পেহেলগাম, কাশ্মীর

স্বর্গীয় স্বর্গ প্যালেস…!! (পেহেলগাম, কাশ্মীর)

আচ্ছা এই পৃথিবীতে যদি কখনো স্বর্গ পেতে চান, তবে কি কি চাইবেন আপনি? আমার যেটা মনে হয় পৃথিবীতে স্বর্গের মত কিছু চাওয়া মানে এক-এক জনের কাছে চাওয়াটা এক-এক ধরনের হবে। কারন প্রতিটি মানুষের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষার ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকে। তবে এই স্বর্গ বা স্বর্গের মত কিছুর মধ্যে কি কি থাকতে পারে?

আমার তো মনে কোন এক পাহাড়ের দেয়ালে ঝুলে থাকা এমন একটা ঘর যেখানে বসে, শুয়ে বা আঙিনায় দাড়িয়ে আপনি একই সাথে পাবেন আপনার ভালোলাগার সব, সব, সবকিছু একই সাথে! ঠিক এমনই স্বর্গীয় একটি কটেজ পেয়েছিলাম কাশ্মীরের পেহেলগামে। যেখানে অপার্থিব অনেক কিছুই একই সাথে ধরা দিয়েছিল আমাদের হাতে! সবরকমের পাহাড়, ঝর্ণা, অরণ্য, বয়ে চলা নদী, মেঘ-কুয়াসা, রঙ-বেরঙের ফুল, সবুজ গালিচা, অরণ্যে-অরণ্যে ঘোড়ার পাল, নানা রকম ফল!

ধরুন, কেউ পাহাড় ভালোবাসেন, তিনি পাহাড় চাইবেন হয়তো। কিন্তু কেমন পাহাড় চান আপনি? সবুজ? রুক্ষ, অরণ্যে ঘেরা? মেঘে ঢাকা? কুয়াসা মাখা? নাকি বরফে জড়ানো? কোন রকমের পাহাড় পেতে চান আপনি? সব রকমের পাহাড় পাবেন আপনি একে-একে সুখের স্বর্গীয় স্বর্গ প্যলেসে বসে বা শুয়ে থেকেই!

কেউ হয়তো পাহাড় ভালোবাসেনা তেমন একটা, নদী ভালোবাসেন। পাবেন উত্তাল, খরস্রোতা, পাথরে-পানিতে মাতলামি করা লিডার নদী। যেখানে চুপচাপ বসে থাকতে পারেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা কোন রকম ব্যাস্ততা ছাড়া। চাইলে বসতে পারেন নদীর একদম মাঝখানে কোন পাথরের উপরে! তখন লাগবে বলুন? নদীর মাঝখানে বসে আছেন আপনি, চারদিকে নানা রকম পাহাড়ের দেয়াল, আশেপাশে ঝর্ণা ধারা আর পাহাড়ে, পাহাড়ে পাইনের অরণ্য!

আচ্ছা নদী বা পাহাড় ভালো লাগেনা? ঝর্ণা ভালোলাগে, বা পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণাধারা যা নদীতে পতিত হয়? তবে সেটাও পাবেন একটু সামনে ডানে বা বামে গেলেই। হয়তো ঘাড়টা একটু উচু করতে হবে বা এদিক সেদিক ঘোরাতে হবে, এই যা!

কারো হয়তো পাহাড়, নদী, ঝর্ণা এসবের চেয়ে বেশী পছন্দ ঘন সবুজ বনানী, তবে তো কথাই নেই। আপনার সামনে-পিছনে, ডানে-বায়ে যেদিকে তাকাবেন আর যাবেন শুধু বন আর বনানী। যেখানে হেটে-হেটে গভীরে যেতে পারেন নিজের ইচ্ছামত, তবে অবশ্যই দল বেঁধে অরণ্যের ভিতরে যেতে হবে। কোন বন্য পশুর আক্রমণ থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে।

হেটে, বসে বা ঝর্ণায় ঘুরে ক্লান্ত হয়ে গেছেন? বা এতো ঘোরাঘুরি, হাঁটাহাঁটি করতে মন চাইছেনা? তবে ফিরে আসুন স্বর্গ প্যালেসের সবুজ গালিচায়, ওখানে বসেই কাটিয়ে দেয়া যায় কয়েকটি দিন অনায়াসেই। এক মগ গরম কফি হাতে নিয়ে বসতে পারেন স্বর্গ প্যালেসের খোলা বেলকোনিতে, বারান্দায়, ডাইনিংএ, সবুজ গালিচায় বা সেটাও যদি ইচ্ছা না হয় তবে নিজের রুমে বসেই আপনি উপভোগ করতে পারেন উপরের সকল প্রকৃতি একই সাথে।

কখনো হয়তো মেঘ থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি নামবে, স্বর্গ প্যালেসের রুমেড় জানালায় গড়িয়ে পরবে বৃষ্টির ফোঁটা, দূরের পাহাড়ে ভেসে বেড়াবে মেঘ, অন্য কোন পাহাড়ে হয়তো হাসবে সূর্য! কখনো বৃষ্টি থেমে গিয়ে খোলা কাঁচের জানালা দিয়ে ঢুকে পরবে মেঘ-কুয়াসা আপনাকে আলিঙ্গনে বাঁধতে! আর যখন আকাশ থাকবে ঝকঝকে নীল, দূরের পাহাড়ে ভেসে বেড়াবে সাদা মেঘের ভেলা, জানালার পাশে ফুটে আছে টকটকে লাল গোলাপ, সামনে যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজের মুগ্ধতা, তখন কাঠের সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে, রুমের বাইরে এসে বসতে পারেন সবুজ আঙিনায়।

একই সাথে এই পাহাড়-অরণ্য-নদী-ঝর্ণা-মেঘ-কুয়াসার এমন অনন্য স্বর্গ সুখের অনুভূতি একই যায়গা বসে পেতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে পেহেলগামের স্বর্গ প্যালেস গেস্ট হাউজে। বেশ কয়েকভাবে এখানে যেতে পারেন। বেশ আরামে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে কলকাতা, দিল্লী হয়ে শ্রীনগর পেলেন। শ্রীনগর থেকে পেহেলগাম গাড়িতে।

অথবা ঢাকা থেকে কলকাতা বাস/ট্রেন। কলকাতা থেকে দিল্লী/জম্মু ট্রেন তারপর নিজেদের ইচ্ছা মত গাড়ি ভাড়া করে সোজা পেহেলগামের স্বর্গ প্যালেস।