ঘুরে এলাম রাজস্থান

#জয়সালমার

স্লিপার বাসে চড়ে রওনা হলাম জয়সালমারের উদ্দেশ্যে.. ১১-১২ ঘণ্টার জার্নি, ভাড়া ৬৫০/- রুপি.. বাস ছাড়তে দেরী কিন্তু ঘুম আসতে দেরী হল না.. অনেক টায়ার্ড ছিলাম আমরা সবাই.. যদিও প্রচন্ড ঠান্ডা ছিল.. গ্লাসের চিপাচাপা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস ১২টা বাজাচ্ছিল আমার ঘুমের.. তবুও জোর করে ঘুমানো আর কি.. ঘুম থেকে উঠতেই দেখি সকাল ৯টা আর পৌছে গেছি জয়সালমার..

বাস থেকে নামতেই অটোওয়ালারা ঘিরে ধরলো.. একজনকে ঠিক করলাম, সে আমাদের হোটেলে নিয়ে গেল.. সেখানে ফ্রেশ হলাম.. এবার ঘোরার পর্ব.. সিটি ট্যুর সহ রেগিস্থান (থার মরুভুমি) এ ঘোরাবে, সব মিলিয়ে লাগবে ২০০০ রুপির মত.. কনফার্ম করে নাস্তা করতে গেলাম.. এর মাঝে অটো চলে আসলো আমাদের সিটি ট্যুর করানোর জন্য..

জয়সালমারকে বলা হয় গোল্ডেন সিটি.. আগের পর্বে যেমন বলেছিলাম জয়পুরকে বলা হয় পিঙ্ক সিটি ঠিক তেমনই.. কিন্তু এখানে কিছুটা পার্থক্য আছে.. জয়পুরে যেমন কিছু অংশে আপনি গোলাপি ছাড়াও অন্য রঙের দালান কোঠা পাবেন কিন্তু এখানে সব কিছুই সোনালী রঙে সজ্জিত.. যেখানেই তাকাবেন সেখানেই কেবল সোনালী দালান দেখতে পাবেন.. আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে অন্য কোন রঙ ব্যাবহার করা এখানে আইনত দন্ডনীয় অপরাধ.. তাদের এই ডেডিকেশনের সাধুবাদ জানাতেই হয়..

সিটি ট্যুর শুরুই হল গাডিসার লেক দিয়ে.. লেকের চারপাশে রাজা রাণীর বিশ্রামাগার.. চাইলে প্যাডেল নৌকায় ঘুরতে পারবেন ঘণ্টা প্রতি হিসেবে.. এরপর চলে গেলাম পাটওয়ান হাভেলি ..অসাধারণ কারুকার্য.. আরও কিছু ছিল, সেদিকে আর গেলাম না.. জয়সালমারের প্রধান আকর্ষণ জয়সালমার ফোর্ট.. বিশাল এরিয়া জুড়ে অবস্থিত.. পুরোটাই বলতে গেলে ব্যাবসায়ীদের দখলে.. আশা করি খারাপ লাগবে না..

খুবই সুন্দর ছিল সাইটগুলো তবুও মন ভরছিল না.. কেননা মন যে পড়ে আছে রেগিস্থানে.. এরপর সময় হল যাওয়ার.. আর তখনই শুরু হল মুষলধারে বৃষ্টি.. একে তো হাড় কাপুনে শীত তার উপর বৃষ্টি.. এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা.. ভালো করে শরীর ঢেকে রওনা হলাম.. খুব হাসি পাচ্ছিল এই ভেবে যে ভর দুপুরে মরুভুমি যাচ্ছি জাম্পার, জ্যাকেট হুডি এসব পড়ে.. এমনও দিন দেখা লাগলো আমাদের.. 😛 😀

যাই হোক রেগিস্থান ট্যুর পুরো প্যাকেজেই ইনক্লুড ছিল.. ক্যামেল সাফারি + জীপ সাফারি ও রাজাস্থানী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আর সাথে ডিনার.. প্রথমে হোটেল থেকে এক ঘণ্টা জার্নি করে পৌছলাম রেগিস্থানে.. সেখান থেকে আধা ঘণ্টার জীপ সাফারি.. নিয়ে গেল ক্যামেল সাফারি ক্যাম্পে.. এবার ক্যামেল সাফারির পালা.. যার জন্যই এতো কষ্ট করে আসা.. যেইনা উঠলাম আর তখনই শুরু হইলো বৃষ্টি.. কি আর বলবো! ভাগ্য খারাপ হলে যা হয়.. যাই হোক ভেজা জামা কাপড় নিয়েই রাইড শেষ করলাম.. নামার পর মনে হচ্ছিল ফ্রীজ হয়ে যাচ্ছি.. এরপর গেলাম ক্যাম্পে যেখানে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল রাজাস্থানী ঐতিহ্যবাহী নাচ+গান+খাবার.. এতো ঠান্ডা ছিল যে ঠিক মত উপভোগও করতে পারিনি আমরা কেউই.. আর খাবার!! কি আর বলবো.. বাঘকে যদি লতাপাতা খেতে দেয়া হয় তাহলে কেমন হবে ব্যাপারটা?? বাকিটা বুঝে নেন.. :'(

এই ঠান্ডার মাঝে সব শেষে ডিজে পার্টিটাই যা একটু ছিল.. হাত পা আন্দাজে নেড়েনুড়ে যা পেরেছি শরীর একটু গরম করতে করে নিয়েছি.. কিন্তু এতে কি আর কিছু হয়.. যাই হোক গাড়িতে উঠে এরপর চলে এলাম হোটেলে.. অও হ্যাঁ একটা কথা বলতে ভুলে গেছি.. আর তা হল #ভুতের_গ্রাম.. ঐখানে একটা পরিত্যক্ত গ্রাম আছে যেখানে কেবল পরিত্যক্ত বাড়িই আছে, কিন্তু কোন মানুষের বসবাস নেই.. আছে কেবল ভুত.. চাইলে ঘুরে আসতে পারেন রেগিস্থান যাওয়ার পথে.. 😛 এর জন্য এক্সট্রা ২০০-৩০০ রুপি খরচ করা লাগবে..

হোটেলে ফিরলাম ৮-৯টার দিকে.. কিছু সময় রেস্ট নিয়ে এবার ট্রেন ধরার পালা.. পরবর্তী ডেস্টিনেশন যোধপুর.. সে গল্প না হয় আজ থাক.. আগে ট্রেনে তো উঠি, পৌছাই তো আগে ঘুরি তো সেখানে.. তারপর না হয় হবে নে সেই গল্প..

Post Copied From:সিয়াম সিদ্দিকী ফাহিম‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

পিংকসিটি জয়পুর

ইন্ডিয়ার রাজস্থান প্রদেশের রাজধানী এবং সুসজ্জিত রঙ্গিন এই শহর স্থাপিত হয় ১৭৭২ সালে মহারাজা জয়সিং-2 এর সময়। ১৮৭৬ সালে Prince of Wales(Edward VII) কে স্বাগত জানানোর জন্য তৎকালিন রাজা Sawai Ram Singh পুরো শহরকে গোলাপি রঙ্গে রাঙ্গিয়ে তোলে। তাই একে পিংকসিটিও বলে।

সুন্দর এই শহর দেখার লোভ সামলাতে না পেরে তাই এই গরমের মধ্যেই বেরিয়ে পরেছিলাম। চার জনের আমাদের এই যাত্রা শুরু করি ঢাকা থেকে। প্রথমে ঢাকা থেকে বাসে কলকাতা, কলকাতা থেকে দূরন্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে নয়াদিল্লী এবং নয়াদিল্লীতে ট্রাভেল এজেন্সী থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা জয়পুর। উত্তপ্ত শুষ্ক গরম হওয়া আর রোদে পুড়ে যাওয়া গাছ আমাদের স্বাগত জানায়।

জয়পুরে দেখার মত অনেক জায়গা আছে যেমন Amer Fort/Amber Fort, Jaigarh Fort, Nahargarh Fort, Jal Mahal, Hawa Mahal, City Palace, Albert Hall Museum, Raj Mandir Cinema Hall, Jantar-mantar ও বেশ কিছু পাথর খোদাই করা মন্দির। এখানকার Fort গুলো এতো সুন্দর যে প্রতিটির উপরই অনেক কিছু বলা যায়। তবে Amer Fort/Amber Fort এর মধ্যে অন্যতম। এখানে এসে রাজাদের মত হাতির পিঠে করে Fortএ ঘুরে বেড়ানো এবং উটের পিঠে চড়ার সাধটাও পুরন হয়ে গেছে।

পরিবহনঃ দর্শনীয় স্থানগুলো একটু দূরে দূরে হওয়ার জন্য গাড়ী রিজার্ভ করে নিয়েছিলাম। এতে সময় এবং খরচ দুটিই বাঁচে এবং নিরাপত্তাও ছিল বিশেষ করে পাহাড়ের উপর Fort এ যাওয়ার সময়। স্থানীয় অটোতে করেও যাওয়া যাবে।

খরচঃ দুই দিনের ট্রিপে রাতে হোটেলে থেকে খাবার সহ আমাদের চার জনের জনপ্রতি খরচ 3200 রুপি (দিল্লী–জয়পুর-দিল্লী)। প্রতিটি স্থানে আলাদা টিকিট কেটে ঢুকতে হয়। ফরেইনার হিসেবে আমাদের টিকিট মুল্য বেশী গুনতে হয়েছে।

পরিশেষে স্থানীয় বাজার থেকে কেনাকাটা সেরে ফেরার পথে LASSIWALA® এর লস্যির স্বাদ এখনো জিভে লেগে আছে।

Post Copied From:Peejush Kar‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

আজমীর শরীফ, রাজস্থান

হযরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতি (র:) এর মাজার যা খাজা বাবার মাজার নামে বেশি পরিচিত। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে প্রতি বছর লক্ষ লোক এখানে আসে। ১১৯৪ সালে হিন্দু রাজা পৃথিরাজ চৌহান কে মুহাম্মদ ঘুরী তরাইনের যুদ্ধে পরাজিত করার পর ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য খাজা মইনুদ্দিন চিশতি (র:) আজমীর গমন করেন। প্রতি বছর ১-৬ রজব তার ওফাত দিবসে এখানে ওরশ অনুষ্ঠিত হয়।
কলকাতা বাস/ট্রেন/এয়ার এ আসবেন; কল্কাতা হতে ট্রেনে আজমীর ৩৪ ঘন্টা লাগবে (অনন্য এক্সপ্রেস) অথবা কলকাতা টু জয়পুর এয়ারে এসে ট্যাক্সিতে আজমির ১২৫ কিমি (জয়পুর হতে আজমির বাস ৪ ঘন্টা লাগে) অথবা দিল্লি এয়ারে/ট্রেনে এসে দিল্লি হতে আজমির ট্রেন যায় ৫ ঘন্টা লাগে। থাকার জন্য আজমিরে অনেক মধ্যম মানের হোটেল আছে। আজমিরে পাহাড়ি লেক আনা সাগর ঘুরতে ভুলবেন না, জয়পুর হতে আজমির রোডে গেলে মরুভূমির মত পরিবেশ দেখবেন।

Post Copied From:A Al Mamun Rony‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

অ্যাম্বার ফোর্ট, জয়পুর

ছবির মত সাজানো শহর জয়পুর যেটা গোলাপী শহর নামে পরিচিত। এইই পিংক সিটির ভেতরে ‘আমবার প্যালেস’। মহাসড়কের দুই পাশে বিশাল উঁচু পাহাড়। পাহাড়গুলো মার্বেল পাথরে ভর্তি। বলা যায়, পাথরের পাহাড়। আর এই পাথরের পাহাড় খোদাই করে তৈরি করা হয় ‘আমবার প্যালেস’। দূর থেকে পাহাড়চূড়ার এই প্যালেস দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। পাহাড়চূড়ায় ওঠার জন্য তৈরি করা আছে সিঁড়িযুক্ত আঁকাবাঁকা বহু পাকা সড়ক। পাহাড় খোদাই করেই এই সড়ক তৈরি করা হয়। দেখা গেল, শত শত বিদেশি পর্যটক এই প্যালেস দেখতে পাহাড়ে উঠছেন হাতির পিঠে চড়ে। পর্যটকদের প্যালেস ঘুরে দেখানোর জন্য সেখানে লাল কাপড়ে সাজানো বৃহদাকৃতির হাতি রয়েছে শতাধিক। এ ছাড়া এখানে রয়েছে বিশাল একটি হ্রদ। তার তিন পাড়ে মসজিদ আকৃতির পাঁচ-ছয়টি গম্বুজ। সেখানে হাজার হাজার কবুতর উড়ে বসে।
ঢাকা হতে কলকাতা বাস/ট্রেন/এয়ার
কলকাতা হতে ট্রেন/এয়ারে জয়পুর,রাজস্থান
শহর থেকে খুব কাছেই ফোর্ট, থাকার জন্য ভাল হোটেল জয়পুরে প্রচুর।
আজমির শরীফ জয়পুর হতে মাত্র ১২৫ কিমি।।

Post Copied From:A Al Mamun Rony‎>Travelers of Bangladesh (ToB)