প্ল্যান ছিল খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠবো। কিন্তু কিসের কি! ঘুম থেকে উঠতেই বেজে গেলো সকাল ৬টা। নিজেকে কতক্ষণ দোষারোপ করে বের হলাম কটেজ থেকে।
আমরা যখন রওনা করলাম তখন দেখি মানুষ ফিরে আসছে কংলাক পাড়া থেকে। সূর্য উঠে গেছে তাই তাড়াহুড়ার কিছু নেই ভেবে আস্তে-ধীরে হেলে-দুলে যাচ্ছিলাম। আর মনে মনে ভাবছিলাম ইস,কি মিস টা নাই করলাম! সাজেকের হেলিপ্যাডের আর্মি ক্যাম্প ছেড়ে কিছুদূর যেতেই কয়েকজন আর্মি সদস্য আমাকে দাড় করালেন। তাদের কাছে যেতেই শুরু করলেন জেরা করা।
অফিসারঃ কই যান?
আমিঃ কংলাক পাড়ায়।
অফিসারঃ কই থেকে আসছেন?
আমিঃ ঢাকা।
অফিসারঃ কি করেন? বাবার নাম কি?
আমিঃ পড়ি। বাবার নাম…..
অফিসারঃ কোন কটেজে উঠছেন?
আমিঃ অমুক কটেজে।
অফিসারঃ আইডি কার্ড আনছেন?
আমিঃ উহু,আনিনাই।
অফিসারঃ আচ্ছা যান।
প্রথমে একটু চিন্তা করলাম। কখনো শুনিনি সাজেকে কাউকে জেরা করতে। তাহলে আমাকে কেন করলো! পরক্ষনেই উত্তর পেয়ে গেলাম। আমার পরনে ছিল বাংলার ঐতিহ্য লুংগি। 😜 এই লুংগি দেখে বেশ কয়েকবার মানুষের হাসাহাসি আর আশ্চর্যের কারণ হয়ে উঠি আমি। তো যাই হোক, এভাবে কতক্ষণ উঁচু রাস্তা ধরে হাটতে হাটতে একটা জায়গায় থামি। প্রথমে খেয়াল করিনি আমার হাতের বা পাশে এমন কিছু অপেক্ষা করছে। খোলা একটি জায়গায় বসেপরি কিছুক্ষণের জন্য। সৃষ্টার হাতে আঁকা ছবি। হালকা সোনালী আভা পরছে সবুজ ঠেউয়ে। এই ঠেউয়ের খাঁজে খাঁজে জমে রয়েছে সাদা-শুভ্র মেঘ। আবার কিছু কিছু অংশে পরছে মেঘের ছায়া। এমন পাহাড় দেখেই হয়তো সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হয়তো বলেছিলেন যেন বিচলিত নদীর সংখ্যাতীত তরঙ্গ। পাহাড়ে শীতল ঝিরিঝিরি বাতাস আর এমন একটি দৃশ্য। মনে মনে ভাবছিলাম কি মিস করেছি জানিনা। কিন্তু এখন যা পেয়েছি নিঃসন্দেহে আমার দেখা সেরা মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি।
কিছু মানুষ তখনো নেমে আসছিল কংলাক থেকে। কথায় বুঝলাম তাদের মধ্যে বেশ আক্ষেপ। তারা নাকি তখনো দেখার মতো কিছুই পায়নি। 🙂
যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা-খাগড়াছড়ি-সাজেক
Post Copied From:Muhammad Shariful Islam>Travelers of Bangladesh (ToB)