উত্তরবঙ্গের গৌরব ঐতিহাসিক দিবর দীঘি

প্রাগৈতিহাসিক বাংলাদেশ: ধীবর দিঘির দিব্যক জয়ের স্তম্ভ

আজ থেকে ঠিক এক যুগ আগে প্রয়াত শাহাদাত চৌধুরী সম্পাদিত সাপ্তাহিক ২০০০ এ খন্দকার মাহমুদুল হাসানের একটি লেখায় প্রথম শুনি ধীবর দিঘি ও দিঘির মাঝের স্তম্ভের কথা। এর আগে অশোক স্তম্ভের নাম শুনেছিলাম কিন্তু আমাদের দেশেও যে এ ধরণের কিছু একজিষ্ট করে তা ছোট্ট আমাকে বেশ চমৎকৃত করে। কিন্তু একটা ছোট স্কুলবালকের পক্ষে তখন চাইলেও দেশের আরেক প্রান্তে যাওয়া সম্ভব ছিলোনা। কিন্তু সেদিনই সংকল্প করি আমিও একদিন দেখতে যাবো ধীবর দিঘির দিব্যক জয়ের স্তম্ভ। সেই “একদিন” এলো অবশেষে। মান্দা থেকে সাপাহারগামী বাসে সাপাহারের কয়েক কিলো আগে হাতের ডানেই ধীবর দিঘির গেট। সেখান থেকে ব্যাটারী ভ্যানে ৫টাকায় ধীবর দিঘি। প্রশাসন বেশ সাজানোর চেষ্টা করেছে আশপাশটা। চারপাশে জনবসতি নেই, বরেন্দ্র অঞ্চলে যেমনটা হয় ধাপ কেটে কেটে বানানো ধানী জমি যেন বিশাল দিঘিটির চারপাশে গ্যালারী হয়ে আছে। ঘাটে একটা নৌকা, দুই মাঝিই সাওতাল কিশোর। তারাই আমাদের পুষ্পক রথের স্বপ্ন সারথী হয়ে আমাদের দাড় বেয়ে নিয়ে গেলো দিব্যক জয়ের স্তম্ভের কাছে। হাত দিয়ে ছুয়ে দেখলাম সাড়ে ত্রিশফুটি অখন্ড পাথর কেটে বানানো গ্রানাইট স্তম্ভটি। মনটা ভরে গেলো! রাজা এলো, রাজা গেলো। কালের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে আজো কীর্তি রয়ে গেলো! ভাবা যায় স্তম্ভ যদি ত্রিশ ফুট প্লাস হয় কত বড় ছিলো অখন্ড পাথরখন্ডটি যেটি কুঁদে বানানো হয়েছিলো স্তম্ভটি? আজ থেকে এক হাজার বছর আগে কেমনে হলো এসব কীর্তি? সময় বোবা, তাই বলতে পারেনা! নীরবে বয়ে যায় শুধু!

প্রথম মহিপালের আমলে পাল বংশ ভারতের বিশাল অংশসহ বিহার ও বরেন্দ্র এলাকা অধিকারে আনেন। কিন্তু তার পুত্র দ্বিতীয় মহিপাল ছিল দুর্বল ও চরিত্রহীন শাসক। দ্বিতীয় মহীপালের (১০৭০–১০৭১) রাজত্বকালেই বরেন্দ্রীতে ঘটে গিয়েছিল তৎকালীন পরিপ্রেক্ষিতে এক যুগান্তকারী ঘটনা। কৈবর্ত্য বিদ্রোহ। মৎস্যজীবী কৈবর্ত্য বীর দিব্যকের নেতৃত্বে বরেন্দ্রর সাধারণ মানুষ বিদ্রোহ ঘোষনা করেছিলেন পাল শাসনের বিরুদ্ধে। সেই বিদ্রোহ দমন করতে এসে পরাজিত এবং নিহত হয়েছিলেন রাজা দ্বিতীয় মহীপাল। তারপর সর্বসম্মতিক্রমে বরেন্দ্রভূমির অধিপতি নির্বাচিত হন দিব্যক। দিব্যকের রাজত্ব কালে পাল যুবরাজ রামপাল বরেন্দ্র উদ্ধারের চেষ্টা করে দিব্যক এর নিকট পরাজিত হন।দিব্যক এ সাফল্যের স্মৃতি রক্ষার উদ্দেশ্যে দীঘি মধ্যস্থিত এ স্তম্ভ নির্মান করেন। পাল আমলে খননকৃত ৬০ বিঘা দিঘীর মাঝখানে আশ্চর্যজনকভাবে স্থাপিত অখন্ড গ্রানাইড পাথরের স্তম্ভ সূদুর অতীতের বাঙ্গালীর শৌর্যবীর্যের সাক্ষ্য বহন করছে আজও। এখানে সবার যাবার দরকার নাই। এখানে দেখার চোখের চেয়ে অনুভবের অন্তর্দৃষ্টি বেশি প্রয়োজন!

 

উত্তরবঙ্গের গৌরব ঐতিহাসিক দিবর দীঘি।
পাল আমলে খননকৃত ৬০ বিঘা দিঘীর মাঝখানে আশ্চর্যজনকভাবে স্থাপিত অখন্ড গ্রানাইট পাথরের স্তম্ভ সূদুর অতীতের বাঙ্গালীর শৌর্যবীর্যের সাক্ষ্য বহন করছে আজও। নীরব জনশূণ্য প্রান্তর। চারপাশে সিড়ির মত স্তরে স্তরে ধানচাষ হচ্ছে। বরেন্দ্রে খুব স্বাভাবিক দৃশ্য। তাই এখানে দেখার চোখের চেয়ে অনুভবের অন্তর্দৃষ্টি বেশি প্রয়োজন!

 

পত্নীতলা, নওগাঁ

ঢাকা থেকে ডাইরেক্ট সাপাহারের বাসে উঠে সাপাহারের তিন কিলো আগে নামতে হবে।তারপর ভ্যানে পাঁচ টাকা।

Post Copied From: Apu Nazrul‎ > Travelers of Bangladesh (ToB)

মদক রেঞ্জ

Magistic View from the Top of “যোগী হাফং”(৪র্থ সর্বোচ্চ বাংলাদেশের-৩২৫৯ফিট)

ঠিক বান্দরবান-মিয়ানমার বর্ডার এ এই মনোহরি দৃশ্যপটের অবস্থান,
সামনের সুন্দর চুড়াটি “জ তলং”(২য় সর্বোচ্চ চুড়া বাংলাদেশ-৩৩৩৫ ফিট)
যাবার উপায়:
ঢাকা-বান্দরবান-থানচি-রেমাক্রি-দলিয়ানপাড়া-যোগী ট্রেইল।

২টি চুড়া ই সামিট করে আসা যাবে,নুন্যতম ফিটনেস আর ট্রেকিং এক্সপেরিয়েন্স দিয়ে।
সম্ভাব্য খরচ বাজেট:
৪/৫ জনের টিমের-৪৫০০ থেকে৫০০০টাকা জনপ্রতি(গাইড,খাওয়া,থাকা,সকল যাতায়াত,নাস্তা সহ)ঢাকা ট্যু ঢাকা
সম্ভাব্য দিন-৪ দিন।

ট্যুর প্লান:
০ তম দিন>
ঢাকা-বান্দরবান
১ম দিন>
বান্দরবান-থাঞ্চি(লোকালবাস)-রেমাক্রি(বোট)-দলিয়ানপাড়া(ট্রেকিং-৩ঘন্টা)
২য় দিন>
দলিয়ানপাড়া(পাড়া থেকে লোকাল গাইড নিয়ে)-জোতলং চুড়া(ট্রেকিং-৮/১০ ঘন্টা-যাওয়া আসা)-দলিয়ানপাড়া
৩য় দিন>
দলিয়ানপাড়া(লোকাল গাইড নিয়ে)- যোগী হাফং চুড়া(৮/১০ ঘন্টা যাওয়া আসা)
৪র্থ দিন>
দলিয়ানপাড়া-নাফাখুম ঝর্না-রেমাই’ফ খুম-রেমাক্রী-থাঞ্চি-বান্দরবান।

সম্ভাব্য খরচ গুলোর বর্ননা:
১)ঢাকা-বান্দরবান-ঢাকা(বাস-১২৪০ টাকা)জনপ্রতি
২)বান্দরবান-থাঞ্চি-বান্দরবান(লোকালবাস-৪০০ টাকা)জনপ্রতি
৩)থাঞ্চি-রেমাক্রি-থাঞ্চি(১টি বোট এর ভাড়া-আসা যাওয়া-৪০০০/৪৫০০)পুরো টিম
৩)গাইড:পুরোটিমের খরচ
মুল গাইড-১ম দিন ৮০০ তারপর দিনগুলোতে ৭০০ করে বাকি ৩ দিন।(মোট-২৯০০ টাকা)
লোকাল গাইড(দলিয়ান পাড়া থেকে জোতলং-১০০০ করে ২জন,আর যোগী হাফং-৮০০ করে ২জন(মোট-৩৬০০ টাকা)
৪)থাকা-১০০ করে জনপ্রতি প্রতিরাত
৫)খাওয়া-(মুরগী,ডাল,ভাত-১০০/১২০)(আলুভর্তা,ডাল,ভাত-৬০)প্রতি বেলা।

সতর্কতা:
১)ট্রেইলটির জন্য-পূর্ব অভিজ্ঞতা লাগবে(সামান্য)
২)অনেকেই একে সবচেয়ে কঠিন ট্রেইল বলে আখ্যা দিয়ে থাকেন-কিন্তু ততটা না।তাই আত্মবিশ্বাস দরকার।
৩)একজন অভিজ্ঞ টিম্লিডার।

এত বকবক করার উদ্দেশ্য:
নিজেরা টিম গঠন করার কাজে উদ্বোদ্ধ হোন।
ছবি তা আমারই তোলা,তাই ব্যবহার করলে,ক্রেডিট দিলে ভাল লাগবে আর কি

Post Copied From:Taufique Tamal‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

এ যেন এক স্বপ্নের জায়গা

লাদাখ যেন এক স্বপ্নের জায়গা! এখানকার প্রকৃতি,পাহাড়, হাইওয়ে আর আকাশ আপনাকে কাছে টানবে সেই সাথে লাদাখের বিভিন্ন মনেস্ট্রিগুলোর নির্মাণশৈলী আপনাকে অবাক হতে বাধ্য করাবে! অসাধারণ কিছু লেক, নুব্রাভ্যালীর বালুর রাজ্যে বিলুপ্তপ্রায় দুই কুঁজওয়ালা উটের পিঠে চড়ার আনন্দ আর ভারতের শেষ প্রান্তের পাকিস্তান বর্ডারের কাছে টুরটুক গ্রামের সৌন্দর্য আপনাকে পৌঁছে দেবে ভাল লাগার এক ভিন্ন জগতে!
যাওয়ার সবচেয়ে উপযোগী সময় জুন-অক্টোবর। আর নভেম্বর থেকে বরফ পড়া শুরু হয়ে যাওয়াতে গাড়ির রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় তাই তখন লাদাখ যেতে হলে air ব্যবহার করে যাওয়া যাবে।
ঢাকা-কলকাতা-জম্মু-শ্রীনগর-কার্গিল-লেহ
বাই air এ গেলে কলকাতা থেকে লেহ।

ছবি: ডিস্কিট মনেস্ট্রি,ডিস্কিট,লেহ,লাদাখ।
(লাদাখের সবচেয়ে বড় মনেস্ট্রি।)

গুমাই বিল ও অ্যাভিয়ারী পার্ক

গুমাই বিল বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও চট্টগ্রাম বিভাগের সর্ববৃহৎ বিল, যা সমগ্র বাংলার মানুষের অাড়াই দিন খাদ্যের যোগান দেয়।এই বিলের সাথে পাহাড় অার মেঘ-বৃষ্টির রয়েছে গভীর মিতালি। (১নং ছবি)
দ্বিতীয় ছবিটি বাংলাদেশের একমাত্র পক্ষীশালা শেখ রাসেল অ্যাভিয়ারী পার্কের যা রাংগুনিয়ার শেষ প্রান্তে অবস্থিত, এই পার্কে পেয়ে যাবেন পাহাড় চূড়ার উপর দিয়ে উড়ে বেড়ানোও হরেক রকমের পাখি দেখার সুযোগ।রয়েছে ক্যাবল কার,যা(১.৫+১.৫, যাওয়া+অাসা)কি.মি।পুরো পার্কে ঘুরে দেখাবে।(২ নং ছবি)

কীভাবে যাবেন ও খরচ–চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে লিচুবাগান, চন্দ্রঘোনার ও কাপ্তাইয়ের বাস পাওয়া যায়। লিচুবাগানের বাসে উঠবেন।ভাড়া- ৪৫ টাকা।বাস রাংগুনিয়ার মরিয়মনগর পৌছানোর পর থেকে গুমাই বিল শুরু যা বাস কন্ডাকটারকে জিজ্ঞেস করলে দেখিয়ে দিবে।গুমাই বিল শেষ করে বাস পৌছাবে লিচুবাগান।লিচুবাগান থেকে ১০ টাকা সিএনজি ভাড়া, পৌছে যাবেন অ্যাভিয়ারী পার্কে।টিকেট মূল্য ২৩ টাকা।যদি ক্যাবল কার চড়তে চান তার জন্য ২৩০/-টাকা অতিরিক্ত গুনতে হবে।এর পর অারো পথ যেতে চাইলে চলে যেতে পারেন কাপ্তাই।

Post Copied From:Dipta Dhar‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

মানালি

আমি আগেই বলেছিলাম আমাদের ট্যুর প্লান ছিল (ঢাকা-কোলকাতা – কালকা- শিমলা- মানালি- দিল্লী- আগ্রা- কোলকাতা-ঢাকা)। আমাদের এই ট্যুর এর মেম্বার ছিলাম দুই জন। আমি (রিয়াদ আরেফিন ) এবং আমার বন্ধু আবদুল্লাহ আল মাসুম ( বাবু)। আমার এই ট্যুর প্লান টা বলার আগে কিছু কথা আছে… যা কিনা সবার কাছেই পরবর্তীতে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। তাই আমি চিন্তা করলাম এই প্রশ্নের উত্তর গুলো আগে আপনাদের দিবো।
১। মানালি যাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন?
২। মানালি যাওয়ার উপযুক্ত রুট কোনটা ?
৩। ইন্ডিয়ার বিভিন্ন স্থান এর খরচ কত হবে?
৪। টয় ট্রেন এর টুকিটাকি।
৫। ইন্ডিয়ান রেল এর টুকিটাকি।
৬। ইন্ডিয়া র বিভিন্ন স্থান এর পরিবহন সমাচার।
৭। ইন্ডিয়ান বিভিন্ন স্থান এর হোটেল সমাচার।
৮। ইন্ডিয়া র বিভিন্ন স্থান এ খাবার সমাচার।
৯। রথাঙ্গ পাস সম্পর্কে কিছু কথা।
১০। দিল্লি ও আগ্রা নিয়ে কিছু কথা।
এবার উত্তরে আসা যাক। আসলে ইন্ডিয়া সম্পর্কে আমি যে সব জানি তা কিন্তু না। ইন্ডিয়া তে যাওয়ার পর যতটুকু ঘুরিছি তার অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করেই এই সব প্রস্নের উত্তর গুল দিব।

১। মানালি যাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন?
উত্তর ঃ আসলে মানালি সব সময় সুন্দর। এই মানালিকে বলা হয় দেবভুমি। মানালির সুন্দরয অসাধারন। সেই প্রসঙ্গে বলতে গেলে মানালি যাওয়ার উপযুক্ত সময় বলে কিছুই নেই, সবসময় সুন্দর সব সময় যাওয়া যায়। কিন্তু সিজান ভেদে মানালির প্রকৃতির পরিবর্তন হয়। আপনি কোন প্রকৃতিতে মানালি কে দেখবেন সেই টাই হবে মানালি কে দেখার উপযুক্ত সময়।
১। জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি- মার্চ ঃ এই সময় টাতে আপনি মানালি তে শুধু বরফ পাবেন। যেই দিকেই তাকাবেন শুধু বরফ। যারা বরফ দেখতে ভালোবাসেন, বরফ নিয়ে খেলতে ভালোবাসেন তাদেরকে বলবো এই মাস গুলতে ট্যুর প্লান করুন। আপনাদের জন্য এই টাই উপযুক্ত সময়।
২। এপ্রিল-মে-জুন ঃ এই সময় টাকে মানালির বসন্ত বলা হয়। প্রকৃতি সবুজ রুপ ধারন করে। দূরে পাহাড়ে বরফ দেখা যায়। সলাং ভ্যালি, রথাঙ্গ পাস বরফ পাবেন। মানালি শহর টা ঘুরতে পারবেন। পায়ে হেটে হিল ট্র্যাকিং করতে পারবেন। প্রকৃতির সুন্দরয দেখার জন্য সব থেকে উপযুক্ত সময়। এই সময় টাতে আপেল গাছে অ্যাপেল একদম ছোট থাকে।
৩। জুলাই- অগাস্ট – সেপ্টেম্বর ঃ এই সময় টায় মানালি তার পুরো যৌবন ফিরে পায়। চারদিকে শুধু পাইন বনের সবুজ সমারহ। বিপাসা হ্রদ তার পূর্ণ রুপ ফিরে পায়। অ্যাপেল , চেরি ফল গুল বড় হবে। পাহাড়ের গায়ে সবুজ প্রকৃতি দেখতে এই সময় টাই উপযুক্ত। আর এই সময় গেলে বরফের দেখা পাবেন না।
৪। অক্টোবর – নভেম্বর – ডিসেম্বর ঃ এই সময় টাতে শীত ের আগমন ঘটবে। নভেম্বর, ডিসেম্বর মাসে গেলে, কপাল ভাল থাকলে স্নও ফাল ও পেয়ে যেতে পারেন। এই সময় টাও মানালি ঘুরার জন্য উপযুক্ত একটা সময়।
এখন এই ৪ টা সিজান উপর ভিত্তি করে যার যেই সময় টা ভালো লাগে সে সেই সময় টাকে উপযুক্ত করে ঘুরে আস্তে পারেন মানালি।

২। মানালি যাওয়ার উপযুক্ত রুট কোনটা ?
উত্তরঃ মানালি যাওয়ার জন্য অনেক গুল রুট আছে। আমি একে একে বলছি যার যেই রুট পছন্দ হয় সে সেই রুট এই প্লান করে ফেলুন।
# কলকাতা থেকে বাই ট্রেন কালকা, কালকা থেকে বাই ট্রয় ট্রেন/ ট্যাক্সি তে সিমলা, সিমলা থেকে বাই বাস/ ট্যাক্সি মানালি, মানালি থেকে বাই বাস দিল্লি, দিল্লি থেকে আগ্রা, আগ্রা থেকে বাই ট্রেন কলকাতা। ( যারা হিল রাইড বেশি পছন্দ করেন, যাদের হিল সিকন্যাস কম তাদের জন্য এই রুট টা উপযুক্ত)
# কলকাতা থেকে বাই ট্রেন আগ্রা, আগ্রা থেকে বাই বাস দিল্লি, দিল্লি থেকে বাই বাস মানালি, মানালি থেকে বাই বাস সিমলা। সিমলা থেকে বাই ট্রয় ট্রেন/ট্যাক্সি তে কালকা , কালকা থেকে বাই ট্রেন এ কলকাতা। ( এই প্লান এও যেতে পারেন )
# কলকাতা থেকে বাই ট্রেন দিল্লি, দিল্লি থেকে বাই বাস মানালি, মানালি থেকে বাই বাস দিল্লি, দিল্লি ,আগ্রা ঘুরে বাই ট্রেন কলকাতা। ( এই প্লান টা যাদের হিল সিকন্যাস আছে, অথবা ট্যুর আ সাথে বেবি আছে, অথবা ট্যুর মেয়েদের সংখ্যা বেশি তারা প্লান টা বেছে নিতে পারেন)।
# কলকাতা থেকে বাই এয়ার দিল্লি / কুল্লু (কুল্লু থেকে মানালি মাত্র ৫০ কিলো ) দিল্লি / কুল্লু থেকে বাই বাস মানালি। মানালি থেকে বাই বাস দিল্লি।দিল্লি ,আগ্রা ঘুরে বাই এয়ার এ কলকাতা। ( যারা এয়ার এ ঘুরবেন তাদের জন্য এই প্ল্যান টা উপযুক্ত)
উপরের প্ল্যান গুলোর ভিতর যেই রুট প্ল্যান টা আপনাদের ভালো লাগবে সেই রুটেই আপনাদের ট্যুর প্ল্যান সাজিয়ে ফেলুন।

৩। ইন্ডিয়ার বিভিন্ন স্থান এর খরচ কত হবে?
উত্তরঃ আসলে আমরা খরচ বলতে থাকা, খাওয়া, ঘুরাঘুরি কেই বুঝাই। শুধু মাত্র কলকাতা বাদে ইন্ডিয়া র সব শহরে খরচ তুলনা মুলক কম হবে। ট্যুর এর প্ল্যান এর উপর নির্ভর করে আসলে খরচ কত হবে। শুধু মাত্র হোটেল এবং পরিবহন ছাড়া অন্ন সব কিছুর খরচ প্ল্যান করে কারা যায়। যত দিন এর ট্যুর হবে তত দিনের খাবারের একটা এভারেজ হিসাব বের করা যায়। কত দিন ঘুরবো কথায় কথায় যাবো তার সঠিক প্ল্যান করা থাকলে পরিবহন হিসাব টাও সহজেই বের করা যায়। শুধু মাত্র (মানালি, সিমলা) হোটেল টা সিজান ভেদে ভাড়ার পরিবর্তন হয়। সেই টা হলেও খুব একটা পরিবর্তন হয় না। আর (মানালি,শিমলা) শহরে আশেপাশে ঘুরার যেই পরিবহন খরচ আছে, অর্থাৎ ট্যাক্সি/ জীপ ভাড়া সিজন ভেদে কমবেশি হয়। তাই বলবো সঠিক প্ল্যান ঠিক করুন এবার খরচ টা প্ল্যান অনুযায়ী বসিয়ে নিন দেখবেন ইন্ডিয়া ট্যুর এর মোট খরচ রেডি হয়ে গেছে।
৪। টয় ট্রেন এর টুকিটাকি।
উত্তরঃ যারা কিনা কলকাতা থেকে কালকা হয়ে সিমলা হয়ে মানালি যাবেন তাদের জন্য এই লেখাটুকু। কলকাতা থেকে কালকা যাওয়ার একমাত্র সরাসরি ট্রেন হল কালকা মেইল। যদিও বলা হয় কালকা মেইল সুপার ফাস্ট, কিন্তু কালকা পৌছাতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা লেট হয়। কালকা স্টেশন থেকে সিমলার উদ্দেশে সকাল ৬ টা থেকে ট্রয় ট্রেন ছেরে যায়। প্রতি ৩০ মিনিট / ১ ঘণ্টা পরপর ট্রেন ছারে। লাস্ট ট্রেন ১ টায় ছেরে যায়। এখনে অনেকেই বলে থাকে রিজার্ভেশন করা থাকলে ট্রয় ট্রেন এর সিট পাওয়া যায়। কিন্তু আমি বলবো তাদের সব ট্রেন রিজার্ভেশন সিস্টেম থাকে না। প্রতি ১ ঘণ্টা পর পর যেই ট্রেন গুল ছারে সেইগুল তে কোন রিজার্ভেশন থাকে না। যার যেই খানে ইচ্ছা বসতে পারে। র টিকেট এর দাম মাত্র ৫০ রুপি। পাহাড়ের বুক চিরে ১০২ টা টানেল ভেদ করে মেঘের সাথে খেলা করে অসাধারন এক ভ্রমন শেষে করে সিমলা পৌছতে সময় লাগবে ৫ ঘণ্টার মত। তাই আমি বলবো রিজার্ভেশন এর ঝামেলায় যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই অনায়েসে ট্রয় ট্রেন পেয়ে যাবেন।
৫। ইন্ডিয়ান রেল এর টুকিটাকি।
উত্তরঃ ইন্ডিয়ান রেল এর টিকেট পাওয়াটা আকাশের চাঁদ পাওয়ার মত। যারা ফাস্ট টাইম ইন্ডিয়া র কলকাতার বাহিরে যাবেন তাদের জন্য অনেক কঠিন কাজ। অনেকেই চেষ্টা করে দেশে থেকেই টিকেট কনফার্ম করার জন্য বাই এজেন্সি ততকাল কোঠায়, নেট ফেয়ার থেকে বেশি টাকা দিয়ে। যদি কোন পরিচিত এজেন্সি থাকে তবে টিকেট করে নিতে পারেন। অন্যথায় আমি বলবো কলকাতায় হাওরায় ফেয়ারলি প্লেস থেকে ফরেন কোঠায় টিকেট কাটুন। ( হাওড়া গামি যে কোন বাস হেল্পার কে বললেই ফেয়ারলি প্লেস চিনিয়ে দেবে)। সকাল ৮ টার ভিতর ফেয়ারলি প্লেস এ থাকতে পারলে, ভাগ্য ভালো থাকলে অই দিন এর ও টিকেট পেয়ে যেতে পারেন। না হয় ত সর্বচচ ২ দিন কলকাতা থাকতে হতে পারে। আর দিল্লি থেকে অনায়েসে টিকেট পাওয়া যায়। নয়া দিল্লি স্টেশন এর ২য় তালায় ইন্টারন্যাশনাল কোঠায় টিকেট কাটা যায়। সেখনে যে কোন দিন এর টিকেট পেয়ে যেতে পারবেন। তারা অনেক হেল্প ফুল্ল।

৬। ইন্ডিয়া র বিভিন্ন স্থান এর পরিবহন সমাচার।
উত্তরঃ পরিবহন খরচ ট্যুর খরচ এর সব থেকে বড় একটি অংশ। কলকাতা থেকেই শুরু করি, কলকাতা শহর ও আশেপাশে ঘুরার জন্য বাস টাই বেস্ট। মাঝে মাঝে শেয়ার আ সিনজি ব্যাবহার করতে পারেন। মেট্রো রেল ও ব্যাবহার করতে পারেন। এবার আসুন সিমলা, মানালি র পরিবহন খরচ, সিমলা র আশেপাশে ঘুরার জন্য অনায়েসে ট্যাক্সি পেয়ে যাবেন সে সব স্পোর্ট ২০০০ থেকে ২৫০০ রুপির ভিতরে ঘুরে দেখাবে। আই টা সিজন ভেদে কমবেশি হয়ে থাকে। সিমলা থেকে মানালি বাই বাস HRTC (A/C) ৬৫০ রুপি। মানালির আশেপাশে ঘুরার জন্য ট্যাক্সি/জীপ/মাহেন্দ্রা পাবেন। আমি বলবো মানালি শহর এবং আর আশেপাশে পায়েহেটে ঘুরুন অনেক মজার। মানালির শহরের আশেপাশের স্পোর্ট দেখতে ১০০০ থেকে ১৫০০ রুপির ভিতর ট্যাক্সি পেয়ে যাবেন। সলাং ভ্যালি তে যেতে ২০০০ থেকে ২৫০০ পরবে সিজন ভেদে কম বেশি হয়ে থাকে। রথাঙ্গ পাস ২০০০থেকে ৮০০০০ পর্যন্ত হতে পারে সিজানভেদে। (ট্যাক্সি/জিপ)
মানালি থেকে দিল্লি বাই বাস ( A/C VOLVO) ১২০০ থেকে ১৩০০ রুপি পরবে। আর দিল্লি শহর ঘুরলে সিটি ট্যুর প্যাকেজ এ ঘুরতে পারেন। নিজেরাও বাস, সিনজি, ট্যাক্সি, মেট্রো তে করে দিল্লি ঘুরতে পারেন। আর আগ্রা হল সবথেকে খারাপ জায়গা ইন্ডিয়া তে, আগ্রা তে অনেক দালাল দের উপদ্রপ। আগ্রা তে রাতে না থাকাই ভালো ।
৭। ইন্ডিয়ান বিভিন্ন স্থান এর হোটেল সমাচার।
উত্তরঃ ইন্ডিয়া র কলকাতা বাদে সব ট্যুরইস্ট প্লেস এর হোটেল ভাড়া তুলনা মুলক কম। দালাল দের একটা ঝামেলা সব যায়গাতেই থাকবে। শতভাগ চেষ্টা করবেন এরিয়ে চলার জন্য। এতে কিছু টাকা হলেও বাচবে। আপনি আপনার ট্যুর এর প্ল্যান অনুযায়ী হোটেল নির্বাচন করুন। মানালি তে থাকার জন্য সব থেকে সুন্দর যায়গা হল ওল্ড মানালি। ওখানে ১০০০ থেকে ১৫০০ রুপির ভিতর অনেক বড় এবং সুন্দর রুম পাবেন। আর নিউ মানালি ( মল রোড) প্রচণ্ড গিঞ্জি মানুষ বেশি ভারাও বেশি। আর এলোয় ( নিউ মানালি) মল রোড থেকে একটু দূরেই অই খানের হোটেল গুলোর ভাড়া তুলনা মুলক কম। এবার আসুন দিল্লি তে দিল্লি তে থাকার মত অনেক যায়গা আছে। তবে আপনি যদি নিউ দিল্লি স্টেশন এর পাসে পাহাড় গঞ্জ এ থাকতে পারেন। মাইন রোড থেকে একটু ভিতরেই ১০০০ রুপিতে এ/সি রুম পাবেন। এ ছারাও আপনি জামা মসজিদ এর আশেপাশে , রাজীব চওক এর আসে পাসে থাকতে পারেন। ১০০০ থেকে ১৫০০ ভিতর পেয়ে যাবেন। এবার আসুন আগ্রা, আমরা যদিও আগ্রায় রাতে ছিলাম না। আর আগ্রা খুব একটা নিরাপদ যায়গা না। এখানে দালালদের উপদ্রপ খুব বেশি। আপনি চাইলে তাজমহলের আশেপাশে কম খরচে থাকতে পারবেন। এবার আসুন কলকাতায়, নিউ মার্কেট অনেক বেস্ত একটা যায়গা। বাংলাদেশী রা নিউ মার্কেট এর মির্জা গালিব স্ট্রিট, মার্ক কুইক স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিট এর আসেপাসেই থাকেন বাংলাদেশী দের চাপ বেশী থাকলে হোটেল ভাড়া বেড়ে যায় শেয়ার বাজারের মত। এ/সি রুম আর জন্য আপনাকে ২০০০ থেকে ৩০০০ রুপি বাজেট রাখতেই হবে।
৮। ইন্ডিয়া র বিভিন্ন স্থান এ খাবার সমাচার।
উত্তরঃ আমাদের বাঙ্গালী মুসলিমদের জন্য ইন্ডিয়া তে ভালো খাবার পাওয়া টা একটু কষ্ট কর। কলকাতায় আপনি ভালো মানে খাবার পাবেন। খাবার খেয়ে ভালো লাগবে। কিছু হোটেল আর নাম দিয়ে দিলাম হোটেল রাঁধুনি, হোটেল প্রিন্স এই হোটেল গুলোর খাবার অনেক ভালো। যখনি আপনি কলকাতা ছারবেন তখন থেকেই ভালো রুচি সম্মত খাবারের কষ্ট শুরু হয়ে যাবে। ট্রেন এ খাবারের অনেক কষ্ট আণ্ডা বিরানি আর ভেজ বিরানি ছাড়া ট্রেন এ খাবার কিছুই পাওয়া যায় না। ট্রেন এর ওই বিরানির টেস্ট খুব একটা ভালো নয়। আমি বলবো অবশ্যই ট্রেন এ পর্যাপ্ত খাবার নিয়ে উঠার জন্য। সিমলায় থাকলে সিমলা মল রোড এর আশেপাশে বাঙ্গালী খবার হোটেল আছে। এবার আসুন মানালিতে, মল রোড এর আসে পাসে অনেক হোটেল আছে ইন্ডিয়ান খাবার পাওয়া যায়। তবে মানালিতে মুসলিম হোটেল আছে একটাই,হোটেল এর নাম “করিম খানা খাজানা” হোটেল এর মালিক হাফেজ তারিক, খুব ভালো একজন মানুষ, সে বাংলা বুঝে এবং বাংলা বলতেও পারে। উনার বাসা কাশ্মীর। বাংলাদেশ থেকে যারা মানালি তে যায় তাদের কে সে অনেক হেল্প করে। তার নাম্বার আমি দিয়ে দিতেছি (৯৮১৬৬৯৩৭২২, ৯৮০৫১৫৫৪৮৯)।
দিল্লি তে প্রচুর মুসলিম হোটেল পাবেন, কিন্তু খাবারের মান খুব বেশি ভালো হবে না। আগ্রাতেও একি রকম। প্রচুর খাবারের হোটেল আছে। ইন্ডিয়ান রা একটা জিনিস খুব বেশি খায় তা হল চাটনি। যা আমরা একবার খেলে মুখ এক মিনিট বন্ধ হয়ে থাকে। আর কেক, মিষ্টি, ফাস্ট ফুড, চিপ্স, জুস ইত্যাদি আরও অনেক কিছু পাবেন কম টাকায়। ইন্ডিয়া র যেখানেই যাবেন ভারি খাবার খেলে আপনার ২০০ থেকে ২৫০ রুপি পরবে। ( বিরিয়ানি, সাদা ভাত)।
৯। রথাঙ্গ পাস সম্পর্কে কিছু কথা।
উত্তরঃ মানালি থেকে রথাঙ্গ পাস এর দূরত্ব ৫২ কি মি, মানালির সব থেকে সুন্দর যায়গা হল এই রথাঙ্গ পাস। সৃষ্টি কর্তা কতটা সুন্দর্য দিয়েছে এই রথাঙ্গ পাস কে তা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। যারা মানালি যায় তাদের অনেকই রথাঙ্গ পাস যেতে পারে না। এই টা আসলে ভাগ্যের বেপার। সবার ভাগ্যে রথাঙ্গ পাস থাকে না। তবে পারফেক্ট টাইম এ গেলে রথাঙ্গ পাস এর আসল সুন্দরয দেখা যায়। এপ্রিল , মে, জুন(প্রথমে) আপনি রথাঙ্গ পাস এর রোড পারমিশন পাবেন। সেই সময় আপনি রথাঙ্গ পাস এ পাবেন প্রচুর বরফ, আমি আমার প্রথম লেখাতেই সেই ভিডিও টা দিয়েছিলাম। যদিও পরিবহন খরচ টা একটু বেশি হবে। আপনি যেই দিন মানালি তে যাবেন সেই দিন থেকেই রথাঙ্গ পাস যাওয়ার জন্য চেষ্টা করতে থাকবেন। এজেন্সি র মাধ্যমে গেলে টাকাটা একটু বেশি লাগবে কিন্তু রথাঙ্গ পাস যেতে পারবেন সেই টা ১০০% নিশ্চিত। আমাদের খরচ হয়েছিল জন প্রতি ২০০০ রুপি। ড্রেস ২৫০ রুপি । আমরা দুইজন গিয়েছিলাম শেয়ারে। আমাদের জীপে আরও ৬ জন ছিল। রথাঙ্গ পাস এ প্রতিদিন ১০০০ গাড়ীর পারমিশন দেয় তার ভিতর ৬০০ পেট্রোল র ৪০০ ডিজেল। আপনি মানালির বিভিন্ন ট্যাক্সি ড্রাইভার দের ও হেল্প নিতে পারেন। আর কারও যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে তবে সে ইচ্ছা করলে মোটর সাইকেল এর পারমিশন নিয়ে রথাঙ্গ পাস যেতে পারে।
১০। দিল্লি ও আগ্রা নিয়ে কিছু কথা।
উত্তরঃ- দিল্লি দুই দিন ই যথেষ্ট, বড়জোর ৩ দিন থাকতে পারেন সব ঘুরতে পারবেন। নিউ দিল্লি স্টেশন এর পাশেই পাহাড়গঞ্জ এলাকায় থাকতে পারেন হোটেল ভারাও কম সুবিধাও বেশি। আমি সবাইকে যা বলবো তা হল, প্রতি টা হোটেল এই ট্যুরিস্ট কোচ আছে এ/সি সার্ভিস, এক এক জনের কাছে এক এক টা প্রাইজ রাখে। ৪০০ থেকে ৫০০ রুপি র ভিতর পেলে ওদের ট্রিপ টা নিতে পারেন, সব স্পোর্ট ঘুরলেন, ওদের প্রবলেম একটাই টাইম লিমিট কম। আপনার যেই স্পোর্ট বেশি ভালো লাগবে সেই স্পোর্ট গুল পরের দিন আবার গেলেন বাস এ ( বাস,মেট্রো) পাবলিক সার্ভিস খরচ খুব ই কম। তবে আমরা দিল্লি পাবলিক সার্ভিস এই ঘুরছি। আর আগ্রা থাকার দরকার নাই, একদিন ই আগ্রার জন্য যথেষ্ট। আগ্রা খুব খারাপ যায়গা তাই বলবো সাবধানে থাকবেন। ওদের দালাল গুল খুবই খারাপ। অবশ্যই দালাল এরিয়ে চলবেন দরকার হলে পুলিশ এর সাহায্য নিবেন।

আজ এই পর্যন্তই, আমার ৩য় লিখাতে আমাদের মুল ট্যুর এবং কিছু মজার সৃতি আপনাদের কে বলবো।

Post Copied from:Riad Arefin‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

নিউ এলিফ্যান্ট রোডের গল্প

 

দিনে চার জেলা ঘুরে আসুন চকচকে বর্ডার রোড ধরে

একসময় মেঘালয় সংলগ্ন রাস্তাটি ছিলো অনেক এবড়ো-খেবড়ো আর কাদাময়। কিন্তু উন্নয়নের জোয়ারে রাস্তা এখন তেলের মত। মাইলের পর মাইল ড্রাইভ করবেন কোন গাড়ি নেই। শুধু মাঝে মাঝে দুয়েকটা টমটম বা অটো। জনবিরল অঞ্চল। মাঝে মাঝে একটা দুইটা জনবসতি। তাছাড়া পুরো পাহাড়ী রাস্তা জঙ্গলে ছাওয়া। পাশেই ভারতের সীমানা। এই অঞ্চল হাতির তথাকথিত উৎপাতের জন্য বিখ্যাত। তবে আমি মনে করি ঐতিহাসিকভাবে হাতিদের চলাচলের রাস্তায় ঘরবাড়ি, কাঁটাতার তুলে বাঁধা সৃষ্টি করে বরং আমরা মানুষরাই হাতিদের উৎপাত করছি।

শুরু করবেন জামালপুরের বক্সিগঞ্জ থেকে। রাস্তাই আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে শেরপুরের শ্রীবর্দী, ঝিনাইগাতি, নালিতাবাড়ি। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া হয়ে একদম নেত্রকোনার দূর্গাপুর পর্যন্ত। অবশ্য নালিতাবাড়ি আলির মোড়ের পর রাস্তা খারাপ হওয়া শুরু করবে। তাই যারা নিজ গাড়ি বা বাইকে যাবেন তারা নাকুগাঁও স্থলবন্দরের কাছাকাছি এসে ডানদিকে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যেতে পারেন শেরপুর সদরের দিকে।

যা যা দেখবেন:

মধুটিলা, লাউচাপড়া, গজনীসহ তিনটি ইকোপার্ক ও বন।

কোচ, গারোসহ নানা আদিবাসী মানুষ ও তাঁদের জীবনযাত্রা।

সোমেশ্বরী, পাগলা, কর্ণজোরা, মর্শি, ভোগাইসহ আরো অনেক পাহাড়ী নদী।

Post Copied From:Apu Nazrul‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

 

প্যাডেল স্টীমারে দিন-রাত্রি

ট্যুর নিয়ে মাথায় দুটা অপশন ছিল। দুটোর প্রতিই ছিল তীব্র টান।

১. সাজেক – মেঘের উপত্যকা
২. শতবর্ষী প্যাডেল স্টীমারে রিভার ক্রুজ

কোন ট্রিপটাকে বেছে নিব ঠিক বুঝে উঠা যাচ্ছিল না। এদিকে এক মাসে দুটো এক্সপেনসিভ ট্যুরও সম্ভব না। ব্যাষ্টিক অর্থনীতির ‘Opportunity Cost’ ধারনাটির বাস্তব উদাহরন এবার আমার সামনে। একটি সুযোগ গ্রহণ করতে গিয়ে অন্য আর একটি সুযোগ হারাতে হয়। ‘সাজেক ট্রিপ নাকি প্যাডেল স্টীমার ট্রিপ’ – এ দ্বন্দ্বে শেষমেশ জয়ী হয়ে হয়েছিল প্যাডেল স্টীমারে রিভার ক্রুজ।

ঢাকা টু মোড়েলগঞ্জ। সে ২০ ঘন্টার ট্রিপে প্রকৃতি তার অনেকগুলো রূপকেই চোখের সামনে মেলে ধরেছিল, কী দিন, কী রাতে। যেন সেও চেয়েছিল আমি প্যাডেল স্টীমারে চড়ি। তবে তার ভাবনাও ছিল, ছেলেটা মেঘ দেখতে মেঘের উপত্যকায় যেতে চেয়েছিল।

ভর দুপুরে হঠাৎ কি যেন হল। দলে দলে মেঘ উড়ে এসে জমতে শুরু করল। যেন সাজেকের মেঘগুলোকে কেউ তাড়িয়ে তাড়িয়ে নিয়ে এলো স্টীমারের সামনে। তৈরি হয় এক অদ্ভুত ঘোরলাগা দৃশ্যের। প্রকৃতি তার সন্তানকে বুঝতে না পারলে আর কে পারে? কী অসহ্য সুন্দর সে দৃশ্য!

আকাশের মেঘগুলো নদীতে গিয়ে মিশল যেন জলের সাথে তাদের গভীর মিতালী! স্টীমার তার বর্ষীয়ান দু’পায়ে ভর দিয়ে ধীর গতিতে সে সৌন্দর্যের পানে ছুটে যাচ্ছিল … আর মাস্টার ব্রীজে পা ঝুলিয়ে বসে সে দৃশ্য গিলছিলাম… আহারে জীবন, আহা জীবন…

পি এস মাহসুদ | ঢাকা-মোড়েলগঞ্জ | ০২.১০.১৭
A Trip By ট্রাভেলার্স এক্সপ্রেস
……………………………………………………………………..

👀 প্যাডেল স্টীমার সংক্রান্তঃ
৪ টি প্যাডেল চলমান – লেপচা, মাহসুদ, অস্ট্রিচ, টার্ন
সদরঘাট থেকে ৬:৩০ : শনি, রবি, মঙ্গল, বুধ
ঢাকা টু বরিশাল : ননএসি ডাবল ১২৬০, এসি ডাবল ২৩০০
ঢাকা টু মোড়েলগঞ্জ : ননএসি ডাবল ২১০০, এসি ডাবল ৩৭১৫
টিকেটঃ সহজ ডট কম / BIWTC অফিস / ঘাট

Post Copied From:Rafiqul Islam‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

ছেড়া দ্বীপ

৯ কি.মি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত সেন্টমার্টিন দ্বীপ! তার থেকে মাত্র ৩ কি.মি দূরে ছেড়া দ্বীপের অবস্থান!ছেড়া দ্বীপের সৌন্দর্যের কাছে সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্য হার মানবে! প্রবাল,গাছপালা,আর সমুদ্রের ঢেউ ছেড়া দ্বীপের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলেছে!ডাব খেতে খেতে খেতে পুরো দ্বীপটা রাউন্ড মেরে দিন! ভিডিওটা যে জায়গাতে করা ওই জায়গাটা এরিয়ে চলুন,এই জায়গাটা সব থেকে রিস্কি! খালি পায়ে ছেড়াদ্বীপে যাওয়ার মত বোকামি করবেন না! প্রবাল গুলা এতটাই দাড়ালো যে বড় ধরনের দুর্ঘটানা ঘটে যেতে পারে! ছেড়াদ্বীপে কয়েকটি উপায়ে যাওয়া যায়! স্পিডবোট,ট্রলার,সাইকেল আর পায়ে হেটে! তবে সবচেয়ে মজা পাওয়া যাবে সাইকেল চালিয়ে গেলে,পুরো গ্রামটা ঘুরে দেখে যেতে পারেবন! সাইকেলের ভাড়া ঘন্টা হিসেবে নেয়,ট্রলার ভাড়া ১৫০,আর স্পিডবোট ১৭০০ টাকা রিজার্ভ!ট্রলার আর স্পীডবোটে করে গেলে এক ঘন্টার বেশি থাকতে পারবেন না!

এবার সেন্ট মার্টিন সম্পর্কে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করি! প্রথমে সবার একটা কিনফিউশন দূর করে দেই! অনেকই মনে করতেছে রহিংা জনিত ইস্যুর কারণে শীপ চলাচল বন্ধ রয়েছে! কিন্তু না, এখন সব ধরনের সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে! যথাসময়ে কেয়ারি সিন্দাবাদ,কুতুবদিয়া চলাচল করে! কম খরচে থাকতে,খেতে হলে সেন্ট মার্টিনে গিয়ে আপনাকে দুনিয়ার সেরা ছেছড়া হতে হবে! তানাহলে আপনাকে কুপাই দিবে! ৫০০ টাকার হোটেল চাইবে ২০০০ টাকা! ১০০ টাকার মাছ চাইবে ৩০০ টাকা! সু সব কিছু দরদাম করে নিবেন! সেন্ট মার্টিন খুবই নিরাপদ একটি জায়গা,সারা রাত আপনি বীচে সময় কাটাতে পারবেন! তবে গত ২৭ নভেম্বর একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেছে! আমাদের সামনের হোটেলের সেকেন্ড ফ্লোর থেকে একটি মোবাইল চুরি হয়ে গেছে! এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটে নাই,যার জন্য হোটেল কতৃপক্ষ দুক্ষ প্রকাশ করেছে! যাইই হউক সবাই সবার মালামাল নিজ দায়িত্তে রাখুন! তবে সেন্ট মার্টিনের মানুষগুলা খুবই ভাল!
এবার আমি খরচ সম্পর্কে কিছু আইডিয়া দিচ্ছি! আমার খরচটাই তুলে ধরলাম এতে আপনারা বাকিটা বুঝে নিয়েন! চট্রগ্রাম থেকে বাসে করে কক্সবাজার ২৫০ টাকা ভাড়া! সেখান থেকে সিএনজি করে শাপলাপুর ১৫০ টাকা জনপ্রতি! শাপলাপুর থেকে ১০০ টাকা করে টেকনাফ!মেরিন ড্রাইভ উপভোগ করার জন্য রাস্তা ভেংগে ভেংগে গেছি! বাসে গেলে আপনি মেরিন ড্রাইভ উপভোগ করতে পারবেন না! ১ ঘন্টা+৩০ মিনিট টোটাল ১.৩০ ঘন্টা সময় লাগবে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে টেকনাফ যেতে! টেকনাফ থেকে লোকাল সিএনজি ২০ টাকা কেয়ারি শীপ ঘাট! সেখান থেকে ৫৫০ টাকা শীপ ভাড়া যাওয়া আসা! তারপর সেন্ট মার্টিনে পৌছে হোটেল সী-স্যান্ডে রুম বুক করছিলাম ৫০০ টাকা দিয়ে!১০০০ টাকা চাইছিল,তরকারি কিনার মত দামদর করে ৫০০ টাকা দিয়ে রুম নিয়েছিলাম! এখন অফ সিজন তাই পর্যটক কম! তাই আপনার থেকে যত নিতে পারে ততই লাভ! হোটেলেটা বেশ ভালল ছিল,সামনে খোলামেলা জায়গা ছিল! আর হ্যা একটা দোলনা ও ছিল! আর খাবারের খরচ হয়েছিল প্রতিবেলা ১৬০ টাকা করে! কোরাল মাছ ১০০,ভাত ৩০ টাকা(যত ইচ্ছে খেতে পারবেন),সবজি ৩০ টাকা! ছেড়াদ্বীপে গিয়েছিলাম স্পীডবোট শেয়ার করে, তাই খরচটা একটু বেশিশি হয়েছিল! আমার ৪ বেলা খাওয়া সহ চট্রগ্রাম পৌছা পর্যন্ত খরচ হয়েছিল ৩৮০০ টাকার মত! আমি রুমে একা থেকেছিলাম,শেয়ারে থাকলে হয়ত একটু খরচ কম হত! তবে ১০ তারিখের পর গেলে হোটেল ভাড়া ৩ ডাবল হয়ে যাবে!
সেন্ট মার্টিনে কারেন্টের ব্যবস্থা নাই,তাই পারলে সবাইবাই পাওয়ার ব্যাংক সাথে নিয়ে যাবেন! ওখানে রবি,বাংলালিংক,এয়ারটেল,গ্রামীনফোনের নেটওয়ার্ক সার্ভিস ভাল!😊
দারুচিনি বীচের যে পাশে লাল পতাকা দেওয়া আছে ওইপাশে নামবেন না! কয়েকট গভীর গর্ত আছে,এখানে কয়েকজন মারাও গেছে! আমি কোথাও ঘুরতে গেলে সেখানকার সম্পর্কে ভাল করে জেনে আসি যাতে করে অন্যদেরকে হেল্প করতে পারি!😊
টাকা বেশি থাকলে মাষ্ট বি ট্রাই করিয়েন স্কুবা করার জন্য!😍
কেউ ঘুরতে গিয়ে দয়াকরে পরিবেশ নষ্ট করবেন না!ময়লা,আবর্জনা যথাযথ স্থানে ফেলুন!
মোবাইলে টাচে একটু প্রবলেম তাই লিখতে কষ্ট হচ্ছিল! লেখায় ভূল হয়ে থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন!
কোন কিছু জানার থাকলে ইনবক্স করিয়েন!
যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে টেকনাফ গামী যেকোন বাসে করে টেকনাফ, টেকনাফ ঘাট থেকে ট্রলার অথবা শীপে করে সেইন্ট মার্টিন্স দ্বীপ। সেইন্ট মার্টিন্স থেকে ট্রলার, সাইকেল বা পা পায়ে হেটে ছেড়া দ্বীপ। থাকার জন্য অফ সিজনেও ২-৩ টি রিসোর্ট খোলা থাকে, আর সিজনে সব হোটেল আর রিসোর্ট খোলা পাবেন।

Post Copied From:

Rony Bhuiyan‎ > Travelers of Bangladesh (ToB)

যেন বিচলিত নদীর সংখ্যাতীত তরঙ্গ

প্ল্যান ছিল খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠবো। কিন্তু কিসের কি! ঘুম থেকে উঠতেই বেজে গেলো সকাল ৬টা। নিজেকে কতক্ষণ দোষারোপ করে বের হলাম কটেজ থেকে।
আমরা যখন রওনা করলাম তখন দেখি মানুষ ফিরে আসছে কংলাক পাড়া থেকে। সূর্য উঠে গেছে তাই তাড়াহুড়ার কিছু নেই ভেবে আস্তে-ধীরে হেলে-দুলে যাচ্ছিলাম। আর মনে মনে ভাবছিলাম ইস,কি মিস টা নাই করলাম! সাজেকের হেলিপ্যাডের আর্মি ক্যাম্প ছেড়ে কিছুদূর যেতেই কয়েকজন আর্মি সদস্য আমাকে দাড় করালেন। তাদের কাছে যেতেই শুরু করলেন জেরা করা।

অফিসারঃ কই যান?
আমিঃ কংলাক পাড়ায়।
অফিসারঃ কই থেকে আসছেন?
আমিঃ ঢাকা।
অফিসারঃ কি করেন? বাবার নাম কি?
আমিঃ পড়ি। বাবার নাম…..
অফিসারঃ কোন কটেজে উঠছেন?
আমিঃ অমুক কটেজে।
অফিসারঃ আইডি কার্ড আনছেন?
আমিঃ উহু,আনিনাই।
অফিসারঃ আচ্ছা যান।

প্রথমে একটু চিন্তা করলাম। কখনো শুনিনি সাজেকে কাউকে জেরা করতে। তাহলে আমাকে কেন করলো! পরক্ষনেই উত্তর পেয়ে গেলাম। আমার পরনে ছিল বাংলার ঐতিহ্য লুংগি। 😜 এই লুংগি দেখে বেশ কয়েকবার মানুষের হাসাহাসি আর আশ্চর্যের কারণ হয়ে উঠি আমি। তো যাই হোক, এভাবে কতক্ষণ উঁচু রাস্তা ধরে হাটতে হাটতে একটা জায়গায় থামি। প্রথমে খেয়াল করিনি আমার হাতের বা পাশে এমন কিছু অপেক্ষা করছে। খোলা একটি জায়গায় বসেপরি কিছুক্ষণের জন্য। সৃষ্টার হাতে আঁকা ছবি। হালকা সোনালী আভা পরছে সবুজ ঠেউয়ে। এই ঠেউয়ের খাঁজে খাঁজে জমে রয়েছে সাদা-শুভ্র মেঘ। আবার কিছু কিছু অংশে পরছে মেঘের ছায়া। এমন পাহাড় দেখেই হয়তো সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হয়তো বলেছিলেন যেন বিচলিত নদীর সংখ্যাতীত তরঙ্গ। পাহাড়ে শীতল ঝিরিঝিরি বাতাস আর এমন একটি দৃশ্য। মনে মনে ভাবছিলাম কি মিস করেছি জানিনা। কিন্তু এখন যা পেয়েছি নিঃসন্দেহে আমার দেখা সেরা মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি।

কিছু মানুষ তখনো নেমে আসছিল কংলাক থেকে। কথায় বুঝলাম তাদের মধ্যে বেশ আক্ষেপ। তারা নাকি তখনো দেখার মতো কিছুই পায়নি। 🙂

যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা-খাগড়াছড়ি-সাজেক

Post Copied From:Muhammad Shariful Islam>Travelers of Bangladesh (ToB)