খৈয়াছড়া জল প্রপাত

#আবস্থান
চট্টগ্রাম,মীরসরাই

#যা দেখবেন
৯ টি জল প্রপাত রয়েছে
ধাপে ধাপে উঠলে সব কয়টি জল প্রপাত দেখতে পাবেন
জল প্রপাত গুলো সত্যি
অসাধারণ

#যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গামী সকালের যে কোন একটি ট্রেনে উঠে পড়ুন আর ফেনী নেমে জান
সোজা(cng করে) চলে যান মহীপাল ভাড়া নিবে ১৫-২০ টা জন প্রতি
সেখান থেকে চট্টগ্রাম গামী কোন একটি লোকাল বাস এ উঠে পড়ুন আর কন্ট্রাক্টটর কে বলবেন খৈয়াচড়া যাব
ভাড়া একটু দামাদামি করে নিবে খুব বেশি হলে ৪০ টাকা নিবে ( জন প্রতি)
খৈয়াছড়া নেমে সেখান থেকে মূল পয়েন্ট এ যেতে
cng নিতে হবে (১-৫) যত জনই জান না কেন ভাড়া নিবে ১০০ টাকা
ঝিরিপথের কাছে আপনাকে নামিয়ে দেওয়া হবে
সেখান এ খাবার হোটেল এ খেতে হলে আগে অর্ডার করে যেতে হয় তাই অবশ্যই ঝিরিপথ এ যাবার আগে খাবার এর অর্ডার করে যাবেন
এবং যাওয়ার সময় প্রয়জনীয় কিছু ব্যাতিত কিছুই সাথে নিবেন না তা হলে কষ্টটা আপনারই বেশি হবে

যেই হোটেল এ খারার অর্ডার করবেন সেখানেই ব্যাগ এবং বাড়তি জিনিসপত্র নিশ্চিন্তে রেখে যেতে পারেন

জল প্রপাত এ যাওয়ার জন্য ৮-১০ মিনিট হাটতে হবে তারপই একের পর এক পাহাড় এ চড়া।
ধাপে ধাপে ৯ টি জল প্রপাত দেখতে পাবেন
জল প্রপাত থেকে ফিরে নিজেদের অর্ডার করা খাবার খেয়ে
ফিরার জন্য তৈরি হয়ে যান

#যেভাবে ফিরবেন
যেভাবে গিয়েছিলেন ঠিক সেভাবেই
ফেণী রেলস্টেশন এ চলে আসুন
ট্রেন এর সুবিধা মত সময় জানতে
www.bdrailway.gov.bd
ওয়েব সাইট থেকে সার্চ করে জেনে নিতে পারেন

যাওয়ার সময় অবশ্যই এংলেট ভাড়া করে নিয়ে নিবেন এতে করে আপনার আনেক সুবিধা হবে পাথুরে রাস্তায় ভালো সাপোর্ট পাবেন
আর লাঠি নেওয়া টা আমার কাছে খুব বেশি দরকার বলে মনে হয় নি

খুব হালকা পোশাক পরার চেষ্টা করবেন

#সতর্কতা
১.মোবাইল এবং মানিব্যাগ সব সময় নিজের সাথে রখবেন
২.যাওয়ার সময় পানি নিয়ে যাবেন ১ লিটার এর মত
হালকা খাবার নিয়ে যাবেন(সম্ভব হলে গ্লুকোজ নিয়ে যাবেন)
৩.মন বল না রাখলে সব গুলো জল প্রপাত দেখতে পাবেন না। তাই মনবল রাখবেন।
৪.খুব বেশি সাহস দেখাবেন না তা হলে বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে।
৫.কয়েক টা ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ নিয়ে যাবেন।
৬.সবাই এক সাথে থাকার চেষ্টা করবেন
৭.ময়লা গুলো না ফেলে পকেট এ রেখে দিন
ঝিরিপথ এর বাহিরে আসলে সঠিক জায়গায় ফেলুন
৮.অবশই এংলেট ভাড়া করে নিয়ে নিবেন এতে আপনার ই সুবিধা
৯.পাহাড়ে চড়ার মন মানুসিকতা নিয়ে যাবেন
১০.স্থানীয়দের সাথে ভালো ব্যাবহার করবেন

( কোন ট্যুর সম্পর্কে এটা আমার প্রথম লিখা যাই
দয়া করে কোন ভূল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আর কিছু জানার থাকলে কমেন্ট এ জানাবেন উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব)

Post Copied from:Farhan Shuvo‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

সীতাকুন্ড এবং মীরসরাই রেন্জ

চট্রগ্রাম পাহাড় ঘেরা একটি শহর। ট্রেকিং বা আউটডোর স্পোর্টের জন্য পারফেক্ট একটা শহর। পাহাড়ে যেতে চান ? শহরের ভেতরের ছোট ছোট পাহাড়/টিলা অথবা ছোট্ট একটা বাস যাত্রায় সীতাকুন্ডই যথেষ্ট তেমনি সমুদ্র সৈকত , চা বাগান , নদী সবই যেন হাতের মুঠোই। না এ শহরের ছেলে বলে বলছিনা। আসলেই সত্য …

পাহাড়ে ট্রেকিং অথবা ক্যাম্পিং এর জন্য চট্রগ্রাম থেকে কাছের মাত্র ২৮ কি:মি দুরের সীতাকুন্ডের শিতল পুর থেকে ৬৫-৭০ কি:মি দুরের বারইয়ার হাট পর্যন্ত প্রচুর পাহাড় আছে , আছে প্রচুর ছোট বড় ঝর্ণা আর ট্রেইল। আর শহরের যে কোন প্রান্ত থেকে একদিনে ফটিকছড়ির চা বাগান সমুহ , রাঙ্গুনিয়ার চা বাগান আর ছোট ছোট পাহাড়ের ট্রেইল , রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে একদিনে ঘুরে আসা যায় সহজেই। নিচে
বিস্তারিত লিখা হলো।

[১] সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড় :- চট্রগ্রামে ট্রেকিং বা পাহাড় বাওয়ার কথা আসলেই আমি ১০০% সিওর মানুষের মুখে আপনি প্রথম সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথের কথা শুনবেন। মূল শহর থেকে মাত্র ৩৫ কি:মি দুরে সীতাকুন্ড মূল বাজার। একটু পুর্বে তাকালেই দেখবেন উকি দিচ্ছে বিশাল কি যেন একটা। সবার উপরে মাথা উচু করে। হা ওটাই চন্দ্রনাথ পাহাড়। ওটাই আমাদের খুব প্রিয় ছোট ট্রেকিং ডেস্টিনেশন। উঠতে নামতে বেশি হলে লাগবে ২ ঘন্টা আর পথে পথে পাবেন প্রচুর মন্দির , গীতা ভবন , ছোট ছোট ঝর্ণা , পাহাড়ের রুপ , পাহাড়ি ট্রেইল আরো কত কি !

কিভাবে যাবেন :-  চট্রগ্রাম থেকে প্রতি ২-৩ মিনিট পরপরই প্রচুর বাস যাই উত্তর দিকে (ঢাকা-চট্রগ্রাম হাইওয়ে)। যেকোন একটায় উঠে যাবেন। ৩০-৪৫ মিনিট পরেই সীতাকুন্ড নেমে যাবেন , কলেজ রোডের মোড থেকে পুর্ব দিকে তাকালেই শহুরে দালান,মার্কেটের চিপা চাপা দিয়ে দেখবেন চন্দ্রনাথ পাহাড়। ওটাকে টার্গেট করে হাটতে থাকুন চলে যাবেন। পথে গীতা ভবন , কালী মন্দরি , রথ যাত্রার গাড়ী বহর এসব দেখতে ভুলবেননা। আর হা উঠার সময় আমি বলবো “বীরুপক্ম” হয়ে চন্দ্রনাথ যেতে সিডির রাস্তা দিয়ে নয়। বাম পাশের পাহাড়ী আর এক-আধটু সিডির রাস্তা দিয়ে বীরুপক্ষ দিয়ে উঠে চন্দ্রনাথ যেতে পারেন। দুরে সমুদ্র আর কাছে পাহাড় , পুরোনো মন্দির। নামার সময় সিড়ি দিয়ে নামুন আর অনুমতি পেলে চন্দ্রনাথ থেকে ৫-৬ কি: মি: দুরের ইকো পার্কে চলে যেতে পারেন।

টিপস :- নিজের খাবার নিজে বহন করুন। বাজার থেকেই শুকনো খাবার আর প্রচুর , প্রচুর পরিমাণে পানি নিয়ে যান।

[২] ইকো পার্ক :- চট্রগ্রামের মূল শহর থেকে ৩৩ কি: মি দুরে ইকোপার্ক। প্রচুর গাছপালা আর বণ্য প্রাণীতে ভরপুর। সাথে পিকনিক পার্টি আর মানুষজন ফ্রি। তবে একটু হাটাহাটি করলেই আপনি কোলাহলের বাহিরে চলে আসবেন। তখন শুধু গাছ পালা আর পাখির ডাক। ইকোপার্ক থেকে হেটে হেটে চন্দ্রনাথও যাওয়া যায়। ইকো পার্কের মূল ফটকের একটু পরেই বিস্তারিত ভূ-ম্যাপ পেয়ে যাবেন কোথায় কি? কি?।ইকো পার্কের ভেতর দিয়ে ৩-৪টা ঝর্ণায় যাওয়া যায়। নিচে সুপ্তধারা ও সহস্রধারায় ইকো পার্কের ভেতর দিয়ে যাওয়ার বর্ণনা দেওয়া হলো:-

(ক) সুপ্তধারা ঝর্ণা :- ইকো পার্কের রাস্তা দিয়ে হাটলেই আপনি রাস্তার পাশে সুপ্তধারার সাইনবোর্ড দেখতে পাবেন নিচে নামলেই ঝিরি। আপ স্ট্রিম বা পানির প্রবাহের উল্টোদিকে হাটলেই ঝর্ণা পেয়ে যাবেন। ঝর্ণার উপরে আরো অনেক ঝর্ণা বা কেসকেড পাবেন। রাস্তা নিয়ে কোন সন্দেহ লাগলে অপেক্ষা করুণ কেউ না কেউ আসবেই প্রচুর স্থানিয় লোকজন কাঠ সংগ্রহ আর ক্ষেতের কাজে হাটে এখানে।

(খ) সহস্রধারা ঝর্ণা :- পথ বলতে গেলে একই। সেই ইকোপার্কের ভেতরের রাস্তা। আর লোকজনকে প্রশ্ন করতে পারেন। সহজ হাইকিং। আর সুপ্তধারার আপ স্ট্রিম দিয়ে ট্রেকিং করে সহস্রধারায় যাওয়া যায়।

টিপস :- ইকো পার্কে যাওয়ার আগে বেশি করে পানি আর শুকনো খাবার নিয়ে নিন। টিকিট কাউন্টার থেকে মাত্র ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কাটতে হবে।

[৩] সহস্রধারা ঝর্ণা (ছোট দারগোহাট) :- এ ঝর্ণাটার নামও সহস্রধারা তাই আমি কোথাও এর নাম বললে বা লিখলে একটা ২ লাগিয়ে দেই। সহস্রধারা ২ বলি। ঝর্ণাটা যেমন বিশাল তেমনি অপরুপ। পানি অনেক উপর থেকে পরে তাই প্রেশারও বেশি আর ব্যাথা পাওয়া যায়। পাথুরে পাহাড় ঘেরা একটা ঝর্ণা। খুবই সুন্দর আর আমার প্রিয় একটা ঝর্ণা। আর ঝর্ণা ছাড়াও এ ট্রেইলে ঝর্ণার উপরে আরো অনেক ঝর্ণা পাবেন,উপরের ঝিরিটাও অসাধারণ। ঝর্ণার পাশের পাহাড়টা টপকালেই আবার ঝিরি। আর এ ঝর্ণার আরেকটা আকর্ষণ হলো  লেক। সরকারি ভাবে ড্যাম বানিয়ে খরার সময়ের জন্য পানি ধরে রাখা হয় যার ফলে পানি জমে লেকের সৃষ্টি হয়। লেক ছাড়াও আছে পুরানো মন্দির , বুদবুদ কুন্ড আর গ্যাস বের হয়ে আগুন ধরার দৃশ্য।

Coordinate:  22°40’25.53″N  91°39’27.15″E

যেভাবে যাবেন :- সীতাকুন্ড মূল বাজার থেকে মাত্র ১০ টাকা লোকাল সিএজি ভাড়া ছোট দারোগা হাট বাজার পর্যন্ত। এছাড়া চট্রগ্রামের একে খান বা অলংকার থেকে ছোট দারোগা হাট বাজার পর্যন্ত বাস ভাড়া ৩০ টাকা। এর পর শুধু পুর্ব দিকে  হাটলেই হবে। যে কোন কেউকে প্রশ্ন করলেই দেখিয়ে দেবে ঝর্ণায় যাওয়ার পথ।

[৪] বড় দারোগা হাট ঝর্ণা :- এ ঝর্ণাটা বিশেষ কিছুনা। ঝর্ণা না বলে কেসকেডই বলা চলে। তবে খুব সুন্দর। ছোট দারোগা হাটের একটু পরের বাজারই বড় দারোগা হাট।বাজার থেকে মুল রাস্তায় পুর্ব দিকে হাটুন আর এর রেলরাইনের পরে ডানে হেটে কিছুদুর যাওয়ার পর পুর্ব দিকের গ্রাম্য রাস্তায় হাটলেই পেয়ে যাবেন ঝিরি। স্থানীয়দের সাহায্য নিন। ছড়ার কথা বললেই পথ বাতলে দেবে।

[৫]  খৈইয়া ছড়া ঝর্ণা :- এটা “আমার মতে”  সীতাকুন্ড – মীরসরাই রেন্জের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা। একটু কঠিনও পথ অন্যগুলোর
তুলনায়। এক ট্রেইলে অনেক ঝর্ণা ।

Coordinate: 22°46’12.51″N  91°36’45.20″E

যেভাবে যাবেন :- বড় তাকিয়া বাজার থেকে মুলত হাটা শুরু । বড় তাকিয়া বাজার ঢাকা-চট্রগ্রাম হাইওয়ের পাশে ছোট একটা বাজার। চট্রগ্রাম থেকে বড় তাকিয়া বাজার বাস ভাড়া ৫০ টাকা। বড় তাকিয়া থেকে রাস্তা পার হয়ে বাই পাসের শেষ দিকে (ঢাকার দিকে) যে রাস্তাটা পুর্বদিকে চলে গেছে সেটা ধরে পুর্ব দিকে হাটতে থাকলেই চলে যাবেন ঝিরিতে। এরপর ঝিরি ধরে হাটলেই ঝর্ণা। মূল বড় তাকিয়া থেকে হেটে যেতে সময় লাগবে কমপক্ষে ১.৫ ঘন্টা। আর বাজার থেকে সিএজি নিয়ে রেললাইন পর্যন্ত গিয়ে এরপর হেটে ১ ঘন্টারও কম লাগবে। সিএনজি নেবে ৫০-৬০ টাকা।