ডাবল ডেকার লিভিং রুট ব্রিজ

ভারতের মেঘালয় প্রদেশের চেরাপুঞ্জির একটু গহীনে এর অবস্থান। এখানে জেতে হলে আপনাকে ডাউকি বর্ডার ক্রস করে চাইলে সরাসরি চেরাপুঞ্জি চলে জেতে পারেন গাড়ি রিসার্ভ নিয়ে, অথবা শিলং হয়ে চেরাপুঞ্জি জেতে পারেন। চেরাপুঞ্জি যে কাউকে ডাবল ড্রাইভার কে বললেই সে নিয়ে যাবে আপনাদেরকে। গাড়ি থেকে নেমে ৩০০/৪০০ রুপি দিয়ে সাথে গাইড শুরু করতে হবে ট্র্যাকিং। তবে সরাসরি পাহাড় ট্র্যাকিং না। পাহাড়ের বুক চিরে করা প্রায় ৩৬০০ সিঁড়ি বেয়ে জেতে হবে আপনাকে এখানে। আবার ফেরার পথেও আপনাকে পুনরায় ৩৬০০ সিঁড়ি বেয়ে উপড়ের দিকে ফেরত আসতে হবে। আসা জাওয়া মিলিয়ে প্রায় ৭+ ঘণ্টার মত সময় লেগে যাবে।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল ৬ বার শিলং ভ্রমন করে সব মিলিয়ে যতগুলো ফরেনার ট্রাভেলার না দেখেছি তার চেয়ে অনেক বেশি দেখেছি এই ডাবল ডেকারে যাওয়ার সময়। তখন স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তা চলে আসে মাথায় আমাদের দেশেও হয়ত এর চেয়ে অনেক বেশি ফরেনার ঘুরতে আসত যদি আমাদের বান্দরবানের ট্র্যাকিং এর জায়গাগুল সবার জন্য খোলা থাকত। কারন আমাদের দেশের নাফাখুম, আমিয়াখুম, তিনাপ সাইতার, জাদিপাই, বগালেক, রাইক্ষাং ঝিরি, জিন্সিয়াম সাইতার, চেদলাং এর সৌন্দর্যের কাছে তাদের এইসবের কোন পাত্তাই নেই। আমাদের দরকার একটু সচেতনতা, সংরক্ষণ, প্রচারনা, নিরাপত্তা আর প্রশাসনের সঠিক নজরদারি। কারন আমাদের দেশের কোন ইট পাথরের স্থাপনা দেখতে কোন ফরেনার কখনই ভ্রমনের উদ্দেশে আসবে নাহ। তাই আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকেই নজর দিতে হবে।

হ্যাপি ট্রাভে্ল

Post Copied From:Mohammad Harun‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

অপরূপ মেঘালয়া কলকাতা

গত মাসের ২৭ তারিখ রাতে বের হয়েছিলাম শিলং এর উদ্দেশ্যে … কলকাতা হয়ে বাসায় ফিরেছি ৬ তারিখ । এই কদিনে মোট পাড়ি দিয়েছি ২০০০ কিমিরও বেশি পথ … ইন্ডিয়ান রেলে চড়ার শখের কারনে গুয়াহাটি থেকে কলকাতা গিয়েছি ট্রেনে আর বাকিটা সড়ক পথে । এই ব্যস্ত শহরে ঘুরে বেড়ানোর মত সঙ্গী ও সময় খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন, তাই পুরো পথটাই পাড়ি দিয়েছি একা ।

চট্টগ্রাম থেকে ২৭ তারিখ রাত ১০.৩০ এ বাসে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দেই , পৌছাই ২৮ তারিখ সকাল ৮টায় ( বাস ভাড়া ৭০০ টাকা নন এসি ) । ইচ্ছা ছিল ওইদিনই বর্ডার ক্রস করবো কিন্তু জার্নি করে টায়ার্ড ছিলাম প্রচুর । তাই একটা দিন সিলেটেই থেকে যাই । পরের দিন সকাল ৮ টায় সিলেট সোবহানি ঘাটের ইবনে সিনা মোড় থেকে লোকাল বাসে রওনা দেই তামাবিল বর্ডার এর দিকে । সাড়ে ৯টায় তামাবিল পয়েন্টে নেমে পড়ি , সেখান থেকে বর্ডার পর্যন্ত হেঁটে যেতে সময় লাগে ৫ মিনিট । লোকাল বাসের ভাড়া ৫৫ টাকা ।

বর্ডারের কাজ শেষ হতে মোট সময় লাগে ৪০ মিনিটের মত , তামাবিল বর্ডারে আমার ১ টাকাও ঘুস দেওয়া লাগেনি । তবে মনে করে অবশ্যই ট্রাভেল ট্যাক্স দিয়ে ট্যাক্সের কাগজ সাথে নিয়ে যাবেন , নইলে ঝামেলা হবে। ইন্ডিয়ার ডাওকি বর্ডারেও কোন ঝামেলা হয়নি , তবে ডলার দেখতে চেয়েছিল ।

বর্ডারের কাজ শেষ করে আরও ২ জন বাংলাদেশীকে পেয়ে যাই যারা শিলং যাবে । তাদের সাথে শেয়ারে একটি ছোট কার ভাড়া নিই । কারের ভাড়া ছিল ১২০০ রুপি । চাইলে ডাওকি বাজার থেকে শেয়ারে জিপেও যেতে পারেন , জিপে গেলে খরচ কমবে তবে যাওয়ার পথের অসাধারণ দৃশ্যগুলো ভালভাবে দেখতে পারবেন না । ডাওকি থেকে শিলং ২ ঘণ্টার জার্নি , তবে এই জার্নি আপনার গায়েই লাগবে না । পুরোটাই অসাধারণ পাহাড়ি রাস্তা ।

গাড়ি আপনাকে শিলং শহরের যেই জায়গায় নামিয়ে দেবে সেটাকে বলে পুলিশ বাজার । পুলিশ বাজার মূলত একটি ৭ রাস্তার মোড় । পুলিশ বাজারের আশে পাশে প্রচুর হোটেল আছে । ঘুরে ঘুরে হোটেল ভাড়া করতে পারবেন , তবে অবশ্যই দেখে নিবেন বাথরুমে গরম পানির ব্যবস্থা আছে কিনা । না হলে রাতের বেলা প্রকৃতি মিস কল দিলে মনে হবে ফাঁসির মঞ্চ থেকে জল্লাদ ডাইকতেছে 😁

আমি যে হোটেলে ছিলাম সেটার নাম রাজতিলাক । সিঙ্গেল রুমের ভাড়া ছিল ১০০০ রুপি। যারা কম খরচে হোটেল নিতে চান তাদের জন্য আমার পরামর্শ হচ্ছে প্রথম দিন ভাড়া একটু বেশি হলেও ভাল কোন হোটেলে উঠে যান । ফ্রেশ হয়ে খেয়ে দেয়ে চাঙা হয়ে যখন আশে পাশের এরিয়া ঘুরে দেখতে বের হবেন তখন কম খরচের হোটেল গুলোও দেখে নিয়েন , পছন্দ হলে পরের দিন উঠে পড়লেন।

প্রথম দিন সবাই কমবেশি টায়ার্ড থাকে , তার উপর ভারী ব্যাগ নিয়ে হাঁটতেও ইচ্ছে করে না । এই কারনে বেশিরভাগই হাতের কাছে যে হোটেল পায় তাতেই উঠে পড়ে , অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এমন হোটেলের ভাড়া অন্য হোটেলগুলোর বিশেষ করে একটু ভেতরের হোটেলগুলোর চেয়ে ১.৫-২ গুন বেশি হয়।

শিলং এ প্রচুর বাংলাদেশী পাবেন , এদের অধিকাংশ সিলেটি । শহরের অনেক খাবার হোটেল এরা চালায় । ১০০ রুপির মধ্যে আপনি অনায়াসে দুপুর কিংবা রাতের খাবার সেরে নিতে পারবেন। সুরুচি বলে একটা হোটেল আছে (পুলিশ বাজারে যে কাউকে বললে দেখিয়ে দিবে) ওরা বাঙালি খাবারের জন্য বিখ্যাত। এছাড়া স্ট্রিট ফুডও চেখে দেখতে পারেন , মন্দ লাগবে না । সকাল বা বিকেলের নাস্তা রুটি/পুরি-সব্জি-চা কিংবা ভেজ চাউমিন দিয়ে চালিয়ে দিলে ৩০-৪০ রুপির মধ্যে হয়ে যাবে ।

শিলং শহরে থেকে মেঘালয়া ঘুরতে চাইলে সবচেয়ে ভালো অপশন হচ্ছে মেঘালয়া ট্যুরিজমের টুরিস্ট বাসে ঘোরা। মেঘালয়া ট্যুরিজম সরকারী অনুমোদন প্রাপ্ত ট্র্যাভেল এজেন্সি। ওদের বিভিন্ন প্যাকেজ থাকে । যেমন আমি ২য় দিন চেরিপুঞ্জির প্যাকেজ নিয়েছিলাম, সকাল ৮ টায় টুরিস্ট বাস পুলিশ বাজার থেকে রওনা করে । চেরিপুঞ্জি যাওয়ার পথে মোট ৮ টি টুরিস্ট স্পট পড়ে , সবগুলোতেই কম বেশি ২০-৩০ মিনিট বেড়ানোর টাইম দেয়। সাথে একজন গাইডও থাকে যিনি আপনাকে কোথায় কি করতে হবে বলে দেবে । ফিরতে ফিরতে প্রায় ৭টা বেজে যায় । রাতের বেলা দূর থেকে শিলং শহরকে দেখলে মনে হয় যেন কেউ পাহাড়ের বুকে অসংখ্য টুনি বাল্ব লাগিয়ে দিয়েছে !! এই দৃশ্য মিস করবেন না ।

মেঘালয়া ট্যুরিজমের বাসে ঘুরলে খরচও কম , প্যাকেজের মূল্য ৩৫০-৫৫০ এর মধ্যে। আমি দুই দিন ওদের বাসে ঘুরেছি , ২য় দিনের প্যাকেজের নাম ছিল চেরিপুঞ্জি ( প্যাকেজ প্রাইস -৩৫০ রুপি) , ৩য় দিনের মাওলিংনং ( প্যাকেজ প্রাইস -৫০০ রুপি , ৬টি স্পট )। একটা কথা মনে রাখা জরুরি আগের দিন বিকেলের মধ্যে প্যাকেজে আপনার নাম বুক করতে হবে ।

এছাড়া আপনি ক্যাব কিংবা ছোট টুরিস্ট কার ভাড়া করেও ঘুরতে পারেন । ক্যাব কিংবা টুরিস্ট কার ভাড়া করলে সারাদিনের জন্য কমপক্ষে ২০০০ রুপি ভাড়া নিবে , এক কারে বসতে পারবেন ৪ জন ।
আমি আমার যাত্রার চতুর্থ দিন ক্যাব ভাড়া করে এলিফ্যান্ট ফলস গিয়েছিলাম , শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১২ কিমি । যাওয়া আসার ভাড়া নিয়েছিল ৩৫০ রুপি । এছাড়া পুলিশ বাজার থেকে ওয়ার্ডস লেক এর দূরত্ব মাত্র ১ কিমি , যখন তখন চাইলে পায়ে হেঁটে লেকে চলে যেতে পারবেন । ওই লেকে বোট চালানোর ব্যবস্থাও আছে ।

শিলং থেকে যদি ভারতের অন্য কোন প্রদেশে ট্রেনে বা প্লেনে যেতে চান তাহলে আপনাকে আসামের প্রদেশের রাজধানী গুয়াহাটিতে আসতে হবে , কারন মেঘালয়াতে রেল লাইন বা সাধারন এয়ারপোর্ট নেই।

শিলং থেকে গুয়াহাটি আসার দুইটা উপায় আছে –

১। বাসে আসতে পারেন। বাস বেশ ভালো তবে গুয়াহাটি যাওয়ার শেষ বাস ছাড়ে দুপুর ২টায় ।

২। শেয়ারে জিপে কিংবা কারে আসতে পারেন । এক জিপে ১০ জন বসাবে , ভাড়া পড়বে ১৭০ রুপি । আর এক কারে সম্ভবত ৪ জন বসায় , ভাড়া পড়ে ৩৫০ রুপি ।

আমি জিপে শিলং থেকে গুয়াহাটি এসেছিলাম । আমার গুয়াহাটি থেকে কলকাতা যাওয়ার ট্রেন ছিল রাত ৯টায় । বিকেল ৫টায় শিলং থেকে জিপে চড়ি, রাত ৮ টায় জিপ আমাকে গুয়াহাটি রেলস্টেশনে নামিয়ে দেয় । আসামের রাস্তা বেশ ভালো , পাহাড়ি নয় । তাই রাতের বেলাতেও কোন সমস্যা হয় না ।

লেখা অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে তাই কলকাতার ব্যাপারে কিছু লিখলাম না । এছাড়া গ্রুপে কলকাতার ব্যাপারে বোধহয় সবচে বেশি গাইড লাইন আছে , তাই আর ওইদিক না যাই । তবে একটা কথা বলি ভারতের লোকজন অনেক হেল্পফুল। যেখানেই যান না কেন ওদের কাছ থেকে হেল্প পাবেন ।

এই ভ্রমণে অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করেছে দেশের বাইরে একলা একলা ঘুরতে আমার ভয় লাগেনি ? সত্যি বলি লেগেছে , তবে স্রেফ প্রথম দিন ।

প্রথম দিনেই অনেকের সাথে মিশে বুঝেছি মনে সন্দেহ আর ঈর্ষা থাকলে অন্য দেশ তো দূরে থাক নিজ দেশের বর্ডারও পার হতে পারবেন না , কোন না কোন জায়গায় ঠিক আটকে যাবেন । কিন্তু যদি অন্য মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা আর আন্তরিকতা নিয়ে আগান (হোক সে অন্য ধর্মের কিংবা অন্য দেশের ) , মহান সৃষ্টিকর্তা পাশের দেশ তো বটেই আপনাকে বেহেশতেও পৌঁছে দিতে পারেন

ভাল থাকুন , সুস্থ থাকুন , ঘুরতে থাকুন এবং মোস্ট ইম্পরট্যান্টলি দেশের বাইরে দেশের মান সম্মান বজায় রাখুন । যেখানে সেখানে মুতিয়া নিজের সাথে দেশের মান সম্মানও ভাসাইবেন না 🙂

Post Copied From:Touhid Chowdhury‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

কামরূপ কামাক্ষা, ব্রম্মপুত্র নদের পাড়ে

এই মন্দির সম্পর্কে ছোটবেলা থেকে কত কথা যে শুনেছি!! – কামরূপ কামাখ্যা এক ভয়ংকর জায়গা, কামরূপ কামাখ্যা জাদু-টোনা, তন্ত্র-মন্ত্রের দেশ, ওখানে আশেপাশের অরণ্য আর নির্জন পথে ভূত-পেত্নী আর ডাকিনী-যোগিনী দেখা যায়, ওখানে গেলে কোন পুরুষ ফিরে আসতে পারে না – লীলাবতী নারীরা তাদের জাদুবলে আটকে ফেলে, আরো কতকি।
আসামের রাজধানি গুহাটি হতে মাত্র ৮ কিমি দুরে কামাক্ষা পর্বতমালার পাদদেশে এই মন্দির অবস্থিত, পাশেই ব্রম্মপুত্র নদ। অনেক পৌরাণিক কাহিনীর জনক দেবী কামাক্ষা। সিলেটের তামাবিল বর্ডার দিয়ে ভারত প্রবেশ করবেন সরাসরি শ্যামলি বাস আপ্নাকে শিলং নামাবে, শিলং হতে গোহটি মাত্র ১০৫ কিমি বাসে যেতে পারবেন। গোহাটিতে থাকার জন্য বেশ কিছু ভাল হোটেল আছে, গোহাটি হতে কামাক্ষা মন্দির পাব্লিক বাস আছে। আষাড় মাসে বছরে ৩ দিন মেলার জন্য মন্দির বন্ধ থাকে। বলি দেওয়ার জায়গা আছে, মন্দিরে অনেকে বাসনা পূরনের জন্য বছরে অনেক তীর্থযাত্রির আগমন হয়।
বাংলাদেশের অনেক হকার এই কামাক্ষা জঙ্গলের গাছ গাছড়া এর কথা ফলাও করে বলে থাকে।

Post Copied From:A Al Mamun Rony‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

মাত্র ৮৫০০ রুপিতে ঘুরে আসুন সিলেট-শিলং(মেঘালয়)-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং

মাত্র ৮৫০০ রুপিতে ঘুরে আসুন সিলেট-শিলং(মেঘালয়)-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং ৫ রাত ৬ দিন…অনেক কম খরচে ঘুরে আসা যায়,কলকাতার দিকে না গিয়ে তামাবিল বর্ডার দিয়ে কম খরচে আর কম সময়ে যাওয়া যায়,তামাবিল বর্ডারে ঝামেলাও করে কম (দার্জিলং এ ট্রাভেলস এজেন্সি এর মাধ্যমে ঘুরার কারণে বেশী গেছে নাইলে আরও কম যাইত)…
শিলং-ডাউকি ১০ রুপি,ডাউকি-শিলং ১২০,শিলং-গুহাট্টি ১৭০ সবই লোকাল সমুতে করে,গুহাট্টি থেকে ট্রেন ১৫০ করে বাংলাদেশ এর শোভন সিট করে নিউ জলপাইগুড়ি,নিউ জলপাইগুড়ি-দার্জিলিং ১২০

Post Copied From:Mohin Hasnat Hassan‎>Travelers of Bangladesh (ToB)