ইলিশের বাড়ি হিসেবে বিখ্যাত জেলা চাঁদপুর বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বে চট্টগ্রাম ডিভিশনে অবস্থিত। ছোট্ট, শান্তিপ্রিয় এই জেলা শহরে ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ তে আমরা ৬ জন গিয়েছিলাম একদিনের ট্রিপে। তারই গল্প এবার শেয়ার করব আপনার সাথে।
#কিভাবে_যাবেন
ঢাকা সদরঘাট থেকে সকাল সাড়ে ৬ টার পর থেকে অনেক লঞ্চ ছেড়ে যায় চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে। যেকোনোটায় উঠে পড়লেই এনাফ। আমরা রওনা হয়েছিলাম বোগদাদিয়া ৭ লঞ্চে সকাল ৮.৩৫ এ। ডেক ভাড়া ১০০ টাকা। এছাড়াও সিটিং ব্যবস্থা আছে। ১৫০-২২০ টাকার মধ্যে সিটে বসে যেতে পারবেন। কেবিন ব্যবস্থাও আছে। সে ব্যাপারে তেমন কোন ইনফরমেশন জানাতে পারছি না বলে দুঃখিত। সময় লাগবে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা। নদীর চমৎকার দৃশ্য উপভোগ করতে করতে আরামে জার্নি করবেন।
ফেরার লঞ্চ পেয়ে যাবেন ২.৩০ টা থেকেই। আমরা ঢাকা ফেরার জন্য রওনা হয়েছিলাম সোনার তরী লঞ্চে বিকাল ৩.৪০ এ। ভাড়া একই। কিন্তু বিকেলের নদী এক অন্য লেভেলের মানসিক শান্তি দেবে আপনাকে। গ্যারান্টি দিলাম।
#কি_কি_দেখবেন_এবং_খাবেন
লঞ্চ ঘাটে নেমে বাইরে অপেক্ষমান অটো নিয়ে চলে যাবেন বড় স্টেশন নামে একটা জায়গায়। ভাড়া নেবে পার হেড ১০ টাকা। চাইলে হেটে যেতে পারেন। ম্যাক্সিমাম ১০ মিনিট লাগবে। শান্ত, সুনিবিড়, মফঃস্বল পরিবেশ। ভালো লাগতে পারে আপনার।
#বড়_স্টেশন এ পৌঁছে দেখতে পাবেন “জেলা ব্রান্ডিং পর্যটন কেন্দ্র”। নির্মাণাধীন। খুব বেশি আশা করলে ভুল করবেন। আমাদের ঢাকা শহরের যেকোনো অতি সাধারণ পার্কের মত দেখতে। কিন্তু আকর্ষণীয় ব্যাপারটা হচ্ছে মেঘনা নদীর পাড়। বেশকিছু ঝালমুড়ির দোকান আছে। আলাওল নামে একজনের বানানো ঝালমুড়ি ট্রাই করতে পারেন। এক্সেপশোনাল টেস্ট। দাম ১০ টাকা। আর ঘুরে বেড়াতে পারেন মেঘনা নদীতে। বোট রিজার্ভ নিতে পারেন ঘণ্টাখানেকের জন্য।
বিভিন্ন লঞ্চ দুর্ঘটনার জন্য বিখ্যাত ও কুখ্যাত
#পদ্মা_মেঘনা_ডাকাতিয়া_নদীর_মোহনা সহ মোহনার পরেই নদীর বুকে জেগে ওঠা একটা বিশাল চর এলাকা ঘুরিয়ে আনবে আপনাকে। ভাড়া পড়বে ৪০০ – ৫০০ টাকা। এখন নদী শান্ত। সো বিখ্যাত এবং কুখ্যাত সেই মোহনার ওপরেই বোট দিয়ে অবস্থান করতে পারবেন আরামে। এরপর আবার ফিরে আসবেন পর্যটন কেন্দ্রের নৌকা ঘাটে। এবং বেরিয়ে আসবেন ওখান থেকে।
পর্যটন কেন্দ্র থেকে বের হলে খাবার হোটেল পাবেন। ইলিশ এখন বিক্রি করছে ১২০ টাকা প্রতি পিস হিসেবে। যদি নিজে ইলিশ কিনে হোটেলে রান্না করিয়ে খেতে চান তো যেতে হবে পর্যটন কেন্দ্র থেকে বেরিয়েই হাতের ডানে রেল স্টেশনের দিকে। রেল লাইনের পাড়ে মাছের আড়ত। কিনে নেবেন দামদর করে। আমরা কিনেছিলাম মোটামুটি বড় সাইজ একটা ইলিশ ৪৫০ টাকায়। এবং পিস করা হয়েছিলো ৬ টা। খাওয়া শেষ করে এবার বেরিয়ে পড়ুন। গন্তব্য ওয়ান মিনিট আইস্ক্রীম।
#ওয়ান_মিনিট_আইস্ক্রীম
অটোতে করে ৫ টাকা পার হেড ভাড়া লাগবে কালীবাড়ি নামক একটা জায়গায় যেতে। সেখানে নেমে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দেবে বিখ্যাত ওয়ান মিনিট আইস্ক্রীমের দোকানটা কোথায়। প্লাস্টিকের গ্লাসে করে খাবেন। দাম ৪০ টাকা। স্বাদ নিয়ে খুব বেশি এক্সাইটেড হওয়ার কিছু নেই আসলে। ছোটবেলার পাইপ আইস্ক্রীমের মত স্বাদ। ভালো লাগতেও পারে আপনার।
ব্যস। আর তেমন কিছু দেখার নেই। এবার হাল্কা ঘুর ঘুর করতে করতে চলে আসুন লঞ্চ ঘাটে। দেখেশুনে উঠে পড়ুন লঞ্চে। বিকেলটা নদীতে উপভোগ করতে করতে চলে আসুন ঢাকায়।
হ্যাপি ট্রাভেলিং
Post Copied From:Rajvi Bd>Travelers of Bangladesh (ToB)