সাংহাই

সাংহাই শহরের তুলনা শুধুমাত্র সাংহাই শহরের সাথেই চলে।২০১০ সালে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে সাংহাই শহর আয়োজন করেছিলো ওয়ার্ল্ড এক্সপো।সেবার বিশ্ব অবাক চোখে দেখেছে সাংহাই এর জৌলুস।চাইনীজ জাতি দেখিয়েছে তারা কতটা সক্ষম। আর বর্তমান বিশ্বে তারা কতটা গুরুত্বপূর্ন !ছয়মাস ব্যাপি চলা এই মেলায় সেবার সাংহাইয়ে অতিথি এসেছিলো প্রাট ছয় কোটি।

প্রতিদিনই সাংহাই চেন্জ হচ্ছে।প্রতিদিনই কিছু না কিছু তৈরী হচ্ছে।কখনো তা এত দ্রুত যে স্থানীয় লোকজনও ধোকা খেয়ে যায়। বিশ্বের অনেক শহর যেমন লন্ডন,প্যারিস,ইটালি,টোকিও,নিউইয়র্ক এর মত নিজস্ব স্বকীয়তায় সাংহাইও ভুবন বিখ্যাত।

দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল শহরগুলোর অন্যতম সাংহাই চীনের সবচেয়ে বড় শহর।অথচ কিছুকাল আগেও এই শহর ছোট্ট একটা জেলেপাড়া ছাড়া আর কিছুই ছিল না।চীনের অন্যান্য বিখ্যাত শহরের মত এই শহরের গৌরবময় অতীত ইতিহাস নাই।সেখান থেকে মাত্র কয়েক দশকে সারা বিশ্বের ব্যবসা বানিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু এবং দুনিয়ার আলো ঝলমলে জাকজমকপূর্ন শহর হয়ে উঠার গল্পটা যেন রূপকথার গল্পকে হার মানায়। হুয়াংপু নদীর পাশে দাড়িয়ে আপনি একইসাথে সাংহাই শহরের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ দেখতে পারবেন। নদীর একপাশে সেই সময়ের বৃটিশ, ফরাসি, পর্তুগীজদের তৈরী সারিসারি ঐতিহাসিক স্থাপনা আর একপাশে বর্তমান যুগের তাক লাগানো সব আর্কিটেকচার দেখলে সহজেই অনুমান করা যায় সাংহাই শহরের ভবিষ্যৎ কী!

নদীর পাশে জায়গাটার নাম “বান্ড” সেখানে দাড়িয়ে আমার মনে হয়েছে যেন হলিউড মুভির মত কোন সাইন্স ফিকশনের ভবিষ্যৎ শহরে চলে এসেছি। অদ্ভুত সৌন্দর্য।

জিন মাও টাওয়ার ,ওয়ার্ল্ড ফাইনেন্সিয়াল সেন্টার, ওরিয়েন্টাল পার্ল টিভি টাওয়ার এগুলা অলরেডি দুনিয়ার সেরা আর্কিটেকচার হিসাবে পরিচিত। এগুলার ঠিক মাঝখানে আর একটা অসাধারণ আকাশচুম্বী ভবন নির্মান করা হয়েছে যেটার নাম সাংহাই টাওয়ার।এটি বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম মানে দুবাই এর বুর্জ আল খলিফা এর পরে অবস্থান।প্রথম যেবার গিয়েছিলাম আমি দেখছি লাস্ট ১৫/২০ তলার কাজ চলছে। পরেরবার গিয়ে এই অসাধারন টাওয়ারের ওঠার সুযোগ মিস করিনাই। এটিতে উঠতে প্রায় ২৪০০ টাকার মত লাগে। এই টাওয়ারের এলিভেটরটা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত এলিভেটর।১৯০০ মিটার উপরে উঠতে সময় লাগে মাত্র ৫ মিনিট।

সাংহাই ঘোরার জন্য মেট্রোর বিকল্প নাই।সাংহাই মেট্রো লাইন বিশ্বের সবচেয়ে ফাস্টেস্ট গ্রোইং র‌্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম।প্রথম লাইন তৈরী হয়েছে সেই ১৯৯৩ সালে। বাড়তে বাড়তে এখন ২৮ নং লাইন পর্যন্ত এসেছে। এখনো বাড়ছে।ব্যায়বহুল এই শহরে এই একটা জিনিই সস্তা।মাত্র ৪০/৫০ টাকা খরচ করে নিমিষেই শহরের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে যাওয়া যায়। আমাদের দেশে উত্তরা থেকে মতিঝিল প্রথম লাইন নাকি ১৯ সালে হবে তাই ত শুনলাম।

Post Copied From:Md Rasheduzzaman‎>Travelers of Bangladesh (ToB)