(যারা বাজেট এর ভিতরে টুর কমপ্লিট করতে চান তারা দেখতে পারেন)

আমাদের সাজেক টুরের সূচনা হয়েছিল প্রায় ৬-৭ জন ডিপার্টমেন্টের ফ্রেন্ডদের সম্মতিতেই।ঠিক করলাম ১৩ তারিখ রাত্রে রওনা দিব।টিকেট কাটার আগ মূহূর্তে পোলাপান আরো বাড়তে থাকে।সবাই টেনশনে ছিলাম অই টাইমে রাশ থাকবে তাই আগে ভাগেই আমরা টিকেট কেনার সিদ্ধান্ত নেই।টিকেট কিনার আগে আমরা কনফার্ম হই ১২ জন যাব।কাউন্টারে যেয়ে ১৩ তারিখ রাতের কোন টিকিট ই ছিল না,বহু কষ্টে খোজার পরে আমরা ঈগল থেকে ১২ টা টিকেট কিনি।টিকেট এর দাম ছিল ৫২০ টাকা(নন এসি)

১৩ তারিখ রাত আসে.১০.৩০ এর বাস ছাড়তে ছাড়তে প্রায় ১১.৩০ বেজে যায়।রাস্তায় প্রচুর জ্যাম ছিল।সবাই চিন্তায় ছিল কখন পৌছাব খাগড়াছড়ি।আমরা ঢাকা থেকেই চান্দের গাড়ি ঠিক করে যাই।আমাদের চান্দের গাড়িতে নিয়েছিল ৮৫০০ টাকা।খাওয়ার খরচ আর থাকার খরচ ড্রাইভারের নিজেদের ছিল।কিন্তু প্রবলেম দেখা দেয় উনি আমাদের দিঘিনালা থেকে রিসিভ করবেন যেটা আগে ছিল টাউন থেকে।কিন্তু বলেছেন যে আমরা যে দিঘিনালা আসব অই টাকাটা যাতে আমরা ৮৫০০ থেকে রেখে দেই।আর সিজন বিধায় আমাদের ২০০০ টাকা এডভান্স করতে হয়েছিল।আর আমরা কটেজ ভাড়া করেছিলাম ২ রুম ৩৫০০ টাকা দিয়ে।

প্রথম দিনঃআমরা খাগড়াছড়ি পৌছাই ৭.২০-৩০ এর ভিতরে।এর পরে আমরা প্রথমেই ঢাকার রিটার্ন টিকেট কাটি শ্যামলীতে।এর পরে আমরা লোকাল গাড়িতে চলে যাই দিঘিনালায় শাপলা চত্তর থেকে।কাউন্টার থেকে ২ মিনিট হাটলেই শাপলা চত্তর।আমরা কেউ ছাদে চড়ে,আবার কেউ ভেতরে বসি।দিঘিনালার বনমালির গেট থেকে ড্রাইভার আমাদের রিসিভ করে।আমাদের দিঘিনালা ভাড়া নিয়েছিল প্রতি জন ৫০ টাকা করে.১২ জনের ৬০০ হয়েছিল।আর শাপলা চত্তর থেকে দিঘিনালা আসতে সময় লাগে ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মিনিট

এর পর আমরা দিঘিনালা বাজার চলে যাই।অইখানে আমরা সকালের নাস্তা করি রিজনেবল প্রাইজ এই.১২ জনের বিল হয়েছিল ৫০০ টাকা।এর পরে আমরা প্লান মত ঠিক করি হাজাছড়া ঝর্না দেখব।ততক্ষণে ৯.৩০ এর মত বেজে গেসে।আর্মির এস্কর্ট ছাড়বে ১০.৩০ এ।সো আমরা হাজাছড়া বাদ দেই অইদিন।ঠিক করি পরের দিন হাজাছড়া দেখব

তারপর আর কি।আমাদের চান্দের গাড়িটা একটু পুরানো হলেও ইঞ্জিনের জোর ছিল সেই আর ড্রিভার মামা ত ছিল পাংখা।বহুত গাড়ি ওভারটেক করসে।প্রায় দুইটার দিকে আমরা সাজেক পৌছাই।ঢুকার সময় প্রতিজন ২০ টাকা করে টিকেট করি

আমরা কটেজে ঢুকি।পরে আমাদের পছন্দ হয় নাই বিধায় আর অইখানে থাকি নাই।পরে ড্রাইভার মামা আমাদের আরেকখানে এক হুজুরের কটেজে নিয়ে যায়।হুজুর লোক অনেক ভাল মানুষ।আমরা বহু কষ্টে রাজি করাই ২ রুম ৩২০০ তে।কটেজ থেকে সাজেকের ভিউ অস্থির লেভেলের ছিল।কটেজটা একেবারেই নতুন করেছে বিধায় নামটা মনে নাই।আর কটেজটা ছিল মেঘ মাচাং এর একেবারে পাশেই।

আমরা দুপুরে খেয়েছিলাম মনটানা হোটেলে।ভাত ডাল আনলিমিটেড,আর ডিম আর সবজি ছিল মাত্র ১০০ টাকায়।ডালের স্বাদ ভোলার মত না

আর রাত্রে খেয়েছি বারবিকিউ.৪ টা পরোটা,সস,সালাদ আর মুরগি প্রতিজন ২০০ টাকা করে

এর আগে বিকালে আমরা কংলাক এ যাই,রাতে গেসিলাম হেলিপেড এ

দ্বিতীয় দিনঃপরের দিন আমাদের প্লান ছিল সূর্যোদয় দেখবই.৫ টার দিকে উঠেই আমরা ৪-৫ জন চলে যাই মেঘ মাচাং এ।এর পাশ থেকেই আমরা সূর্যোদয় দেখি।এর সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করার মত না।তবে আমি মনে করি যেই কটেজে উঠেছিলাম অইখানে ভিউ আরো সুন্দর ছিল।অইটাও এসে দেখছিলাম আমরা।

সকালে আমরা খিচুরি খাই।খিচুরি ভেবেছিলাম ৮০ টাকা,কিন্তু হয়ত সিজন বিধায় প্রতিজন ১০০ টাকার কমে রাজি হচ্ছিলই না।ডিম খিচুরি।গরম গরম খাইতে পাইলে সেই একটা খিচুরি।এর পর আমরা রুমে এসে রেডি হয়ে হুজুর সাহেবকে বিদায় জানিয়ে এস্কর্ট ছাড়ার ওয়েট করি।সকালে বেক করি কারণ আমাদের হাজাছড়া ,ঝুলন্ত ব্রিজ,রিসাং আর আলুটিলা দেখতে হবে

প্রথমে আমরা হাজাছড়া দেখি।পানি পেয়েছিলাম অল্পই।তাই ভিজি কয়েকজন।পানি ছিল সেই লেভেলের ঠান্ডা।তাড়াতাড়ি শেষ করে দিঘিনালায় দুপুরের খাবার খাই ১৫০ টাকার প্যাকেজ এ।

এর পর আমরা যাই ঝুলন্ত ব্রিজ এ।ঢুকতে খরচ হবে প্রতিজন ২০ টাকা করে

এর পর আমরা যাই রিসাং এ।সিড়ি পার হয়ে অইখানে যেতে হয়।অইখানে মোটামুটি পানি পাইসিলাম।স্লাইড আমরা কমবেশি সবাই করসি।এটা নিজের সেফটি বুঝে করবেন আপনারা

এর পর একেবারেই সময় ছিল না।প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যাইতেসিল।তারপরও আলুটিলায় যাই।কিন্তু কপাল ভাল আমাদের ঢুকতে দিছিল।মশাল কিনি প্রতিজন ২০ টাকা করে।আলুটিলা আমার কাছে অস্থির লাগসিল,হয়ত সন্ধায় গেসিলাম এ কারণেই

এর মাধ্যমে আমাদের ঘুড়াফিরা শেষ হয়

রাতে খেয়েছিলাম আমরা Bamboo Shot এ।অইখানের ট্রেডীশনাল খাবার খাই।বাশের ভিতরে গোশত।খাবার টা ভাল ছিল এবং যথেষ্ট ঝাল ছিল।প্রতিজন খচর পরেছিল ১২৮ টাকা করে।

এর পর আমরা ৯ টার বাসে ঢাকা ব্যাক করি

আর একটা কথা সাজকের রাস্তা হইল আমার দেখা অন্যতম সুন্দর রাস্তা।সো আপনি যদি কিছুটাও পারদর্শি হন তাহলে তাহলে চান্দের গাড়ির ছাদে উঠতে ভুলবেন না।এর আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মত না।আর্মি ক্যাম্পের আগে আপনাকে যদি নামায় দিবে।পার হইলে আবার ও উঠবেন।মিস করবেন না।

আশা করি আপনার ভ্রমণ সফল এবং আনন্দদায়ক হবেই

ছবিটা আমাদের কটেজে থেকে তোলা(এডিট ছাড়া)

আর হিসাব টা হইতেসে(১২ জনের জন্য)

বাস ভাড়া(যাওয়ার)-১২*৫২০=৬২৪০
রিটার্ন টিকেট-১২*৫২০=৬২৪০
চান্দের গাড়ি-৮৫০০
কটেজ(২ রুম)-৩২০০
সকালের নাস্তা(প্রথম দিন)-৫০০
সাজেক ঢুকা-২৪০+১০০=৩৪০
দুপুরের খাবার(১ম দিন)-১২০০
রাতের খাবার(বারবিকিউ ১ম দিন)-২৪০০
সকালের নাস্তা(খিচুরি)-১০০০
দুপুরের খাবার(২য় দিন)-১৮০০
ঝুলন্ত ব্রিজ ঢুকা-২৪০
আলুটিলা গুহা ঢুকা-২৪০
রাতের খাবার(২য় দিন)-১৫৪৫

কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে বলবেন

আর আমাদের পার পার্সন খরচ পরসিল ২৮৫০ টাকা

Post Copied From:Saif Ferdous Irfan>Travelers of Bangladesh (ToB)

Leave a Reply

Your email address will not be published.