সমুদ্র পথে বিদেশ ভ্রমণ

সমুদ্র পথে বিদেশ ভ্রমণ (সিঙ্গাপুর – মালায়শিয়া – থাইল্যান্ড)

১১ টি ডেকের প্রায় ৯০০ ফিট জাহাজ Royal Caribbean – Legend of the sea. ২০০০ লোকের ধারণ ক্ষমতা, কি নেই জাহাজটাতে, বড় থিয়েটার, সুইমিং পুল, দৌড়ানোর জন্য ট্র্যাক, মিনি গল্ফ, সিনেমা হল, ক্যাসিনো, ক্লাব,শপিং সেন্টার, ফটো ষ্টুডিও , বাচ্চাদের খেলার জায়গা । তার সাথে তো রয়েছে ৩ বেলা বুফে খাবার। আর ভারত মহাসাগরের অভূতপূর্ব সৌন্দর্য তো আছেই।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় ছিল এই সব সুবিধা সহ চার দিন – তিন রাতের খরচ ছিল মাত্র ৩০,০০০ টাকা।

আমরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুর যাই, তারপর Harbourfront থেকে সকালে উঠে পড়ি বিশালাকারের জাহাজে। সকলের পাসপোর্ট জমা নিয়ে অদের একটা কার্ড দিয়ে দেয়, যা দিয়ে দরজা খোলা থেকে শুরু করে যে কোনো জিনিস কেনা যায়। শুরু হয় এক নতুন ভ্রমণ অভিজ্ঞতার।

জাহাজে বোরিং লাগার কোনো বিষয় নেই, সব সময়ই একটা না একটা প্রোগ্রাম চলতে থাকে।

একদিন ভারত মহাসাগরের মাঝে চলার পর নোঙ্গর ফেলে মালয়েশিয়ার Port Klang এ। একটা বিষয় এখনো আমার কাছে রহস্য রয়ে গেছে তা হলো আমাদের মালয়েশিয়ার কোনো ভিসা ছিলোনা, আমাদের পাসপোর্ট এ মালয়েশিয়ার entry / exit সীল ও নেই, কিন্তু আমরা জাহাজ থেকে নেমে Port Klang থেকে কুয়ালালামপুর ঘুরে আসি। কুয়ালালামপুর থেকে জাহাজে ফিরি বিকেল ৪ টায়। তারপর জাহাজ চলতে থাকে থাইল্যান্ড এর Phuket এর উদ্দেশ্যে।

এর পরদিন সকালে জাহাজ পৌঁছে যায় Phuket এ, সারাদিন ফুকেটে থাকার পর সন্ধ্যায় আবার রওনা হয় সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে।

খরচ / পারসন :
ঢাকা – সিঙ্গাপুর : ২২,০০০ ~ ২৬,০০০ টাকা
Cruise: ৩০,০০০ ~ ৩৫,০০০ টাকা

সিঙ্গাপুর অনেক এক্সপেন্সিভ, সিঙ্গাপুরে থাকলে খরচ বেড়ে যাবে। যারা সমুদ্র পছন্দ করেন তারা চেষ্টা করবেন একবার হলেও এই ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নেয়ার।

 

 

********** আপডেট ১**********

অনেকের আগ্রহ দেখে ভালো লাগছে – ক্রুজ শিপ ভ্রমণ সম্পর্কে সবাই ধরে নেয় লাখ লাখ টাকার বিষয় আসলে তা নয়। আমি বুকিং – খরচের আরো ডিটেলস পরে জানাবো।

আশা করি সবার সাধ আর সাধ্য এক হবে।

********** আপডেট ২**********

অনেকে ডিটেইলস জানতে চেয়েছেন – যতটুকু সম্ভব এই আপডেট এ জানাচ্ছি।

* আমি cheapest way টা দেখানোর চেষ্টা করেছি।
* Visa Application – Air Ticket – Hotel booking নিজে করতে হবে
* ফেব্রুয়ারীর ১৩ – ১৭ তারিখের ক্রুজ জার্নির জন্য খরচের estimate করা
* দুই জনের হিসেবে করা হয়েছে
* ডলার ভ্যালু ৮১ টাকা ধরা হয়েছে

ভিসা:

সিঙ্গাপুর – Double Entry – 2600 টাকা (Ref: http://www.saimongroup.com/singaporevisa/Visa_Fee ) ট্রাভেল এজেন্সী ৪০০০ থেকে ৬৫০০ টাকা নেবে। ক্রুজ এর invitation থাকলে ভিসা পাওয়া সহজ।

থাইল্যান্ড – Single Entry – ৫৪০ টাকা (http://www.vfsglobal.com/Thail…/Bangladesh/Tourist_Visa.html )ট্রাভেল এজেন্সী ১০০০ – ১৫০০ টাকা

মালয়েশিয়া – ভিসা প্রয়োজন নেই, হয়তো cruise কোম্পানির সাথে মালয়েশিয়ার গভঃ স্পেশাল arrangement আছে। মালয়েশিয়ায় ঢুকার সময় কোনো ইমিগ্রেশন পার হতে হয়না।

এয়ার টিকেট :

Feb ১২ – Feb ১৭

Tiger Airlines: (Dhaka – Singapore) – ২৩,৮১৫ টাকা (রিটার্ন এয়ার টিকেট সহ)

ক্রুজ শীপ:

Royal Caribbean – Mariner of the Sea
Room type: Interior state room

খরচ: ৬৮,৭০০ (২ জনের)

বুকিং http://www.royalcaribbean.com/

Included:

– ৪ দিন / ৩ রাত থাকা
– ৩ বেলা বুফে খাবার (Chinese, Indian cuisines)
– বিকেলে পিজ্জা – আনলিমিটেড (২ পিস নেয়ার পর লজ্জা লাগতো 😛 )
– ক্যাপ্টেন’স ককটেল পার্টি
– Most of the entertainment and services.

– সফ্ট ড্রিঙ্কস ইনক্লুডেড না – তবে $১২ দিয়ে ৪ দিনের জন্য আনলিমিটেড ড্রিঙ্কস প্যাকেজ নেয়া যায়।

Excluded:

– ইন্টারনেট / টেলিফোন সার্ভিস (সিম রোমিং করা থাকলে প্রায় এ অসুবিধা হয় না )
– ক্যাসিনো
– ড্রিঙ্কস
– লন্ড্রি সার্ভিস
– Gratuity
– Shore excursions
– শপিং

Dress code:

– শুধু ক্যাপ্টেন্স ককটেল পার্টি (valantines night a) ড্রেস কোড রয়েছে। ছেলেদের – Tuxedo (অথবা যেকোনো ধরণের স্যুট), মেয়েদের – black এন্ড shine ড্রেস।

ক্যাপ্টেন্স ককটেল পার্টি ডিনার এ ড্রেস কোড মেইনটেইন না করলে একটু বিব্রতকর পরিস্হিতিতে পরতে পারেন।)

সেবার মান – ৫ star মানের

নিচে ২ ধরণের জার্নি উল্লেখ করলাম (যার জন্য যেটা প্রযোজ্য)

জার্নি ১ – (cheapest)

১. ঢাকা – সিঙ্গাপুর by air ( ১২ ফেব্রুয়ারী রাত ৯:৩০)
২. সিঙ্গাপুর এ প্লেন ল্যান্ড করবে রাত ৩:০০ টায়, ইমিগ্রেশন পার হতে রাত ৪:০০ টা
৩. রাত ৪ টা থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত রেস্ট এয়ারপোর্ট এ। (ডিউটি ফ্রি শপ আর লাউঞ্জে সময় কেটে যাবে )
৪. সকাল ৮ টায় Uber / ট্যাক্সি নিয়ে HarborFront
৫. সকাল ১০ টায় জাহাজে চেকইন
৬. Enjoy the trip
৭. ১৭ তারিখ সকাল ১১ টায় জাহাজ HarborFront নোঙ্গর ফেলবে।
৮. বিকেল ৫:৩০ রিটার্ন ফ্লাইট to ঢাকা

ভিসা (নিজ) + এয়ার টিকেট + ক্রুজ টিকেট = ৬১,৩০০ টাকা
Shore excursions + অন্যান + আমার জন্য চকলেট 😛 = ১০,০০০ টাকা

মোট – ৭১,৩০০ / পারসন

জার্নি ২ – (comfortable)

১. ঢাকা – সিঙ্গাপুর by air ( ১১ ফেব্রুয়ারী রাত ৯:৩০)
২. সিঙ্গাপুর এ একদিন থাকা
৪. ১৩ তারিখ সকাল ৮ টায় Uber / ট্যাক্সি নিয়ে HarborFront
৫. সকাল ১০ টায় জাহাজে চেকইন
৬. Enjoy the trip till 17th
৭. ১৭ তারিখ সকাল ১১ টায় জাহাজ HarborFront নোঙ্গর ফেলবে।
৮. সিঙ্গাপুর এ দুই রাত থাকা
৯. ১৯ তারিখ বিকেল ৫:৩০ রিটার্ন ফ্লাইট to ঢাকা

ভিসা (এজেন্সী) + এয়ার টিকেট + ক্রুজ টিকেট = ৬৫,০০০ টাকা
সিঙ্গাপুর থাকা + shore excursions + অন্যান + আমার জন্য চকলেট 😛 = ৩৫,০০০ টাকা

মোট: ১ লক্ষ টাকা / পারসন

Post Copied From:Hasan Shahriar‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

বালি ভ্রমন

প্রথমে ইচ্ছা ছিল এ বছর কাশ্মির যাব। সে হিসেবে প্লান করছিলাম। কিন্তু সব প্লান নষ্ট হয়ে গেল ভিসার ঝামেলায়। বিশেষত ইন্ডিয়ার ভিসার মত ঝামেলা মনে হয় আর কোনটা নাই। কেন জানি ইন্ডিয়ার ভিসার নাম শুনলেই আমার জ্বর আসে। করব করব করে দেরি হয়ে গেল। পরে শুনলাম ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ভিসা ক্যাম্পেইন হবে। ভাবলাম তাহলে তখনি করব। কিন্তু ক্যাম্পেইন এর যে অবস্থার কথা শুনলাম তাতে সকল ইচ্ছা চলে গেল ক্যাম্পেইন এ যাবার। শেষমেশ আর করাই হইল না। 😀 তাহলে কি করা যায়। মনস্থির করেছিলাম যে বাহিরে কোথাও যাব ঈদের ছুটিতে… না গেলে তো হবেই না। যাব যখন ঠিক করেছি, যাবই। ২০১৪ তে ভেবেছিলাম বালি যাব। কিন্তু মালদ্বীপ যাব দেখে আর যাওয়া হয়নাই। তাহলে হয়ে যাক এবছর বালি ট্যুর। গিন্নিও রাজি। কিছু খোজ খবর করলাম। করে দেখলাম টিকিটের হাহাকার। ঈদের সময়, খুবি স্বাভাবিক। বরাবরের মত এবারো আমি লেট ডিসিশন নিতে। অবশেসে এক ট্রাভেল এজেন্সীর একটা প্যাকেজ কিনে ফেললাম। যদিও সেটা গ্রুপ ট্যুরের প্যাকেজ, কিন্তু সেইম প্যাকেজ আমাদের ২ জনের জন্য দিবে… শুধু প্লেনের টিকিট ভাড়া একটু বেশি পড়বে আর টিকেট পাওয়া গেছে ঈদের পরের দিন। কি আর করা। নিয়ে ফেললাম। নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল।

প্রথম রাতঃ ৯ই জুলাই,২০১৬ রাত ১২ঃ৩০ টায় ফ্লাইট। ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর। ওখানে ২ঘন্টার মত ট্রানজিট। তারপর কুয়ালালামপুর থেকে ডেনপাসার (বালি) । আমি যেমন প্লেনের টিকেট কাটতে সবসময় লেট করি, তেমনি আমার ফ্লাইট ও সবসময় ডিলে হয়। এটা আমার কপালের লিখন, না যায় খন্ডন। তবে বেশিনা, ১ ঘন্টা লেট ছিল। মালিন্দো এয়ার। কুয়ালালামপুর এ নেমে ইন্টার টার্মিনাল ট্রেনে করে ওদের আরেক টার্মিনালে যেতে হয়েছে। তাই একটু খেয়াল রাখবেন যে আপনাদের প্লেন কোন টার্মিনাল থেকে ছাড়বে।

প্রথম দিনঃ বালি এয়ারপোর্টটা অনেক সুন্দর। একেবারে সমুদ্রের ধারে। হোটেল পৌছাতে প্রায় ২টা। গোসল করে সোজা চলে গেলাম লাঞ্চ করতে। লাঞ্চ করে আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল Ulawatu Temple. সেখানে ট্রেডিশনাল ক্যাচাক ড্যান্স দেখলাম। রাতে জিম্বারান বিচে ডিনার করলাম। তারপর বালির লোকাল মার্কেট গুলোতে একটু ঢু মারলাম লেট নাইটে বার লাইভ মিউজিক তো আছেই।

দ্বিতীয় দিনঃ আজ গন্তব্য অনেক। ৮টার মধ্যে ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়ে পড়লাম প্রাইভেট ট্যাক্সিতে করে। প্রথমে শিডিউলে ছিল বারং ট্র্যাডিশনাল ড্যান্স। আমরা এটা স্কিপ করি। তাই সোজা চলে গেলাম উবুদ গ্রামে। এখানে বাটিক এর কাজ কিভাবে করে সেটা দেখলাম। পাশে ছিল সিলভার কারখানা। কিভাবে সিলভার দিয়ে গয়না বানায়। তারপর গেলাম আমাদের প্রধান আকর্ষন ক্লিন্তামানি ভল্কানো। সকালে কড়া রোদে বের হইসি কিন্তু যেতে যেতে বৃষ্টি হল। ক্লিন্তামানি রেস্টুরেন্ট এ লাঞ্চ করে নিলা, রেস্টুরেন্ট থেকেই ভল্কানো দেখা যায়। কিন্তু আকাশ মেঘলা থাকায় পুরোটা উপভোগ করতে পারিনি।
দুপুরে খেয়ে চলে গেলাম এলিফ্যান্ট কেভ টেম্পল। তারপর কফি কিভাবে বানায় সেটা দেখলাম, কফির গাছ দেখলাম। ওরা ৮রকমের চা খাওয়াল ফ্রি (টেস্ট করলাম আর কি), কিভাবে ওরা প্রসেস করে দেখাল, সেখান থেকে কফি কিনলাম। সেখান থেকে গেলাম আরেকটা আকর্ষনীয় স্থান Tejenungan Waterfall. কিন্তু এতগুলো যায়গা দেখে ওখানে যেতে যেতে বিকাল হয়ে গেছে। Tejalalang Rice terrace এ যাবার কথা ছিল কিন্তু দেরি হয়ে যাবে দেখে আর যাইনি।
বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝর্নার ওখানে কাটালাম। তারপর ডিনার সেরে চলে গেলাম লোকাল মার্কেটে। তারপর চলে গেলাম Hard Rock Cafe তে। লাইভ মিউজিক দেখালাম, খাইলাম তারপর মাঝ্রাতে হোটেলে ফিরলাম।

তৃতীয় দিনঃ প্রথমেই গেলাম Tanah Lot Temple. কারন এখন রোদ আছে। কখন বৃষ্টি নামে ঠিক নাই। তাই আজ ঠিক করেছি আগে মেইন স্পটগুলো আগে কাভার করব তারপর সময় থাকলে অন্যগুলো। আগের দিনের মত বাটিক এর কাজ, সিলভার এর কাজ বা কফি প্রসেসিং দেখে সময় নষ্ট করতে চাইনি। তানাহ লট থেকে গেলাম Bedugul-ulun danu floating temple. সেখানে অনেক্ষন সময় কাটালাম তারপর লাঞ্চ সেরে নিলাম। Taman Ayun Temple, monkey temple, fruit market এগুলো স্কিপ করেছি। নাহলে আজ শপিং করা হবেনা। কিন্তু আজই শেষ দিন। প্রতিদিন মার্কেটে যেতে যেতেই বন্ধ হয়ে গেছে। শেষ দিনে শপিং করলাম, রেস্টুরেন্ট এ খেলাম, বিচে গেলাম… এই তো…

চতুর্থ দিনঃসকাল সকাল উথে আগে গেলাম বিচে। কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে হোটেলে ফিরে ব্রেকফাস্ট করে নিলাম। তারপর সবকিছু গুছিয়ে বের‍িয়ে পড়লাম এয়ারপোর্ট এর উদ্দেশ্যে। ১২টায় ফ্লাইট। ফেরার সময় কুয়ালালাম্পুরে ৯ঘন্টার বিরক্তিকর ট্রানজিট। মুভি জোনে ,রেস্টুরেন্টে বসে, ঘুরে ফিরে সময় কাটালাম আর কি। ঢাকায় ফিরলাম রাত ১টায়। বাসায় ঢুকলাম রাত ৩টা।

গ্রুপ ট্যুর প্যাকেজ ছিল ৬২০০০টাকা পার পারসন, যেহেতু আমি লেট, তাই প্লেন কস্ট বেশি পড়সে। তাই আমাদের প্যাকেজ পড়সে ৭০০০০টাকা পার পারসন এবং এটা আমাদের গ্রুপ ট্যুর ছিলনা, কাপল ট্যুর বলতে পারেন।

প্যাকেজ ইনক্লুডেডঃ
1. Hotel : 3Night stay at 3star Palm Beach Resort at Kuta Beach area (5 mins walking distance from beach) and 20mins walking distance from main kuta area where all the bars, restaurant located
2. Airport Pick and Drop
3. ৩দিনের জন্য প্রাইভেট কার+ ড্রাইভার কাম গাইড
4. সব লোকেশনে ঘুরানো
5. সকল প্রকার পার্কিং ফি, এন্ট্রান্স ফি, টোল ফি
6. ৩দিনের বেকফাস্ট+ বুফে লাঞ্চ+ ডিনার

মানে পার্সনাল কোন খরচ ছাড়া আর কোন খরচ নাই।

টিপ্স১ঃ বালির সব স্পটই অনেক দূরে দূরে। সকাল ৮টায় বের হলে ফিরতে ফিরতে রাত ৮টা বাজে। এবং অনেক ক্লান্তি চলে আসে। তাই সব স্পট দেখার প্রয়োজন দেখিনা। কোনটা কোনটা দেখবেন আগে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলুন, সুবিধা হবে।
টিপ্স২ঃ বালির খাবার মোটেও সুস্বাদু না। তাই ওদের লাঞ্চ আর ডিনার এ খেতে কষ্ট হইসে। কিন্তু কিছু করার নাই… প্যাকেজ এ ফিক্সড। আর ডিনার করে ফেলতে হয় ৮টার মধ্যে। কারন ড্রাইভার ডিনার শেষে আপনাকে হোটেলে রেখে চলে যাবে। আমরা লেট নাইটে রেস্টুরেন্ট এ যেয়ে মজা করে খেতাম।
টিপ্স৩ঃ বালিতে মিটারে ক্যাব পাবেন না। তাই দামাদামি করে উঠতে হবে।
টিপ্স৪ঃ রাতের বেলা বিচ এরিয়া মোটেও নিরাপদ নয়। তাই না যাওয়াই ভাল।সন্ধ্যার পরি বিচ এরিয়া ফাকা হয়ে যায়।
টিপ্স৫ঃ শুনেছিলাম  বালি থাইল্যান্ডের মত রকিং সিটি। আসলে মোটেও তা না। তাই একটু আশাহত হয়েছিলাম। ১১টার পরই বেশিরভাগ রেস্টূরেন্ট বন্ধ হয়ে যায়। কিছু লাইভ মিউজিক চলতে থাকে, কিছু বার ওপেন থাকে রাত ১টা -২টা পর্জন্ত।

টিপ্স৬ঃ ডলার ভাঙ্গানোর আগে দেখে নিন কোথায় কত রেট। সব যায়গায় ভাঙ্গাবেন না। মাইন রোডের ঢারে যেকোণ বুথ থকে ভাঙ্গানো নিরাপদ।
টিপ্স৭ঃ প্যাকেজে না গেলে নিজেরা যদি যান, আগে থেকে টিকেট করলে ৩৫০০০ এ পেয়ে যাবেন অফ সিজনে প্লেনের টিকেট। হোটেল ভাড়া ২৫০০-৩৫০০ এ ভাল হোটেল পাবেন। আর প্রতিদিন ৫০ডলারে ৮ঘন্টার জন্য প্রাইভেট কার ভাড়া করতে পারেন।
স্টিপ্স৮ঃ শপিং এর জন্য বেস্ট KRISHNA সুপার শপ। সব কিছুই অনেক সস্তায় কিনতে পারবেন। স্যুভনির এর জন্য বেস্ট।
টিপ্স৯ঃ ইন্দনেশিয়া মুসলিম দেশ হলেও বালি প্রধানত হিন্দু এরিয়া। তাই তাদের কালচারকে রেস্পেক্ট করুন।

Post Copied From:শিহাব উদ্দিন আহমেদ‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

বাংলাদেশী কোম্পানিকে অযথা বেশী পয়সা না দিয়ে থাইল্যান্ড ভ্রমণ

বাংলাদেশের বেশীরভাগ ট্যুরিষ্ট যারা নিজের দেশ দেখার পর ইন্ডিয়া দিয়ে তাদের বিদেশ ভ্রমণ শুরু করেন এবং দ্বিতীয় ধাপেই থাকে থাইল্যান্ড। খরচ, যাতায়াত ও ভিসা পাওয়া কিছুটা সহজলভ্য হওয়ার কারনে এ দুটি দেশ একজন দেশীয় ট্যুরিষ্টের জন্য খুবই প্রিয়।

আমি যদিও সবসময় নিজের প্ল্যানের মাধ্যমে ট্যুর দিয়ে থাকি তবে এই দেশটিতে কোন এক ঈদের ছুটিতে হঠাৎ ডিসিশন নেওয়ার কারনে একটি স্বনামধন্য প্যাকেজ কোম্পানির মাধ্যমে ভিসা ছাড়া ৩৮০০০/- প্যাকেজে গিয়েছিলাম। আসলে প্যাকেজ কোম্পানির মাধ্যমে গেলে অনেকটা টাইট শিডিউলের মধ্যে চলতে হয় যা আমার কাছে পরাধীনতা লাগে।

যাইহোক ব্যাংকক এয়ারপোর্টে পা রেখেই বুঝতে পেরেছিলাম আসলে বাংলাদেশী প্যাকেজ কোম্পানিকে অযথা বেশী পয়সা দিয়েছি। তাদের কাজ শুধু এয়ার টিকিট আর হোটেল বুকিং করে দেওয়া। বাকী সব তারা থাইল্যান্ডের অন্য ট্রাভেল কোম্পানির মাধ্যমে সম্পন্ন করে তবে বড় গ্রুপ হলে হয়ত নিজেদের ট্যুর গাইড সাথে যায়। থাইল্যান্ড যেহেতু একটি ট্যুরিষ্ট দেশ তাই সেখানে একাধিক বড় বড় ট্রাভেল কোম্পানি আছে যাদের সকল কার্যক্রম সিস্টেম্যাটিক। তারা দলে দলে এয়ারপোর্ট থেকে ট্যুরিষ্ট রিসিভ করে এবং একজন ট্যুরিষ্টের হোটেল পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে প্রতিদিনের সাইডসিং শেষ করে আবার শেষের দিন এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিয়ে যায়। এ বিষয়ে আপনাকে কোন চিন্তাই করতে হবেনা। প্রতিদিন শিডিউল অনুযায়ী তারা আপনাকে হোটেল থেকে নিয়ে সব ঘুরেঘুরে দেখাবে।

ঠিক এরকম এক ট্রাভেল কোম্পানি /যারা আমার নাম লিখে এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে আছেন। দলে দলে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ট্যুরিষ্টদের তারা রিসিভ করতেছেন এবং শিডিউল অনুযায়ী শিফট করছেন। আমার ট্যুর প্ল্যান ছিল এয়ারপোর্ট থেকে প্রথমে সরাসরি পাতায়া। সেখানে দুইরাত থাকার পর ব্যাংকক তিনরাত। প্ল্যান অনুযায়ী এয়ারপোর্টে অপেক্ষা করছি পাতায়া যাওয়ার অথচ তারা বিকেল ঘনিয়ে দিল যাত্রা শুরু করতে যা খুবই বিরক্তিকর ছিল। এয়ারপোর্ট থেকে পাতায়া আসতে আমাদের রাত হয়ে গেল তারমানে আমি কোনকিছু না দেখেই একরাত শেষ করে ফেললাম। সারাদিন জার্নিতে ক্লান্ত থাকার কারনে রাতে আর তেমন পাতায়াতে ঘুরা হলো না। এখানে অনভিজ্ঞদের জানিয়ে রাখি যে পাতায়া হচ্ছে একটি সামদ্রিক আইল্যান্ড এখানে অনেক বিনোদনের স্থান আছে তবে নারীদের প্রাধন্য বা আনাগোনা অনেক বেশী এবং তাদের আয়ের অনেকটা অংশ এই নারী দ্বারাই যদিও পুরো থাইল্যান্ডেই তা বিরাজকৃত তাই অন্তত ফ্যামিলির বাবা-মা অথবা কোন শ্রদ্ধেয়জনদের সাথে সেখানে না যাওয়াই ভাল।

রাত পাড় হতেই সকালে শিডিউল ছিল কোরাল আইল্যান্ড ট্যুর। এই আইল্যান্ডে ট্যুর দিতে অবশ্যই শর্ট প্যান্ট এবং টি-শার্ট পড়ে যাবেন এবং সাথে প্ল্যাস্টিকের স্যান্ডেল। অনেকেই শার্ট প্যান্ট সু পরিধান করে যেয়ে বোকা সাজেন। আর যদি পারেন পিঠের একটা ব্যাগে এক সেট এক্সট্রা কাপড় ও কেডস নিতে। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভের মত এখানে সমুদ্রের পাড়ে রাস্তা এবং সেখান থেকে স্পীডবোটে আপনাকে নিয়ে যাবে সমুদ্রের মাঝে অবস্থিত একটি ভাসমান জেটিতে। এই জেটিতে আপনি ৫০০ বাথের বিনিময়ে প্যারাসাইলিং করতে পারবেন যেটি খুবই মজার ছিল। তাছাড়া পর্যাক্রমে সেখান থেকে আরো কিছু আকর্ষনীয় স্থান দেখিয়ে একটি বীচে নিবে। স্বচ্ছ পানির সেই বীচে খুবই আনন্দ পাবেন। ওয়াটার বাইক সহ বিভিন্ন রাইড সেখানে চলতে পারবেন তবে বাথের বিনিময়ে। দুপুর হতেই সেখান থেকে আবার সেই মেরিন ড্রাইভ নিয়ে এসে এক ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে খেতে দিল। ভিজা শরীর হোটেলে বাথরুমে ঢুকে কাপড় চেঞ্জ করে নিলাম তারপর খাওয়া শেষে গন্তব্য Jems Gallery, Nongnooch Tropical Garden with Elephant show এবং সবার শেষে সন্ধ্যায় Alcazar Show. এই Alcazar Show খুবই মজার একটি ষ্টেজ প্রোগ্রাম যা কোনমতে না দেখতে ভুল করবেন না। সারাদিন এত ঘুরাঘুরির পরে হোটেলের কাছেই একটা ম্যাসাজ পার্লার পেলাম মাত্র ২০০ বাথে একটি ছেলে একঘন্টা খুবই উপকারী ফুল থাই ম্যাসাজ করে দিল ( বিপরীত লিঙ্গ দ্বারা ম্যাসাজ না করাই মঙ্গল ) । এভাবেই রাত পাড় হতেই পাতায়া ভ্রমণ শেষ হলো এবং সকালে যাত্রা শুরু করলাম ব্যাংককের উদ্দেশ্যে।

পাতায়া থেকে ব্যাংককের দীর্ঘ পথ জুড়ে ফ্লাইওভার যা আমি এখন পর্যন্ত কোন দেশে দেখি নাই। যানজট ছাড়া খুবই সুন্দরভাবে ব্যাংকক এসে পৌঁছাইলাম। হোটেলে পৌঁছিয়ে লাঞ্চের পরে নিয়ে গেল সিটি ট্যুরে। বিকাল পর্যন্ত সিটি ট্যুর শেষে বউয়ের টার্গেট কখন মার্কেটে যাবে :Pড্রাইভারকে বলাতে তিনি মার্কেটে নামিয়ে দিল। প্রতিদিন এভাবে Indra Market, MBK Market, Pratunam Market, Bobae Market, Siam Centre, Paragon ইত্যাদিতে গেলাম। তার মধ্যে Indra Market ও তার আশেপাশের স্ট্রীটমার্কেট গুলো ভাল লেগেছে।

পরেরদিন আমাদের ট্যুর ছিল সাফারী অয়ার্ল্ড ও সাফারী পার্ক দেখা সারাদিন। সাফারী ওয়ার্ল্ড এটি শিশুদের জন্য খুবই আনন্দদায়ক একটি বিনোদনের স্থান। দুপুর পর্যন্ত এই ওয়ার্ল্ডে একটার পর একটা ইভেন্ট দেখতে দেখতে আপনার সময় চলে যাবে। তার মধ্যে ডলফিন সো সহ অনেক সো আছে যা আপনাকে খুবই আনন্দ দিবে। এছাড়া বিনোদন শেষে পাশেই অবস্থিত গাড়িতে করে আপনাকে ওপেন জু সাফারী পার্কে ঢুকাবে। যেখানে আপনি গাড়ির ভিতর বসে ঘুরেঘুরে জীবজন্তু দেখতে পাবেন। ট্যুর শেষে আবার সেই টার্গেট শপিং। রাত ভরে শপিং করে ক্লান্ত শরীরে হোটেলে আবার পরেরদিন রেখেছি শুধু শপিং। ব্যাংককে আর কোন ট্যুর না দিয়ে আরও একরাত থেকে ঢাকায় চলে আসি। তবে ব্যাংককে আরও দুই একটা ভাল ট্যুর স্পট ছিল যা প্যাকেজে যাওয়ার কারনে আমাদের যাওয়া হয়নি। আমার এই গাইড নিয়ে আপনিও খুব সহজে পাতায়া ও ব্যাংকক ঘুরে আসতে পারবেন। শুধু যাওয়ার আগে একটি প্ল্যান করুন এবং সেই অনুযায়ী এয়ার টিকিট, দুই স্থানের হোটেল বুকিং ও নিজে না বুঝলে সেখানকার ট্রাভেল কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে যেতে পারেন যেটির উপরে লিংক দিয়েছি। আর যদি আপনি বিদেশের ব্যাপারে একটু এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে এয়ারপোর্ট থেকে বাসে পাতায়া এবং সেখানে যেয়ে বিভিন্ন ট্যুরের প্যাকেজ নিতে পারেন এবং পুনরায় বাসে ব্যাংকক এসে ট্যুর প্যাকেজ। এই সমস্ত সকল প্যাকেজ আপনি হোটেলের লবিতেই পাবেন অতএব নো চিন্তা ডু ফুর্তি 🙂

Post Copied from:Miah Mizanur Rahman Kazol‎>Travelers of Bangladesh (ToB)