কলকাতা থেকে কালকা/চন্ডিগড় থেকে শিমলাঃ

কলকাতার হাওড়া স্টেশন থেকে কালকা মেইল ট্রেনে কালকা যাওয়া যায়।কালকা মেইলের ভাড়া এসি থ্রি-টায়ার ২৩৫০ রুপি প্রতি জন।যদি কালকা মেইল ট্রেনের টিকিট না পান তাহলে অমৃতসর মেইল ট্রেনের টিকিট কেটে আম্বালা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে নামতে হবে।অমৃতসর মেইলের এসি থ্রি-টায়ার এর ভাড়া ২২৫০ রুপি প্রতি জন।সেখান থেকে বার্মিজ কালকা মেইল নামে একটা ট্রেন আছে কালকা যাওয়ার।আম্বালা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে টিকিট কেটে কালকা পর্যন্ত যাওয়া যায়।অমৃতসর মেইল ট্রেনে আম্বালা ক্যান্টনমেন্ট পৌঁছাতে সময় লাগে ৩২ ঘন্টা।আর কালকা মেইলে কালকা পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় লাগে ৩৬ ঘন্টা।কালকা পৌঁছে কালকা থেকে ভোর ৫টা থেকে ১২ টার মধ্যে অনেক গুলো টয় ট্রেন আছে শিমলা যাওয়ার।শিবালিক ডিলাক্স এক্সপ্রেস,হিমালয়ান কুইন,কালকা-শিমলা রেইল মটর।টয় ট্রেনে কালকা থেকে শিমলা পৌঁছাতে সময় লাগে ৭ ঘন্টা।ভাড়া ২৫০ রুপি।টয় ট্রেনের মধ্যে একটি ট্রেন শিবালিক ডিলাক্স এক্সপ্রেস কালকা মেইলের সাথে কানেক্টেড।অর্থাৎ কালকা মেইল কালকা ষ্টেশনে না পৌঁছানো পর্যন্ত শিবালিক ডিলাক্স এক্সপ্রেস স্টেশন ত্যাগ করবে না।তাই যারা কালকা মেইলে কলকাতা থেকে যাত্রা করবেন তারা ফেয়ারলি প্লেস থেকে শিবালিক টয় ট্রেনের টিকিট কাটার চেস্টা করবেন।কারন, কোন কারনে যদি কালকা মেইল লেটও হয়,টয়ট্রেন মিস হওয়ার ভয় নেই।টয় ট্রেন ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি থেকে শিমলাকে কালকা শহরটির সঙ্গে সংযুক্ত রেখেছে এবং শহরটিতে পৌঁছানোর জন্য সবচেয়ে অন্যতম জনপ্রিয় রাস্তা টয় ট্রেনের রাস্তাটি।তবে এটি খুবই ধীর গতির। তবে,পারিপার্শ্বিক দৃশ্য পরিদর্শনের জন্য এই ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ট্র্যাকটি সারা জীবন মনে রাখার মত।টয় ট্রেনটি ১৭৬টি সুড়ঙ্গপথ ও ৭৬টি সেতুর মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করে।
শিমলা রেলষ্টেশন থেকে মল রোড মাত্র এক কিলোমিটার মত দূরত্বে অবস্থিত।

এছাড়া কলকাতা থেকে দিল্লী হয়ে বাই রোডে শিমলা আসা যায়। বাস ভাড়া এসি ভলভো ১৫০০ রুপী আর নন-এসি ভলভো ৯০০ রুপী। আপনি চাইলে ট্যাক্সি অথবা প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে আসতে পারেন সিমলা।

�শিমলাতে ঘোরার জায়গাঃ

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত হিমাচলের রাজধানী,শিমলা শহর। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, কঠোর নিয়ম কানুন এবং পরিমিত আধুনিকতায় সাজানো শহর। মানুষের সচেতনতা এবং আইনের প্রয়োগ কিভাবে একটা সাদামাটা শহরকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে পারে,তা দেখতে চাইলে চলে যান শিমলায়।রাস্তায় সিগারেট খাওয়া যায় না।রাতের শিমলা অনেক বেশী সুন্দর।

শিমলা দেখার জন্য ২ দিনই যথেষ্ট।কালকা থেকে টয় ট্রেনে বা বাই রোড গেলে আপনি দুপুরের মধ্যে শিমলা পৌছে যাবেন। হোটেলে চেক ইন করে দুপুরের খাওয়া সেরে ফেলুন। বিকালে চলে যান মল রোড, রিজ বা চার্চের কাছে। শিমলা শহরের মুল আকর্ষন এই রিজ বা মল রোড। পাশেই অবস্থিত শিমলা কালীবাড়ি। চাইলে ভেতরটা ঘুরে আসতে পারেন। এই পুরা মল রোডে এ্যাম্বুলেনস এবং ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ছাড়া সব রকম যান চলাচল নিষেধ, তাই নিশ্চিন্তে হেটে বেড়ান। চার্চের পাশে বসার জন্য সুন্দর বেঞ্চের ব্যবস্থা আছে। সন্ধ্যাটা উপভোগ করুন এখানে বসেই। দূরের পাহাড়ের গায়ের বাড়িগুলোর বাতি দেখলে মনে হয় তারা গুলো সব পাহাড়ের গায়ে নেমে এসেছে।

অনেক ব্র্যান্ডের দোকান পাবেন মল রোডে, ঘুরে দেখুন।রাত ৯ টার মধ্যেই দোকানপাট বন্ধ হওয়া শুরু হয়।এরপর হোটেলে ফিরে আসুন।

শিমলাতে যা যা দেখবেন:-

জাখু পাহাড় ও জাখু মন্দির: জাখু পাহাড় হল সিমলার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এবং পারিপার্শ্বিক ভূ-প্রকৃতির এক অত্যাশ্চর্য নিদারুণ দৃ্শ্য পরিদর্শনেরও প্রস্তাব দেয়। পাহাড়ের চূড়ায় স্থিত জাখু মন্দির প্রভু হনুমানের প্রতি উৎসর্গীকৃত। স্থানীয়দের অনুমান অনুযায়ী, সঞ্জীবনী ঔষধি বিদ্যমান এই পাহাড়টিকে তুলে নিয়ে আসার সময় প্রভু হনুমান এখানে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। এর ফলস্বরূপ, এই স্থানটি একইভাবে ভক্ত এবং ভ্রমণকারীদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।এত ঠান্ডার মধ্যে জাখু মন্দিরের চূড়ায় ওঠা খুব কঠিন।শ্বাস নিতে অনেক প্রবলেম হয়।কিছুক্ষন উপরে ওঠার পর গাড়ী পাওয়া যায়।গাড়ীতে গেলে ভালো হয়।

ভ্যাইসরিগেল লজ: অবসারভেটারী পাহাড়ের উপর অবস্থিত ভ্যাইসরিগেল লজ ১৮৯৮ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি ভারতের ভাইসরয়, লর্ড ডাফরিনের সরকারি বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হত। বর্তমানে এই স্থানটি হল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ আ্যডভান্স স্টাডিজ। লজটি শুধুমাত্র ভারতে ব্রিটিশ শাসনের মধ্যে একটি অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে না,সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের এক অত্যাশ্চর্য দৃ্শ্য পরিদর্শনেরও সুযোগ দেয়।

সামার হিল: সামার হিলের পথের চারপাশে ওক, সেডার, রডোডেনড্রন এবং আরোও অনেক গাছপালা বেড়ে উঠেছে। এখানে অবস্থিত ম্যানরভিল্যে ম্যানশন হল এই এলাকার সবচেয়ে বিখ্যাত ভবন, কারণ এটিই সেই জায়গা যেখানে মহাত্মা গান্ধী সিমলা ভ্রমণের সময় ছিলেন।

দ্যা রিজ্ :-এটি একটি উন্মুক্ত স্থান, যেটি সিমলার সবচেয়ে বেশি কার্যকলাপ কেন্দ্র রূপে পরিচিত। দ্য রিজ্ বা শৈলশ্রেণীতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক আছে এবং বেশ কিছু কার্যক্রম আয়োজনের পাশাপাশি এখান থেকে পার্শ্ববর্তী পর্বতগুলির এক সুন্দর দৃশ্য পরির্শনেরও প্রস্তাব দেয়। শহরের এই অংশটি সিমলার জনজীবনের জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটির নীচের জলাশয় শহরের একটি প্রধান অংশে জল সরবরাহের দায়ভারে রয়েছে।

মল্ রোড:- সিমলার বিপূল সংখ্যক ল্যান্ডমার্ক এখানে অবস্থিত হওয়ায়, মল রোড পর্যটকদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। এছাড়াও এখানে বেশ কিছু রেস্তোঁরা, ক্লাব, বার ও দোকান অবস্থিত হওয়ায় এটি সিমলার বাণিজ্যিক কেন্দ্রস্থল হিসাবেও পরিচিত।

ক্রাইস্ট চার্চ:- এটি ১৮৪৪ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি উত্তর ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম গির্জা। ক্রাইস্ট চার্চটি রিজ্-এ অবস্থিত এবং এটি তার এলিজাবেথীয় স্থাপত্য ও তার নকশায়িত কাঁচের জানলার জন্য পর্যটকদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। এছাড়াও গির্জাটিতে একটি পাইপ অর্গান রয়েছে, যেটি দেশের সবচেয়ে এক অন্যতম বৃহৎ হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি তাদের জন্যই আদর্শ যারা আধ্যাত্মিকতার সাথে সাথে ইতিহাসের এক নিদর্শনকে খুঁজে চলেছে।

সেন্ট মাইকেল ক্যাথিড্রাল:-সেন্ট মাইকেল চার্চ ১৮৫০ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটা সিমলার প্রথম ক্যাথলিক গির্জা। এটিতে পাঁচটি মার্বেলের বেদী আছে যেগুলি ১৮৫৫ সালে ইতালি থেকে আনা হয়েছিল। এছাড়াও গির্জাটিতে সুন্দর নকশায়িত কাঁচের জানলা রয়েছে।

গেইটি থিয়েটার :- এই থিয়েটার বা নাট্যমঞ্চটি, সিমলায় ব্রিটিশ বাসিন্দাদের বিনোদনের সুযোগ প্রদানের জন্য ১৮৮৭ সালে নির্মিত হয়েছিল। ভবনটির নব্য স্থাপত্য লালিত নেত্রের জন্য এক সুন্দর দৃশ্য। এখানে একটি প্রদর্শনী সভা ও অন্যান্য বহু সুযোগ-সুবিধা সহ একটি শৈল্পিক গ্যালারি রয়েছে। যেকোনও সূক্ষ শিল্পপ্রেমীদের জন্য এটি একটি অবশ্যই দর্শনীয় স্থান।

তত্তপানি: সিমলা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে তত্তপানি-তে অবস্থিত সালফিউরাস উষ্ণ প্রসবণ অনেকের মতে ভেষজ উপকারিতা হিসাবে বিবেচিত হয় এবং সেই কারণেই চিকিৎসক পর্যটকদের জন্য তত্তপানি একটি খুবই জনপ্রিয় স্থান। উষ্ণ প্রসবণের পাশাপাশি, শতদ্রু নদীর ঠান্ডা জল রিভার র্যাফটিং-এর সুযোগ প্রদান করে।এখন সরকারী ড্যামের কারনে তত্তপানি তার সৌন্দর্য হারিয়েছে।

কোটগড়: কোটগড়, সিমলা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে, প্রাচীন হিন্দুস্তান-তিব্বত সড়কের উপর অবস্থিত এবং এটি আপেল বাগানের জন্যও প্রসিদ্ধ। এটি এমন একটি স্থান যেখানে ১৯১৪ সালে হিমাচল প্রদেশের মধ্যে সর্বপ্রথম বাণিজ্যিক ফলের বাগান স্থাপিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে, কোটগড় প্রকৃতপক্ষে হিমাচল প্রদেশের এক অন্যতম প্রধান আপেল রপ্তানীকারক স্থান হয়ে ওঠে।

সিমলা জল-অববাহিকা অভয়ারণ্য: ১০.২৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই অভয়ারণ্যটি সরলবর্গীয় অরণ্য, খাড়াই ভূখণ্ড এবং ক্ষু্দ্র প্রবাহের গৃহস্থল। সিমলার ১২ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এই স্থানটি হল বাদামী ভালুক, কৃষ্ণকায় হরিণ, ভারতীয় লাল শেয়াল ও ডোরা-কাটা হায়নার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।

কুফরিঃ কুফরি হিমাচল প্রদেশের সিমলা জেলার একটি ছোট্ট হিল ষ্টেশন। সিমলা শহর থেকে ন্যাশনাল হাইওয়ে ২২ এর দিকে ১৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই শহরটি। ‘কুফরি’ শব্দটি স্থানীয় শব্দ ‘কুফ্র’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘লেক’। এখানে রয়েছে ‘হিমালায়ান ওয়াইল্ড লাইফ জু’। মজার ব্যাপার ১৮১৯ সালের আগে এই এলাকা মানুষের অজানা ছিল, মাত্র দুইশত বছর আগেও।একদল ইংরেজ পর্যটক বনের ভেতর দিয়ে ট্র্যাভেল করতে গিয়ে আবিস্কার করেন এই অপার সৌন্দর্যের জায়গাটি। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে হিমাচল ট্যুরিজম এর উদ্যোগে এখানে উইন্টার স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়।কুফরির চূড়ায় উঠতে হলে আপনাকে ঘোড়ায় করে উঠতে হবে।জনপ্রতি ঘোড়া ভাড়া ৫০০ রুপি।সরকার কর্তৃক ভাড়া নির্ধারিত।

ফাগুঃ ফাগু কুফরি থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে প্রায় ২৫০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। ফাগু শীতে স্কিয়িং আর উইন্টার স্পোর্টস এর জন্য দেশ-বিদেশ এর পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। ফাগুর চূড়া থেকে ‘গিরি উপত্যকা’র খুব সুন্দর ভিউ দেখতে পাওয়া যায়।

শিমলাতে থাকা:

মল রোড বা লাক্কার বাজার এর আশেপাশে ৮০০-১৫০০ রুপির মধ্যে হোটেল পেয়ে যাবেন।রুম ঠিক করার আগে রুম হিটার আর গিজার আছে কিনা যাচাই করে নিন।

শিমলাতে খাওয়াঃ

সকালের নাস্তা: চেস্টা করবেন যে হোটেলে থাকবেন সেই হোটেলের সাথে নাস্তার চুক্তি করতে। যদি তাতে কিছুটা বেশিও লাগে, রাজি হয়ে যাবেন। কারন সাত সকালে ঠান্ডায় বের হতে ইচ্ছা করবে না।আলু পরোটা,তাওয়া রুটি,ম্যাগী নুডলস আর চা দিয়েই নাস্তা সারতে হবে।চা খুব একটা ভালো লাগবে না। কারন ওরা চায়ে আদা আর এলাচ ব্যবহার করে।

দুপুর/রাতের খাবার- ভাত খেতে চাইলে থালি সিস্টেমে খাবেন।Veg/Non-Veg দুটোই পাবেন।
Veg থালি খেলেই ভালো হবে।কারন মাছ এবং মাংশ রান্না একদমই ভালো না।খেতে পারবেন না শুধু শুধু নষ্ট হবে।

এছাড়া আর যা যা খেতে পারেন:
– চিকেন মমো- স্থানীয় খাবার।
– ট্রাউট মাছ।
– পেস্ট্রি, কাপকেক- শিমলায় অবশ্যই পেস্ট্রি খাবেন।কাপকেক অসাধারন খেতে।
– পাপড়ি চাট।
– ভেলপুরি।
– গোলগাপ্পা বা পানিপুরি।
– ইডলি, দোসা।
– চানাচাট।
– আপেল, নাশপাতি- ফল খেতে ভুলবেন না। একদম ফ্রেশ, নো ফরমালিন।
– টাংরি কাবাব।

Post Copied From:Dip Biswas>Travelers of Bangladesh (ToB)

মাত্র ১৫ হাজার টাকায় ঘুরে আসুন( কল্কাতা,মানালী,দিল্লী)

১)কলকাতা(হাওরাব্রীজ,ইডেন গার্ডেন,বিদ্যাসাগর ব্রীজ,ভিক্টোরিয়া পার্ক)
২)দিল্লী(আগ্রা তাজমহল,ইন্ডিয়া গেট,লোটাস টেম্পল,আগ্রা ফোর্ট)
৩)মানালী(সোনাংভ্যালী,রোথাংপাস)

আমরা সফরসঙ্গী ছিলাম ২ জন।
১ম দিন: রাতের খাবার খেয়ে বাসে(হানিফ নন এসি 500 টাকা )রওনা দিলাম সকালে বেনাপোল বর্ডারে পৌছাই।নাস্তা করে (40টাকা) ইমিগ্রেসন এ যাই।
খরচ :500+ 40=540 টাকা

২য় দিন ঃ বর্ডার পার হলাম (৫০০ টাকা ) এরপর অটোতে করে বনগাঁ রেলস্টেশনে গেলাম(৩০রুপি)।বনগাঁ থেকে লোকাল ট্রেনে করে শিয়ালদাহ স্টেশনে এসে নামলাম (২০ রুপি)।সকাল ১১ টা বাজে তখন।আমরা দেরি না করে একটা ট্যাক্সি রিসার্ভ করে(১০০/২=৫০ রুপি)মারকস্ট্রীট আসলাম। সুহাগ কাউন্টার এর অপর পাশে একটা ট্যুরিস্ট এজেন্ট থেকে দিল্লীর রাজধানী ট্রেন এর টিকেট কাটলাম(এসি ৩ টায়ার 2300 টাকা)। আমাদের ট্রেন বিকাল ৫ টায় টাই আর আমরা হোটেল না নিয়ে ব্যাগগুলু ট্যুরিস্ট অফিস এ রেখে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম(100রুপি থালি)।খাবার খেয়ে একটা ট্যাক্সি ভাড়া করলাম ইডেন গার্ডেন আর হাওড়া ব্রিজ যাওয়ার জন্নে(150/2=75 রুপি)।আসার সময় ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে আসলাম(80/2=40 rs) এরপর ট্রেন এ উঠার জন্নে শিয়ালদাহ(70/2=35 rs)গেলাম।ট্রেন এ কমপ্লিমেন্টআরি খাবার ছিল।
খরচঃ2650*1.2=3180+500=3680tk

৩য় দিন ঃ সকাল ১০টায়নিউ দিল্লী ষ্টেসনে নামার পর রাস্তা পার হয়ে একটা এজেন্সির অফিসে যাই।এজেন্সি থেকে মানালী যাওয়া আসার টিকেট কেটে নেই(আসা যাওয়া 2200 রুপি)
আমরা 2 ঘনট্ার জন্য একটা হোটেল ভারা করি(300/2=150রুপি)জরুরী কাজ আর দোসল সেরে আমরা একটা অটো ভাড়া করি(250/2=125রুপি)ইন্ডিয়া গেট আর লোটাস টেম্পল নিয়ে যাওয়ার জন্যে।জায়গাগুলো ঘুরার পর মেট্রোরেলে করে দিল্লী(পাহারগন্জ) ফিরে আসি(30রুপি) আসতে আসতে 5 টা বেজে যায়।পাহারগন্জ থেকে মানালীর গাড়ি স্টপেজ জাওয়ার জন্যে অটো রিজার্ভ করলাম(60/2=30রুপি)5.30 এ পৌছাই স্টান্ড এ।দুপুরের খাবার(120রুপি)খেয়ে গাড়িতে উঠি।প্রায় 13 ঘন্টা আকা বাকা পাহার পেরিয়ে মানালী পৌছাই(রাতের ব্রেকে রাতের খাবার খেয়েছিলাম 200রুপি)
খরচ:2805*1.2=3366

৪ দিন:সকালে মানালী পৌছে হোটেল ঠিক করারা জন্য বাস স্টান্ড থেকে শহরে যাই(100/2=50রুপি)
1000রুপির হোটেল পেতে একটু বেগ পেতে হয়েছিল(1000/2=500)
সকালের নাস্তা(50রুপি)করে ট্যাক্সি শেয়ার করে রওনা দেই রুথাংপাস আর সুনাংভ্যালীর উদ্দেশ্যে(3300/3=1100রুপি)।ঘুড়ে আসতে আসতে বিকাল পার হয়ে যায়।খাবার খরচ 100রুপি।রাতে হোটেল থেকে বের হয়ে শহরটা ঘুড়ে দেখলাম পায়ে হেটে।রাতের খাবার 140রুপি
খরচ:1800*1.2=2160

৫ম দিন :ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে(50রুপি) বের হলাম মানালীর আশে পাশে ঘুরার জন্যে।একটা অটো নিয়ে আশেপাশে ঘুরার জন্য বের হলাম(250/2=125রুপি)মানালীতে জুসটা ভালো হয়।সাথে ছিল চেরি ফল এগুলো মিস করলাম না(150রুপি সব মিলে)পাহার থেকে নেমে আসা বরফ গলা পানির কি জেনো একটা নদী নাম মনে নেই।বের হওয়ার আগে চেক আউট করে ব্যাগ হোটেলের নিচে রেখে গিয়েছিলাম তাই কোন চিন্তা না করে দুপুরের খাবার বাহির থেকে খেয়ে(120রুপি)বিকালে হোটেল থেকে ব্যাগ নিয়ে সন্ধায় রওনা দিলাম দিল্লীর উদ্দেশ্যে।টিকেট আগেই কাটা ছিল।রাতের খাবার ব্রেক টাইমে খেয়ে (100রুপি)সকালে দিল্লী পৌছালাম।
মোট খরচ :654টাকা

৬ দিন :দিল্লী এসেই প্লান করলাম আগ্রা যাবো।তাই নাস্তা করে(45রুপি) দিল্লী থেকে আগ্রা জাওয়ার ট্রেন এর টিকিট(50রুপি) এবং আগ্রা থেকে কলকাতা(1400রুপি)যাওয়ার টিকিট কেটে নিলাম।12 টায় আগ্রা পৌছালাম।একটা অটো রিসার্ভ করলাম(300/2=150রিুপি)তাজমহল এবং আগ্রা ফোর্ট ঘুরার জন্যে।তাজমহল এন্ট্রি ফরেইনারদের 500 রুপি থাকলেও কম খরচে ভিতরে ঢোকার দালালের অভাব নেই।দালাল ধরে 150রুপি দিয়ে ভেতরে ঢুকলাম।আর রেড ফোর্ট এর প্রবেশ 50রুপি।খাবার খেয়ে(120রুপি) বিকাল 5 টায় কলকাতার উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠি।ট্রেনেই রাতের খাবার খেয়ে নেই(100রুপি)।
৭ম দিন ঃ সকাল10 টায় এসে পৌছালাম শিয়ালদাহ।ফিরে এলাম আবার মার্কস্ট্রিট(100/2=50রুপি)হোটেল ইরাম এ রুম নিলাম(1000/2=500রুপি এসি)নাস্তা করে(50রুপি) শপিং এ বের হলাম।
দুপুর+রাতের খাবার(200রুপি)

খরচ (৬+৭ম দিন) :2865*1.2=3438টাকা

৮ম দিন :সকালের নাস্তা(50রুপি)করে চলে আসলাম শিয়ালদাহ(80/2=40রুপি)।লোকাল ট্রেনে করে বনগাঁ(20রুপি)।অটোতে করে(30রুপি)বর্ডারে এসে বর্ডার পার হয়ে চলে আসলাম আমার দেশে।।।দপুরের খাবার খেয়ে(100টাকা)
সোহাগ(550টাকা নন এসি)বাসে করে চলে আসলাম ঢাকা।
খরচ:(140*1.20=168+100+550=818টাকা)

মোট খরচ :540+3680+3366+2160+654+3438+818=14656 tk
অলিখিত হিসাব+14656=15000tk

গোল্ডেন টেম্পল(অমৃতসর,পাঞ্জাব)

গোল্ডেন টেম্পল শিখ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রধান মন্দির। এর আসল নাম হল “শ্রী হরমন্দির সাহিব” – মানে হল ঈশ্বরের ঘর। এটাকে গুরুদয়ারও বলা হয়। শিখ ধর্মে বিশ্বাস করা হয় যে দুনিয়ার সবাই সমান। ধনী, গরিব, শিক্ষিত, অশিক্ষিত, ধর্ম-কর্ম করা না করা লোক, সবাই-ই সমান। এইটাই মূলনীতি। টেম্পলে একটা লংগরখানা আছে, যেখানে দিন রাত ২৪ ঘন্টা সবাইকে ফ্রী খাওয়ানো হয়। যে কেউ, যখন তখন গিয়ে সেখানে খেতে পারবে। “রাব নে বানা দে জোড়ি” মুভির একটা গানের শ্যুটিং এখানে হয়েছিল।হারমিন্দার সাহিব/ গোল্ডেন টেম্পেল এরিয়ার ভিতরেই রয়েছে আকাল তাকত এবং তারা তারান সাহিব।

* মন্দির ষোড়শ শতকে নির্মিত হয়েছিল (১৫৮৮ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ১৬০৪ খ্রীষ্টাব্দ)।

* এটি প্রতিদিন প্রায় ১,০০,০০০ জন ব্যক্তি দ্বারা পরিদর্শিত হয়।

* স্বর্ণ মন্দিরের চূড়াটি শুদ্ধ সোনা দ্বারা নির্মিত।

* মন্দিরটির যৌথ রন্ধনশালায় প্রায় ৭৫,০০০ জন উপাসক প্রতিদিন লঙ্গর (খাবার) গ্রহণ করে।

যেভাবে যাবেন:-
ঢাকা থেকে বাসে/ট্রেনে কলকাতা-কলকাতা থেকে রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেনে দিল্লি-দিল্লি থেকে ট্রেনে অমৃতসর-গোল্ডেন টেম্পল….

Post Copied From:Dip Biswas‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

১২,৬৬৭ হাজার রুপি রুট প্লান ( ঢাকা , কলকাতা , আগ্রা ,দিল্লি, মানালী, আম্রিতাসর )

,

ঘুরে আসুন ঢাকা – কলকাতা – আগ্রা – দিল্লি – মানালী – আম্রিতাসর ( পাঞ্জাব ) – কলকাতা – ঢাকা মাত্র ১৮৬ ডলার বা ১২,৬৬৭ হাজার রুপি ( রুট প্লান )
.
কি অবাক হচ্ছেন। ভাবছেন গাজা খুড়ি গল্প মারছি না হয় ফাউল একটা টুরের গল্প শুনাচ্ছি। না ! একটা পরিকল্পিত ভালো বা লাক্সরিয়াস টুরের গল্প বলছি। দালাল বা এজেন্সি বাদ দিয়ে নিজে নিজে ট্যুর করতে শিখুন 🙂 । এবার নিচে পড়তে থাকুন। এই টুর দিতে হলে আপনাকে মিনিমাম ৩ জন হতে হবে এবং সময় লাগবে ১৫ দিন।
.
◄◄▌▌ দিন এক : ঢাকা থেকে বেনাপোল শ্যামলী , গ্রীন লাইন, সোহাগ পরিবহন ৫০০ টাকা বা ৪২০ রুপি। বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে খরছ ৫০ রুপির মত। এবার সোজা চলে আসবেন বনগাঁ রেলওয়ে স্টেশনে খরছ সি এন জি ৩০ রুপি। এখান থেকে শিয়ালদাহ ট্রেনের ভাড়া ২০ রুপি। আপনি সোজা চলে এলেন শিয়ালদহ। প্রথম দিন কলকাতায় থাকবেন না। শিয়ালদহ থেকে রাতের ট্রেন ধরে চলে যাবেন আগ্রা ফোরট রেলওয়ে স্টেশন। ভাড়া নিবে স্লিপার ক্লাস ৫৬৫ রুপি মাত্র। যারা ভাবেন স্লিপার ক্লাস খারাপ তাদের জন্য এক বালটি সমবেদনা। শিয়ালদাহ রেলস্টেশনে এসে এর পিছনের গেটে চলে যাবেন। ওখানে কম দামে ভালো খাবার পাওয়া যায়। ১০০ রুপি দিয়ে ভাত আর মাছ পাবেন আর ৭ রুপির সোডা খাবেন। সোডাটা মিস করবেন না।। অস্থির জিনিস। আল ইন্ডিয়া এয়ারটেল সিম + ১ জিবি কিনবেন ৩০০ রুপি দিয়ে । ভোডা ফোনের কভারেজ কম । এয়ারটেল বেষ্ট
.
দিন ১ এর মোট খরছ ৪২০+৫০+৩০+২০+৫৬৫+৩০+১০০+৭ +৩০০ = ২০৩৩ রুপি
.
◄◄▌▌দিন দুই : ট্রেনে খাবেন আন্ডা বিরিয়ানি। প্রতি প্যাকেট ১০০ রুপি মাত্র, সাথে থাকবে ২ টা ডিম আর ফ্রাইড রাইস । ২ বেলা আন্ডা বিরিয়ানি আর সকালে নাস্তা মিলে খরছ ২৫০ রুপি। আপনার যদি চা খাবার ইচ্ছে থাকে তবে খেয়ে নিন। ১০ রুপি পার কাপ। স্লিপার ক্লাসে আপার টা নিবেন। রাতে শান্তির ঘুম আর দিনে ট্রেনের জানালা দিয়ে ভারতবর্ষ কে দেখুন। আপনি এসি কামড়ায় গেলে হয়তবা আরাম বেশী পাবেন বাট ভারতবর্ষ তো আর দেখতে পারবেন না ঠিকমত। যারা ট্রেন ভ্রমন করেছেন তারা জানেন ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে বাহিরের জগত দেখার মজাটা কিরকমের।
.
দিন ২ এর মোট খরছ: ২৫০+২০= ২৭০ রুপি
.
◄◄▌▌দিন তিন: সকাল বেলা চলে আসবেন আগ্রা ফোরট স্টাশনে। সকালে ট্রেনেই নাস্তা সেরে নিবেন। খরছ হবে ৫০ রুপি। আমরা ছিলাম স্টেশনের পাশেই অজয় ইন্টান্যাশনালে। ১ রাতের জন্য ভাড়া ৯৫০ রুপি বা পার পারসন হিসেবে ৩১৭ রুপি। এবার হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন। হোটেল থেকে বেড়িয়ে হাতের ডান দিকে একটু হাটুন। ২ মিনিট হাটলেই জামা মসজিদ পাবেন । মসজিদ এর সাথে সব মুসলিম খাবারের হোটেল পাবেন। এক প্লেট কলিজা ৪০ রুপি আর তন্দুররুটি ৫ রুপি। ৩ টে খেলেই পেট ভড়ে যাবে। খাওয়া শেষ করে মোবাইলের জিপিএস অন করুন এবং বিজালি ঘর ক্রসিং ট্রাক করুন । ৫ মিনিটের হাটাপথ বিজালি ঘর ক্রসিং মোড়ে চলে আসুন। এখান থেকে তাজমহল গামী সি এন জি পাবেন, পার পারসন ১০ রুপি। সোজা গিয়ে নামবেন তাজমহল এর Western Gate। এখানে গিয়ে টিকিট কাটুন। টিকিট কাটার সময় অবশ্যই বলবেন SAARC COUNTRY. টিকিটের মুল্য হয়ে যাবে ৫৩০ রুপি মাত্র। আগে তাজমহল দেখবেন। কেন দেখবেন সেটা পরে বলছি 🙂 । তাজমহল দেখার সময় সব সময় ফরেনার জোন ব্যাবহার করবেন। পুলিশ টিকিট দেখতে চাইলে দেখাবেন। ফরেনার টিকিটে অনেক সুবিধা। বাথরুম ফ্রি, সবার আগে যেতে পারবেন ইত্যাদি। ৩ থেকে ৪ ঘন্টা সময় নিয়ে তাজমহল দেখুন। এর পর একটা অটো নিয়ে চলে আসুন আগ্রা ইমতি উদ দৌউলা । দাম নিবে ৮০ রুপি, পার পারসন রুপি ২৭ রুপি । আসার পথে মিনা বাজার দেখুন। এর পর সোজা চলে জান ইমতি উদ দৌউলা দেখতে। ইমতি উদ দৌউলা এর আশে পাসেই ২ টি স্থাপনা আছে বাট আমার মতে দেখার দরকার নেই খুব একটা সুন্দর না। বিকেল বেলা বেবি তাজ বা ইমতি উদ দৌউলা থেকে যমুনা নদীর উপর সূর্যাস্ত দেখুন। অনেক সুন্দর। ইমতি উদ দৌউলা প্রবেশ ফি ১৫ রুপি ( অবশ্যই SAARC বলে নিবেন ) । এবার আপনি চাইলে হেটে হেটে আপনার হোটেলে আসতে পারেন আবার অটোতেও আসতে পারেন । আগ্রা ফোরট রেলওয়ে স্টেশনে আসতে জন প্রতি ১৫ রুপি পরবে । আমরা হেটে হেটে এসেছি, আগ্রা শহর ঘুরে ঘুরে দেখছি। হোটেলে ফিরার সময় পেট ভরে খেয়ে নিন। পার পারসন খুব বেশি হলে ১০০ রুপি পরবে।
.
দিন ৩ এর আপনার মোট খরছ: ৫০+৩১৭+৪০+১৫+১০+৫৩০+২৭+১৫+ ১৫+১০০ = ১১১৯ রুপি
.
◄◄▌▌দিন চার: সকাল সোজা চলে যান আসুন বিজালি ঘর ক্রসিং । এখান থেকে আগ্রা ক্যান্ট রেলওয়ে স্টেশন ভাড়া ১০ রুপি । আগ্রা ক্যান্ট রেলওয়ে ষ্টেশনের সামনে দাঁড়ালে আপনার হাতের ডান পাশে সেকেন্ড ক্লাস টিকিট ও লাগেজ রুম এবং বা পাশে SL , AC এর টিকিট কাউন্টার । বাম পাশে গিয়ে রাত ১ টার দিল্লী গামী ( হযরত নিজাম উদ্দিন রেলওয়ে স্টেশন , দিল্লী ) ট্রেন্রের টিকিট কাটুন, পার পারসন ১৭০ রুপি । এবার লাগেজ রুমে গিয়ে ২০ রুপি পার পারসন আপনাদের লাগেজ রাখুন (নিরাপদ) । এবার জেনারেল ক্লাসের টিকিট ঘরে গিয়ে ফতেহ পুর সিক্রি যাবার ট্রেনের টিকিট করুন , ভাড়া ১০ রুপি । ফতেহপুর সিক্রি ঢুকার এন্ট্রি ফি ৪০ রুপি ( অবশ্যই SAARC বলে নিবেন ) । ১২ টার মধ্যে আগ্রা ক্যান্টে রেলওয়ে স্টেশনে চলে আসুন , ভাড়া ১০ রুপি ট্রেনে । স্টেশনে নেমেই হালকা কিছু খেয়ে নিন , খরছ ৩০ রুপি । এখান থেকে আগ্রা ফোরট পার পারসন সি এন জি তে ১৫ রুপি । আগ্রা ফোরট এ গিয়েই পুলিশকে আপনার আগের দিনের তাজমহলের টিকিট টি দেখিয়ে বলবেন আমি SAARC এর আওতায় টিকিট কাটব । পার পারসন ৩৫ রুপি , না হলে কিন্তু ৫০০ এর মত দিতে হবে 🙂 । এবার আবার আগ্রা ক্যান্ট রেলওয়ে স্টেশনে আপনার পছন্দ মত সময়ে ফিরুন । এখানে ভারী কিছু খেয়ে নিন , খরছ ১০০ রুপি । এখানে কিছু বিষয় মাথায় রাখুন আগ্রা ক্যান্ট রেলওয়ে স্টেশনে আসার পথের স্টেশনের খুব কাছে রাস্তার দুপাশে হাতের ডান ও বামদিকে অনেক খাবারের দোকান পাবেন । বাম সাইডের গুলো কিন্তু আসলে বার আর ডান সাইডের গুলো ফ্যামেলি নিয়ে বসার জন্য 🙂 । আপনি যখন হযরত নিজাম উদ্দিন রেলওয়ে স্টেশন, দিল্লীতে পৌঁছবেন তখন আনুমানিক রাত ৫ টা বা ৪ টা বেজে যাবে । এবার সোজা এ সি ওয়েটিং রুমে গিয়ে শুয়ে পরুন 🙂
.
দিন 8 এর আপনার মোট খরছঃ১০+১৭০+২০+১০+৪০+১০+৩০+১৫+৩৫+১০০ = ৪৪০ রুপি
.
▌▌◄◄ দিন পাঁচঃ সকাল ৯ টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠে পরুন । এবার ফ্রেশ হয়ে মোবাইলের জিপিএস অন করে হুমায়ূনের কবর দেখতে বের হউন । যাবার পথে ছোট একটা বাস স্ট্যান্ড পরবে সেখান থেকে হালকা নাস্তা করে নিন, খরছ পার পারসন ৫০ রুপি । এবার সকালের দিল্লির রুপ দেখতে দেখতে হুমায়ূনের কবর দেখে ফেলুন , এন্টি ফি ৩০ রুপি । এবার একটা সি এন জি নিয়ে রেড ফোরট চলে আসুন ভাড়া পার পারসন ৩৫ রুপি । রেড ফোরট প্রবেশ ফি ৩৫ রুপি। রেড ফোরড দেখে ভারী কিছু খেয়ে নিন , ১০০ রুপিতেই হয়ে যাবে । রেড ফোরট দেখেই ের সামনে অনেক টুরিস্ট বাস পাবেন পার পারসন ১৩০ থেকে ১০০ রুপি নেবে পুরো দিল্লীর সব ঐতিহাসিক স্থাপনা গুলো ঘুরে দেখাবে । বিকেল ৫ টার মধ্যেই কাশ্মীর গেট বাস স্টেশনে চলে আসুন । ষ্টেশনের সাথেই মেট্রো রেল স্টেশন ওখানেই ম্যাক ডোনাল পাবেন । পার পারসন ২৫০ রুপি খরছ করলেই পেট ভরে যাবে । এবার শীতকাল হলে মানলী যাবার জন্য ভলভো এর গরমের দিন হলে সাধারন HRTC গাড়ির টিকিট কাটুন । ভল্ভো ১৪১২ রুপি এর সাধারন ৬৭৫ রুপি । সারাদিনের ক্লান্তিদুর করার জন্য ভল্ভোর টিকিট কাটুন । মানলী যাবার সময় চান্ডিগড় সহ অনেক কিছুই দেখতে থাকুন এর বোনাস হিসেবে রাতের দিল্লী তো থাকছেই । দিল্লী জামা মসজিদের কাছেই মুসলিম কম দামের খাবারের হোটেল আছে ।
.
দিন ৫ এর আপনার মোট খরছঃ ৫০+৩০+৩৫+৩৫ +১০০+১৩০+১৪১২+২৫০ = ২০৪২
.
◄◄▌▌ দিন ছয়ঃ মানলী ঢুকার সাথে সাথেই OYO , MAKE MY TRIPS এর অ্যাপ মোবাইলে নামিয়ে নিন । OYO ভালো , অনেক অফার দেয় । সবাই আপনাকে মল রোডে থাকার পরামর্শ দিবে আমি বলব না । আপনি যদি মানলীর সৌন্দর্য দেখতে চান তবে লজ হাট এরিয়া বা অল্ড মানলী বা সার্কিট হাউজ এরিয়ায় থাকবেন । আমরা লজ হাট এরিয়াজ মানলীর সব থেকে উঁচুতে সুন্দর একটা হোটেলে ছিলাম । OYO অ্যাপ এর মাধ্যেমে ৬৯% ডিস্কাউন্ট পাইছি ( অফ সিজেন ছিল বলে ) । মল রোড বা বাস স্ট্যান্ড থেকে লজ হাট যেতে জেকোন সি এন জি খুব বেশী পার পারসন ২৫ রুপি নেবে । আমাদের হোটেলে ৬৯% ডিস্কাউন্টে মাত্র ২ রাত ৩ দিন + ফ্রি ব্রেকফাস্ট সহ ২৫০০ নিয়ে ছিল । আমাদের ৩০০ রুপি বেশী নিয়েছে কারন আমাদের আর্লি চেক ইন ছিল , সে হিসেবে পার পারসন ৮৩৪ রুপি মাত্র  । ভুলেও মল রোডে খাবেন না । লজ হাট এরিয়ায় কিছু নেপালী থাবা পাবেন ১০০ রুপিতে মুরগীর মাংস সহ ভাত একজন খেয়ে শেষ করতে পারবেন না । লজ হাট এরিয়ার কাছেই হাডিম্বা দেবীর মন্দির । মন্দির দেখে সোজা পাহাড় দেখতে চলে যান । এলাকাটা ধুরে ঘুরে দেখুন । অনেক সুন্দর । সারাদিনের খাবার করছ মাত্র ২০০ রুপি । মল রোডে থাকলে ২০০০ এও কিছু করতে পারবেন কিনা আল্লাহ জানে । পাহড়ি এলাকা খুব তাড়াতাড়ি রাত নামে এর সব কিছু ফাকা হয়ে যায় । রাত ৭টার মধ্যে খেয়ে দেখে হোটেলে ফিরে আসুন ।
.
দিন ৬ এর আপনার মোট খরছঃ ২৫+ ৮৩৪+ ২০০ = ১০৫৯ রুপি
.
◄◄▌▌দিন সাতঃ সি এন জি ভাড়া করে শহরের সব গুলো জায়গা বা আপনার পছন্দের বাকি ভ্রমণ প্লেস গুলো দেখে নিন । সবার শেষে দিন জন্য সোলাং ভ্যালি রাখবেন । সারা দিনের সি এন জি ভাড়া ৮০০ রুপি এর বেশী হবেই না, পার পারসন ২৬৭ । ভুলেও ক্যাব নিবেন না । তা হলে ধরা । সারা দিনের খাওয়া খরছ ২০০ রুপি ।
.
দিন ৭ এর আপনার মোট খরছঃ ২৬৭+ ২০০ = ৪৬৭ রুপি
.
◄◄▌▌দিন আটঃ সকালে হোটেল থেকে চেক আউট করে বেড়িয়ে পড়ুন । মল রোডে গিয়ে সোলাং ভ্যালী যাবার জন্য সি এন জি ঠিক করুন । ভাড়া নিবে ৭০০ এর মত সাথে ৩ থেকে ৪ টা স্থানো দেখবেন । জন প্রতি হিসেবে সি এন জি ভাড়া পরবে ২৩৪ রুপি । ৩ টের মধ্যে মল রোডে চলে আসুন । ভারী কিছু খেয়ে নিন । পার পারসন ১০০ হলেই হবে । এবার আম্রিতাসর , পাঞ্জাব যাবার জন্য HRTC এর সাধারন গাড়ির টিকিট কাটুন, পার পারসন ৫৫০ রুপি । গাড়ি ছাড়বে ৩.৩০ মিনিটে । ভুলেও ৬.৩০ এর ভল্ভো গাড়ির টিকিট কাটবেন না । কেন কাটবেন না ? নিচের কথা গুলো পড়লেই বুঝবেন । গাড়ি ছাড়বে ৩.৩০ মিনিটে । গাড়ি যখন পাহাড়ের গা বেয়ে কুলু বাস স্ট্যান্ডের দিকে আসতে থাকবে আপনি দুরের পাহাড় গুলো দেখে অন্য এক জগতে হাড়িয়ে যাবেন । সন্ধ্যার সময় কুলু বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছে যাবেন । চারদিকে পাহাড় ঘেরা অসম্ভব সুন্দর কুলু বাস স্ট্যান্ড । এবার সারা রাত পাহাড়ের গায়ে মিট মিট করে জলতে থাকা ঘর বাড়ি দেখতে দেখতে চলে আসবেন আম্রিতাসর , পাঞ্জাব । পথে পার পারসন ১০০ রুপি দিয়ে কিছু খেয়ে নিন।
.
দিন ৮ এর আপনার মোট খরছঃ ২৩৪+১০০+৫৫০+১০০ = ৯৮৪ রুপি
.
◄◄▌▌দিন নয়ঃ বাসে ঘুমাতে ঘুমাতে সকালে আম্রিতাসর বাস স্ট্যান্ডে চলে আসবেন । এখান থেকে ১০ রুপি ভাড়া আম্রিতাসর রেলওয়ে স্টেশন । ওখানে গিয়ে এসি বা ফার্স্ট ক্লাস ওয়েটিং রুমে গিয়ে গোসল সেরে নিন । লাগেজ রুমে ২০ রুপির বিনিময়ে আপনার লাগেজ রাখুন । স্টেশনের সামনে ১৫০ রুপি দিয়ে ভরা পেটে মুরগী বিরিয়ানি খেয়ে নিন । এবার জন প্রতি ১৫ রুপি দিয়ে গোল্ডেন টেম্পেল্ট চলে যান । গোল্ডেন টেম্পেল্টর কাছেই জালিওয়ানওলা বাগ । সব কিছু দেখা শেষ হলে গোল্ডেন টেম্পেল্ট সংলগ্ন মার্কেটে শপিং করুন কারন এখানে অনেক কম দাম জিনিস পত্রের । অবশ্যই লাচ্ছি আর আইস্ক্রিম খাবেন , ২৫+৩০ রুপি । অনেক কম দাম । এবার ৬.৩০ এর মধ্যে ১৫ রুপি পার পারসন আম্রিতাসর রেলওয়ে স্টেশন চলে আসুন । ১ দিনের আম্রিতাসর দেখা শেষ, বর্ডারে যাবার দরকার নেই । অহেতুক এক দিন থাকতে হবে তাহলে । রাত ৬.৩০ মিনিটে আম্রিতাসর , পাঞ্জাব থেকে হাওড়া , কলকাতা ট্রেন । আবার মুরগী বিরিয়ানি বা অন্য কিছু খান , ১৫০ রুপিতেই হয়ে যাবে । আম্রিতাসর টু কলকাতা ট্রেন ভাড়া ৭৬৫ রুপি ।
.
দিন ৯ এর আপনার মোট খরছঃ ১৫+১০+২০+১৫০+ ১৫+১৫০+২৫+৩০ +৭৬৫ = ১১৮০রুপি
.
◄◄▌▌দিন দশ + এগারো + বারোঃ লক্ষ্য করুন আপনি যে পথে গেছেন সে পথে কিন্তু ফিরেন নি । ফিরেছেন অন্য পাশ দিয়ে । ফেরার পথে অনেক নতুন নতুন জায়গা পাবেন । তিন দিনে খাওয়া খরছ ৬০০ রুপির বেশী হবেই না । এই তিনদিন আপনি আম্রিতাসর থেকে কলকাতা আসার ট্রেনে থাকবেন । সো অনলি খাওয়া খরছ
.
দিন ১০ + ১১ +১২ মোট খরছঃ ৬০০ রুপি
.
◄◄▌▌দিন তেরঃ সকালে বা ১০ টার দিকেই হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে যাবেন । সেখান থেকে সাব ওয়েতে চলে আসুন । ১২৯/C বাসে করে ৬ রুপি ভাড়া দিয়ে পার্ক স্ট্রিট । আসার পথে হাওড়া ব্রিজ দেখুন । পার্ক স্ট্রিট থেকে ১৫ মিনিট হাটলেই মির্জা গালিব স্ট্রিট । ওখানে এসে ২০০০ এর মধ্যে ২ রাতের জন্য হোটেল পেয়ে যাবেন , সে হিসেবে পার পারসন ৬৬৭ রুপি । মির্জা গালীবেই হোটেল খাজা হাবিবের পাশেই ইসলামিক নামের একটা মুসলিম খাবারের হোটেল আছে , নাম মনে আসছে না । ওখানে ৬০ রুপি দিয়ে গরুর মাংশ আর ২ প্লেট ভাত পাবেন । পরিমানে অনেক বেশী দেয় ওরা আবার চাইলে এক্সট্রা ঝোলও দেয় । হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিকেলে জি পি এস ট্রাক করে ইডেন গার্ডেন , মিলেনিয়াম পার্ক , JAMES PRINSER GHAT , দ্বিতীয় হুগলী ব্রিজ দেখুন । সন্ধ্যাটা অবশ্যই JAMES PRINSER GHAT এর সামনের মাঠেও বসে কাটাবেন । রাতে ৬০ রুপি দিয়ে খেয়ে হোটেলে ফিরুন ।
.
দিন ১৩ মোট খরছঃ ৬+৬৬৭+৬০+৬০ = ৭৯৩ রুপি ।
.
◄◄▌▌ দিন চোদ্দঃ মোটা মুটি পার পারসন ৭০০ রুপি খরছ করলেই সায়েস সিটি , গড়ের মাঠ সহ কলকাতার সব কিছুই দেখতে পারবেন । কলকাতা সম্পর্কে বেশী কিছুই লিখছি না । বাংলা ভাষাভাষীদের জায়গা , সো কারো কোন সমস্যা হবে না । সারাদিনে তিন বেলা খেতে ১৮০ রুপি খরছ হবে । বিকেলে নিউমার্কেটে ফিরে কেনা কাটা করুন । রাতে কলকাতা শহর ঘুরে দেখুন ।
দিন ১৪ এর খরছঃ ৭০০+১৮০ = ৮৮০ রুপি
.
◄◄▌▌দিন পনেরোঃ সকালে পার পারসন ৪০রুপি দিয়ে ট্যাক্সি নিয়ে শিয়ালদাহ রেলওয়ে স্টেশনে চলে আসুন । এবার বনগাঁ যাবার ট্রেনের টিকিট ২০ রুপি দিয়ে কেটে ফেলুন । বনগাঁর মানুষ যশোরের ভাষায় কথা বলে । এবার ৩০ রুপি দিয়ে হরিদাশ পুর বর্ডার বা বেনাপোলে চলে আসুন । ৫০০ টাকা বা ৪২০ রুপি দিয়ে ঢাকা । খাওয়া খরছ সারা দিনে ২৫০ রুপি
.
দিন ১৫ এর খরছঃ ৮০+ ২০ + ৩০ + ৪২০+২৫০ = ৮০০ রুপি
.
১৫ দিনের ট্যুরে মোট খরছঃ ১২,৬৬৭ বা ১৮৬ ডলার ( পার ডলার ৬৮.৩০ রুপি রেট হিসেব)
.
.
◄◄▌▌১৫ দিনে আপনি অতিক্রম করবেন ভারতের ওয়েস্ট বেঙ্গল , উত্তর প্রদেশ ( EAST ) , উত্তর প্রদেশ ( WEST ) , দিল্লী , হিমাচল প্রদেশ আর পাঞ্জাব প্রদেশ ।
.
আর যাত্রা পথে ট্রেন থেকে দিনের আলোতে দেখতে পারবেন ঝারখান্ড , বানারাস , কানপুর ( উত্তর প্রদেশ) , হারিয়ানা , চান্ডিগর , এলাহবাদ , লুডাইয়ানা , কুলু , জালান্দার , দুর্গাপুর , বারাসাত , ২৪ পরগণা , আসানসোল , লাখনো আর অতিক্রম করবেন মোটা মুটি ৫০১০ কিঃমিঃ 😛
.
◄◄▌▌কিছু অভিজ্ঞতাঃ আমার একটা নেশা আছে , সেটা হলো ভ্রমনের নেশা । আমি বদ্ধ এসি কামরায় বা বিমানে উরে গিয়ে কিছু দেখে আসতে ভালো বাসি না । আমার মতে ভ্রমণ হবে নিরাপদে অনেক কিছু জানার । ভারত ভ্রমণ যদি ট্রেনে না করেন তবে ভ্রমনের ৫০% অপূর্ণ থেকে যাবে । ট্রেনের দরজার পাশে দাড়িয়ে দুরের পাহাড় , ভারতবর্ষের গ্রাম দেখা , নতুন নতুন জায়গার উপর দিয়ে যখন ট্রেন যাবে তখন উপভোগ করা এসব কিছুর মাঝেই আছে আনন্দ । আমি আমার ভ্রমনে পুরোটাই মোবাইলের জি পি এস নির্ভর ছিলাম । আমরা হেটে বেড়িয়েছি ভারতের শহরের অলিতে গলিতে ।

ভারতের রেলওয়ে স্টেশন গুলোতে গোসল , বাথ্রুমের ভালো ব্যাবস্থা আছে । শুধুমাত্র নিশ্চিত টিকিটের PNR নাম্বার দিয়ে আপনি এগুলোতে আক্সেস নিতে পারবেন । স্টেশনে আছে গুগলের হাই স্পিড ফ্রি WiFi ( মোবাইল নাম্বার না হলে কাজ করবে না ) । ট্রেনে মোবাইল চার্জ দেওয়ার ব্যাবস্থা আছে । কিছু অ্যাপ এর ঠিকানা দিচ্ছি এগুলো মোবাইলে অবশ্যই রাখবেন । অনেক গুলো বাংলাদেশের আইপি দিয়ে আক্সেস পাবেন না ইন্ডিয়া গিয়েই মোবাইলে ইন্সটল দিয়ে নিবেন । এগুলো দিয়ে হোটেল , ট্রেনের স্থান, কোন স্টেশনে থেকে কোন স্টেশনে ট্রেন যাবে তার তথ্য পাবেন ।

১. OYO (Best)
২. Make My Trips
৩. Goibibo
৪. Ixigo Train
৫. Uber / Ola Cabs
৬. enquiry.indianrail.gov.in এর অ্যাপ
৭. Google Map
.
দালাল এড়িয়ে চলবেন । পাসপোর্ট কাউকে দিবেন না । নিজের পাসপোর্ট + ভিসা + কয়েক কপি ছবি নিজের কাছে বাংলদেশে থেকে নিয়ে যাবেন । ওখানে ফটোকপি বলে না যেরকক্স বলে । ডলার ভাঙাবেন কলকাতায় । বেনাপোলে বা হরিদাশপুরে ৫০০ টাকার মত ভাঙিয়ে নিবেন ।
.
ইন্ডিয়াতে SAARC COUNTRY ( বাংলাদেশ + পাকিস্তান + শ্রীলংকা + নেপাল + ভুটান + আফগানিস্তান + মালদ্বীপ ) এর ফরেনারদের জন্য অন্য ফরেনারদের তুলুনায় কম টিকিটের দাম রাখা হয় । অনেক ক্ষেত্রে ঈন্ডিয়ান্দের টিকিটের মুল্যে SAARC COUNTRY এর লোকেরা টিকিট কাটতে পারে । আপনাকে শুধু মেনশন করতে হবে আপনি SAARC COUNTRYএর লোক ।
.
◄◄▌▌ কিছু চিকন পিনের কথা ( ভালো না লাগলে এড়িয়ে যান )ঃ কলকাতা বাদে যেখানেই যাবেন হোটেল বুকিং বা ভ্রমনের স্থান ছাড়া সকল ক্ষেত্রে বলবেন আপনি কালকাতা থেকে এসেছেন । হিন্দি বলতে পারলে ভালো , অনেক ঝামেলা থেকে বেচে যাবেন । হিন্দি ভালো পারলে কলকাতায় হিন্দিতে কথা বলবেন এতে আপনি সঠিক দামে জিনিস কিনতে পারবেন । বর্ডার পার হবার সময় ডলারের সাথে শুধু মাত্র ২০ টাকার ৮ + ১০ টাকার ৪ টি নোট রাখবেন । কোথাও চাইলে ২০ টাকা দিবেন খুব বেশী হলে ৩০ টাকা দিবেন । অবশ্যই মোবাইলে ইন্টারনেট আর জি পি এস অন রাখবেন । কারন আপনার জি পি এস আপনাকে কখনোই ভুল তথ্য দিবে না 🙂 । আর একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা ” মানুষ শক্তের ভক্ত নরমের যম ” কথাটা ইন্ডিয়ায় গেলে মাথায় রাখবেন 🙂
.
.
NOTE: আমার এই ভ্রমনে ট্যুর প্লানে শুধুমাত্র ভারত ভ্রমনের কথাই বলা আছে । ভিসা ফি , ট্র্যাভেল ট্যাক্স বা অন্যান্য কিছু নিয়ে লিখি নাই যেটার জন্য আপনাদের খুব বেশী হলে ১২০০ টাকা খরছ হবে । আমি যে রুট প্লান দিয়েছি সেটা ভারতে গিয়ে অনেক ধাক্কা খেয়ে খুঁজে বের করা 🙂 আশা করছি আপনাদের হেল্প হবে । তবে আপনারা অবশ্যই কিছু টাকা এক্সট্রা ব্যাকআপ নিয়ে যাবেন , কারন সবার ভ্রমনের অভিজ্ঞতাটা সবার থেকে আলাদা । অনেক বড় লিখা সময় নিয়ে পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 🙂

Post Copied From:রেজওয়ানুল কবীর‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

ভূস্বর্গ ভ্রমণ

#AH
#Kashmir
#Ladakh

সর্বজনবিদিত ভূস্বর্গ কাশ্মীরের সাথে প্রথম পরিচয় ৮০’র দশকের হিন্দি সিনেমার মাধ্যমে। সেই ভূস্বর্গ স্বচক্ষে দেখার ইচ্ছাটা পূরণ হলো আগস্ট মাসের দুই সপ্তাহব্যাপী জম্মু ও কাশ্মীর ট্যুরে। আক্ষরিক অর্থেই এটা ছিল জম্মু ও কাশ্মীর ট্যুর। জায়গাগুলো ছিল শ্রীনগর, সোনামার্গ, গুলমার্গ, পেহেলগাম, এবং একটি তুলনামূলক অচেনা জায়গা দুধপাথরি। দুই সপ্তাহের দুই পর্যায়ে বিভক্ত এই ভ্রমণে প্রথম সপ্তাহে ছিলাম এই যায়গাগুলোতে আর দ্বিতীয় সপ্তাহে ছিলাম হালের সেনসেশন লাদাখে।

খরচ বাঁচাতে ঢাকা থেকে বাস-এ করে কলকাতা। এবং প্রায় দুইদিন সময় বাঁচানোর জন্য ট্রেন-এর বদলে প্লেন-এ যাওয়া সমীচীন মনে করলাম। ট্রেন-এ কাশ্মীর যাবার উপায় দুইটা। এক: কলকাতা থেকে দিল্লী তারপর দিল্লী থেকে জম্মু, জম্মু থেকে শ্রীনগর!! দুইদিনের ব্যাপার। অথবা কলকাতা থেকে জম্মু এক্সপ্রেস-এ জম্মু (দুই রাত ট্রেন-এ) তারপর জম্মু থেকে শ্রীনগর বাসে। এখানেও দুই দিনের ব্যাপার। তার চাইতে প্লেন-এ যাওয়া অনেক ভালো খরচ, কষ্ট, আর সময় বিবেচনায়। মাসখানেক আগে টিকিট কাটলে অনেক সস্তায় পাওয়া যাবে। মজার ব্যাপার হলো রাজধানী এক্সপ্রেস-এর ৩ টিয়ার সিটের ভাড়া প্লেন ভাড়ার চেয়ে সামান্য কম! কলকাতা পৌঁছানোর দিন হোটেলে রাতটুকু পার করে পরদিন সকালে ইন্ডিগো এয়ার-এ করে দুই ঘন্টার দিল্লী-তে যাত্রাবিরতি শেষে বিকালে শ্রীনগর পৌছালাম। হাউসবোট আগেই ঠিক করা ছিল বুলেভার্ড রোডে ৭ নম্বর ঘাটে New Bul Bul Group of Houseboat। হোটেল তো সব জায়গাতেই আছে, কিন্তু ডাল লেকের উপর হাউসবোট হলো শ্রীনগরের ঐতিহ্য। ভাড়া-ও হোটেলের চাইতে খুব একটা যে বেশি তাও না. সকাল আর রাতের খাবার সহ ১৫০০ রুপি সস্তায় বলা যায়। ঘাট থেকে হাউসবোট যাবার একমাত্র উপায় শিকারা যেটা হাউসবোটের নিজস্ব ব্যবস্থায় আশা-যাওয়া করা যায়। এয়ারপোর্ট অথবা ট্রেন স্টেশন থেকে ডাল লেক ঘাট যেতে প্রিপেইড ট্যাক্সিতে ভাড়া পড়বে ৭২০ রুপি। যদি হাউসবোটে আগে থেকে বলে রাখেন ওরাই পিকআপের ব্যবস্থা করবে আরো কম খরচে। সব দিক বিবেচনায় হাউসবোট আগে থেকে বুক করে যাওয়া ভালো। সেদিন আর কোথাও ঘুরে দেখার মতো সময় ছিলোনা, রাতে বুলেভার্ড রোডে ডাল লেক ঘেঁষে হাঁটাহাঁটি করে বেড়ানো ছাড়া। হাউসবোটের ম্যানেজার-এর সাথে কথা বলে ৬ দিনের জন্য গাড়ি ভাড়া করে নিলাম প্রতিদিন ২২০০ রুপিতে। দরদাম করলে আরো হয়তো কমানো যেতে পারে. সাধারণত ১৮০০-২২০০ রুপি হয় প্রতিদিনের জন্য। সোনামার্গ, গুলমার্গ আর দুধপাথরি দেখতে রাতে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই, শ্রীনগরে থেকেই ডে-ট্রিপে এটা করা ভালো. শুধু পেহেলগামে রাতে থাকার দরকার আছে কারণ একদিনে পেহেলগাম দেখা সম্ভব না। পেহেলগাম কাশ্মীরের সবথেকে সুন্দর জায়গা। যাই হোক, দ্বিতীয় দিন সকালে সোনামার্গ গেলাম. সোনামার্গের একমাত্র আকর্ষণ খাজিয়াস গ্লেসিয়ার দেখার জন্য মাথাপিছু ১০০০ রুপিতে পনি ভাড়া করলাম. গাড়িতেও যাওয়া যায়। শীত্কাল না হওয়া সত্ত্বেও বরফ ছিল. স্লেজিং-ও করতে পারেন চাইলে. সোনামার্গের আসল সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে চাইলে যেতে হবে শীতকালে, অক্টোবর থেকে মার্চ এর মধ্যে. সোনামার্গ দেখে বিকালে ফিরে আসলাম শ্রীনগরে।

পরদিন সকালে বাক্স-পেট্রা সমেত রওনা হলাম পেহেলগামের উদ্যেশ্যে। হোটেল ঠিক করেছিলাম রাফটিং পয়েন্টে Castle Rock Resort। অসাধারণ সুন্দর জায়গা। রুমের জানালা আর বারান্দা দিয়ে সামনে তাকালে বিখ্যাত Lidder Lakeআর পিছনে পর্বতশ্রেণী। অসাধারণ দৃশ্য। হোটেলে ফ্রেশ হয়ে গেলাম “মিনি সুইজারল্যান্ড” খ্যাত “Baisaran” দেখতে। এখানেও পনি নিতে হয়। মিউনিসিপ্যালিটির রেট বলা থাকলেও দরদাম করতে হয়। আমরা ৪০০০ রুপিতে চারটা পনি নিয়েছিলাম। রাস্তা খুবই বিপদসংকুল, কোথাও খাড়া উপরে উঠতে হয় আর কোথাও নিচে নামতে হয়। কষ্ট এবং ভয় দুই জয় করে যখন আপনি Baisaran পৌঁছাবেন তখন সমস্ত কষ্ট দূর হয়ে যাবে চোখজুড়ানো সুন্দর জায়গা দেখে। পুরাই অস্থির। বিকালে হোটেলে ফিরে টিভি দেখা ছাড়া আর কিছু করার থাকেনা কারণ পেহেলগামের আবহাওয়া কাশ্মীরের অন্যান্য জায়গার থেকে আলাদা। গ্রীস্মকালেও ওখানে রাতে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়ে।
পরদিন পেহেলগামের বাকি আকর্ষণ যেমন আরু ভ্যালি ও বেতাব ভ্যালি দেখার জন্য ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি ভাড়া করতে হলো। এখানে বলে রাখি শ্রীনগরের বাইরে যেখানেই যান না কেন গাড়িতে শুধু ট্যুরিস্ট ট্যাক্সি স্ট্যান্ড পর্যন্ত যেতে দেয়। লোকাল ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতে যাবার জন্য ওখানকার মিউনিসিপ্যালিটির ট্যাক্সি ভাড়া করতে হয়। ভাড়া নির্দিষ্ট করা আছে গাড়ির মান অনুসারে। আমরা আরু ভ্যালি, বেতাব ভ্যালি আর চন্দনওয়ারি এই তিনটা স্পট দেখতে ১৬০০ রুপিতে মারুতি ইকো নিয়েছিলাম। নিয়ম হলো প্রতিটি স্পটে ১ ঘন্টা করে বরাদ্দ। এক ঘন্টার বেশি হলে প্রতি ঘন্টার জন্য ৩০০ রুপি করে অতিরিক্ত দেবার নিয়ম। যদিও এক ঘন্টা যথেষ্ট দেখার জন্য। আরু ভ্যালি খুবই সুন্দর একটি জায়গা। বেতাব ভ্যালি বিখ্যাত সানি দেওল – অমৃতা সিং অভিনীত “Betaab” সিনেমার পর থেকে। চন্দনওয়ারি থেকে বেতাব ভ্যালি যাবার পথে উপর থেকে বেতাব ভ্যালি’র দৃশ্য ভোলার না। চন্দনওয়ারি আহামরি কিছু না, ওখানে না গেলেও চলে। এই স্পটগুলো দেখা শেষে শ্রীনগর ফিরতে রাত হয়ে গেলো। এসে উঠলাম অন্য একটি হাউসবোটে Houseboat Ambassador। এটাও ৭ নং ঘাটেই, শিকারাতে যেতে হয়। পরের দুই দিন গুলমার্গ আর দুধপাথরি ঘুরলাম. গুলমার্গের প্রধান আকর্ষণ দুই ফেজের গন্ডোলা। প্রথম ফেজ Gulmarg to Kungdoori ৭০০ রুপি আর দ্বিতীয় ফেজ Kungdoori to Apparwath ৯০০ রুপি করে। Chair Lift ও আছে Kungdoori থেকে কিন্তু শুধু শীতকালের জন্য। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৪৪০৩ ফুট উপরে Apparwath Peak এ যাবার অভিজ্ঞতা ছিল দারুন। ওখানে নিশ্বাস নিতে সামান্য সমস্যা হয় উচ্চতার কারণে। ওখানেও স্লেজিং-এর ব্যবস্থা আছে. চাইলে স্কিইং-ও করতে পারেন। গুলমার্গ ট্যাক্সি স্ট্যান্ড-এ নামতেই পনিওয়ালারা ঘিরে ধরবে এটা-ওটা দেখাবে এই বলে পনি নেবার জন্য। কোনো দরকার নেই পনি ভাড়া করার। বরঞ্চ হেঁটে দেখা অনেক ভালো আর আনন্দের। বিকালের মধ্যেই শ্রীনগর ফিরে আসলাম। পরদিন গেলাম দুধপাথরীতে। আমার মতে পেহেলগামের পরে কাশ্মীরের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হলো দুধপাথরি। সবুজ meadow ছাড়াও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর স্পট আছে ওখানে।
ডাল লেকে থাকার সময়ই ঠিক করেছিলাম নিগীন লেক-ই বা কেন বাদ থাকবে! ডাল লেকের তুলনায় নিগীন লেক অনেক পরিষ্কার আর হাউসবোট থেকে একইসাথে লেক ও পাহাড়ের ভিউ পাবার জন্য সেরা জায়গা হলো নিগীন লেক। সেকারণেই শেষ রাতটা কাটানোর জন্য বেছে নিয়েছিলাম New Buckingham Palace Houseboat। মাত্র দুই রুমের এই হাউসবোটটি লেকের সাথে parallel ভাবে থাকার কারণে রুমের জানালা দিয়েই বিস্তৃত লেক আর পিছনে পর্বতশ্রেণীর চমৎকার দৃশ্য দেখা যায়।

শেষ দিনটি শ্রীনগর দেখার জন্য রেখেছিলাম। প্রথমে গেলাম হজরতবাল মসজিদে। মহানবী সা: এর চুল গচ্ছিত আছে ওখানে যা বছরের নির্দিষ্ট দিনেই দর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এরপর গেলাম ৩ টি মুঘল বাগানের একটি শালিমার বাগে। অনেক সিনেমার শুটিং হয়েছে ওখানে। অনেক গুলা ঝর্ণা আছে। এর পর নিশাত বাগ আর চশ্মেশাহী। চশ্মেশাহীতে একটা Natural Spring আছে যেটার উৎস আজ আবিষ্কার করা যায়নি। কথিত যাচ্ছে এটার সুস্বাদু পানি নাকি চোখের জন্য খুব ভালো. সবার শেষে শঙ্করাচার্য মন্দির যেখান থেকে পুরো শ্রীনগর দেখা যায়। ৩৫০ টি সিঁড়ি পার হওয়াটা কষ্টকর কিছু নয়. আফসোস একটাই মোবাইল ফোন, ক্যামেরা জমা রেখে যেতে হয়।
রসনা বিলাসের প্রসঙ্গে বলা যায় কাশ্মীর হলো আপেলের জায়গা। গুল্মাস আপেলের স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো। লোকাল ফুডের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো Kashimiri Wazwan। বড় থালায় ভাতের চারপাশে হরেক রকম কাবাব আইটেম সাজানো থাকে। সাথে আলাদা বাটিতে থাকে Rishta (মিট বলের মতো দেখতে), Gustaba (এটাও মিট বলের মতো দেখতে), Rogan Josh (খাসির মাংসের সাথে লাল ঝোল)।চার জনের জন্য বললেও অনায়াসে ছয় জন খাওয়া যায়। Wazwan খাবার জন্য সেরা জায়গা হলো Residency Road, Ground Floor এর Mughol Dorbar. এছাড়াও রেসিডেন্সি রোডের কাশ্মীরি কাবাব মিস করার মতো না। মাটন শিক কাবাব সাথে রুমালি রুটির মতো পাতলা রুটি স্বাদ অতুলনীয়।

এবার আসা যাক ভ্রমণের দ্বিতীয় পর্যায়ে। এবারের যাত্রা পর্বতমালা সমৃদ্ধ লাদাখ। লাদাখ যাবার রাস্তা তিনটা. এক: প্লেন সেটা যে কোনো জায়গা থেকে যাওয়া যায়, দুই:মানালি থেকে রোথাং পাস্ হয়ে লেহ, তিন: শ্রীনগর থেকে কার্গিল হয়ে লেহ। শ্রীনগর থেকে লেহ এক দিনেও যাওয়া যায় কিন্তু সেটা না করে ভালো। কারণ রাস্তা ক্রমশ সর্পিলভাবে উপরের দিকে উঠবে যার জন্য acclimatization প্রয়োজন। কার্গিল শ্রীনগর আর লেহর মাঝামাঝি জায়গায় হওয়াতে সকালে শ্রীনগর ছেড়ে বিকালের মধ্যেই কার্গিল পৌঁছানো যায়। আর পরদিন সকালে কার্গিল থেকে রওনা হয়ে দুপুরের মধ্যেই লেহ পৌঁছে যাওয়া যায়। এতে শরীরের ক্লান্তি সহনীয় পর্যায়ে থাকে। লেহ পৌঁছানোর পর সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেয়া অত্যন্ত জরুরি। আর জরুরি প্রচুর পানি পান করা। অনেক উচ্চতায় স্বাস-প্রস্বাসের সমস্যা দূর করতে এটা দরকার। পরদিন লেহ সাইটসিইং করা ভালো কারণ ওই দিনের আগে permit জোগাড় করতে পারবেন না। লেহ’র আশেপাশে ঘোরার জন্য কোনো permit-এর প্রয়োজনে হয়না কিন্তু লেহ’র প্রধান ট্যুরিস্ট স্পট নুব্রা ভ্যালি (তুরতুক, হুন্ডার), 3 idiots খ্যাত প্যাংগং লেক যাবার জন্য permit লাগে। এটা শুধু যে বাংলাদেশিদের জন্য লাগে তা না ভারতীয়দেরও internal permit নিতে হয়। লেহ পৌঁছনোর দিনই হোটেলে পাসপোর্ট আর কোথায় কোথায় যেতে চান বললে ওরা আপনাকে পরদিনই permit এর ব্যবস্থা করে দেবে জনপ্রতি ৭০০ রুপি খরচে। এটা নিজে করা যায়না লোকাল ট্যুর অপারেটর-এর মাধ্যমে করতে হয়। লেহ-তে দেখার মতো আছে তিনটা মনাস্ট্রি (Shey Palace, Hemis Monastry, Thiksey Palace), 3 idiots খ্যাত Druk White Lotus School, Shanti Stupa যেখান থেকে পুরো লেহ দেখা যায়।৫০০ খাড়া সিঁড়ি চড়তে না চাইলে আপনি গাড়ি ভাড়া করে উপরে যেতে পারেন! Magnetic Field শ্রীনগর থেকে লেহ আসার পথেই পড়বে। Gurdwara Patthar Sahib ও চাইলে দেখতে পারেন।নুব্রা ভ্যালি (তুরতুক, হুন্ডার) ঘুরতে ৩ দিনের জন্য গাড়ি রিসার্ভ করতে হবে। ৪/৬ জন হলে পুরো গাড়ি রিসার্ভ করা ভালো আর কম লোক হলে হোটেলে বললে ওরাই শেয়ার ট্যাক্সির ব্যবস্থা করে দিতে পারবে। লেহতে থাকা আর ঘুরার ব্যবস্থার জন্য সেরা জায়গা হলো Rainbow Guest House। Permit পাবার পরদিন আমরা ২ রাত ৩ দিনের জন্য ১২০০০ রুপিতে ট্যাক্সি রিসার্ভ করে হুন্ডার ছাড়িয়ে আরো অনেক দূরে তুরতুক চলে গেলাম। লেহ থেকে নুব্রা ভ্যালি যাবার পথে পড়বে খারদুং লা পাস, যেটা লাদাখ দাবি করে World’s Highest Motorable Road (18,380 Ft)। খারদুং লা পাস-এ যখন গাড়ি থেকে নামবেন তখন অনুভব করবেন যে নিঃশ্বাস নিতে একটু কষ্ট হচ্ছে। ১৮৩৪০ ফুট উচ্চতায় যেটা খুব স্বাভাবিক। দুপুরের মধ্যেই তুরতুক পৌঁছে গেলাম। তুরতুক হলো লাদাখের শেষ গ্রাম যার ২০০ মিটার-এর মধ্যে পাকিস্তান বর্ডার। তুরতুক এককালে পাকিস্তানের বালতিস্তানের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সে কারণেই লাদাখের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মাবলম্বী বৌদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও তুরতুকে ১০০% মুসলিম ধর্মাবলম্বী। তুরতুক খুব সুন্দর পরিচ্ছন্ন পাহাড়ঘেরা একটি গ্রাম। ৫০০ বছরের পুরোনো একটা মসজিদ আছে। এছাড়া মিউসিয়াম যেখানে তুরতুক-এর প্রথম শাসক থেকে পর্যায়ক্রমে সব লিপিবদ্ধ করা আছে। ইন্টারেষ্টিং ব্যাপার হলো যিনি এই পারিবারিক মিউসিয়াম দেখা শোনা করেন তিনি ওই বংশের শেষ বংশধর! এক রাত ওখানে কাটিয়ে পরদিন ফেরত আসলাম হুন্ডার। হুন্ডার খ্যাত হলো Sand Dunes আর Bactrian Double Humped Camel-এর জন্য। হুন্ডার গেলে অবশ্যই camel ride মিস করবেন না। যদিও অনেকক্ষন অপেক্ষা করতে হয় সিরিয়াল পাবার জন্য। আমরা আধ ঘন্টার রাইড নিয়েছিলাম ৩৫০ রুপিতে। হুন্ডারে থাকার জন্য সর্বোত্তম জায়গা হলো Tent। এই অভিজ্ঞতা হুন্ডার আর প্যাংগং লেক ছাড়া অন্য কোথাও পাওয়া যাবেনা। যদিও হোটেল বা গেস্ট হাউস এর চাইতে অনেক সস্তায় পাওয়া যাবে তবুও Tent-এ থাকার অভিজ্ঞতার তুলনায় সেটা খুব নগন্য। আমরা ছিলাম Nubra Boutique Camp-এ। অফ-সিসন হাতে ১৫০০ রুপি সকাল আর রাতের খাবার সহ পেয়ে গেছিলাম যেটার ভাড়া ২৫০০-২৮০০ রুপি। পরদিন লেহ চলে আসলাম হুন্ডার থেকে। ফেরার পথে Diskit Monastery দেখে আসলাম। অনেক বড় monastery এটা।

লেহ ফিরে রাত কাটিয়ে পরদিন চলে গেলাম প্যাংগং লেক দেখতে। প্যাংগং লেক-এ রাতে না থাকলেও চলবে। দিনে দিনেই দেখে আসতে পারবেন। Tso Moriri লেক আরেকটা জায়গা যেটা নাকি প্যাংগং লেক-এর চাইতেও সুন্দর। সময় স্বল্পতার জন্য আমরা ওখানে যেতে পারিনি। প্যাংগং লেক Spangmik গ্রামে অবস্থিত। লেহ থেকে spangmik যাবার পথে Chang La Pass পার হতে হয় যেটা ভারতের দাবি অনুসারে পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম যান চলাচলের রাস্তা (১৭,৬৮৮ ফিট)। প্রায় পাঁচ ঘন্টা লাগে লেহ থেকে প্যাংগং পৌঁছাতে। রাস্তা অত্যন্ত খারাপ আর আঁকাবাঁকা হওয়ায় যেতে যেতেই ক্লান্ত হয়ে পড়তে হয়। তবুও দূর থেকে প্যাংগং-এর হালকা থেকে গাঢ় নীলাভ পানির সমান্তরাল রেখা পথের ক্লান্তি দূর করে দেয়। মনে চলে আসে “All izz well”

Post Copied From:Anirban Haq‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

সোনামার্গ, শ্রীনগর, কাশ্মীর

কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, খরচ কেমন বা ওখানকার মানুষগুলো কতটা আন্তরিক? অথবা কলকাতা পুলিশের অহেতুক হয়রানি বা কাস্টমসের ঝামেলাগুলো, বা ভারতের সবচেয়ে বড় পর্যটক দেশ হওয়ার পরেও দিল্লি’র বেশ কিছু হোটেলগুলোয় “বাংলাদেশী নিষিদ্ধ” বলার কারন বা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, দিল্লি রেডফোর্ট, আগ্রা ফোর্ট, তাজমহল, পেহেলগামে সিজনের প্রথম তুষারপাত, বা গুলমার্গের অসহ্য ঠান্ডা… এসব কেমন, কেন, এসব নিয়ে অনেকেই আগে অনেকবার বলেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। উনাদের কারণে আমাদের ট্যুরটা হয়তো সহজই হয়েছে তবে যে কথা উনারা কেউই বলেননি, যার জন্য আমার (অন্য দুই বন্ধুর তুলনামূলক কম) বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে আজ তা বলবো।
আমার মত যারা আছেন তাদের জন্য এই পোস্ট।
আমার মত মানে, যাদের আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে নাক দিয়ে পানি পড়ে তারা। আপনারা দয়া করে ভারত ভ্রমনে গেলে, যদি দৌড়ের উপর থাকেন দয়া করে বেশী করে পকেট টিস্যু নিয়ে যাবেন।
জোক করছি না।
আমাদের দেশে পান দোকানীর কাছেও যা পাওয়া যায় তা আপনি ওদের কিছু কিছু সুপার শপেও পাবেন না! ফলাফল, হয়তো আপনাকে প্রতিদিন দামী রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে আমার মত টিস্যু (নাকি টিস্যু সদৃশ কাগজ?!) পকেটে করে (চুরি বলবেন না, আমরা খাবারের দামের সাথে টিপস ও দিতাম!) নিয়ে আসা লাগবে আর নাহয় ছোটবেলার মত নাক পরিষ্কার করে প্যান্টে হাত মোছা লাগবে! আর যদি তাজমহলের মত জায়গায় ঢুকে কোন উপায় না দেখে বারবার নাক টানতে থাকেন… সে কথা আর না ই বলি।
তাই আমার মত যারা আছেন, ভারত যেতে দয়াকরে পাসপোর্টের পরে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ জিনিস তথা পকেট টিস্যু নিতে ভুলবেন না। 🙂

আর ঝামেলাগুলো? এমন হতেই পারে, তারাও প্রায় আমাদেরই মত, অতি সভ্য কোন জাতি না।ধন্যবাদ।

Post Copied From:Tanbir Roman‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

 

 

 

তাজের প্রেমে

তাজমহল। একটি প্রেমের নাম। একটি প্রেমের গল্পের নাম। প্রেম আর ভালোবাসায় ভোর করেই তাজমহলের গড়ে ওঠা। পুরনো ইতিহাস বাদ দেই, সেটা সবই কম বেশী জানে। এই গল্পের শুধু অনন্য স্থাপনা তাজমহলের আকর্ষণের গল্প থাকুক।

তাজমহল এমনই একটি স্থাপনা যে এটি যারা দেখেননি তারাও এটাকে ভালোবাসেন বা প্রেমে পরেন আর যারা ওকে দেখেছে তারা আরও বেশী করে ভালোবেসে ফেলে বা আরও গভীরভাবে তাজমহলের প্রেমে পরে যায়। বাধ্যই হয় বলা যায়। তাজমহল, তার অবস্থান, ইতিহাস, ঐতিহ্য, আভিজাত্য, কারুকাজ, সম্মোহনী ক্ষমতা সবকিছু নিয়েই সবাইকে আকুল আবেগ আর অন্যরকম একটা বন্ধনে বেঁধে ফেলে।

একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, ছোট-বড়-মধ্য বয়সী বা বৃদ্ধ প্রত্যেকটা সাধারণ মানুষ যারা একটু আধটু বেড়াতে ভা ভ্রমণ করতে ভালোবাসে। তাদের সব সময়ের একটা অন্যতম ভ্রমণ আকর্ষণ হল তাজমহল। এখনো বাড়ির বড়দের বা বৃদ্ধদের দেশের বাইরে কোথায় যেতে চান জানতে চাইলে এক কথায় মনের একটা অপূর্ণ বাসনা ব্যাক্ত করে, একবার তাজমহল দেখতে চাই! আহ কি ভীষণ আকুলতা একবার তাজমহল দেখতে চাওয়া।

আপনি যদি শুধু তাজমহলের নাম শুনে আর ছবি দেখেই ওর প্রেমে পরে গিয়ে থাকেন আর ওকে নিবিড়ভাবে ভালোবেসে থাকেন তবে জীবনে একবার অন্তত আপনার তাজমহল ঘুরে আসা উচিৎ, কষ্ট করে হলেও। দেখবেন তাজকে কাছ থেকে দেখার, ছোঁয়ার, নিজের মত করে আলতো স্পর্শ করার অনুভূতি সারাজীবনের একটা অনন্য অর্জন হয়ে থাকবে আপনার সবটুকু জুড়ে।

আপনি যখন কলকাতা থেকে ট্রেনে বা প্লেনে করে আগ্রায় নামবেন, তখন থেকেই তাজমহলের একটা অন্য রকম অনুভূতি আপনাকে নাড়া দেবে। এরপর হোটেলে একটু বিশ্রাম নিয়ে আপনি যখন তাজ দেখতে বের হবেন নানা রকম রোমাঞ্চকর অনুভূতি খেলা করবে আপনার ভিতরে। অনেক দিনের স্বপ্ন দেখা, না দেখে ভালোবেসে ফেলা কারো সাথে অনেক অপেক্ষার পরে, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে প্রথম দেখা হবার অনুভুতির মত।

টিকেট কেটে লাইনে দাঁড়ানোর পরে, হালকা তল্লাশির পরে যখন তাজমহলের ফটকে ধুকবেন, হয়তো ঢুঁকেই হতাশ হয়ে পরবেন তাজমহল দেখতে না পেয়ে। কারন সামনে পরবে বিশাল সবুজ ঘাসের লন আর লাল পুরনো আমলের স্থাপনা। ভাববেন ভুল যায়গায় এসে পরেছেন বোধয়। কিন্তু না, একটু সামনে এগিয়ে দুই পাশের সবুজ লনের মাঝখানে দাড়াতেই দেখতে পাবেন বিশাল লোহার গেট। সেই মুঘল আমলের। যে গেটেই ভিতর দিয়েই আপনি প্রথম দর্শন পাবেন প্রিয় তাজের। দূরে, ধবধবে সাদা, শ্বেত পাথরে সেজে দাড়িয়ে আছে যমুনার পারে।

আর অপেক্ষা করা আপনার পক্ষে সম্ভব হবেনা, তাই ঢুকে পড়ুন ঝটপট। বিশাল গেটের ভিতর দিয়ে ওপাশে গিয়েই আপনি দেখা পাবেন এতো দিনের অপেক্ষার, আপনার সামনে শ্বেত পাথরে সেজে, হেসে দাড়িয়ে আছে প্রিয় তাজমহল। সামনে বিশাল বিশাল ফুলের বাগান, সবুজের মখমলের মত মিহি ঘাসের গালিচা, নানা রকম ছোট-বড়-মাঝারি পাতা বাহারের সাঁজে সেজে আছে পুরো তাজমহল খোলা আঙিনা। যত ধীরে পারুন হাঁটুন। ধীরে ধীরে চারপাশের ফুল বাগান, ফোয়ারা, বসার বেদী, ছবি তোলার বেঞ্চি, পাথরের শান বাঁধানো সিঁড়ি, বর্ণীল সবকিছুর খুব ধীরে ধীরে উপভোগ করতে করতে এগোতে থাকুন তাজমহলের মূল আঙিনায়। আপানর একদম সামনেই দাড়িয়ে আছে আপানর অনেক দিনের স্বপ্ন দেখা তাজমহল!

উঠে পড়ুন তাজমহলের বেদীতে। আগে চারপাশটা ঘুরে ঘুরে দেখুন সময় নিয়ে। চলে যান তাজমহলের পিছনে যমুনার পাড়ে দাঁড়ানো তাজমহলের দেয়ালের কাছে। যেখানে ধীর লয়ে বয়ে চলেছে শুষ্ক যৌবনা যমুনা। যমুনার ওপারে ভঙ্গুর কালো তাজমহলের অসম্পূর্ণ দেয়ালের ধ্বংসাবশেষ আপনাকে বুঝিয়ে দেবে শাহজাহানের শেষ জীবনের দিনের কথা! কেমন কেটেছিল তার দূরের আগ্রা ফোরটে বন্দী দশায়।

তাজমহলের দুইপাশে রয়েছে আরও দুটি অনন্য স্থাপনা, একটা অতিথিশালা আর একটা মসজিদ। সময় থাকলে ঘুরে দেখতে পারেন ওগুলোও। এরপর পুরো তাজমহলের বাইরের অংশ ভালো করে দেখা হলে যেতে পারেন তাজমহলের ভিতরে আছে মমতাজের সমাধি আর শাহজাহানের আবেগের, ভালোবাসার আর অমর প্রেমের ছড়াছড়ি। প্রতিটি পাথরে, পাথরের খাঁজে, ভাঁজে, নানা আসবাব আর ঐতিহ্যের সকল কিছুতে। মমতাজের প্রতি শাহজাহানের অনিঃশেষিত ভালোবাসার পরশ।

এরপর, তাজমহল ঘুরে দেখা শেষ হলে, যখন ফেরার পথ ধরবেন দেখবেন কেমন একটা আকর্ষণের আপনি ঠিক হেটে যেতে পারছেননা বা আপনার মন ফিরে যেতে চাইছেনা। একটা অদ্ভুত বাঁধনে, মায়ায়, টানে আর আবেগে বাঁধা পরছেনে যেন। ফিরে যেতে যেতেই মন খারাপ হয়ে যাবে। এমন ভালোলাগার আর ভালোবাসার যায়গা ছেঁড়ে চলে যাবার ব্যাথায়। তবুও যান, একবার ঘুরে আসুন, স্পর্শ করে দেখুন প্রিয় তাজমহলকে তার বিশালতা, ভালোবাসা আর অসীম আবেগকে।

ফিরে এসে যখন সৃতি চারনা করবেন বা নিজেদের ছবি দেখেবন, দেখবেন আবারো প্রেমে পরেছেন!

তাজের প্রেমে!

কিভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে আগ্রার তাজমহল যাওয়া আজকাল আর তেমন কোন কঠিন কাজ নয়। বেশ কয়েকভাবেই যাওয়া যায় আগ্রাতে। ঢাকা থেকে কলকাতা হয়ে প্লেনে আগ্রা বা ঢাকা থেকে দিল্লী প্লেনে, দিল্লী থেকে ট্রেন, বাস বা ট্যাক্সিতে আগ্রা।

অথবা ঢাকা থেকে কলকাতা বাস বা ট্রেনে গিয়ে কলকাতা থেকে আগ্রা প্লেনে। সবচেয়ে কম খরচে যাবার উপায় হচ্ছে ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে কলকাতা, কলকাতা থেকে ট্রেনে আগ্রা। থাকার হোটেল পাবেন ১০০০ টাকা থেকে যত দামী চান। আর খাবার খরচ ভারতের অন্যান্য শহরের মতই স্বাভাবিক ও সাধ্যের মধ্যে।

Post Copied From:Sajol Zahid‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

রাজস্থানের মরুশহর জয়সলমীর

সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত উপন্যাস সোনার কেল্লা পড়ার পর থেকেই ইচ্ছা ছিল যে রাজস্থানের মরুশহর জয়সলমীর দেখব। নিজেকে কল্পনা করতাম ফেলুদার জায়গায়। এর আগে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও বিভিন্ন কারনে রাজস্থানের এই বিখ্যাত মরুশহরে যেতে পারিনি। তো এবার ঠিক করে ফেললাম যে ঈদের বন্ধে মরুভূমি দেখতে জয়সলমীর যাব। ঢাকা থেকে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে এই মরুশহরে কিভাবে পৌঁছলাম সে এক বিশাল কাহিনী, পরে একসময় এটি নিয়ে লিখব। এইটুকু শুধু বলব যে রাজস্থানের এই মায়াবী মরুশহরের সৌন্দর্য যে কাউকে বিমোহিত করবে। একদিকে যেমন ধু ধু মরুভূমি, অন্যদিকে রয়েছে বিখ্যাত সোনার কেল্লা, সেলিম সিং এর হাভেলি, নাথমলজী হাভেলি, গাদিসার লেক সহ আরও কিছু চমৎকার স্থান। জয়সলমীর এ থাকার জন্য বেশ কিছু চমৎকার হাভেলি হোটেল রয়েছে, এই হোটেলগুলো প্রায় সবই দূর্গের আদলে তৈরি করা। কিছু হোটেল আবার দূর্গের ভিতরেই তৈরি করা হয়েছে, ফলে পদে পদে অনুভব করা যায় ইতিহাস আর ঐতিহ্যকে। আমি ছিলাম হোটেল রুপমহলে। ট্রিপ অ্যাডভাইসার থেকে এই হোটেল সম্পর্কে জেনেছিলাম। জয়সলমীর-এ প্রতিটি হোটেলের রয়েছে নিজস্ব গাড়ি, মরুভূমিতে কন্ডাক্টেড ট্যুর এর ব্যবস্থা হোটেলগুলোই করে দেয়। এছাড়া কেউ মরুভূমিতে ক্যাম্প এ থাকতে চাইলে তার বন্দোবস্তও হোটেলগুলোই করে দেয়। সব মিলিয়ে বলা যায় মরুভূমিতে চমৎকার কয়েকটি দিন কাটাতে এখানে যাওয়া যেতেই পারে।
যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে কলকাতা বাসে বা বিমানে যাবেন। কলকাতা থেকে সরাসরি জয়সলমীর যাচ্ছে হাওড়া-জয়সলমীর এক্সপ্রেস। তবে এই ট্রেনটি প্রতিদিন চলেনা, তাই হাওড়া-যোধপুর এক্সপ্রেস এ যোধপুর যেয়ে সেখান থেকে বাসে বা ট্রেনে জয়সলমীর যাওয়া যায়। যোধপুর থেকে জয়সলমীর প্রায় ২৮৫ কিমি ও সময় লাগে ৫-৬ ঘন্টা। এছাড়া কলকাতা থেকে ট্রেনে বা বিমানে দিল্লি যেয়ে, দিল্লি-জয়সলমীর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ধরে জয়সলমীর যাওয়া যাবে

Post Copied From:Mahboob Mirza Ananta‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

এ যেন এক স্বপ্নের জায়গা

লাদাখ যেন এক স্বপ্নের জায়গা! এখানকার প্রকৃতি,পাহাড়, হাইওয়ে আর আকাশ আপনাকে কাছে টানবে সেই সাথে লাদাখের বিভিন্ন মনেস্ট্রিগুলোর নির্মাণশৈলী আপনাকে অবাক হতে বাধ্য করাবে! অসাধারণ কিছু লেক, নুব্রাভ্যালীর বালুর রাজ্যে বিলুপ্তপ্রায় দুই কুঁজওয়ালা উটের পিঠে চড়ার আনন্দ আর ভারতের শেষ প্রান্তের পাকিস্তান বর্ডারের কাছে টুরটুক গ্রামের সৌন্দর্য আপনাকে পৌঁছে দেবে ভাল লাগার এক ভিন্ন জগতে!
যাওয়ার সবচেয়ে উপযোগী সময় জুন-অক্টোবর। আর নভেম্বর থেকে বরফ পড়া শুরু হয়ে যাওয়াতে গাড়ির রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় তাই তখন লাদাখ যেতে হলে air ব্যবহার করে যাওয়া যাবে।
ঢাকা-কলকাতা-জম্মু-শ্রীনগর-কার্গিল-লেহ
বাই air এ গেলে কলকাতা থেকে লেহ।

ছবি: ডিস্কিট মনেস্ট্রি,ডিস্কিট,লেহ,লাদাখ।
(লাদাখের সবচেয়ে বড় মনেস্ট্রি।)