কুমিল্লার ভ্রমনের স্থান

আজ তুলে ধরছি কুমিল্লার ভ্রমনের স্থান গুলো সম্পর্কে। কুমিল্লা ঐতিহ্যগত দিক থেকে অন্যন্য জেলা থেকে ব্যাতিক্রম, বলা হয় এই কুমিল্লা ছিল ৮৯ জন রাজার রাজধানী। তাই এখানে গড়ে উঠে ছিল প্রাচীন বাংলার সমৃদ্ধ এক নগর ব্যবস্থা তারই সাক্ষ্যবহন করছে শালবন বিহার,ইটাখোলা মুড়া, রুপবান মুড়া, সহ আরও অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান সমূহ।এছাড়া এখানে রয়েছে ময়নামতি জাদুঘর যার মধ্যে সংরক্ষিত আছে কুমিল্লা অঞ্চলে প্রাপ্ত প্রাচীন ও মধ্যযুগের মানুষের ব্যবহৃত নানা বস্তুগত নিদর্শন।।
অন্যন্য স্থানের মধ্যে যেতে পারেন লালমাই পাহাড়,২য় বিশ্বযুদ্ধে নিহত হওয়া সৈন্যদের কবর (ওয়ার সিমেন্ট্রি),কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়,নীলাচল পাহাড়,বার্ড,রুপসাগর পার্ক,ধর্মসাগর পার্ক, উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী শচীনদেব বর্মনের বাড়ি, বিজয়পুর মৃৎশিল্প পল্লী,লাকসাম নবাব বাড়ি ইত্যাদি।
খাবারের বিষয়ে কুমিল্লা খুবই বিখ্যাত এখানে সর্বোচ্চ মানের খাবার ও পাওয়া যায় কারণ কুমিল্লাতে সাধারণ খাবারের হোটেল ও অনেক আধুনিক রেস্টুরেন্ট রয়েছে।তাছাড়া কুমিল্লার বিখ্যাত মাতৃভান্ডারের রসমলাই পাবেন নগরীর কান্দিরপাড়ের মনোহরপুরে।
যাতায়াত:কুমিল্লার যাতায়াত ব্যবস্থা ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন ও সরাসরি বাস পাওয়া যায়।ট্রেনে আসলে স্টেশন থেকে সিএনজিতে করে কোটবাড়ি চলে আসবেন(রিজার্ভ) , রিজার্ভ না নিলে স্টেশন থেকে কান্দিরপাড় এবং কান্দির পাড় থেকে কোটবাড়ি।আর বাসে আসলে কোটবাড়ি বিশ্বরোড নামতে হবে নামলেই অনেক সিএনজি পাওয়া যাবে সেখান থেকে ২০ টাকাতেই গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন।উল্লেখ্য ভাড়া এখানে বেশি নয়,আর খাবার শহরেও পাওয়া যাবে আবার স্পট গুলোতেও পাওয়া যাবে।
সর্বোপরি ইতিহাস,ৈঐতিহ্য নিয়ে যাদের আগ্রহ তাদের জন্য খুবই উপযুক্ত স্থান,এছাড়া ভ্রমনপিপাসুদের জন্যও মনের খোরাক মিটাতে সক্ষম হবে।।

Post Copied From:hahadat Hossain Shahin‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

একদিনে অনেক জায়গাতেই যাওয়া যায়

একদিনে ঘুরাঘুরি।

অনেকেই একদিনে ঘুরাঘুরির ব্যাপারে জানতে চান। একদিনে অনেক জায়গাতেই যাওয়া যায়। এই যেমন নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, সোনারগাঁও, নরসিংদী, গাজীপুর, মাওয়া ঘাট, পদ্মা রিসোর্ট, মানিকগঞ্জ জমিদার বাড়ি, গোলাপ গ্রাম। অনেকেই আবার ঘুরাঘুরির জন্য সুদূর সিলেট, শ্রীমঙ্গল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রাজশাহী সাজেস্ট করে বসেন। এগুলা মারাত্মক ভুল গাইড। এগুলাকে ট্যুর বলে না, জাস্ট চুরির মত দৌড়ের উপর থাকা। মানুষ ট্যুর দেয় রিল্যাক্সের জন্য। কিন্তু সেটাই যদি না পাওয়া যায় তাইলে কিসের ট্যুর।

আমি যেহেতু কুমিল্লার তাই একদিনে কুমিল্লা ভ্রমণের ফিরিস্তি দিব। সকাল ৮ টায় সায়েদাবাদ থেকে এশিয়া লাইন/এশিয়া ট্রান্সপোর্টে (যেটা আগে ছাড়ে) চড়ে বসুন। ভাড়া নিবে ২০০ টাকা। কুমিল্লা ক্যান্টনম্যান্ট এসে নামবেন। সাড়ে ১০ টার আগেই পৌঁছে যাবেন। তবে আপনি যদি এসিতে আসতে চান তাইলে সায়েদাবাদ থেকে এশিয়া এয়ার কন্ডিশন অথবা কমলাপুর থেকে রয়েল কোচে আসতে পারেন। রয়েল অনেক কমফোর্টেবল বাট স্লো। ক্যান্টনম্যান্ট নেমে উত্তর দিকে ১০ মিনিট হাঁটলেই পেয়ে যাবেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত যোদ্ধাদের সমাধি ক্ষেত্র ওয়ার সিমেট্রি। বেশ নিরিবিলি পরিবেশটা আপনার ভাল লাগবে। ৩০ মিনিটের মধ্যেই ঘুরে দেখতে পারবেন।

এরপর আবার ক্যান্টনম্যান্ট ফিরে আসুন। রাস্তায় দাঁড়ালেই কুমিল্লা শহরগামী অনেক বাস যেমন পাপিয়া, কুমিল্লা হোমনা, সুগন্ধা, বিরতিহীন পাবেন। যে কোন একটায় উঠে পরুন। শাসনগাছা নামবেন। ভাড়া নিবে ১০ টাকা। এরপর অটোতে করে চলে যান কুমিল্লা জজ কোর্টের সামনে। সর্বোচ্চ ১৫ টাকা নিবে। সেখান থেকে কুমিল্লা পার্ক ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছে যাবেন ধর্মসাগরের উত্তর পাড়। চোখ জুড়ায়ে দেখুন ঐতিহাসিক ধর্মসাগর। আপনি চাইলে ধর্মসাগরের ভিতরে বোট রাইড করতে পারেন। ধর্মসাগর দেখতে দেখতে একবারে চলে আসুন দক্ষিণ মাথায়। এরপর একটু সামনে হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন কান্দিরপাড়।

যদি রসমালাই নিতে চান তাইলে কান্দিরপাড় থেকে পূর্বদিকে হাটা দিন। যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই মাতৃভান্ডার দেখায়া দিবে। রসমালাই কিনে কান্দিরপাড় থেকে সিএনজিতে উঠুন পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের। ২০ টাকা নিবে ভাড়া। বিশ্বরোড পৌছাতে পৌছাতে ততক্ষণে লাঞ্চ টাইম হয়ে যাবে। লাঞ্চ করতে পারেন দেশের প্রথম ৩ স্টার হোটেল নুরজাহানে। তবে খাবার ব্যয়বহুল। হোটেলের বাহিরের প্লেসটা আপনার ভাল লাগবে। পুরাই একটা মিনি পার্ক। খাবার অর্ডার করে বাইরে বসে খেতে পারেন। চেয়ার টেবিল বসানোই আছে। তখন মনে হবে আপনি বনভোজনে বসে খাচ্ছেন। আর যদি আপনার বাজেট কম তাইলে বিশ্বরোডে আরও অনেক হোটেল পাবেন। ঐগুলাতেও খেতে পারেন। আপনি যদি আমার মত লেটে লাঞ্চ করার লোক হন তাইলে লালমাই পাহাড় দেখে ফিরার সময় লাঞ্চ করতে পারেন বিশ্বরোডেই। বিশ্বরোড থেকে সিএনজিতে চলে যান লালমাই বাজারে। ভাড়া নিবে জনপ্রতি ২০ টাকা। লালমাই বাজার থেকে অটোতে চলে যান চন্ডিমুড়া পাহাড়ে। লাল মাটি ঘেরা পাহাড়ের পরিবেশ আপনাকে অন্য রকম অনুভূতি দিবে। ঘণ্টা খানেক চারপাশটা ঘুরে দেখেন। তবে সাবধান পাহাড়ের বেশি ভিতরে যাবেন না। ছিনতাইয়ের শিকার হতে পারেন। লালমাই পাহাড় দেখে আবার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে ফিরে আসেন।

সেখান থেকে মাইক্রোতে করে চলে আসুন কোটবাড়ি বিশ্বরোড। ভাড়া নিবে ১৫ টাকা। এরপর সিনজিতে করে সোজা কোটবাড়ি বাজার। ১০ টাকা নিবে প্রতিজনে। সিএনজি থেকে নেমেই দেখতে পারেন তাক লাগানো বার্ডের গেট। তবে বার্ডের ভিতরে ঢুকতে দিবে না কারও রেফারেন্স ছাড়া। অবশ্য জাতীয় দিবসগুলোতে সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। বার্ডের গেট দেখে সোজা পশ্চিম দিকে হাটা দিন। সাইনবোর্ডই আপনাকে জানিয়ে দিবে ইটাখোলা মুড়ার কথা। সেখানে একটা প্রাচীন বিহার আছে। সাথে ধ্যানমগ্ন এক মূর্তি। ২০/২৫ মিনিটে সব দেখা শেষ করে আবার কোটবাড়ি বাজারে ফিরে আসুন। এরপর অটো/সিনজিতে উঠে পরুন। ড্রাইভারকে বললেই শালবন বিহারের গেটে নামায়া দিবে। ভাড়া নিবে ১০ টাকা।

এরপর টিকেট কেটে ঢুকে পরুন প্রাচীন ঐতিহ্যে ঘেরা শালবন বিহারে। ২০ টাকা প্রবেশ ফি। বিহারের চারপাশের কৃত্রিম পরিবেশটাও আপনাকে নাড়িয়ে দিবে। ঘণ্টা দেড়েক এখানে কাটাতে পারেন। এরপর দেখতে পারেন ময়নামতি মিউজিয়াম। প্রবেশ ফি ১০ টাকা। তবে এটার ভিতরে এখন তেমন কিছুই নাই। শালবন বিহার থেকে বেরিয়ে রাস্তার পশ্চিম পাশে যে বন দেখতে পাবেন ঐটাই শালবন । শালবনে ঘুরাঘুরি করতে পারেন। বৈকালিক স্ন্যাকস করতে পারেন কাশবন রিসোর্টে। আশা করি সাড়ে ৫ টার আগেই আপনার সব দেখা হয়ে যাবে। এরপর শালবন বিহারের গেট থেকে সিনজিতে উঠে পরুন। কোটবাড়ি বিশ্বরোড নামবেন। ২০ টাকা নিবে।

এরপর অপেক্ষা করতে থাকেন এশিয়া ট্রান্সপোর্টের। বাস আসলে হাত দেখালেই থামাবে। উঠে পড়ুন। ২০০ টাকা নিবে। আর আপনি যদি এসিতে আসতে চান তাইলে কোটবাড়ি বিশ্বরোড থেকে মাইক্রো দিয়ে ক্যান্টনম্যান্ট চলে আসুন। ভাড়া নিবে ২০ টাকা। ক্যান্টনম্যান্ট থেকে এশিয়া এয়ার কন্ডিশন/রয়েল কোচে উঠতে পারবেন। আশা করি রাত ৮ টার আগেই আপনি ঢাকা পৌঁছে যাবেন।
কোন সমস্যা হলে বলতে পারেন।

Post Copied From:Masud Sarker Rana‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

নাপিত্তাছড়া ট্রেইল ও বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ:

গত ৪ সেপ্টেম্বর তিন বন্ধু মিলে ঘুরে এলাম নাপিত্তাছড়া ট্রেইল ও বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত থেকে।আমরা সরাসরি ঢাকা টু চিটাগাং না গিয়ে প্রথমে কুমিল্লায় এক রাত বন্ধুর বাসায় থেকে পরদিন সকাল ৭ টায় কুমিল্লা থেকে রওনা দেই ফেনীর উদ্দেশ্যে।ফেনী থেকে নয়দুয়ারির মসজিদ তারপর সেখান থেকেই আমাদের নাপিত্তাছড়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু।নাপিত্তাছড়ায় আছে চারটি ঝর্ণা।এগুলো যথাক্রমে টিপরাখুম,কুপিকাটাখুম,বান্দরখুম/মিঠাইছড়ি ও বাঘবিয়ানী নামে পরিচিত।প্রায় চার ঘণ্টা ট্রেকিং শেষে সবগুলো ঝর্ণা দেখে , ঝর্ণায় গোসল করে শেষ বিকেলে ঘুরে আসি বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত থেকে।
খরচ:
ঢাকা(সায়েদাবাদ) টু কুমিল্লা (এশিয়া লাইন নন এসি) ,ভাড়া : ২৫০/-
কুমিল্লা(পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ড) থেকে ফেনী(মহীপাল) ,ভাড়া:১০০/-
মহীপাল থেকে নয়দুয়ারি মসজিদ: বাস ভাড়া ১০০/-
বাঁশ ১০/-
দুপুরের খাবার (পর্যটক হোটেল):ভাত,মুরগি,ডাল ৯৫/-
নাপিত্তাছড়ায় ট্রেকিং শেষে:
নয়দুয়ারি থেকে বাঁশবাড়িয়া বাজার লোকাল বাস ৩০/-
বাঁশবাড়িয়া বাজার থেকে বাঁশবাড়িয়া বিচ সিএনজি ভাড়া ৪০/-(যাওয়া আসা)
বাঁশবাড়িয়া বাজার থেকে সীতাকুণ্ড(শ্যামলী কাউন্টার) ১৫/- লোকাল বাস
সীতাকুন্ড থেকে ঢাকা: (শ্যামলী নন এসি) ৪০০/-
মোট: ১০৪০/-
বিদ্রঃঈদের কারণে বাসভাড়া একটু বেশি ছিল।

Post Copied From:Md Fahamidul Islam Dipro>Travelers of Bangladesh (ToB)

২৩৯৫ টাকায় সাজেক ঘোরার গল্প

ToB এ আমার প্রথম পোস্ট এটা। অভিজ্ঞদের মত করে লিখতে পারবো না আমি। আমি শুধু বলে যাবো আমার অভিজ্ঞতা। এ্যাডমিন বাদে কেউ ভুল ধরবেন না! 😛

সরাসরি খরচের কথায় যাই,

ঢাকা থেকে বাস ভাড়া _______________________________ ৫২০/-
মাঝপথে কুমিল্লা বিরতিতে নাশতা _______________________ ৩০/-
খাগড়াছড়ি নেমে সকালের নাশতা _______________________ ৩৭/-
সাজেকের পিক-আপ/ চাঁদের গাড়ি _____________________ ৬৪৫/-
সাজেকে প্রবেশ টিকিট ______________________________ ২৯/-
দুপুরের খাবার ____________________________________ ১৫০/-
কটেজ ভাড়া _____________________________________ ১৬৪/-
বার-বি-কিউ _____________________________________ ১৩৫/-
সকালের নাশতা ___________________________________ ৪৫/-
দুপুরের খাবার ____________________________________ ৯০/-
ঢাকার বাস ______________________________________ ৫২০/-
মাঝপথে কুমিল্লা বিরতিতে নাশতা ______________________ ৩০/-
————————————————————————————
মোট খরচ- _____________________________________ ২৩৯৫/-

^^ এগুলা একেবারে ব্যাসিক খরচ, যা না করলেই না তাই দিলাম। আমাদের খরচ হয়েছে ২৬০০ টাকার মত। তবে ১০-১২ জনের গ্রুপ হলে খরচ টা এমন থাকবে। এর কম হলে কিছুটা বাড়বে খরচ।
এবার খরচ + খরচের বিষয়বস্তু গুলো ভেঙ্গে বলি,
আমরা বন্ধুরা যাই ৮জন। খাগড়াছড়িতে ঢাকা থেকে আসা ৩জন বড় ভাই এসে জানায় যে আমাদের সাথে যেতে চান তারা। তাই তখন থেকে আমরা ১১জনের দল হয়ে যাই!
> বাস ইকোনো পরিবহন,কলাবাগান থেকে রাত ১০ঃ৩০ মিনিটে
> কুমিল্লা বিরতিতে রোল খাই।
> খাগড়াছড়ি নেমে সকালের নাশতায় থাকে পরোটা+ভাজি/ডাল+ডিম ভাজি
> সাজেকের চাঁদের গাড়ির রেট ফিক্সড করা ছিল ৭১০০/-, যা কোনোভাবেই কমানো যায় নাই। অনেক ধরনের চাঁদের গাড়ি থাকে ঐখানে। একটু ঘুরে দেখে আমরা গাড়ি নেই যার ছাদ খোলা যায়, কারণ গাড়িতে দাড়ায়া মজা নিতে না পারলে টেম্পু টেম্পু লাগে। আর আমরা যেই গাড়ি টা নিয়েছিলাম তাকে পিক-আপ ডাকে। আমাদের ড্রাইভার সমরঞ্জন মামাও সেই এক্সপার্ট ছিলেন।
> সাজেকের প্রবেশ টিকেট জনে ২০/-, এবং গাড়ির জন্য ১০০/-
> নেমেই দুপুরের খাবারের খোজ নিয়ে জানতে পারি, ১) দেশী মুরগি+ আলুভর্তা + ডাল + ভাত = ১৮০/- ; ২) ফার্মের মুরগি+ আলুভর্তা + ডাল + ভাত = ১৫০/- ; ৩) ডিম + আলুভর্তা + ডাল + ভাত = ১০০/-)
আমরা দেশী মুরগী অর্ডার করি। এরপর চা খাই ১০/- করে কাপ।
> কটেজ নিয়ে অনেকেই বলেছিল যেহেতু ১৬ই ডিসেম্বর যাচ্ছি কটেজ পাবোনা, কিন্তু আমরা অনেক কটেজ খালি পেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের টার্গেট ছিল সাশ্রয়ী ট্যুর দেয়ার তাই আমরা আদিবাসিদের বাসায় খোঁজ নিতে থাকি। এবং ১১জনের জন্য ১৮০০ টাকায় ২রুম ম্যানেজ করে ফেলি!
> বার-বি-কিউ এর অভিজ্ঞতা টা খুব বেশী মজার। আদিবাসিরা সবাই এই মৌসুমে ব্যাবসা কে পুরো দমে কাজে লাগাচ্ছে। কারো কাছেই বার-বি-কিউ এর সরঞ্জামাদি চেয়ে পাওয়া যাচ্ছিলো না। কেউ কেউ বলছিলো দোকানে এসে আপনারা ভেজে বানান! কিন্তু আমরা চাচ্ছিলাম নিজেদের মত করে করতে যা বার-বি-কিউ এ হয়ে থাকে। পরে অনেক খুজে জোনাশ নামের এক স্থানীয় কে ম্যানেজ করলাম। ৩ কেজি ৯০০ গ্রাম মোট ওজনের ৩টা মুরগির দাম রাখলো ৮৫০/-, মুরগি বানানো, মেরিনেট, মসলা, বার-বি-কিউ বানানোর সরঞ্জাম, লাকড়ি, ডিজেল এর চার্জ চাইলো ৩০০/-। সন্ধ্যায় পরোটা অর্ডার করি বেঞ্জামিন নামের হোটেলে ৩৩টা ৩৩০/-। আমরা শুধু মুরগি গুলা জবাই দিয়ে চলে আসলাম। রাতে আমাদের ফোন করে জানিয়ে দিলো যে সব রেডি, নিয়ে যান। বার-বি-কিউ করলাম হেলিপ্যাড ২ তে।
> সকালের নাশতা করি ঐ বেঞ্জামিন হোটেলে। পরোটা আর ডিম ভাজি।
> দুপুরের খাবার খাগড়াছড়ি তে খাই। ঐখানে দাম রিজনেবল অনেক। ৬০ টাকায় মুরগি, বেগুন ভর্তা, মাছ ভর্তা আর আনলিমিটেড ঝোল এবং ১০ টাকা ভাত।
> তারপর আবার একইভাবে ঢাকার বাস, আর কুমিল্লায় নাশতা।
> ড্রাইভার আমাদের সাথেই খেয়েছিল সব বেলায়, তবে রাতে ছিল আলাদা।

আমরা এক্সট্রা খরচ করি কমলা, কলা, ডাব, গেন্ডারি, পাকা পেঁপে, ফান্টা খেয়ে। সেখানকার ডাব গুলা অবশ্যই ট্রাই করবেন। প্রচুর পানি থাকে, আমরা ডাবের পানি খেতে খেতে হয়রান হয়ে গেসিলাম :3
তাছাড়া আমরা ঢাকা থেকে ফানুশ নিয়ে গিয়েছিলাম বার-বি-কিউ এর পরে ওড়ানোর জন্য। আসার পথে রেসাং ঝর্নার শীর্ষে যাই আমরা দল বেধে। যারা খৈয়াছড়া ঝর্নায় উঠেছেন তাদের জন্য এই ঝর্না কোনো ব্যাপারই না। সময়ের অভাবে আলু টিলা যাওয়া হয়নি আমাদের। তবে চাঁদের গাড়ি/ পিক-আপ নেয়ার আগে অবশ্যই “সাজেক+ঝর্না+টিলার” ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে নিবেন ড্রাইভারের সাথে। নাহলে অনেক ড্রাইভার ই এক্সট্রা চার্জ চাইবে এর জন্যে।

রবি, এয়ারটেল, টেলিটক সিম চলে সাজেকে।
মোবাইল চার্জ দিতে পাওয়ার ব্যাংক সাথে রাখবেন।

বাংলাদেশ আর্মির প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা যাদের সহায়তা ছাড়া এইসব কিছুই সম্ভব ছিলনা। তারা প্রায়ই আমাদের কাছে এসে খবর নিয়েছে, কথা বলেছে, সাবধান করেছে।

এবং সকল প্রশংসাই আল্লাহর যিনি এত সুন্দর প্রকৃতি দান করেছেন… <3

হ্যাপি ট্রাভেলিং :

Post Copied From: Tofayel Ahmed‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

একদিনে ঘুরাঘুরির

অনেকেই একদিনে ঘুরাঘুরির ব্যাপারে জানতে চান। একদিনে অনেক জায়গাতেই যাওয়া যায়। এই যেমন নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, সোনারগাঁও, নরসিংদী, গাজীপুর, মাওয়া ঘাট, পদ্মা রিসোর্ট, মানিকগঞ্জ জমিদার বাড়ি, গোলাপ গ্রাম। অনেকেই আবার ঘুরাঘুরির জন্য সুদূর সিলেট, শ্রীমঙ্গল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রাজশাহী সাজেস্ট করে বসেন। এগুলা মারাত্মক ভুল গাইড। এগুলাকে ট্যুর বলে না, জাস্ট চুরির মত দৌড়ের উপর থাকা। মানুষ ট্যুর দেয় রিল্যাক্সের জন্য। কিন্তু সেটাই যদি না পাওয়া যায় তাইলে কিসের ট্যুর।

আমি যেহেতু কুমিল্লার তাই একদিনে কুমিল্লা ভ্রমণের ফিরিস্তি দিব। সকাল ৮ টায় সায়েদাবাদ থেকে এশিয়া লাইন/এশিয়া ট্রান্সপোর্টে (যেটা আগে ছাড়ে) চড়ে বসুন। ভাড়া নিবে ২০০ টাকা। কুমিল্লা ক্যান্টনম্যান্ট এসে নামবেন। সাড়ে ১০ টার আগেই পৌঁছে যাবেন। তবে আপনি যদি এসিতে আসতে চান তাইলে সায়েদাবাদ থেকে এশিয়া এয়ার কন্ডিশন অথবা কমলাপুর থেকে রয়েল কোচে আসতে পারেন। রয়েল অনেক কমফোর্টেবল বাট স্লো। ক্যান্টনম্যান্ট নেমে উত্তর দিকে ১০ মিনিট হাঁটলেই পেয়ে যাবেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত যোদ্ধাদের সমাধি ক্ষেত্র ওয়ার সিমেট্রি। বেশ নিরিবিলি পরিবেশটা আপনার ভাল লাগবে। ৩০ মিনিটের মধ্যেই ঘুরে দেখতে পারবেন।

এরপর আবার ক্যান্টনম্যান্ট ফিরে আসুন। রাস্তায় দাঁড়ালেই কুমিল্লা শহরগামী অনেক বাস যেমন পাপিয়া, কুমিল্লা হোমনা, সুগন্ধা, বিরতিহীন পাবেন। যে কোন একটায় উঠে পরুন। শাসনগাছা নামবেন। ভাড়া নিবে ১০ টাকা। এরপর অটোতে করে চলে যান কুমিল্লা জজ কোর্টের সামনে। সর্বোচ্চ ১৫ টাকা নিবে। সেখান থেকে কুমিল্লা পার্ক ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছে যাবেন ধর্মসাগরের উত্তর পাড়। চোখ জুড়ায়ে দেখুন ঐতিহাসিক ধর্মসাগর। আপনি চাইলে ধর্মসাগরের ভিতরে বোট রাইড করতে পারেন। ধর্মসাগর দেখতে দেখতে একবারে চলে আসুন দক্ষিণ মাথায়। এরপর একটু সামনে হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন কান্দিরপাড়।

যদি রসমালাই নিতে চান তাইলে কান্দিরপাড় থেকে পূর্বদিকে হাটা দিন। যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই মাতৃভান্ডার দেখায়া দিবে। রসমালাই কিনে কান্দিরপাড় থেকে সিএনজিতে উঠুন পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের। ২০ টাকা নিবে ভাড়া। বিশ্বরোড পৌছাতে পৌছাতে ততক্ষণে লাঞ্চ টাইম হয়ে যাবে। লাঞ্চ করতে পারেন দেশের প্রথম ৩ স্টার হোটেল নুরজাহানে। তবে খাবার ব্যয়বহুল। হোটেলের বাহিরের প্লেসটা আপনার ভাল লাগবে। পুরাই একটা মিনি পার্ক। খাবার অর্ডার করে বাইরে বসে খেতে পারেন। চেয়ার টেবিল বসানোই আছে। তখন মনে হবে আপনি বনভোজনে বসে খাচ্ছেন। আর যদি আপনার বাজেট কম তাইলে বিশ্বরোডে আরও অনেক হোটেল পাবেন। ঐগুলাতেও খেতে পারেন। আপনি যদি আমার মত লেটে লাঞ্চ করার লোক হন তাইলে লালমাই পাহাড় দেখে ফিরার সময় লাঞ্চ করতে পারেন বিশ্বরোডেই। বিশ্বরোড থেকে সিএনজিতে চলে যান লালমাই বাজারে। ভাড়া নিবে জনপ্রতি ২০ টাকা। লালমাই বাজার থেকে অটোতে চলে যান চন্ডিমুড়া পাহাড়ে। লাল মাটি ঘেরা পাহাড়ের পরিবেশ আপনাকে অন্য রকম অনুভূতি দিবে। ঘণ্টা খানেক চারপাশটা ঘুরে দেখেন। তবে সাবধান পাহাড়ের বেশি ভিতরে যাবেন না। ছিনতাইয়ের শিকার হতে পারেন। লালমাই পাহাড় দেখে আবার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে ফিরে আসেন।

সেখান থেকে মাইক্রোতে করে চলে আসুন কোটবাড়ি বিশ্বরোড। ভাড়া নিবে ১৫ টাকা। এরপর সিনজিতে করে সোজা কোটবাড়ি বাজার। ১০ টাকা নিবে প্রতিজনে। সিএনজি থেকে নেমেই দেখতে পারেন তাক লাগানো বার্ডের গেট। তবে বার্ডের ভিতরে ঢুকতে দিবে না কারও রেফারেন্স ছাড়া। অবশ্য জাতীয় দিবসগুলোতে সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। বার্ডের গেট দেখে সোজা পশ্চিম দিকে হাটা দিন। সাইনবোর্ডই আপনাকে জানিয়ে দিবে ইটাখোলা মুড়ার কথা। সেখানে একটা প্রাচীন বিহার আছে। সাথে ধ্যানমগ্ন এক মূর্তি। ২০/২৫ মিনিটে সব দেখা শেষ করে আবার কোটবাড়ি বাজারে ফিরে আসুন। এরপর অটো/সিনজিতে উঠে পরুন। ড্রাইভারকে বললেই শালবন বিহারের গেটে নামায়া দিবে। ভাড়া নিবে ১০ টাকা।

এরপর টিকেট কেটে ঢুকে পরুন প্রাচীন ঐতিহ্যে ঘেরা শালবন বিহারে। ২০ টাকা প্রবেশ ফি। বিহারের চারপাশের কৃত্রিম পরিবেশটাও আপনাকে নাড়িয়ে দিবে। ঘণ্টা দেড়েক এখানে কাটাতে পারেন। এরপর দেখতে পারেন ময়নামতি মিউজিয়াম। প্রবেশ ফি ১০ টাকা। তবে এটার ভিতরে এখন তেমন কিছুই নাই। শালবন বিহার থেকে বেরিয়ে রাস্তার পশ্চিম পাশে যে বন দেখতে পাবেন ঐটাই শালবন । শালবনে ঘুরাঘুরি করতে পারেন। বৈকালিক স্ন্যাকস করতে পারেন কাশবন রিসোর্টে। আশা করি সাড়ে ৫ টার আগেই আপনার সব দেখা হয়ে যাবে। এরপর শালবন বিহারের গেট থেকে সিনজিতে উঠে পরুন। কোটবাড়ি বিশ্বরোড নামবেন। ২০ টাকা নিবে।

এরপর অপেক্ষা করতে থাকেন এশিয়া ট্রান্সপোর্টের। বাস আসলে হাত দেখালেই থামাবে। উঠে পড়ুন। ২০০ টাকা নিবে। আর আপনি যদি এসিতে আসতে চান তাইলে কোটবাড়ি বিশ্বরোড থেকে মাইক্রো দিয়ে ক্যান্টনম্যান্ট চলে আসুন। ভাড়া নিবে ২০ টাকা। ক্যান্টনম্যান্ট থেকে এশিয়া এয়ার কন্ডিশন/রয়েল কোচে উঠতে পারবেন। আশা করি রাত ৮ টার আগেই আপনি ঢাকা পৌঁছে যাবেন।
কোন সমস্যা হলে বলতে পারেন।

Post Copied From:Masud Sarker Rana‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

কম খরচে ঢাকার আশেপাশেই ঘুরা যায় এমন অনেক সুন্দর জায়গা

কম খরচে ঢাকার আশেপাশেই ঘুরা যায় এমন অনেক সুন্দর জায়গায় আছে। যেখানে আপনি একদিনেই সহজে ঘুরে আসতে পারবেন।
চলুন জেনে নেই জায়গাগুলো সম্পর্কে – মোট ১৩ টি জায়গার বর্ণনা দেয়া আছে এখানে

১/ গোলাপ গ্রাম
নদী পথ পার হয়ে ছোট্ট একটি গ্রাম। তবে গ্রাম হলেও পুরোটাই গোলাপের বাগান দিয়ে পরিপূর্ণ। এখানে গেলে আপনার মনে হবে যেন বিশাল একটি গোলাপের বাগানে ভেতর আপনি ঘুরছেন। সরু পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দেখবেন রাস্তার দুপাশ গোলাপের বাগান দিয়ে ঘেরা।
যাতায়াত ব্যবস্থা
মিরপুর দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাট থেকে সাহদুল্লাহপুর ঘাটের উদ্দেশ্যে ৩০ মিনিট পরপর ইঞ্জিনচালিত বোট ছাড়ে। সাহদুল্লাহপুর যেতে যেতে ৪৫ মিনিট- ১ ঘণ্টা লাগবে। সেখানে একেক জনের জন্য ২০-৩০ টাকা করে নিবে। অথবা নিজেরা হাতে চালানো বোট নিতে পারেন, যেতে দেড় ঘন্টার মতো লাগবে।

২/ পানাম ও মেঘনার পাড়
পানাম সিটি ঢাকা শহর থেকে একদমই আলাদা এবং অন্য রকম। পুরনো বাড়িগুলো দেখে দেখেই দিন পার হয়ে যাবে। পৃথিবীর ১০০ টি ধ্বংস প্রায় ঐতিহাসিক শহরের একটি পানামনগর। World Monument Fund ২০০৬ সালে পানামনগরকে বিশ্বের ধ্বংস প্রায় ১০০টি ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকায় প্রকাশ করে। ঈসাখাঁ-র আমলের বাংলার রাজধানী পানামনগর। এখানে কয়েক শতাব্দী পুরনো অনেক ভবন রয়েছে, যা বাংলার বার ভূইয়াঁদের ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত।
ওখান থেকে কাছেই মেঘনা নদী। নদীর ওপারে গেলেই দেখবেন কাশফুলে ঘেরা বিস্তৃত মাঠ! চাইলে পানাম ঘুরা শেষে সেখানেও ঘুরে আসতে পারেন।
যাতায়ত ব্যবস্থা
ঢাকার অদূরে ২৭কি.মি দক্ষিণ-পূর্বে নারায়নগঞ্জ এর খুব কাছে সোনারগাঁতে অবস্থিত এই নগর।ঢাকা থেকে যাতায়াত ব্যবস্থাও সহজ।গুলিস্থান থেকে ‘মোগরাপারা ‘ এর যেকোনো বাসে (সোনারগাঁপরিবহন) করে চলে আসা যায় ‘মোগরাপারা’, সেখান থেকে অটোরিকশাযোগে দশ-পনের মিনিটে চলে আসা যায় পানামনগরীতে।

৩/ বালিয়াটি জমিদার বাড়ি
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জমিদারবাড়িগুলোর একটি। ঢাকা জেলা সদর থেকে পয়ত্রিশ কিলোমিটার দূরে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামে অবস্থিত।মোট সাতটি স্থাপনা নিয়ে এই জমিদার বাড়িটি অবস্থিত। জমিদার বাড়ির পুরটাই মনোরম পরিবেশে ঘেরা!
যাতায়ত ব্যবস্থা
ঢাকার গাবতলী থেকে মানিকগঞ্জ বা সরাসরি সাটুরিয়া যাওয়ার বাস পাওয়া যাবে। জন প্রতি ভাড়া পড়বে ৬০-৭০ টাকা। সাটুরিয়া পৌঁছে সেখান থেকে রিকশা বা লোকাল সিএনজিতে করে জমিদার বাড়ি যাওয়া যাবে। জন প্রতি ভাড়া ১০ টাকা। বালিয়াটি জমিদার বাড়ি রোববার পূর্ণদিবস আর সোমবার অর্ধদিবস বন্ধ থাকে। অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও বন্ধ থাকে।
জমিদার বাড়িতে প্রবেশের জন্য টিকেটের মূল্য জন প্রতি ১০টাকা।

৪/ মহেরা জমিদার বাড়ি, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে ঘোরার মতন অনেক জায়গা আছে যা আপনি এক দিনে ঘুরে শেষ করতে পারবেন না। তবে তার মধ্যে মহেরা জমিদার বাড়ি সবচেয়ে সুন্দর। এটি তিনটি স্থাপনা নিয়ে তৈরি। বাড়ির ভেতরের দিকে বিশাল খাঁচায় বিভিন্ন রকম পাখি পালা হয়।
তিনটি স্থাপনার প্রতিটাতে অসাধারণ কারুকার্য করা। এসব কারুকার্য দেখলেই মন ভরে যাবে।
যাতায়ত ব্যবস্থা
টাঙ্গাইলের জমিদার বাড়ি দেখতে হলে খুব সকালে বাসা থেকে বের হতে হবে। কারণ যেতে প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা লাগবে। মহাখালি থেকে “ঝটিকা সার্ভিস” নামে বাস ছাড়ে। এছাড়া টাঙ্গাইল জাওয়ার আরো বেশ কিছু ভাল বাস আছে। মহেরা জমিদার বাড়ির বর্তমান নাম মহেরা পুলিশ ট্রেইনিং সেন্টার। ওখানে যেতে হলে নামতে হবে”নাটিয়া পাড়া” বাস স্ট্যান্ড এ। সময় লাগবে ২-২.৩০ ঘন্টার মত। নেমে একটা অটো রিকশা নিয়ে যেতে হবে। রিক্সায় করে সরাসরি মহেরা জমিদার বাড়িতে যাওয়া যাবে। ভাড়া ২০-৩০ টাকা। জমিদার বাড়ি ঢুকতে টিকেট কিনতে হবে, জন প্রতি ২০টাকা।

৫/ পদ্মা রিসোর্ট
ঢাকা থেকে ৪০ কি.মি. দূরে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং নামক স্থানে পদ্মা নদীতে চড়ের উপর এই রিসোর্টটি অবস্থিত। পদ্মা নদীর পাড়ে অবস্থিত বলেও জায়গাটি অতি মনোরম আর সুন্দর। বর্ষা ঋতুর সময় গেলে আপনার বেশি ভালো লাগবে।
যাতায়াত ব্যবস্থা
ঢাকার গুলিস্তান, সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী থেকে এই রুটে বিভিন্ন পরিবহনের অসংখ্য বাস প্রতি ১০/১৫ মিনিট পর পর চলাচল করে। গুলিস্তান সুন্দরবন স্কোয়ার মার্কেটের পূর্ব পাশ এবং যাত্রাবাড়ী গোলচত্বরের পূর্ব-দক্ষিণ দিক থেকে ঢাকা-মাওয়া ও ঢাকা-লোহজং এর বাস ছেড়ে যায়। ঢাকা থেকে সড়কপথে এই জেলার ভাড়া ৬০ টাকা। মাওয়া ফেরিঘাট থেকে রিসোর্টে যাওয়ার জন্য রিসোর্টের নিজস্ব স্পীডবোট রয়েছে।
পদ্মা নদীর টাটকা ইলিশের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে চাইলে যেতে পারেন পদ্মা রিসোর্টে। এছাড়া আরও রয়েছে টাটকা শাকসবজি, গরু, মুরগি ও হাসের মাংস। এছাড়া মৌসুমি ফলমূল তো রয়েছেই। সকালের নাস্তার জন্য জনপ্রতি খরচ পড়ে ১০০ টাকা এবং দুপুর ও রাতের খাবারের জন্য জনপ্রতি খরচ পড়ে ৩০০ টাকার মতো।
পর্যটকগণ ইচ্ছা করলে অর্ধেক বেলা অথবা পুরো ২৪ ঘন্টার জন্য কটেজ ভাড়া নিতে পারেন। সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ভাড়া ২,০০০ টাকা। সকাল ১০ টা থেকে পরের দিন সকাল ১০ টা পর্যন্ত ভাড়া ৩,০০০ টাকা।

৬/ মিনি কক্সবাজার খ্যাত মৈনট ঘাটঃ
ঢাকা থেকে মৈনট ঘাটে আসার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায়টি হচ্ছে গুলিস্তানের গোলাপ শাহর মাজারের সামনে থেকে সরাসরি মৈনট ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা যমুনা পরিবহনে চেপে বসা। ৯০ টাকা ভাড়া আর দেড় থেকে আড়াই ঘণ্টার বিনিময়ে আপনি পৌঁছে যাবেন মৈনট ঘাট। ফেরার সময় একই বাসে আবার ঢাকা চলে আসবেন। মৈনট থেকে ঢাকার উদ্দেশে শেষ বাসটি ছেড়ে যায় সন্ধ্যা ৬টায়।
গুলিস্তানের একই স্থান থেকে এন মল্লিক পরিবহনেও আসতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আপনাকে নামতে হবে নবাবগঞ্জের মাঝিরকান্দা নামক স্থানে। ভাড়া ৭০ টাকা। মাঝিরকান্দা থেকে লোকাল অটোতে দোহারের বাঁশতলা। ভাড়া ১৫ টাকা। চাইলে লক্ষ্মীপ্রসাদ নামক স্থানে নেমে পোদ্দারবাড়ি নামক পুরোনো বাড়িটিও দেখে নিতে পারেন। আর জজবাড়ি, উকিলবাড়ি, কোকিলপ্যারি দালান, খেলারাম দাতার বাড়ি যাকে স্থানীয়ভাবে আন্ধার কোঠা বলা হয়, এসব দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখতে চাইলে মাঝিরকান্দার আগে কলাকোপা নামক স্থানেই নামতে হবে।
যাইহোক, মাঝিরকান্দা থেকে বাঁশতলা আসার পর কার্তিকপুরগামী আরেক লোকাল অটোতে উঠতে হবে। ভাড়া ১৫ টাকা। কার্তিকপুর বাজার থেকে আরেক অটোতে মৈনট ঘাট। ভাড়া ১০ টাকা। রিকশায় গেলে ২০ টাকা। গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া থেকে নগর পরিবহনেও আসতে পারবেন। ভাড়া ৯০ টাকা। নগর পরিবহন নবাবগঞ্জের রুট ব্যবহার করে না। এই বাসটি আসে মুন্সীগঞ্জ হয়ে। এ ক্ষেত্রে আপনাকে কার্তিকপুর বাজারে নামতে হবে। ঢাকার বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়ে কদমতলী থেকে সিএনজিতেও আসতে পারবেন। লোকাল সিএনজি কদমতলী থেকে জনপ্রতি ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা ভাড়া নিয়ে কার্তিকপুর বাজার পর্যন্ত আসে। এ ছাড়া যমুনা পরিবহন অথবা এন মল্লিক পরিবহন গুলিস্তানের যে স্থান থেকে ছাড়ে, একই স্থান থেকে জয়পাড়া পরিবহন নামক মিনিবাসটিও ছেড়ে আসে দোহারের জয়পাড়ার উদ্দেশে।

৭/ বেলাই বিল
গাজিপুরের বেলাইবিল মনোরম একটি জায়গা। চেলাই নদীর সাথেই বেলাই বিল।এখানে ইঞ্জিনচালিত আর ডিঙ্গি নৌকা দুটোই পাওয়া যায়।যেটাতে ভালো লাগে উঠে পড়ুন। সারাদিনের জন্য ভাড়া করে নিতে পারেন এবং ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিলে নিজেরাই চালিয়ে ঘুরতে পারেন।
বিকেলে এই বিলের চারপাশে অপূর্ব দৃশ্য তৈরি হয়, সাথেশাপলার ছড়াছড়ি। শুধু চারিদিক তাকিয়ে থাকবেন। আবার কিছুক্ষণ পরপরই বাতাসের ঝাপটা লাগবে গায়ে। বেশি সময় নিয়ে গেলে অবশ্যই খাবার নিয়ে যাবেন। যাওয়ার সময়নদীরপাড় দিয়ে হাঁটতে থাকি,রওনাদেই আমাদের গন্তব্যে।
যেভাবে যাবেন
গাজিপুর সদর পর্যন্ত যাওয়ার পর, সেখান নেমে টেম্পুতে কানাইয়া বাজার যাবেন। ভাড়া নিবে ১০ টাকা করে। রিকশাতেও যেতে পারেন।কানাইয়া বাজারে নেমেই সামনে ব্রিজ আছে,ব্রিজ পার হয়েই নদীতে বাধা নৌকা ঠিক করে উঠে পড়ুন।
এছাড়াও নদীর পাশে‘ভাওয়ালপরগণা’ (শ্মশান ঘাটবা শ্মশান বাড়ি) আছে। চাইলে নদীর পাশেই এই শ্মশান বাড়িটি দেখে আসতে পারেন।

৮/ নুহাশপল্লী
হুমায়ূন আহমেদ-কে সবাই চেনেন, তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৪০ বিঘা জায়গা নিয়ে তৈরি করেছেন ‘নুহাশ পল্লী’।নুহাশপল্লী গাজীপুরে অবস্থিত একটি বাগানবাড়ী, নুহাশ চলচিত্রের শুটিংস্পট ও পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র।নুহাশপল্লীতে ঢুকে মাঠ দিয়ে একটু সামনে এগিয়ে গেলে হাতের বামপাশে শেফালি গাছের ছায়ায় নামাজের ঘর।এরপাশেই পুরনো লিচু বাগানের উত্তর পাশে জাম বাগান আর দক্ষিণে আম বাগান। ওই লিচু বাগানের ছায়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ।
নুহাশ পল্লীর পুরো জায়গাটি সবুজ গাছপালা দিয়ে আবৃত। দেখলেই মন জুরিয়ে যাবে। এখানে অনেক প্রজাতির এবং অনেক রকমের গাছ রয়েছে।গাছের গায়ে সেটে দেয়া পরিচিতিফলক রয়েছে। আরও রয়েছে সুইমিংপুল আর ছোট্ট পুকুর। মাঠের মাঝখানে একটি গাছের উপর ঘর তৈরি করা আছে, যা আবাক করবে আপনাকে!হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত প্রায় অনেক নাটক সিনেমার অন্যতম শুটিংস্পট এটি।
তাই যারা হুমায়ূন আহমেদ স্যারের ভক্ত আছেন তারা অবশ্যই এই জায়গায় ঘুরে আসুন।
যেভাবে যাবেন
প্রথমে গুলিস্তান থেকে প্রভাতী-বনশ্রী বাসে হোতা পাড়াবাজারে নেমে সেখান থেকে ছোট টেম্পুতে করে পৌঁছে যাবেন নুহাশ পল্লী। এছাড়া নিজস্ব গাড়ি বা মাইক্রো ভাড়া করে যেতে পারেন। এপ্রিল থেকে নভেম্বর নুহাশপল্লী দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।
১২ বছরের উপরে জন প্রতি টিকেট লাগবে ২০০ টাকা।

৯/ শালবন বৌদ্ধ বিহার, কুমিল্লা
শালবন বৌদ্ধবিহার বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং কুমিল্লা জেলার লালমাই-ময়নামতির অসংখ্য এবং চমৎকার সব প্রাচীনস্থাপনাগুলোর একটি।
দেববংশের চতুর্থ রাজা শ্রীভবদেব এ বৌদ্ধ বিহারটি নির্মাণ করেন।
যেভাবে যাবেন
প্রথমে কুমিল্লা শহরে যাবেন। কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কি. মি. দূরে কোট বাড়িতে শালবন বিহার অবস্থিত ।
ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত বাসে যেতে ২-৩ ঘণ্টা লাগবে।কুমিল্লা এসে চলে যান টমটম ব্রীজ সিএনজি স্ট্যান্ডে। সেখানে সিএনজি করে কোটবাড়িতে এবং সেখান থেকে অটোরিকশা বা রিকশায় করে যেতে হবে শালবন বিহার।

১০/ আড়াইহাজার মেঘনার চর:
ঢাকার কাছে আড়াইহাজার চর এলাকা অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খুব অল্প সময়ে।বিস্তীর্ণ এলাকায় এরকম মনোরম পরিবেশ আর কোথাও নেই শহরের আশেপাশে!
সারাদিনের জন্য ঘুরতে আসতে পারেন এখানে।নদীর তীরে ট্রলারে সন্ধ্যার সময়টা কাটাতে পারেন।ঢাকার কাছে মেঘনা নদীর মাঝখানে এই বিশাল বালির চর। তার মধ্যে অর্ধেকের বেশিই কাশবন। এখানেবালি অনেক শক্ত তাই কোন চোরাবালির ভয় নেই। ভাটার সময় এখানে ঘুরতে যাওয়া বেশি সুবিধার। এ সময় ১০-১৫ ফিট বালির চরথাকে। দেখতে পারবেন কাশবন, খোলা আকাশে পাখির মেলা আর মাঝে মাঝে ট্রলার আর জাহাযের শব্দ।
যেভাবে যাবেন-
প্রথমে গুলিস্তান থেকে দোয়েল বা সদেশ পরিবহন এ মদনপুর যাবেন। ভাড়া নিবে ৪৫ টাকা। সেখানে নেমে আড়াইহাজার এর জন্য সিএনজি নেবেন। ভাড়া নিবে ৫০ টাকা।
মদনপুর নামার পর আশেপাশে অনেক দোকানপাট বা হোটেলে খেয়ে নিতে পারেন।
যাতায়াত, খাওয়া-দাওয়া এবং ট্রলারের খরচ মিলিয়ে মোটামোটি ৩/৪ জনের জন্য ৭০০-১০০০ টাকা খরচ হতে পারে।

১১/ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক:
বিস্তৃত শালবনের ভেতর প্রাচীর দিয়ে তৈরি এই পার্ক। ভেতরআছে সরু পিচঢালা সড়ক। দু’দিকে নানা প্রজাতির গাছ দিয়ে বিস্তৃত।থাইল্যান্ডের সাফারি ওয়ার্ল্ডের সাথে সামঞ্জস্য রেখেএশিয়ার সর্ববৃহত্তম বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক বাংলাদেশের গাজীপুরে নির্মিত হয়েছে । ২ ইঞ্চি কাচের দেয়াল দিয়ে ঘেরা আছে হিংস্র বন্য পশুদের জায়গা। তাই আপনি তাদের কাছ থেকে দেখতে পারলেও ভয়ের কোন কারণ নেই। তাছাড়া খুব সুন্দর ব্যবস্থায় তৈরি করা হয়েছে এটি।
যা যা আছে-
পার্ক সমন্ধে যেকোনো তথ্য জানার জন্য এখানে প্রথমেই রয়েছে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য ও শিক্ষা কেন্দ্র।কোর সাফারি পার্কে বন্য প্রাণীরা স্বাধীনভাবে বিচরণ করে।পার্কের গাড়িতে চড়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পারেন বাঘ, সিংহ, ভাল্লুক, আফ্রিকান চিতা, চিত্রা হরিণ,জলহস্থি, নীল গাই, এবং আরও অনেক বিদেশী বন্য পশুও। তবে এখানে ঢুকতে ২০০ টাকা দিয়ে জন প্রতি টিকিট কাটতে হয়। সাফারি কিংডমে রয়েছে প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র, জিরাফ ফিডিং স্পট ও পেলিকেন আইল্যান্ড।মজার বিষয় হলো এখানে বিশাল জায়গা নিয়ে পাখিদের রাখা হয়েছে। পাখির খাঁচার কাছে যেতেই আপনার মন আনন্দে ভরে উঠবে। নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি পাখি এখানে আছে।
খাওয়া-দাওয়ার জন্য আছে টাইগার ও লায়ন রেস্টুরেন্ট।ওয়াচ টাওয়ার থেকে আপনি দেখতে পাবেন সমগ্র সাফারি পার্কের মনোরম দৃশ্য। দেখতে পাবেন পার্কের ভিতর বিচরণরত বন্যপ্রাণী।
এশীয় তৃণভোজী এবং ছোট মাংসাশী প্রাণী, পাখি সরিসৃপ ও উভয়চর প্রাণী নিয়ে এক্সটেনসিভ এশিয়া সাফারি প্রতিষ্ঠিত।এ ছাড়া তৈরি করা হয়েছে হাতির আশ্রম।বন্য পশুপাখির জলের চাহিদা পূরণ করার জন্য আছে আটটি জলধারা ও দুটি কৃত্রিম হ্রদ। এ ছাড়াও সাফারি পার্কে আছে বাটারফ্লাই পার্ক,বায়ো-ডাইভারসিটি পার্ক,স্নেক পার্কে ক্রোকোডাইল ও লিজার্ড পার্ক।সাফারি পার্কে হাতির পীঠে উঠার ব্যবস্থাও আছে।
যেভাবে যাবেন-
গাজীপুরে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত বাঘের বাজার। সেখান থেকে আরও সামনে কিছু দূর থেকে দেখা যাবেবঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের গেইট।সেটি পার করে দেখতে পারবেন বাঘ, সিংহ, বাজ পাখি বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর ভাস্কর্য।

১২/ মানিকগঞ্জের হরিরামপুর কিংবা ঝিটকা:
ঢাকার কাছে সরিষা ফুলের রাজ্য মানিকনগর। কয়েকজন মিলে একটি গাড়ি ভাড়া করে নিন।তাহলে ইচ্ছেমতো ভালো লাগা যেকোনো জায়গাতেই থেমে যেতে পারবেন।
যেভাবে যাবেন-
ঢাকার হেমায়েতপুর থেকে সিঙ্গাইরের রাস্তা ধরে কিছুদূরসামনে গেলে ধলেশ্বরী ব্রিজপেরিয়ে বিন্নাডিঙ্গি বাজার থেকে বাঁয়ের সড়কে আরও সামনে মানিকনগর। সেখানে সড়কের দুইপাশে সরিষা ক্ষেত। সেখান থেকে আরেকটু দূরে গেলে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর কিংবা ঝিটকা এলাকায় আছে বিস্তীর্ণ সরিষা ক্ষেত। এখানে বিকাল কিংবা সকালে গেলে আপনার মন ভরে যাবে।

১৩/ জল জঙ্গলের কাব্য, পুবাইল:
অসাধারন সুন্দর জায়গা,জল জঙ্গলের কাব্য একটি প্রাকৃতিক রিসোর্ট এর নাম। রিসোর্টটি পূবাইলে এক সাবেক পাইলট তৈরি করেছেন। তবে রিসোর্টে আধুনিক কিছু নাই বললেই চলে। পাইলট ভদ্রলোক খুব বেশি পরিবর্তন করতে চায়নি গ্রামটিকে।প্রকৃতিকে খুব বেশি পরিবর্তন না করে বিশাল এক জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে রিসোর্ট।
বিশাল একটি বিল, পুকুর আর বন-জঙ্গল আছে এখানে। যে কেউ চাইলে একটা দিন এখানে কাটিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। খুবই অন্যরকম পরিবেশ নিয়ে তৈরি এই রিসোর্ট।
যাতায়াত
নরসিংদী, ভৈরব বা কালিগঞ্জ এর বাসে পুবাইল কলেজ গেট নেমে পড়ুন।বামে রাস্তায় ব্যাটরী চালিত রিক্সায় করে প্রায় তিন মাইল গেলেই পাইলট বাড়ি বা জল জঙ্গলের কাব্য।
খরচটা একটু বেশী। তবে খাবার সেই খরচের ভেতরেই থাকবে। সারাদিনের জন্য জনপ্রতি ১৫০০ টাকা (সকালের সাস্তা, দুপুরের খাবার আর বিকেলে স্ন্যাক্স)।এক দিন এবং একরাতের জন্য ৩০০০ টাকা জন প্রতি। শিশু, কাজের লোক ও ড্রাইভারদের জন্য ৬০০ টাকা জন প্রতি।
নাস্তায় চিতই পিঠা, গুড়, লুচি, মাংশ, ভাজি, মুড়ি এবং চা। দুপুরের খাবার হিসেবে ১০/১২ রকম দেশী আইটেম। মোটা চালের ভাত, পোলাও, মুরগির ঝোল, ছোট মাছ আর টক দিয়ে কচুমুখির ঝোল, দেশী রুই মাছ, ডাল, সবজি এবং কয়েক রকমের সুস্বাদু ভর্তা।
খাবারের আয়োজনের ত্রুটি রাখেননি এখানকার কর্তৃপক্ষ।

Post Copied From:

AJ Aronno>Travelers of Bangladesh (ToB)

বাড়ির পাশে জলবাড়ি

কুমিল্লা/ সোনামুড়া চেকপোস্ট থেকে মাত্র ৩০মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত মেলাঘর। মেলাঘরের পাশেই সুবিশাল রুদিজলা হৃদ আর জলাভূমিতে অবস্থিত ভারতের দুইটিমাত্র Water palace এর একটি নীরমহল। ত্রিপুরার রাজাদের অবকাশকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল এই সুবিশাল রাজপ্রাসাদ। ইতিহাসের ঘ্রাণ মেখে একটি সুমধুর দিন কাটানোর জন্য উপযুক্ত।

থাকার জায়গা- হৃদের পাশে অবস্থিত ত্রিপুরা সরকারের সাগর মহল রিসোর্ট
কিভাবে যাবেন –

রুট ১/ কুমিল্লা চেকপোস্ট – সোনামুড়া – মেলাঘর ( ৩০ মিনিট বর্ডার থেকে)
রুট ২/ আখাউড়া – আগরতলা – মেলাঘর ( ২ ঘন্টা বর্ডার থেকে)

Post Copied From:Subhajit Choudhury>Travelers of Bangladesh (ToB)

টাঙ্গোয়ার হাওর, ‘জলস্বর্গ’

যা যা দেখলামঃ
>কমন স্পট< . – টাঙ্গুয়ার হাওর এবং ওয়াচ টাওয়ার – টেকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রী) রাজাই ঝর্ণা, বারিক্কা টিলা যাদুকাটা নদী শিমুল বাগান লাকমা ছড়া – হাসন রাজার বাড়ি, সুনামগঞ্জ . >আনকমন স্পট< – কলাবন ছড়া – জঙ্গলা ছড়া – বীরেন্দ্রনাথ ছড়া ও বাগান – বাইশা ছড়া . খরচপাতিঃ (৬ জন হিসেবে) >মেস থেকে কুমিল্লা রেল স্টেশনঃ ১৫০
> কুমিল্লা – সিলেটঃ ১২০০ (স্টেন্ডিং)
>সিলেট রেল স্টেশন থেকে কুমারগা বাস স্ট্যান্ডঃ ১২০
> নাস্তাঃ ৩০০ (ভাত, ৩/৪ পদের ভর্তা, ডাল)
> কুমারগাও থেকে সুনামগঞ্জ বাসে> ৫৪০
> সুনামগঞ্জ থেকে তাহিরপুর লেগুনা রিজার্ভ > ৫০০
> তাহিরপুর ‘টাঙ্গোয়ার হোটেলে’ লাঞ্চ> ৯০০
(মুরগীর রোস্ট ১০০, বোয়াল ১৫০, স্বাদঃ ১০/১০)
> পানি ১০ লিটার, কলা, বান, বিস্কুট > ৩০০
> ট্রলার বিকাল থেকে পরদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত, মাঝারী সাইজ > ২৫০০
> টেকেরঘাট রাতের খাবার > ১৪০ (পরটা, ডিম ভাজি, স্বাদঃ ০/১০)
> বাইক ভাড়া, কমন ৫টা স্পট > ৭৫০
> বাইক ভাড়া, আনকমন স্পট > ৮০০
> দুপুরের খাবার > ৮৪০ (বোয়াল মাছ, ভর্তা, স্বাদঃ ৪/১০)
> ওয়াচ টাওয়ারে ছোট নৌকা ভাড়া, ২টা > ২০০ (এগুলো সময় অনুযায়ী প্রতিজন ২০/১০ টাকা করে নেয়)
> তাহিরপুর থেকে সুনামগঞ্জ সাথে হাসন রাজার বাড়ি রিজার্ভ সিএনজি > ৫০০
> সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট পাঁচভাই হোটেল পর্যন্ত মাইক্রো রিজার্ভ > ৯০০
(যদিও এসব সেইফ না, আর রাত ৮টার পর সিলেটের বাস নেই, ঢাকার বাস আছে, দাড়িয়ে যেতে হয়)
> পাঁচভাই ডিনার> ১১৫০ (গরু/কোয়েল + অনেক পদের ভর্তা + লাচ্চি)
> রাত ১২টার পর কুমিল্লার বাস পাইনি, তাই,
সিলেট টু ব্রাক্ষনবাড়িয়া বিশ্বরোড > ৫০০ (৬জনে :p
(সার্ভিস খারাপ না)
> ব্রাক্ষনবাড়িয়া থেকে কুমিল্লা > ৬০০
> সকালে হাল্কা নাস্তা > ১২০
> বাস স্ট্যান্ড থেকে মেসে > ৯০
.
সর্বমোটঃ ১৩১০০/৬
প্রতিজনঃ ২১৮৩ টাকা!!
.
[ঢাকা থেকে যদি আসেন কুমিল্লা-সিলেট,সিলেট কুমিল্লার ভাড়া ২০০*২= ৪০০ বাদ দিয়ে ঢাকা-সিলেট-ঢাকা ভাড়া এড করলে যা আসে তা আসবে]
.
এবার আসি সংক্ষেপে মূল আলোচনায়,
৩/৪ ঘন্টার হঠাৎ প্ল্যান করে ২৬ তারিখ ৬জনে কুমিল্লা থেকে বেড়িয়ে পরি টাঙোয়ার হাওর দেখার উদ্দেশ্যে!
.
রাত ১টার ট্রেন ২ঘন্টা লেটে কুমিল্লায় পৌছায় ৩টারও পর!
স্টেন্ডিং টিকিট কেটে শুরু করি যাত্রা…
৩০ মিনিট পর শশীদল স্টেশনে ক্রসিং এর জন্য আরো দেঢ় ঘন্টা ট্রেন দাড়িয়ে!
ভোর হতে চললো, কুমিল্লায়ই ছাড়তে পারলাম না!
.
যাক, ট্রেন চলতে শুরু করলো, শ্রীমঙ্গল যাওয়ার পর সীট পাই আমরা সবাই।
সিলেট পৌছাই আমরা প্রায় সাড়ে ১০ টায়!
.
সীলেট স্টেশন নেমেই কুমারগা বাস স্টেশনে যাওয়ার জন্য সিএনজি খুজতে থাকি।
স্টেশন থেকে সিএনজি রিজার্ভ চায় একদাম ২৫০
.
২মিনিট হেটে স্টেশন থেকে বের হয়ে রাস্তা থেকে ১২০ টাকায় ঠিক করি কুমারগায়ের উদ্দেশ্যে।
.
মাঝখানে চাকা পামছার হওয়ার :p বিরতি নাস্তা পর্ব সেরে নেই।
কুমারগাও স্টেশন থেকে সুনামগঞ্জের বাসে উঠি। বাসগুলো চরম চিটার।
২জন ইন্জিন কভারে, ২জন মাঝখানে সীটে আর বাকি ২জনকে একদম পিছের মাঝখানে সিট দেয়।
.
আমাদের অনেক পরে আসা যাত্রীদের ভাল ভাল সীট দিচ্ছিলো!
.
যাইহোক, সুনামগঞ্জ পৌছে ৬জনে একটা লেগুনা ঠিক করে আরামচেয়ে পৌছে যাই তাহিরপুর।
তাহিরপুর পৌাছার পরপরই মাঝারি টানাটানি শুয়রের করে দিলো!
.
অনেক নাটকের পর নৌকা ঠিক করে ৫টার নাগাদ হাওর যাত্রা শুরু করি, তার আগে তাহিরপুর বাজারের বিখ্যাত হোটেল ‘টাঙোয়ার হোটেল’ এ লাঞ্চ সেড়ে নেই । টেকেরঘাট পৌছাতে পৌছাতে রাত হয়ে যায়।
রাতে সিরাজ লেক দেখে খাবার খেয়ে ট্রলারে আড্ডা দিয়ে ঘুমিয়ে পরি।
টেকেরঘাটে খাবারের মান খুবই খারাপ।
.
রাতেই বাইক ঠিক করে ফেলি তিনটা ।
ভোড় সাড়ে ৫টায় বাইক হাজির, ব্রাশ করে কলা রুটি খেয়ে বেড়িয়ে পরি….
(রাজাই ঝর্ণা, বারিক্কা টিলা, যাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান, লাকমা ছড়া) দেখতে দেখতে ৩ঘন্টার উপর চলে যায়।
.
তারপর আনকমন স্পটগুলোতে যাওয়া শুরু করি, ওগুলো দেখা শেষ করতে করতে আরো ৩ঘন্টা!
দুপুরের খাবার খেয়ে , সিরাজ লেকে গোসল করে বিকাল ৩টার দিকে ওয়াচ টাওয়ারের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি।
.
ওয়াচ টাওয়ার দেখে তাহিরপুর ফিরতে ফিরতে মাগরিবের পর হয়ে যায়।
সিএনজি রিজার্ভ করি হাসন রাজার বাড়ি দেখিয়ে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত।
.
সুনামগঞ্জ পৌছাই রাত ৯ টায়।
.
সুনামগঞ্জ থেকে প্রাইভেট কার রিজার্ভ করে সিলেটের পাঁচভাই হোটেলে যাই, ডিনার করে বাসে করে কুমিলা সকালে পৌছাই!
.
সকালে কুমিল্লা পৌছে দুপুরে একটা দাওয়াত খেয়ে রাতে চট্রগ্রাম ট্যূরে চলে যাই 😉
পতেঙ্গা, নেভাল, ভাটিয়ারি, বাঁশবাড়িয়া বিচে! :p
.
<<<<<<কিছু কথা>>>>>>>
১. টাঙ্গুয়ার হাওরের পানি খুব পরিস্কার, স্লোরকেলিং সেট মাস্ট কিনে নিবেন। পানির ভিতরে দেখে দেখে সাতার কাটবেন। দাম ৮০০-১০০০
২. একশান ক্যামেরা নিলে ভালো
৩. সরকারি বন্ধ না থাকলে মাঝারি সাইজের ট্রলার ৬-৮ জন ধারনক্ষমতা ভাড়া ২৫০০-৩০০০,
বড় সাইজে ৪০০০ থেকে শুরু…
আর সরকারি বন্ধে মাঝারি সাইজের নৌকা ৭-৯ হাজার টাকা!!!
৪. মাঝিদের থেকে সাবধান থাকবেন, মোবাইল মানিব্যাগ চুরি হয়! এবং রান্নার সরন্জামে গরমিল হয়!
৫. ট্রলারে রান্নার ঝামেলা না নিলেই আমার মনে হয় ভালো হয়
Post Copied From:সাখাওয়াত সবুজ>Travelers of Bangladesh (ToB)

কুমিল্লা ওয়ার সিমেট্রি।

শ পাঁচেক টাকা খরচ করে দিনে দিনে ঘুরে আসতে পারেন কুমিল্লা ওয়ার সিমেট্রি।

বাংলাদেশে দুটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ওয়ার সিমেট্রি আছে। একটি কুমিল্লায়, অপরটি চট্টগ্রামে। কুমিল্লারটি তূলনামূলক বড় ও সুন্দর মনে হলো আমার কাছে। ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি স্থানীয়ভাবে ইংরেজ কবরস্থান নামে পরিচিত। ময়নামতি রণ সমাধিক্ষেত্র মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) নিহত ভারতীয় (তৎকালীন) ও বৃটিশ সৈন্যদের কবরস্থান। ময়নামতি তখনকার সময়ে একটি ক্ষুদ্র গ্রাম হলেও তৎকালিন সেনাবাহিনীর একটি বড় ঘাঁটিতে পরিনত হয়। এখানে স্থাপিত হয় বড় একটি হাসপাতাল। এছাড়া কুমিল্লা ছিল যুদ্ধ-সরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্র, বিমান ঘাঁটি, আর ১৯৪৪ সালে ইম্‌ফলে স্থানান্তরিত হবার আগে চতুর্দশ সেনাবাহিনীর সদরদপ্তর। এই সমাধিক্ষেত্রের ৭৩৬টি কবর আছে। এর মধ্যে অধিকাংশ হলেন সেসময়কার হাসপাতালের মৃত সৈনিকরা। তাছাড়াও যুদ্ধের পর বিভিন্ন স্থান থেকে কিছু লাশ স্থানান্তর করেও এখান সমাহিত করা হয়। বাহিনী অনুযায়ী এখানে এর মধ্যে রয়েছেন ৩জন নাবিক, ৫৬৭জন সৈনিক এবং ১৬৬জন বৈমানিক। সর্বমোট ৭২৩ জন নিহতের পরিচয় জানা সম্ভব হয়েছিল। তাছাড়া কয়েকজন জাপানী সৈন্যের কবরও এখানে আছে। নীরব, শান্ত, টিলার উপর ধাপে ধাপে গড়ে উঠা এই সমাধিক্ষেত্রে সময় যেন থমকে আছে সেই পঞ্চাশের দশকে, সমাধির বিষাদমাখা এপিটাফগুলো মন উদাসী করে দেয়!

শ পাঁচেক টাকা খরচের মধ্যেই দিনে দিনে ঘুরে আসতে পারেন আরো কিছু লোকেশন। রাস্তায় অপর পারেই সিএনজি নিয়ে ভেতরে ঢুকলেই ময়নামতি, আনন্দ বিহার, শালবন বিহার ইত্যাদি।

ঢাকা কমলাপুর বা সায়েদাবাদ থেকে সারাদিনই বাস ছাড়ে। ময়নামতি ক্যান্টনমেন্

ট নেমে হাতের বামে হাটা দূরুত্বে ওয়ার সিমেট্রি। আর ডানে সিএনজি নিয়ে ঘুরে আসেন বাকি লোকেশনগুলো।

Post Copied From:Apu Nazrul>Travelers of Bangladesh (ToB)