রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট

যেভাবে যাবেন!!

রাতারগুল দেখতে হলে প্রথমে যেতে হবে সিলেট শহর। সড়ক, রেল ও আকাশ পথে ঢাকা থেকে সরাসরি সিলেট যেতে পারেন। চট্টগ্রাম থেকেও সিলেটে যাওয়া যায়।
ঢাকার ফকিরাপুল, সায়দাবাদ ও মহাখালী বাস স্টেশন থেকে সিলেটের বাসগুলো ছাড়ে। এ পথে গ্রীন লাইন পরিবহন, সৌদিয়া এস আলম পরিবহন, শ্যামলি পরিবহন ও এনা পরিবহনের এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া ৮শ’ থেকে ১ হাজার ১শ’ টাকা। এছাড়া শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক সার্ভিস এনা পরিবহনের পরিবহনের নন এসি বাস সিলেটে যায়। ভাড়া ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা। এনা পরিবহনের বাসগুলো মহাখালী থেকে ছেড়ে টঙ্গী ঘোড়াশাল হয়ে সিলেট যায়।
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস। সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টায় ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস।
শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪টায় ছাড়ে কালনী এক্সপ্রেস। ভাড়া দেড়শ থেকে ১ হিাজার ১৮ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে যায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এবং শনিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে উদয়ন এক্সপ্রেস। ভাড়া ১৪৫ থেকে ১ হাজার ১শ’ ৯১ টাকা।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় রাতারগুল জলাবনে পর্যটক।
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউনাইটেড এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, নভো এয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারের বিমান প্রতিদিন উড়াল দেয় সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে।
সিলেট শহর থেকে কয়েকটি পথে আসা যায় রাতারগুল। সবচেয়ে সহজ পথটি হল— শহর থেকে মালনিছড়ার পথে ওসমানী বিমান বন্দরের পেছনের সড়ক ধরে সোজা সাহেব বাজার হয়ে রামনগর চৌমুহনী। সেখান থেকে হাতের বাঁয়ে এক কিলোমিটার গেলেই রাতারগুল।
সারাদিন ভ্রমণের জন্য জায়গাটিতে পাওয়া যাবে ছোট ছোট খোলা নৌকা। এক বেলা জঙ্গলে বেড়ানোর জন্য প্রতিটি নৌকার ভাড়া ৩শ’ থেকে ৭শ’ টাকা।
সিলেটের আম্বরখানা, শাহজালাল মাজার থেকে সাহেব বাজার কিংবা চৌমুহনী লোকাল অটো রিকশা যায়। জনপ্রতি ভাড়া ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। রিজার্ভ নিয়ে গেলে আড়াইশ থেকে ৩শ’ টাকা।

কোথায় থাকবেন!!

সিলেট শহরে থাকার জন্য বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল আছে। শহরের নাইওরপুল এলাকায় হোটেল ফরচুন গার্ডেন (০৮২১-৭১৫৫৯০), জেল সড়কে হোটেল ডালাস (০৮২১-৭২০৯৪৫), ভিআইপি সড়কে হোটেল হিলটাউন (০৮২১-৭১৮২৬৩), লিঙ্ক রোডে হোটেল গার্ডেন ইন (০৮২১-৮১৪৫০৭), আম্বরখানায় হোটেল পলাশ, (০৮২১-৭১৮৩০৯), দরগা এলাকায় হোটেল দরগাগেইট (০৮২১-৭১৭০৬৬), হোটেল উর্মি (০৮২১-৭১৪৫৬৩), জিন্দাবাজারে হোটেল মুন লাইট (০৮২১-৭১৪৮৫০), তালতলায় গুলশান সেন্টার (০৮২১-৭১০০১৮) ইত্যাদি।
এসব হোটেলে ৫শ’ থেকে ৪ হাজার টাকায় রাত যাপনের ব্যবস্থা আছে।

সাবধানতা!!

পানিতে ডুবে থাকা অবস্থায় রাতারগুল জঙ্গল বেড়ানোর উপযুক্ত সময়। এ বনের চারদিকে পানি পূর্ণ থাকে বলে ভ্রমণের সময় কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
এই বনে বেড়ানোর সময় সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বনের গাছে ডালে অনেক সময় সাপ থাকে। এছাড়া কম বেশি জোঁকেরও উপদ্রব আছে। সাঁতার না জানলে সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখা জরুরি।
এছাড়া ছাতা, বর্ষাতি কিংবা পঞ্চ, রোদ টুপিও সঙ্গে নিতে হবে। এখানে বেড়ানোর নৌকাগুলো অনেক ছোট। এক নৌকায় পাঁচজনের বেশি উঠবেন না।

Post Copied From:Shah Tushar‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

মহামায়ায় কায়াকিং:

কায়াকিং বহি:বিশ্বে জনপ্রিয় এডভেঞ্চারের স্পোর্টসের নাম।আমাদের দেশে এর ধারনা সম্পূর্ণ নতুন।আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় কৃত্রিম লেক কাপ্তাইয়ে সর্বপ্রথম কায়াকিং শুরু হয়। খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে জলে ভেসে বেড়ানোর রোমাঞ্চকর এই স্পোর্টসটি।

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মহামায়া লেক যেন এক মায়াজাল।একবার যিনি যাবেন বার বার যেতে চাইবেন। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলা ভূমি পুরো এলাকাটি।ছোট বড় অসংখ্য উকি দিয়ে থাকা পাহাড়,চার পাশের সবুজের চাদরে মোড়ানো অথৈ স্বচ্ছ নীলাভ জল আর শুনসান নিরবতায় একা একা হারিয়ে যেতে চাইবে দূর বহুদূর।বৃষ্টির দিনে লেকে বেড়াতে বেড়াতে হঠাৎ দেখা মেলে চঞ্চলা কিশোরীর মতো দূরন্ত ঝর্ণার।যতই বিকেল গড়িয়ে আসে ততই যেন বাড়ে লেকের রূপ। নিবিড় হয় প্রকৃতি, আপন হয় দূরের সবুজ পাহাড়।

কাপ্তাইয়ের পর এবার এমন পরিবেশে পর্যটক টানতে নতুনভাবে যোগ হয়েছে কায়াকিংয়ের নতুন পর্ব।পাহাড় ঘেরা মহামায়ায় কায়াকিং এর অভিজ্ঞতা অদ্ভুত সুন্দর।নিজেই হয়ে উঠুন নিজ সাম্পানের মাঝি আর অবলোকন করুন নিস্তব্দ সুন্দর সবুজ পাহাড় উকি দিয়ে থাকা মহামায়াকে।দূরেই যেখানে পাহাড় ছুঁয়েছে আকাশকে, মেঘেরা ভেসে বেড়ায় আপন মনে সেখানে টলটলে জলে আপনি নিজেই দেখতে পাবেন নিজের স্পষ্ট ছবি।আগে যেখানে মহামায়া ছিল শুধুমাত্র পারিবারিক বিনোদন স্থান এখন কায়াকিং এর সুবাদে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে কাছে হওয়ার তুলনামূলক দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে মহামায়া,দৃষ্টি কাড়ছে তরুনদের কাছে।আর সে কারণেই মহামায়া কায়াকিং পয়েন্টে বাড়ছে পর্যটকদের ভীড়। প্রতিদিন কায়কিং করছেন শতাধিক দর্শনার্থী।

মহামায়া কায়াকিং পয়েন্টের অন্যতম কর্নধার ছোট ভাই শামীম জানাল বাংলাদেশে কাপ্তাইয়ের পরে এখানেই আছে কায়াক নৌকা। আর কোথাও এমন অ্যাডভেঞ্চার নেয়ার সুযোগ নেই যাত্রীদের।মহামায়ার কায়াক গুলো অন্যস্থান থেকে আরো উন্নত ও নিরাপদ। এগুলো সম্পূর্ন আমদানী করা হয়েছে বাইরে থেকে।

কায়াকিং এর মজার অভিজ্ঞতা নিতে ঘুরে বেড়াতে পারবেন লেকের মাঝে ৮ কিলোমিটার।ঘন্টা প্রতি গুনতে হবে মাত্র ৩০০ টাকা।ছাত্রদের জন্য এই খরচ আরও কম। মাত্র ২০০ টাকা।এক নায়ে চড়া যাবে ২ জন। রয়েছে নিধারিত সীমানা রেখা।এর বাইরে গেলে পর্যটকদের গুনতে হয় ১ হাজার টাকা জরিমানা। ঘন্টা ২ ঘুরে বেড়ালে যে অনন্য অভিজ্ঞতা হবে তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে আপনার জীবনে, এটা নিশ্চিত।

এমন অভিজ্ঞতা নিতে আর কি দেরি করা ঠিক হবে? হবে না কিন্তু!আনন্দকর হোক আপনার ভ্রমন।

পথঘাট:ঢাকা-চট্টগ্রামের যে কেনো বাসে করে সরাসরি নামতে হবে মিরসরাইয়ের ঠাকুরদিঘী বাজারে।ঢাকা থেকে গেলে মিরসরাইয়ের আগে আর চট্টগ্রাম থেকে গেলে মিরসরাইয়ের পরে। সেখান থেকে সিএনজি বা অটোরিক্সা যোগে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই পৌছে যাবেন মহামায়ায়।

Post Copied From:Arifur Rahaman UjJal>Travelers of Bangladesh (ToB)

সেন্টমার্টিন ট্যুরের খরচাপাতি; সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

ঢাকা/চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া আসায় কত খরচ আর কোথায় কত সময় লাগে সে ব্যাপারে লিখব আজকে!

ঢাকা টু টেকনাফ বাস ভাড়া ৯০০ (নন-এসি); ১৫০০-২০০০ (এসি)

টেকনাফ টু সেন্টমার্টিন- যাওয়া আসা ভাড়া ৫৫০ থেকে শুরু, শীপভেদে ১০০০/১২০০ টাকা নিবে! যাওয়া আসার টিকেট একসাথেই কাটা হয়, কবে যাবেন আর কবে ফিরবেন সেটা আগে থেকে বলে দিতে হয়, সেন্টমার্টিনে ১ দিন থাকেন বা ২ দিন থাকেন, ভাড়া একই!

আর কেউ যদি টিকেটে উল্লেখিত তারিখে না ফিরে অন্যদিন ফিরতে চান তাহলে সেটাও সম্ভব, তবে সেক্ষেত্রে সীটের নিশ্চয়তা থাকবেনা!

ঢাকা থেকে টেকনাফগামী বাসগুলো সাধারণত ৭ টা বা ৭:৩০ এ ঢাকা থেকে রওনা দেয়, পরদিন সকাল ৭/৮ টায় শীপের ঘাটে আপনাকে নামিয়ে দিবে, ওখান থেকেই শীপ ধরতে পারবেন! সাধারণত ৯:৩০ মিনিটের দিকে শীপগুলো সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়, ১১:৩০ বা ১২ টার ভেতরে শীপ সেন্টমার্টিনে পৌছে!
বিকেল ৩ টার দিকে শীপ সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়!

দুপুরে বা বিকেলে টেকনাফ থেকে কোন শীপ সেন্টমার্টিন যায়না, আবার সকালেও সেন্টমার্টিন থেকে কোন শীপ টেকনাফ আসেনা, সব শীপের শিডিউল একই রকম!

শীপ মিস করলে ট্রলারে চড়ে যেতে পারেন, ভাড়া ২০০ টাকা, শুধু যাওয়া কিংবা আসা! টেকনাফ শহর থেকেই ট্রলারগুলো ছাড়ে!

ছুটির দিনগুলোতে আগে থেকেই শীপের টিকেট কেটে রাখা ভাল, অন্যান্য দিন ঘাটেই টিকেট মিলবে!

সেন্টমার্টিনে থাকার খরচ জনপ্রতি ৩০০-৫০০ পড়ে, অর্থাৎ মোটামুটি মানের হোটেল/রিসোর্টে এক রুমের ভাড়া সাধারণত ১২০০-২০০০ টাকা নেয়, এক রুমে ৪ জন থাকা যায়! পিক টাইম বা টানা কয়েকদিন ছুটির দিন থাকলে রুমের ভাড়া আরো একটু বাড়তে পারে!

সেন্টমার্টিনে ৭০-৮০ টাকায় সকালের নাস্তা, ১৩০-১৮০ টাকায় দুপুর আর রাতের খাবার খেতে পারেন সামুদ্রিক মাছ দিয়ে! রুপচান্দা দিয়ে খেতে চাইলে দামটা একটু বেশিই পড়বে! রাতের বেলা বার-বি-কিউ ১৭০-২০০ টাকা পড়তে পারে, গেলে অন্তত এক বেলা এটাও ট্রাই করে দেখতে পারেন!

ছেড়াদ্বীপ যাবেন অবশ্যই, এটা না দেখে ফিরবেন না!

ট্রলারে চড়ে গেলে জনপ্রতি ১৫০ টাকা নিবে ভাড়া, স্পীডবোট রিজার্ভ ১৬০০-১৮০০ টাকা নিবে যাওয়া আসা, দরদাম করে যা পারেন, একটা স্পীডবোটে ৬ জন বসা যায়! ট্রলার বা স্পীডবোট আপনার জন্যে দেড় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করবে ছেড়াদ্বীপে, আবার আপনাদেরকে নিয়ে ফিরে আসবে! যেখানে শীপ থামে সেখানেই ছেড়াদ্বীপ যাওয়ার বোট পাওয়া যায়! ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যেই ছেড়াদ্বীপ ঘুরে ফিরে আসা যায়!

সাইকেল চালিয়ে বা হেটে হেটেও ছেড়াদ্বীপ যাওয়া যায়, তবে তা ভাটার সময়, স্থানীয়দের কাছ থেকে জোয়ার ভাটার সময় জেনে নিতে পারেন!

প্রতিটি ডাব ৪০-৬০ টাকায় পাবেন!

সাইকেল ঘণ্টাপ্রতি ৪০ টাকা ভাড়া নিবে!

আর সকাল ১০/১১ টার দিকে অথবা বিকেলের কোন এক সময়ে পারলে জেটির পাশে এসে বসে থাকবেন, পানির রঙ দেখে মন ভরে যাবে!

চট্টগ্রাম থেকেও সরাসরি টেকনাফের বাস আছে, সিনেমা প্যালেস (লাল দীঘির পাড়) থেকে রাত ১২/১ টার দিকে কিছু বাস ছাড়ে, সকালে টেকনাফ পৌছে, ভাড়া ৪০০ টাকা!

কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যেতে চাইলে শহর থেকে টেকনাফ যাওয়া লাগবে প্রথমে, ভাড়া ১৫০ টাকা নিবে! খুব ভোরে রওনা দিতে হবে, নয়তো শীপ মিস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে!

কক্সবাজার থেকে মেরিন ড্রাইভ হয়ে টেকনাফ গিয়ে শীপ ধরা সম্ভব না, প্রাইভেট গাড়িতে করে গেলে সম্ভব হতেও পারে!

অনেকেই ঢাকা থেকে ট্রেনে করে চট্টগ্রাম গিয়ে তারপর অইদিনই বাসে করে কক্সবাজার/টেকনাফ গিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেন, এটা কোন মতেই সম্ভব না! চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যেতেই তো ৪-৫ ঘন্টা লেগে যায়, টেকনাফ তো আরো বহুদূর!

কিছু অনুরোধ-
ভ্রমণের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে প্রবাল নিয়ে আসবেন না!
যেখানে সেখানে পানির বোতল, খালি প্যাকেট ইত্যাদি অপচনশীল জিনিস ফেলবেন না!

শীপে চড়ে যাওয়ার সময় অনেককেই দেখা যায় চিপসের খালি প্যাকেট সমুদ্রে ফেলে দেয়, এমনটা করবেন না প্লিজ, আপনার সাথে থাকা ভ্রমণসঙ্গীকেও এ ব্যাপারে সতর্ক করুন!

Post Copied From:Sujauddin F. Sohan‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

জাতীয় ঝর্ণা খৈয়াছড়া

সবাই বলে এটা নাকি জাতীয় ঝর্ণা কারন খুব কম মানুষই আছে যারা এই ঝর্ণায় যায়নি আর পিছলা খায়নি। তবে বর্ষাকালে খৈয়াছড়ার রূপ যৌবন দেখে আমরা মুগ্ধ হলেও আজ শোনাবো নতুন গল্প, রাতের গল্প, ভোরের গল্প 🙂
গত সপ্তাহে আমরা ৭ জন গিয়েছিলাম খৈয়াছড়ার ৪ নাম্বার ঝর্ণায় ক্যাম্পিং করতে, ঝর্ণা হোটেলে দুপুরে লাঞ্চ করে একটু বিশ্রাম এর পর সূর্য যখন পাহাড়ের কোল ঘেঁসে বিদায় জানাচ্ছিলো, কাঠবিড়ালিরা যখন খেজুর গাছের আড়ালে লুকাচ্ছিলো ঠিক তখনি আমাদের হাটা শুরু হয় ঝর্ণার উদ্দেশে, ৪ টা টেন্ট, ৪ টা টর্চ, কিছু শুকনা খাবার, আকাশের জ্বলজ্বলে তারা এগুলো সাথে নিয়ে এক সময় পৌঁছে যাই কাঙ্ক্ষিত ঝর্ণার সামনে, দেখে মনে হচ্ছিলো প্রকৃতি যেন আগে থেকেই আমাদের জন্য বিছানা করে রেখেছিলো। একপাশে সঙ্গীদের গলা ছেড়ে গান আর আরেক পাশে ঝর্ণার ক্লান্তিহীন অবিরাম ঝুম ঝুম শব্দ আপনাকে এক অন্য জগতে নিয়ে যাবে 🙂 ভোঁর বেলা কুয়াশার চাদরে চারপাশ যখন ঢাকা, শিশির ভেজা পাথরে খালি পায়ে হাঁটতে খারাপ লাগবে না আশা করি 😉 অনেকটা স্বপ্নের ম Copiedতো মনে হবে যেন মন ভরে শ্বাস নেবার আনন্দে আত্মহারা হবার উপক্রম 😀
যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাস এ রওনা দিয়ে মিরেরসরাই, বড় তাকিয়া বাজার নেমে একটু হেঁটে সিএনজি নিয়ে ১০ মিনিট গিয়ে হাটার পথ শুরু …
সাথে নিতে হবেঃ টেন্ট (তাবু) শুকনা খাবার, গরম কাপড়, পাতলা কম্বল/চাদর, পানির বোতল (ঝর্ণার পানি খাওয়া যায়)
মনে রাখতে হবে ঘুরাঘুরি করেন, ক্যাম্পিং করেন আর যাই করেন, ভ্রমন স্পট নোংরা করা যাবেনা, প্লাস্টিক এর বোতল, প্যাকেট ফেলে আশা যাবেনা। সুন্দর মন নিয়ে ভ্রমণ করুন, প্রকৃতিকে ভালবাসুন <3

Post Copied From:Mohtadi Shahrier Maudood‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

রানী রাসমনির ঘাট

আমার শৈশব কেটেছে এই বীচে। আমরা বলতাম দইজ্যারকূল। এখানে পাবেন সাগর, ম্যানগ্রোভ বন, বীচ, স্থানীয় জেলেদের জীবন দেখার সুযোগ। বনের ভেতরের সৈকতটা অধুনা বিখ্যাত গুলিয়াখালীর মত। আসলে গুলিয়াখালী বিখ্যাত হলেও একই রকম স্পট অসংখ্য আছে চিটাগাং কোষ্টে। এমনকি ছবির জায়গাটাও এক যুগ আগে এমনই ছিলো।

জায়গাটা একসময় নির্জন ছিলো। গত আট-দশ বছর ধরে পপুলার হয়েছে। তাই ছুটির দিন বিকেলে বেশ মানুষ হয়। কিন্তু অন্যান্য দিন বেশ নীরব থাকে।

আসল রুপ দেখতে চাইলে সকালের দিকে যাবেন। চোখের সামনেই জোয়ার আসবে ম্যানগ্রোভ বনে। দেখার মত ব্যাপার।

চট্টগ্রামের অলংকার মোড় এসে রিকসাকে সাগরপাড় যাবো বললেই নিয়ে যাবে। ভাড়া ৫০ টাকা।

চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণ কাট্টলীতে অবস্থিত এই বীচকে অনেকেই সাগরিকা বীচ বা হালিশহর বীচ নামেও চেনে।

পাংথুমাই ঝর্ণা

যেভাবে যাবেন : ঢাকা/চট্টগ্রাম> সিলেট >বিছানাকান্দি >পাংথুমাই ঝর্ণা.
সিলেট থেকে লেগুনা/cng রিজার্ভ করে হাদারপার বাজার, ওখান থেকে নৌকা ভাড়া করে বিছানাকান্দি যাওয়ার পথেই পড়ে এই ঝর্ণা. নৌকা ভাড়ার করার সময় মাঝিকে বলে রাখতে হবে.
পান্থুমাই ঝর্ণাটি পুরোপুরি ভারতেই অবস্থিত। ভরা বর্ষায় না গেলে এর প্রকৃত রূপ দেখা যায় না।
পান্থুমাই পয়েন্টে গিয়ে বাংলাদেশ থেকে শুধু দেখাই(ছবি তোলা) যায়, বিএসএফ নিচে দাঁড়িয়ে থাকে (রাইফেল হাতে)। 
যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা/চট্রগ্রাম থেকে বাস/ট্রেন/প্লেনে সিলেট > সিলেট শহরের আম্বরখানা/শিশুপার্ক পয়েন্ট থেকে সিএনজি/লেগুনা (লোকাল/ রিজার্ভ) করে হাদারপাড় বাজারে নামতে হবে।
* হাদারপাড় থেকে রিজার্ভ নৌকা নিয়ে বিছনাকান্দি, পাংথুমাই, লক্ষণছড়া একসাথে ঘুরে আসতে পারেন। নৌকা ভাড়া নিবে ১৫০০-২০০০ টাকা। এক নৌকায় ১০-১২ জন যাওয়া যাবে।
* হাদারপাড় থেকে শুধু পাংথুমাই ও লক্ষণছড়া যেতে চাইলে নৌকা ভাড়া নিবে ১০০০-১২০০ টাকা।
*হাদারপাড় থেকে শুধু বিছনাকান্দি যেতে চাইলে নৌকা ভাড়া নিবে ৭০০-৮০০ টাকা।
ঈদের সময় বলে আমাদের(৫ জনের) নৌকা ভাড়া নিসে ১৬০০ টাকা> বিছনাকান্দি আর পাংথুমাই(ভাড়া চাইসে ৩৫০০ টাকা>বিছনাকান্দি, পাংথুমাই, লক্ষণছড়া, পরে আমরা বিছনাকান্দি আর পাংথুমাই রাজি হই) ।
বিঃদ্রঃ আমরা চিনিনা বলে আমাদেরকে সিএনজি ড্রাইভার নামার বাজার নামায় দিসে(আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে লোকাল ১৫০টাকা)। ওখানে নৌকা ঘাটের লোকদের(দালাল) সাথে সিএনজি ড্রাইভারদের গোপন লিংক আসে, যেটা আমরা ফেরার পথে বুঝতে পারছি। ফেরার পথে হাদারপাড় থেকে আমরা সিলেট আসছি ৯০টাকা ভাড়া দিয়ে লেগুনা করে।
* আশা করি আপনারা দালালদের এড়িয়ে চলবেন আর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবেন।

Post Copied From:

রঙিন পতঙ্গ‎ >Travelers of Bangladesh (ToB)

কর্ণফুলীর শহর চট্টগ্রামে( পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী টারবাইন ইঞ্জিনের প্লেনে করে)

ঘুরতে পছন্দ করেন, কিন্তু উড়ার শখ জাগে না এমন মানুষ খুব কমই আছেন। পাখির মতো দুইটা ডানা নেই বলে অনেকে হয়তো ভাবেন কপালে উড়ে যাবার ভাগ্য নেই। অন্যথায় মনে হয় , ধ্যাৎ ডুরালুমিন আর কম্পোজিটের ডানায় করে উড়তে কত টাকাই না লাগে। হ্যা, দু-চার পাখার প্লেনের কথাই বলছি। (যারা এই ব্যাপারে বিজ্ঞ, তাদের জন্যে এই পোস্ট নয়)

কমপক্ষে শ’খানেক মানুষের সাথে প্লেনের ব্যাপারে কথা বলেছি এই পর্যন্ত, শুধু তাদের ধারণাটা বুঝার জন্যে – টেকনিকাল, এক্সপেরিয়েন্সিয়াল এবং ফিনান্সিয়াল। টেকনিকাল এবং এক্সপেরিয়েন্সিয়াল ব্যাপারে ধারণায় অনেক গড়বড় আছে ৯০% এরই, আর ফিনান্সিয়ালের ব্যাপারেও গড়বড় ধারণাটাও নেহায়েৎ কম নয়। রিক্সাচালক মামাও মনে করেন প্লেনে চড়তে কমপক্ষে তার একমাসের সম্পূর্ণ ইনকাম খরচ হয়ে যাবে, যা মোটেও সত্য নয়।

আচ্ছা, ২,৩০০ টাকায় ৪১৯ জনের প্লেনে উঠার প্ল্যান শেয়ার করার আগে নিজের পুরোনো একটা এক্সপেরিয়েন্স বলে নেই। প্রায় ১০ বছর আগে প্রথমবার প্লেনে ফ্লাই করি। প্লেনের টিকেট কাটার জন্যে সম্পূর্ণ টাকা (৩,৪৫০ টাকা ) সাথে ছিল না। তখন, অর্থাৎ প্রায় এক দশক আগে ৩,৪৫০ টাকা কোনো স্টুডেন্টের জন্যে একেবারে কম টাকাও ছিল না। এই ঘাটতি থাকার কারণে আমারই পুরোনো এক চেকে, তারিখ আর অর্থ পরিমান পরিবর্তন করে নিজে ছয়বার সাইন করি আর টাকা তুলে বিমানের অফিস থেকে টিকেট কিনি। ভাগ্যে জোটে ২২০ জন ক্যাপাসিটির এয়ারবাস A310 যেটা মাত্র কয়দিন আগে বিমান থেকে ফেজ আউট করে দেয়া হয়। অন্যান্য খরচ বাবদ আরো কিছু টাকা শেষ হয়ে যাবার পর, সর্বশেষ ১৫ টাকা পকেটে নিয়ে সিলেটের এয়ারপোর্টে ঢুকি আর ঢাকার এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে লোকাল ৩ নম্বর বাসে করেই সেদিন বাসায় ফিরি।

তবে প্রথম সেই টেক-অফের ফিলটা এখনো ভুলতে পারিনি। তা ছিল খুব অপরিচিত একটা মারাত্মক রকমের অনুভূতি, যেখানে মধ্যাকর্ষণের বিরুদ্ধে পুরো শরীরটা তিনশ কিলোমিটার হরিজন্টাল স্পীডে উপরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, দু-চোখ দিয়ে দেখা সবুজ শহরটা দ্রুতই নিচে তলিয়ে যাচ্ছে, শুভ্র মেঘগুলোও বাই-বাই দিচ্ছে উপরে উঠার পথে আর মোস্ট ইম্পোর্টেন্টলি, মন ভাবছে, ঠিক থাক থাকবে তো সবকিছু? থাকতে পারবো তো আকাশে? স্পষ্ট মনে আছে, এই গোজামিল অনুভূতিতে মুখে আমার ছিল একটু মুচকি হাসি , তবে রাগ ও হচ্ছিলো, মনে হচ্ছিলো আরো আগেই এর অদ্ভুত স্বাদটা নিতে পারলে বেশি ভালো হতো।

মজার ব্যাপার হলো আপনি চাইলে, ওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে বড় কমার্শিয়াল এয়ারক্রাফট গুলোর একটাতে করে ফ্লাইটের এক্সপেরিয়েন্স নিতে পারেন, সেটা বাংলাদেশেই, আর তা একটা ডোমেস্টিক ফ্লাইটে করেই। এয়ারক্রাফটি হলো বিমানের Boeing 777-300ER, এর টারবাইন ইঞ্জিন দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এয়ারক্রাফট ইঞ্জিন (GE90). ২,৩০০ টাকায় একটু বেশি বেশি মনে হচ্ছে না? স্বাভাবিক।

এই বড় এয়ারক্রাফটগুলো সাধারণত শুধুমাত্র ডোমেস্টিক ফ্লাইটের জন্যে উড়ানো হয় না। বিমানের এ ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটগুলো শুধু ঢাকাতেই অপারেট করে না, এগুলো ঢাকা থেকে ছেড়ে চিটাগাং বা সিলেট হয়ে সৌদি, ইংল্যান্ড বা অন্যান্য ডেস্টিনেশনে চলে যায়। বুঝানোর সুবিধার্তে ধরে নিলাম X ফ্লাইট ঢাকা থেকে ৩০০ আর পথিমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে আরও ১১৯ জন যাত্রী নিয়ে জেদ্দা যাবে। সেক্ষেত্রে ঢাকা থেকে উড়ার সময় ১১৯ সিট ফাঁকা থাকবে যেটা চট্টগ্রাম গিয়ে ফিল-আপ হবার কথা। এয়ারলাইন্স টেকনিক্যালি ওই ১১৯ সিট ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের ডোমেস্টিক যাত্রীর কাছে সেল করে দেয়, এতে করে তারা এক্সট্রা কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারে কারণ সবসময়ই সে সিট গুলো ফিলিড আপ রাখতে পারছে। আর এজন্যই আমরা চাইলে খুব সহজেই ছোট ডোমেস্টিক রুটেও বড় এয়ারক্রাফটে ট্রাভেল করতে পারি।

কিভাবে বুজবো যে X ফ্লাইটাই Boeing 777? এর জন্যে আপনার মূলত ফ্লাইট নম্বর খেয়াল করতে হবে। যেমন, বিমানের BG 121 ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে মাস্কট যায়, সাধারণত, তার মানে এটি বড় ফ্লাইট। আবার একই দিনে বিমানের BG411 ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে শুধু চট্টগ্রাম যায়, যেটি ৭০ আসনের ছোট্ট Dash 8. আপনি ফ্লাইট নম্বর দিয়ে গুগল সার্চ করে বের করতে পারবেন যে এটি কোথাকার ফ্লাইট আর কত বড় ফ্লাইট (এয়ারক্রাফট মডেল)। আবার খুব সহজেই, ঢাকা-চট্টগ্রাম ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ৪০০ সিরিজের ফ্লাইটগুলো এভোয়েড করলে ছোট ফ্লাইট গুলো বাদ দিতে পারবেন।

আর এয়ার ট্রাভেলের ক্ষেত্রে আপনাদের যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে খুশি হব। হ্যাপি ফ্লায়িং 🙂

ছবি: মেঘের সাগর, বালি যাবার পথে মালয়েশিয়ান এয়ার স্পেসে তোলা। এয়ারক্রাফট : Boeing 737, এয়ারলাইন: Malindo

Post Copied From:Khairul Hassan>Travelers of Bangladesh (ToB)

কাপ্তাই লেকে নৌকা ভ্রমণ ও কায়াকিং

কম খরচেই এক দিনের ট্যুর দিয়ে মন ভালো করে আসার মত সেরা একটা জায়গা চট্টগ্রামের কাপ্তাই। 💜
বিশেষ করে যারা চট্টগ্রামে থেকেও এখনো কাপ্তাই যান নি, তাদেরকে বলছি ঘরের কাছের এত অসাধারণ জায়গা মিস করবেন না 😍
যেভাবে যাবেন:
আমরা ৪ জন চট্টগ্রাম শহর থেকেই গিয়েছি। যারা চট্টগ্রামের বাইরে থেকে আসবেন তাদের জন্য বিভিন্ন জায়গার ডিরেক্ট কাপ্তাইয়ের বাস সার্ভিস আছে।
বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে ডিরেক্ট কাপ্তাইয়ের বাসে উঠতে হবে, ভাড়া ৬৫ টাকা (জেনে উঠবেন)
সাজেশন থাকবে একটু আগে রওনা দেওয়ার, কারণ টার্মিনাল থেকে কাপ্তাই পৌঁছাতেই লাগবে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার মত। দেরী করে বের হলে সবকিছু দেখার সময় থাকবে না।
ওখান থেকে আগে যদি কায়াকিং করতে চান তাহলে “জুম রেস্তোরাঁ” তে নামতে হবে। ওখান থেকে কিছু সামনেই “Kaptai Kayak Club” এর ব্যানার দেখতে পাবেন। ভাড়া – প্রতি কায়াকে ২ জন, ৩০০ টাকা প্রতি ঘণ্টা (ডিস্কাউন্ট থাকলে ২৫০ টাকা)
কায়াকিং করার পর লাঞ্চ টা সেরে নিতে পারেন কায়াক পয়েন্টের উপরেই “ফ্লোটিং প্যারাডাইস রেস্টুরেন্ট” এই। অনেক ভালো এবং সাশ্রয়ী।
তারপর সেখান থেকেই সিএনজিতে করে সরাসরি আসল কাপ্তাই লেকে চলে যাবেন। ভাড়া জনপ্রতি ২৫-৩০ টাকা নিবে। দরদার করেই উঠবেন।
(ওখানে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। কারোর পাস বা পরিচিত থাকলে ঘুরে আসতে পারবেন।)
কাপ্তাই লেকে নৌকা ভাড়া করার সময় খেয়াল রাখবেন ভাড়া নিয়ে। ওরা ৩-৪ শ টাকা ভাড়া বলবে প্রতি ঘণ্টা সাম্পান।
আমরা ১৫০ টাকা দিয়ে দরদার করে ভাড়া করেছিলাম প্রতি ঘণ্টা।
১৫০ টাকা ভাড়া দিয়েছিলাম, কিন্তু যে সৌন্দর্য টা উপভোগ করেছিলাম সেটা ১৫০ কোটি টাকারও বেশি 😍😍
দুটো রংধনু চোখের সামনে উঠতে আর মিলিয়ে যেতে দেখা 😍😍 স্বর্গীয় 😍😍
কাপ্তাই লেক ঘুরার পর যদি সময় থাকে তাহলে নেভী ক্যাম্প যেতে পারেন, ওই জায়গাটা নাকি সুন্দর। আমাদের সময় না থাকায় যেতে পারি নি।
কাপ্তাই থেকে ফিরার পথে ডিরেক্ট কাপ্তাই টু বহদ্দারহাট এর বাস গুলা লেট করে অনেক। তাই যারা চট্টগ্রাম শহরে ব্যাক করবেন তাদের সাজেস্ট করবো কাপ্তাই টু লিচুবাগান চলে আসা, ভাড়া জনপ্রতি ৩৫ টাকা সিএনজি তে।
তারপর লিচুবাগান থেকে বাস ছাড়ে ১০-১৫ মিনিট পরপর শহরের উদ্দেশ্যে, ভাড়া জনপ্রতি ৪৫ টাকা।
এভাবেই খুব সহজেই এক দিনের ট্যুর দিয়েই অল্প খরচেই ঘুরে আসতে পারেন কাপ্তাই 😍😍😍😍
#HappyTravelling

post Copied From:Sourav Chowdhury‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

মেঘের দেশ সাজেক

অনেকবার ডেইট চেঞ্জ করতে করতে কিভাবে যেন হুট করেই রওনা দেওয়া। ঢাকা থেকে আমি যাচ্ছি, বাকিরা সিলেট থেকে। চট্টগ্রামে গিয়ে একসাথে রওনা দিব মেঘের দেশে। কপালের লিখা কে খন্ডাবে!! ৩ ঘন্টা দেরী করে যখন চট্টগ্রামে পৌছালাম ততক্ষ্ণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। বহুকষ্টে খাগড়াছড়ির বাসের ইঞ্জিনের উপর ঠাই হল আমাদের। সকালের এস্কোর্ট তো মিস হলই বিকালেরটাও ধরতে পারব কিনা তার নিশ্চয়তা কে দেবে তারওপর যদি বাস আবার নস্ট হয়!! কপালে যেদিন দুঃখ আসে, সেদিন সব দিক দিয়েই আসে।
আমরা যখন দিঘীনালায় পৌছালাম ততক্ষ্ণে সূর্যমামার ঘুমাবার সময় হয়ে এসেছে। এস্কোর্ট তো মিস হলই, তাইলে এখন উপায়!! এক সিএনজি ড্রাইভার বলল সে নাকি নিয়ে যেতে পারবে। তো উঠে পড়লাম আমরা। যা আছে কপালে। শেষবিকালে আমরা পাহাড়ি ওই স্বর্গের রাস্তাটা ধরে যেন স্বর্গেই যাচ্ছি। চলে আসলাম বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্পে। দুর্ভাগ্যের ষোলকলা পূর্ণ হল। আমাদের এই রাতের বেলা কোনভাবেই যেতে দিবে না। আর মাত্র ৩৭ কিমি পর আমাদের গন্তব্য। ২৪ ঘণ্টার কষ্ট বৃথা!! তো কি আর করা । দিঘীনালায় ফিরে আসা। আর পরদিন সকালের জন্য অপেক্ষা।
সকাল হল। আমাদের যাত্রা আবার শুরু হল। রাতের ঘুমে শরীর এখন চাঙা। গতকালের লাস্টের আমরা আজ সবার আগে বাঘাইহাট। পথে হাজাছড়া দেখে এসেছি। বলা যায় পানিশূন্য হাজাছড়া। সাড়ে দশটায় এস্কোর্ট ছাড়ার কথা এগারোটা বেজে গেল তাও ছাড়ছে না! আমাদের যেন চিন্তা নাই, হাতে চায়ের কাপ নিয়ে জমিয়ে ক্যারাম খেলছি বাঘাইহাট বাজারে। 
এবার আর কোন বাধা নাই বলা যায়। স্বর্গের দ্বার আজ আমাদের জন্য উন্মুক্ত। আদিবাসী বাচ্চারা হাত নেড়ে স্বাগতম জানাচ্ছে আমাদের। এবার বুঝি দেখা মিলবে সাজেকের। কিন্তু……
সাজেকে যাওয়ার সর্বশেষ পাহাড়টার খাড়া অংশটুকু পার করতে আমাদের সি এন জি এর প্রাণ যায় যায় অবস্থা। নেমে কিছুটা পথ তাই হাটতে হল অভিকর্ষের বিপক্ষে।
অবশেষে পৌছালাম। ঠিক করেছিলাম কোন কটেজে উঠব না। একেবারে আদিবাসীদের সাথে উনাদের বাড়িতেই থাকব, উনাদের খাবার খাব। খুব কাছ থেকে দেখব তাদের জীবনযুদ্ধ। দিদিকে কল দিলাম। উনি এসে স্বাগত জানিয়ে নিয়ে গেল ,যেন বাড়িতে মেহমান এসেছে। তারপর নিয়ে গেল মাচাং এ যেখানে আমাদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মাচাং এর বারান্দায় গিয়ে সামনে যা দেখলাম তার কাছে আমাদের দুদিনের সব পরিশ্রম একেবারে নাই হয়ে গেল। এ আমার বাংলাদেশ। <3
রেস্ট নিয়ে বিকালে বের হলাম। হ্যালিপ্যাডে সূর্যাস্ত দেখলাম। আর একটু পর আকাশ জুড়ে কোটি তারার মেলা। পুরোটা আকাশ গঙ্গা। কতক্ষ্ণ আকাশভরা তারার নিচে শুয়ে ছিলাম জানি না। পেটের রাক্ষসটা জানান দিল তার অস্তিত্ব। ফিরে আসলাম মাচাং এ। আজ রাতের মেনু ব্যম্বু চিকেন, বাঁশের মধ্যে রান্না করা পাহাড়ী চালের ভাত, আলুভর্তা,ডাল। যেন অমৃত। খেয়েদেয়ে বারান্দায় বসে মেঘের সমুদ্র দেখা। যেন স্বপ্নের মধ্যেই বেঁচে থাকা।
রাত পোহালো। ভোর হলো। আমাদের সামনেই মেঘের সমুদ্র থেকে যেন সূর্যটা উকি দিল। খেয়েদেয়ে যাত্রা করলাম কংলাক এর দিকে। সূর্যের তেজ তখন পুরোপুরি। একঘন্টা পর পৌছালাম কংলাকে। আমরা তখন সবার চেয়ে উপরে। আদিবাসী মেয়েরা বসে কাপড় বুনছে। আর পিচ্চিগুলা বেশি জোস। আমাদেরকে ওদের ভাষা শিখাচ্ছে। শুনলাম এক ঝর্ণার কথা। দেড় দুঘন্টার পথ ওখান থেকে। কয়েকজন মানা করল যেতে। কিন্তু যেতে তো হবেই। এক পিচ্চিকে (ওর নাম মওনা) গাইড বানিয়ে রওনা দিলাম। মওনার সাথে ওর দু একজন বন্ধুও গেল আমাদের সাথে। জঙ্গলের মধ্যে পথ বানিয়ে আমরা যাচ্ছি তো যাচ্ছি। পথের শেষ বলে যেন কিছুই নেই। একটুপর ঝর্ণার শব্দ শুনতে পেলাম। নভেম্বরেই এত পানি!! বর্ষায় না যেন কেমন হয়! আমরা ছাড়া আর কেউ নাই এখানে। সূর্যের আলো বহুকষ্টে আসে যেন। শুরু হল আমাদের ঝাপাঝাপি। ফিরে এলাম কংলাকে। এখান থেকে সাজেকে যাওয়ার এনার্জি নাই কারো। একটা গ্রুপ তাদের গাড়ি নিয়ে ফিরে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গেই তাদের গাড়িতে করে সাজেকে চলে আসলাম। ধন্যবাদ তাদের।
মাচাং এ আসলাম শেষ বিকালে। গোসল সেরে খেয়েদেয়ে এক ঘুম। যা পরিশ্রম গেল ! রাতে বের হয়ে হাটাহাটি করে আসলাম। এবার ফেরার পালা। এই স্বর্গ ছেড়ে চলে যেতে হবে! রাতের খাবার খেয়ে দিদির সাথে গল্প করতে বসে গেলাম। দিদি আরেকটা দিন থাকতে বলল। দুইদিনে আমাদের যেন আপন করে নিয়েছে। সম্পর্ক্টা আপনি থেকে তুই,তুমিতে চলে এসেছে। বায়না করলাম আমাদের জুম চাষের জমিতে নিয়ে যেতে হবে, সাথে আরেকটা ঝর্ণায় যেখানে মাছ ধরা যাবে। দিদি রাজি হল আর আমরা আমাদের ড্রাইভারকে কল দিয়ে আরেকটা দিন পরে আসতে বলি। শুয়ে শুয়ে আবারো ভোরের অপেক্ষা করতে থাকি।
পরদিন দিদি সময় দিল ৯ টায়। তার আগে বের হলাম আমরা। নাস্তা করে হাঁটাহাঁটি। বিচ্ছুরানী ও তার দলবলের সাথে দেখা। খেলছে তারা বালু, পাতা, ইট দিয়ে রান্না রান্না। একটা পাতায় আমাকে খেতে দিল। কিচ্ছুক্ষ্ণ পর দেখি হাতে বইখাতা নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে সবাই। স্কুল শুরু হয়নি এখনো। এত সুন্দর একটা পরিবেশে স্কুল! খেলার ছলে ওদেরকে দিয়েই ওদের স্কুল মাঠে পড়ে থাকা কাগজ, প্লাস্টিক পরিষ্কার করালাম। যে বেশি কাগজ পরিষ্কার করতে পারবে সে তত বেশি চকলেট পাবে। খুব আগ্রহ নিয়ে সবাই নেমে গেল মাঠ পরিষ্কার করতে। (যদিও ময়লাগুলার বেশিরভাগই আমার আপনার ফেলা )
নয়টা বাজল। দিদির সাথে আমাদের যাত্রা শুরু হলো। পৌছে গেলাম জুম চাষের জায়গায়। পাহাড়ী সবজি ,শাক তোলা হল ঝুড়ি ভরে। ঝিরিপথে হাটতে হাটতে , পিছলে পড়তে পড়তে এক ঝর্ণার কাছে পৌছালাম। সামনে যাওয়ার আর রাস্তা নাই। এখানেই শুরু হলো আমাদের চিংড়ী শিকার। একবোতল চিংড়ি আর চার পাঁচটা কাকড়া ধরে ফেরার পথ ধরলাম। কিন্তু বিধিবাম।
এবার দিদিও রাস্তা ভুলে গেলেন! এপথ ওপথ করতে করতে নতুন রাস্তাও বানিয়ে ফেলল। সামনে একটা জুমঘর। ওখানে বসে চিংড়িগুলো ভাজা হল। সে কি স্বাদ!! চারপাশে পাহাড়, সবুজ আর নিরবতা!! বারবিকিউ শেষ হল। আমাদের রেস্টও হল। মাচাং এর দিকে রওনা দিলাম। পথে একটা কূপ। এখান থেকে খাবার পানি নিয়ে যান দিদিরা। এখানেই গোসল করে নিলাম। মাচাং এ এসেই সব চিৎপটাং । আর দিদি আর মাসীমা রান্না শুরু করল। একটু পর সামনে হাজির হল নিজেদের তুলে আনা শাক সবজি। তেল ছাড়া রান্না। পাতিলের বদলে বাশে রান্না হয়। তার কি স্বাদ। খেতে খেতে প্যান্টের বেল্ট ঢিলা করা লাগে, তারপর হেলান দেওয়া লাগে, তাও খাওয়া শেষ হয় না।
সকালে গাড়ী আসবে। চলে যেতে হবে। দিদি মাসী আবার অগ্রীম নেমন্ত্রণ দিয়ে রাখলেন। পরেরবার আসলে নাকি সাজেক নদী দেখাতে নিয়ে যাবেন !!!!
সহজ সরল প্যাচহীন মানুষগুলো ৩ দিনেই একটা বন্ধনে আটকে দিয়েছেন যেন।
আমাদের সাজেক পর্ব শেষ হল। কিন্তু ট্যুরের এখনো বাকি আছে। এবার যাত্রা খাগড়াছড়ি। রাতের বাসের টিকিট করে সিস্টেম রেস্টুরেন্টে খেয়ে রওনা দিলাম রিছাং ঝর্ণার উদ্দেশ্যে। স্লাইড দিতে গিয়ে একবার পিছলিয়ে পড়েও গেলাম। বড় দুর্ঘটনা না ঘটলেও কনুই হাটুতে ব্যথা পেলাম। আর প্যান্ট এর ১২টা বাজায় দিলাম!!! (ভাগ্যিস এক্সট্রা ছিল 😛 )
রিছাং এর পর আলুটিলা। সন্ধ্যা হয়ে এল। আমরা মশাল হাতে গুহায় প্রবেশ করলাম। যেন অন্য কোন জগতে চলে এসেছি। ২০ মিনিট পর ফিরে এলাম চেনা জগতে।
রাতে খাগড়াছড়ি শহরে ঘুরাঘুরি করে ৯ টায় বাসে উঠলাম। বাস ছাড়ল। পেছনে রেখে এলাম জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ৪টা দিন। আর সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি সারাজীবন মনে রাখার মত হাজারো স্মৃতি।

খরচঃ তিনরাত সাজেকে ছিলাম। কটেজে না থাকা আর বাইরে হোটেলে না খাওয়ার জন্য খুবই অল্পতে ট্যুর শেষ করা সম্ভব হয়েছে।
তিন দিনের জন্য মাচাং এ ৩৫০০ লাগছে। ( যদিও দিদি ৩০০০ চেয়েছিল)
খাওয়া দাওয়া + যাতায়াত+ অন্যান্য সব মিলিয়ে পার পারসন ৫৩০০+ খরচ ।

**ছবির এই ঝর্ণাটারই দেখা পেয়েছিলাম কংলাক থেকে যাত্রা করে।
হ্যাপি ট্রাভেলিং 🙂

Post Copied From:Hasib Mehedi Porosh‎>Travelers of Bangladesh (ToB)