সাজেক ভ্যালি

সেই ছোট্ট বেলায় যখন স্কুলে ভর্তি হয়নি, গ্রামেই থাকতাম আমরা। মাঝে মাঝে গরমের রাতে আব্বু কে জিজ্ঞেস করতাম মেঘ কত উপরে? আব্বু বলত মেঘ খুবি কাছে থাকে আমাদের। মোটামুটি ৯০০-১৫০০ মিটার উপরে উঠলেই মেঘ ধরতে পারবে। আমি ভাবতাম তাই কখনো যদি হয় আমি উপরে যাব কিভাবে? আব্বু তখন এও বলেছিলেন যে আমাদের অনেক পাহাড় আছে যেগুলোর উপরে গেলে আমরা খুব সহজেই মেঘ দেখতে পারব, ধরতে পারব।
খুব কষ্ট করে বিশ্বাস করেছি সেদিন আর মনে মনে ভেবেছি এই উচ্চাতায় যেতে পারলেই একটুকরো মেঘের উপরে উঠে বসে সারা পৃথিবী ঘুরে আসব। আবার এও মনে হয়েছে যে মেঘ যদি বৃষ্টী হয়ে ঝরে পরে? একরম নানা কল্পনায় কাটে আমাদের শৈশব আর কৈশর। শৈশব কৈশরএর সে সব স্বপ্ন কে সত্যি যদি করতে চান তবে লিখা টা হয়তো কিছুটা সাহায্য করতে পারে আপনাকে।

বলছিলাম মেঘের স্বররগ রাজ্য খেত সাজেক ভ্যালির কথা। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যেতে চাইলে যেতে হবে আপনাকে এস আলম, শান্তি বা হানিফের বাসে। তাঁর মধ্যে আমরা গিয়েছিলাম এস আলমের বাসে। এই বাসের সিটের সামনে পা রাখার জন্য যথেষ্ট যায়গা পাবেন আপনি। রাত ১২ টায় শুকারবাদ থেকে যাত্রা করে খুব সকালেই খাগড়াছড়ি পৌছে যাওয়া যায়। আমরা পৌছেছিলাম সকাল সাতে সাতটায়। এর পরে বাস থেকে নেমে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে আমরা শুরু করেছিলাম চাদের গাড়ি বা পিকাপ খোজা। আমরা গিয়েছিলাম ৬ জন। চাঁদের গাড়িতে সাজেক যেতে আপনাকে গুনতে হবে ৭৮০০ টাকা আর যদি একটু আরাম করে পিকাপে করে যেতে চান তবে আপনাকে গুনতে হবে ৯৮০০ টাকা। খাগড়াছড়ি শহর থেকে দীঘিনালা হয়ে মাচালং বাজার হয়ে যখন সাজেক পৌছাবেন বেলা তখন প্রায় দুপুর। বলে রাখা ভাল সকাল সারে দশটায় দিঘিনালা থেকে আর্মি স্কর্ট করে নিয়ে যায় সাজেকে। তাই অবস্যই চেষ্টা করবেন এর মধ্যেই দিঘিনালা চেক পোস্টে পৌছাতে। সবাই অবস্যই ফটো আই ডি সাথে রাখবেন। এখানে আমাদের সাবার নাম ঠিকানা লিখে সামনে পেছনে আর্মির গাড়ি রেখে যাত্রা শুরু হয় সকাল সারে ১০ টায়।

আগে অবস্য এরকম স্কর্ট করে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা ছিল না। ৩১/১২/২০১৫ তে একবার এক ফামিলির গাড়িতে আগুণ লাগিয়ে দেয়ে শান্তি বাহীনির ক্যাডাররা। তার পরেই ১ জানুয়ারি ২০১৬ থেকে এই সিস্টেম শুরু হয়। এখানে এক সময় কোন রাস্তাও ছিল না। এখন আমরা যেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি সেই রাস্তা ২০০৮ সালে শুরু হয়ে ২০১৫ সালে চালু হয়। এই কাজও বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ আর্মি।

সে যাই হোক, সাজেক কিন্তু এক সময় ছিল আদিবাসি পাড়া এখন যারাকিনা কংলাকের স্থায়ী বাসিন্দা। উঁচুনিচু পাহাড়ি রাস্তা মাঝেই মাঝেই মনে করিয়ে দেবে রোলার কোস্টার রাইডের কথা।
এসব দেখতে দেখতে সাজেকে পৌছে গেইটে ঢুকতে রুইলুই পারা চেক পোস্ট যেখান থেকে সবার জন্য ২০ টাকা দিয়ে টিকেট আর ১০০ টাকা দিয়ে গাড়ির টকেট কাটলেই আর মাত্র মিনিট কয়েকের পথ স্বপ্নের মত স্বপ্নিল আকাশ আর মেঘের মিলেমিশে একারকার হয়ে যাবার জন্য বিক্ষাত জায়গা সাজেক ভ্যালি।

এখানে গিয়ে আপনি চাইলে থাকতে পারেন হোটেল কিংবা রিসোর্ট গুলোতে। ছোট বড় সব মিলিয়ে ৬৩ টি রিসোর্ট আছে এখানে আর রেস্টুরেন্ট বা খাবারের দোকান আছে ২৫ টির মত। আপনি এখানে যে কোন যায়গায় থাকতে বা খেতে গেলে আগেই ফোন করে জানিয়ে রাখলে ভাল হবে। অনেক সময় নাহলে গিয়ে দেখবেন খাবার নেই বা থাকার জায়গা নেই। এডভেঞ্চার প্রিয়দের জন্য শেষে আমি কিছু নাম্বার দিয়ে রাখব। আমরা ছয় জন খেয়েছিলাম রক প্রশান্তি তে, এটা আর্মির দ্বারা মেইন্টেইন করা। দুপুরে বন মুরগী ভাত সবজী ডাল সব মিলিয়ে মোট খরচ ২২০ টাকা। আর বন মুরগীর প্রতিটা পিস স্টারের লেগ রোস্টের সাইজের। দুপুরে খাবার আগেই আমরা একটা কটেজে উঠে গিয়েছিলাম কংলাক পাড়ায়। বলে রাখা ভাল কংলাক হল সাজেকের সব থেকে উচু চুড়া। এখানে থাকতে হলে আপনাকে অনেক আগেই জানিয়ে আসতে হবে। যদি আপনি এডভেঞ্চার প্রিয় হন তাহলে আপনি তাবুতেও থাকতে পারেন। এতে করে অবশ্য খরচো কম পরবে কিছু। আর এর জন্য আপনাকে জানাতে হবে অন্তত এক সপ্তাহ আগে। আসিফুর রহমান নামের এক ভদ্রলোক পরিচালনা করছেন মন জুড়ানি উঠোন নামের এই ক্যাম্পিং ইয়ার্ডটির।

দুপুরে খাওয়াদাওয়ারর পরে তেমন একটা কাজ থাকে না সাজেকে। দেখার তেমন কিছু নেই তখন। সুর্য ডুবার ঠিক আগেই যদি হাজির হতে পারেন তিন নাম্বার হ্যালিপ্যাডে যদি আপনারা নিচ দিকে থাকেন, তাহলে দেখতে পাবেন আপনার পায়ের অনেক নিচে মেঘ বয়ে যাচ্ছে। কি অপুর্ব সে দৃশ্য বলে বুঝানো যাবে না। সন্ধ্যার ঠিক আগেই চাইলে অর্ডার দিয়ে রাখতে পারেন ব্যাম্বো চিকেনের। এটা স্থানীয় একটা বেশ জনপ্রিয় খাবার, সাথে আর যা খেতে চান। আমরা খেয়েছিলাম ব্যাম্বো চিকেন, ভাত, ডাল, আলু ভর্তা আর পাহাড়ি সবজি। যদি খুব সাহসী হয়ে থাকেন কাঁচামরিচে কামড় বসাতে ভুলবেন না।

সব্ধার পর পরেই শুরু হয় আরেক অন্য জগত। এখানে খুব একটা নাইট লাইফ নাই, পুর্নিমার সময় গেলে খুব কাছ থেকে দেখতে পাবেন চাঁদ কে আর তার পাশে ভিড় করা মেঘ গুলো কে। তবে চাইলেই চাঁদ ধরতে পারবেন না কিন্তু মেঘ অবলীলায় আপনাকে জড়িয়ে ধরে রাখবে আপনি না চাইলেও। এ এক অন্য রকম অন্য জগত!

সাজকে রাতের খাবার খেয়ে খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরাই ভাল। কারণ আসল রুপ দেখা যায় খুব সকালে। আমরা উঠেছিলাম ভোর ৫ টায়। ফ্রেশ হয়ে শীতের কাপড় গায়ে চাপিয়ে দরজা খুলতেই হতবাক। রুইলুই পাড়ায় থাকবেন যারা তাদের জন্য মন জুড়ানি উঠোন আর হ্যালিপ্যাড হল বেস্ট জায়গা। এখান থেকে আপনারা খুব ভাল ভাবেই দেখতে পারবেন মেঘের কি সুন্দর এক নদী বয়ে চলে যাচ্ছে আপনার অনেক নিচ দিয়ে। এখন চাইলে কিছু ছবি তুলতে পারেন। আর না চাইলে উপভোগ করতে থাকুন পুর্ব আকাশটাকে, আস্তে আস্তে পাহাড়ের কোল থেকে ভেসে উঠবে গত কালের অস্ত যাওয়া সূর্যটা।
সকালটা উপভোগ করেই আমরা নাস্তা করতে গিয়েছিলাম রক প্রশান্তিতে। খিচুড়ি আর ডিম ভুনা, এটাও অবস্যই আগেই বলে রাখতে হবে। এখানের ইনচার্জের নাম্বারো নিচে দিয়ে দেব। সকালের নাস্তার পরে রুমে গিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে এবার আমরা সকাল দশটার স্কর্টে খাগড়াছড়ি শহরের দিকে রওনা দেবার পালা।
পথে পরবে বেস কিছু ঝর্না। তারপর আবার খাগড়াছড়ি শহর। এখানে দুপুরের খাবার খেতে পারেন সিস্টেম হোটেলে। এটা এখানকার সব থেকে ভাল হোটেল হাস, মুরগী, শুটকি ভর্তা ডাল সবজি ছাড়াও এমন অনেক কিছু পাওয়া যায় এখানে যা কেউ ভাবেনি আগে। খরচ পরবে জন প্রতি ৩০০-৪০০ টাকার মধ্যে, তবে চাইলে কমেও খেতে পারবেন, সেট মেন্যু আছে ১৮০ টাকা করে।

যদি আপ্নারা ৯-১০ জন গ্রুপ করে যান তাহলে খরচ অনেকটাই কমে আসবে। জনপ্রতি লাগবে প্রায় চার হাজার টাকার মত। আমরা ছয়জন গিয়েছিলাম, খুব আরামে থেকে খেয়ে আমাদের খরচ হয়েছিল ছয় হাজার টাকার মত।

বলে রাখা ভাল আসার টিকেট আগেই করে রাখবেন, নাহলে আমাদের মত পেছন সিটে বসে ধাক্কা খেতে খেতে পরের দিনের অফিস বা কাজ কর্ম মিস করতে হবে। আসার সময় আমারা এসেছিলাম শান্তি পরিবহনের এসি বাসে এর জন্য খরচ পরেছিল জনপ্রতি ৮৫০ টাকা। গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে এখান থেকে সব বাস ঢাকার জন্য ছেড়ে যায় রাত নয়াটায়। ভোর চারটা পাঁচটা নাগাদ বাস পৌছে যাবে ঢাকায়। শান্তি পরিবহনের এ বাস গুলো গাবতলি বাস টার্মিনাল পর্যন্ত গিয়ে থাকে। তাই বাসায় ফেরার জন্য আগে থেকেই কোথায় নামবেন ভেবে রাখুন। গাড়ি বা নিজের যাওয়ার ব্যাবস্থা থাকলে আগেই তাদের জানিয়ে রাখুন।

বাসায় গিয়ে ঘুমদিন, পরের দিনের কাজের জন্য রেডি হোন।
সাজেকে রবি টেলিটক ছাড়া অন্য অপারেটরের নেটোয়ার্ক নাই।

আসিফ-01820106131 (মন জুরানি উঠোন)
রক প্রশান্তি- (খাবার যায়গা)
পলাশ- (ড্রাইভার,ইনি অভিজ্ঞ এবং ভদ্র)
ডিজে কিং- (সিস্টেম হোটেল)

Post Copied From:S M Mahadi Masnad‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

যেন বিচলিত নদীর সংখ্যাতীত তরঙ্গ

প্ল্যান ছিল খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠবো। কিন্তু কিসের কি! ঘুম থেকে উঠতেই বেজে গেলো সকাল ৬টা। নিজেকে কতক্ষণ দোষারোপ করে বের হলাম কটেজ থেকে।
আমরা যখন রওনা করলাম তখন দেখি মানুষ ফিরে আসছে কংলাক পাড়া থেকে। সূর্য উঠে গেছে তাই তাড়াহুড়ার কিছু নেই ভেবে আস্তে-ধীরে হেলে-দুলে যাচ্ছিলাম। আর মনে মনে ভাবছিলাম ইস,কি মিস টা নাই করলাম! সাজেকের হেলিপ্যাডের আর্মি ক্যাম্প ছেড়ে কিছুদূর যেতেই কয়েকজন আর্মি সদস্য আমাকে দাড় করালেন। তাদের কাছে যেতেই শুরু করলেন জেরা করা।

অফিসারঃ কই যান?
আমিঃ কংলাক পাড়ায়।
অফিসারঃ কই থেকে আসছেন?
আমিঃ ঢাকা।
অফিসারঃ কি করেন? বাবার নাম কি?
আমিঃ পড়ি। বাবার নাম…..
অফিসারঃ কোন কটেজে উঠছেন?
আমিঃ অমুক কটেজে।
অফিসারঃ আইডি কার্ড আনছেন?
আমিঃ উহু,আনিনাই।
অফিসারঃ আচ্ছা যান।

প্রথমে একটু চিন্তা করলাম। কখনো শুনিনি সাজেকে কাউকে জেরা করতে। তাহলে আমাকে কেন করলো! পরক্ষনেই উত্তর পেয়ে গেলাম। আমার পরনে ছিল বাংলার ঐতিহ্য লুংগি। 😜 এই লুংগি দেখে বেশ কয়েকবার মানুষের হাসাহাসি আর আশ্চর্যের কারণ হয়ে উঠি আমি। তো যাই হোক, এভাবে কতক্ষণ উঁচু রাস্তা ধরে হাটতে হাটতে একটা জায়গায় থামি। প্রথমে খেয়াল করিনি আমার হাতের বা পাশে এমন কিছু অপেক্ষা করছে। খোলা একটি জায়গায় বসেপরি কিছুক্ষণের জন্য। সৃষ্টার হাতে আঁকা ছবি। হালকা সোনালী আভা পরছে সবুজ ঠেউয়ে। এই ঠেউয়ের খাঁজে খাঁজে জমে রয়েছে সাদা-শুভ্র মেঘ। আবার কিছু কিছু অংশে পরছে মেঘের ছায়া। এমন পাহাড় দেখেই হয়তো সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হয়তো বলেছিলেন যেন বিচলিত নদীর সংখ্যাতীত তরঙ্গ। পাহাড়ে শীতল ঝিরিঝিরি বাতাস আর এমন একটি দৃশ্য। মনে মনে ভাবছিলাম কি মিস করেছি জানিনা। কিন্তু এখন যা পেয়েছি নিঃসন্দেহে আমার দেখা সেরা মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি।

কিছু মানুষ তখনো নেমে আসছিল কংলাক থেকে। কথায় বুঝলাম তাদের মধ্যে বেশ আক্ষেপ। তারা নাকি তখনো দেখার মতো কিছুই পায়নি। 🙂

যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা-খাগড়াছড়ি-সাজেক

Post Copied From:Muhammad Shariful Islam>Travelers of Bangladesh (ToB)

বান্দরবান

১.খাগড়াছড়ি থেকে বান্দরবান এর বাস আছে কি?না থাকলে ইজি রুট কোনটা?

উত্তরঃনা নাই। চিটাগং বা রাংগামাটি হয়ে যেতে হবে

.সাজেক এর জিপ ভাড়া কত এখন?
–৯১০০/-
৩.নাফাখুম,অমিয়াখুম সহ সব গুলো ঘুরতে গাইড খরচ কত?
–৭০০০-৮০০০/-
৪.থানচি থেকে রেমাক্রি নৌকা ভাড়া কত?
৪০০০-৫০০০/-
৫.নাফাখুম এ কি থাকার ব্যবস্থা আছে?
–না নাই।

বান্দরবান এ ২ দিন ঘুরার জন্য জীপ রিজার্ভ কত টাকা নিবে?
১ম দিন নীলগিরী, শৈলপ্রপাত রুট
২য় দিন নীলাচল, গোল্ডেন টেম্পল রুট

ঊত্তরঃday 1 = 3500-4000/-
day 2 = 1200-1500/-

২৩৯৫ টাকায় সাজেক ঘোরার গল্প

ToB এ আমার প্রথম পোস্ট এটা। অভিজ্ঞদের মত করে লিখতে পারবো না আমি। আমি শুধু বলে যাবো আমার অভিজ্ঞতা। এ্যাডমিন বাদে কেউ ভুল ধরবেন না! 😛

সরাসরি খরচের কথায় যাই,

ঢাকা থেকে বাস ভাড়া _______________________________ ৫২০/-
মাঝপথে কুমিল্লা বিরতিতে নাশতা _______________________ ৩০/-
খাগড়াছড়ি নেমে সকালের নাশতা _______________________ ৩৭/-
সাজেকের পিক-আপ/ চাঁদের গাড়ি _____________________ ৬৪৫/-
সাজেকে প্রবেশ টিকিট ______________________________ ২৯/-
দুপুরের খাবার ____________________________________ ১৫০/-
কটেজ ভাড়া _____________________________________ ১৬৪/-
বার-বি-কিউ _____________________________________ ১৩৫/-
সকালের নাশতা ___________________________________ ৪৫/-
দুপুরের খাবার ____________________________________ ৯০/-
ঢাকার বাস ______________________________________ ৫২০/-
মাঝপথে কুমিল্লা বিরতিতে নাশতা ______________________ ৩০/-
————————————————————————————
মোট খরচ- _____________________________________ ২৩৯৫/-

^^ এগুলা একেবারে ব্যাসিক খরচ, যা না করলেই না তাই দিলাম। আমাদের খরচ হয়েছে ২৬০০ টাকার মত। তবে ১০-১২ জনের গ্রুপ হলে খরচ টা এমন থাকবে। এর কম হলে কিছুটা বাড়বে খরচ।
এবার খরচ + খরচের বিষয়বস্তু গুলো ভেঙ্গে বলি,
আমরা বন্ধুরা যাই ৮জন। খাগড়াছড়িতে ঢাকা থেকে আসা ৩জন বড় ভাই এসে জানায় যে আমাদের সাথে যেতে চান তারা। তাই তখন থেকে আমরা ১১জনের দল হয়ে যাই!
> বাস ইকোনো পরিবহন,কলাবাগান থেকে রাত ১০ঃ৩০ মিনিটে
> কুমিল্লা বিরতিতে রোল খাই।
> খাগড়াছড়ি নেমে সকালের নাশতায় থাকে পরোটা+ভাজি/ডাল+ডিম ভাজি
> সাজেকের চাঁদের গাড়ির রেট ফিক্সড করা ছিল ৭১০০/-, যা কোনোভাবেই কমানো যায় নাই। অনেক ধরনের চাঁদের গাড়ি থাকে ঐখানে। একটু ঘুরে দেখে আমরা গাড়ি নেই যার ছাদ খোলা যায়, কারণ গাড়িতে দাড়ায়া মজা নিতে না পারলে টেম্পু টেম্পু লাগে। আর আমরা যেই গাড়ি টা নিয়েছিলাম তাকে পিক-আপ ডাকে। আমাদের ড্রাইভার সমরঞ্জন মামাও সেই এক্সপার্ট ছিলেন।
> সাজেকের প্রবেশ টিকেট জনে ২০/-, এবং গাড়ির জন্য ১০০/-
> নেমেই দুপুরের খাবারের খোজ নিয়ে জানতে পারি, ১) দেশী মুরগি+ আলুভর্তা + ডাল + ভাত = ১৮০/- ; ২) ফার্মের মুরগি+ আলুভর্তা + ডাল + ভাত = ১৫০/- ; ৩) ডিম + আলুভর্তা + ডাল + ভাত = ১০০/-)
আমরা দেশী মুরগী অর্ডার করি। এরপর চা খাই ১০/- করে কাপ।
> কটেজ নিয়ে অনেকেই বলেছিল যেহেতু ১৬ই ডিসেম্বর যাচ্ছি কটেজ পাবোনা, কিন্তু আমরা অনেক কটেজ খালি পেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের টার্গেট ছিল সাশ্রয়ী ট্যুর দেয়ার তাই আমরা আদিবাসিদের বাসায় খোঁজ নিতে থাকি। এবং ১১জনের জন্য ১৮০০ টাকায় ২রুম ম্যানেজ করে ফেলি!
> বার-বি-কিউ এর অভিজ্ঞতা টা খুব বেশী মজার। আদিবাসিরা সবাই এই মৌসুমে ব্যাবসা কে পুরো দমে কাজে লাগাচ্ছে। কারো কাছেই বার-বি-কিউ এর সরঞ্জামাদি চেয়ে পাওয়া যাচ্ছিলো না। কেউ কেউ বলছিলো দোকানে এসে আপনারা ভেজে বানান! কিন্তু আমরা চাচ্ছিলাম নিজেদের মত করে করতে যা বার-বি-কিউ এ হয়ে থাকে। পরে অনেক খুজে জোনাশ নামের এক স্থানীয় কে ম্যানেজ করলাম। ৩ কেজি ৯০০ গ্রাম মোট ওজনের ৩টা মুরগির দাম রাখলো ৮৫০/-, মুরগি বানানো, মেরিনেট, মসলা, বার-বি-কিউ বানানোর সরঞ্জাম, লাকড়ি, ডিজেল এর চার্জ চাইলো ৩০০/-। সন্ধ্যায় পরোটা অর্ডার করি বেঞ্জামিন নামের হোটেলে ৩৩টা ৩৩০/-। আমরা শুধু মুরগি গুলা জবাই দিয়ে চলে আসলাম। রাতে আমাদের ফোন করে জানিয়ে দিলো যে সব রেডি, নিয়ে যান। বার-বি-কিউ করলাম হেলিপ্যাড ২ তে।
> সকালের নাশতা করি ঐ বেঞ্জামিন হোটেলে। পরোটা আর ডিম ভাজি।
> দুপুরের খাবার খাগড়াছড়ি তে খাই। ঐখানে দাম রিজনেবল অনেক। ৬০ টাকায় মুরগি, বেগুন ভর্তা, মাছ ভর্তা আর আনলিমিটেড ঝোল এবং ১০ টাকা ভাত।
> তারপর আবার একইভাবে ঢাকার বাস, আর কুমিল্লায় নাশতা।
> ড্রাইভার আমাদের সাথেই খেয়েছিল সব বেলায়, তবে রাতে ছিল আলাদা।

আমরা এক্সট্রা খরচ করি কমলা, কলা, ডাব, গেন্ডারি, পাকা পেঁপে, ফান্টা খেয়ে। সেখানকার ডাব গুলা অবশ্যই ট্রাই করবেন। প্রচুর পানি থাকে, আমরা ডাবের পানি খেতে খেতে হয়রান হয়ে গেসিলাম :3
তাছাড়া আমরা ঢাকা থেকে ফানুশ নিয়ে গিয়েছিলাম বার-বি-কিউ এর পরে ওড়ানোর জন্য। আসার পথে রেসাং ঝর্নার শীর্ষে যাই আমরা দল বেধে। যারা খৈয়াছড়া ঝর্নায় উঠেছেন তাদের জন্য এই ঝর্না কোনো ব্যাপারই না। সময়ের অভাবে আলু টিলা যাওয়া হয়নি আমাদের। তবে চাঁদের গাড়ি/ পিক-আপ নেয়ার আগে অবশ্যই “সাজেক+ঝর্না+টিলার” ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে নিবেন ড্রাইভারের সাথে। নাহলে অনেক ড্রাইভার ই এক্সট্রা চার্জ চাইবে এর জন্যে।

রবি, এয়ারটেল, টেলিটক সিম চলে সাজেকে।
মোবাইল চার্জ দিতে পাওয়ার ব্যাংক সাথে রাখবেন।

বাংলাদেশ আর্মির প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা যাদের সহায়তা ছাড়া এইসব কিছুই সম্ভব ছিলনা। তারা প্রায়ই আমাদের কাছে এসে খবর নিয়েছে, কথা বলেছে, সাবধান করেছে।

এবং সকল প্রশংসাই আল্লাহর যিনি এত সুন্দর প্রকৃতি দান করেছেন… <3

হ্যাপি ট্রাভেলিং :

Post Copied From: Tofayel Ahmed‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

ট্যুর ডায়েরী

খাগড়াছড়ি সাজেক, ও রাঙ্গামাটি

মেঘ,পাহাড় আর ঝর্নাপ্রেমীদের জন্য ৫ দিনের বিস্তারিত ট্যুর প্ল্যান। খরচ জনপ্রতি পড়েছিল ৫২০০ টাকা। নিচে সবকিছু যথাসম্ভব বলার চেষ্টা করেছি।
সেমিস্টার ফাইনাল শেষে ৯ থেকে ১৩ নভেম্বর এই ৫ দিনে আমরা এই ট্যুর কমপ্লিট করি। আমরা ছিলাম মোট ১৪ জন।

( এটা আমার ট্রাভেলিং নিয়ে প্রথম পোস্ট। তাই যেকোন ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)

প্রথম দিন: আমরা ৮ তারিখ রাত ৯ টায় ফকিরাপুল থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে এস আলম বাসে
উঠি। ভাড়া ৫২০ টাকা। খাগড়াছড়ি শহরে নামি ভোর ৫ টায়। বাস সার্ভিস মোটামুটি ভালোই ছিলো। চাঁদের গাড়ি আমাদের আগে থেকে ঠিক করা ছিলো। চাঁদের গাড়ীর
ভাড়া নিয়ে কিছু কথা বলি। ওখানে এখন সমিতির সেই দাপট। ৯১০০ টাকা একরেট সাথে ড্রাইভারের খাওয়ার দায়িত্ব ও আপনাকে নিতে হবে। কিন্তু আমরা ৭০০০ টাকায় দুই দিনের জন্য গাড়ি পেয়েছিলাম। সাথে ড্রাইভারের খাওয়াদাওয়াও আমাদের দিতে হয়নি। এই গাড়ি সমিতির বাইরে ছিলো। গাড়ির ড্রাইভার সেলিম ভাই। ওনার নাম্বার লাস্টে দিয়ে দিব। এখন সিজন চলতেছে পুরোদমে।
এই দামে গাড়ী নাও পেতে পারেন। বাট একটু খুঁজে দেখবেন। আমরা সকাল ৭ টায় সাজেক এর
উদ্দেশ্যে রওনা দেই। পথে দিঘিনালায় নাস্তা সেরে নেই। এরপর হাজাছড়া ঝর্না দেখি। মেইন রোড থেকে
১০ মিনিট হাটার পথ। মোটামুটি সুন্দর ঝর্না। কিছু সময় কাটিয়ে আবার রওনা দেই আর্মির সকালের
স্কোয়াড এর সাথে। আর্মির সকালের স্কোয়াড ১০.৩০ এ রওনা দিয়েছিল। এর আগে চেকপয়েন্ট এ পৌঁছাতে হয়। সাজেকের এই রাস্তা অস্হির রকমের সুন্দর। রোলার কোস্টারের ফিল পাবেন অনেকটা।
১২.৩০ এর দিকে আমরা পৌঁছাই সাজেকে। কটেজ আগে থেকে বুকিং দেয়া ছিল।
এখন সিজন চলে। আগে বুকিং দেয়া বেটার। আমাদের কটেজ ছিলো জুমঘর। সাজেকের নামকরা কটেজগুলোর মধ্যে অন্যতম। বেশ ভালো কটেজ। আমরা তিনটা রুম নিসিলাম। পার রুম ২৫০০ টাকা। একরুমে ৪-৫ জন আরামে থাকা যায়। এটাচ বাথ আছে। দুপুর ১- ২ টা আর সন্ধ্যা ৭- রাত ১০ পর্যন্ত জেনারেটর চলে। ফোন, ক্যামেরা চার্জ দিতে পারবেন।
আর সোলার লাইট আছে। সবসময় জ্বলে।

ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাওয়াদাওয়া করি হোটেল পেদা টিং টিং এ। ভাত, পাহাড়ি মুরগি, সবজি,ভর্তা,ডাল সবমিলিয়ে ২০০ টাকা পার পারসন।
খাবারের টেস্ট অনেক ভালো ছিলো। এখানে খাইতে চাইলে একবেলা আগে অর্ডার দিতে হয়। আমি এখানকার ফোননাম্বার লাস্ট এ দিয়ে দিব।
এরপর রুমে রেস্ট নিয়ে বিকেল ৪ টার দিকে কংলাক পাহাড়ের দিকে যাই। চাঁদের গাড়ি অনেকখানি নিয়ে যায়। এরপর কিছুটা পাহাড় চড়তে হয়।
এর চূড়া থেকে অনেক জোস ভিউ পাওয়া যায়। তারপর এখান থেকে ফিরে এসে হ্যালিপ্যাডে সূর্যাস্ত দেখি।
জ্যোৎস্না রাত ছিল। সাজেকের রাতের আকাশ, ওখানকার রাতের পরিবেশ এগুলো আসলে লেখে বোঝানো যাবে না। ওখানে গেলে ফিল করতে পারবেন।
রাতে বারবিকিউ করি। পেদা টিং টিং ব্যবস্থা করে দেয় আগে বলে রাখলে। ৮ জনের জন্য খরচ ১০০০ টাকা।

রাত ১২ টার দিকেই সেই মেঘের দেখা মেলতে শুরু করে। কটেজ এর বারান্দা থেকে রাতের এই দৃশ্য মন জুড়িয়ে দেবে। এভাবেই প্রথম দিন শেষ হলো।

দ্বিতীয় দিন: ভোর ৫ টায় চলে যাই আবার হ্যালিপ্যাডে। শীতের পোষাক নিয়ে যাবেন। বেশ ঠান্ডা পড়ে। তুষার শুভ্র মেঘের সমুদ্র দেখতে দেখতে সূর্যোদয় দেখা লাইফটাইম এক্সপেরিয়েন্স। ওখানে ৭.৩০ পর্যন্ত ছিলাম।
সকালে আবার পেদা টিং টিং এ খিচুড়ি,ডিম ভুনা দিয়ে নাস্তা সারি। ১০০ টাকা পার পারসন। সাজেকে খাবার দাম একটু বেশিই। পানির দামও বেশি। খরচ কিছুটা বাঁচাতে চাইলে শহর থেকে খাবার পানি কিনে নিয়ে যেতে পারেন।
এরপর জিনিসপত্র গুছিয়ে সকাল ১০ টায় সকালের স্কোয়াডে সাজেকের মায়া ত্যাগ করি।
সাজেক এক কথায় অসাধারন। নিরাপত্তা ভালো। ফ্যামিলি ট্যুর এর জন্য পারফেক্ট।
এরপর আবার খাগড়াছড়ি শহরে চলে আসি। শহরে আসতে আসতে ১.৩০ টা বেজে যায়। এরপর আলুটিলা গুহা, রিসাং ঝর্না দেখি। রিসাং ঝর্না অনেক অনেক পিচ্ছিল আর ঢালু।
সাবধানে চলবেন। রিসাং এ সময় বেশি কাটানোয় পার্ক টা দেখার সময় হয়নি।
রাতে শহরের সিস্টেম রেস্টুরেন্ট এ রাতের খাবার খাই। এখানে অনেক ট্রেডিশনাল খাবার পাওয়া যায়। বেশি জন থাকলে আগে থেকেই বলে রাখবেন।
এটা এখানকার বিখ্যাত। অটো করে যেতে পারবেন। আমরা ভাত, ভর্তা, মাশরুম, হাঁস সাথে Bamboo Chicken নিই। Bamboo chicken ১০০০ টাকা।
৮-১০ জন খেতে পারবেন। পার পারসন ২৫০ মত পড়সিল সব মিলে। এরপর বার্মিজ মার্কেট যাই। যদিও মাত্র ২-৩ টা দোকান ছিল। রাতে শহরের
হোটেল Mount Inn এ ছিলাম। একরুমে ৮ জন, আরেকরুমে ৬ জন। এক বেডে ২ জন। টোটাল ২৫০০ টাকা। হোটেল বেশ ভালো। সাজেক+ খাগড়াছড়ি ২ দিনে দেখা সম্ভব। কেউ যদি চান এইটুকু দেখে ঢাকা ব্যাক করবেন তা করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ৩০০০ টাকা জনপ্রতি ট্যুর কমপ্লিট দিতে পারবেন। সাজেক এখন অনেক পপুলার। এজন্য সময়ভেদে খরচ কিছুটা কম বেশি হতে পারে। আবার ফ্যামিলি নিয়ে গেলে খরচ বাড়বে স্বাভাবিক।

তৃতীয় দিন: এখন আমাদের টার্গেট হলো বিলাইছড়ি যাওয়া। সেখানে গিয়ে মুপ্পোছড়া, নকাটা, গাছকাটা আর ধূপপানি ঝর্না দেখা। সকালে খাগড়াছড়ি টু রাঙ্গামাটি গেটলক বাস সার্ভিস আছে। একদম ৮.২৫ এ বাস ছাড়ে। ভাড়া ১৪০ টাকা। টিকেট অনেক ভোরে গিয়ে কাটা লাগছিল কারন আমরা অনেক জন ছিলাম। অনেক সময় সিট শেষ হয়ে যায়। নাস্তা সেরে বাসে উঠি। ৩ ঘন্টায় রাঙ্গামাটি চলে যাই। নেমে সোজা ঘাটে চলে যাই। বোট রিজার্ভ করি বিলাইছড়ি যাওয়ার জন্য। বোট ভাড়া ২০০০ টাকা।২.৩০ ঘন্টা লেগেছিল রাঙ্গামাটি থেকে বিলাইছড়ি যেতে। পথে আর্মি ক্যাম্প পড়বে। অবশ্যই সাথে এনআইডি অথবা অন্য কোন আইডি কার্ডের ফটোকপি রাখবেন। এই ২.৩০ ঘন্টার কাপ্তাই লেকের উপর দিয়ে বোট জার্নি আপনাকে মুগ্ধ করবেই। কাপ্তাই লেক আর সবুজ পাহাড় এর নির্মল সৌন্দর্য মন ছুঁয়ে যাবে। ২ টার দিকে বিলাইছড়ি পৌঁছাই। এখানে ভাতঘর হোটেলে থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। থাকা জনপ্রতি ১০০ পার ডে। বিলাইছড়িতে থাকার জায়গা খুব ভালো না। বাট চালানো যাবে। ট্যুর এ সব জায়গা সমান হবে না স্বাভাবিক। এখানে খাওয়া খরচ জনপ্রতি ১১০ টাকা। খাবার ভাত,ডাল,ভর্তা,মুরগী/লেকের মাছ/ছোট মাছ। মাছ না মুরগি খাবেন সেটা বলে দিবেন। সকালে ডিম খিচুরি ৬৫ টাকা জনপ্রতি।
বিলাইছড়ি তে আবার বোট লাগবে। আমরা এমন ভাবে ভাড়া করেছিলাম যে, আমাদের এখানকার সব ঝর্না দেখাবে সাথে লাস্ট দিন আমাদের কাপ্তাই ঘাটে নামিয়ে দিয়ে আসবে টোটাল ৩২০০ টাকা। নৌকা ভাতঘরের মালিক নিজাম ভাই ঠিক করে দিসিলেন। ভাতঘরে উঠতে চাইলে আগে থেকে একটু বলে রাখা ভাল বিশেষ করে মেম্বার বেশি থাকলে।
এখানে রুম এ ব্যাগ এর অতিরিক্ত জিনিসপত্র রেখে আমরা মুপ্পোছড়া,নকাটা দেখার উদ্দেশ্যে বের হই ২.৩০ টার দিকে। এখানে বলে রাখি যেহেতু পাহাড়ে উঠতে হবে সো ব্যাগে জাস্ট ঝর্নায় গোসলের জন্য যে পোশাক নেওয়া দরকার সেটুকু,ক্যামেরা এসব নিবেন। এক্সট্রা কিছু নিয়ে ব্যাগ ভারী করার দরকার নেই। আগে পাহাড়এ ট্র্যাকিং এর অভিজ্ঞতা থাকলে তেমন কঠিন লাগবে না। কিন্তু নতুনদের জন্য শুরুতে কঠিন লাগতে পারে। বাট আসলে এটা কিছুই না। মনোবল রেখে সাবধানে উঠবেন। পাথর অনেক পিচ্ছিল হয়। সো সাবধানে পা ফেলবেন।
৩০ মিনিট নৌকায় করে একটা পাড়ার সামনে পৌঁছাই। এখান থেকে গাইড নিতে হয়। গাইড ৪০০ টাকা, ঘাট ফি ৫০ টাকা। এরপর হাটা শুরু। ১.৩০ ঘন্টা মোটামুটি ট্রেকিং এর পর মুপ্পোছড়া দেখতে পাই। শীতের সময় হওয়ায় পানি কম ছিল বাট তারপরও
যথেষ্ট সুন্দর। অনেক ধাপে ধাপে পানি পড়ে। দিন ছোট হওয়ায় কিছু সময় পড়ে ফিরতে শুরু করি। ফেরার পথে নকাটা ঝর্নাই যাই এখানে বেশ পানি ছিল।এখানে গোসল সেরে নেই।
আসলে যেকোন ঝর্নার পরিপূর্ণ রূপ বর্ষাকালে পাওয়া যায়। কিন্তু তখন রাস্তা ও ততটাই কঠিন ও ঝুকিপূর্ন হয়। তবে যেটুকু পাইসি যথেষ্ট পাইসি। এরপরে বিলাইছড়ি ফিরে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়।
ডে ৩ শেষ। নেক্সট টার্গেট ধূপপানি ঝর্না।

চতুর্থ দিন: ধূপপানি ঝর্নায় যেতে আসতে অনেক সময় লাগে। তাই ৭.০০ টার দিকে বোটে উঠি। এদিনও ব্যাগ যথাসম্ভব হালকা রাখবেন। সাথে পারসোনাল হাফ লিটার পানি,স্যালাইন, গ্লুকোজ সাথে রাখবেন। কাজে দিবে। সকালের নাস্তা প্যাকেট করে নিসিলাম। পরে বোটে নাস্তা করি। আর যেহেতু দুপুরবেলা খাবার পাবেন না তাই শুকনা খাবার কিছু নিতে পারেন সাথে।
পথে দুইটা আর্মি ক্যাম্প পড়বে।আইডি কার্ড এর ফটোকপি সাথে রাখবেন। ভোরের কুয়াশাচ্ছন্ন কাপ্তাই লেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে আবার নতুনভাবে মুগ্ধ করবে। ৯.৩০ এর দিকে একটা ঘাটে পৌঁছাই আমরা। এর পরে আর বড় বোট যায় না। ডিঙ্গি নৌকা নিতে হয়। একটাতে চারজন করে।এর ভাড়া ২০০ টাকা পার নৌকা। গাইড নিতে হয়। ৫০০ টাকা। ডিঙ্গি নৌকা তে ২০-২৫ মিনিট যেতে হয়। এই পার্ট টা অনেক মনোমুগ্ধকর।
নৌকা থেকে নেমে কিছুক্ষন হাটা। তারপর পাহাড়ে ওঠা শুরু। আমরা জানতাম যে ধূপপানির যাওয়ার পথটা অনেক কঠিন এবং রিস্কি এবং এভারেজ ২.৫-৩ ঘন্টা লাগে।
এইটা বৃষ্টি হলে হাড়ে হাড়ে সত্য। বাট অনেকদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পথ শুকনা ছিলো। এখন খাড়া পাহাড়ে সিড়ির মতো ধাপ করা আছে। এজন্য ঐ কষ্ট টা পেতে হয় নি। তবে পাহাড় অনেক খাড়া। মাঝপথে
কিছুটা পথ পানি আর পাথর এর উপর দিয়ে যেতে হয়। এখানে সাবধান থাকবেন এগুলো অনেক পিচ্ছিল।
পথের প্রায় শেষের দিকে ধূপপানি পাড়া। এখানে দোকান আছে একটা। হালকা নাস্তা করতে পারেন। এখানে একটা বৌদ্ধমন্দির আছে সেটাও দেখে আসি।
এই দূর্গম জায়গায় কয়েকটি উপজাতি পরিবার এর বসবাস, জীবনযাপন আসলে অবাক করার মতো।
এর পরে বেশ কিছু পথ নামতে হয়। এরপরে সেই সবচাইতে খাড়া অংশ। অনেকটা খাঁড়া মইয়ের মতো। বাট ঘাবড়ানোর দরকার নেই। ছোট ছোট ধাপ কাটা আছে। বাট বৃষ্টি হলে যে অনেক কষ্ট হবে বোঝায় যায়।
এরপর কিছু পাথরখন্ড পেরুলেই সেই কাংখিত ধূপপানি ঝর্না। আমার এখন পর্যন্ত দেখা সেরা ঝর্না এটি। এত কষ্টের পথ চলা সার্থক হলো।
টোটাল ১ ঘন্টা ৪৫ মিনিট লেগেছিল। ঐদিন আর কেউ ছিল না সেইখানে। আমরা নিজেরা ১.৩০ ঘন্টার মতো ইচ্ছামতো উপভোগ করি। পানি শীতকাল হওয়া সত্ত্বেও ভালোই ছিলো।
এরপর ফেরার পালা। ফেরার সময় প্রথমে একটু উঠতে হয় তারপর খালি নামা। আগের মতো কষ্ট হয় না
। এরপর আবার ডিঙ্গি নৌকা তারপর মেইন বোটে করে বিলাইছড়ি ফিরে আসা। ফিরতে ফিরতে ৪.৩০ বেজে যায়। চাইলে ওইদিনই কাপ্তাই ঘাটে যাওয়া যায় বাট ক্লান্ত থাকায় বিলাইছড়িতে থাকি আমরা।

পঞ্চম দিনঃ এদিন সকালে গাছকাটা ঝর্না দেখার কথা ছিলো। তারপর কাপ্তাই ঘাট যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু শেষ মুহুর্তে আমরা পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঢোকার পারমিশন পাই। যেহেতু আমরা এইকয়দিনে ৫ টা ঝর্না দেখেছি তাই গাছকাটা আর দেখি নাই। আপনারা চাইলে যেতে পারেন। বিলাইছড়ি থেকে নাস্তা করে সকাল ৮ টায় রওনা দিই কাপ্তাই ঘাটের উদ্দেশ্যে। সকাল ১০ টায় পৌঁছাই। সেখানে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র অবস্থিত। পারমিশন নেয়া ছিল। এখানে সিকিউরিটি অনেক বেশি। এখানে ঘুরা শেষ করে সিএনজি নিয়ে যাই কাপ্তাই কায়াক ক্লাব। এটা হোটেল প্যারাডাইসের নিচে অবস্থিত। সিএনজি কে এই হোটেল এর নাম ববললেই হবে।স্টুডেন্ট আইডি কার্ড দেখালে প্রতিজন ১০০ টাকা কায়াকিং। লাইফ জ্যাকেট এর ব্যবস্থা আছে। এক বোটে ২ জন। ঘন্টাখানেক কায়াকিং করি আমরা। এইটা আমাদের ট্যুরের অন্যতম বেস্ট পার্ট। অনেক মজা পাবেন।এরপর সিএনজি নিয়ে চিটাগাং শহর। প্রতিজন ১০০ টাকা লেগেছিল সব মিলায়ে। দুপুরে চিটাগাং মেজবানি খাওয়াদাওয়া সেরে চিটাগাং এর ফ্রেন্ডদের সাথে শহরে ঘুরাঘুরি করি। তারপর রাতের তূর্না ট্রেন এ করে ঢাকা ফিরে আসি।ট্রেন ভাড়া ৩৬৫ টাকা। আল্লাহর অশেষ রহমতে কোনো ঝামেলা ছাড়াই আমাদের ট্যুর শেষ হয়। আলহামদুলিল্লাহ্।

হোটেল পেদা টিং টিং,সাজেক ০১৮৭৪২১০৫১৯

জুমঘর রিসোর্ট: ০১৮৮৪২০৮০৬০

সেলিম ভাই, চাঁদের গাড়ি ড্রাইভার: ০১৮৫৭৪৩৪০৩৮

ভাতঘর,নিজাম ভাই, বিলাইছড়ি: ০১৮৬০০৯৯০২৯

মাঝি, বিলাইছড়ি: ০১৮২৮৮০৪১১৭

** যেকোন ট্যুরে বিশেষ করে ট্রেকিং থাকলে কিছু ফার্স্ট এইড কিটস, কিছু জরুরি ঔষধ সাথে রাখবেন।

** সাজেক, বিলাইছড়ি এসব জায়গায় রবির নেটওয়ার্ক সবচাইতে ভালো। টেলিটক ডিস্টার্ব করে। অন্য অপারেটর এর সিগনাল পাওয়া যায়না বললেই চলে। তাই একটা রবি সিম রাখবেন সাথে।

** খরচের ব্যাপার টা কিছুটা পরিবর্তনশীল। কম বেশি হতেই পারে। সো কোন জায়গায় গেলে একবারে রিসেন্ট আপডেট নেয়ার চেষ্টা করবেন। আমাদের ১৪ জন হওয়ায় গাড়িভাড়া, নৌকাভাড়ায় জনপ্রতি খরচ কম পড়েছে।

Post Copied From:Rakib Hasan Rocky‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

“সাজেক: স্বপ্ন পুরনের এক ভ্রমন।”

১ রাত ২ দিনের খরচ সহ ইতিহাস

১ : প্রথমেই ঠিক করা হল আমরা সেখানে ১ রাত ২ দিন সেখানে থাকব। এছাড়াও আপনারা সেখানে আরো বেশিদিন থাকতে পারেন। তবে সমস্ত সাজেক ঘুরে দেখতে ১ দিন দুপুর থেকে পর দিন দুপুর এনাফ।
২ : বাস: যেকনো ভ্রমনে বাস বড় একটা ফ্যাক্টর। ঢাকা – খাগড়াছড়ি হানিফ (শুধু AC বাস), শ্যামলি, ডলফিন, সেন্টমারটিন, সৌদিয়া সহ বহু বাস চলাচল করে। তবে শান্তি পরিবহন সরাসরি দিঘিনালা যায়। যা সাজেকের খুব কাছে। হানিফ আর সেন্টমারটিন পরিবহনে ( only AC ) ভাড়া পোরবে ১০০০ টাকা, আর বাকি নন AC বাস এ খাগড়াছড়ি পরবে ৫০০-৫২০ টাকার ভেতর , দিঘিনালা ভাড়া পরবে ৫৪০-৫৮০ টাকা।
২ : রাতের গাড়িতে রওনা দিলে পর দিন ৬/৭ টার ভেতর খাগড়াছড়ি এবং ৮/৯ টার ভেতর দিঘিনালা নামা যায়। তবে যারা খাগড়াছড়ি নামবেন তাদের কে দিঘিনালা অন্য কোন মাধ্যমে যেতে হবে
৩ : দিঘিনামা নেমে সেখান থেকে চাঁদেরগাড়ি ভারা করে নিতে হবে। আলোচনা সাপেক্ষে ভাড়া কম বা বেশি হতে পারে। তবে সাধারণত ১.৫ দিনের জন্যে সবুজ চাঁদেরগাড়ি ভাড়া নেয় ৫০০০-৭০০০/৮০০০ টাকা। আর সাদা চাদেরগাড়ি ভারা নেয় ৮০০০-১০০০০/১১০০০০ টাকা। সাধারণত ১টি চাঁদেরগাড়িতে ১৮-২০ জন (ছাদ সহ) যাওয়া যায়।
৪ : চাঁদেরগাড়িতে রওনা হয়ে কিসুক্ষন পর (২০-২৫ মিনিট) হাজাছড়া বাজার পরবে। হাজাছরা নেমে ৫ মিনিট হেটে ভিতরে গেলেই পেয়ে যাবেন সবুজের মাঝে লুকিয়ে থাকা হাজাছড়া ঝর্ণা।
৫ : ঝর্ণা দেখা শেষ করতে হবে ৯:৪৫ থেকে ১০ টার ভেতর অথবা ২:৩০ থেকে ৩:৩০ টার ভেতর। কারন, ইচ্ছা করলেই সাজেকের পথে যাওয়া যায় না। সেনাবাহিনি ১০:৩০ & ৩:৩০ এ তাদের নিজেদের সাতে করে সেখানে সবাইকে নিয়ে যায়। তাই ভাল হয় এই সময়ের আগেই বাঘাইহাট বাজার পৌছানো। হাজাছড়া বাজার থেকে বাঘাইহাট বাজার জেতে ৫-১০ মিনিট সময় লাগে।
৬ : উত্তম হয় বাঘাইহাট বাজার থেকে সকালের ব্রেকফাস্ট / দুপুরের খাবার খেয়ে নিলে। কারন এর পরে প্রায় ১.৫ – ২ ঘণ্টার যাত্রা।
৭ : সেনাবাহিনী দল ১০:৩০ অথবা ৩:৩০ বাজার পুরবেই বাঘাইহাট পৌছায়। এবং নিরদিষ্ট সময়ে সব চাঁদেরগাড়ি নিয়ে সাজেকের পথে যাত্রা শুরু করে।
৮ : যাত্রা পথে পাহাড়ি জনপথ থেকে দূরে ভেসে থাকা মেঘে ঢাকা সাজেক চোখে পরে
৯ : মাঝপথে ছোট পানির ছড়া রোমান্সকে বাড়িয়ে দেয়।
১০ : প্রায় ১২ টা বা ৫ টার দিকে সাজেকে পৌছানো যায়। তবে খরচ বাঁচাতে সকাল উত্তম
১১ : বিকেল বেলা সাজেকে মেঘ বৃষ্টির মত ঝরে পরে। 💜
রাতেও মেঘের মত কুয়াশা ঝরে পরে পুরো সাজেক জুরে 💜
১২ : সেইদিন পুরোটাই সাজেক ঘুরে দেখাটাই ভালো। কারন ভ্রমণ ক্লান্তিতে সেদিন বের হলে পর দিনের প্ল্যান শুধু প্ল্যান ই থেকে যাবে।
১৩ : দুপুর বেলা খাওয়া দাওয়া শেষ করে পুর সাজেকে ঘুরে বিকেলে হেলিপ্যাড ঘুরে আস্তে পারেন।
১৪ : সাজেকে খাওয়ার খরচ বেশি + পানির দামও বেশি পরে। তাই সাতে করে পানি নিয়ে যাওয়া ভাল।
১৫ : খুব বেশি সময় সেখানে বিদ্যুৎ থাকে না বিধায় পোর্টেবল চারজার সাতে নিয়ে জান।
১৬ : সন্ধায় সাজেকে দেখা সূর্য ডোবার দৃশ্য সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দিবে।
১৭ : রাতে খেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে নিন। পর দিন খুব ভোরে উঠতে হবে।
১৮ : সকালে সাজেক যেন এক টুকরা মেঘের ছায়া। চারিদিকে কেবল মেঘ আর মেঘ। কোণ বরাবর গেলে মনে হবে আমি হয়ত মেঘের উপরে ভাসছি।
১৯ : সকাল সকাল কংলাক পাহাড় ঘুরে নেয়া ভাল। কারণ তখনকার মন ভরানো দৃশ্য সবকিছুকে হার মানায়। চাঁদেরগাড়ি করে পাহাড় এর কোল ঘেষে নামার পর ৩০ মিনিট ধরে আকা বাকা লাল পাহাড় পারি দিলে যা দেখবেন তা হয়তো কখোনো ভাবতেও পারবেন না। চারিদিকে কেবোল সবুজ আর সাদার খেলা।
২০ : কংলাক দেখা শেষ করে সকালের নাস্তা খেয়ে ১০:৩০ এর সময় ছেড়ে যান সাজেকের মায়া।
বের হন খাগড়াছড়ির উদ্দ্যেশ্যে
২১ : সাজেকে রাতে থাকার জন্যে বিভিন্ন কটেজ পাওয়া যায়। ১২০০-৩০০০/৪০০০ টাকার ভেতর মিলবে রাতে মাথা গোজার ঠাই। এক ঘরে ভিন্নতা ভেদে ৩-৭/৮ জন থাকা যায়।
২২ : সেনাবাহিনীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আগের দিনের স্মৃতি গুলো বুকে করে চাঁদের গাড়ির ঝিকমিক শব্দে সাজেককে বিদায় জানিয়েছিলাম আমরা। প্রায় ২.৫ – ৩ ঘণ্টা পর যখন খাগড়াছড়ি পৌছেগেলাম তখন জিবনের ডাইরিতে যেন আরো কিছু জমা হল বলে মনে হল
২৩ : চাঁদের গাড়ি করেই খাগড়াছড়ি শহরে এসে দুপুর ১২ টা বাজলো। ট্যুর তখোনো ১/২ বাকি। তাই ১২:৩০ এর দিকে দুপুরের ভোজ সেরে নিলাম। নানান খাবারের মধ্যে শুটকি, আলুর ভর্তা, রুপচাদা মাছ এর ভাজি আলাদা পাহাড়ি সাদ দেয়।
২৪ : খাওয়া শেষ করে আলুটিলা যাত্রা শুরু করলাম। শহর থেকে প্রায় ৯ – ১০ কি.মি. ভিতরে গেলাম রিসাং ঝর্ণা দেখতে। চাঁদেরগাড়ি থেকে নেমে প্রায় ১৫ – ২০ মিনিট হাটতে হয়। নিচে নামতে হয়। জায়গাটা অনেক পিসলা। তাই সাবধান থাকা ভালো।
২৫ : ঝর্ণা তে গোসল করে শিতে কাপাকাপি নিয়ে আলুটিলা গুলা যাওয়ার পালা। তখন বিকাল ৫ টা। ৪ কি.মি. রাস্তা পার করে আমরা আলুটিলায় গেলাম।
২৬ : ২০ টাকার টিকিট কেটে (১ জন) ঢুকলাম এক অন্য রাজ্যে। যেখানে আলো নেই। আছে শুন্য আলোয় কিছু পাওয়ার আনন্দ।
২৭ : গুহায় ধুকতে মশাল নেয়া বাধ্যতামূলক। মুল্য ১০ টাকা (পিছ)
২৮ : আলুটিলা দেখে খাগড়াছড়ি আসতে বাজলো ৭ তা। আয়াগে থেকে টিকিট করে রাখায় আসতে ঝামেলা হয়নি। রাত ৯ টার বাসে করে ঢাকায় ব্যাক। সকালে ঢাকা পৌছালাম সকাল ৮ টায়।
২৮ : সাজেকে আগে থেকে কটেজ ঠিক করলে ভাল হয়। বিভিন্ন বাস কাউন্টারে মিলবে কটেজ আর চাঁদেরগাড়ির নাম্বার।
২৯ : সাজেকে ঢুকতে প্রতিজনকে গুনতে হয় ৩০ টাকা করে। সাতে গাড়ি রাখার জন্যে ১০০ টাকা।
৩০ : চাঁদেরগাড়ি ছারাও বাইক দিয়ে সাজেক যাওয়া যায়। ভাড়া পরে ৬০০-১৫০০ টাকা।
৩১ : পাহাড়ে বিধায় খাবারের দাম বেশি থাকে। পানির মুল্য আকাশ ছোয়া। তাই আগে থেকে পানি, টর্চ নেয়া ভালো
৩২ : ৪/৫ জন মিলে গেলে ৪ টি জায়গা ঘুরে আসতে গুনতে হবে ৩১০০-৩৭০০ টাকা। লোক বারলে খরচ কমবে

আমরা ঘোড়াঘুড়ির উপর ছোট্ট একটা ভিডিও বানিয়েছি
ভালো লাগবে দেখতে আর যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিবে
আর যারা গিয়েছেন তারা sure miss করবেন

১ রাত ২ দিনের খরচ সহ ইতিহাস

১ : প্রথমেই ঠিক করা হল আমরা সেখানে ১ রাত ২ দিন সেখানে থাকব। এছাড়াও আপনারা সেখানে আরো বেশিদিন থাকতে পারেন। তবে সমস্ত সাজেক ঘুরে দেখতে ১ দিন দুপুর থেকে পর দিন দুপুর এনাফ।
২ : বাস: যেকনো ভ্রমনে বাস বড় একটা ফ্যাক্টর। ঢাকা – খাগড়াছড়ি হানিফ (শুধু AC বাস), শ্যামলি, ডলফিন, সেন্টমারটিন, সৌদিয়া সহ বহু বাস চলাচল করে। তবে শান্তি পরিবহন সরাসরি দিঘিনালা যায়। যা সাজেকের খুব কাছে। হানিফ আর সেন্টমারটিন পরিবহনে ( only AC ) ভাড়া পোরবে ১০০০ টাকা, আর বাকি নন AC বাস এ খাগড়াছড়ি পরবে ৫০০-৫২০ টাকার ভেতর , দিঘিনালা ভাড়া পরবে ৫৪০-৫৮০ টাকা।
২ : রাতের গাড়িতে রওনা দিলে পর দিন ৬/৭ টার ভেতর খাগড়াছড়ি এবং ৮/৯ টার ভেতর দিঘিনালা নামা যায়। তবে যারা খাগড়াছড়ি নামবেন তাদের কে দিঘিনালা অন্য কোন মাধ্যমে যেতে হবে
৩ : দিঘিনামা নেমে সেখান থেকে চাঁদেরগাড়ি ভারা করে নিতে হবে। আলোচনা সাপেক্ষে ভাড়া কম বা বেশি হতে পারে। তবে সাধারণত ১.৫ দিনের জন্যে সবুজ চাঁদেরগাড়ি ভাড়া নেয় ৫০০০-৭০০০/৮০০০ টাকা। আর সাদা চাদেরগাড়ি ভারা নেয় ৮০০০-১০০০০/১১০০০০ টাকা। সাধারণত ১টি চাঁদেরগাড়িতে ১৮-২০ জন (ছাদ সহ) যাওয়া যায়।
৪ : চাঁদেরগাড়িতে রওনা হয়ে কিসুক্ষন পর (২০-২৫ মিনিট) হাজাছড়া বাজার পরবে। হাজাছরা নেমে ৫ মিনিট হেটে ভিতরে গেলেই পেয়ে যাবেন সবুজের মাঝে লুকিয়ে থাকা হাজাছড়া ঝর্ণা।
৫ : ঝর্ণা দেখা শেষ করতে হবে ৯:৪৫ থেকে ১০ টার ভেতর অথবা ২:৩০ থেকে ৩:৩০ টার ভেতর। কারন, ইচ্ছা করলেই সাজেকের পথে যাওয়া যায় না। সেনাবাহিনি ১০:৩০ & ৩:৩০ এ তাদের নিজেদের সাতে করে সেখানে সবাইকে নিয়ে যায়। তাই ভাল হয় এই সময়ের আগেই বাঘাইহাট বাজার পৌছানো। হাজাছড়া বাজার থেকে বাঘাইহাট বাজার জেতে ৫-১০ মিনিট সময় লাগে।
৬ : উত্তম হয় বাঘাইহাট বাজার থেকে সকালের ব্রেকফাস্ট / দুপুরের খাবার খেয়ে নিলে। কারন এর পরে প্রায় ১.৫ – ২ ঘণ্টার যাত্রা।
৭ : সেনাবাহিনী দল ১০:৩০ অথবা ৩:৩০ বাজার পুরবেই বাঘাইহাট পৌছায়। এবং নিরদিষ্ট সময়ে সব চাঁদেরগাড়ি নিয়ে সাজেকের পথে যাত্রা শুরু করে।
৮ : যাত্রা পথে পাহাড়ি জনপথ থেকে দূরে ভেসে থাকা মেঘে ঢাকা সাজেক চোখে পরে
৯ : মাঝপথে ছোট পানির ছড়া রোমান্সকে বাড়িয়ে দেয়।
১০ : প্রায় ১২ টা বা ৫ টার দিকে সাজেকে পৌছানো যায়। তবে খরচ বাঁচাতে সকাল উত্তম
১১ : বিকেল বেলা সাজেকে মেঘ বৃষ্টির মত ঝরে পরে। 💜
রাতেও মেঘের মত কুয়াশা ঝরে পরে পুরো সাজেক জুরে 💜
১২ : সেইদিন পুরোটাই সাজেক ঘুরে দেখাটাই ভালো। কারন ভ্রমণ ক্লান্তিতে সেদিন বের হলে পর দিনের প্ল্যান শুধু প্ল্যান ই থেকে যাবে।
১৩ : দুপুর বেলা খাওয়া দাওয়া শেষ করে পুর সাজেকে ঘুরে বিকেলে হেলিপ্যাড ঘুরে আস্তে পারেন।
১৪ : সাজেকে খাওয়ার খরচ বেশি + পানির দামও বেশি পরে। তাই সাতে করে পানি নিয়ে যাওয়া ভাল।
১৫ : খুব বেশি সময় সেখানে বিদ্যুৎ থাকে না বিধায় পোর্টেবল চারজার সাতে নিয়ে জান।
১৬ : সন্ধায় সাজেকে দেখা সূর্য ডোবার দৃশ্য সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দিবে।
১৭ : রাতে খেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে নিন। পর দিন খুব ভোরে উঠতে হবে।
১৮ : সকালে সাজেক যেন এক টুকরা মেঘের ছায়া। চারিদিকে কেবল মেঘ আর মেঘ। কোণ বরাবর গেলে মনে হবে আমি হয়ত মেঘের উপরে ভাসছি।
১৯ : সকাল সকাল কংলাক পাহাড় ঘুরে নেয়া ভাল। কারণ তখনকার মন ভরানো দৃশ্য সবকিছুকে হার মানায়। চাঁদেরগাড়ি করে পাহাড় এর কোল ঘেষে নামার পর ৩০ মিনিট ধরে আকা বাকা লাল পাহাড় পারি দিলে যা দেখবেন তা হয়তো কখোনো ভাবতেও পারবেন না। চারিদিকে কেবোল সবুজ আর সাদার খেলা।
২০ : কংলাক দেখা শেষ করে সকালের নাস্তা খেয়ে ১০:৩০ এর সময় ছেড়ে যান সাজেকের মায়া।
বের হন খাগড়াছড়ির উদ্দ্যেশ্যে
২১ : সাজেকে রাতে থাকার জন্যে বিভিন্ন কটেজ পাওয়া যায়। ১২০০-৩০০০/৪০০০ টাকার ভেতর মিলবে রাতে মাথা গোজার ঠাই। এক ঘরে ভিন্নতা ভেদে ৩-৭/৮ জন থাকা যায়।
২২ : সেনাবাহিনীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আগের দিনের স্মৃতি গুলো বুকে করে চাঁদের গাড়ির ঝিকমিক শব্দে সাজেককে বিদায় জানিয়েছিলাম আমরা। প্রায় ২.৫ – ৩ ঘণ্টা পর যখন খাগড়াছড়ি পৌছেগেলাম তখন জিবনের ডাইরিতে যেন আরো কিছু জমা হল বলে মনে হল
২৩ : চাঁদের গাড়ি করেই খাগড়াছড়ি শহরে এসে দুপুর ১২ টা বাজলো। ট্যুর তখোনো ১/২ বাকি। তাই ১২:৩০ এর দিকে দুপুরের ভোজ সেরে নিলাম। নানান খাবারের মধ্যে শুটকি, আলুর ভর্তা, রুপচাদা মাছ এর ভাজি আলাদা পাহাড়ি সাদ দেয়।
২৪ : খাওয়া শেষ করে আলুটিলা যাত্রা শুরু করলাম। শহর থেকে প্রায় ৯ – ১০ কি.মি. ভিতরে গেলাম রিসাং ঝর্ণা দেখতে। চাঁদেরগাড়ি থেকে নেমে প্রায় ১৫ – ২০ মিনিট হাটতে হয়। নিচে নামতে হয়। জায়গাটা অনেক পিসলা। তাই সাবধান থাকা ভালো।
২৫ : ঝর্ণা তে গোসল করে শিতে কাপাকাপি নিয়ে আলুটিলা গুলা যাওয়ার পালা। তখন বিকাল ৫ টা। ৪ কি.মি. রাস্তা পার করে আমরা আলুটিলায় গেলাম।
২৬ : ২০ টাকার টিকিট কেটে (১ জন) ঢুকলাম এক অন্য রাজ্যে। যেখানে আলো নেই। আছে শুন্য আলোয় কিছু পাওয়ার আনন্দ।
২৭ : গুহায় ধুকতে মশাল নেয়া বাধ্যতামূলক। মুল্য ১০ টাকা (পিছ)
২৮ : আলুটিলা দেখে খাগড়াছড়ি আসতে বাজলো ৭ তা। আয়াগে থেকে টিকিট করে রাখায় আসতে ঝামেলা হয়নি। রাত ৯ টার বাসে করে ঢাকায় ব্যাক। সকালে ঢাকা পৌছালাম সকাল ৮ টায়।
২৮ : সাজেকে আগে থেকে কটেজ ঠিক করলে ভাল হয়। বিভিন্ন বাস কাউন্টারে মিলবে কটেজ আর চাঁদেরগাড়ির নাম্বার।
২৯ : সাজেকে ঢুকতে প্রতিজনকে গুনতে হয় ৩০ টাকা করে। সাতে গাড়ি রাখার জন্যে ১০০ টাকা।
৩০ : চাঁদেরগাড়ি ছারাও বাইক দিয়ে সাজেক যাওয়া যায়। ভাড়া পরে ৬০০-১৫০০ টাকা।
৩১ : পাহাড়ে বিধায় খাবারের দাম বেশি থাকে। পানির মুল্য আকাশ ছোয়া। তাই আগে থেকে পানি, টর্চ নেয়া ভালো
৩২ : ৪/৫ জন মিলে গেলে ৪ টি জায়গা ঘুরে আসতে গুনতে হবে ৩১০০-৩৭০০ টাকা। লোক বারলে খরচ কমবে

আমরা ঘোড়াঘুড়ির উপর ছোট্ট একটা ভিডিও বানিয়েছি
ভালো লাগবে দেখতে আর যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিবে
আর যারা গিয়েছেন তারা sure miss করবে

Post Copied From:

খাগড়াছড়ির রিসং ঝর্না, আলুটিলা গুহা, জেলা পরিষদ পার্ক, ঝুলন্ত ব্রীজ, বৌদ্ধ মন্দির, হার্টিকালচার পার্ক, শতবর্ষী বটগাছ, দেবতার পুকুর এবং হাতিমাথা । 

তিন দিন চার রাত সময় নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন সাজেক এবং খাগড়াছড়ির রিসং ঝর্না, আলুটিলা গুহা, জেলা পরিষদ পার্ক, ঝুলন্ত ব্রীজ, বৌদ্ধ মন্দির, হার্টিকালচার পার্ক, শতবর্ষী বটগাছ, দেবতার পুকুর এবং হাতিমাথা ।
3500 টাকার ভিতরেই সম্ভব। ঢাকা থেকে রাতের খাগড়াছড়ির বাসে উঠে পড়ুন। যদি গ্রুপে লোক কম হয় তাহলে বাঘাইহাটের বাসে যেতে পারেন। 620/- ভাড়া। এস আলম, শান্তি, ঈগল পরিবহন যায় ( শান্তির সার্ভিস ভালো লাগে নাই)। ৮ টার দিকেই পৌছে যাবেন বাঘাইহাট। যদি গ্রুপে লোক বেশি থাকে তাহলে দীঘিনালা (580/-) বা খাগড়াছড়ি (520/-) নেমে চাঁদের গাড়ি, সি.এন.জি বা মোটরসাইকেল ঠিক করতে পারেন। আমরা দীঘিনালা থেকে ঠিক করছিলাম 6000/- টাকায়। হাঝাছড়া ঝর্না, সাজেক ঘুরিয়ে পরের দিন খাগড়াছড়িতে রিসাং ঝর্না, আলুটিলা,
জেলা পরিষদ পার্কের ঝুলন্ত ব্রীজ, বৌদ্ধ মন্দির, হার্টিকালচার পার্ক ঘুরাবে ( রিজার্ভ করার সময় ঠিক করে নিন ড্রাইভারের থাকা খাওয়ার বিষয়টা। থাকা খাওয়ার জন্য ওরা সাধারণত 500 টাকায় রাজি হয়। যদিও অনেক বেশি চাইতে পারে)। প্রথমেই আমরা গিয়েছিলাম হাঝাছড়া ঝর্না। মেইন রাস্তা থেকে একটু ভিতরে। ঝর্ণার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে বাধ্য। ঝর্নাটা নিরাপদ। একদম পানি পড়ার নিচে পর্যন্ত যেতে পারবেন। ঝর্ণার বাম পাশ দিয়ে পাহাড়ের উপর উঠা যায়। যেখান থেকে ঝর্না নিচে পড়ছে। ঝর্নার পানিতে গোসল, দাপাদাপি করে ফিরে আসুন চাঁদের গাড়িতে। পাহাড়ি পেপে, কলা, ডাব পাওয়া যায়। দরদাম করলে কমেই পাওয়া যায়। গাছপাকা হওয়ায় বেশ মিষ্টি। (যারা সরাসরি বাঘাইহাট নামবেন তারা লোকাল চাঁদের গাড়িতেই ঝর্নায় পারবেন। ঝর্না দেখা শেষ হলে আবার বাঘাইহাট ফিরে আসুন। বাঘাইহাট বাজার থেকে লোকাল চাঁদের গাড়ি সাজেক যায় ভাড়া 110/- টাকা করে।) সকাল 10.30 এবং বিকাল 3.30 এ আর্মি এসকর্ট চাঁদের গাড়িগুলোর সাথে যায়। এই টাইমেই যেতে হবে রিজার্ভ গাড়িগুলোর । 10.30 এর আগেই হাঝাঝড়া শেষ করে প্রথম এসকর্টেই সাজেক। সাজেক যাওয়ার রাস্তা পাহাড়ি রোলার কোস্টার টাইপ রাস্তা। আশেপাশের ছোট আদিবাসী বাড়ি, রোদের সাথে মেঘের খেলা মনোমুগ্ধকর। যখন সাজেকের কাছাকাছি পৌছে যাবেন আকাশে মেঘ থাকলে দেখতে পেতে পারেন শুধু সাজেকের উপর রোদের আলো পড়ছে অন্য দিকে নেই কখনও উল্টোটা। মনে হবে কোন এক স্বর্গীয় আলো। 1.30 ঘন্টার যাত্রা শেষে পৌছে যাবেন সাজেক। আমাদের সাজেকে ঢোকার মূহুর্তটা অসাধারণ ছিল। ঢোকার সাথে সাথেই বৃষ্টি হয় নাই তারপরেও মাথা ভিজে গেছিল মেঘের কারনে। অবর্ণনীয় অনুভূতি। সাজেকে পৌছেই কটেজ ঠিক করে নিন। রাস্তার ডান পাশের রিসোর্ট বা কটেজ গুলো নিলে ভোরের ভিউটা বেশি ভাল পাবেন। উচু এবং শেষের দিকের কটেজ বেশি ভাল হবে। কটেজ ভেদে রুম পাবেন 600 টাকা থেকে। ঘুরেফিরে দরদাম করে নিলে কমে পাওয়া যায়। বিদ্যুৎ এবং পানির সমস্যা আছে সাজেকে। রিসোর্ট এ কথা বলে নেওয়া ভালো হবে। কটেজে ফ্রেশ হওয়ার পরে খাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়ুন। মনটানা রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন মান ভালই। তারপর কংলাক পাড়ার উদ্দেশ্য যাত্রা করুন। আর্মি হ্যালিপ্যাড পর্যন্ত যাবে চাঁদের গাড়ি তারপর থেকে হেটে যেতে হবে। কংলাক পাহাড়ের সবথেকে উচুঁতে উঠতে মিস করবেন না। ওইজায়গার বেন্ঞ্চে বসে চা খাওয়ার অনুভূতি অন্য রকম। আশেপাশের সবকিছু থেকে নিজেকে অনেক উচ্চতায় দেখা অন্যরকম। কংলাক পাড়া ঘুরে ফিরে এসে হ্যালিপ্যাডে বসুন। রাতে সাজেকের রাস্তায় ঘুরতে পারেন। রাতের খাবার হিসাবে ব্যাম্বু চিকেন খেতে পারেন। ব্যাম্বু চিকেনের জন্য আগেই বলা লাগে। দেশী ও ব্রয়লার মুরগীর জন্য দাম আলাদা আলাদা পড়ে। (450-600) এক কেজি সাইজের মুরগী। ভাত, ডাল, সবজি, ভর্তা 60 টাকা প্রতিজন যত খেতে পারেন। পরদিন সকালে কমলক ঝর্ণা থেকে ঘুরে আসুন। তারপর আবারও চাঁদের গাড়িতে করে চলে আসুন খাগড়াছড়ি। দুপুরের খাবারের জন্য বেস্ট হবে সিস্টেম রেস্টুরেন্ট। হাঁসের কালাভুনা টা মিস করবেন না। পাহাড়ী সবজি, বাশের কোরাল ভাজি সহ প্রতিটি আইটেমই সুস্বাদু। চাঁদের গাড়িই আপনাকে নিয়ে যাবে আলুটিলা গুহায়। গেটের বাইরে নয় গাড়ি কিন্তু গুহার সিঁড়ি পর্যন্ত যায়। ছবি তোলার জন্য মশাল নিতে পারেন নাহলে মোবাইলের ফ্লাশই ভাল। মশাল 10/- করে। তারপর রিসং ঝর্নায়। ঢাল বেয়ে স্লিপ দেওয়া যায় কিন্তু বেশ রিস্কি। বৃষ্টি হলে না দেওয়াই ভাল তখন অনেক পিচ্ছিল থাকে। এরপর জেলা পরিষদ পার্কের ঝুলন্ত ব্রিজ। পার্কটাও ঘুরে দেখতে পারেন তারপর বৌদ্ধ মন্দির। তারপর খাগড়াছড়ি শহরেই নামিয়ে দিবে চাঁদের গাড়ি। নারিকেলেবাগানেই হোটেলে থাকতে পারেন।
মোটামুটি মানের হোটেলে ডাবল বেডের রুম 700 থেকে শুরু। খাগড়াছড়িতে কারেন্ট সার্ভিস ভালো না। জেনারেটর সুবিধা শুনে তারপর হোটেলে উঠা ভালো। রাতেও সিস্টেমেই খেয়ে নিন। সিস্টেম বিশেষ কিছু আইটেম পাওয়া যায়। পরের দিন সকালের মিশন হাতিমাথা এবং দেবতার পুকুর। সকালেই ঢাকা ফেরার টিকিট কেটে রাখুন। হাতিমাথা যাওয়ার জন্য সকালে উঠেই হালকা নাশতা শেষে ইজিবাইক বা সি.এন.জি ঠিক করুন জামতলা পর্যন্ত। চেঙ্গি নদীর ঘাট পর্যন্ত 15 টাকা করে নিবে। নৌকায় 5 টাকা দিয়ে পার হয়ে হাটা শুরু করুন। অল্প কিছুদূর যাওয়ার পরেই একটা দোকান পাবেন। পানি নিয়ে নিন। আমরা হাতিমাথা গেছিলাম তখন জোরে বৃষ্টি হচ্ছিল। এই বৃষ্টির ভিতরেই 1ঘন্টা 25 মিনিটের ট্রেকিং শেষে পৌছে গেছিলাম হাতিমাথা। বৃষ্টি না হলে আরও কম সময় লাগবে। 273 টি সিড়ি বেয়ে আমরা যখন উপরে উঠলাম তখন শুরু হয়েছিল ঝড়ো বাতাস। এই বাতাসের ভিতরেই সিড়ি শেষে আরও উপরে যাব ভাবলাম। 1.5 ফিট পিচ্ছিল রাস্তা দুইপাশে খাদ সাথে বৃষ্টি এবং ঝড়ো বাতাস থ্রিলার এর জন্য আর কি লাগে। উচু যায়গা পর্যন্ত উঠছিলাম আমরা। তারপর নেমে আসা। স্থানীয়দের কাছে শুনেছি আরও সামনে নাকি কয়েকটি গ্রাম এবং আর্মি ক্যাম্প আছে। ভবিষ্যতে ইচ্ছা ওই গ্রামে যাব। দেবতার পুকুর যাওয়ার জন্য খাগড়াছড়ি বাসস্ট্যান্ডে এসে খাগড়াছড়ি -রাঙ্গামাটি বাসে মাইঝছড়ি নামতে হবে। ভাড়া 25 টাকা। সিনজিও যায়, 40 টাকা করে ভাড়া। মাইজছড়ি বাজার থেকে সি.এন.জি, মটরসাইকেল এবং মাহেন্দ্রা যায়। মটরসাইকেল 100 টাকা করে ভাড়া।
সিঁড়ি বেয়ে উঠে পড়ুন এবার।
দেবতার পুকুর ঘোরা শেষে খাগড়াছড়ি ফিরে আসুন। তারপর সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি শহরটা একটা চক্কর দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে বাসে ঢাকা। রাতের অধিকাংশ বাসই রাত 9 টায় ছাড়ে।
4.00-5.00 দিকে পৌছাবেন।
হ্যাপি ট্রাভেলিং।

Post Copied From:

Soaib Safi‎ t> Travelers of Bangladesh (ToB)

মেঘের দেশে ২ দিন

আমরা ২৪ জন,গন্তব্য সাজেক।
এই শুক্রবার রাত ১১ টার গাড়িতে রওনা হলাম,পৌছালাম সকাল ৭ টায়।মালিক সমিতি থেকে গাড়ি নিলাম,শুধু সাজেক যাওয়া আসা করলে আর সাজেকে ১ দিন থাকলে ভাড়া ৭১০০ আর সাথে থাকা খাওয়ার জন্যে হাজার খানেক টাকা গুনতে হয়।সাজেকের যাওয়ার রাস্তার বর্ণনা দেওয়ার ভাষা খুজে পাওয়া দুষ্কর, এক কথায় বলতে গেলে ভয়ংকর সুন্দর।আমাদের কটেজ ঠিক করা ছিল,মেঘ মাচাং।সকালের মেঘ কিং বা সবুজ পাহাড় সাথে রাতের তারা দেখার আর্দশ স্থান মেঘ মাচাং এর বারান্দা।দুপুরে আর্মিংদের রেস্টুরেন্ট এ খাবার পর রুইলুই পাড়া ঘুড়লাম।বিকেলে সুর্যাস্ত দেখতে গেলাম কংলাক পাড়া।
সাজেকের শেষ প্রান্তে কংলাক পাহাড়। এর চূড়াতেই কংলাক
পাড়ার অবস্থান। সাজেকের বিজিবি ক্যাম্প থেকে এক কিলোমিটার দূরে এ গ্রামের অবস্থান।
এ গ্রামেও
লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বসবাস। কংলাক পাড়া থেকে
ভারতের লুসাই পাহাড় খালি চোখে দেখা যায়।
এ গ্রামের নিচে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের আরও
কয়েকটি গ্রাম আছে। তবে এ গ্রামগুলো খুবই দুর্গম।
সন্ধ্যায় আমরা সবাই এক সাথে বসলাম হ্যালি প্যাডের পাশের পাহাড়ে।আকাশে চাঁদ না থাকলেও তারাদের মেলা বসেছিল এই দিন।রাতে আর্মিদের রেস্টুরেন্টে বার বি কিউ করলাম,২৫০ টাকা মাথাপিছু।
পরের দিন ভোর ৫ টা,সাজেকের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য যেন আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছিল।পূর্ব কোণে হাল্কা লাল আর চারিদিকে মেঘের মেলা।ভারতের মিজোরাম আর আমাদের পাহাড়ের মধ্যে যেন মেঘের সমুদ্র।এই সৌন্দর্য় হজম করতে না করতেই পাহাড়ের এক কোণায় সূর্য মামার আগমন। সূর্যের আলো পেয়ে আমাদের চারিদিক যেন শুভ্রতায় ভরে গেল।
সকালে নাস্তা করলাম চিম্বাল রেস্টুরেন্টে, তাদের খিচুড়ি ছিল অসাধারণ,ডিম দিয়ে খিচুরি ১০০ টাকা।
এরপর গন্তব্য খাগড়াছড়ি। যাবার পথে গাড়ি খারাপ হওয়ায় দুপুরে ব্যাম্বো সুট আর রাতে সিস্টেম রেস্টুরেন্টে খাওয়ার কথা থাকলেও শুধু
ব্যাম্বো সুটে রাতে খেলাম।আর দুপুরবেলা গেলাম আলুটিলা,রিসাং ঝর্ণা, ঝুলন্ত ব্রিজ।আলুটিলার অন্ধকার আর রিসাং এর উচু থেকে ড্রাইভিং এর আসল মজা না নিলে খাগড়াছড়ি ভ্রমণ অসম্পূর্ণই থেকে যায়……….

Post Copied From:

Nasrullah Kanon‎ > Travelers of Bangladesh (ToB)

সাজেক যাওয়ার উদ্দেশ্যে

সাজেক যাওয়ার উদ্দেশ্যে যখন ব্যাগ প্যাক গোছাচ্ছিলাম.. আম্মু বললো সারাবছর তো পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরিস, নায়রী যাওয়ার মত এত প্রস্তুতি কেন এবার?
স্মিত হেসে বললাম, ফিরে এসেই দেখাবো কি জন্য যাচ্ছি সাজেক। যদিও প্ল্যান ছিল সোনাদিয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী টাইপ দ্বীপে রাত কাটাবো কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে বন্ধুদের নিয়ে রওনা হলাম রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের উদ্দেশ্যে। যাত্রাপথে একটি সড়ক দুর্ঘটনার কারনে সৃষ্ট যানজটে আটকা পড়ে দেড় ঘন্টা দেরীতে পৌঁছাই খাগড়াছড়ি বাসস্ট্যান্ডে। ততক্ষনে যথেষ্ট দেরী হয়ে গেছে..
আগেই রিজার্ভ করে রাখা জীপ গাড়িতে চেপে রওনা দেই দিঘীনালা আর্মি চেক পোস্টের দিকে। বলে রাখা ভালো, ট্যুরিস্টদের নিরাপত্তা রক্ষায় আর্মি দুই শিফটে এস্কর্ট প্রদান করে থাকে। একটি সকাল ১১টায়, অন্যটি বিকাল তিনটায়.. অনুরূপ সাজেক থেকেও একই সময়ে এস্কর্ট দুটো ছাড়ে..
বিকাল চারটায় যখন চেক পোস্টে পৌঁছাই, ততক্ষনে এস্কর্ট অনেক দূর ছেড়ে গিয়েছিল। অন্যান্য সময় হয়তো যাওয়ার অনুমতি পাওয়া যেতনা.. সৌভাগ্যবশত আরও তিনটি গাড়ি এস্কর্ট মিস করে অপেক্ষারত ছিল ওখানে। শেষে বিনা এস্কর্টে চারটি গাড়ি একসাথে কাছাকাছি দূরত্ব রেখে যাওয়ার শর্তে অনুমতি মিললো। সব ফর্মালিটিজ পূরণ করে শুরু হলো এক ভয়াবহ রোমাঞ্চকর যাত্রা। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় একদিকে পাহাড়ি আতঙ্ক, অন্যদিকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে উঁচুনিচু রাস্তায় দক্ষ ড্রাইভারের দুর্দান্ত সব স্টান্ড মনে শিহরণ তোলছিল। একেকটি ঢাউস সাইজের উঁচু পাহাড়ে গাড়ি যখন বুলেট গতিতে গাড়ি উঠে, মনে হবে যেন ৪৫ডিগ্রি এঙ্গেলে আকাশে উড়ছেন।

সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সাজেক ভ্যালিতে পৌঁছাই। এবার থাকার ব্যবস্থা করতে হবে..
ছুটির দিন + আগের দিন স্ট্রাইক থাকায় ট্যুরিস্টদের চাপ ছিল বেশী। কোন রিসোর্ট/কটেজ খালি পাচ্ছিলাম না। পরে ড্রাইভারের সহযোগীতায় একটি মাচাং কটেজে এটাচ বাথ সহ দুই বেডের একটি রুম ভাড়া নেই প্রতিরাত ২৫০০ করে।
এখানে খাবার আগে থেকে অর্ডার করে যেতে হয়। একটি জুম রেস্তোরাঁয় ভাত + আলুভর্তা (১বার) + ডাল অর্ডার করলাম প্রতিজন ১০০টাকা করে। লাইট বাজেটের ট্যুরে এটুকুই যথেষ্ট কারন এখানে সবকিছু এক্সপেনসিভ।
খাবার পর্ব সেরে রওনা হলাম হ্যালিপ্যাডে। লোকে লোকারণ্য চারিদিক। কেউ ফানুশ উড়াচ্ছে, কেউ দলবেঁধে বা আনমনে গান গাচ্ছে, কেউ অতি উচ্ছ্বাসে হুদাই চিল্লাচ্ছে.. এ এক অন্য দুনিয়া।
একেকজনের চাহনির ভাষা জানান দেয় এরা বহুদিন খোলা আকাশ দেখেনি, মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেয়নি। এই পরিবেশ ওদের রোবটিক মনকে দান করেছে সীমাহীন উদারতা। অফিসের জাঁদরেল কর্তাটি এখানে অমায়িক, আত্মকেন্দ্রিক মানুষটি মিশুক, কৃপন লোকটি সহযাত্রীকে স্যান্ডউইচ অফার করে, লাজুক মেয়েটি এখানে গলা ছেড়ে গায়…….

ইচ্ছে করছিল ওখানে রাত কাটিয়ে দেই। কিন্তু ভ্রমনক্লান্তি, আকস্মিক বৃষ্টির ভয়, ভোরে মেঘ ভেদ করে সুর্যোদয় দেখার তাড়া থাকায় কটেজে ফিরে যাই। কিন্তু ঘুমাবো কি! পাশের রুমের পোলাপান তাস খেলার অফার দিয়ে বসে। মনে হচ্ছিলো ছেলেগুলো কতদিনের পরিচিত!!
আমাদের কেউ কেউ ওদের রুমে, ওদের কেউ কেউ আমাদের রুমে হাসি ঠাট্টা আনন্দে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি মনে নেই। ভোররাতে এ্যালার্মের শব্দে উঠে পড়ি। ফ্রেশ হয়ে ঝুলন্ত বারান্দায় মেঘ দেখতে যাই..
ভোরের আলো তখনো পুরোপুরি ফুটেনি। ঝাপ্সা আর্দ্র হয়ে থাকায় বুঝতে পারি মেঘের ভেলা বারান্দায় ঢুকে পড়েছে।
সূর্যোদয় দেখতে হ্যালিপ্যাডে রওনা দেই। দেখলাম আমাদের আগেই শত শত মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছে। মেঘ ভেদ করে সূর্য ঠিক উদয় হয়নি, উদয় হয়েছে আরও অনেক উপর দিয়ে.. তবে মেঘের উপর সূর্যের আলো পড়ার স্বর্গীয় দৃশ্যটি সারাজীবন মানসপটে উঁকি দিবে।
এরপর রওনা হলাম সাজেকের সবচেয়ে উঁচু চূড়া কংলাক পাহাড়ে, যার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ফিট উপরে। জিরো পয়েন্ট থেকে ৩০মিনিট হাঁটলেই কংলাক। খাড়া পাহাড় বেয়ে উপরে উঠে পুরো এলকার নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। কংলাক থেকে ফিরে সকালের নাস্তা সারলাম। ওহ বলতে ভুলে গেছি.. আমাদের পাঁচজনের গ্রুপের সাথে এক দম্পতিও যোগ দেয় খাগড়াছড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে। পুরো যাত্রাপথেই আপুটি ভাইয়ার উপর চোটপাট করেছেন কেন উনাকে মিথ্যা বলে সাজেক নিয়ে আসা হলো!!
বিষয়টা হলো এমন, এক ফাইন দিনে ভাইয়া প্রিয়তমাকে সারপ্রাইজ দিবে বলে সাজেকে একটি সুইট বুকিং করেন। বাসা থেকে বেরোনোর সময় বলেছিলেন শুধুমাত্র চিটাগাং ঘুরবে ওরা। চিটাগাং এসে ভাইয়া সাজেকে রুম বুক করার কথা জানান। কিন্তু আপুর চরম আপত্তি। উনার কন্সার্ন হলো, লোকটি নিজেই অসুস্থ প্লাস বাচ্চা নিয়ে এত দূর ভ্রমণ খুব কষ্টের। তবুও যেহেতু রুম বুকিংয়ের টাকা পে করে ফেলেছে, বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে সাজেক। ভাইয়া চুপচাপ হজম করে গেছেন বৌয়ের চোটপাট। 😜😜
পরেরদিন বেলা ১১টার দিকে ঐ দম্পতির সাথে দেখা। দেখলাম ভাই-আপু আর পিচ্চি তিনজনেই ফুরফুরে মেজাজে। আপুকে বললাম কালকে তো খুব মূখ গোমড়া করে ছিলেন, আজ কি সাজেকের রূপ দেখে ফিদা??? মূখে স্বীকার না করলেও আপু সত্যি সত্যিই সারপ্রাইজড হয়েছিলেন বলা বাহুল্য।

এদিকে বাসায় ফিরে আম্মুকে যখন মেঘের উপর সূর্যের আলোকছটা দেখাচ্ছিলাম, পেছন থেকে ছোটভাই বলে উঠে “ঐগুলা এডিট করা যায় ভাইয়া”
😜

যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা/চিটাগাং থেকে শান্তি পরিবহণ, সৌদিয়া, ঈগল, এস আলমে খাগড়াছড়ি বাসস্ট্যান্ড। খাগড়াছড়ি থেকে চান্দের গাড়ি/জীপ, অটোরিক্সা রিজার্ভে সাজেক ভ্যালি। ভাড়া ৬-১১হাজার।

নোটঃ

*সাজেক নারী ও শিশুবান্ধব ট্যুরিস্ট স্পট। ফ্যামিলি ট্যুরে কোন অসুবিধা নেই।

*সাজেকে পানির খুব স্বল্পতা। চেষ্টা করবেন খাওয়ার পানি খাগড়াছড়ি থেকে নিয়ে আসতে। হোটেলে ব্যবহার্য পানি খরচে মিতব্যয়ী হোন।

*বিস্কুট/চিপ্সের প্যাকেট, খালি বোতল, সিগারেটের ফুটকি যেখানে সেখানে ফেলবেননা।

*স্থানীয়দের সাথে অভদ্র আচরণ করবেননা। এক ভাইকে দেখলাম আদিবাসী হোটেল বয়কে ম্যানার শেখাচ্ছেন খুব কদর্য ভাষায়।

*অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে জীপের ছাদের উঠবেননা।

*নিরাপত্তাবাহিনীর সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকুন।

পরিশেষে সকলের সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ ভ্রমন কামনা করি।

Post Copied From:Junayed M. Rayan‎>Travelers of Bangladesh (ToB)