সৌন্দর্যের লীলাভূমি পোখারা’

হিমালয়ের ব্যাকগ্রাউন্ডে অনিন্দ্য সুন্দর নেপালের রুপ। তুষারশুভ্র বরফ আচ্ছাদিত পর্বতমালা, গভীর নীল হ্রদ, খরস্রোতা পাহাড়ি নদী আর সবুজের মায়ায় ঘিরে থাকা অদ্ভুত সুন্দর এ দেশটি।

নেপালের সবচেয়ে আকর্ষণীয় নগরী পোখারা, যা রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিমি. দূরে অবস্থিত। পোখারায় যখন পৌছালাম তখন প্রায় মধ্যরাত। ভোর হতেই আমরা গেলাম শ্বেতী নদী দেখতে, শ্বেতী নাম কারন পানি দুধের মত সাদা। এরপর মাহেন্দ্র কেভ এবং ব্যাট কেভ দেখতে গেলাম। স্যাঁতসেঁতে গুহা, স্ট্যালাগাইট বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে পানি পড়ছে। তারপর ফিউয়া লেকে ঘন্টায় ৩০০ রুপি দিয়ে নৌকা ভ্রমণ। লেকটি অসম্ভব সুন্দর যেনো শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির মতো। রাস্তার ধারের দোকানগুলোয় পশমিনার বিশাল কালেকশন। কিছু কেনাকাটা শেষে হোটেলে ফিরলাম।

পরদিন ভোর ৪ টায় রওনা দিলাম সারাংকোটের উদ্দেশ্যে অন্নপূর্ণা চূড়ায় সুর্যোদয় দেখার জন্য। চারদিকে তখন ঘুটঘুটে অন্ধকার, তাপমাত্রা প্রায় ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কনকনে ঠান্ডায় আমরা ঠকঠক করে কাঁপছি। ফেরিওয়ালার কাছ থেকে কফি খেয়ে প্রথমে ভিউ পয়েন্টে গেলাম। সুর্যোদয়ের সময় সোনালি আলো তুষারশুভ্র পর্বত চূড়ায় পড়ে যে মায়াচ্ছন্ন দৃশ্য তৈরি করে তা সেলুলয়েডের পর্দায় ধারন করা প্রায় অসম্ভব। অপূর্ব সেই দৃশ্য মোহগ্রস্ত করে রাখলো সবাই কে। নেপালের একটি বিখ্যাত মজার খাবার ‘মোমো’। হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় চুলা থেকে নামানো ধোঁয়া ওঠা গরম গরম মোমো কাঁচামরিচ আর পুদিনার সংমিশ্রণে তৈরি ভীষন ঝাল চাটনি দিয়ে খাওয়ার স্বাদ অতুলনীয়।

এরপর আমরা গেলাম ডেভিস ফলসে।ফলসের পানি বেশ স্বচ্ছ আর গভীর খাদ। রাতে সবাই মিলে বারবিকিউ করা হলো। খোলা আকাশের নিচে কনকনে ঠান্ডা, মেঘেদের ছোটাছুটি, গিটারের টুংটাং আওয়াজ, আর বারবিকিউ…….. অপূর্ব। জীবন সত্যি ই সুন্দর।

পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তা, নিচে খরস্রোতা নদী, পাশে ঘন সবুজ পেছনে ফেলে কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে যাত্রা। সেখানে দুই দিন কাটিয়ে দেশে ফেরা। হিমালয় কন্যা নেপালের স্মৃতি আজ ও অমলিন। মনে হয় বারবার সেখানে ছুটে যাই।

Post Copied From:Shamsun Nahar Lepe‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

সানরাইজ ভিউ পয়েন্ট

ঢাকা – প্লেনে কাঠমান্ডু – বাসে পোখারা – গাড়িতে সারাংকোট

এই ভিউ সৌভাগ্যবানদের কপালে জোটে। আমাদের কপাল ভালো। আগেরদিন এখানে আসা এক ভারতীয় দম্পতির সাথে পোখারায় আলাপ হয়েছিল, তারা জানালো তারা স্রেফ কুয়াশা আর মেঘে ঢাকাই পেয়েছে। আমরা সাড়ে ছয়টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত ঝকঝকে আবহাওয়া পেয়েছি।

আপনি পোখারা থেকে আসতে পারেন এখানে, গাড়ি বুকিং দিয়ে রাখলে আপনার হোটেল থেকে পিক করে আনবে, ভোর ৪টা নাগাদ রওনা দিবে। ১০০০-১২০০ রুপির মত পড়বে। অধিকারী (+977 984-6299183), ভালো লোক, ট্যাক্সির নাম নিজের দুই মেয়ের নামে রেখেছে, গাড়ির গিয়ারে বউয়ের একগোছা চুড়ি রাখা। এজেন্সি থেকে বুকিং দিলে এজেন্সির লাভ সহ চার্জ রাখবে ট্যাক্সির। আমি হোটেল থেকে বাস স্টপেজ পর্যন্ত ট্যাক্সি চাইসিলাম এজেন্সির কাছে, ৩৫০ রুপি চাইলো! সকালে অধিকারীকে ফোন দিলাম, ২০০ রুপিতে নামায় দিয়ে আসছে।

আমরা অবশ্য আগের রাতে সারাংকোটেই ছিলাম, কারণ ভোররাতে ঘুম থেকে উঠে আসাটা মনঃপুত হয় নাই। Hotel Superview Lodge এ Booking.com থেকে বুকিং দেওয়া ছিল। ১৬০০ মিটার ওপর থেকে বসে পোখারা শহরের ভিউ, রুম থেকেই, রুমের সাথে টানা বারান্দা। ডিলাক্স ট্রিপল বেডরুম, রাতের ডিনার, সকালের ব্রেকফাস্ট সব মিলিয়ে ৫০০০ রুপি। যেখান থেকে সিঁড়ি বেয়ে সানরাইজ পয়েন্টে যায়, সেই সিঁড়িগুলার কিছু ধাপ পেরোলেই এই হোটেল, এরকম আরও আছে ওখানে, তবে পরে ঘুরে দেখে এটাই বেস্ট মনে হয়েছে। একটি নেপালি পরিবার তত্বাবধানে আছে, খুবই অতিথিবৎসল।

ভোর সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যাই। ও, সারাংকোটে ঢুকতেই মাথাপিছু ৫০রুপির টিকেট কেটে নিয়েছিলো রাস্তায়। ওটা হারাবেন না। সানরাইজ পয়েন্টে ওই টিকেট দেখাতে হবে, না হলে আবার টিকেট কাটতে হবে। যাই হোক, উপরে উঠে দেখি লোকজন চলে এসেছে। পাহাড়ের গা বেয়ে বেয়ে আরও গাড়ি উঠছে দেখলাম। উপরে একটা টাওয়ার আছে, ওখানে গাদাগাদি, নীচে সিঁড়ির ধাপের মত আছে, ওখানেই বসলাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই লোকজনে ভরে গেল। তারপর সবাই মিলে চাতকের মত পূর্ব পানে চেয়ে থাকলাম। সূর্যোদয়ের সময় পেরিয়ে যায়। হঠাৎ সবাই বামদিকে ঘুরে গেল। তারপর সামনে দৃশ্যমান হল অন্নপূর্ণা রেঞ্জ আর মাছাপুছারে (ফিশটেইল মাউন্টেন, যদিও লেজের এক অংশই দৃশ্যমান)। মাত্র ২৪ কিঃমিঃ উড়াল দূরত্ব, সৌন্দর্য পান করতে করতে সম্বিৎ হারিয়ে ফেলসিলাম। পরে ছবিতোলা শুরু করলাম।

পোখারা ফিরি প্যারাগ্লাইডিং এর গাড়ি চেপে, ফ্রি। যারা প্যারাগ্লাইডিং করবেন, স্পটটা ভিউ পয়েন্ট থেকে দশমিনিট দূরত্বে, নীচে, গাড়ি পিক করতে আসলে একবারে লাগেজসহ চড়ে বসবেন। আপনি ভেসে ভেসে নামবেন পোখারা শহরে, আপনার লাগেজ অফিসে বা হোটেলে পৌঁছে দেবে

Post Copied From:ইমতিয়াজ হাসান ইমন‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেক

ফেওয়া লেক,পোখারা, নেপাল

নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেক এটি। চারদিকে উঁচু পাহাড়, মাঝখানে লেকটির অবস্থান। সূর্যের আলোর তারতম্যের কারণে লেকের পানির রং বদলে যায়।

লেকের একপাশে কুইন ফরেস্ট নামে পরিচিত ঘন জঙ্গলটা লেক থেকে সাড়িবদ্ধভাবে ক্রমান্বয়ে আকাশ ছোয়ার চেষ্টা করেছে অন্য পাশেই রয়েছে সারাংকোট পাহাড়ের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য্য। একটু দূরে অন্নপূর্ণা পর্বতমালার বরফ ঢাকা চুড়া, যার ছায়া পড়ে লেকে সৃষ্টি হয় অপার্থিব সৌন্দর্য্য।
ইচ্ছা করলে নির্দিষ্ট ভাড়ায় সারা দিন ধরে লেকে বোটিং করতে পারেন। দেখবেন আপনার পাশাপাশি লেকের পানির উপর উড়ছে নাম না জানা অনেক পাখি।

কিভাবে যাবেনঃ ঢাকা- কাঠমান্ডু- পোখারা।

Post Copied From:Atif Aslam>Travelers of Bangladesh (ToB)