি পর্যন্ত) না পেয়ে ৫ জন মিলে মানিক পরিবহন এ রওনা দিলাম (এসি ৯০০ টাকা বুড়িমারী পর্যন্ত)| গন্তব্য লাভা, রিশপ, কালিম্পঙ| রাত ৯টায় গাড়ি ছেড়ে ভোর ৬টায় বুড়িমারী পৌঁছে বাস কাউন্টার এর লোকদের হাত এ পাসপোর্ট আর ১০০ টাকা ( ট্রাভেল ট্যাক্স ৫০০ টাকা ঢাকা থেকে দিয়ে এসেছিলাম) দিলাম বর্ডার প্রসেস এবং সিরিয়াল দেওয়ার জন্য|
সকাল ৯টায় বর্ডার ওপেন হলে শুরু হলো লাইন এ দাঁড়ানো| ঈদ এর ছুটিতে প্রচন্ড ভিড় থাকায় ২ বর্ডার এর কাজ(২00 টাকা ঘুষ সহ) শেষ করতে দুপুর ১টা(এমনিতে ১০:৩০-১১:০০ বাজে| চেঙড়াবান্দাতে ডলার ভাঙিয়ে লাঞ্চ করলাম (ভাত, ডাল, রুই মাছ, সবজি, পাঁপড় ১০০ রুপি)| প্ল্যান ছিল ঐদিনই শিলিগুড়ি হয়ে লাভা যাবো কিন্তু অনেক দেরি হয়ে যাওয়ায় সে আশায় গুড়ে বালি কিন্তু আমাদের অবাক করে দিয়ে চেঙড়াবান্দা থেকে ময়নাগুড়ি হয়ে সেদিনই আমাদের লাভা পৌঁছে দিতে রাজি হলো একজন টাটা সুমো ড্রাইভার (৩৫০০ রুপি ভাড়া)| ছু মন্তর ছু রওনা দিয়ে দিলাম…..ময়নাগুড়ি ফরেস্ট রেঞ্জ , টি এস্টেট এর ভেতর দিয়ে জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি কে পাশ কাটিয়ে ৮০ কিমি যাওয়ার পর শুরু হলো পাহাড়ে চড়া| অকল্পনীয় সুন্দর পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে জান হাতে আর বৃষ্টি, মেঘ, কুয়াশা মাথায় নিয়ে ৩৫ কিমি উপরে উঠলাম মাঝে বিরতিতে চা আর লেস চিপস খেলাম (৩৫ রুপি)| প্রায় ৮০০০ ফিট উচ্চতায় লাভা পৌছালাম রাত ৮টায়| ছোট্ট পাহাড়ি শহর হওয়ায় পুরা শহর তখন ঘুম| পাইন বন এ ঘেরা ছোট্ট শহর, পাশে পাহাড় চূড়ায় বিশাল বৌদ্ধ মন্দির, মেঘ এর চাদর এ ঢেকে আছে পুরো শহর| এত নীরব..!! এত শান্তি..!! হোটেল হিমালয় এ উঠলাম ৫ জন একটা রুম নিয়ে (১০০০ রুপি রুম ভাড়া)| বাঙালি হোটেলওয়ালা আমাদের রাত এ খাওয়ার অফার করলো (মুরগি, ডাল, ভাত, সবজি, আচার ১২০ রুপি)| আমরা উনাকে রান্না করতে বলে ঘুমন্ত শহর এ হাটতে বেরোলাম| নেপালি একটা দোকান খোলা পেয়ে ভেজ মোমো (৩০ রুপি), ভেজ সূপ(ফ্রি), চা (১০ রুপি) খেয়ে যখন একটা উঁচু পাহাড় এর মাথায় উঠে বসলাম তখন প্রচন্ড অবাক হলাম এ কোথায় এলাম..!! নিচে পাইন বন পূর্ণিমা চাঁদ এর আলোয় ভেসে যাচ্ছে| সব মেঘেরা আমার পায়ের নিচে ঢেউ খেলছে| পাশে বিশাল উঁচু একটা পাহাড় পুরাটা মেঘ এ জড়ানো, তার গায়ে পূর্ণিমার আলো প্রতিফলন হচ্ছে, পাহাড়টা যেন জ্বলছে …এটাই তাহলে চাঁদের পাহাড়..!! সারা জীবন গল্প উপন্যাসে পরে যা কল্পনা করেছি এ তো তার চেয়েও সুন্দর| কি সুন্দর..!! কি সুন্দর সে চাঁদের পাহাড়..!!
পর দিন ভোর এ উঠে লাভা টাউন, বৌদ্ধ মন্দির, সুইসাইড পয়েন্ট, রাচেলা পয়েন্ট (ফ্রি লিফ্ট পেয়েছিলাম একজন এর স্ক্যুটি তে)ঘুরে ব্রেকফাস্ট করলাম ( সমুচা আর চা ২০ রুপি, মোমো ৪০ রুপি)| শহরের প্রতিটি মানুষ অনেক শান্তি প্রিয়, হেল্পফুল আর হাসি খুশি| তারপর হোটেল ছেড়ে সুমো স্ট্যান্ড এ এসে সুমো ভাড়া করলাম রিশপ, নেওরা ভ্যালি পাইন ফরেস্ট হয়ে ডেল রিসোর্ট ঘুরে কালিম্পঙ টাউন এ রেখে আসবে আমাদের (২৪০০ রুপি)| শুরু হলো আরো উপরে ওঠা এবড়ো থেবড়ো পাথুরে রাস্তা দিয়ে| কখনো পাহাড়ি ভেজা রাস্তা কখনো ঘন অন্ধকার পাইন ফরেস্ট এর ভেতর দিয়ে ১ ঘন্টা যাওয়ার পর পৌছালাম ৮৫০০ ফিট উচ্চতায় রিশপ নেওরা ভ্যালিতে| অসাধারণ সুন্দর লেপ্চা কটেজ, স্কটিশ কটেজ এ ভরা নেওরা ভ্যালি রিসোর্ট থেকে হেটে নেওরা ভ্যালি পাইন ফরেস্ট এ ঢুকলাম. বৃষ্টি ভেজা, মেঘ এ ঢাকা, অন্ধকার রহস্যময় বন. বিশাল বিশাল পাইন গাছের সারি, পাখির ডাক. অদ্ভুত এক ঠান্ডা গা ছমছম পরিবেশ| বন এর ভেতর দিয়ে মেঘ এর নদী বয়ে চলেছে| পুরা পরাবাস্তব পরিবেশ| সে পরিবেশ থেকে বের হয়ে আবার গাড়িতে উঠলাম, গন্তব্য ডেল রিসোর্ট| পথে ২বার চা খেলাম আর পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করলাম|
ডেল রিসোর্ট হলো পাহাড়ের চূড়ায় মেঘ এ ঢাকা বিশাল অভিজাত রিসোর্ট (এন্ট্রি ফী ২০ রুপি, পার্কিং ফী ২০ রুপি) রিসোর্ট এর ভিউ পয়েন্ট থেকে পাহাড়, তিস্তা নদী আর বন এর ভিউ চমৎকার, প্যারাগ্লাইডিং করা যায় এখানে (৩০০০ আর ৭০০০ রুপি প্যাকেজ) সেখান থেকে পাহাড়ি তিস্তা নদী ধরে আমরা কালিম্পঙ এলাম বিকেলে| পুরোনো বনেদি একটা সুন্দর শহর| ব্রিটিশদের ছাপ এখনো স্পষ্ট| বাংগালী মাসিমার হোটেল এ খেয়ে নিলাম (ভাত, ডাল, কাতল মাছ, ভর্তা, সবজি, আচার, আলু ভাজি ১৫০ রুপি)| শহরটা একটু ঘুরে দেখে সন্ধ্যায় রওনা দিলাম দার্জিলিং এর উদ্দেশে (শেয়ার্ড সুমো, পার পারসন ১৫০ রুপি) রাত ৮টা নাগাদ এলাম বিখ্যাত দার্জিলিং এ| উঠলাম হোটেল সাগরিকাতে (৫ জন একরুম ২০০০ রুপি) এর আগের দার্জিলিং ভ্রমণ এর অভিজ্ঞতা (অন্য গল্পে বিস্তারিত) থেকে গেলাম হোটেল ইসলামিয়াতে রাত এর খাবার খেতে (গরু’র গোস্ত ভুনা দিয়ে পরোটা আর কাচ্চি বিরিয়ানি, ১৫০-২০০ রুপি) তারপর মল চত্বর এ কিছুক্ষন থেকে এক কাপ স্পেশাল দার্জিলিং চা খেয়ে ঘুম|
যেহেতু এর আগেও দার্জিলিং ঘুরেছি (অন্য গল্পে বিস্তারিত) তাই ইচ্ছে ছিল বাহিরে কোথাও না যেয়ে সারাদিন দার্জিলিং শহরের অলিগলি তে হাটবো, বিখ্যাত ইন্ডিয়ান, তিব্বতি, নেপালি, ব্রিটিশ রেস্টুরেন্ট গুলোতে খাবো আর আরাম করে পাহাড়ের চূড়ায় কোথাও বসে পাহাড় আর মেঘ দেখবো| তাই করলাম, নিচের ছবিটি এমন এ একটা জায়গায় বসে উঠানো (মল চত্বর)|
বিকেলে দার্জিলিং থেকে শেয়ার্ড সুমোতে করে শিলিগুড়ি চলে এলাম(১৫০ রুপি)| সন্ধ্যায় উঠলাম হোটেল মাউন্ট ভিউ এ (পার রুম ৮০০ রুপি, ৩ জন)| রাত এ বিধান মার্কেট, সেভক রোড আর হিল কার্ট রোড এ ঘুরে ফিরে রাত এ খেলাম বিখ্যাত খানা খাজনা তে (হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি ১৩০ রুপি, কুলফি আইস ক্রিম ৮০ রুপি)|
পরদিন সকালে নাস্তা করে (পরোটা ডিম্ ভাজি, চা ৫০ রুপি) বাস এ করে শহর এ একটু ঘুরলাম তারপর চেংড়াবান্দা আসার জন্য টাটা ইন্ডিগো গাড়ি ভাড়া করলাম (১১০০ রুপি, ৪ জন বসতে পারবে)| বাস ও আসে (৫০ রুপি) কিন্তু আমরা একটু আরাম এ আসতে চেয়েছিলাম| প্রায় ৮০ কিমি পথ পেরিয়ে বর্ডার এ এলাম দুপুর ১টায়, বর্ডার এর ঝামেলা শেষ করে প্রাণ এর দেশে ফিরলাম বিকেল ৩টায়| এরপর বিশাল এক এডভেঞ্চার করে বুড়িমারী- পাটগ্রাম- লালমনিরহাট- রংপুর হয়ে ঢাকা এলাম পরদিন সকাল ১০টায়|

সর্বমোট খরচ প্রতিজন ৮০০০ টাকা ( ভিসা খরচ এবং ডলার এন্ডোর্স খরচ বাদে)

Post Copied From:Shadman Mahbub‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

৮০০০ টাকায় দার্জিলিং, মিরিক, নেপালের এক অংশ, লামাহাটা ঘুরে আসার ভ্রমন বিলাসের গল্প।

আমি এবং আমার ১ বন্ধুর ৮০০০ টাকায় দার্জিলিং, মিরিক, নেপালের এক অংশ, লামাহাটা ঘুরে আসার ভ্রমন বিলাসের গল্প।
দার্জিলিং ৩ দিন, মিরিক ১ দিন, লামাহাটা ১ দিন, নেপালে ১ দিন এবং যাওয়া-আসা মিলিয়ে ৭ দিনের ট্যুর ছিল আমাদের।
শুরুর দিন:
রাত ১১.৩০ এ মিরপুর থেকে SR পরিবহনে যাত্রা = ৮৫০ টাকা
বর্ডারে SR পরিবহনের লোক ১০০ টাকায় ইমিগ্রেশন পার করে দিবে। ওখানে সিন্ডিকেট আছে ওদের। ওপারে যাবার পর আরো ১০০ দিতে হবে।
বাংলা টাকা রুপি করলে ভালো রেট পাওয়া যায়, তবে সাথে কিছু ডলার রাখলে ভাল। (.৮১ রুপি = ১ টাকা)
বর্ডার থেকে অটোতে করে বাস স্ট্যান্ড = ৩০ রুপি
বাসে করে শিলিগুড়ি = ৬০ রুপি (বাসের কন্ডারটারদের ব্যবহার খুবই ভাল এবং Helpful)
শিলিগুড়িতে বিভিন্ন লোক (দালাল) ধরবে যে, দার্জিলিং গিয়ে হোটেল পাওয়া যাবেনা। কথাটা সিজনে গেলে অনেকটা সত্য, কিন্তু অফ-সিজনে Available হোটেল পাওয়া যায়। Best হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে হোটেল বুক করে গেলে।
রুম ভাড়া = ৪০০ রুপি(প্রতিজন)

ভ্রমণের প্রথম ৩ দিন (১ম+২য় +৩য় দিন)- দার্জিলিং:
পুরো দার্জিলিং এর ১৫ টা পিকনিক স্পট ঘুরতে হলে মোট ৩ দিন সময় লাগবে। ওখানে চার্ট করে দেয়া আছে ঘুরার জায়গা। আমরা প্রথম ৩ দিন শুধু দার্জিলিং ঘুরে কাটাই।দার্জিলিং ঘুরার স্পটসমূহঃ

03 points
— Tiger Hill (SUN RISE)
— Batasia Loop (টয় ট্রেন এই লুপের মধ্য দিয়ে ঘুরে যায়)
— Ghoom Monastry (পৃথিবীর সবচেয়ে উচুতে অবস্থিত Rail Station)
— Rock Garden (পাথরের বড় বড় খন্ড দিয়ে তৈরি পাহাড়, ঝর্না)
05 points
— Japanese Temple
— Lal Kothi
— Ava Art Gallery
— Dhirdham Temple
— Peace Pagoda
07 points
— Zoo
— Himalayan Mountaineering Institute
— Ropeway (Cable Car)
— Tenzing Rock
— Tea Garden
— Lebong Race Course
— Darjeeling Gorkha Stadium
এগুলো ছাড়া দার্জিলিং এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে মল রোড। আমরা যে কয়দিন দার্জিলিং ছিলাম প্রতিদিন কম করে হলেও ৩-৪ বার করে মল রোডে যেতাম। এবং বাংলাদেশে ফেরার সময় সবচেয়ে বেশি মিস করেছি মল রোড।

খাবারঃ
প্রথমেই স্ট্রীট ফুেডর যেসব খাবারের কথা আসবে তার মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত হচ্ছে মম। Vegetable(৩০ ) আর Chicken এই ২ ধরনের মম পাওয়া যায়। এছাড়াও আছে চাওমিন, মাশরুম ইত্যাদি।
আর হোটেলের খাবারের মধ্যে আছে Steamed rice, ছোলা বাটোরা, ডাল মাখানি সহ আরো অনেক রকমের বাহারি খাবার। এবং মজার ব্যাপার হছে ওখানে ৯৯ রুপিতে আপনি যেই KFC পাবেন সেই KFC বাংলাদেশে ৫০০ টাকার নিচে পাবেন না।
আর হোটেলে Meal না নিলেই ভাল হবে, তাতে খুজে খুজে বাহারি রকমের খানা বের করার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবেন।

কেনাকাটাঃ
দার্জিলিং এ বিভিন্ন কাপড়-খাবারের দাম অনেক কম। সাথে কিছু extra টাকা রাখবেন কেনাকাটার জন্য। “Big Bazar” নামে একটি সুপার সপ আছে। ওখানে কম দামে বিভিন্ন চকলেট পাওয়া যায়। ও, দার্জিলিং এর চাপাতা আনতে ভুলবেন না।

লামাহাটাঃ (৪র্থ দিন)
দার্জিলিং থেকে জিপে করে জোড়বাংলায় নামলেই আপনার জন্য অফুরন্ত পাইন বন নিয়ে অপেক্ষায় আছে লামাহাটা। সম্পূর্ন দূষনমুক্ত একটি গ্রাম লামাহাটা। ফটোগ্রাফির জন্য সুন্দর জায়গা। সাথে পাবেন Tree House, এবং পাইন বনের মধ্য দিয়ে পাহাড়ের মাথায় উঠলে পাবেন অসম্ভব সুন্দর সবুজ পানির লেক।
জিপ হোটেলের ম্যানেজারের মাধ্যমে ঠিক করবেন নাহলে টাকা বেশি নিবে। সারাদিনের জন্য রিজার্ভ জিপ ভাড়া ২৫০০ রুপি। শেয়ারে গেলে ৬০০/৭০০ রুপির মধ্যে হয়ে যাবে।

দার্জিলিং থেকে মিরিকঃ (৫ম দিন)
উচ্চতা ৪৯০৫ ফুট। দার্জিলিং থেকে দূরত্ব ৪৯ কি.মি। দার্জিলিং থেকে নেপাল সীমান্তের পাশ দিয়ে মিরিক এর পথ। মিরিকে উল্ল্যেখযোগ্য হছে সুমেন্দু হ্রদ। হ্রদের একদিকে বাগান, অন্য দিকে পাইন গাছের সারি। আর দুই পাড়কে একসঙ্গে যুক্ত করেছে রামধনু সেতু। হ্রদে ঘুরার জন্য বোট আছে, আছে ঘোড়ায় চড়ার ব্যবস্থা (জন প্রতি ১০০ রুপি)। এখান থেকে নেপালের পাহাড়ের অনেকখানি অংশ দেখা যায়।
ilam, Nepal: (শেষ দিন)
নেপালের বেশ কিছু অংশ ভারতের সরকারের অধীনে। তাই 0 পয়েন্ট থেকে জিপে করে অনেকখানি ভিতরে গেলেও ভারতের হাওয়াই গায়ে লাগে। নেপালের বর্ডারের কাছে জিপ থেকে নেমে ট্রানজিট ভিসা show করে বর্ডার পার হওয়ার পর প্রথম জেলা হচ্ছে ilma. এখানকার আর্থিক অবস্থা খারাপ হলেও ২ মিনিট পর পর মদের দোকান চোখে পরে। এখান থেকে কাঠমুন্ডুর বাস পাওয়া যায়। এখানকার মানুষ বাংলা ভালো বোঝেনা। হিন্দিতে কথা বলতে হয়। এবং নেপালি মুদ্রার চেয়ে Indian রুপির মূল্য ও কদর অনেক বেশি।

ভ্রমন শেষে পূর্বের পথ ধরেই আবার আমরা নিজ মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফেরা করি। আশার সময় বুড়িমারি বর্ডারে বুড়ির হোটেল নামে একটা হোটেল আছে। পারলে খেয়ে আসবেন।
আবার হয়তো লিখতে বসব নতুন কোন ভ্রমণকাহিনী নিয়ে।
ভাল থাকবেন এবং সুন্দর হোক আপনার ভ্রমণ।

Post Copied From:Rakib Bin Alamgir‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

চোখ মেলেই কাঞ্চনজঙ্ঘা.

শেষ বিকেলের খাবার টাই যে রাতের আহার হবে সেটা কেউই ভাবিনি! কারণ শেষ বিকেলে খেয়ে দেয়ে দেশীয় স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী বেড়াতে বের হলাম যে যার মত। সবাই ফিরবে যার-যার মত রাতের খাবার খেয়ে, নির্ধারিত সাময়িক আবাসে। কিন্তু আগের পুরো রাত আর সারাদিনের জার্নির ক্লান্তি একাকার হয়ে আমরা আত্ন-সমর্পণ করলাম বিশ্রাম আর বিছানার কাছে।

কারণ, ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে সবাই ফিরে এসেছিলাম নিজেদের আবাসে! এতো বেশী উঁচু-নিচু পথে এতটা আয়েশ করে আর উপভোগ করা যাচ্ছেনা বলে। তার চেয়েও বড় কথা হল, সকল দোকান-পাট-বাজার-রেস্তোরাঁ-মল সব একে-একে তাদের ঝাঁপ ফেলে আর শেকল টেনে তালা লাগিয়ে দিচ্ছিল! কিছু বুঝে ওঠার আগেই!

তাই নিজেদের নিয়মিত ক্ষুধার কথা ভেবেই আগাম কিনে নিয়েছিলাম পাওরুটি আর জিলাপি! কারণ এ ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যাচ্ছিলোনা! তাই সেই ঢের আর সেই সাথে একটি শীত তাড়ানোর ভিন্ন স্বাদের কিছু পানীয়! সে বললেও আর না বললেও!

রুমে ফিরে খাবার গুলো আবার চালান করে দেয়া হল বাংলাদেশী গাড়লদের পেটে! কোন অপেক্ষা ছাড়াই ডাবল কম্বলের নিচে সুড়সুড় করে ঢুকে পড়লাম যে যার মত সুবিধা করে নিয়ে এবং অচিরেই ঘুম! প্রস্তুতি ছাড়াই, কে-কখন ঘুমোলো কেউ জানিনা।

অনেক ভারী পর্দার সামান্য ফাঁক গলে আলোহীন প্রত্যূষে ঘুম ভেঙে গেল। ওহ এতো ভোঁরে ঘুম ভাঙার কি দরকার ছিল? কোথাও বেরোনোর এতো বেশী তারা নেই। ধীরে-সুস্থে উঠে হেলে-দুলে বের হব, তারপর আজকের প্ল্যান কোথায় ও কিভাবে যাব। কিন্তু এতো সকালে কি করি? আবার ডুব দিলাম কম্বলের নিচে। কিন্তু আগের রাতে যেহেতু সাভাবিকের চেয়ে অনেক তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছি তাই ঘুম আর কিছুতেই আসছিলনা।

এপাশ-ওপাশ আর উসখুস করে অন্যের ঘুম না ভাঙিয়ে বরং উঠে একটু মেঘ আর কুয়াশার লুকোচুরি দেখি! আর যদি সেই সাথে দেখা মেলে এক টুকরো পাহাড়ের তো কথাই নেই আর! পাহাড় সেতো আমার প্রেম! তাকে যখন-যেখানে-যেভাবেই পাইনা কেন, আমি আপ্লুত-বিমুগ্ধ-বিলুপ্ত ওর মাঝে!

সেই ভেবে খুব সন্তর্পণে অনেক ভারী পর্দা সরিয়ে রুমের সাথে লাগোয়া করিডোরের ছিটকানি খুললাম, ওহ যেন ছিটকে ফেলে দিতে চাইলো কনকনে ঠাণ্ডা এক দমকা হাওয়া! সেই সাথে মুখ ভিজিয়ে দিল না চাইতেই, বেহায়া কুয়াশা! তবুও শীতের চাঁদর গায়ে জড়িয়ে বের হলাম… আমার বাম পাশে ঘন সবুজ অরণ্যে বেষ্টিত থরে-থরে সিঁড়ির মত সাজানো পাহাড়, আমি ও দিকেই তাকিয়ে ছিলাম মুগ্ধ হয়ে, অন্য দিলে তাকাবার ইচ্ছেই যে হয়নি আর!

আবারো বাতাস, আবারো ধেয়ে আসা কুয়াশা, ভিজে যাওয়া মুখ! কুয়াশার ঢেউয়ে একটু মুখ ঘোরাতেই আমার আরও ডানে কাছের জানালায় চোখ পড়তেই যেন ঝলসে গেলাম! সোনালি আভায় আর হঠাৎ চোখে পড়া অর্কর ছটায়! এবার বাধ্য হয়ে পাহাড়কে উপেক্ষা করে ডানে তাকালাম… বেশ-বেশ দূরে অর্কর আভায় কমলা-সোনালি-রুপালি-গোলাপি-ক্ষীণ লাল-আর কিছুটা হলুদের ছটা দেখতে পেলাম!

এই সময়টার সঠিক অনুভূতিটা কি ছিল বা হয়ে থাকে সেটা আসলে বোঝানোর নয়, ঠিক বোঝারও নয়! এই রকম মনোমুগ্ধকর সম্মোহনে মানুষ আসলে বোবা হয়ে যায় বোধয়! অথবা হয়ে যায় অনুভূতিহীন-বাকরুদ্ধ-অসাড়! কারণ তখন তাকিয়ে-তাকিয়ে দেখা ছাড়া পৃথিবীর আর সব কিছুই তুচ্ছ আর অমুলক অথবা ভিত্তিহীন বাস্তবতা! তখন ওই সম্মোহনই একমাত্র প্রার্থনা-প্রাপ্তি বা প্রবঞ্চনা!

এভাবে কয়েক মিনিট নির্বাক হয়ে সেই সম্মোহন উপভোগ করার পর, সূর্য আর একটু আলো ছড়ালে দূরের সেই নানান রঙের মেলা, শেতশুভ্র বরফে আচ্ছাদিত কাঞ্চনজঙ্ঘার লাজুক ঘোমটা সরাতে লাগলো, একটু-একটু করে, ভেঙে লজ্জা-শরম ও গাল ভরা অভিমান!

কারণ? ওটা যে কাঞ্চনজঙ্ঘা সেটা যে বুঝতেই পারিনি তখন!

এরপর আর নয়, সেটা বিশ্বাসঘাতকতা হয়ে যাবে সেই ভঁয়ে অন্যদেরও ডেকে তুললাম, ততক্ষণে শুরু হয়ে গেছে আমার অবিরাম ক্যামেরার ক্লিক-ক্লিক-ক্লিক! যেখানে-যেমন ওঠে উঠুক, পরে দেখেশুনে বাছাই করবো! আগে তো তুলে নেই জতখুশি তত!

এবার অন্যরাও সরব হল, সব ভুলে, কেউ-কেউ হাড় কাঁপানো শীতেও উপেক্ষা করে, তবে বঞ্চিত হয়েছিল সেদিনকার মত, সেই প্রথম দেখা রঙ-বেরঙ এর বরফ-আলোর সম্মিলিত সম্মোহন থেকে! তবে এর পরের দিন থেকে একটি দিনের জন্যও নয়, কেউ-ই।

কারণ আমাদের সামনেই…… সব সময়, সারাক্ষণ দেখতে পাই, রুমের পর্দা সরালেই বা করিডোরে দাঁড়ালেই, হেটে-বসে বা শুয়ে, যখন-যেভাবে-যেমন আর যত খুশি………

সে এক অপার্থিবতা, চোখ মেললেই কাঞ্চনজঙ্ঘা……!

ঢাকা-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং

Post Copied From:Sajol Zahid‎>Travelers of Bangladesh (ToB

চুপিচুপি টাইগারহিলে

আজ দার্জিলিং ভ্রমণের শেষ দিন। মনটা বড্ড মেঘলা! ফিরে যাবার জন্য নয়! এজন্য যে টাইগার হিল যাওয়া হলনা! ভ্রমণ সঙ্গীরা সবাই তৃপ্ত তাঁদের এবারের ভ্রমণ নিয়ে। সুতরাং আর কোথাও যেতে চায়না, কেউই! অথচ সবাইকে বোঝালাম যে যাব তো সকালে। জীপ নিজেদের। শিলিগুড়ি যাবার পথেই তো পড়বে। একটু আগে বের হতে হবে এই যা!

কিন্তু অতো ভোরে কেউই এই হিম ঠাণ্ডা শীতের সকালে লেপের উষ্ণতা ভেঙে বের হবেনা! আমার মনের ভিতর খচখচ, দার্জিলিং এলাম অথচ এতো জনপ্রিয় টাইগার হিলে গেলাম না! সেটা কি মেনে নেয়া যায়! সমস্যা হল আমার কাছে আর অবশিষ্ট কোন রুপিই নাই! সুতরাং একা-একা যে যাবো সেই সম্ভাবনাও ক্ষীণ!

রাতে ডিনার করে বেদনা নিয়ে ঘুমোতে ঢুকলাম। লেপের তলায় শরীর ওম হয়েছে ঠিকই কিন্তু মনে ওম নেই! কখন যেন ঘুমিয়ে গেলাম। একসময় ঘুম ভাঙল, স্বাভাবিক নিয়মে মধ্যরাতের শেষে। আবার বিছানায় যাব, এমন সময় চোখ গেল রুমের দেয়াল ঘড়ির দিকে। রাত ৩:৩০ পার হয়ে গেছে। মনে পড়লো আরে যারা টাইগার হিল যায়, এই সময়ই তো বের হয়!

রোমাঞ্চের বিদ্যুৎ খেলে গেল শরীর, মন ও মাথায়! বেরিয়েই দেখিনা, যদি কোন হৃদয়বান ব্যাক্তি বা গ্রুপ পাওয়া যায়, একটু নিয়ে যাবে দয়াকরে! বহু মানুষই তো যাবে। কাউকে না কাউকে নিশ্চই পাওয়া যাবে! আমার মন বলছে যেতে পারবো! সুতরাং বেরিয়েই দেখিনা কি হয়? মনকে তো বোঝাতে পারবো যে চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি!

যেই ভাবা, সেই কাজ। প্রস্তুত হলাম নতুন ও নিজস্ব এডভেঞ্চারের নেশায় মাতাল হয়ে! ডেকে তুললাম আর এক জনকে। যে না গেলেও অন্তত বাঁধা দেবেনা! আমার প্রস্তুতি আর উদ্যম দেখে সেও উঠে গেল এবং তৈরি হয়ে নিল!

৪ টা বাজে। দুজন হোটেল বয়কে ডেকে, গেট খুলে বের হলাম। চারিদিকে রাতের শেষ অন্ধকারের হাতছানি। একটু অজানা আশংকা অচেনা অন্ধকারে! সামান্ন গাঁ ছমছমে শিহরণ! সব মিলে একটা কেমন-কেমন অনুভুতি। অব্যাক্ত, গুমোট, খিটখিটে মোট কথা সুখকর নয় আদৌ! হোটেলের নিচু থেকে উপরে রাস্তায় উঠে মনের বিসন্নতা বিলীন হয়ে গেল একনিমিশেই!

এতরাতে চারিদিকের কোলাহল আর কলকাকলি দেখে! সেই সাথে হাজারো জীপের বহর দেখে। আলোয়-আলোয় আলোকিত পুরো রাস্তা। আগে-পিছে, দূরে যতদূর চোখ যায়, আলো আর আলো! ঝলমলে চারিদিক দেখে! এবার মনটা খুশিতে নেচে উঠালো। সম্ভাবনা নিশ্চই আছে। সুযোগ পাবই, এই ভেবে!

দুজন মিলে অনেক্ষণ ধরে চেষ্টা করেও তেমন কারো মনোযোগ আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হলাম! সবাই ব্যাস্ত নিজেদের নিয়ে। অন্য কোনদিকে কারো খেয়াল করার সময় কোথায়? আর সবচেয়ে বড় কথা সব গাড়িই ভরপুর! কাউকে অনুরোধ করার কোন সুযোগই নেই!

এবার আমার সঙ্গীকে জিজ্ঞাসা করলাম, তার কাছে কোন রুপি আছে কিনা? নেই! একদমই নেই! আর কোথাও যাওয়া হবেনা যেনে গতকাল রাতেই সব খরচ করে ফেলেছে! শুধু টাকা আছে তাও মাত্র ৫০০! আর আমার কাছে তো শুরু থেকেই নেই। আমার কাছেও আছে মাত্র ৫০০ টাকা! কিন্তু অদম্য ইচ্ছা আর চেষ্টা থাকলে বিধাতা যে কাউকেই নিরাশ করেননা তারই প্রমান হল আবারো! এবং দারুণ নাটকীয়তায়! বলি সেই গল্প….

দুজনে বিরস বদনে বসে-বসে দেখছি অন্যদের দুর্বার যাত্রা! মানিক বন্দোপাধ্যয়ের সেই উক্তির মত “দুই ক্ষুধার্ত কুকুর! সুখ পাচ্ছে অন্যদের খাওয়া দেখে!” আসলে টাইগারহিল দেখতে যাওয়া দেখে!

পিছন থেকে গাড়ির আওয়াজ। আমাদের কে সরে যাবার ইশারা। গাড়িটি আমাদের ক্রস করে যেতে-যেতে আবার থেমে গেল! সদ্য কৈশোর উত্তীর্ণ যুবক। ছোট একটি কার নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের উদেশ্যে তার জিজ্ঞাসা? টাইগারহিল যাব নাকি! আমরা বিস্মিত, আরে বলে কি? এই ভেবে। হ্যাঁ যাব কিন্তু রুপি নাই! তার উত্তর ডলার তো আছে?

নাহ! আছে বাংলাদেশী টাকা! যাবে?

সে দ্বিধান্বিত। আসলে তার বাবা কলকাতা গেছে। গাড়িটা ফাঁকা পড়ে আছে। এইজন্য কিছু বাড়তি উপার্জনের আশায় বেরিয়েছে, কাউকে না জানিয়ে! সে যেতে চায় কিন্তু বাংলাদেশী টাকার মান নিয়ে তার ধারনা নেই। তাকে বোঝালাম যে মান প্রায় কাছাকাছি, ভারতের ১০০ টাকা আমাদের ৭৫ টাকার চেয়েও বেশী। সুতরাং সে ১০০০ টাকায় যেতে পারে। এতে তার ৭৫০ টাকা হবে।

সে একটু অনিশ্চতা আর কিছুই না পাওয়ার চেয়ে অল্প পাওয়া ভাল এইসব ভেবে-ভেবে শেষ পর্যন্ত সম্মত হল! আর আমাদের আনন্দ! সে ছিল সীমাহীন! আরও একবার নিজেকে নিজে সাধুবাদ জানালাম। অদম্যতা আর হার না মানার সাহসিকতার জন্য। শেষ দেখে ছাড়া মানসিকতার জন্য এবং জয়ী হবার সম্ভাবনার জন্য।

আমরা চলছি, ভীষণ দ্রুত গতিতে। যেহেতু বেশ দেরি হয়ে গেছে। সূর্য উদয়ের মুহূর্ত উপভোগ করতে না পারলে তো আর কোনোই লাভ নেই! চলছি, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথের একপাশে গভীর খাঁদ, একপাশে খাড়া পাহাড়ের ছোট রাস্তা ধরে। ঘুম স্টেশন পেরিয়ে দুটো বা তিনটা পাহাড় ডিঙ্গানোর পরেই শুরু হল জ্যাম! সারি-সারি গাড়ি পুরো রাস্তা জুড়ে! যেহেতু ছোট গাড়ি। জায়গা খুবই কম লাগে। সেহেতু সেইসব গাড়ির সারি ভেদ করেই চলছে আমাদের টগবগে যুবক। অতিরিক্ত সামান্ন অর্থের সন্ধানে আর আমাদের শেষ রোমাঞ্চের স্বাদ দিতে।

এভাবে আরও ২০ মিনিট চলার পরে আর কোনো ভাবেই যাওয়া যাচ্ছেনা! কিন্তু আর বেশী দুরেও না। সুতরাং নেমে গেলাম কার থেকে। যুবকের নাম্বার নিয়ে। এবার শুরু পাহাড় চড়ার পালা। পাগলের মত উঠছি, পাহাড়ের লতাপাতা, গাছের শিকড়, ইটপাথর উপেক্ষা করে! রাস্তা ধরে গেলে দেরি হব।, তাই সর্টকার্ট করে, ট্রেকিং পদ্ধতি অনুসরন করে! সারা গায়ে ধুলো-বালু, কাঁদা, হাতের ছিলে যাওয়া, সব জয় করে পৌঁছে গেলাম সেই কাঙ্ক্ষিত চুড়ায়! টাইগারহিলের শীর্ষে!

ভিড় আর ভিড়, মানুষ আর মানুষ! যেন মেলা বসেছে বছর শুরুর! আবারো সবকিছু উপেক্ষা আর বকাবকি তুচ্ছ করে চলে গেলাম সামনে! সূর্যি মামা শুধু আমাদের জন্যই যেন অপেক্ষা করছিল! শুধুই আমাদের জন্য!

কাঞ্চনজঙ্ঘার রুদ্ধশ্বাস রূপে আরও হাজারো রঙে রাঙিয়ে দিয়ে রঙিন হয়ে উঠছে সূর্য তার সকল সৌন্দর্য নিয়ে! কত যে রঙের খেলা, কত যে খেয়ালি কাঞ্চনগঙ্ঘা আর কিজে এক অব্যাক্ত অনুভূতি? যার প্রকাশ ভাষায় অসম্ভব! এ শুধু গিয়ে, দেখে নিজের মত করে অনুভবের।

আমার ভাষায় বর্ণনা অসাধ্য। সেই ভাষাই যে নেই! দারুণ স্বার্থক ও শতভাগ আনন্দের ভ্রমণ পুরোপুরি পূর্ণতায় পরিসমাপ্ত।

POst Copied From:Sajol Zahid‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

চট্টগ্রাম থেকে কম খরচে সহজে ঘুরে আসুন দার্জিলিং

একটু ইচ্ছা থাকলেই চট্টগ্রাম থেকে সহজে ঘুরে আসতে পারবেন স্বপ্নের দার্জিলিং ও কলিম্পং ।

দেখে আসতে পারেন কাঞ্চনজঙ্গার ( পৃথিবীর ৩য় বৃহত্তম পর্বতমালার) অপরূপ সৌন্দর্য, দার্জিলিং এর রক গার্ডেন, ঘুম MONESTRY, বাতাসিয়া লুপ, ঘূম স্টেশন, জাপানিজ পিস প্যাগোডা, হিমালয়ান স্টেশন ( UNESCO WORLD HERITAGE), টী গার্ডেন, HIMALAYAN MOUNTAINEERING INSTITUTE, BENGAL NATURAL HISTORY MUSEUM, Himalayan Zoo.

করতে পারেন সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ও রোমাঞ্চকর এডভেঞ্চার – রাফটিং ও প্যারাগ্লাইডিং।

যাওয়ার আগে আপনার যা যা লাগবে :

১। পাসপোর্ট ও ইন্ডিয়ান ভিসা
২. Dollar endorsement এর কপি
৩. ট্রাভেল ট্যাক্স এর কপি
(ট্রাভেল ট্যাক্স ৫০০ টাকা, সোনালি ব্যাংক অথবা বর্ডারে দেয়া যাবে)।
৪. NOC (for service holder)।

***যেভাবে যাবেন

চট্টগ্রাম থেকে দার্জিলিং :
Minimum cost Tk.5500/-, (only darjeeling). See details at the end.
চট্টগ্রাম থেকে যে কোন বাস এ ঢাকা , নন এসি ৪৩০/- টাকা, এসি ১০০০/- থেকে ১২৫০/- টাকা। ঢাকার গাবতলি বাস স্ট্যান্ড থেকে বুরিমারি বর্ডার, নন এসি ৬৫০/- টাকা, এসি ৮০০/- টাকা। এরপর বর্ডার ক্রস করে চেংরাবান্দা বাজার এ গেলে পাবেন লোকাল বাস। বাজার থেকে শিলিগুরির বাস উঠে শিলিঘুরি স্টেশন এ যেতে হবে, লোকাল ভাড়া ৬০/- রুপি। শিলিঘুরি স্টেশন এ নামলেই দার্জিলিং এর জীপ পাবেন। শেয়ার করে গেলে প্রতি জন এর ভাড়া ১৪০/- রুপি।
( লোকাল অথবা শেয়ার এ যেতে না চাইলে রিজার্ভ ট্যাক্সি অথবা জীপ নিয়ে ও যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে চেংরাবান্দা বর্ডার এ গেলেই কার ও জীপ পাবেন। ভাড়া (চেংরাবান্দা বর্ডার থেকে শিলিঘুরি স্টেশন) কার ১০০০/- থেকে ১২০০/- রুপি, জীপ ১৪০০/- রুপি থেকে ১৬০০/- রুপি। শিলিঘুরি স্টেশন থেকে দার্জিলিং জীপ ১৪০০/- থেকে ১৬০০/- রুপি) ।
দার্জিলিং এর সব স্পট দেখার জন্য জীপ অথবা কার রিজার্ভ করতে পারবেন। অথবা ট্যাক্সি স্ট্যান্ড এ গেলে অন্য টুরিস্টদের সাথে শেয়ার করে ও যেতে পারবেন।

***দার্জিলিং থেকে কলিম্পং (রাফটিং ও প্যারাগ্লাইডিং)

দার্জিলিং থেকে কলিম্পং যেতে হলে প্রথমে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড এ যেতে হবে ( দার্জিলিং বাজার এর পাশে) । ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে শেয়ার এ জনপ্রতি ১৪০/- রুপি দিয়ে কলিম্পং স্টেশন যাবেন।
(রিজার্ভ ট্যাক্সি অথবা জীপ নিয়ে যেতে চাইলে ১৪০০/- থেকে ১৬০০/- রুপি। Round trip হলে আরও কমে পাবেন।)
কলিম্পং গিয়ে রাফটিং করতে চাইলে যেতে হবে মাল্লি নামক স্থানে।রাফটিং বোট প্রতি ৪৫০০/- টাকা। এক বোটে ৫ জন বসতে পারবে। সাথে ২ জন চালক ও থাকবে। রাফটিং এর ছবি জন্য এক্সট্রা কিছু চার্জ নিবে। বারগেইন করলে কম ও পেতে পারেন।
আর প্যারাগ্লাইডিং ( paragliding) এর জন্য যেতে হবে ডেলো পাহাড়ে। ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে ২০০/- রুপি দিয়ে ট্যাক্সি পাবেন। ডেলো পাহাড় নিয়ে যাবে ও প্যারাগ্লাইডিঙ ( paragliding) শেষে নিয়ে আসবে।
প্যারাগ্লাইডিং ( paragliding) দুই ধরনের আছে। শর্ট প্যারাগ্লাইডিং অ্যান্ড লং প্যারাগ্লাইডিং। শর্ট প্যারাগ্লাইডিং ৩০০০/- রুপি, দরাদরি করে ২২৫০/- রুপিতে করতে পারবেন।
লং প্যারাগ্লাইডিং ৩৫০০/- থেকে ৪০০০/- এর মধ্যে করতে পারবেন।

কলিম্পং থেকে শিলিঘুরি / দার্জিলিং :
কলিম্পং ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে শিলিঘুরির বাস এ উঠে শিলিঘুরি স্টেশন এ আসতে পারবেন। ভাড়া জনপ্রতি ১০০/- রুপি। অথবা, কলিম্পং থেকে আবার দার্জিলিং যেতে পারেন জীপ এ। ভাড়া ১৪০/- রুপি।

***যেখানে থাকবেন :
দার্জিলিং এর মল রোড এ গেলে ৬০০/- থেকে ২০০০/- রূপির মধ্যে বিভিন্ন ধরণের হোটেল পাবেন। আপনার বাজেট ও চাহিদা অনুযায়ী হোটেল ঠিক করে নিবেন।

কলিম্পং এ থাকতে চাইলে ও থাকতে পারবেন। টুরিস্টদের থাকার জন্য হোটেল আছে। দার্জিলিং থেকে একটু কম মূল্যে পাবেন।
শিলিঘুরি থাকতে চাইলে শেভোক অথবা বিধান রোড এ এসে থাকতে পারেন। ৫০০/- ১০০০/- রূপির মধ্যে হোটেল পাবেন।

***খাওয়া ধাওয়া :
খাবারের দাম বেশী না। মুসলিম হোটেল এ খেতে চাইলে মল রোড এ গিয়ে ‘ইসলামিয়া হোটেল’ এ খেতে পারেন।

***শপিং :
শপিং এর জন্য শিলিঘুরির HONKONG MARKET, COSMOS SQUARE (WITH BIG BAZAR), VEGA CIRCLE এ আসতে পারেন। শেভোক রোড এ আসলেই এই মার্কেটগুলি পাবেন।
দার্জিলিং এ মল রোড বিগ বাজার সহ অনেক দোকান পাবেন।

Minimum cost: (only Darjeeling)
• Ctg to Darjeelig (450+650+60+140) = 1300 + others 100 = 1400/-.
• Sightseeing = 500/- (share)
• Hotel: 600/- * 2 nights =1200/-
• Meal =1500/-
• Darjeeling to Ctg =1400/-
• Extra =1000/-

Total: Tk.5500/-..!!!!!!!!!!

Post Copied From:Misbah Ibn Hakim>Travelers of Bangladesh (ToB)

মাত্র ৮৫০০ রুপিতে ঘুরে আসুন সিলেট-শিলং(মেঘালয়)-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং

মাত্র ৮৫০০ রুপিতে ঘুরে আসুন সিলেট-শিলং(মেঘালয়)-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং ৫ রাত ৬ দিন…অনেক কম খরচে ঘুরে আসা যায়,কলকাতার দিকে না গিয়ে তামাবিল বর্ডার দিয়ে কম খরচে আর কম সময়ে যাওয়া যায়,তামাবিল বর্ডারে ঝামেলাও করে কম (দার্জিলং এ ট্রাভেলস এজেন্সি এর মাধ্যমে ঘুরার কারণে বেশী গেছে নাইলে আরও কম যাইত)…
শিলং-ডাউকি ১০ রুপি,ডাউকি-শিলং ১২০,শিলং-গুহাট্টি ১৭০ সবই লোকাল সমুতে করে,গুহাট্টি থেকে ট্রেন ১৫০ করে বাংলাদেশ এর শোভন সিট করে নিউ জলপাইগুড়ি,নিউ জলপাইগুড়ি-দার্জিলিং ১২০

Post Copied From:Mohin Hasnat Hassan‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

দার্জিলিং 

ইন্ডিয়াতে বাংলাদেশের যত মানুষ ঘুরতে যায় তার মধ্য কয়েকটি জায়গা ফিক্সড, তারমধ্য #দার্জিলিং অন্যতম। অথচ এই দার্জিলিং যাবার পথেই একটু ডানে সরে গেলেই বিখ্যাত #ডুয়ার্স। যেখানে পাহাড় নদী অরণ্য সব মিলেমিশে একাকার। পশ্চিম বঙ্গের জাতীয় উদ্যান ও এখানে।
এবারও অন্য সবার মত প্ল্যান করেছিলাম দার্জিলিং যবার, কিন্তু শেষ মুহুর্তে প্ল্যান করে ডুয়ার্স যাওয়াই ফিক্সড করলাম। বৃহস্পতিবার রাতে শ্যামলী গাড়িতে #বুড়িমারি বর্ডার, যদিও টিকিট ছিল #শিলিগুড়ি পর্যন্ত, বর্ডার পার হয়ে সকাল ১০ টার মধ্যেই সেখান থেকে ১০০০ (চার জন) রুপিতে সোজা জাতীয় উদ্যান #গরুমারা_ন্যাশনাল এর মেইন গেটের ঠিক অপজিটে #টাস্কার্স_ডেনে গিয়ে উঠলাম। আগেই ফোনে বুকিং দেয়া ছিল, ৪ জনের রুম ১৬০০ রুপি, এসি, আশপাশটা দেখে, দুপুরে খেয়ে হোটেলের ঝকঝকে মারুতি তে ১৫০০ রুপিতে চললাম প্রথমে #স্যামসিং চা বাগানের উদ্দেশ্যে, যদিও ডুয়ার্স এর পুরোটাই সেই ভুটান পর্যন্ত চা বাগান। এটি ২৫০০ ফিট উপরে অবস্থিত দুই পাহাড়ের মাঝে উপত্যকায়, এখান থেকে আরো প্রায় ৫০০ ফিট উপরে ৫ কিঃমিঃ দূরে #সান্তালেখোলা, সমগ্র পাহাড় জুড়ে শুধু কমলা লেবুর বাগান। এর পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে পাহাড়ি ঝিরি নদী #মৌচুকি। এর ওপারেই গহীন জংগলের ভেতরর একটি রিসোর্ট, যা অনেক আগে থেকে বুকিং দিতে হয়। এরপর একটু নীচের দিকে নেমে এলে উপজাতি দের গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রায় ২ কিঃমিঃ এগুলে সেই #রকি_আইল্যান্ড, যা অনেকটা আমাদের দেশের #বিছানাকান্দির মত। এর রুপের ছটা এখনো চোখে লেগে আছে। এখান থেকে নেমে কিছুদুর এগুলেই #মূর্তি নদী। আহ, এর দুপাশ জুড়ে শুধু বন্য সৌন্দর্য। পরদিন এখান থেকেই খুব ভোরে গাড়ি নিয়ে রওয়ানা দিয়ে #কালিম্পং, ফিরতে সেই সন্ধ্যা। পরদিন খুব ভোরে আগে থেকে বুকিং দেয়া হাতির পিঠে চড়ে জঙ্গল সাফারি। সাফারি করার সময় মনে হবে হাত বাড়ালেই বুঝি ছোয়া যাবে #কাঞ্চনজঙ্ঘা। দেখা মিলবে উপমহাদেশের বিখ্যাত এক শিঙা গন্ডার, আছে হরিন, বাইসন। কথা দিচ্ছি এই সাফারি আপনার সারা জীবন মনে থাকবে। সাফারি শেষ হয় ৮.৩০ থেকে ৯.০০ টার মধ্যেই। এরপর ব্যাগ গুছিয়ে দুপুরেই লাটাগুরি থেকে ময়নাগুড়ি হয়ে চ্যাংড়াবান্ধা। মাত্র আড়াই দিনেই এই আসাধারণ একটি ভ্রমণ সম্ভব। আপনি চাইলে খরচ কমাতে পারেন বাসে লাটাগুড়ি গেলে, আবার নন এসি রুমে প্রায় অর্ধেক ভাড়া, হাতির পিঠে জঙ্গল সাফারি না করে জীপ সাফারি করতে পারেন জনপ্রতি ১২০ রুপি।

Post Copied From:Abu Ahmed Shorif Manik>Travelers of Bangladesh (ToB)

5000 টাকাতেই রাজার হালে ঘুরে আসুন বাংলার না কিন্তু আসল দার্জিলিং!

5000 টাকাতেই রাজার হালে ঘুরে আসুন বাংলার না কিন্তু আসল দার্জিলিং
[শর্ত প্রযোজ্য 😉 4-5 জনের গ্রুপের জন্য এই কস্টিং]

পাসপোর্ট ভিসা রেডি করে মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকে ট্রাভেল ট্যাক্স (500 টাকা) জমা দিয়ে দিন তাতে বর্ডারে সময় বাচবে আর ঝামেলা কম হবে। এবার যাওয়ার টিকেটের ঝামেলা, তো আপনার নিশ্চই 30-40 টাকা আর 2-3 ঘন্টা সময় নষ্ট করে গাবতলী থেকে টিকেট কিনে নষ্ট করার মতো সময় নাই। কোন ব্যাপার না সহজ.কম থেকে ঢাকা-বুড়িমারীর টিকেট কিনে প্রিন্ট করে নিন। নাবিল আরএম-2 (এসি) বাসের টিকেট পেয়ে যাবেন কাউন্টার থেকে 100-300 টাকা কমে 🙂
যাত্রার দিন ভালমতো দেখে নিন পাসপোর্ট ভিসা ট্রাভেল ট্যাক্স আর টিকেট ঠিক মতো আছে কিনা? বেড়িয়ে যান বাসা থেকে। নাবিলের এসি বাস গাবতলী থেকে রাত 9.30 এ ছাড়বে। পানি কিনে টাকার নষ্ট করতে না চাইলেও সমস্যা নেই কারণ বাসেই আপনাকে পানির বোতল দেয়া হবে। রাত 1-1.30 এর দিকে ফুড ভিলেজ নামের হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে বাস স্টপেজ দিবে সেখানে খুব ক্ষিদা না থাকলেও 35 টাকায় ভেজিটেবল পেটিস পাওয়া যায় খেয়ে বাসে উঠে পরুন। চোখে একটু ঘুম থাকলে চোখ বন্ধ করুন। চোখ খুলেই দেখবেন বুড়িমারী পৌছে গেছেন সকাল 6-7 টার দিকে। নামলেই দালাল ধরবে আপনাকে কিন্তু আপনার তো কম টাকায় ট্যুর করতে হবে আমারমতো তো কারো সাথে কথা না বলে বুড়ির হোটেলে গিয়ে সকালের নাস্তা সেরে নিন। সারারাত তো বাসে বসে ছিলেন তো নাস্তা শেষে হাতে কিছু সময় থাকলে একটু এদিক হাটাহাটি করুন। বর্ডার খুলবে ঠিক 9.00 টায়। নিজে নিজেই ইমিগ্রেশন অফিসে চলে যান। কাউন্টার থেকে একটা ডিপার্চার ফরম ফিলাপ করুন। কাউন্টারে আপনাকে 20 টাকা দিতেই হবে। ফরম ফিলাপ করে ছবি তুলে কাস্টমসের দিকে এগিয়ে যান। কাস্টমসে ট্রাভেল ট্যাক্সের কপি সো করে একটা সিল নিয়ে ঢুকে যান ইন্ডিয়া 🙂
ইন্ডিয়া ঢুকার পরও আপনাকে দালাল ধরবে। এখানের দালালগুলা মোটামুটি ভাল। বাংলাদেশী 100 টাকায় আপনার সব কাজ করে দিবে। এখানে দালাল দিয়ে করিয়ে ফেলুন সব ফর্মালিটিজ। আমি একা একাই করেছিলাম কিন্তু কাস্টমসে আর ইমিগ্রেশনে 50+50 =100 টাকাই লাগে আর সাথে একটু ফাও ঝামেলা। দালালরা এটা 70-80 দিয়ে মনে হয় সেট করে নিজেদের 20/30 কমিশন রাখে। ফর্মালিটিজ শেষে বর্ডারের সাথের মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে রেট যাচাই করে সাথের টাকা/ডলার ক্যাশ করে নিন।আমি 81.5 করে পেয়েছিলাম বাংলাদেশী 100 টাকায়। বর্ডারেই সব টাকা ভাঙ্গিয়ে নিন পরে কিছু বাচলে আবার ব্যাক করার সময় ক্যাশ করে নিতে পারবেন 1.18 টাকা রেটে। শিলিগুড়ি অথবা দার্জিলিং-এ বাংলাদেশী টাকা এক্সচেঞ্জ করা অনেক ঝামেলার কাজ আর রেট খুবই কম বর্ডার থেকে প্রায় 10-15 টাকা করে কম পাবেন।
টাকা ক্যাশ করে এবার শিলিগুড়ি চলে যান। চেংরাবান্ধা বর্ডার থেকেই শেয়ার ট্যাক্সি পাওয়া যায় ভাড়া পড়বে 200 রুপির মতো অথবা বর্ডার থেকে অটো রিক্সা নিয়ে চলে যান চেংরাবান্ধা বাইপাস ভাড়া পড়বে 30-40 রুপি। সেখান থেকে মাথাভাঙ্গা অথবা কুচবিহার থেকে শিলিগুড়ির বাসে মাত্র 60 রুপি দিয়ে চলে যেতে পারবেন শিলিগুড়ি। বাসগুলা ভালই আর স্পীড লক্কর ঝক্কর এ্যাম্বাসেডর থেকে বেশি। 9.00 টা বাজে বর্ডার ক্রস করলে 11-12 টার মধ্যেই শিলিগুড়ি পৌছে যাবেন। এবার শিলিগুড়ি তেনজিং নরগে বাস টার্মিনালে নেমে পাশের শিলিগুড়ি জংশনে একটু ঢু মারতে পারেন। সাথেই সুন্দর দার্জিলিং হিমালয়ান রেল স্টেশন। একটুপর দুপুরের খাবার শেষ করে এবার ট্রাফিক বক্সের সাথের জীপ স্ট্যান্ড থেকে 130 রুপি দিয়ে দার্জিলিংয়ের শেয়ার জীপের টিকেট নিয়ে জীপে বসে পরুন। পাহাড়ী রাস্তার সৌন্দর্য্য, মেঘ আর পাহাড়ী গ্রাম দেখতে দেখতে 3-3.30 ঘন্টায় চলে যাবেন দার্জিলিং। দার্জিলিং মটর স্ট্যান্ডে নেমে একটু উপরের দিকে গিয়ে রুম নিয়ে নিন। বেশি উপরে হোটেল ঠিক করলে নিচে নামতে কষ্ট লাগবে আর বেশি নিচে নিলে উপরে যেতে কষ্ট লাগবে তাই মাঝামাঝি জায়গায় হোটেল ঠিক করুন। 1200-1500 রুপির মধ্যে গিজার সহ ভালমানে রুম পাবেন। 4-5 জন ইজিলি থাকা যাবে আর রুম কক্সবাজারের 4-5 হাজার রুমের চাইতে কোন অংশেই কম ভাল না। হোটেল ঠিক করে একটু দার্জিলিংয়ের এদিক সেদিক হাটাহাটি করে মসজিদের পাশে মুসলিম হোটেল আছে সেখানে গরুর মাংস ভুনা আর ভাত খেয়ে নিন। খাওয়া দাওয়া শেষে পরদিন লোকাল ট্যুরিষ্ট স্পট ঘুরার জন্য একটা জীপ ঠিক করে নিন 2000-2400 রুপির মধ্যে। রুমে গিয়ে তারাতারি ঘুমিয়ে পরুন কারন জীপ আপনাদের রুম থেকে ডেকে নিয়ে যাবে ভোর 4.00 টার সময়। মোটামুটি সবগুলা স্পট দেখিয়ে সন্ধ্যা নাগাদ হোটেলে ছেড়ে যাবে। আমরা ঘুম থেকে উঠতে পারিনি তাই ভোরে টাইগার হিল, বাতাসিয়া লুপ আর ঘুম মন্সট্রি মিস করেছিলাম।

পরদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিন। ভোর 4 টায় জীপে করে টাইগার হিল বাতাসিয়া লুপ আর ঘুম ঘুরে জীপ আপনাদের 8.00 টার দিকে হোটেলে দিয়ে যাবে নাস্তা করার জন্য। নাস্তা শেষে আবার জীপে গিয়ে বসুন আর একে একে হিমালয়ান মাউন্টেনারিং ইন্সটিটউট, মিউজিয়াম, চিড়িয়াখানা, তেনজিং রক, জাপানিস টেম্পল, পিস প্যাগোডা, টি-গার্ডেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন আর রক গার্ডেন ঘুরে দেখুন। এইচএমআই তে ঢোকার জন্য আপনাকে টিকেট কিনতে হবে। ইন্ডিয়ানদের জন্য 50 রুপি আর ফরেনারদের জন্য 100 রুপি সাথে ক্যামেরার জন্য অতিরিক্ত 10 রুপি। আমরা যেহেতু ইন্ডিয়ানদের ভাই তো 50 রুপি দিয়েই টিকেট নিয়ে নিন। ওরা বুঝতে পারবে না আপনি কোন দেশের। তেনজিং রকে 50 রুপি দিয়ে রক ক্লাইম্ব করতে পারবেন আর রক গার্ডেন ঢুকতে আপনাকে 10 রুপি দিয়ে টিকেট কিনতে হবে। রক গার্ডেন থেকে ব্যাক করার সময় অরেঞ্জভ্যালি টি স্টেটে একটু নেমে সময় কাটাতে পারেন। দার্জিলিং স্টেশনেও এককাপ চা খেয়ে নিতে পারেন। এদিন ক্যাবল কারে উঠার কোন দরকার নেই বলে আমার মনে হয় কারন ক্যাবল কারে চড়তে গেলে আপনাকে লাইন আর রাইড সহ 3-4 ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হবে তাতে আপনি অন্য জায়গা গুলো শান্তিমতো ঘুরতে পারবেন না। সন্ধ্যায় হোটেলে ব্যাক করে দার্জিলিংয়ে পায়ে হেটে ঘোরাঘুরি করুন। জায়গায় জায়গায় রেস্টুরেন্ট রয়েছে সেখানে গিয়ে লোকাল ফুড ট্রাই করতে পারেন। মমো আর থুপকা (স্যুপি নুডুলস টাইপ) অসাধারণ। রাতে মুসলিম হোটেলে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। একটু দেরী হলেও সমস্যা নেই কারণ কালেকে আপনার তেমন কোন কাজ নেই।
সকাল 8-9 টায় ঘুম থেকে উঠুন। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা শেষ করে বেড়িয়ে পরুন। গতকাল তো ক্যাবল কারে উঠতে পারেন নি। নিচে মটর স্ট্যান্ড থেকে লোকাল জীপে 10 রুপি করে চলে যান সেন্ট জোসেফ স্কুলের সামনে। এখান থেকে ঠিক অপজিটে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠলেই ক্যাবল কার। 175 রুপি দিয়ে টিকেট কিনে লাইনে দাড়িয়ে যান। লাইন শেষে ক্যাবলকারে চড়ে বসুন। ক্যাবল কার থামলে নেমে আবার লাইনে দাড়াতে হবে। সেখান থেকে আবার একটু পর ক্যাবল কারে চড়ে আগের জায়গায় রাইড শেষ হবে। আবার আগের মতো লোকাল জীপে চলে যান দার্জিলিং মটর স্ট্যান্ড। হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে নিন। বিকেলে বিগবাজার অথবা লোকাল মার্কেট থেকে শপিং করার থাকলে করে নিন। সন্ধ্যায় আইনক্সে একটা মুভি দেখতে ভুলবেন না। বিগবাজারের বিল্ডিংয়েই আইনক্স। টিকেট মাত্র 70 রুপি। ব্লগবাস্টার থেকেও বক্সঅফিসটা জোস। মুভি দেখা শেষ করে রাতের খাবার খেয়ে নিন। রুমে ফেরত চলে যান। আপাততো আপনার দার্জিলিং ঘোরা শেষ। এবার চাইলে ব্যাগ প্যাক করে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন কালকে সকালে ব্যাক করার জন্য। অথবা একটা দিন ঘুমিয়েও কাটাতে পারেন চাইলে।
ব্যাক করার সময় দার্জিলিং থেকে লোকাল শেয়ার জীপে করে মিরিক চলে যেতে পারেন। সেখান থেকে শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি থেকে বাসে করে চেংরাবান্ধা বাইপাস তারপর চেংরাবান্ধা বর্ডার। ট্যুর শেষে রুপি থাকলে বর্ডারে আবার টাকায় চেঞ্জ করে নিন। বর্ডারে কাউকে 100 টাকা দিলে সেই সব ফর্মালিটি শেষ করে আপনাকে গেট অবদি ছেড়ে দিয়ে আসবে। বাংলাদেশ ঢুকে টুকটাক ঝামেলা করতে না চাইলে কোন দালালের সহায়তা নিন। কোন ঝামেলা ছাড়াই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে কয়েক মিনিটের মধ্যেই। কিন্তু টাকা দিতে হবে 200। বেশি দাবি করবে কিন্তু দিবেন না। সময় থাকলে বুড়ির হোটেলে খেয়ে নিন নয়তো কিছু খাবার কিনে বাসে উঠে বসুন। বর্ডারেই অনেক বাস কাউন্টার আছে। সবগুলো বাস 6.10-6.30 এর মধ্যেই ছেড়ে দেয়। টিকেটের জন্য দালাল ধরতে পারে আপনাকে কিন্তু একাই যাবেন টিকেট কাউন্টারে। এখানে দালাল আপনার থেকে টাকা নিবে না কিন্তু কাউন্টার আপনার থেকে টিকেটের দাম 20-50 টাকা বেশি নিয়ে দালালকে কমিশন দেবে। রাতে বাস হল্ড করার সময় চাইলে রাতের খাবার সেড়ে নিতে পারেন। সকাল সকাল ঢাকা নেমে যান আর বাসায় গিয়ে হিসাব করুন শপিং ছাড়া কত টাকা খরচ হলো 🙂

** টাকায় রেট ভালো পাওয়া যায় ডলার থেকে। কিন্তু বর্ডারে 5000 টাকার বেশি আছে বললে ঝামেলা করবে। তাই কয়েক জায়গায় টাকা ভাগ করে রেখে একসাথে 4-5 হাজার টাকা রাখাই ভাল। জিজ্ঞেস করলে 4-5 হাজার টাকা আছে বলবেন।
** বর্ডার ইন্ডিয়ান টাইম সন্ধ্যা 6.00 টা পর্যন্ত খোলা থাকে। (শিলিগুড়িতে সচরাচর শেয়ার ট্যাক্সি পাওয়া যায় না। দালালরা বর্ডার বন্ধ হয়ে যাবে, রাস্তায় জ্যাম, গাড়ী নাই বলে রিজার্ভ ট্যাক্সি নিতে বলতে পারে। 5-6 জন হলে ট্যাক্সি নেয়া যায় নয়তো বাসে যাওয়াই ভালো।

Post Copied From: Nahidul Alam Neel>Travelers of Bangladesh (ToB

মাত্র ৩ দিনে দার্জিলিং ভ্রমন

২৬.০৩.২০১৭ তারিখ সন্ধা ৮.০০ টায় কল্যানপুর থেকে শ্যামলী বাসে চড়েবসি। রাত ২.০০ টায় বগুড়া Food Village এ আমরা ডিনার করি। সারা রাত বাস জার্নির পর সকাল ৭.৩০ টার দিকে বুড়িমাড়ি সীমান্তে পৌছে ফ্রেস হয়ে সকালের নাস্তা করি। বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে বর্ডার ক্রস করি ১.০০ টার দিকে। ভারতের ইমিগ্রেশনের ঝামেলা শেষ করতে আরো প্রায় ১ ঘন্টা লেগে যায়। সব ঝামেলা শেষে সীমান্ত থেকে টাকা এক্সচেঞ্জ করে ১১.৩০ টায় শিলিগুড়িরর উদ্দেশ্যে আমাদের যাত্রা শুরু হয়। প্রায় ২ ঘন্টা পরে আমরা যখন শিলিগুড়ি পৌছাই তখন বেলা ১.৩০ হবে।হোটেল CENTRAL PLAZA INTERNATIONAL এ লাঞ্চ করে যত দ্রুত সম্ভব জিপে উঠে পরি। যাত্রা শুরু হয় সেই স্বপ্নের দিকে যে স্বপ্ন বহুদিন ঘুমতে দেয়নি।

এখান থেকেই শুরু হয় আসল রোমাঞ্চ। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার পথে প্রথমেই যে দৃশ্যটা মন কেড়েনিবে তা হল বিশাল বিশাল চা বাগানের বুক চিড়ে চলে যাওয়া রাস্তা যা অপলক দৃষ্টিতে শুধু দেখতেই মন চায়। এর পরেই দেখা মিলবে পাহাড় আর পাহাড়। পাহাড় কেটে তৈরি করা এ সকল রাস্তা যেন সমুদ্রের ঢেউ। রাস্তার দুপাশে বিস্তৃত সুউচ্চ পাহাড়ের বুকের উপর দাড়িয়ে থাকা গাছগুলোই আপনাকে পাগল করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।(গাছগুলোর নাম এই মুহুর্তে মনে করতে পারছিনা)

এরপর যখন আমাদের জিপ দার্জিলিং শহরে ঢুকতে শুরু করল তখন মনে হচ্ছিল আসলেই আমি কোন স্বপ্নের রাজ্যে চলে আসছি। পাহাড়ের খাদে খাদে পাথর কেটে তৈরিকরা বাড়ি গুলো দেখে মনে হচ্ছিল এ যেন পাহাড়ের চুড়ায় ওঠার জন্য বাড়ি দিয়ে সিড়ি তৈরি করা হয়েছে। সিড়ি যেমন একটার পর একটা উপরের দিকে উঠতে থাকে তেমনি বাড়িগুলো একটার মাথার উপর আরেকটা দাড়িয়ে আছে।

অবশেষে স্বপ্নে ভাসতে ভাসতে সন্ধা ৭.৩০ টার দিকে আমরা আমাদের পূর্ব নির্ধারিত হোটেল HOTEL SWEET HOME INTERNATIONAL এ গিয়ে পৌছলাম। রুমে গিয়ে দ্রুতই ফ্রেস হয়ে ৮.০০ টার দিকে বেড়িয়ে পরলাম শহরটা একটু ঘুরে দেখার জন্য। ১/১.৩০ ঘন্টা শহরে ঘোরাঘুরি করে আবার হোটেলে এসে রাতের খাবার খেয়ে সকাল সকাল শুয়ে পরলাম (যদিও ঘুমতে পারিনি উত্তেজনায়) কারন ভোররাতে যে আবার উঠতে হবে টাইগার হিলে সূর্যোদয় দেখার জন্য।

রাত ৩.৩০ এ ঘুম থেকে উঠে গোসল করে (সারাদিন গোসল করার সুযোগ পাবনা তাই) ৪.০০ টার দিকে Tiger hill এর উদ্দেশ্যে বেরহই সূর্যোদয় এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্য। যদিও আমরা দুটোই দমিস করেছিলাম আকাশে অতিরিক্ত মেঘ থাকায়। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নাকি এখানে সাতবার এসেও একবারো সূর্যোদয় দেখতে পারেননি। সুতরং আমাদের একবারের চেষ্টা ব্যার্থ হওয়া কোন ব্যাপারই না।

এখানে ব্যার্থ হয়ে আমরা হোটেলে ফেরার পথে “বাতাসিয়ে লুপ”(এখানে আমরা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখি) এবং পৃথিবীর সর্বোচ্চ রেলওয়ে স্টেশন “GHOM” রেলওয়েস্টেশন দেখি যেটি সমতল ভুমি থেকে ৮০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।

অতপর ৯.০০ টার দিকে হোটেলে ফিরে সকালের নাস্তা করে আমরা আবার বেড়িয়ে পরি Japan Temple, Rock Garden, HMI zoo, Tensing Rock (পৃথিবীর প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী এডমন্ট হিলারি এই পাহাড়ে ট্রেনিং নিয়েছিলেন), এগুলোর উদ্দেশ্যে। এসব জায়গা ঘুরে আমরা চলে যাই Sent Joseph School এ যেখানে রনবির কাপুরের বিখ্যাত বরফি ছবির শুটিং হয়েছে। Sent Joseph এর পাশেই আমরা Rope Way বা Cable Car এ চড়ি। ক্যাবল কার থেকে নিচের চা বাগানের দৃশ্য গুলো দেখতে খুবই সুন্দর।

সবশেষে আমরা সন্ধার ম্যধে আবার হোটেলে ব্যাক করি। রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে হাল্কা নাস্তা করে আমরা শপিং করতে বেরহই। শপিং শেষ করে হোটেলে গিয়ে রাতের খাবার খেয়ে সারা রাত ঘুম। পরের দিন সকালে নাস্তা করে আবার শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি ফেরার পথে “মিরিক লেক” দেখতে ভুলবেননা।

খরচের কোন বিবরন দিতে পারলামনা কারন আমরা একটা ট্যুরিজম কোম্পানির আন্ডারে গিয়েছিলাম।

Post Copied From:Emdadul Hoque>Travelers of Bangladesh (ToB)