নেপাল ভ্রমন

~নেপাল ভ্রমন
The Himalayan diary

ভিসা টিসার ঝামেলা নেই বলেই হয়ত দেশের বাইরে হুট করে কোন প্লান করতে গেলে প্রথম নেপালের কথাই মাথায় আসে। আমাদের অবস্থাটাও এরকম ই ছিল। যাওয়া হবে না হবেনা এরকম করতে করতে ৪ জনের ছোট একটা গ্রূপ নিয়ে হঠাৎ করেই রওনা হয়ে যাওয়া।

নেপাল ভ্রমনের ক্ষেত্রে প্রথম সাজেশন হচ্ছে রিলাক্স না করে যদি নেপালের আসল সৌন্দর্যের দেখা পেতে নেপাল যেতে চান তাহলে নেপালের সবচে পপুলার টুরিষ্ট স্পটগুলো যেমন পোখারা, নাগরকোট এগুলাকে লিষ্টের একেবারে তলায় নিয়ে যান। হিমালয় কন্যার আসল সৌন্দর্য যে আসলে লুকায়ে আছে আরেকটু ভিতরে। তাই আমাদের প্রধান লক্ষ্যই ছিল Kathmundu থেকে ৩৬০ কিমি দূরে মুসতাং জেলা। এর আবার দুটা ভাগ আছে। আপার মুসতাং আর লোয়ার মুসতাং। আমাদের প্লান এর সময়ে দুটো কাভার দেয়া কঠিন হয়ে যেত তাই লোয়ার মুসতাং এর জমসম ই ছিল টার্গেট। বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট এ শুকনা বানের ভিতর শুধু মেয়োনিজ দেয়া জঘন্য ঠান্ডা একটা স্যান্ডউইচ আর বাইরে ৫-১০ টাকায় পাওয়া যায় এমন একটা কেক খেতে খেতে ১ ঘন্টার কম সময়েই কাঠমুনডু পৌছে যাওয়া যায়। ওখান থেকে জমসম যাওয়ার উপায় ২ টি। ফ্লাইটে প্রথম পোখারা তারপর পোখারা থেকে জমসম। পোখারা থেকে জমসম পর্যন্ত পিচ্চি পিচ্চি কিছু প্লেন ছেড়ে যায় আর ওখানে পাহাড় গুলার ফাক গলে একটু পরপর নামতে থাকে। তাই ওই ফ্লাইট টাও অনেক ইন্টারেষ্টিং হওয়ার কথা। আমাদের অত বাজেট ছিলনা তাই ২য় অপশন বাস ই সই। ও জমসম জায়গাটা অন্নপূর্না conservation area এর মাঝখানে পরায় ওখানে এবং ওখান থেকে মুক্তিনাথ যাওয়ার পথে একটি পারমিটের প্রয়োজন হয়। বিমানবন্দর নেমে ট্যাক্সি নিয়ে চলে যাবেন নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডে, না চিনলে বলবেন রত্না পার্কের পাশে। সার্কভুক্ত দেশসমূহের জন্য ২০০ রুপি নিবে পারমিটের জন্য। এছাড়াও Free Independent Trekker (TIMS) এর আরেকটা পারমিট নিতে আমাদের বলা হয়েছিল যেটার জন্য ৬০০ রুপি দিতে হয়েছিল কিন্তু ওটা কোথাও চেক করেনি। তাই না নিলে সমস্যা হবেনা আশা করি। খেয়াল রাখবেন এই পারমিট দেয়া দুপুর ৩টায় বন্ধ হয়ে যায়। আমরা এর পরে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়েছিলাম, পরে স্থানীয় এক কলিগের সহায়তায় সমাধান হয়। কিন্তু আমাদের পাশেই এক ইউরোপীয় দম্পতি ওইদিনের মত পারমিট না পেয়ে হতাশ হয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল। সে যাই হোক খাওয়া দাওয়া করে রাতের বাসে বেনীর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। ভাড়া ছিল ৭০০ রুপি। কিন্তু বাস রাস্তায় প্রায় ৫ ঘন্টা নষ্ট ছিল, খুব ই বাজে সার্ভিস। আর মজার ব্যাপার হল নেপালীরা মনে হয় অনেক গা সওয়া জাতি। এই ৫ ঘন্টায় আমরা ছাড়া আর কেউ টু শব্দটাও করেনি। তাদের ভাবভঙ্গি দেখে মনে হয় এভাবে বাস নষ্ট হয়ে ৫ ঘন্টা বসে থাকা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। মনে পড়ে গেল একবার এক বাসে চিটাগাং যাচ্ছিলাম, বাস নষ্ট হওয়ার পর যাত্রীদের চিল্লাচিল্লিতে নতুন আরেক বাস এনে রওনা দিতে হয়েছিল। আর এখানে ৫ ঘন্টা কি যে হচ্ছিল তাও বুঝতেছিলাম না। আমরা তাও বাংলাতে প্রতিবাদ করার দূর্বল চেষ্ঠা করছিলাম, স্বাভাবিকভাবেই কেউ পাত্তা দেয় নাই…:p

বেনী পৌছলাম আমরা পরের দিন দুপুর ১২ টায়। সময় নষ্ট না করে তখন ই জমসম এর বাসে টিকেট কেটে উঠে পরলাম। এই বাসগুলা অনেকটা আমাদের বান্দরবনের মুড়ির টিন বাস গুলার মত। ভিড় ও এক ই রকম। চেষ্টা করবেন ‘ডিলাক্স’ নামের বাসের টিকেট কাটতে।টিকেট ৮০০ রুপি। রাস্তার অবস্থা খুব ই খারাপ। দুর্ভাগ্যক্রমে পিছনের সিটে বসলে যেতে যেতে দু তিনটা লাম্বার ডিস্ক প্রলাপ্স হয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু নাই। মাঝে ব্রেক দেয়। আমরা সবজায়গাতে নেমে মমই খাইছি। মম এম্নিতেও আমার খুব পছন্দের আর নেপালের বাফালো মম টা একদম ই অন্য লেভেলের। আর অন্য খাবারদাবারের চেয়ে এটা সস্তাও। টানা কয়দিন আসলে মম খেয়েই বেচে ছিলাম।বাস জার্নিটা ভাল কষ্ট দিলেও শেষ বিকেলের আলোয় চকচক করে উঠা অন্নপূর্না রেঞ্জের ভিউটাই মাঝে মাঝে একটু শান্তির পরশ দিয়ে যাচ্ছিল। আর হিমালয়ের কোন একটা রেঞ্জের কাছাকাছি যে আপনি যাচ্ছেন তা বুঝে যাবেন শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করলেই। জমসম পৌছতে পৌছতে রাত ১১ টা বেজে গেছে। বাস থেকে নেমেই কনকনে শীতে শরীর নাড়া দিয়ে উঠল। বুকিং দেয়া ছিলনা তাই বের হলাম হোটেল খুজতে। এটা একটা বাজে ডিসিশন ছিল। প্রায় বেশীর ভাগ হোটেলই পূর্ন ছিল। পরে জেনেসিলাম সামনের রাস্তায় আরো হোটেল আছে। কিন্তু ওই শীতে কে খুজবে তা। ৪০০০ রুপিতে ২ টা রুম নিয়ে উঠলাম Hotel Trekkers In এ। ওই অজপারাগা এ ফাইভ স্টার হোটেলের ব্যবহার আমরা কেউ আশা করিনি। কিন্তু রুম মোটামুটি হলেও তাদের ব্যবহার একেবারেই বন্ধুসুল্ভ ছিলনা। গোছলের গরম পানি দেওয়ার কথা থাকলেও তা পাইনি। তীব্র শীতে কাপতে কাপতে গোসল করতে হয়েছে। তারচেয়েও মজার ব্যাপার হচ্ছে রাতে খাওয়ার সময় ৬০০ রুপির যেই নেপালি থালি দিল তা দেখে যেকোন বাংগালি ভিক্ষুক ও তাদের একটা গালি দিবে। একটা প্লেটে ভাত, অল্প একটু সবজি, এক চিলতে শাক একটু চাটনী আর ডাল। এই জিনিস বাসায় আমাকে পয়সা দিয়েও কেউ খাওয়াতে পারতনা। নেহায়েত সারাদিন কিছু খাইনি বলে চোখ বন্ধ করে খেয়ে গেলাম।

এত পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে আর কোন কথা না বলেই যে যার মত কাইত হয়ে ঘুম। ঘুম ভাংল পরদিন ভোরে। উঠে এম্নিতেই কেন জানি জানালাটা খুললাম। প্রথমে তেমন কিছু মনে হয়নাই। মাথাটা একটু বের করে পাশে তাকাতেই স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। সূর্যের প্রথম আলোয় অন্নপূর্না রেঞ্জের কোন একটা চূড়া আমার সামনে ঝলমল করছে। সাদা চূড়া দেখতে দেখতে সূর্যের আলোয় ঝলসে হলুদ হয়ে গেল। দৃশ্যটা একটু অপার্থিব ই। কোন মতে জ্যাকেট জরায়া নিচে নামলাম। প্রচন্ড ঠান্ডা কিন্তু এই সাতসকালেই বিদেশী ট্যুরিষ্ট রা ট্রেকিং গিয়ার নিয়ে রেডি। একদিকে ঘোড়ার দল হেটে যাচ্ছে। জিপ মোটর সাইকেল সব ই চলতেছে রাস্তার উপর। আমরাও ফ্রেশ টেশ হয়ে রওনা হলাম জিপ ভাড়া নিয়ে। গন্তব্য মুক্তিনাথ। এটা আসলে একটা টেম্পল। এরকম জিনিস আমাকে একদম ই টানেনা। কিন্তু মুক্তিনাথের বিশেষত্ত্ব এর টেম্পলে নয়। যাওয়ার রাস্তায়। দুপাশের দৃশ্যকে ক্যামেরার লেন্স এ বন্দী হয়ত করা যায় কিন্তু সাথে সাথে একবার স্ক্রীনে চোখ বুলালেই বুঝা যায় বাস্তবের ধারে কাছেও কিছু আনতে পারিনি। জিপ গুলার জানালা একটু নিচে। ঝুকে বসে ঘাড় ব্যাথা হয়ে যায় তাও জানালা থেকে কেউ চোখ সরায় না কারন দৃশ্যগুলো এরকম ই। এখানে আমাদের আরেকটা ভুল ছিল। জিপের বদলে মোটর সাইকেল নেয়ার ট্রাই করবেন। তাহলে আরামসে দেখতে দেখতে যেতে পারবেন। মুক্তিনাথ যেতে বেশীক্ষন লাগেনা। পথে কাকবেনী তে একটু থেমে নিয়েছিলাম। মুক্তিনাথ টেম্পলে উঠতে একটুখানি ট্রেক করতে হয় আর কিছু সিড়ি ভাংতে হয়। এত দূর এলাম তাই উঠে গেলাম। কিন্তু টেম্পল টা মোটামুটি সাদামাটা ই। উপর থেকে ভিউটাই সুন্দর খালি। অনেকে দেখলাম ঘোড়ার পিঠে চড়ে উঠছে।

বিকেলটাও ওখানেই কাটিয়ে দিন। গরম চা হাতে ঠান্ডা বাতাসে হিমালয় এর দিকে তাকায়া থাকা সে এক অসামান্য অনুভূতি। রাতে ফিরে এলাম জমসমে। হোটেল চেঞ্জ করার ইচ্ছা থাকলেও আলসামির কারনে করিনি। পরদিন সকালে উঠে ঝটপট বের হয়ে গেলাম ধুম্বা লেক যাব বলে। ১ ঘন্টার মত ট্রেক করতে হয়। জমসম থেকে মুক্তিনাথ এর পথের মতই হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু এই রাস্তাটুকু একেবারেই অন্যরকম। কারন ওদিকটা সবুজ বিবর্জিত হলেও এখানে মাঝে মাঝেই গাছ, লতা, গুল্মের সাড়ি চোখে পড়ে। পথে অসম্ভব সুন্দর একটা লোহার ঝুলন্ত ব্রীজ পড়ে। ধুম্বা লেকটা একেবারে পিচ্চি একটা লেক। অল্প পানি , কিন্তু সত্যিকার অর্থেই টলটলা পানি। পানির নিচে ছোট ছোট মাছ একেবারে স্পষ্ট দেখা যায়। লেকের পাশে কিছুক্ষন চুপচাপ বসে থাকাটাই অসাধারন।

আপেল পেলে আপেল কিনে নেবেন, পরিশ্রান্ত ছিলাম বলে কিনা, নাকি আসলেই কে জানি, অত মজার আপেল আগে কখনো খাইনি। ওই আপেল থেকেই পাশেই একটা গ্রাম মারফাতে একধরনের জনপ্রিয় ব্র্যান্ডি তৈরী হয়। নামই মারফা ব্রান্ডি। মারফা গ্রাম টাও সুন্দর। মোটর সাইকেল ভাড়া করে ঘুরে আস্তে পারেন।
জমসম এয়ারপোর্ট টা রাস্তার পাশেই। মাঝে মাঝে ছোট প্লেনগুলা উড়ে যায়। সেই দৃশ্য ও উপভোগ করার মত।

যদিও প্ল্যান এ ছিলনা কিন্তু জমসম এ আরেক রাত থাকব কিনা এই নিয়ে আমরাই কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম, ইচ্ছা থাকলেও উপায় ছিলনা, কারন আমাদের নেপাল ভ্রমনের আরেকটা উদ্দেশ্য হচ্ছে কিছু এক্টিভিটি- প্যরাগ্লাইডিং আর রাফটিং। এজন্যে পোখারাতে যেতেই হবে। তাই ওইদিন ই জমসম ছাড়তে হল।
রাতে পোখারা পৌছে পরের দিন বিকেলের দিকে প্যারাগ্লাইডিং করি। সারাংকোট থেকে ভাসতে ভাসতে ফেওয়া লেকের মাঝে নামা অসামান্য এক অনুভূতি। এর পরের দিন রাফটিং। আমাদের হোটেল মালিক দিদি জানালেন এখন নাকি ত্রিশূলি নদী শান্ত তাই ওখানে এত মজা পাওয়া যায়না, আপার শেতী নদীতে করতে। সিদ্ধান্ত টা যে ভুল ছিলনা করতে গিয়েই বুঝেছি। র‍্যাফটিং এর এক ঘন্টা পুরো দম আটকে বসে থাকা যায়। কতবার যে ভাবছিলাম বোট টা শিউর গেছে তারপরেই কেম্নে কেম্নে আবার সোজা হয়ে গেল। সময় থাকলে হয়ত পরের দিন আবার করতাম আমরা রাফটিং। It was that much thrillling.

ওইদিন বিকাল টা অলস ভাবে কাটানোর প্লান তাই ফেওয়া লেকে নৌকা দিয়ে ঘুরলাম। পুরো নেপালে সবচে মন খারাপ হয়েছে অই বিকালে। নরমাল একটা লেক কিছুটা নোংরাই মনে হয় চারপাশে তাকালে। এই দেখতে কত জায়গা থেকে কত ট্যুরিষ্ট। আশে পাশে গড়ে উঠেছে পুরাই ট্যুরিষ্ট জোন। বার, রেষ্টুরেন্ট, পাব সবকিছু বিদেশী ট্যুরিষ্ট এ ভর্তি। অথচ আমাদের কাপ্তাই লেকের নখের সমান ও মনে হয় হবেনা ফেওয়া লেক কোন দিকে দিয়েই। পার্থক্য শুধু একটাই। কিভাবে তারা ওটাকে ট্যুরিষ্টবান্ধব করে রেখেছে। যাই হোক পোখারাতে আমরা ৩ রাত ছিলাম। এক্টিভিটি গুলার জন্যই মেইনলি। লেকের ধারেকাছে কম ই গেছি। কিন্তু লেকসাইড রোড এবং এলাকাটা ভালোই লাগে। উৎসব উৎসব একটা ভাব আছে চারদিকে।

শপিং এর ইচ্ছা থাকলে পোখারা থেকে না কিনে থামেলে চলে আসা বেটার। এক ই জিনিস মোটামোটি কম দামে পাওয়া যায়। শাল এবং পাথর বসানো অর্নামেন্টস গুলা বেশী জনপ্রিয়।

একরাত ছিলাম থামেলে, পরেরদিন দুপুরে বাংলাদেশ বিমানের ফিরতি ফ্লাইট।
৭দিনের মত ছিলাম নেপালে। জমসমের জায়গাগুলা সবচেয়ে মিস করেছি সবসময়। পোখারা ভাল লেগেছে এক্টিভিটিগুলার জন্য।
ও অনেকে কাঠমুনডু অনেক আগ্রহ নিয়ে ঘুরে, মন্দির দেখার ইচ্ছা না থাকলে কোন দরকার নাই, আমরা ভক্তপূর ও যাইনি। নাগরকোট লিষ্ট এ ছিল কিন্তু সবাই বলেছে জমসম দেখে আসার পর ওটা সাদামাটা লাগবে তাই আর যাইনি।

খাবারের মধ্যে মম টাই বেশী ভাল্লাগছে। আর পোখারাতে কিছু রোডসাইড বারবিকিঊ এর দোকান আছে। কম খরচে ভাল খাবার পাওয়া যায়। ভাল কোথাও গেলে ভেজ পিজা ট্রাই করবেন। ভালই মজা।
নেপালী থালি আমাকে বরাবরর ই হতাশ করেছে। তারা যেই থালি দিয়ে ৩০০-৬০০ রুপি রাখে বাংলাদেশে ১০০ টাকার মাঝে এক ই রকম খাবার পাওয়া যাবে :/

যতদিনের ভ্রমন ওই তুলনায় ছবি মনে হয় কম ই তোলা হইছে। ক্যামেরায় শুধু জমসমের গুলাই তুলেছিলাম। কোনটা দিব না দিবা চিন্তা করে পুরো এলবাম টাই শেয়ার দিলাম। কিছু নিজেদের ছবি ও আছে এতে এজন্য দু;খিত 🙂
[Total cost was around 40,000 taka. Including Plane fare 17500 taka + Paragliding 6500 taka + Water rafting 3100 taka]
Copied from: Rahat Raiha

মান্দারবাড়িয়া – সাতক্ষীরা

মান্দারবাড়িয়া – সাতক্ষীরা

মান্দারবাড়িয়া – সাতক্ষীরা জেলায় অবস্থিত বঙ্গোপসাগরের তীরভূমি জুড়ে এক নয়নাভিরাম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত এর নাম। বাংলাদেশে যে মান্দারবাড়িয়া নামে একটা সমুদ্র সৈকত আছে তা বেশীর ভাগ মানুষের কাছেই অজানা। সাতক্ষীরা জেলার হাড়িয়াভাঙ্গা নদীর তীরে মান্দারবাড়িয়ায় বন আর তার সম্মুখে বঙ্গোপসাগরের তীর জুড়ে নয়নাভিরাম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত যেন প্রকৃতির এক অপার সৃষ্টি। সাতক্ষীরার বুড়িগোয়ালিনীর নীলডুমুর নৌঘাট থেকে মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব আনুমানিক ৭৫ কিলোমিটার। নীলডুমুর পর্যন্ত গাড়ীতে যাওয়া যায়, তার পরের পথ যেতে হবে ইঞ্জিন চালিত নৌকা বা স্পীড বোটে। এই ৭৫/৮০ কিলোমিটার পথের পুরাটাই সুন্দরবনের বুক চিরে যাওয়া বিভিন্ন নদী। বুঝতেই পারছেন মান্দারবাড়ীয়া কেবল মাত্র হার্ডকোর ঘুরুঞ্চিদের জন্য। মান্দারবাড়িয়ার একদিকে সুন্দরবন অপরদিকে বঙ্গোপসাগরের মায়াবী জলরাশির অবিশ্রান্ত গর্জন যে কোনো মানুষকেই নেশা ধরিয়ে দেবে।নীলডুমুর ঘাট থেকে যাত্রা শুরু করে খোলপেটুয়া-কপোতাক্ষ নদের সঙ্গমস্থলের পাশ কাটিয়ে কলাগাছিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, মালঞ্চ নদী হয়ে পৌঁছতে হবে মান্দারবাড়িয়ায়। এই যাত্রাপথের পাশে দেখা যাবে আরো বিশাল নদী। এই নদীগুলোর উভয় পাশেই দেখা যাবে চিরহরিৎ সুন্দরবনকে। দেেখ দেখে চোখ জুড়িয়ে যাবে। এ যেন সবুজের রাজ্য। সুন্দরী, কেওড়া, বাইন, পশুর, গরান, গোলপাতা, সিংড়া, হেতাল, খলসী, গেওয়া গাছের সম্মিলনে এখানে ঘটেছে সবুজের মিলনমেলা। ম্যানগ্রোভ ফরেষ্টের শ্বাসমূল আর তাতে হরিণ সহ নানা প্রাণীর ছুটে চলা আপনাকে বিমোহিত করে রাখবে। নয়ন ভরে দেখার মত সে দৃশ্য। পানকৌড়ি আর বালিহাসের উড়ে যাওয়া দেখতে দেখতে এক সময় পৌছে যাবেন মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতে।প্রায় ৮ কিলোমিটার লম্বা এই সমুদ্র সৈকত যেন ছবির মত । অসম্ভব ভালোলাগার আচ্ছন্নতায় মুগ্ধ। কক্সবাজার, টেকনাফ, উখিয়া, ইনানী, সেন্টমার্টিন সহ বঙ্গপোসাগরের অনেকগুলো সৈকত হয়তো দেখেছেন। সুন্দরবনে এসে এত বড় একটি সৈকতের দেখা হয়ে যাবে তা হয়তো কেউ ভাবতেও পারবে না। মান্দারবাড়িয়া অন্য সৈকতগুলো হতে একেবারেই আলাদা। অপূর্ব সৌন্দর্য ঘেরা এক জায়গা। পিছনে বাঘের ভয় আর সামনে অসম্ভব ভালোলাগার হাতছানি দেয়া সমুদ্র, বিস্তীর্ণ সৈকত, সবুজ রহস্যে ঘেরা বন। পর্যটকেরা এখানে নির্জন সৈকতে নিজেকে নষ্টালজিয়ার জালে জড়িয়ে খুঁজতে থাকবেন ভিন্ন এক অনুভূতি। সৈকতের বুকে হরিণ আর বাঘের পায়ের ছাপ সে সম্মোহনকে আরও বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুন। তাই যারা ভ্রমন বিলাসী আর এ্যাডভেঞ্চার করত আগ্রহী তারা ঘুরে আসুন দেশের অজানার সুন্দর সৈকত মান্দারবাড়িয়া থেকে আর নিজের নামটা লিখিয়ে রাখুন নতুনদের তালিকায়।

কিভাবে যাওয়া যায়ঃ
ঢাকার শ্যামলী থেকে সাতক্ষীরার বাস ধরে সাতক্ষীরা/শ্যামনগর যেতে হবে। ভাড়া এসি ৫০০/৬০০, নন এসি ৩০০/৩৫০ টাকা। ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার দূরত্ব ৩৪৩ কিলোমিটার। সাতক্ষীরা সদর থেকে বুড়িগোয়ালীনি ৭০ কিলোমিটার। সহজে মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতে যাওয়া যাবে বুড়িগোয়ালিনীর নীলডুমুরস্থ নৌঘাট থেকে। ইঞ্জিন চালিত নৌকা, স্টিমার বোটে করে শীত মৌসুমে (অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) সময়ে মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতে যাওয়া যাবে। স্টিমার বা ইঞ্জিন চালিত নৌকা করে পৌঁছাতে সময় লাগবে ৬/৭ ঘণ্টা। স্পিড বোট যোগে বুড়িগোয়ালিনীর নীলডুমুর থেকে মান্দারবাড়িয়া পৌঁছাতে সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা।

তিন চার দিনের এই ধরনের ট্যুরে প্রতিজনের খরচ হয় সর্বসাকুল্যে কমবেশি ৭-৮ হাজার টাকা।
তবে সাতক্ষীরার এই রুটে মালঞ্চ টুরস্ এন্ড ট্রাভেলস প্যাকেজ পরিচালনা করছে। এখান থেকে সুন্দরবনের দর্শনীয় স্থানগুলো কাছে হয়, সময় লাগে কম, তাই খরচও কম। কম সময়ে সুন্দরবনের অন্যতম চারটি স্পটের মধ্যে হীরণ পয়েন্ট, নীলকমল, দুবলারচর ও মান্দারবাড়ি সমুদ্র সৈকত ঘুরে আসা যায়। জনপ্রতি খরচ হবে আড়াই হাজার টাকার মত।

কোথায় থাকবেনঃ
সাতক্ষীরার কোন হোটেলে কিংবা শ্যামনগর রেষ্ট হাউজে। সাতক্ষীরায় ভাল মানের আবাসিক হোটেল ও কটেজ সমূহঃ

১) হোটেল সংগ্রাম (ইটাগাছা)
২) হোটেল. সম্রাট (পলাশপোল)
৩) হোটেল সীমান্ত (পলাশপোল)
৪) মোজাফ্ফর গার্ডেন (খড়ি বিলা)
৫) হোটেল মোহনা (ঢাকা স্টান্ড)
৬) হোটেল উত্তরা

কুয়াকাটা ট্যুর প্লান !

কুয়াকাটা ট্যুর প্লান ( দুই দিনের , তিন রাতের জন্য)
কক্সবাজার সি বিচ দেখতে দেখতে যারা ক্লান্ত হয়ে গিয়েছেন তাদের জন্য এই সেনসেশনাল ডেস্টিনেশন। যারা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত নিজ চোখে দেখতে চান তাদের জন্য এই ট্যুর।যারা শুটকি কিভাবে প্রসেসিং করে দেখতে চান তারা দেখতে পাবেন কুয়াকাটায় গেলে, শুটকি পল্লী নামে আলাদা একটা পল্লী আছে এইখানে।বেশি আর্টিফিসিয়াল হয়ে যাওয়ার আগেই যারা সি বিচ দেখতে চান তারাও যেতে পারেন এইখানে।কুয়াকাটায় গিয়ে এই ফিলিংস টা পেয়েছি।
তাই যারা সারা সপ্তাহের ক্লান্তি কাটাতে উইকেন্ডের দুই দিন ইট পাথরের শহর থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে কাটা চান তাদের জন্য এই ট্যুর প্লান টা করেছি। আপনার এই ট্যুর প্লান থেকে কোন ভাবে উপকৃত হলে অনেক কষ্ট করে লিখা স্বার্থক হবে।

কিভাবে যাবেনঃ
বেশ কয়েক ভাবে যাওয়া যায়। প্রথমেই শেয়ার করেছি আমি কিভাবে গিয়েছি। সদর ঘাট থেকে প্রতিদিন ৮-৯ টার মধ্যে বেশ কিছু লঞ্চ বরিশাল এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেয়। সেই লঞ্চ এ করে প্রথমে বরিশাল লঞ্চ ঘাট যেতে হবে। তারপর একটা অটো নিয়ে রুপতলী বাস স্টেশন এ যেতে হবে। সেখান থেকে কুয়াকাটার উদ্দেশ্য বেশ কিছু লোকাল বাস ছেড়ে দেয়। যে কোণ একটায় উঠে পড়েন। সেই বাস ই আপনাকে নামিয়ে দিবে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট বিচ এ।
এছাড়া লঞ্চে করে পটূয়াখালী তে যেতে পারেন, সেখান থেকে বরিশালের তুলনায় আরো কম সময়ে চলে যেতে পারবেন কুয়াকাটা বিচে।
এছাড়া সায়েদাবাদ থেকে কুয়াকাটার উদ্দেশ্য বেশ কিছু বাস ছেড়ে দেয়, সেই বাসে সরাসরি যেতে পারেন কুয়াকাটা। এক্ষেত্রে দুই টা ফেরি ঘাট পার হতে হবে।

বিস্তারিত ট্যুর প্লানঃ
এই প্লান আমার নিজের ট্যুর প্লান এবং প্রাপ্ত অভিজ্ঞতার আলোকে করেছি, চেষ্টা করেছি দুই দিনে সময়ের বেষ্ট ব্যবহার হয়, আপনার নিজেদের মত কাষ্টোমাইজ করে নিতে পারেন।

প্রথম রাতঃ
ঢাকা থেকে সদর ঘাট এ গিয়ে বরিশাল/পটূয়াখালীর লঞ্চে উঠে পড়েন, ৯ -১০ ঘন্টার মধ্যে পৌছে যাবেন বরিশাল অথবা পটুয়াখালী। সেখান থেকে বাসে করে কুয়াকাটায় চলে যাবেন।বরিশাল থেকে বাসে গেলে ১১ টা থেকে ১২ টার মাঝে পৌছে যাবেন কুয়াকাটায়।
প্রথম দিনঃ গিয়ে হোটেলে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিন। বেশি সময় নিবেন না কারন অলরেডী হাফ ডে চলে গিয়েছে। তাড়াতাড়ি চ লে যাব জিরো পয়েন্ট বিচের কাছের মোটর বাইক ষ্টেশনে। একটা মোটর বাইক রিজার্ভ করে নিন। তাকে বলবেন গঙ্গামতীর চর পেরিয়ে যেন লাল কাকড়ার চরে নিয়ে যায়। সাধারনত বেলা ১১ টার পরেই চমতকার লাল কাকড়া গুলা রোদ পোহাতে বের হয় সেখানে। অজস্র লাল কাকড়া বিচ দিয়ে রোদ পোহাচ্ছে। দৌড়াচ্ছে, দেখলেই আপনার মন ভাল হয়ে যাবে। সেখান থেকে ফিরে চলে যান জিরো পয়েণ্ট বা মেইন বিচে। ঝাপিয় পড়ূন উত্তাল সমুদ্রের বুকে , মজা করুন, ক্লান্ত হয়ে গেলে বিশ্রাম নিন বিচের ছাতাওয়াল বিছানা গুলায়। কিছু সময় বিচে কাটিয়ে হোটেলে চলে আসুন। নামায , লাঞ্চ সেড়ে কিছু সময় বিশ্রাম নিন অথবা আবার চলে যেতে পারেন মেইন বিচে। তবে মনে রাখবেন বিকাল টা কিন্তু কাটাতে হবে লেবুর চরে।

জ্বি , ঠিকই শুনেছেন লেবুর চর। মোটামুটি দুই ঘন্টা হাতে নিয়ে যান অর্থাত সূযাস্ত যাওয়ার দুই ঘণ্টা আগে শুরু করুন।চাইলে মোটরেও যেতে পারেন, বিচ ঘেষে নিয়ে যাবে। অথবা চাইলে ইঞ্জিন চালিত ভ্যানেও করে যেতে পারেন। কিছু দুর রাস্তা খারাপ থাকলেও সময় টা ভাল লাগবে। মোটরে করে চলে যান লেবুর চরের শেষ মাথায়। সেখান থেকে আন্ধার মানিকের তিন নদীর মোহনা দেখে আবার চলে আসেন লেবুর চরে। সেখানকার শ্বাসমূলয়ী গাছগুলার সজ্জা আসলেই সুন্দর।কিছু সময় হেটে কাটিয়ে দিন। একমাট্র লেবুর চরেই দেখেছি বেশ কিছু দোকান তাজা মাছ নিয়ে ফ্রাই করে দেওয়ার জন্য থাকে। দেখে শুনে পছন্দ করা মাছ অল্প সময়ের মধ্যে তারা ফ্রাই করে দিবে। কিছু তাজা মাছ খেয়ে অপেক্ষা করুন সূর্যাস্ত দেখার জন্য। অপরুপ সূর্যাস্ত দেখে চলে আসুন আবার আপনার হোটেলে। সন্ধ্যা থেকে রাত কাটিয়ে দিন মেইন বিচে।তারপর ডিনার করে হোটেলে ফেরত।

ওহ! আসল কথাই বলা হয়নি।সূর্যাস্ত ত দেখা হল, কিন্তু সূর্যোদয়। তার ত একটা ব্যবস্থা করতে হবে।সে জন্য আজকে রাতেই একটা মোটর কে রিজার্ভ করে রাখবেন। তাকে বলে রাখবেন, পরের দিন সকালে গঙ্গামতীর চরে যাবেন সূর্যোদয় দেখতে। সবকিছু ফিক্স করে একটা তাড়াতাড়ি চলে যান ঘুমের রাজ্যে।

দ্বিতীয় দিনঃ
যদি ৬ টায় সূর্য উঠে তবে ঘুম থেকে উঠে পড়ূন ৪ঃ৩০ এ। এর মধ্যে ফ্রেশ হয়ে প্রস্তুতি নিয়ে নিন।দেখবেন ৫ টার মধ্যেই আগে থেকে রিজার্ভ করে রাখা মোটর চালক আপনাকে কল দিবে । সে অলরেডী আপনার হোটেলের নিচে এসে অপেক্ষা করছে।সো চলে যান নিচে। এইবার মোটরে করে গঙ্গামতীর চরের উদ্দেশ্যে ক রে বিচের পার ধরে রাতের বেলায় মোটর করে যাত্রা শুরু করে দিন। খুব ভাল লাগবে, কথা দিচ্ছি ভাই। গিয়ে দেখবেন আপনার মত শত শত লোক চলে এসেছে গঙ্গামতীর চরে। অপেক্ষা করুন সেই পরম স ময়ের জন্য। সেখানে সূর্যোদয় দেখা হয়ে গেলে সেই মোটর কে বলে ঘুরে আসতে পারেন আরো কিছু জায়গা। যেমন কাউয়ার চর, রাখাইন পল্লী, লাল কাকড়ার চর, কুয়াকাটার কুয়া, মিষ্টি পানির কুয়া। বৌদ্ব মন্দির। ঘুরে তাড়াতাড়ি চলে আসেন মেইনবিচে। এইবার চলে এসেছে রিভার ক্রজিং এর পালা। যেতে হবে ফাতরার বন, শুটকি পল্লী। এরজন্য টিকিট কাটতে হবে মেইন বিচের আগের রোডে একটা ট্যুরিষ্ট স্পট থেকে।মোটামুটি ৪ ঘন্টার ব্যাপার। যে ট্রলার এ যাবেন তার ইঞ্জিন থেকে কিছু দূরে বসলে খুব চমতকার সময় কাটবে। শুটকি পল্লী, ফাতরার বন ,আরেক টা লাল কাকড়ার চর ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে এই ট্রলার।

এই ক্রুজিং শেষ করে ফেরত আসবেন মেইন বিচে। হোটেল থেকে চেক আউট হয়ে যান। এরপর ফেরার পালা।
আপনার প্লান অনুযায়ী ফেরত আসুন। আমি রাত ৯ঃ৩০ এ বরিশাল থেকে সুরভী ৯ এ করে ফেরত এসেছিলাম। তাই দুপুর ২ঃ১৫ এ কুয়াকাটা থেকে বরিশাল এর গাড়ী তে উঠেছিলাম। বরিশাল এ এসে যে সময় হাত ছিল শশী মিষ্টান্ন এর মজার ছানা , রসগোল্লা, আর হক সুইটস এর মালাইকারী খেয়ে কাটিয়েছিলাম। তারপর লঞ্ছে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা।

কেমন খরচ হতে পারেঃ

খরচ আসলে ফিক্স কিছু না, রাফ আইডিয়া দেওয়া যায়, যেমন বরিশাল এর লঞ্ছে গেলে ২৫০ টাকা ডেক ভাড়া আবার ১০০০-৫০০০ টাকার কেবিন ও আছে। বরিশাল থেকে কুয়াকাটার বাস ভাড়া ২৫০ টাকা।হোটেল এর ভাড়া ৫০০ থেকে ১৫০০। আবার ফাইভ স্টার নামের হোটেলে গেলে নাকি ১০০০০ ও হতে পারে।

মোটর বাইক বা ভ্যানে লেবুর চর- ২০০-৪০০ টাকা।

মোটর বাইক এ করে গঙ্গামতীর চর ( সব গুলা স্প ট সহ)- ৫৩০ টাকা।

ট্রলার এ করে ফাত রার বনের উদ্দেশ্যে ক্রুজিং- ২৮০ টাকা পার পার্সন।

খাওয়া দাওয়া ১০০-১৫০ টাকা পার পার্সন পার বেলা।

কিছু বিশেষ বিষয়ঃ

১। ট্যুরিষ্ট পুলিশ কে বেশ অ্যাক্টিভ দেখেছি কুয়াকাটায় ( ২০১৬ )। যে কোন সমস্যায় তাদের দ্বারস্থ হন।

২। মোটর, হোটেল ভাড়া করার সময় দাম দর ভাল ভাবে করবেন।

৩। আমার কাছে মনে হয়েছে যদি আসার সময় বরিশাল লঞ্চ ঘাট না হয়ে বাসে করে আসতাম তাহলে মে বি আরো বেশি ভাল হত। কারন ঢাকার বাস গুলা ৬ টা , সাড়ে ৬ টায় ছাড়ে। আর বরিশাল হয়ে আসার কারনে আমাকে ২ টা বাজেই রওনা দিতে হচ্ছে। তেমনি যদি যাওয়ার সময় বরিশাল এর লঞ্চ ঘাট না হয়ে প টূয়াখালী লঞ্চ ঘাট হয়ে যেতাম তাহলে ২ ঘণ্টা আগেই কুয়াকাটায় পৌছাতাম। তাই সবাই কে অনুরোধ প্লান করার সময় বিষয় গুলা মাথায় রাখবেন।

Content Copied From: Travelers of Bangladesh (ToB)

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত/বাঁশবাড়িয়া সি-বিচ।

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত/বাঁশবাড়িয়া সি-বিচ।
সমুদ্রের বুকে আধা কিলোমিটার পর্যন্ত এই ব্রিজের মাধ্যমে হেঁটে যেতে পারবেন ভাটার সময়,,আর জোয়ারের সময় পানির ঢেউ বাড়ার সাথে সাথে কিনারায় চলে আসতে হবে😊
অন্যরকম এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি পাবেন জোয়ারের পানির ঢেউয়ের মধ্যে সমুদ্রের বুকে হেঁটে বেড়াতে😊

আর আপনি চাইলে ১০০ টাকায় টিকেট কেটে স্প্রিট বোটে করে সমুদ্রের বুকে ঘুরে বেড়তে পারবেন😊

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে চিটাগাং গামী বাসে(৫২০ টাকা ভাড়া) করে সিতাকুন্ড পার হয়েই বাঁশবাড়িয়া বাজারে নেমে যাবেন,,কন্ট্রাক্টটার কে বললেই হবে বাঁশবাড়িয়া বাজারে নামিয়ে দিবে। বাঁশবাড়িয়া বাজার থেকে সিনজি করে জনপ্রতি ২০ টাকা করে চলে যাবেন বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতে/সি-বিচে😊

রাঙ্গামাটি ভ্রমন সহায়িকা

রাঙ্গামাটি ভ্রমন সহায়িকা

অরণ্য, পাহাড়, ঝর্না, লেক, পাহাড়ী নদী আর পাহাড়ী আদিবাসী এসব যাদের পছন্দ ভ্রমনের জন্য তারা বেছে নিতে পারেন রাঙ্গামাটি জেলাকে।

কি কি দেখবেন?

১) শুভলং ঝর্ণাঃ কেবল বর্ষাকালে শুভলং ঝর্নার পানি থাকলেও অসাধারন শুভলং চ্যানেল দেখতে সারা বছরই পর্যটকদের আগমন ঘটে এখানে। ঘুরে দেখতে পারেন শুভলং আর্মী ক্যাম্প ও শুভলং বাজার। রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার থেকে শুভলং আপ-ডাউন রিজার্ভ বোট ভাড়া প্রায় ১২০০ টাকা।খরচ কমাতে এবং ইঞ্জিন বোটের ইঞ্জিনের বিকট শব্দ থেকে রক্ষা পেতে রিজার্ভ বাজার থেকে লঞ্চে শুভলং যেতে পারেন। লঞ্চ ভাড়া জনপ্রতি ৫০ টাকা।

২) ঝুলন্ত ব্রিজঃ দুই পাহাড়ের মাঝে প্রায় ঝুলন্ত এই ব্রিজটি দেখতে রাঙ্গামাটিতে অসংখ্য পর্যটকের আগমন ঘটে। ব্রিজের এক পাশের পাহাড়ের উপর রয়েছে শিশুদের জন্য দোলনা, স্লিপার সহ অন্যান্য বিনোদনের ব্যবস্থা।ব্রিজের নিচ থেকে নৌকা ভাড়া করে লেকে ভ্রমন করতে পারেন। ঝুলন্ত ব্রিজে প্রবেশ ফি জনপ্রতি ১০ টাকা।শহরের তবলছড়ি থেকে ঝুলন্ত ব্রিজে সিএনজি ভাড়া ৫০-৬০ টাকা, বনরূপা থেকে ১২০ টাকা।

৩) রাজবন বিহারঃ রাঙ্গামাটি ঘুরতে গেলে আবশ্যই রাঙ্গামাটির ঐতিয্যবাহী রাজবন বিহার ঘুরে আসবেন।এটি রাঙ্গামাটি জেলার চাকমাসহ অন্যান্য উপজাতীদের প্রধান বিহার। মূলত পাশ্চাত্য ধাচের নৈর্মান কৌশল ও স্থাপত্যের কারনে পর্যটকদের আকর্ষন এই বিহারটি। বিহারে গেলে বনভান্তেরর (ধর্মগুরু) মমি দেখে আসবেন। রাজবন বিহারের পাশেই চাকমা রাজার বাড়ি।রাজবাড়ি যেতে নৌকা পারাপার জনপ্রতি ৫ টাকা। শহরের বনরূপা থেকে রাজবন বিহারের সিএনজি ভাড়া ৫০ টাকা, তবলছড়ি থেকে ১২০ টাকা।

*** রিজার্ভ বাজার থেকে ১৫০০ টাকায় বোট নিয়ে উপরের ৩/৪ টি স্পট সাথে টুকটুকি ইকো ভিলেজ, চাংপাং, পেদাটিংটিং একসাথে ঘুরতে পারেন। তবে শেষ ৩ টি স্পট মুলত দ্বীপের মধ্যে খাবার রেস্ট্যুরেন্ট।খাবার সামান্য কস্টলি হলেও পরিবেশ ও পাহাড়ি ধাচের কিছু খাবারের জন্য অন্তঃত একবেলা এখানে খেয়ে নিবেন।

৪) শেখ রাসেল এভিয়ারী এন্ড ইকো পার্কঃ কাপ্তাই অবস্থিত পার্কটিতে রয়েছে বাংলাদেশের ধীর্ঘতম (২.৫ কিঃমিঃ) ক্যবল কার।পার্কে প্রবেশ ফি ২৩ টাকা এবং ক্যাবল কারের টিকেট ফি ২৩০ জনপ্রতি টাকা (বাচ্চাদের ১১৫ টাকা) টাকার পরিমান একটু বেশি মনে হলেও ১৫ মিনিটের এক অসাধারন এডভ্যাঞ্চার উপভোগ করবেন এই ক্যবল কার ভ্রমনে। রাঙ্গামাটি হতে ইকো পার্কের বাস ভাড়া জনপ্রতি ৬০ টাকা।

৫) ঝুম রেস্তোরাঃ কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত এই ট্যুরিস্ট স্পটটি শেখ রাসেল এভিয়ারী এন্ড ইকো পার্ক থেকে ৬ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত। প্রবেশ ফি ১০ টাকা।এখানে বসে উপভোগ করবেন পাহাড়ী নদী, নদীর বাক, পাহাড় এবং চা বাগান। দুপুরের খাবার এখানেই সেরে নিবেন। আর নৌকায় নদী ভ্রমন মোটেও মিস করবেন না।নদীর দুই পাশে খাড়া পাহাড় ও অরণ্যের কারনে বাংলাদেশের যে কোন নদী অপেক্ষা এখানে নৌ ভ্রমনের স্বাদই আলাদা।

৬) চিৎমরম গ্রাম ও টাওয়ারঃ ঝুম রেস্তরা হতে ৪ কিঃমিঃ দূরে চিৎমরম। এখানে রয়েছে বনবিভাগের নির্মিত ২ টি টাওয়ার। দূরদূরান্তের পাহাড়, কাপ্তাই লেক, কর্নফুলী নদী উপভোগ করা যাবে এই পাহাড় থেকে। হাতে সময় থাকলে নদী পাড় হয়ে ঘুরে আসতে পারেন চিৎমরম গ্রামে।মার্মা অধ্যুষিত এই গ্রামে মার্মাদের কৃষ্টি-কালচার দেখার পাশাপাশি চিৎমরম মন্দিরও ঘুরে দেখতে পারেন। *** রাঙ্গামাটি হতে ১৫০০-২০০০ টাকায় সিএনজি অথবা ৩০০০-৪০০০ টাকায় মাইক্রবাস রিজার্ভ নিয়ে কাপ্তাই উপজেলার শেখ রাসেল এভিয়ারী এন্ড ইকো পার্ক,ঝুম রেস্তোরা,চিৎমরম গ্রাম ও টাওয়ার দেখতে পারেন।রিজার্ভ গাড়িতে অসাধারন প্রাকৃতিক সৌন্দয্যে ভরপুর রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই এর নতুন রাস্তা ভ্রমন করতে পারেন যা বাসে ভ্রমনে সম্ভব নয়। আর আগে থেকেই অনুমতি নিয়ে আসলে কাপ্তাই এ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ও কর্ণফুলী পেপার মিল ঘুরে দেখতে পারেন।

*** রাঙ্গামাটি বেড়াতে আসলে অবশ্যই একদিন কাপ্তাই উপজেলার জন্য বরাদ্দ রাখা উচিত।

কোথায় থাকবেন?.

১) রংধনু গেস্ট হাউজঃ ভাড়া ফযামিলি বেড ৬৫০ টাকা, কাপল বেড ৫০০ টাকা, ফোনঃ ০১৮১৬৭১২৬২২, ০১৭১২৩৯২৪৩০

২)পর্যটন মোটেলঃ রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজের পাশেই অবস্থিত।ভাড়া নন এসি টুইন বেড- ১২০০ টাকা, এসি টিন বেড- ২০০০ টাকা। ফোন- ০৩৫১-৬৩১২৬ ওয়েবসাইট- Click This Link ৩) হোটেল গ্রিন ক্যাসেলঃ রিজার্ভ বাজারে অবস্থিত। ভাড়া নন এসিঃ সিঙ্গেল বেড- ৮০০ টাকা, কাপল বেড- ১০০০ টাকা, ত্রিপল বেড ১২০০ টাকা। এসি- কাপল বেড-১৬০০, ত্রিপল বেড ২০০০ টাকা। যোগাযোগঃ ০৩৫১-৬১২০ 4) হোটেল সুফিয়াঃ ০১৫৫৩৪০৯১৪৯, ফিসারী ঘাট, কাঁঠালতলী, রাঙ্গামাটি।

কিভাবে যাবেন ?

ঢাকা হতেঃ ঢাকার ফকিরাপুল মোড় /সায়দাবাদ জনপদের মাথায় রাঙ্গামাটিগামী অসংখ্য বাস কাউন্টারের অবস্থান। সকল বাসই সকাল ৮.০০ হতে ৯.০০ টা এবং রাত ৮.৩০ হতে ১১.০০ এর মধ্যে ঢাকা ছাড়ে। ভাড়াঃ ঢাকা-রাঙ্গামাটিঃ এসি ৯০০ টাকা (শ্যামলী), বিআরটিসি এসি ৭০০ টাকা, নন এসি সকল বাস- ৬২০ টাকা।

চট্টগ্রাম হতেঃ চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড়ে রাঙ্গামাটিগামী বাস কাউন্টার সমূহের অবস্থান। এখানে লোকাল ও ডাইরেক্ট দুই রকমের বাস পাওয়া যায়। ভাড়া সামান্য বেশি হলেও ডাইরেক্ট বাসে উঠাই বুদ্ধিমানের কাজ। ভাড়াঃ চট্টগ্রাম- রাঙ্গামাটিঃ ১২০ টাকা

Content Copied From: Travelers of Bangladesh (ToB)

কেরালা ট্যুর

কয়েকজন ভাইয়া আর আপুর অনুরধে আমার কেরালা ট্যুর এর কিছু ছবি শেয়ার করলাম।
১। আমাদের ট্যুর এর সকম ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন কলকাতা এর নবকুমার দাদা। উনি আমার সকল ট্যুর অপারেট করে থাকেন। আমরা কলকাতা থেকে চেন্নাই এক্সপ্রেসে করে চেন্নাই যাই আর এটা প্রায় ২৮ ঘণ্টার রেল ভ্রমন। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী জয়ললীতা হাসপাতালে ছিলেন আর তাই সেখানকার অবস্থা নিয়ে চিত্নায় ছিলাম। আমরা চেন্নাই এর মাউন্ট রোডের একটা ৩* এ ছিলাম। এই রোডের খুব কাছেই বিখ্যাত মেরিনা বিচ। অনেক সুন্দর একটা বীচ। চেন্নাই শহরটা অনেক সুন্দর, গোছানো আর পরিপাটি। সেখান থেকে আমরা এক্সপ্রেস অয়ে হয়ে পন্ডিচেরিতে চলে গিয়েছিলাম আর সেখানে ঢোকার পথে এন্ট্রি করতে হয়। আমাদের ড্রাইভার নিজেই সব করেছিলেন। এতো সুন্দর, সোজা রাস্তা খুব কমই দেখেছি। পন্ডিচেরীতে আমরা ওরো বিচ, অরবিন্দ আশ্রম, রক বিচ, মহাত্মা রোডের মেইন চার্চ ইত্যাদি দেখেছিলাম। পুরা শহরেই অনেক ফরাসি নাগরিক দেখতে পাবেন আর শহরটা এতো সুন্দর যে দেখে মনে হবে আপনি ফ্রান্স এ চলে এসেছেন।

২। পন্ডিচেরী থেকে আমরা ট্রেনে করে কেরালা এর রাজধানী ত্রিভান্দামে গিয়েছি। পথে অসাধারন ভিউ আপনি দেখতে পাবেন। যা দেখছিলাম তাই যেন ভাল লাগছিলো। ত্রিভান্দাম স্টেশনে আমাদের জন্য গাড়ি রেডি করাই ছিল। সমস্যা হচ্ছে এখানকার কেউ হিন্দি বা ইংরেজী ব্যবহার করে না, তামিল আর মালায়লাম ভাষায় কথা বলেন। তাই তাদের সাথে কমিউনিকেট করা একটু জটিল। ড্রাইভার আমদের সোজা কোভালাম বিচ এরিয়া তে নিয়ে যায় যেটা নিয়ে আমি আরেকটি জায়গায় লিখেছি। এখানে যতো সময় কাটানো যায় ততই ভাল লাগে। সেখান থেকে আমরা গাড়িতে করেই কন্যাকুমারীতে যাই। মাঝে দেখে নেই শতাব্দী পুরাতন সুচিন্দ্রাম মন্দির। বিশাল এই মন্দিরে সময় নিয়ে ঘুরে দেখতে হয় আর প্রবেশের সময় ছেলেদের খালি গায় আর জুতা খুলে প্রবেশ করতে হয়। ছবি তুলতে পারমিশন নিতে হয়।

৩। কন্যাকুমারী… তামিলনাডু রাজ্যের অন্তর্গত ভারতের একেবারে শেষ সীমানা। ভোর বেলা সূর্জ উঠা দেখার জন্য রুম থেকে বের হয়েই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমার তিন দিকে বিশাল সাগর আর নতুন দিনের আলো দেখা যাচ্ছে। কি যে একটা অনুভুতি ছিল তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। পরে আমরা কন্যাকুমারী এর বিবেকানন্দ রক দেখতে যাই। একটা ফেরি টাইপ জাহাজে করে যেতে হয় সমুদ্র দিয়ে, পানি অনেক উত্তাল। ভয় পাবার কিছু নেই। বিবেকানন্দ রকে গেলে আপনার মনে হবে যে কই এলাম। সেই সুন্দর অনভুতির কথা লিখে বুঝাতে পারবো না। সেখান থেকে আমরা গেলাম ত্রিবেনি তে যেখানে তিন সাগরের পানি এক হয়- আরব সাগর, ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর পরস্পর মিলিত হয়েছে, সেখানেই দেবী কুমারীর মন্দির অবস্থিত আর আপনি ভারতের শেষ সীমানার রকের উপর দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে পারবেন। এখান সাগরে খুব একটা নামতে দেয়ে না পুলিশ কারন অনেক উত্তাল থাকে পানি। এই শহরের প্রধান পর্যটনকেন্দ্রগুলি হল দেবী কুমারীর মন্দির, বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল, প্রাচীন তামিল কবি তিরুবল্লুবরের ১৩৩ ফিট উঁচু মূর্তি এবং গান্ধীমণ্ডপম্‌ (ভারত মহাসাগরের জলে মহাত্মা গান্ধীর চিতাভষ্ম বিসর্জনের আগে এখানে তা রাখা হয়েছিল)।

৪। পরের গন্তব্য ছিল মাদুরাই। এটা মন্দিরের শহর। অনেক পুরাতন আর বড় বড় মন্দির আছে এখানে। মীনাক্ষি মন্দির এখানকার প্রধান দেখার জায়গা। অনেক সিকিউরিটি থাকে এই মন্দিরে, প্রবেশের পড়ে ছবি তুলতে ৫০ রুপি টিকেট কাটতে হবে। আর্কিটেকচারাল বিউটি অনেক সুন্দর। ৩-৪ ঘণ্টা লাগবে পুরা মন্দিরটি ভাল্ভাবে ঘুরে দেখার জন্য। এছাড়াও আছে কোদাল আজগার মন্দির, থিরুমালাইনায়াক্কার মন্দির, গান্ধী মেমরিয়াল ইত্যাদি। চিকিতসার জন্য এখানকার এপোলো হাস্পাতাল বিখ্যাত।

৫। পুনরায় আমরা কেরালা রাজ্যে প্রবেশ করি মুন্নার দিয়ে। এতদিন অনেক গরমের মাঝে ছিলাম কিন্তু মুন্নার এ যাওয়ার সাথেই বেশ শীত। জ্যাকেট গায়ে থাকা। মুন্নার যাবার পথটা অনেক এক্সাইটিং। পথে পথে দাঁড়াবেন আর ছবি তুলবেন। পুরাটাই পাহাড়ি পথ। এই এলাকায় খ্রিস্টান সম্প্রদায় এর মানুষ বেশী, গরুর মাংস অনেক ভাল রান্না করে। অনেক গুলো চার্চ ভিজিট করেছি। ইরাভিকুলম জাতীয় উদ্যানমুন্নার ও তার আশেপাশে অবস্থিত আকর্ষণীয় স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইরাভিকুলম জাতীয় উদ্যান। মুন্নার থেকে আনুমানিক 15 কিমি দূরত্বে অবস্থিত এই উদ্যানটি মূলত অবলুপ্তপ্রায় পাণীদের জন্য বিখ্যাত, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নীলগিরির বুনো ছাগ। আনুমানিক 97 বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত এই উদ্যান নানান ধরনের দুর্লভ প্রজাপতি, জীবজন্তু ও পাখিদের বসবাসস্থল। মুন্নার শহর থেকে 13 কিলোমিটার দূরত্বে স্থিত আরেকটি দর্শনীয় স্থান হল মাত্তুপেত্তি। সমুদ্র সমতল থেকে আনুমানিক 1700 মিটার উচ্চতায় স্থিত মাত্তুপেত্তি শহরটি সংরক্ষণ স্থাপত্যমূলক জলাধার ও সুন্দর ঝিলের জন্য বিখ্যাত, যেখানে আপনি নৌবিহার করতে পারেন এবং এখানকার পারিপার্শ্বিক অঞ্চল ও ভূদৃশ্যের ভরপুর আনন্দ নিতে পারেন। আর চা বাগান। পথের পাশে সারি সারি চা বাগান। টাটা টি এস্টেট মাইলের পরে মাইল। পথে দাড়িয়ে ২ রুপি দিয়ে খাটি চা খেয়ে দেখতে পারেন। এখানে পাওয়া যায় ঘরের বানানো চকলেট। কেজি হিসেবে কিনতে পারবেন সেই চকলেট, দাম ০৩০০-৫০০ রুপি/ কেজি…

চলবে- আলেপ্পি, কোচি, মহাবালিপুরাম …

Context copied from:Rashed Rahman

বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট- তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়.

#আমার_অদেখা_বাংলাদেশ_০পয়েন্ট_বাংলাবান্দা_তেতুলিয়া_পঞ্চগড়

আপনার কি মনে শান্তি নেই? অফিসে বস দাব্রানি দেয়, বাসায় গেলে বউ ঘেন ঘেন করে? একদিকে সিজিপিএ ক্রমাগত নিম্নমুখি, অন্যদিকে ফুডব্যাংকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন রেস্টুরেন্টের পোস্টে গফের টেগানি খেতে খেতে মানিব্যাগ আর মন দুটোই ঝাঁঝরা? তাহলে এই পোস্ট আপনারই জন্য!! এখনি ব্যাগ গুছিয়ে নিন আর চলে যান কল্লানপুর বাস স্ট্যান্ডে। পঞ্চগড়গামি হানিফ, নাবিল বা অন্য যেকোনো বাসে উঠে পরুন। সকালে নেমে যান পঞ্চগড় শহরে। তারপর লোকাল বাস বা সিএনজি নিয়ে তেতুলিয়ার পথে। শহর থেকে রওনা দেয়ার ১০ মিনিটের মাথায় হাতের বাম দিকে আপনি যেই দৃশ্য দেখবেন আশা করি ঢাকা শহরে ফেলে আসা গেঞ্জাম অর্ধেক ভুলে যাবেন তখনি। এর পর চলে যান তেতুলিয়া ডাকবাংলোর পাশে। সামনে নিল রঙের মহানন্দা নদী, ওইপারে ইন্ডিয়ার চা বাগান, চা বাগানের ভিতর দিয়ে ট্রেন যাবার শব্দ, এবং তার পরে ……

জি, তেতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার কথাই বলছিলাম এতক্ষন। সিজন শুরু হয়ে গেছে, মধ্য অক্টোবর থেকে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত সবচে ভাল দেখা যায় এই দৃশ্য। সূর্যের আনুভূমিক অবস্থানের কারনে এই সময়ে সকালবেলায় সূর্যের আলো কাঞ্চনজঙ্ঘায় প্রতিফলিত হয়ে আমাদের এইদিকে ফিরে আসে, তাই বছরের অন্য সময়ে এটা দেখা যায়না। তারপরও কপাল খারাপ হলে দার্জিলিং সাইডে মেঘের কারনে দেখা নাও যেতে পারে, তবে মন খারাপ করার কিছু নেই। ডাকবাংলোর সান্মের বাগানে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা আপনার জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে, কথা দিতে পারি। বস, বউ বা গফের যাবতীয় প্যারা এক নিমিষেই ভুলে যাবেন 😉 তাছাড়া আছে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, দেশের একমাত্র সমতল ভুমির চা বাগান কাজি অ্যান্ড কাজি টি এস্টেট।

সারাদিন ঘুরে রাতের গাড়িতে চাইলে আবার ঢাকা ফিরে আসতে পারেন। তেতুলিয়ায় থাকার জায়গা কম। ডাকবাংলো একটা অপশন, আরেকটা কি জানি আছে নাম ভুলে গেছি। আর যদি রাতে থাকেন তবে অবশ্যই সূর্য উঠার আগেই ঘুম থেকে উঠে কাঞ্চনজঙ্ঘা বরাবর তাকায়ে থাকবেন। প্রথম সূর্যের আলো কাঞ্চনজঙ্ঘার গায়ে পড়ার দৃশ্য, সিম্পলি অপার্থিব !!!!

কিভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে বাসে পঞ্চগড়, তারপর বাস বা সিএনজি তে করে তেতুলিয়া। দেরি না করে রওনা দিয়ে দিন। এই সুযোগ সীমিত সময়ের জন্য। 😉

চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালী একদিনে ঘুড়ে দেখে আসার মতো জায়গা

স্থানঃ নিজুম দ্বীপ, বজরা শাহী মসজিদ , আমিশাপাড়া কালি মন্দির , পালপাড়া আন্দার মানিক( গোপন কুঠুরী), গান্ধী আশ্রম, বিখ্যাত আমিশা পাড়া বাজার।

একদিনে ঘুরতে হলে বজরা শাহী মসজীদ দেখে তারপরে সোনাপুরের পরে আলেক্সান্ডার নদীর পাড়ে যাবেন…. তারপরে সময় হলে মুসাপুর…
আর নোয়াখালী তে চিটাগাং থেকে ট্রেন এ আসতে হলে ফেণী এসে তারপরে বাস… আর নাহয় বড়পোল অথবা এ কে খান মোড় থেকে শাহী/জোনাকি বাস এ করে আসবেন…. চৌরাস্তা নেমে সিএনজি তে ২০ টাকা নিবে বজরা শাহী মসজীদ… এরপরে সেখান থেকে বাস এ করে সোনাপুর (৩০টাকা) এরপরে সোনাপুর থেকে সিএনজি করে আলেক্সান্ডার (৬০টাকা)